আগের পর্ব এইখানে -
http://www.sachalayatan.com/guest_writer/46479
ফিরে দেখা - পর্ব দুই – মেলায় মেলাই খাবার
“স্বাগতম! শাস্রিয়াকাল্! খুশ্আম্দিদ! ওয়েল্কাম! ‘ওস্তাদের মার শেষ পাতে’ শোয়ের সীজন টু-এর দ্বিতীয় পর্ব ‘মেলায় মেলাই খাবার’এ আপনাদের সবাইকে সুস্বাগতম্! আমি আপনাদের বন্ধু রিমি এসে গেছি আপনাদের পছন্দের সেরা শো ‘ওস্তাদের মার শেষ পাতে’র সীজন টু-এর দ্বিতীয় পর্বে। আমাদের সঙ্গে আছেন প্রথম পর্বের ‘ঝাড়াই’ উপপর্বে নির্বাচিত সেরা পঁচিশজন প্রতিযোগী আর আমাদের প্রিয় বিচারকেরা। আমাদের পঁচিশজন প্রতিযোগীকে আমরা ভাগ করছি পাঁচটি টীমে। প্রত্যেক টীমে পাঁচজন করে প্রতিযোগী। এই পাঁচটি টীমের পাঁচজন লীড হলেন প্রথম পর্বের ‘বাছাই’ উপপর্বে নির্বাচিত সেরা পাঁচ প্রতিযোগী। আজকের পর্বের বিশেষ আকর্ষন হল বিচার পদ্ধতি। তার আগে আরেকবার আলাপ করিয়ে দিই, আমাদের মধ্যে বিচারক হিসেবে রয়েছেন জিবে জল আনা খাঁটি বাঙ্গালি ফাস্ট-ফুড চেইন রেস্টুরেন্ট ‘বেঙ্গল এক্সপ্রেস’এর মালিক বান্টি ঘোষ! রয়েছেন বাজাজ ফাইভ-স্টার গ্রুপ অফ্ হোটেলসের সাথে যুক্ত একমাত্র বাঙ্গালী আমাদের সব্বার ফেভারিট মাস্টার শেফ্ কুনাল গোস্বামি। রয়েছেন ‘এই রাত তোমার আমার’ ছায়াছবির হিট্ এবং হট্ হার্টথ্রব রূপা রায়। আর আমাদের মধ্যে রয়েছেন বিখ্যাত ম্যাজিসিয়ান মেঘনাদ গুপ্তা!” তবে আজ আমাদের চারজন বিচারক প্রতিযোগীদের বিচার করে নম্বর দেবেন না। তারা শুধু নজর রাখবেন প্রতিযোগীরা সব নিয়মকানুন মানছেন কিনা। আজকের পর্বের বিচারক হলেন আমাদের সংগে উপস্থিত দর্শক বন্ধুরা।”
ক্যামেরা দর্শকদের উপর পড়ল। দর্শকরা নিজেরাই নিজেদের তালি দিয়ে উৎসাহিত করলেন।
রিমি আবার দর্শকের উদ্দেশ্যে বলল, “মনে করুন আপনারা এসেছেন একটা মেলায়। পাঁচটি দল পাঁচটি স্টল দিয়েছে এই মেলাতে। প্রতিটি স্টলে আছে জিভে জল আনা সব খাবার। কোন দল কত তাড়াতাড়ি কত বেশী দর্শককে খাওয়াতে পারে সেটাই হল বিচার্য। আগে থেকে বানিয়ে রাখা চলবে না। দর্শকদের দিতে হবে গরমাগরম খাবার। দর্শকরা নম্বর দেবেন খাবারের স্বাদ, নতুনত্ব ইত্যাদি বিবেচনা করে। বিচারকেরা দেখবেন প্রতিযোগী দলগুলি সব নিয়ম মানছে কিনা।”
প্রতিযোগিতার নিয়ম বুঝিয়ে দেবার পর প্রতিযোগী দলগুলো দু-এক কথায় নিজেদের পরিচয় দিল। তারপর সবাই নিজের নিজের স্টলে গিয়ে প্রস্তুতি শুরু করল। পনেরো মিনিট প্রিপারেশন টাইম। তারপর দর্শকরা স্টলে স্টলে ঘুরে খেতে শুরু করলেন।
দ্বিতীয় পর্বে বিচারকদের সেরকম ভুমিকা নেই। সবাই এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। বান্টি ঘোষ ডিরেক্টর মিস্টার বোসকে পাকড়াও করলেন, “কি দাদা আপনার প্রোগ্রামের টি-আর-পি তো উঠছেই না। দাদা ওসব রান্নার শেফ, যাদুকর, ভেল্কিবাজে টি-আর-পি বাড়বে না। বলিউড থেকে আর্টিস্ট আনান।”
রাজা বোস বললেন “বাজেট কোথায়? রান্নার শো করার ঝক্কি তো জানেন না। একি আর নাচ গানের শো, যে সেট সাজিয়ে দিলাম চুকে গেল ল্যাঠা? এই এতো বড় কিচেন সেট আপ করার ঝক্কি কম? ইনগ্রেডিয়েন্টের কোয়ালিটি মেইনটেন কর, আগুন নেভানোর ব্যাবস্থা রাখো। ফায়ার ব্রিগেড, পুলিশ, ফুড ডিপার্টমেন্ট কত ঝামেলা।”
-“আরে আপনি কি সব নিয়ম কানুন মেনে শো চালাবেন ভেবেছেন নাকি? তবেই হয়েছে। এই ফায়ার ব্রিগেড, পুলিশ, ফুড ডিপার্টমেন্ট এদের শুধু জায়গা মত খাইয়ে দিন ব্যাস সব রিপোর্ট ও-কে দিয়ে দেবে। আপনাকে ফালতু ইনভেস্ট করতে হবে না। অনেক কম খরচে কাজ নেমে যাবে।”
-“কি জানি ভয় করে, যদি সত্যি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে?”
