শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবর হলো: যুক্তরাষ্ট্রে 'ইনোসেন্স অব মুসলিমস' নামক চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতিবাদে আজ সকালে ইসলামী মৌলবাদী নামে পরিচিত ১২টি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেয়া এবং বেলা ১১টার দিকে প্রেসক্লাবের ভেতর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে অগ্রসর হতে চেষ্টা করার সাথে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, গ্রেফতার, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং বেশ কিছু যানবাহন পোড়ানো ও ভাঙচুরের পর এই দলগুলো সম্মিলিতভাবে আগামীকাল রবিবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছে।
এদেশে ধর্মীয় আহাম্মকির বিস্তার কতোদূর পর্যন্ত হয়েছে সেটা ভাবলে অবাক হতে হয়। মার্কিন মুল্লুকে নির্মিত ছবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং তার প্রতিক্রিয়ায় হরতাল আহ্বানের দ্বারা এদেশীয় মুসলিম জনগণ এবং ইসলামের কী উপকার করা হলো সেটা আমার মতো সাধারণ বুদ্ধির ব্যক্তির মাথায় প্রবেশ করে না। তবে এই আহাম্মকি কেবল ধর্ম-ব্যবসায়ী দলগুলোর মধ্যে নয়, সরকারী ক্ষমতায় সমাসীন রাজনৈতিক দল, প্রশাসন এবং বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সর্বত্রই বিদ্যমান। তা নাহলে সার্চ করে ভিডিওটি পাওয়া যায় এই অজুহাতে ইউটিউব বন্ধ রাখার নির্দেশ বিটিআরসি কর্তৃক বেসরকারি ইন্টারনেট সেবাদানকারী সংস্থাগুলোকে প্রদান করা সম্ভব হতো না।
জানা গিয়েছে যে, 'ইনোসেন্স অব মুসলিমস' নামক পর্ন মুভিটার পরিচালক জন্মসূত্রে একজন ইহুদি ব্যক্তি। ছবিটা সম্পর্কে আসলে বলার কিছু নাই, তৃতীয় শ্রেণীর একটা বাংলাদেশী বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র দেখাও এর চেয়ে উপভোগ্য হতে পারে বলে মনে হয় আমার কাছে। সত্যিকার অর্থে যেকোনো যুক্তিবাদী মুসলিমের এই ছবিটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু ছিল না, পৃথিবীতে প্রতিদিনই জেসাসকে নিয়ে অসংখ্য ব্যঙ্গ কার্টুন, চলচ্চিত্র, স্যাটায়ার, মিউজিক ভিডিও নির্মিত হয়, প্রকাশিত হয় বিভিন্ন বইপত্র, যেগুলোর বক্তব্য বিভিন্নভাবে চার্চের অনুগামী নয়। সেসব নিয়ে খ্রিস্টানদের খুব একটা উত্তেজিত হয়ে উঠতে দেখা যায় না। কিন্তু ধর্মীয় আহকাম সেভাবে পালন না করলেও এসব ব্যাপারে মুসলিমদের একটা অংশ সামান্যতেই খুব স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে, এবং সেই স্পর্শকাতরতা উগ্র অন্ধত্ব ও হিংস্রতায় পর্যবসিত হয় খুব দ্রুততার সাথে। খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, আমাদের দেশের একটি দৈনিকের সাপ্তাহিক স্যাটায়ার ম্যাগাজিনে একটি তুচ্ছ কার্টুন প্রকাশকে কেন্দ্র করে সাধারণতভাবে মৌলবাদী নামে পরিচিত সুবিধাবাদী ধর্মজীবী মহলে শোরগোল উঠেছিল, পত্রিকা পোড়ানো, রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল, জঙ্গি আচরণ প্রদর্শন- এ সমস্ত কিছুই ভুলে যাওয়ার নয়। অথচ কার্টুনের যে বিষয়বস্তুকে ঘিরে এই বিশৃঙ্খলার সূচনা সেটি কৌতুকাকারে এদেশের পাঠকের কাছে অনেক আগে থেকেই সুপরিচিত, তারা কেউই সেটি নিয়ে কখনোই এভাবে মাথা ঘামান নি। কার্টুনটি নিয়েও তাদের মাথা ঘামানোর কিছু ছিল না, সেটি যে কোনোভাবে ধর্ম কিংবা ধর্মীয় পুরুষের অবমাননার কারণ হতে পারে সেটি তাদের কারো চিন্তায় প্রবেশ করে নি। কিন্তু তাদের মধ্যে প্রবেশ না করলেও ‘অন্তর্দর্শী’ হুজুরগণ চুপ করে থাকবেন কেন! কাজেই ইসলাম এবং তার নবীর ‘অবমাননা’র বিরুদ্ধে তারা লুঙি কাছা দিয়ে মাঠে নামলেন। শেষাবধি পত্রিকা সম্পাদককে একজন সুপরিচিত দালালের মধ্যস্থতায় প্রধান মসজিদের খতিবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হলো। এখানে আরেকটা কথা বলতে হয়, সেই সম্পাদকের ভূমিকাও মোটেই সমর্থনযোগ্য ছিল না, নিজের সুবিধাবাদী আচরণ এবং অন্যান্য কার্যের মাধ্যমে তার নৈতিক চরিত্রে দুর্বলতা থাকার কারণেই তিনি এ কাজ করতে সক্ষম হয়েছিলেন; এই ক্ষমা প্রার্থনার মতো হীনমন্য কাজ করতে তার কোনো অসুবিধে হয় নি! শুধু এই ঘটনাই নয়, এর আগে একটি নিবন্ধে মক্কা-সংক্রান্ত সামান্য একটা উক্তির কারণে কবি দাউদ হায়দারকে মৌলবাদীদের তাণ্ডবের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল- এসবই দিনের আলোর মতো জ্বাজল্যমান লজ্জাজনক সত্য। এ ধরনের ঘটনা যে কেবল বাংলাদেশেই ঘটে তা নয়, বিশ্বের পশ্চাৎপদ অন্যান্য অঞ্চলেও এর দৃষ্টান্ত বিরল নয়।
সেই সূত্রে 'ধর্মঅন্তপ্রাণ' মুসলিমগণের মধ্যে এখন শুরু হয়ে গেছে ইহুদি-খ্রিস্টান তথা পশ্চিমা-বিদ্বেষী প্রচারণা। বিশ্বের অনেক জায়গা থেকেই ধ্বংসযজ্ঞের খবর আসছে। লিবিয়ার মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া সমগ্র মুসলিম বিশ্বে বিক্ষোভ চলছে। এদিকে ওআইসিভুক্ত রাষ্ট্রগুলো, যারা বিশ্বের সাধারণ দরিদ্র মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর যেকোনো রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের কোনো প্রতিকারের সামান্যতম ব্যবস্থা করতে পারে নাই, তাদের ইমানবোধ হঠাৎ প্রবল হয়ে উঠেছে, নিজেদের মধ্যে সভা আহ্বান করে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ প্রয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অনলাইনেও কথিত মডারেট মুসলিমগণের মধ্যে বিষয়টি বেশ সাড়া ফেলেছে। এর মধ্যে একজনকে আবার দেখলাম কালকে হিটলারের ছবি শেয়ার করে সেখানে স্যালুট ঠুকছে। ছবির নিচে উদ্ধৃত তার 'অমর বাণী': "আমি সমস্ত ইহুদিকে মেরে ফেলতে পারতাম, কিন্তু কিছু বাঁচিয়ে রেখেছি দুনিয়াবাসীকে এটা দেখানোর জন্য আমি কেন তাদের হত্যা করেছিলাম।"- এই লেখায় সমর্থনও জুটছে বেশ। আরেকজনকে দেখলাম এক অদ্ভুত বক্তব্য প্রচার করতে- যার মোটামুটি ভাবার্থ হলো: “সিনেমাটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করো, কিন্তু সেটা দেখো না। দেখলে ইমান দুর্বল হয়ে যেতে পারে।” আমাদের দেশে অবশ্য এটি হয়েই থাকে, আলোচ্য যেকোনো সিনেমা অথবা বই না-দেখে না-পড়ে পাড়ার ইমাম বা ধর্মীয় মাতব্বরের কথায় উত্তেজিত হওয়া, জঙ্গি মিছিল করা এবং অবশেষে, ষড়যন্ত্রে অংশগ্রহণকারী হিসেবে চিহ্নিত করে দুর্বল অমুসলিম প্রতিবেশীর ওপর চড়াও হওয়া। সুতরাং সাম্প্রতিক এই চলচ্চিত্রটিকে ঘিরে এদেশে ইহুদি-বিদ্বেষের পালে নতুন করে হাওয়া লাগবে এবং ধর্মব্যবসায়ীগণ এর সুযোগ পকেটস্থ করবে এতে আর সন্দেহ কি!
