১.
‘লোকটার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখেছিস? কেমন একটা ঘোর লাগা ভাব! মনে হয় এই পৃথিবীতে না, অন্য কোন জগতে অবস্থান করছেন। কেমন পীর পীর লাগে দেখতে!’- যূথী খেতে খেতে বলছিল সুজানাকে। দিনব্যাপী প্রোগ্রামের এখন মধ্যাহ্ন বিরতি চলছে। কয়েক ঘণ্টা একটানা প্রোগ্রাম করে খিদেও পেয়েছিল খুব। তাই বেশ আয়েশ করে মধ্যাহ্ন ভোজন সারছিল ওরা।
যূথীর কথায় স্পষ্টতই বিরক্ত হল সুজানা, ‘গাধার মত কি বলছিস, এখানে পীর আসবে কোথা থেকে, এখানকার লোকদের তুই দেখিসনি, এদের কি তোর এতই গেঁয়ো, অশিক্ষিত মনে হয়েছে, যে পীরের পানি পড়া খেতে চলে এসেছে। এখানকার বেশিরভাগ লোকই এলিট শ্রেণীর, বুঝলি?’
যূথী থতমত খেয়ে বলে, ‘রাগ করছিস কেন, আমি কি উনাকে ছোট করার জন্য কিছু বলেছি নাকি? আমার উনাকে দেখে পীরের মত লেগেছে, তাই বলেছি। আমার মনে হয়েছে, উনার পীরদের মতই অনেক ক্ষমতা।’
সুজানা কিছুটা অধৈর্য হয়ে বলল, ‘আবারও ভুল করছিস তুই। পীরের সাথে উনার কোন তুলনাই হতে পারে না। তুই জানিস না, পীরদের আসলে কোন ক্ষমতাই নেই? বাবার কাছে শুনেছি, মানুষের দারিদ্র্য আর মূর্খতার সুযোগ নিয়ে কিছু ভণ্ড লোক পীর নাম ধারণ করে বিভিন্ন ভেল্কি দেখিয়ে বেড়ায় , মানুষকে বোকা বানায়। আর অন্যদিকে দেখ, আমাদের স্যার যা কিছু শেখাচ্ছেন, তার সব কিছুই কিন্তু ওয়েস্টার্ন কান্ট্রি থেকে এসেছে, সেখানকার একজন অসম্ভব জ্ঞানী ব্যাক্তি প্রায় তিরিশ বছর গবেষণা করে এই পদ্ধতি আবিষ্কার করছেন। সুতরাং, এখানে কোন পীরের বুজরুকি নাই, বুঝলি? ’
‘আমি তোর কথা একটুও অবিশ্বাস করছি না, কিন্তু স্যারের যে অনেক ক্ষমতা, এটা তো আর মিথ্যে নয়। যেমন, আজকের কথাই ধর। একটা প্যারালাইজড্ লোক হুইল চেয়ারে করে এসেছিল, মনে আছে? লোকটি এমনকি ঘাড় সোজা রাখত পারছিল না। এতটাই অসুস্থ ছিল। লোকটা আশফাকের পাশে বসেছিল। আশফাকের কাছে পরে শুনলাম, লোকটা নাকি দিব্যি সুস্থ মানুষের মত মনোযোগ দিয়ে স্যারের লেকচার্ শুনেছিল। আশ্চর্য না, বল?’- যূথী বলল।
‘মোটেই আশ্চর্যজনক লাগছে না আমার কাছে, কারণ এ জায়গায় প্রায় দুই বছর ধরে যাওয়া-আসা আছে আমার, আর তুই তো মাত্র এলি। তোর হয়ত খেয়াল নেই, স্যার কিন্তু এক ফাঁকে বলেছিলেন, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তিনি উচ্চস্তরে যেতে পারেন। সেখানে অদৃশ্য সত্তাদের সাথে তার যোগাযোগ হয়। আর সেই সত্তাদের সান্নিধ্যেই স্যারের ক্ষমতা বেড়ে যায়’- সুজানা উৎসাহের সাথে বলল।
‘সত্যি আশ্চর্য! অথচ আমি ভেবেছিলাম, মেডিটেশন করে ধৈর্যশক্তি বাড়ানো যায়, লেখাপড়ায় ভাল করা যায় বা বড়জোর স্বাস্থ্যের উন্নতি করা যায়। অলৌকিক ক্ষমতার কথা তো আমি জানতামই না!’- যূথীর চোখে-মুখে অজানা আনন্দ চিকমিক করতে থাকে।