-“তাতে আপনার কি? আপনাকে কেউ ছুঁতেও পারবে না যদি সব রিপোর্ট ঠিক থাকে। আর তখন দরকার হলে আরো কিছু খাইয়ে দেবেন। দেখবেন তাতেও আখেরে লাভই হবে।”
-“কিন্তু হয়ও তো কখোনো অ্যাক্সিডেন্ট, আপনার হোটেলেই তো একটা ইন্সিডেন্ট হয়েছিল।”
-“আপনি আমাদের ব্যাঙ্কোয়েট হলে আগুন লাগার ইন্সিডেন্টটা বলছেন? কিন্তু তাতে আমার এক পয়সাও লস হয়নি। জাস্ট দুটো জিনিষ প্রমান করতে হল। এক হল সময় মত দমকল পৌঁছয়নি। সেটা পুলিসকে হাজার পাঁচেক খাওয়াতেই হয়ে গিয়েছিল। দুই হল আগুনটা লেগেছিল যারা ব্যাঙ্কোয়েট হলটা বুক করেছিল তাদের দোষে। একটা বার্থডে পার্টি চলছিল। প্রচুর বাচ্চা হইহল্লা করছিল তাই সেটা প্রমান করতেও খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। ব্যস কেল্লা ফতে। তিরিশ জন ইনজিওরড আর পনেরোটা ডেথের সমস্ত ক্ষতিপূরন গর্ভমেন্ট দিয়ে দিল।”
-“তাও একটা ব্যাড পাব্লিসিটি তো হল।”
-“সেরকম কিছু নয়। দু একটা ভালো ডিসকাউন্ট প্যাকেজ বের করলাম, দু-তিন মাসেই আবার রেস্টুরেন্টে ভীড় উপচে পড়ল। আমাদের পাব্লিকের মেন্টাল এজ হল তিন বছরের বাচ্চার সমান। যে কোনো ইন্সিডেন্ট তিন মাসের মধ্যে ভুলে মেরে দেয়।”
-“আপনি যখন আশ্বাস দিচ্ছেন, দেখি এদিকে কিছু খরচ কমানো যায় কিনা।”
ম্যাজিসিয়ান গুপ্তা একটু দূরে বসে কফি পান করছিলেন। এই কথোপকথন তাঁর কানে গেল। মনে হল পনেরো জনের আগুনে পুড়ে মারা যাওয়াটা যেন এদের কাছে কোনো ক্ষতি নয়। শুধু ক্ষতিপূরনের টাকাটা পকেট থেকে দিতে হল না এটাই যেন খুব আনন্দের কথা। তিনি মনে মনে শিউরে উঠলেন। তাঁর ম্যাজিক শোতে তিনি বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় করেন সেফটি-সিকিউরিটির জন্য। তাতে মাঝে মাঝে লাভের অঙ্ক বেশ কমে যায়। কিন্তু ওই খাতে খরচ কমানোর কথা তিনি ভাবতেও পারেন না।
এদিকে বান্টি ঘোষ মিস্টার বোসকে আরো নানান কথা বলছিলেন। ম্যাজিসিয়ান গুপ্তা শুনলেন বান্টি বলছেন “আপনার শো এর অ্যাঙ্কর চেঞ্জ করুন। মেয়েটা সেরকম হট নয়। আরে দেখছেন না, অন্য চ্যানেলের রীয়ালিটি শো এর শাঁওলি বলে যে মেয়েটা করছে, দারুন হট আর অ্যাকোমোডেটিং। কোনো ন্যাকামি নেই। নাম করতে চাই না, কিন্তু আমার এক বন্ধুর কাছে শুনেছি ফার্স্ট শোতেই অ্যাপ্রোচ করেছে একটা ইভিনিং স্পেন্ড করতে, এককথায় রাজী। আর এই রিমিকে দেখুন, জাস্ট জিজ্ঞেস করলাম ইভনিং-এ কি করছ, তাতেই এমন সতীপনা শুরু করল যেন সাক্ষাৎ সাবিত্রীর ছোটবোন। এসব জিনিস দিয়ে শো টানতে পারবেন না, শাঁওলিকে বা ওর মত অ্যাঙ্কর চাই দাদা।