আমাদের দেশের, এবং সম্ভবত অন্যান্য দেশেও ধর্মান্ধ কাটমোল্লা এবং সুবিধাবাদী ধর্মজীবীগণ যেকোনো ঘটনা-দুর্ঘটনায় 'ইহুদি-নাসারা'দের ষড়যন্ত্র দেখতে পায় এবং সেই সূত্রে সাধারণ মুসলিমদের তাদের করায়ত্তে এনে উত্তেজিত করার প্রয়াস লাভ করে। জামায়াতে ইসলামী নেতা এবং অন্যতম ভণ্ড ও বিকারগ্রস্থ চরিত্রের দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে এই ধারার প্রধান পুরুষ বলা যায়। তার দেখানো পথে এরকম আরো অনেকেই এখন হেঁটে নিজেদের রুটি-রুজির সংস্থান করছে। এই সুবিধাবাদী ধর্মজীবী এবং ধর্মান্ধরা একটি সম্প্রদায়কে অখণ্ড এবং অভিন্ন সত্তা হিসেবে জনগণের সামনে উপস্থিত করে তাদের পক্ষে অথবা বিপক্ষে ঘৃণ্য ও অশিক্ষিত প্রচারণা চালাতে সিদ্ধহস্ত। তাদের নাই কোনো ইতিহাসজ্ঞান- থাকলেও তারা সাধারণ জনগণের কাছ থেকে সেটিকে লুকিয়ে রাখে। এই ধর্মজীবীগণ কি জানে বর্তমান ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইউরোপজুড়ে অসংখ্য সাধারণ নিরীহ ইহুদির রক্তের রাজনীতির ওপর দাঁড়িয়ে ধনিক ইহুদিদের সম্পত্তি-স্বার্থের নিরাপত্তার জন্য? তারা কি জানে, এখন এই রাষ্ট্রের মালিক কার্যত কয়েকটি চিহ্নিত ইহুদি পরিবার, যারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারকে বিভিন্ন পন্থায় অর্থ দিয়ে সাহায্য করে সাধারণ ইহুদি-নিপীড়নের পথ উন্মুক্ত করেছিল? সমগ্র পশ্চিমা বিশ্বে এখনও অসংখ্য ইহুদি আছেন (যাদের মধ্যে আছেন কিছু সংখ্যক র্যাবাইও) যারা জায়নিস্ট রাষ্ট্র ইসরায়েলের অস্তিত্ব ও কার্যকলাপের বিরুদ্ধে রাস্তায় মিছিল করতে গিয়ে পুলিশের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হন, ইসরায়েল নামক ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র কর্তৃক ফিলিস্তিনিদের ওপর নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে রাজপথে মার খান, কিন্তু মূল ধারার মিডিয়ায় কখনো তাদের কথা আসে না- কেননা সেগুলো প্রকাশ পেলে মুসলিম-মানসে ইহুদি জনগোষ্ঠী সম্পর্কে যে একক একটা বিভ্রান্তকর ছবি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে তাতে চিড় ধরবে।
'ইনোসেন্স অব মুসলিমস' নামক পর্নগ্রাফিক চলচ্চিত্রটি নির্মাণের পেছনে যেমন কোনো ইহুদি থাকতে পারে, তেমনি থাকতে পারে কিছু খ্রিস্টান এবং নিরীশ্বরবাদীও। তার মানে কখনোই এটা নয় যে দুনিয়ার সকল ইহুদি-খ্রিস্টান-নিরীশ্বরবাদী মিলে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমাদের দেশে মসজিদে জুমার খুতবায়, ওয়াজ-মজলিশে, ক্যাসেট-সিডিতে তথাকথিত ধর্মীয় নেতাদের বয়ান শুনলে মনে হয় সারা পৃথিবীর সকল অমুসলিম (হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-ইহুদি-নিরীশ্বরবাদী) মিলে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত করছে; তাদের একমাত্র কাজ মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতি খর্ব করা, তাদের ব্যাঙ্গ করা এবং যেকোনো উপায়ে তাদের ওপর নিপীড়নমূলক দমন কার্য চালানো। কাশ্মীর, মিন্দানাও, নাথারিওয়াট, গুজরাট, চেচনিয়া, ফিলিস্তিনে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতনকে এই ভাবে জনসম্মুখে উপস্থিত করেই তারা প্রচারণা চালায়। তাদের এই সমস্ত ধর্মীয় বয়ানে কখনোই শোনা যায় নাই তুরস্কের খিলাফতের আমলে আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর ওপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের কথা, কখনোই তারা বলে না বর্তমান আরব বিশ্বের মৌলবাদী রাষ্ট্রসমূহে এবং পাকিস্তানে অমুসলিম নাগরিকগণ কীভাবে জীবন যাপন করছেন! এভাবে বিভিন্ন সময়ে মুসলিম শাসক কর্তৃক ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতনের ইতিহাসগুলো অকথিত থেকে যায়। এদেশে পাহাড়ী হিসেবে পরিচিত ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ওপর বহু দশক হতে চলে আসা রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে কিছু বলতে যাওয়াকে মুসলিম-বিরোধী বক্তব্য হিসেবে মনে করা হয় সমাজের অনেক জায়গায়। এগুলো নিয়ে সামান্য হৈচৈ করলেই আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মীবৃন্দের মধ্যে ভিন্ন মতাবলম্বী হিসেবে পরিচিত হবেন, এবং অত্যন্ত সহজাতভাবে প্রশ্ন তোলা হবে আপনার ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে।