‘আস্তে আস্তে সব জানতে পারবি। স্যার বলেন, আমরা নিজেরাই জানি না যে, কি অকল্পনীয় ক্ষমতা নিয়ে আমরা ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমাদের প্রত্যেককে বিশেষ মানসিক ক্ষমতা দিয়ে পাঠানো হয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা অজানা সত্তার সাথে যোগাযোগ করতে পারি, যেকোনো সমস্যায় তাদের নির্দেশ ও সহায়তা পেতে পারি। এমনকি আমাদের পক্ষে ভবিষ্যৎ দেখা সম্ভব এবং নিজেদের পছন্দমাফিক তা পরিবর্তন করাও সম্ভব।’ – সুজানা শান্ত ভঙ্গিতে বলল।
‘কি বলছিস তুই, আমি আমার ভবিষ্যৎ জানতে পারব? আবার চাইলে পরিবর্তনও করতে পারব?’- উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপতে থাকে যূথী।
‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, পারবি। তুই যে মইনের সাথে চুটিয়ে প্রেম করছিস, তার ভবিষ্যৎ কি, তা জানতে পারবি, এমনকি চাইলে, বিয়ের ব্যাপারটি ফাইনাল করে ফেলতে পারবি বিভিন্ন পদ্ধতি অনুশীলন করে।’- সুজানা আগের মতই নিরুত্তাপ কণ্ঠে বলে যায়।
‘কি বলছিস তুই, এও সম্ভব?’- যূথীর চোখ ছানাবড়া। সেখান থেকে বিস্ময় ঝুলে ঝুলে পড়তে থাকে।
‘সবই সম্ভব। আমরা চাইলেই অদৃশ্য সত্তার সহায়তায় অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারি। তুই জানিস না, কত দুরারোগ্য অসুখ নিয়ে লোকে আসে এখানে। একবার এক ক্যান্সার রোগীকে ডাক্তার তিন মাসের আয়ু নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু আয়ু তো আর ডাক্তারের হাতে নির্ধারিত হয় না। ঐ লোকটি এখানে এসেছে তিন বছর হতে চলল। বিশ্বাস কর, লোকটা এখন দিব্যি সুস্থ, হেসে-খেলে বেড়াচ্ছে।’ – সুজানা বলল।
‘আজ তো কয়েকজন ডাক্তারকেও দেখলাম।’-যূথী বলল।
‘ডাক্তার থেকে শুরু করে শিল্পপতি, আমলা, ব্যারিস্টার, এমনকি মওলানারা পর্যন্ত আসে এখানে।’-সুজানা বলল।
‘শোবিজ জগতের কয়েকজনকেও তো দেখলাম। তাদের কেউ কেউ তো স্যারের পায়ে ধরে কদমবুসিও করল। তবে একটা ব্যাপার মাথায় ঢুকছে না, তুই বললি, মাওলানারাও আসে। ওনারা আসেন কেন?’ – যূথীর চোখ-মুখ থেকে বিস্ময়ের ঘোর তখনো কাটেনি।
‘কারণ উনাদের প্রার্থনায় এখন আর কাজ হয় না। স্যার উনাদের শুদ্ধ-ভাবে নামায পড়া ও প্রার্থনা করার উপায় শিখিয়ে দেন। প্রার্থনারও সিস্টেম আছে। তুই শুনলে অবাক হবি, স্যারেরা একবার দলবদ্ধ প্রার্থনা করে সাইক্লোনের গতিপথ বাংলাদেশ থেকে প্রতিবেশী দেশের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন।’ -সুজানা বলল।
‘কি সাংঘাতিক রে বাবা! আচ্ছা, যে কারো পক্ষেই কি এই পদ্ধতিগুলো শেখা সম্ভব? মানে, আমার মত সাধারণ মানুষদের পক্ষে?’ – যূথী কৌতূহলভরে জিজ্ঞেস করে।
‘সম্ভব, তবে ধৈর্য হারালে চলবে না। অনেকেই একবার-দুবারের বেশি আসে না। ফলে কিছুই পুরোপুরি শিখতে পারে না, উল্টো যা শিখেছে তাও ভুলে যায়। একবার স্যারের মুখে শুনেছিলাম, তার নাকি দীর্ঘ দশ বছর লেগে গেছে সিস্টেমগুলো পুরো রপ্ত করতে। তবে হতাশ হোস না ,স্যার বলেছেন, আমাদের এত দীর্ঘ সময় লাগবে না, উনি আমাদের দ্রুত রপ্ত করার কিছু টেকনিক শিখিয়ে দেবেন। তবে সেজন্য লেগে থাকতে হবে। আমাদের ভাগ্য ভাল যে, আমরা স্যারের মত একজন ট্রেইনার পেয়েছি।’ – সুজানা বলে।