-“শাঁওলিকে পাব না। আপনার বন্ধু ছাড়াও অনেকের সঙ্গে ও অনেক ইভিনিং স্পেন্ড করেছে, তাতে ওর ভালোই হিল্লে হয়ে গেছে। চেন্নাই গেছে বেশ কয়েকটা বি গ্রেড ফিল্মের অফার নিয়ে। টি-আর-পি আমার সীজন ওয়ানে বেশ ভালোই ছিল। না হলে আমাদের প্রোডিউসার অনিল বাজাজ আবার সীজন-টুএ টাকা ঢালতে চাইতেন না। রিমির অ্যাঙ্কারিং বেশ ভাল। মার্কেট সার্ভে বলছে ও কয়েক মাসেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, স্পেশালি মহিলাদের মধ্যে। আমার শো এর অডিয়েন্স নাইন্টি পার্সেন্ট মহিলা, হট অ্যাঙ্কারের অত দরকার নেই। আর ও যথারীতি ‘ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট’ কোর্স করে এসেছে। অ্যাঙ্করিং শুধু নয়, আমার শোয়ের অনেক ক্রীয়েটিভ আইডিয়াও ওর দেওয়া। এই যে রাউন্ড-গুলো, তার পরিকল্পনা, একেকটা রাউন্ডের সব মজাদার নিয়ম, প্রতিযোগিনীদের সাথে মিশে যাকে বলে হাল্কা গ্রুমিং করা, সবই ও একা হাতে সামলায়। বেশীর ভাগ প্রতিযোগিনীই প্রথম ক্যামেরার মুখোমুখি হচ্ছে, কাজেই চালচলন, পোশাক-আষাক, কথা-বার্তা এইসব নিয়ে একটু ট্রেনিং দিতেই হয়। অন্যান্য রীয়্যালিটি শো-এ আলাদা খরচ করে প্রোফেশানাল গ্রুমিং-এর জন্য স্টাফ রাখতে হয়। কাজেই রিমিকে বদলানোর কোন প্রশ্নই নেই। আপনি নাহয় বন্ধুর চেষ্টায় ওই শাঁওলীর শোয়েও ঢুকে পড়তে চেষ্টা করুন, বিচারক না হয় নাই হলেন। প্রতিযোগী হয়েই নাহয় ঢুকে পড়ুন। রিমির দিকে বেশী ঘেঁষবেন না, ও শাঁওলি নয়, ভদ্র ঘরের মেয়ে।”
-
“থামুন তো মশাই আর ভদ্রঘর দেখাবেন না। ভদ্রঘরের মেয়েরাই সব থেকে বেশী ঘোমটার মধ্যে খ্যামটা নাচে। শাঁওলির মত মেয়েরা ঢের ভাল, শরীর নিয়ে কোনো ট্যাবু নেই। সব কিছুরই একটা প্রাইস আছে। ঠিক মত দাম দিলে রিমিও লাইনে আসবে।”
এইসব অরুচিকর কথাবার্তা শুনতে ইচ্ছে হচ্ছিল না ম্যাজিশিয়ান গুপ্তের ধীরে ধীরে উঠে প্রতিযোগিতার জায়গায় ফিরে গেলেন। প্রতিযোগীদের প্রস্তুতি প্রায় সম্পুর্ন। কিছুক্ষন পর ক্যমেরা চালু হল। দর্শকরা সব স্টলে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন খাবার চাখতে লাগলেন।
দুটো স্টলে ভীড় উপচে পড়েছে। প্রথমটি হল ঝিলাম চন্দ্রার নেতৃত্বে স্টল বি তে। এরা তৈরী করছেন এগ-বেনেডিক্ট। নামটা বাঙ্গালির অপরিচিত। স্বাদেও বাঙ্গালি রান্নার থেকে আলাদা। রান্নাটি নয়ন মনোহর। গোল করে কাটা বানরুটির উপর মাখন মাখিয়ে তার উপর লেবুর রসে জারানো সসেজ, অলিভ, ক্যাপ্সিকাম, লঙ্কা কুচি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সবার উপর ডিমের কুসুম হাল্কা ভাপিয়ে সুন্দর ডেকরেশান করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্পুর্ন অচেনা এই আমেরিকান রেসিপি বাঙ্গালি খাদ্যরসিক কে পরিবেশন করার আইডিয়াটা ঝিলামের মাথা থেকেই