সারা বিশ্বে বিশেষ করে ফিলিস্তিনে মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে কেন আরবের ধনিক রাজপরিবারগুলো, তাদের শাসক গোষ্ঠী, তেল সম্পদ ও সাধারণ জনগণের শ্রমের ফসলে মহা-আড়ম্বরপূর্ণ বিলাসী জীবনযাপনকারী পরজীবী শ্রেণীর নেতাগুলো কার্যকারিতার দিক থেকে নিশ্চুপ- আবার ভারতীয় লেখক-চিন্তক-কর্মী অরুন্ধতী রায়, মার্কিন ভাষাতত্ত্ববিদ-লেখক নোয়াম চমস্কি, বৃটিশ নাট্যকার হ্যারল্ড পিন্টার সহ (যিনি জন্মপরিচয়ে একজন ইহুদি) অসংখ্য অমুসলিম ও নিরীশ্বরবাদী পুঁজিবাদ-বিরোধী কেন রাষ্ট্রীয় প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েও রাস্তায় দাঁড়িয়ে, লেখনির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ইউরোপ-আমেরিকা সহ সমগ্র বিশ্বজুড়ে সেসব কথার কোনো ব্যাখ্যা এই বয়ানগুলোতে নাই। এমনকি খোদ ইসরায়েল রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বামপন্থী হিসেবে পরিচিত রাজনৈতিক দলগুলোও ডানপন্থী শাসক গোষ্ঠী কর্তৃক রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন-যজ্ঞের বিরুদ্ধে নিজস্ব সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে সুযোগ-মতো কিছু প্রতিবাদ জানিয়ে থাকে- যার খবর খুব কমই আমরা জানতে পারি।
শুধু এগুলোই নয়। অমুসলিম শাসক গোষ্ঠী কর্তৃক অমুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর যে জাতি, গোষ্ঠী এবং শ্রেণীগত নিপীড়ন হয়ে থাকে সেগুলো নিয়ে ইসলাম-রক্ষায় জীবন পণ করা ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কোনো চাঞ্চল্য দেখা যায় না। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে মুসলিম ছাড়াও খ্রিস্টান, শিখ, আদিবাসী এবং দলিত সম্প্রদায়ের ওপর ব্রাহ্মণ্যবাদী শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক প্রতিনিয়ত এবং সুনির্দিষ্ট ইস্যুতে বহু নিপীড়ন, নির্যাতন, উন্নয়নের নামে উচ্ছেদের ঘটনা ঘটে, কিন্তু একমাত্র মুসলিম নির্যাতন হলেই সংবাদপত্রসমূহ সেগুলো গুরুত্ব সহকারে ছাপায়, সেগুলো নিয়ে আলোচনার টেবিল এবং মাঠ গরম করা হয়। ধর্ম ব্যবসায়ীদেরও সুবিধা হয় ‘ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ বিপন্ন’- এই আওয়াজ তুলে ইসলাম রক্ষার জন্য এদেশীয় সাধারণ মুসলিম জনগোষ্ঠীর ইমান রক্ষার পরীক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাতে। ভারতীয় নিপীড়িত মুসলিমদের জন্য কার্যকরভাবে কিছু করতে ব্যর্থ এদেশীয় মুসলিমগণের একাংশের ইমান রক্ষার যুদ্ধ অনেক সময়ে আপতিত হয় ভারতীয় শাসকগোষ্ঠীর বৃহত্তর অংশের ধর্ম-সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত এদেশীয় সাধারণ জনগোষ্ঠীর ওপর। একটি নির্দিষ্ট ধর্ম-সম্প্রদায়ের সকল মানুষকে একক এবং অখণ্ড সত্তা হিসেবে চিহ্নিত করা, এবং তাদের মধ্যে শ্রেণীগত বিভেদকে সুস্পষ্ট করতে ব্যর্থতার উপস্থিতি আমাদের সমাজের বৃহত্তর অংশে বিরাজ করার ফলে সেটি ধর্মজীবীদের জন্য বিরাট সুবিধাজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলী গোষ্ঠীভুক্ত শাসক শ্রেণী কর্তৃক সংখ্যালঘু তামিল জনগণের ওপর বহু বছর ধরে চলে আসা জাতিগত নিপীড়ন এবং তার প্রতিক্রিয়ায় তামিল গেরিলা কর্তৃক সংগঠিত প্রতিরোধ সম্পর্কে এদেশের ধর্মরক্ষাকারীদের এবং সাধারণ জনগণের বৃহদাংশের মধ্যে উদাসীনতা লক্ষ করা যায়। বিষয়টিকে তারা ‘কাফেরদের নিজেদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি’ হিসেবেই দেখে থাকে। শুধু তাই নয়, তামিলদের ওপর রাষ্ট্রীয় দমন-কার্যের প্রতি মৌন সম্মতিও লক্ষ করা যায় তাদের অনেকের ভেতর। তামিল গেরিলাদেরকে অনেক ক্ষেত্রেই ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যেমনি আসাম, নাগা, বোড়োল্যান্ডের স্বাধীনতাকামী গেরিলাদের ওপর ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ ট্যাগ লাগিয়ে তাদের প্রত্যাখ্যানের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি সরকারিভাবে এবং মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এদেশীয় জনমানসে। কিন্তু এই তামিলরা যদি মুসলিম গোষ্ঠীভুক্ত হতেন, কিংবা হতেন ভারতীয় স্বাধীনতাকামী গেরিলাগণ- তাহলেই সারাবিশ্বের মুসলমানদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে ও কাফের কর্তৃক ইসলাম বিপন্ন- এই হুঙ্কার তুলে ইসলামের সোল এজেন্ডগণ আকাশ-বাতাস ভারি করে তুলতেন। এটা তাদের পক্ষে সহজ হতো; এ জাতীয় প্রচারণার ভিত্তি এদেশে বিদ্যমান রয়েছে- কেননা মুসলিম ছাড়া অপরাপর ধর্ম-সম্প্রদায় এবং জাতিগোষ্ঠীর জনগণের ওপর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে চলা বর্তমান ও ঐতিহাসিক নির্যাতন-নিপীড়ন সম্বন্ধে বঙ্গীয় মুসলিমগণ অবগত নন, এবং এ বিষয়ে তারা আগ্রহও বোধ করেন না। সুতরাং সমগ্র বিশ্বে জাতি, গোষ্ঠী এবং শ্রেণীগত শোষণ, নিপীড়ন, উচ্ছেদের ঘটনাগুলোকে সামগ্রিক পরিপ্রেক্ষিতে বিচার বিবেচনা করে মানব সম্প্রদায় হিসেবে কোনো কিছু করার চিন্তা ও দায় থেকে তারা মুক্ত!