‘বুঝতে পারছি, কঠোর সাধনা থাকতে হবে উচ্চস্তরে যাওয়ার পদ্ধতি রপ্ত করতে হলে। আরও অনেক প্রোগ্রামে পার্টিসিপেট করতে হবে। আচ্ছা সামনের প্রোগ্রামগুলোয় কেমন খরচ হতে পারে?’- যূথী জানতে চাইল।
সুজানা কিঞ্চিৎ অপ্রস্তুত হল, পরে সামলে নিয়ে বলল, ‘তোর মুখে খরচের কথা শুনব আশাই করিনি। প্রতি মাসে দুইটা-তিনটা প্রোগ্রাম হয়। সেজন্য হাজার তিরিশেক খরচ করতে পারবি না? আমি যতটুকু জানি, তোর পরিবারের জন্য এটা কোন খরচই না’।
‘ঠিকই বলেছিস, আমার জন্য তেমন খরচ না। কিন্তু যাদের সামর্থ্য নেই, তাদের কি হবে, তাই ভাবছি! তাদের জন্য কি স্যার আলাদা কোন ব্যবস্থা রেখেছেন?’- যূথীর কণ্ঠে মমতা ঝরে পড়ে।
সাংঘাতিক বিরক্ত হয় সুজানা, ‘তোর মাথায় এত অদ্ভুত চিন্তা-ভাবনা কি করে আসে, ভেবে পাই না! গরীব লোকদের শেখানোর ইচ্ছা থাকলেও, সময় পাচ্ছেন না স্যার। তোদের শেখাতেই তো স্যারের সব সময় চলে যায়, তবে স্যারের প্রত্যাশা, তোরা স্যারের শেখানো মন্ত্র দিয়ে গরীব-দুঃখী মানুষদের অসুখ-বিমুখ বিনে পয়সায় দূর করে দিবি, বুঝতে পারছিস?’
২.
আফটারনুন সেশন শুরু হয়েছে। সুপ্রশস্ত কক্ষটিতে পিনপতন নীরবতা। সবাই সম্মোহিত হয়ে ট্রেইনারের কথা শুনছে। তবে একজন বাদে। সকাল থেকে এক জায়গায় একটানা বসে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল মুন্নি। তাছাড়া, লেকচারও প্রচণ্ড একঘেয়ে লাগছিল। শুধু মাকে কষ্ট দিতে চায়নি বলেই চুপচাপ সহ্য করে যাচ্ছিল।
মুন্নি দু’বছর ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত। কেমো থেরাপি চলছে অনেকদিন ধরে, তবে ডাক্তারদের কাছ থেকে তেমন আশাব্যঞ্জক খবর পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকটা শেষ চেষ্টা হিসেবে মা তাকে নিয়ে এসেছেন এখানে।
কিছুক্ষণ আগে মুন্নির ব্যথাটা আবার জাগতে শুরু করেছে। ব্যথাটা ক্রমেই বাড়ছে। ও জানে এক সময় ওর অজ্ঞান হওয়ার মত অবস্থা হবে। বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে মুন্নি বাধ্য হয়ে মাকে তার ব্যথার কথা জানায় আর ফিরে যাবার প্রস্তুতি নিতে বলে।
কিন্তু মুন্নির মা তার শেষ চেষ্টা মাঝপথে ভণ্ডুল করতে রাজি নন কিছুতেই। তৎক্ষনাৎ কাঁদো কাঁদো গলায় ট্রেইনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন, ‘আমার মেয়ে হঠাৎ খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে, স্যার। যেকোনো সময় মাথা ঘুরে পড়ে যেতে পারে। ও চলে যেতে চাচ্ছে, স্যার।’
ঘর ভর্তি শিক্ষার্থীদের সম্মোহন ক্ষনিকের জন্য টুটে গেল মুন্নির মায়ের আহাজারিতে। প্রথমে চরম বিরক্ত হলেও দ্রুতই সামলে নেন ট্রেইনার, ‘আপনাদের কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নাই। পেছনের দিকে একটা সোফা আছে, আপনার মেয়েকে ওখানে শুইয়ে দিন আর আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে বলুন। ও কিছুক্ষণের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যাবে।’