বেরিয়েছে। রেসিপিটা যে দর্শকদের মধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে বলাই বাহুল্য। ঝিলাম একদিকে কনভেন্ট শিক্ষিতা এবং সুবক্তা, অন্যদিকে বেশ রসিকা। একদিকে পরিবেশনের সময় হাল্কা হাসি মস্করা করছিল, অন্য দিকে পরিবেশনের ফাঁকে ফাঁকে এগ বেনেডিক্টের ইতিহাস, ভূগোল, রকমফের ইত্যাদি নানা বিষয়ে দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিল।
আর যে স্টলের সামনে লম্বা লাইন সেখানে চন্দ্রপুলি তৈরী করছেন সকলের প্রিয় প্রতিমা মাসিমা। মাসিমা একাই একশো। দলের বাকি চার জন মূলত পরিবেশন করছেন। প্রতিমা পালিত একা হাতে সুজি, নারকেল, চিনি দিয়ে মাখা পুলি ঘিয়ে ভেজে তুলছেন। আগে থেকে নতুন পাটালি গুড় আর এলাচ দেওয়া দুধের ক্ষির বানিয়ে রেখেছেন। গরম পুলি ক্ষিরে ফেললেই গরম গরম চন্দ্রপুলি রেডি। গাওয়া ঘি, পাটালি গুড়, এলাচের গন্ধে চারিদিক মঁ-মঁ করছে। প্রতিমা মাসিমা ব্যস্ততার মধ্যেও প্রায় সব দর্শকের সাথে -“ভাল করে খাও বাবা”, বা “ভালো লাগলে আর একটা নিও” –এরকম দু-একটা কথা বলছেন।
বাকি তিনটি স্টলের একটি তে তেমন লোক নেই। এরা চিকেন রোল বানিয়েছেন। নতুনত্বের অভাবে সেদিকে কেউ ভীড় করেনি। টীম সি স্টলের নেত্রী স্পেকট্রাম বিপিও-এর কর্মরতা সাহানা বসু, এরা বানিয়েছিলেন ম্যাংগো চিকেন কাবাব। প্রথম দিকে হটকেকের মত সবাই চাখছিলেন। কিন্তু প্রথম লটের কাবাব শেষ হয়ে যেতে কাবাব বেক হতে অনেক সময় লাগছে। অনেকে অপেক্ষা করে ফিরে গেলেন। তাড়াহুড়োতে কাবাব ভাল করে বেক না করেই পরিবেশন করতে গেল টীম সি। তাতে অনেকের কপালেই জুটল আধকাঁচা কাবাব। টীম ডি করেছিল চিংড়ি মাছের বড়া। খুবই সুস্বাদু, কিন্তু উপকরনের আন্দাজ ঠিক মত না হওয়াতে তাদের কয়েকটি দরকারি উপকরন অর্ধপথেই শেষ হয়ে গেল।
দর্শকরা খাওয়া দাওয়া শেষ করে ভোট দিলেন। দেখা গেল সব থেকে বেশী ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছে প্রতিমা মাসিমার টীম, টীম এ। মাত্র তিনটি ভোট কম পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছে টীম বি যার নেত্রী একুশ বছর বয়সী হোটেল ম্যানেজমেন্টের ছাত্রী ঝিলাম চন্দ্রা। এই দুটি টিমের দশ জন যাবেন তৃতীয় পর্বে।
রিমি তার স্বভাবত উচ্ছল ভংগীতে ঘোষনা করল “বোঝাই যাচ্ছে আমাদের শোতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে সাবেকী বাঙ্গালি খাবার এবং আধুনিক বিদেশী খাবারের মধ্যে। চন্দ্রপুলি আর এগ-বেনেডিক্ট টীমের কর্ত্রীদের সাথে আসুন একটু কথা বলা যাক। আচ্ছা, ঝিলম, তুমি এরকম একটা অপরিচিত রেসিপি নিয়ে স্টল দিলে, তোমার এই বিদেশী রেসিপি যদি আমাদের সবার না পছন্দ হত? ভয় করেনি?”