মূল বিষয় থেকে অনেকখানি সরে এসে এই কথাগুলো এখানে উল্লেখ করতে হলো। কিন্তু এগুলো অপ্রাসঙ্গিক নয়। সারাবিশ্বে মুসলিমগণ নির্যাতিত, ইসলাম বিপন্ন এবং এসবই কাফের-মুশরিক-ইহুদি-নাসারাদের কাজ- এ জাতীয় প্রচারণার সাথে এখন ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ নামক পর্ন মুভির নির্মাণ ও প্রচারণা যুক্ত হয়ে পরিস্থিতি কতোদূর বিপর্যস্ত করতে পারে, সে বিষয়ে কিছু আগাম ধারণা লাভের জন্যই বিষয়গুলোকে এভাবে উপস্থিত করলাম। আশা করি, এখন পর্যন্ত পাঠকদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটানোর মতো কিছু করি নি।
ওদিকে মুক্তমনা হিসেবে কথিত কিছু নিরীশ্বরবাদীর এ বিষয়ে নিজেদের মতো করে অনলাইন কর্মকাণ্ডেরও বিরতি নাই। নিজেদের নাস্তিক হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পর কেবল এই বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে একই বক্তব্য উপস্থিত করা ছাড়া আর কোনো দায়িত্ব পালনের তাগিদ তারা কখনোই অনুভব করেন না। ইসলাম-বিদ্বেষী পর্ন মুভিটির প্রচার শুরু হওয়ার পর কিছু সঠিক চিন্তাবিবর্জিত মুসলিমের কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষিতে তাদের মধ্যেও শুরু হয়ে গেছে মুসলিম এবং ইসলাম-বিরোধী প্রচারণা। এই নাস্তিকগণ নিজেদের মুক্তমনা বলে প্রচার চালালেও তাদের মধ্যে প্রকৃত অর্থে মুক্ত মনের দেখা পাওয়া মুশকিল। ইসলাম কতোটা অনগ্রসর ধর্ম এবং তার অনুসারীগণ কতোটা বর্বর হতে পারে এই আলোচনায় অহর্নিশ ব্যাতিব্যস্ত থাকলেও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের পরিপ্রেক্ষিত তথা আর্থ-সামজ-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল বিবেচনায় নিয়ে কোনো অর্থপূর্ণ আলোচনায় তাদের ব্যাপৃত হতে দেখা যায় না। মৌলবাদী প্রচারকদের মতো তারাও সমগ্র মুসলিম জনগোষ্ঠীকে (এবং অপ্রত্যক্ষভাবে অন্যান্য জাতি-ধর্ম সম্প্রদায়ের অধিভুক্তদেরকেও) একক ও অখণ্ড সত্তা হিসেবে চিহ্নিত করে- সেই স্তরেই তাদের প্রচারণার ক্ষেত্র সীমাবদ্ধ রাখে। বর্তমানে আলোচ্য চলচ্চিত্রটি সম্প্রচারের প্রতিক্রিয়ায় মুসলিমগণের একাংশের মধ্যে যে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে, এরা তার সমালোচনা এমনভাবে করছে যাতে মনে হচ্ছে প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ ধরনের কিছুই না হওয়ার মতো পরিস্থিতি বিশ্বের সব স্থানে (এবং বাংলাদেশেও) বিরাজ করছে! সুতরাং পরিপ্রেক্ষিত নয়, পরিপ্রেক্ষিত দ্বারা প্রভাবিত ও বিভ্রান্ত জনঅংশের বিরুদ্ধেই তাদের বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণার সিংহভাগ সীমাবদ্ধ। সেই আলোচনার মধ্যে ঘটনাকে তলিয়ে দেখার প্রচেষ্টা নেই, কার্য-কারণ সম্পর্কের সূত্রায়ন অনুপস্থিত, পরিপ্রেক্ষিত-পরিস্থিতি আলোচনার প্রয়াস সীমিত- কেবলি আরোপিত সংলাপের মতো গির্জার ঘণ্টাধ্বনির একটানা প্রতিধ্বনি শোনা যেতে থাকে সেই সমস্ত লেখা ও সংলাপগুলিতে।
সুতরাং ইহুদি হোক কিংবা অন্য কোনো জনগোষ্ঠীর অধিভুক্ত যে কেউই হোক না কেন, যারা এই মুভিটি উস্কানিমূলক তৎপরতার অংশ হিসেবে তৈরি করেছে, মুসলিমদের মধ্যে যারা এর প্রতিক্রিয়ায় ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালাচ্ছে, আর মুক্তমনা বলে আত্মপ্রচারিত বুদ্ধিবৃত্তিক জনগোষ্ঠীর যেই অংশ এর অগভীর সমালোচনায় চারিদিক তোলপাড় করে তুলছে- সবাই জ্ঞাত কিংবা অজ্ঞাতসারে একটি দুষ্টচক্রের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েই তাদের স্ব-স্ব অবদান রাখছে; যে দুষ্টচক্রের কাজ হলো সাধারণ জনগণের দৃষ্টিকে অপরিচ্ছন্ন রেখে নিজেদের শ্রেণী ও গোষ্ঠীগত স্বার্থ হাসিল করা, বর্তমান গুরুতর অন্যায্য এবং শোষণমূলক বিশ্ব-পরিস্থিতিকে বিদ্যমান অবস্থায় স্থিতিশীল রাখা। যারা সত্যিকার অর্থেই নিজেদেরকে মুক্ত মনের অধিকারী বলে মনে করেন এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সপক্ষ শক্তি হিসেবে থাকতে চান, তারা এই আপাত দৃশ্যমান ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া-বিপরীত ক্রিয়ার ঘোরালো এবং পারস্পরিক যুদ্ধংদেহী পরিস্থিতির অন্তরালে কার্যরত চক্রান্তমূলক বিষয়গুলো উন্মোচন করে উপযুক্ত তথ্য ও বিশ্লেষণ সহকারে তাদের স্বরূপ জনগণের কাছে তুলে ধরবেন এবং এই লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাবেন- এটাই সময়ের যথোপযুক্ত দাবি হওয়া উচিত।
ফটো ক্রেডিট: www.bdnews24.com
- আবিদুল ইসলাম
মন্তব্য
সহমত।
...........................