ট্রেইনারের কথা শুনে রীতিমত আতঙ্কিত বোধ করে মুন্নি। ওর মনে হচ্ছিল, বড় ধরনের একটা গুহায় আটকে পড়তে যাচ্ছে। হঠাৎ কাউকে কিছু না বলে মুন্নি রুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হয়। মুন্নির মাও পাগলের মত চিৎকার করতে করতে মেয়ের পিছু ছুটলেন। পুরো কক্ষের পরিস্থিতি ভারী হয়ে উঠছিল। সবাই তীব্র অস্বস্তি বোধ করছিল।
এক পর্যায়ে ট্রেইনার সুজানাকে কাছে ডেকে কিছু একটা নির্দেশে দিলেন। কিছুক্ষণ পর সুজানা আর যূথীকে দেখা গেল মুন্নিকে কোলে করে ট্রেনিং কক্ষে প্রবেশ করল। মুন্নির তখন অজ্ঞান অবস্থা। বোঝাই যাচ্ছে, অনেকটা জোর করে মুন্নিকে নিয়ে আসা হয়েছে। ওদিকে উদ্বিগ্ন মাকে সুজানা সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছিল, ‘কিচ্ছু ভাববেন না, খালাম্মা। ও কিছুক্ষণের মধ্যেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে। আমাদের স্যারের অনেক ক্ষমতা। স্যার ওর শরীরের ভিতর ঢুকে ওর সব ব্যাথা সারিয়ে দেবেন।’
সেশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুন্নি মরার মতই পড়ে ছিল। মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হয়নি। আর জোর খাটানোরও চেষ্টা করেনি। শুধু ভাবছিল, এখানে এসে বরং লাভই হয়েছে। শেষ ব্যথা তো আসন্ন। একটা প্রস্তুতি তো হল!
ট্রেনিং শেষ হলে সুজানা আর যূথী অত্যন্ত যত্ন করে মুন্নিকে গাড়িতে উঠিয়ে দিল। মুন্নির মাকে বিদায় জানানোর সময় সুজানার কন্ঠে ঝরে পড়ল সান্ত্বনা, ‘আপনি মোটেই চিন্তা করবেন না, খালাম্মা। মুন্নিকে একবার যখন এখানে এনেছেন, ও সুস্থ হবেই। আজই তো দেখলেন, স্যারের কত ক্ষমতা। মুন্নি কিন্তু শেষে আর একটা শব্দও করেনি। আরামে প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছিল। এর পরের সেশনগুলোতে ওকে রেগুলার নিয়ে আসবেন। দেখবেন, ক্যান্সার দৌড়ে পালাবে।’
৩.
মুন্নির শরীর ক্রমেই অবসন্ন হয়ে পড়ছে। ব্যথার অনুভূতিও লোপ পেতে শুরু করেছে মনে হয়। মুন্নির মা মেয়েকে নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছেন। সে অবস্থাতেই মেয়েকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন, ‘মা, তোমার কি ঘুম পাচ্ছে? ঘুমাও, আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাও। দেখলে তো ওনার কি ক্ষমতা, মুহূর্তের ভিতর তোমার ব্যথা সারিয়ে দিলেন। আল্লাহর রহমতে তুমি অল্প কয়েকদিনের ভিতর সুস্থ হয়ে যাবা, মা।’ মা মুন্নির মাথাকে নিজের বুকের আরও কাছে টেনে নেন।
মুন্নির চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। সে মনে মনে ভাবছিল, সত্যি যদি ঐ ট্রেইনারের কিছু অলৌকিক ক্ষমতা থাকত আর তার মায়ের আশা পূর্ণ হত! মুন্নির ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল। নিজের জন্য না, মায়ের জন্য।
কাজি মামুন
২১।০৯।২০১২
মন্তব্য
ভালো হয়েছে। এইসব পৌর-পীরদের ব্যবসা কিন্তু অনেক রমরমা। আপনি এখানে মেডিটেশনের ক্ষমতা যা বললেন, এরা কি আসলেই সেটা দাবী করে?