- “নানা, ভয় কেন করবে? এই শো-টা আমার ট্যালেন্টের একটা প্ল্যাটফর্ম। আমি চাইনা সেই বস্তাপচা রেসিপি আবার আমার বিচারকদের গেলাতে। অনেকেই এই শো-এ নতুনত্ত্বের অভাবে ছিটকে গেছেন। আমার রান্না খেয়ে কেউ যেন সেই অপবাদ দিতে না পারে।”
- “কিন্তু এটাও দেখা যাচ্ছে ঝিলম যে একেবারে সাবেকী পরিচিত খাবারও কিন্তু বিচারকদের পছন্দের তালিকায় উঠে আসছে। আসলে আমাদের দেশের খাবারগুলোও খুব ইউনিক। চন্দ্রপুলি তুমি বিশ্বের আর কোন প্রান্তেই পাবেনা।”
- “না রিমিদি। এটা আপনার ভুল ধারণা। চন্দ্রপুলির মত রান্না অন্য দেশেও বেশ কমন। যারা জানে না, বা চন্দ্রপুলি খেয়ে গলে গেলেন তাদের জানিয়ে রাখি ফ্রান্সে ‘ম্যাডেলেইন’ বলে একরকমের খাবার আছে যা একদম আমাদের চন্দ্রপুলির মত দেখতে আর অনেকে এটি দুধে ডুবিয়ে খান। আমি চেষ্টা করেছি এইসব কমন খাবার যা কিনা কোন না কোন নামে সব দেশেই প্রচলিত সেইসব খাবারকে অ্যাভোয়েড করতে।”
- “যাক, ঝিলমের থেকে শুনলাম, ইচ্ছে রইল ফরাসী দেশের ম্যাডেলেইন খেয়ে দেখার। মাসিমা, আপনি যা বানালেন তাতো দেখতেই পাচ্ছেন ফাটাফাটি হয়েছে। এরকম কঠিন আর সময়সাপেক্ষ রান্না নির্বাচন করলেন কেন?”
- “না রে ভাই। পুলি তো কঠিন নয়। আর মেলাতে পরিবেশন করার পক্ষেও বেশ ভালো। আমি চাইনা কোন চটকদার নাম আর বিজাতীয় খাবার বানিয়ে বাজিমাত করতে। আমার অভিজ্ঞতা তো কম হলনা মা? সেই কবে থেকে রান্না করছি। এরকম অনেক দেখেছি, প্রথমে নাম শুনে মনে হয় খাই। কিন্তু খেতে গিয়ে দেখি ও হরি, এর থেকে অনেক সুস্বাদ্য আর দেশী সংস্করণ তো আমাদের হারাণের মার হাতে খেয়েছিলাম অনেক বছর আগে! পাঁউরুটির মাঝে আধ-কাঁচা ডিম পোচ আর আলু-কাবলি খাইয়েছিল।”
- “যাইহোক, আর কথা বাড়াচ্ছি না। ট্র্যাডিশানাল নাকি ফিউশান, সাবেকী নাকি বিদেশী - শেষ পর্যন্ত কোন রান্নার ওস্তাদ জিতে নেবে খেতাব? দেখতে হলে আমাদের সঙ্গে থাকুন।”
ঝিলমের শ্লেষের উত্তর বেশ ভালোই ফিরিয়ে দিলেন প্রতিমা মাসিমা। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে মাসিমা এরকম কাটা কাটা উত্তরে প্রতিপক্ষকে উচিত জবাব দিয়ে দিতে পারেন। দর্শকের হাততালিতে ফেটে পড়ল হল। এইরকম কথা কাটাকাটি, একে অন্যকে লক্ষ করে তীর্যক মন্তব্য, পালটা মন্তব্য – এইসবই রীয়ালিটি শো-এর টি-আর-পি-এর প্রাণ-ভোমরা। কাজেই ডিরেক্টর, প্রোডিউসারের মুখের হাসি বেশ চওড়া হল।
ম্যাজিশিয়ান গুপ্তা ঘুরে ঘুরে প্রতিযোগী আর দর্শক সবার সাথেই টুকটাক কথা বলছিলেন। দেখলেন ঝিলম আর কুণাল খুব একাগ্র হয়ে কথা বলছে ইতালিয়ান খাবার অ্যানোলিনি নিয়ে। ওনার খুব ভালো লেগেছে ঝিলমকে। বেশ ঝকঝকে স্মার্ট, হাজির-জবাব আর রন্ধনপটিয়সী এই মেয়েটিই কি ‘ওস্তাদের মার শেষ পাতে’র বিজয়িনী হবে? সত্তর বছরের রান্নার অভিজ্ঞতাকে কি পারবে এই মেয়ে পেছনে ফেলে দিতে?