Every Picture Tells a Story
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
- আবিদুল ইসলাম
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
ধন্যবাদ, ভাই। ভালো থাকবেন।
- আবিদুল ইসলাম
অত্যন্ত স্পর্শকাতর ইস্যুতে খুবই প্রয়োজনীয় একটা লেখা। প্রথমত, আপনার গদ্যশৈলী পরিশীলিত ও সুসম্বদ্ধ- সেটা খুবই মুগ্ধ করল।
মুভিটা যে পর্ন, সে ব্যাপারে আপনি নিশ্চিত হলেন কী করে? আপনি কি মুভিটা দেখেছেন? সারা পৃথিবীতে অজস্র উস্কানিমূলক সাহিত্য ও চলচ্চিত্র আছে। এগুলোর কিছু বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য হয়েছে, কিছু আসলেই যৌক্তিক আলোচনা করেছে। কিন্তু নিষিদ্ধকরণ সংস্কৃতি একটি উগ্র অসহিষ্ণু সমাজের ছবি তুলে ধরে। ইউটিউব একটি অসাধারণ ওয়েবসাইট যেটি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় বাংলাদেশের ছাত্রদের ভীষণ সাহায্য করে। একটা উস্কানিমূলক ভিডিওর কারণে সাইটটিকে ব্যান করার কোন যৌক্তিকতা নেই। তাহলে তো আরজ আলী মাতুব্বর থেকে শুরু করে কবীর চৌধুরী, হুমায়ুন আজাদ -সবই ব্যান করতে হবে!
আমার এক বন্ধু ফেইসবুকের তর্কে হেরে গিয়ে শেষ পর্যন্ত বলেছে, "দাঁতের বদলে দাঁত, চোখের বদলে চোখ"= কিন্তু কার দাঁত? কার চোখ? নিহত মার্কিন রাষ্ট্রদূত হয়তো মুভিটির কথা জানতেনই না। সুলতান মাহমুদ বা বখতিয়ার খিলজির ভারতবর্ষ আক্রমণ কোন জেহাদ ছিল না, ছিল বিশুদ্ধ আগ্রাসন। তাহলে কি এদের মতে ভারত এখন আরব্য রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে? এই পাগলদের চিকিৎসার প্রয়োজন।
এই বক্তব্যগুলো আপনার লেখার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছে। যেহেতু এই নামে একটি ফোরাম আছে কাজেই শব্দের ব্যবহারে আরো সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। আমরা চাই এমন একটা মুক্ত সমাজ যেখানে আস্তিক- নাস্তিক- সংশয়বাদী-অজ্ঞেয়বাদী সবাই শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে এবং জীবনে অযৌক্তিক কোন কিছুকে স্থান দেবে না। অবশ্যই সে সমাজে যুদ্ধাপরাধিদের ঠাঁই নেই।
নির্ঝর অলয়
আপনার মন্তব্যের সাথে আমি সহমত।
---- ঠুটা বাইগা
নির্ঝর আলয়, যৌনতা এবং নগ্নতার বহিঃ প্রকাশ হিসেবে যদি পর্ন মুভি ধরেন তাহলে এটি হয়তো তা নয়। কিন্তু এটির চরিত্র পর্ন, এবং যিনি পরিচালনা করেছেন তিনি এবং কলা-কুশীলবরা পর্ন চরিত্রসম্পন্ন। আর হ্যাঁ, মুভিটি (আদপে ১৩ মিনিটের একটি ট্রেলার) আমি দেখেছি।
মুক্তমনা নামে ফোরাম/ব্লগসাইট থাকলেই কিন্তু শব্দটা তাদের পেটেন্ট করা হয়ে যায় না। আমি "মুক্তমনা হিসেবে কথিত কিছু নিরীশ্বরবাদীর" কথা এখানে বলেছি, ফোরামের কথা নয়। তারা নিজেদেরকে মুক্তমনা দাবি করেন কিন্তু কেবল দাবির মাধ্যমে তারা মুক্তমনা হয়ে যান না, যদি না তারা যথার্থভাবে মুক্ত মনের পরিচয় দেন। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
- আবিদুল ইসলাম
আপনি আমার নামের বানানটা ভুল লিখেছেন।
নিরীশ্বরবাদীদের ওপর এত ক্ষোভ কেন? যথার্থভাবে মুক্ত মনের সংজ্ঞা কী? ফেলু মিত্তিরের গপ্পগুলো ভালো করে পড়েছেন তো? নিরীশ্বরবাদী মাত্রই মুক্তমনা নন- সেটা ঠিক। আবার অনেক নিরীশ্বরবাদীই মুক্তমনের অধিকারী! আস্তিক্যবাদীরা কিন্তু কখনোই সেটা নন। কারণ এমনকি প্রত্যাদেশবিরোধী আস্তিকরাও শেষ পর্যন্ত বিশ্বাসের কাছে হার মানেন এবং ফাঁকগুলোতে ঈশ্বরকে গলিয়ে দেন। ভূত-ভগবান সব কিছুকেই যুক্তি দিয়ে যাচাই করে দেখা উচিত? ঈশ্বর আছেন কিনা সে যুক্তি দেখাতে কিন্তু নিরীশ্বরবাদীরা বাধ্য নন, কারণ যিনি অস্তিত্বে বিশ্বাসী যুক্তি দেখানোটা তার ঘাড়েই বর্তায়।
আর তাছাড়া এই নিরীশ্বরবাদীরাও যে ভেকধারী নন, সেটাই বা কে বলবে। আমার মতে, "কিছু তথাকথিত প্রগতিশীল" বা "ফ্রি থিংকার" - এ জাতীয় শব্দে লিখলে লেখাটা আরো সর্বাঙ্গসুন্দর হত।
ধন্যবাদ
নির্ঝর অলয়
কিন্তু "ফ্রি থিঙ্কার" এর বাংলা তো মুক্তমনাই !
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
টেকনিক্যালি ঠিক থাকা আর কি!
নামের বানান ভুল হওয়ার জন্য দুঃখিত। তাছাড়া সচলে কমেন্ট করতে গিয়ে আরেক ঝামেলায় পড়লাম। একজনের মন্তব্যের জবাব দিতে গেলে আরেকজনের মন্তব্যের সাথে সেটা জুড়ে দেয়া হচ্ছে। এতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
আমি নিরীশ্বরবাদীদের ওপর ক্ষিপ্ত নই। যেকোনো ব্যক্তি নিরীশ্বর হতেই পারে, তা নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যথা নাই। কিন্তু একজন নিরীশ্বরবাদীর কাজ কী? ঈশ্বরে অবিশ্বাস জানানোর পর তার কাজ কি সারাদিন ঈশ্বর-অবতার-পয়গম্বর-ভগবানদের গালাগালি আর ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করা? এটাই কি তার একমাত্র 'দায়িত্ব'? মানুষ হিসেবে বর্তমান বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তাকে মানবিকতার পক্ষে পরিবর্তনের সংগ্রাম করা কি তার কর্তব্য নয়। আপনাকে একটা উদাহরণ দিচ্ছি। ৯/১১-এর টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনায় যেকোনো নিরপেক্ষ বিশ্লেষক জানেন যে এটা সিআইএ এবং মোসাদের কাজ। এর সপক্ষে বহু প্রমাণ পাওয়া গেছে। কিন্তু এই তথাকথিত নিরীশ্বরবাদী মুক্তমনারা এই ঘটনা উপলক্ষে বিন লাদেনের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে প্রতিবছর। নিরীশ্বরবাদী হওয়া অর্থ কি তাহলে সত্যকে অস্বীকার করা? একজন মুক্তমনা নিরীশ্বরবাদী সেটা করে কী করে? তার কি উচিত নয় সত্যকে তুলে ধরা?