গল্পের পরিধি ছোট রাখার জন্য এখানে কমই উল্লেখ করা হয়েছে, এরা আরো অনেক কিছুই দাবী করে। ছোট ব্যবসায়ীকে এরা শিল্পপতি বানিয়ে দিতে পারে, সামান্য রাজনৈতিক কর্মিকে এরা মন্ত্রী বানিয়ে দিতে পারে, মরনঘাতি ক্যান্সারকে এরা রোগির শরীরে ঢুকে নিমিষেই উধাও করে দিতে পারে, নিঃসন্তান দম্পতিকে উপহার দিতে পারে ফুটফুটে সন্তান। শুধু লেগে থাকতে হবে (কড়ি নিয়ে ), সুতরাং বুঝতেই পারছেন। চরিত্র ও স্বভাবে পীর-ব্যবসার সাথে বিন্দুমাত্র তফাত নেই, শুধু এদের খদ্দেররা বেশীরভাগই এলিট শ্রেণীর, আর অন্যদিকে পীরের আস্তানায় ধনী-গরিব, বিদ্বান-মূর্খ নির্বিশেষে সবার অবাধ
যাতায়াত আছে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
ভালো লাগল। লেখা চলতে থাকুক।
ক্লাইম্যাক্সটা আরেকটু যত্ন করে লেখা যেত কি?
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ক্লাইম্যাক্সটা অবশ্যই যত্ন করে লেখা যেত। আমার একটা সমস্যা হল, কোন প্লট মাথায় এলে যতক্ষণ না পর্যন্ত মডারেটরদের হাতে তুলে দিতে পারছি বা প্রকাশ করতে পারছি, ততক্ষণ তীব্র টেনশান হতে থাকে, মনে হয়, মাথায় মস্ত বোঝা চেপে বসেছে। গতকাল যখন লেখা শেষ করলাম, তখন মনে হয়েছিল, গল্পটি আরও গুছিয়ে লেখা যেত, ভাষাকে আরও বিন্যস্ত করা যেত, মুন্নির অংশটিকে আরও ঝরঝরে করা যেত। কিন্তু যখন ভাবলাম এডিটিং করতে গেলে পুরো একটা রাত লেখাটি আমার মাথায় রেখে দিতে হবে, তখন হুড়মুড় করে ছেড়ে দিলাম। মডারেটররা সদয় বলেই হয়ত গাঠনিক দুর্বলতা স্বত্বেও লেখা ছেপে দিয়েছেন আমাদের উৎসাহিত করার জন্য।
সামনে কোন লেখা লিখলে ক্লাইম্যাক্স তৈরিতে অবশ্যই যত্নশীল থাকব।
পৌর পীর নামটা যথার্থ । আমি একসময় অনেকটা শখের বশেই মেডিটেশন কোর্সে অংশ নিয়েছিলাম। বেশ অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম অনেক বিখ্যাত, গুণীজন সেখানে উপস্থিত, তাঁরা আমার মতো সাধারণদের কাছে তাঁদের পীর বাবার হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এইসব পৌর পীররা এমন শিল্পিত কায়দায় মানুষজনকে ধোঁকা দেয় যে শিল্পকর্ম দেখে বোকা হয়ে যেতে হয়।
আপনার লেখা আগে পড়া হয়নি, তবে চমৎকার সব মন্তব্য পড়েছি। লেখা ভাল লেগেছে। শুভকামনা রইল।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, এক জোনাকি।
ঐ বিখ্যাত-গুনিজনেরা খুব সম্ভবত পৌর-পীরের ব্যবসায়িক অংশীদার। আর তা না হলে, তারাও সুজানা-যূথীদের মত সম্মোহিত। চারিত্রগতভাবে প্রচলিত পীরদের সঙ্গে পৌর-পীরদের বিন্দুমাত্র পার্থক্য নেই, পার্থক্য যদি কিছু থেকে থাকে, তা আছে রং আর পোশাকে।
ভাল থাকবেন।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
ধন্যবাদ, ভাইয়া। আমার সৌভাগ্য যে প্রথম থেকেই আপনার উৎসাহ পেয়ে আসছি। ভাল থাকবেন।
অনেক ভালো লাগলো , প্লটটা চমৎকার , লেখনীও সুন্দর আরেক টু যত্ন করলেই হবে। অনেক ধন্যবাদ ।
মৌটুশি বাশার
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আমার এই সমস্যাটা খুব হয়। কোন প্লট যখন মাথায় আসে, তখন অস্থির হয়ে যাই তাকে মাথা থেকে রিলিজ করে দিতে। যতক্ষন না পর্যন্ত লিখে মডারেটরদের কাছে ছেড়ে দিতে পারছি, ততক্ষন টেনশান হতে থাকে। এই জন্য আমার লেখার ভাষা হয় প্রায় সময়েই অগোছাল, যা পরে আমারও পড়তে ভাল লাগে না।
দেরিতে আপনার মন্তব্যটি চোখে পড়ায় জবাব দিতেও দেরি হল। কিছু মনে করবেন না আশা করি। আর ভাল থাকবেন।
নতুন মন্তব্য করুন