কুণাল আর ঝিলমের আলোচনা অ্যানোলিনি থেকে আবার ঘুরে বান্টি ঘোষে গিয়ে পড়ল। ঝিলমও বান্টির ব্যাপারে বেশ বিক্ষুব্ধ।
- “কুণালদা, আপনার ওপেনিং স্পীচ আমার অসাধারণ লেগেছে। বান্টি ঘোষের তো কোন ক্লাস নেই, তাই আপনার কথাকে ওরকম বিকৃত করার চেষ্টা করছিলেন।”
- “আরে ছাড়, বান্টি রান্না সম্বন্ধে ছুঁচোর মত কানা। আরে বাবা, নিজের রেস্টুরেন্ট থাকলেই যদি মাস্টার শেফ হয়ে যাওয়া যেত, তাহলে তো রং-এর দোকানদার বড় পেইন্টার আর বাজনার দোকানদার বড় গায়ক হয়ে যেত।”
- “একদম ঠিক কথা বলেছেন কুণালদা। বান্টি ঘোষ শুধুই একজন বেনিয়া। ব্যাবসার ব্যালেন্স-শীটের থেকে বেশী কিছুই চেনেনা। দশবছর আগের ওনার পার্ক স্ট্রীটের রেস্টুরেন্টে যে অগ্নিকান্ডটা হয়েছিল মনে আছে? কি বলব আপনাকে, সেই আগুনে আমার পিসেমশাই মারা গেছিল জানেন? উনি ছিলেন ওখানকার সিনীয়ার ক্যাশিয়ার। জানেন, গোটা রেস্টুরেন্টে বেসিক অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র পর্যন্ত ছিলনা, কোন ফায়ার পার্মিট ফাইল পর্যন্ত করেনি লোকটা। দমকল পৌঁছাতে দেরী করেছিল এই অজুহাতে উনি বেকসুর খালাস হয়ে যান।”
- “আইয়াম সরি।”
- “দ্যাট্স্ ওকে। তখন থেকেই জানি বান্টির চরিত্র। আমি মনে করি একজন শেফ একজন উঁচুমানের শিল্পী। আর শিল্পীরা সরস্বতীর উপাসক, লক্ষীর চামচে নয়। এই শোয়ে ওকে জাজ করাটাই একটা ধাষ্টামো। লোকটা একটা হোঁতকা বিজনেস্ম্যান ছাড়া আর কিস্যু না।”
- “আরে বান্টির এরকম অনেক কেচ্ছা আছে ঝিলম। তুমি তো একটাই জানো, কারণ ওটা নিয়ে মিডিয়া সেই সময় প্রচুর হৈচৈ করেছিল। কিন্তু এ ছাড়াও, আমরা যারা রেস্টুরেন্ট বিজনেসে রয়েছি তারা জানি কিভাবে ও লীগাল পার্মিট না নিয়ে দিনের পর দিন বিজনেস করে, কিভাবে ওর রেস্টুরেন্টের কর্মচারীদের কম মাইনে দিয়ে এক্সপ্লয়েট করে, কিভাবে টাকা খাইয়ে খবরের কাগজে ওর রেস্টুরেন্টের পাব্লিসিটি করায়।”
- “থাক, আর বলতে হবেনা। আমার এমনিতেই ওনাকে দেখলে গা জ্বলে যায়, দেখলেই আমার পিসের ওই মৃত্যুর কথাটা মনে পড়ে যায়, আমার পিসিকে তো দেখি চোখের ওপর, যাকে বলে জীবন্মৃত হয়ে পড়ে আছেন। মনে হয় লোকটাকে বিষ খাইয়ে মারি।”
- “যাইহোক, ছাড়ো, তুমি মন দিয়ে রান্না করে যাও। নেগেটিভ ইমোশান জড় করো না মনের মধ্যে। জানোতো, রান্না তাতে খারাপ হয়ে যায়।”
ম্যাজিশিয়ান গুপ্তা ওদের সামনে এসে পড়ায় নিজে ভদ্রতার খাতিরে জিজ্ঞাসা করলেন, “কিসে খারাপ হয়ে যায়, রান্না?”
কুণাল চট করে বলল, “ওই বলছিলাম যে চাপমুক্ত হয়ে খুশী মনে চারহাতে রান্না করতে। বেশী নার্ভাস হলে বা অন্য কোন কন্টেস্ট্যান্টের ওপর রাগ করলে অনেকসময় হাতের রান্না খারাপ হয়।”
ম্যাজিশিয়ান গুপ্তা হেসে বললেন, “একদম ঠিক। আমাদের দেশ গাঁ-এ শুনেছি ঠাকুমারা নাকি স্নান করে শুদ্ধ-শুচি হয়ে রান্না করতেন। কাসুন্দি রাঁধার নাকি অনেক নিয়ম ছিল, যার মধ্যে অন্যতম ছিল কারো সাথে সারাদিন ঝগড়া না করা। আরে সত্যি,” ঝিলমের মুখে অবিশ্বাসের হাসি দেখে ম্যাজিশিয়ান গুপ্তা আরও জোর করে বললেন।