- আবিদুল ইসলাম
কিছু প্রমান দেখতে মুন্চায়
অবিদুল ইসলাম, আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট লিখেছেন সেজন্য আপনাকে ধন্যবাদ। কিন্তু অযথা অনাকাংখিত বিষয়ে তর্ক করে এর মূল বক্তব্যকে সরিয়ে দেবেন না। ৯/১১ এর ঘটনাতে সিআইএ/মোসাদ কন্সপিরেসি থিউরি অনেক পুরনো প্যাঁচাল। এর ভাত নেই এখন। ঘটনা উগ্র ইসলামী মৌলবাদী জঙ্গি সংঘটন ঘটিয়েছে এটা প্রমাণিত। আপনি বলতে পারেন যে, লাদেন এর মতো জঙ্গিদের উত্থানের পেছনে পাশ্চাত্য শক্তির রাজনৈতিক কূটচাল রয়েছে এবং সিআইএ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গিরাই শেষ পর্যন্ত ফ্রাংকেনস্টাইন এর মতো তাদের গুরুদের পুটু মেরে দিয়েছে, কিন্তু ৯/১১ এর পেছনে আমেরিকার নিজস্ব হাত আছে এই সরাসরি অভিযোগ ফালতু মনে হয়।
মুক্তমনা মাত্রই সব বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে হবে এমন তো নয়। তবে বিভিন্ন বিষয়ে তার জ্ঞান আহরণের প্রতি এবং সত্যি অনুসন্ধানের প্রতি আগ্রহ থাকবে এটা স্বাভাবিক মনে করি। সে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করবেনা এটাও একটা ধরণ বলে ধরে নেই। কিন্তু ভুল মানুষ মাত্রই হয় এবং অনেক মুক্তমনার বিভিন্ন বিষয়ে জানার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব থাকতে পারে তার মানে এই নয় তারা সেই বিষয়ে একটি বদ্ধমূল ধারণা পোষণ করেই এগিয়ে চলেছে। মুক্তমনা-বদ্ধমনা তর্ক এক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক। উগ্র ধর্মান্ধদের প্রতিবাদ করতে হলে শুধু মুক্তমনা হতে হবে এমন কিছু নেই, যেকোনো সুস্থ মানুষ সেটা করবে। লাদেনের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করলেই যে সে মুক্তমনা নয় এটা ভুল ধারণা। চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করার মতো কাজ লাদেন করেছে, তাকে গালি দিতে মুক্তমনা হওয়ার দরকার পড়েনা।
ধর্মান্ধ-মৌলবাদ-মুক্তমনা-নিরীশ্বরবাদী এই জায়গাগুলোতে আপনার বক্তব্য একটু স্পষ্ট হলে ভালো, নয়তো অযথাই তর্ক অন্যদিকে মোড় নিবে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
নির্ঝর আলয়, যৌনতা এবং নগ্নতার বহিঃ প্রকাশ হিসেবে যদি পর্ন মুভি ধরেন তাহলে এটি হয়তো তা নয়। কিন্তু এটির চরিত্র পর্ন, এবং যিনি পরিচালনা করেছেন তিনি এবং কলা-কুশীলবরা পর্ন চরিত্রসম্পন্ন। আর হ্যাঁ, মুভিটি (আদপে ১৩ মিনিটের একটি ট্রেলার) আমি দেখেছি।
মুক্তমনা নামে ফোরাম/ব্লগসাইট থাকলেই কিন্তু শব্দটা তাদের পেটেন্ট করা হয়ে যায় না। আমি "মুক্তমনা হিসেবে কথিত কিছু নিরীশ্বরবাদীর" কথা এখানে বলেছি, ফোরামের কথা নয়। তারা নিজেদেরকে মুক্তমনা দাবি করেন কিন্তু কেবল দাবির মাধ্যমে তারা মুক্তমনা হয়ে যান না, যদি না তারা যথার্থভাবে মুক্ত মনের পরিচয় দেন। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
- আবিদুল ইসলাম
"জানা গিয়েছে যে, 'ইনোসেন্স অব মুসলিমস' নামক পর্ন মুভিটার পরিচালক জন্মসূত্রে একজন ইহুদি ব্যক্তি।"
আপনার এই জানাটায় ভুল আছে,
মুভিটার পরিচালক জন্মসূত্রে মিশরীয় কপটিক খ্রীষ্টান।
আমি প্রথমে সরকারের ইউটিউব-গুগল বন্ধের কঠোর সমালোচক ছিলাম।কিন্তু অবস্হাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ঐটুকু না করলে কাটমোল্লারা আম্রিকা-ইজরায়েল[সম্ভবত ভারত]'র সাথে আ'লীগের [এই ইস্যুতে] একটা কাল্পনিক যোগসূত্র আবিষ্কার করে সরকার-বিরোধি এক গরম আবহাওয়া দাঁড় করিয়ে ফেলতো।বিষয়টা লজ্জাজনক তবু বলতে বাধ্য হচ্ছি, এইসব ঘটনায় বোঝা যায়, বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে আলাদা কিছু একটা হয়ে উঠতে পারে নাই।
যে কোন সরকার'ই সরকার-বিরোধি আন্দোলন নিয়ে চিন্তিত থাকে, সেই বিবেচনায় সিদ্ধান্ত সঠিক ছিলো বলতে হবে।
"অনিশ্চিত"
সহমত
ধন্যবাদ।
- আবিদুল ইসলাম
কাঠমোল্লাদের শান্ত রাখার জন্য বা,আ,ল সরকার ইউটিউব বন্ধ করেছে? এত দুর্বল সরকারকে তাহলে রাষ্ট্র চালাতে বলেছে কে? নাকি, ক্ষমতার লোভে গদি ধরে রাখার জন্য?