দ্বিতীয় রাউন্ডের আলোচনা শেষ হতে তিষ্যা বলল “ঝিলমের মোটিভ তো তাহলে বেশ তীব্র। ফ্যামিলির মধ্যে একজন যদি বিনা দোষে এরকম ভাবে মারা যায়, তাহলে তো তার বান্টির ওপর আক্রোশ থাকাটা খুব স্বাভাবিক।”
মিসেস বাসু বলে উঠলেন, “ও হ্যাঁ, সেই বেঙ্গল এক্সপ্রেসের আগুন লাগার ঘটনা! খুব ছিছিক্কার হয়েছিল সেই নিয়ে। প্রত্যেকটা খবরের কাগজে বেরিয়েছিল ঘটনাটা। অনেক তাজা প্রাণ জ্যান্ত দগ্ধ হয়ে গিয়েছিল দমকল আসার আগেই। কাগজে পড়েছিলাম যে আইনের অনেক ফাঁক গলে বান্টি বেরিয়ে গিয়েছিল”, স্বামীর দিকে ফিরে বললেন, “তোমাদের ডিপার্টমেন্টের অনেককেই যে ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিয়েছিল সেটাও কাগজগুলোয় ইঙ্গিত দিয়েছিল। আমি বাপু ঝিলমের কষ্টটা বেশ ভালোই বুঝতে পারছি। আমি হলেও ওই নচ্ছার বান্টিটাকে হাতের কাছে পেলে দিতাম উচিত শাস্তি।”
মিস্টার বাসু বলে উঠলেন, “দেখো, উচিত শাস্তি দেওয়া আর খুন করা এক জিনিস নয়।“
- “তা নয় জানি। তবে তিষ্যা ঠিকই বলেছে, মোটিভের দিক থেকে এটার চাইতে জোরালো আর কি হতে পারে? নিশ্চয়ই সময় বুঝে টুক করে বিষ মিশিয়ে দিয়েছে ঝিলম। এখন আমারো মনে হচ্ছে এটা খুন। এইরকম শয়তান লোকের এরমই পরিণতি হয়।”
মিস্টার বাসু বললেন “মোটিভ বেশ জোরালো তা ঠিক। তবে কি জানো, যেকোন মার্ডার ঘটাতে গেলে তিনটে জিনিসের ত্র্যহস্পর্শ ঘটতে হয়, মোটিভ, অপর্চুনিটি আর ওয়েপন। কাজেই শুধু মোটিভ থাকলেই হবেনা। আমাদের দেখতে হবে বাকি দুটো ডাইমেনশান কি বলছে।”
তিষ্যা আশ্চর্য হয়ে বলল, “অপর্চুনিটি নিয়ে তো কোন প্রশ্নই নেই, বাবা তো বললই নিজের কানে শুনেছে ঝিলম বলছে যে পারলে বান্টিকে বিষ খাইয়ে মারত। গোটা কম্পিটিশানটাই তো এক চূড়ান্ত সুযোগ, অমোঘ অপর্চুনিটি। কোন ফাঁকে বিষ মিশিয়ে দিয়েছে, সে কি আর কেউ দেখতে গেছে?”
মিস্টার বাসু বললেন “না তিষ্যা, অত সহজ নয়। চারটে বিরুদ্ধ যুক্তি আছে। প্রথমত, দেখ তুমি যদি কাউকে সত্যিই খুন করতে চাও, তাহলে কি ঢাক ঢোল পিটিয়ে আগেভাগে সব্বাইকে বলে রাখবে যে অমুকের সাথে আমার খুব শত্রুতা, আমি রেডী হয়েই আছি ব্যাটাকে বিষ মিশিয়ে মারব বলে? দ্বিতীয়িত, ভুলে যেও না, তুমি যাকে অপর্চুনিটি বলছ, সেটা আদৌ ঝিলমের ছিলনা। শুধু ঝিলমের কেন, কোন প্রতিযোগিনীরই ছিলনা। একটা খাবারে বিষ মেশানো অত সহজ নয়, বিশেষ করে যখন অতগুলো ক্যামেরা সর্বক্ষণ তোমার প্রত্যেকটা মুভমেন্ট ক্যামেরাবন্দী করে রাখছে। এডিট করার আগের যে রাশ প্রিন্ট বেরওবে, তাতে করে তো তক্ষুনি ধরা পড়ে যেতে বাধ্য যদি ক্যামেরায় দেখা যায় ঝিলম খাবারে সন্দেহজনক কিছু মেশাচ্ছে। তৃতীয়ত, ওয়েপন। সেটা কি? বিষ হাতে করে কোন প্রতিযোগীকেই ঢুকতে দেয়না। কড়া নির্দেশ আছে ভালো করে সার্চ করার। যদি মেনেওনি যে ছোট্ট বোতলে করে বিষ নিয়ে ঝিলম ঢুকেছিল, তাও সেই বিষ মেশানোটা প্রায় অসম্ভব ওই পাঁচটা ক্যামেরার কারণে। চতুর্থত, খাবারে বিষ মেশালে সব্বাই মরে যেত, মায় তোমার বাবাও। আলাদা আলাদা করে তো আর রান্না করেনি একেকজন জাজের জন্য একেকটা। তাহলে হয়ত অন্য কোন পথ ধরে এগোতাম, কিন্তু এক্ষেত্রে রান্না হয়েছে এক পাত্রে। শুধু আলাদা আলাদা পাত্রে সার্ভ করেছে। প্লাস প্রত্যেকটা পাত্র থেকে খাবারের স্যাম্পল পরীক্ষা করা হয়েছে। এসব ব্যাপারে আমাদের তোমরা যতই অপদার্থ ভাবো, আমাদের ডিপার্টমেন্টে এইসব খুব ভালোভাবে যত্ন নিয়ে করা হয়। যতগুলো খাবার সেদিন বানানো হয়েছিল, একেবারে স্টার্টার থেকে ডেসার্ট পর্যন্ত সবগুলো খাবারের স্যাম্পল আমাদের ফরেন্সিক ডিপার্টমেন্টে পাঠানো হয়েছিল। কোথাও কোন বিষের ট্রেস পাওয়া যায়নি। আমি নিজে রিপোর্ট খুঁটিয়ে পড়েছি আর ওই ডিপার্টমেন্টের হেডের সাথে কথাও বলেছি পার্সোনালি।”
ম্যাজিসিয়ান গুপ্তা বললেন “তবে রূপারও বেশ জোরালো মোটিভ ছিল। সেটা তৃতীয় পর্বে ঘটনাক্রমে জানতে পারি।” একটু ইতস্তত করে বললেন “ব্যাপারটা এই ঘরের বাইরে না বেরনোই ভাল।”
অরুনবাবু আশ্বস্ত করলেন “আরে না না, আপনি যা বলছেন সব অফ দ্যা রেকর্ড। সে নিয়ে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। তবে কি জানেন যদি এই আলোচনার মধ্যে দিয়ে এমন কোন দিক উঠে আসে যেটা হয়ত আমরা যারা কম্পিটিশানের সেটে ছিলাম না তাদের চোখে পড়েনি বা মাথায় আসেনি, তাহলে সেটা খুবই উপকারে লাগবে। একজন দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবে আপনারও কর্তব্য যদি সেরকম কোন খবর পান, তাহলে সেটা আমাদের জানিয়ে এই তদন্তে সাহায্য করা। তবে ওই যে বললাম, ফাইলটা ক্লোজ করে দেওয়া হবে কিনা সেটার সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। এমন কোন সাক্ষ্যপ্রমাণ আমাদের হাতে আসেনি যা থেকে আমরা এটাকে নিশ্চিতভাবে এটাকে খুন বলে ধরে নিতে পারি। কাজেই আপনি বলুন যদি অন্য কোন মোটিভ আপনার দৃষ্টি গোচর হয়ে থাকে।”
[ক্রমশঃ]
- ঈপ্সিত/চম্পাকলি
আমরা দুজন একটা সিরিজ লিখছি ম্যাজিশিয়ান গুপ্তাকে নিয়ে।
এই সিরিজের আগের দুটি গল্প এখানেঃ
http://www.sachalayatan.com/guest_writer/44657
মন্তব্য
সিরিজ ভাল লাগছে। তবে এই পর্বটা আরেকটু বড় হলে ভাল হত।
- সাম্য
সিরিজ ভালো লাগছে বলে ।
আসলে আগেরটা অনেকে বলেছেন বেশী বড়।
আর একেকটা পর্ব হচ্ছে রীয়্যালিটি শো-এর একেকটা রাউন্ড, তাই একটু ছোট-বড় হয়েছে।
পরের পর্ব পরের উইকেন্ডে।
আরে এবার শুক্রবার লেখা আপ্লোড করে শনিবারেও লিঙ্ক পেলাম না। চম্পাকলি বলল নিশ্চয়ই মডারেশনে মানোত্তীর্ণ হয়নি। আমি বললাম প্রথম পর্ব হল, আর পরের পর্ব হলনা? আগে কখনও তো কোন লেখা মডারেশানে আটকায়নি। যাইহোক, কপাল ঠুকে আবার আপ্লোড করলাম শনিবার রাত্রে। তারপর দেখলাম কয়েক ঘন্টা পরে এলো লিঙ্ক। কি হয়েছিল কে জানে প্রথমবার?
বড় পোস্ট পড়তে ভাল লাগে। আগের পর্বটা বড় হওয়ায় লাই পেয়ে গিয়েছিলাম!
- সাম্য
ভালো লাগছে। তবে পুরো এক সপতাহের বিরতিটা ভালো লাগছে না।
ভাল চলছে। চলুক।
চোখ রাখছি কার উপরে সন্দেহ না পড়ে। সেই হবে আসল খুনি।
অট: কোথায় বউকে তৃতীয় বানানোর মত বুকের পাটার প্রশংসা করবেন, তা না উল্টো ভয় দেখাচ্ছেন!
পঁচিশ জনকে পাঁচটা দলে কীভাবে ভাগ করা হলো? র্যান্ডোম?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
প্রতিমা মাসি কে কেমন যেন লাগছে। ওনার খুব গুছিয়ে প্রতিযগিতায় আসাটা আমার বেশ সন্দেহ জাগাচ্ছে। দেখা যাক কি হয়? মৌটুশি বাশার
নতুন মন্তব্য করুন