আপনার কমেন্ট পড়ে একটা পুরনো বিষয় আবার মনে পড়ল, 'অধিকাংশ বাংলাদেশীর (হোক সে শিক্ষিত বা, অশিক্ষিত) মনে দেশ ও দেশের উন্নতি অপেক্ষা দল, দলীয় সরকার বেশি প্রিয় ও মূখ্য বিষয়।' দেশ চুলোয় যাক, দল টিকলেই হল।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
কাঠমোল্লাদের শান্ত রাখার জন্য বা,আ,ল সরকার ইউটিউব বন্ধ করেছে? এত দুর্বল সরকারকে তাহলে রাষ্ট্র চালাতে বলেছে কে? নাকি, ক্ষমতার লোভে গদি ধরে রাখার জন্য?
এই ধরণের ইস্যুতে [যে কোন] সরকার'ই যে নিতান্তই দূর্বল, সে বিষয়ে কি আপনার সন্দেহ আছে!
অধিকাংশ বাংলাদেশীর (হোক সে শিক্ষিত বা, অশিক্ষিত) মনে দেশ ও দেশের উন্নতি অপেক্ষা দল, দলীয় সরকার বেশি প্রিয় ও মূখ্য বিষয়।
আপনার কমেন্ট পড়ে তো আমারও একটা বিষয় মনে পড়ল "অধিকাংশ বাংলাদেশি" হোক সে শিক্ষিত বা, অশিক্ষিত) একখান মন্তব্য পড়েই তার রাজনৈতিক অরিয়েন্টেশন সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে যায়।আপনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন আমি এই দলীয় সরকারের সমর্থক!
সরকার ঐটুকু না করলে "দেশ চুলাতেই যাইতো পারতো"। মোল্লারা একদিনের পরিবর্তে টানা ২/৩ দিন হরতাল দিতে পারতো।বাংলাদেশে কোন "সবল" সরকার মোল্লাদের এইসব কার্যক্রম থেকে নিবৃত
করতো পারতো- জান্তে মন চায়!
"তিনদিনের হরতাল সাথে সরকার-বিরোধি আন্দোলন বনাম ইউটিউব/গুগল ব্লক সাথে একদিনের হরতাল"- কোন অপশনটি দেশের জন্য ভালো- আপনার কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম?
"অনিশ্চিত"
অনিশ্চিত,
তার মানে এখন সাপোর্ট করেন।
তো?
কাঠমোল্লারা যা ইচ্ছে তাই করবে, আর সরকার পরেরবার ইলেকশানে বিজয়ী হবার জন্য ইনিয়ে বিনিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো কাঠমোল্লাদের সাপোর্টে যায় এমন কাজ করবে?
আবারো দল আর সরকারের মাঝে গুলিয়ে ফেললেন। সরকার আর দলকে আলাদা করতে শিখুন। অবশ্য যেখানে বাংলাদেশী শিক্ষিত সমাজের এক বড় অংশ রাষ্ট্র ও ধর্মকে আলাদা করতে পারে না, সেখানে সরকার আর দলকে আলাদা সত্ত্বা চিন্তা করতে পারা বহু দূরের কথা।
'বাংলাদেশ সরকার'-এর কাঠমোল্লাদের নিবৃত করার মত সার্মথ্য ও কাঠামো আছে, কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে 'বা,আ,লী' সরকারে বসে সরকারের সেই ক্ষমতা ব্যবহার করতে রাজি নয়।
বাংলাদেশ সরকারের প্রচারমাধ্যম তো এত দুর্বল নয়। বাআলী 'বাংলাদেশ সরকারের' প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে কাঠমোল্লাদের অন্যায় দাবির বিপক্ষে যুক্তি দেখাতে পারত। বিরোধীদের বিপক্ষে 'জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন' দেখাতে পারে আর জনপ্রিয়তা কমবে বলে কাঠমোল্লাদের বিরুদ্ধে দেখানো যায় না, তাই না?
অন্যায়-অবিচার একটি সমাজে তখনই বিস্তৃত হয় যখন ন্যায়ের সমর্থকরা চুপ করে থাকে অথবা, ন্যায় প্রতিষ্ঠার সামর্থ্যবান মানুষরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।
বাআলী গঠিত সরকার ন্যায়ের পথে থাকলে ওদের জনপ্রিয়তা কমত, দেশে সংঘর্ষ হত কিন্তু নিমমোল্লারা বসে যেত।
গ্রেটার স্যাকরিফাইস, গ্রেটার এচিভমেন্ট। দলগুলোর সরকারের গদি টিকিয়ে রাখা নয় বরং ফলাফল যাই হোক দেশের উন্নতি করার মানসকে প্রাধান্য দিতে হবে। তা না হলে, কুপির আলো কখনো সূর্যের আলোই রূপান্তরিত হবে না।
পাকিস্তান আর্মির বাঙালী অফিসার ও জোয়ানরা একাত্তরের মার্চে কি জানত নয় মাস পরে দেশ স্বাধীন হবে? জানতো না। তারপরও ওঁরা নিজেদের সবকিছু ত্যাগ করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, কেন? ভাবতে থাকুন, উত্তর পেয়ে যাবেন।
সারাক্ষণ অনিশ্চয়তার মাঝে থাকলে কিভাবে হবে? আমরা সারাজীবন বাঁচবো না কিন্তু যতক্ষণ বাঁচি ভাল মত বাঁচার চেষ্টা করাটাই শ্রেয়।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
মেরিল স্ট্রিপের আয়রন লেডি মুভিটি দেখেছেন কিনা জানিনা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের অসারতা এবং অগুরুত্বপূর্ণতা বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিনিধি মার্গারেট থ্যাচারকে (তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রি) এই যুদ্ধে যাওয়া থেকে নিবৃত করতে চেয়েছিল। জবাবে থ্যাচার বলেন
কথাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র পরিচালনায়। আপনি কোনটার বিরোধীতা করবেন আর কোনটাকে মাথায় নিয়ে নাচবেন সেটা প্রতিদিন পরিবর্তন হবার কথা নয়, যদি শিশু না হোন।
প্রায় সহমত।
- আবিদুল ইসলাম
ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ। এটা আমি জানতাম না, আমি যতোগুলো জায়গায় পড়েছি সেখানে স্যাম বাসিলকে ইসরায়েলি বংশোদ্ভূত একজন আমেরিকান ইহুদি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ সরকারকে কে কী বলল তার ভিত্তিতে যদি তারা নিজেদের কর্মকাণ্ড নির্ধারণ করে তাহলে বলতে হয় তাদের নিজস্ব কোনো চরিত্র নেই।
- আবিদুল ইসলাম
স্যাম বাসিল কিন্তু ইহুদী না, একজন মিশরীয় কপটিক খ্রিষ্টান। সব কিছুতেই ইহুদীদের গালাগালি আর তাদের ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করা এখন একটা হাস্যকর পর্যায়ে চলে গেছে।
এটা আমি জানতাম না, ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। আমি এর আগে যে সকল সূত্র থেকে পড়েছি সেখানে তাকে ইসরায়েলি বংশোদ্ভূত আমেরিকান ইহুদি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। যা-ই হোক এতে লেখাটির মূল বক্তব্যে কোনো মৌলিক হেরফের হবে না বলে আশা করি। আর আপনার লেখার দ্বিতীয়াংশের সাথে সহমত পোষণ করলাম।
- আবিদুল ইসলাম
সহমত...
অনেক সুন্দর করে লেখার জন্য ধন্যবাদ !!!
আপনাকেও ধন্যবাদ।
- আবিদুল ইসলাম
আরেকটু খোঁজ-খবর নিয়ে লিখলে ভালো হত। দুইটা ভুল ফ্যাক্ট। ১, মুভিটা পর্ণ মুভি না, অরুচিকর বলতে পারেন। ২, যে বানিয়েছে সে কপ্টিক ক্রিশ্চিয়ান, ইহুদি না।
মূল বক্তব্য ভাল লেগেছে। তবে, নাস্তিকদের একহাত নেয়ার কোন প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয়না।
-পাভেল
কাঠমোল্লারা ভুল করছে, সে ভুল ঠিকই আমরা ধরিয়ে দিতে পারি, নাস্তিকরা ভুল করলে সে ভুল কেন ধরিয়ে দিতে পারব না???
'ইনোসেন্স অব মুসলিমস'কে কেন পর্ন মুভি বলেছি তার উল্লেখ ওপরে একটা মন্তব্যে করেছি। আর দ্বিতীয়াংশের বিষয়েও বক্তব্য দিয়েছি, বিষয়টা আমার জানা ছিল না। বিভিন্ন জায়গায় স্যাম বাসিলকে ইসরায়েলি বংশোদ্ভূত আমেরিকান ইহুদি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সব নাস্তিককে একহাত নেই নি। যারা নিজেদের মুক্তমনা দাবি করে চূড়ান্ত বিচারে বদ্ধ মনের পরিচয় দেন তাদের কথা উল্লেখ করেছি।
- আবিদুল ইসলাম
আমেরিকায় অন্যায় হইছে,
আমার উচিত অন্যায়কারিকে শাস্তি দেয়া, না পারলে এটা অন্যায় সেটা মুখে বলা, তাও না পারলে অন্যায়টা অন্তর থেকে ঘৃণা করা। আমি প্রতিকার/ প্রতিরোধ/ প্রতিবাদ কিছু করতে পারলে ভালো, না পারলে সেটা আমার অক্ষমতা।
কিন্তু না পেরে আমি দেশে আমার বউ পিটাইলাম, এরপরে তাকে হাজার টাকা খরচ করে চিকিৎসা করলাম, ব্যপারাটা কি ঠিক? নিজের ক্ষতি করলে অপরের অন্যায়ের প্রতিরোধ/ প্রতিবাদ কিছু কি হয়?
সদস্যনাম: sacholtanvir
অফটপিক প্রশ্ন: মুসলিমদের জন্য ইউটিউব দেখা হালাল কি?
'you tube হালাল' [restrict:সচল][/restrict] আইটা লইয়া প্রশ্ন খানা ভালু পাইচি ঃ)
এইটাই গুরুত্বপূর্ন কূশ্চেণ
-- এইটা বলা কঠিন, তবে হালাল টিউব বলতে একটা জিনিস আছে, দেখতে পারেন,
http://www.halaltube.com/
বহুত ফায়দা হবে ইনশাল্লাহ
-- রামগরুড়
আপনার লেখার ধরণ ভালো লেগেছে কিন্তু একমত নই।
আপনি ট্রেইলরটিকে পর্ণ কিভাবে বললেন !!
আরেকটি কথা আমি ট্রেইলরটি দেখেছি। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কথাটি কেউ বলছে না , সেটি হলো মহানবীকে নিয়ে নারী সম্পর্কিত যে কয়টি দৃশ্য দেখানো হয়েছে তার (হাফসা কর্তৃক নবীকে জুতার বাড়ি মারার মতো হাস্যকর দৃশ্য এবং আরোপিত সামান্যটুকু ছাড়া)সবটুকুই কিন্তু সত্য অন্তত কোরান হাদিস তাই বলে।
আপনি যাই বলেন ,যে যতই দুষ্টচক্রের মধ্যে থাকুক,ফায়দা লোটার চেষ্টা করুক এরকম সহিংস আচরণ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
গুছিয়ে লিখেছেন। সহমত।
আমার কচ্ছপগতির ইন্টারনেট কানেকশনের কারণে, ইউটিউব যদি খোলা থাকতো তাহলেও আমার পক্ষে মুভিটা দেখা বা ডাউনলোড করা সম্ভব হতো না। তাই যারা মুভিটি দেখেছেন তাদের কেউ কি একেবারে পয়েন্ট ধরে ধরে বলতে পারবেন মুভিটির কোন্ কোন্ অংশ এবং কেন আপত্তিকর? না জেনে কোন বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। অমুক বলেছে তাই এটা ভালো বা খারাপ এমন সিদ্ধান্তে যেতে আমার আপত্তি আছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কি মন্দভাগ্য! শুধু আপনার পোষ্টেই নয়, যতখানে খুঁজেছি, এ পর্যন্ত যতজনকে জিজ্ঞেস করলাম, ছবিটা সম্পর্কে কেউই বিস্তারিত ধারণা দিতে পারলেন না। অথচ কান আছে কিনা চিলে নিয়ে গেছে সেটা নিশ্চিত হতে ছবিটার বিষয়বস্তু ও আপত্তির কারণগুলিই তো আগে পরখ করে দেখা দরকার তাই না?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
সচলায়তন কে ধন্যবাদ এরকম একটি লেখা প্রকাশ করার জন্য। কিন্তু সমস্যা হল মৌলবাদী, ডানপন্থী বাংলাদেশিরা লেখাটি আদৌ পড়বে কিনা? বহু লোক http://www.sachalayatan.com কে ভারতের নীল নাকশা মনে করে। দুঃখের দুঃখের ব্যাপার হল বিনপি মনা লোকেরাও তাই মনে করে।
মুক্ত চিন্তা নিয়ে বেশ এক্তা তর্ক হচ্ছিল দেক লাম। মুসলিম বিশ্বে 'মুক্ত ছিন্তা' নাই দেখেই আজকে এই অবস্থা। 'হাইপার ইস লামি-সিতি' বলে একটা তাত্ত্বিক শব্দ আছে। আজকে সমস্ত 'মুসলিম বিশ্ব' এই জ্বরে আক্রান্ত। বাংলাদেশ তার 'ভ্রান্ত' সংবিধান এর পাল্লায় পরে এই ইসলামী রিভাই-ভালিস্তে আন্দোলন এ শরীক হয়েছে ।
সংবিধান রক্ষণ শীল ঘারানার যতদিন থাকবে (পাকি দোষে দুষ্ট থাকবে) কিসসু হবে না এই আভাগা দেশে।
নতুন মন্তব্য করুন