মূল লেখাঃ লিয্যি বিউকেন
অনুবাদ এবং ভূমিকা: কোয়েল দাশ এবং খান তানজীদ ওসমান
আজকে প্রকাশিত হচ্ছে প্রথম পর্ব
এবছর রসায়নে নোবেল পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রায়ান কোবিলকা (Brian Kobilka) এবং ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের রবার্ট লেফকাউইট্জ (Robert Lefkowitz), প্রাক্তন গুরু (দ্বিতীয়জন) এবং শিষ্য (প্রথমজন)। ২০১১ সালের সুবিখ্যাত নেচার পত্রিকার ২৫শে আগস্ট সংখ্যায় ব্রায়ান কোবিলকাকে নিয়ে একখানা প্রবন্ধ প্রকাশ হয়েছিল। বেশ সাড়াজাগানো এবং বহুলপঠিত প্রবন্ধ। এটি মূলতঃ একটি সাক্ষাৎকার, কিন্তু জীবনীর মত করে বর্ণনা করা। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন নিউরোবিজ্ঞানী লিয্যি বিউকেন। ব্রায়ান কোবিলকার বৈজ্ঞানিক জীবন এবং তাঁর অসীম ধৈর্য্য আর গবেষণার প্রতি একাগ্রতা লেখাটির মূল প্রতিপাদ্য। এখানে এই প্রবন্ধটিই অনুবাদ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে, অনুবাদটি করা যতটা সহজ হবে ভাবা হয়েছিল, হয়েছে ঠিক তার উল্টো। করার পর দেখা গেল ইংরেজীর চেয়েও কঠিন হয়ে গিয়েছে বাংলা অনুবাদ বোঝা। দেখা যাক কেমন প্রতিক্রিয়া আসে!
কিন্তু তারপরও, আমাদের মনে হল যে মূল লেখায় যাওয়ার আগে এই দু’জন নোবেলবিজয়ী বিজ্ঞানীর কাজের বিষয়টি পাঠকদের সামনে কিছুটা খোলাসা করা উচিৎ। আর তাই একটুখানি ভূমিকার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
নোবেল পাওয়ার সংবাদ শোনার মুহূর্তে রবার্ট লেফকাউইট্জঃ
নোবেল পাওয়ার সংবাদ শোনার মুহূর্তে ব্রায়ান কোবিলকাঃ
যে ধরনের প্রোটিন নিয়ে এঁরা কাজ করেছেন তাদেরকে অনেকগুলি নামে অভিহিত করা যায়, সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত হল G-protein-coupled-receptors বা GPCRs। কি এদের কাজ, কিভাবে এরা কাজ করে, কেন করে- এসব প্রশ্নের উত্তরই খুঁজে বের করেছেন নোবেলবিজয়ী দু’জন বিজ্ঞানী এবং তাঁদের দলবল। এখানে ছোট করে একটি উদাহরণ দিয়ে দেখানো যাক।
GPCR প্রোটিনের গঠনটি, যে গঠন আবিস্কারের জন্য কোবিলকা খ্যাতি অর্জন করেছেনঃ
একটি সায়েন্স ফিকশান মুভির কথা চিন্তা করতে পারি। মনে করি মুভিটিতে দেখানো হচ্ছে যে আমার একটি এক-ঘরের বাসা আছে যার চারপাশ দেয়াল ঘেরা। ঘরটিতে আছে অনেকগুলি জানালা। প্রতি জানালার বাইরের দিকটিতে একটি করে সেন্সর আর ভেতরের দিকে অনেক অনেক যন্ত্রপাতি লাগানো আছে। সেন্সরগুলির কাজ হল ঘরের বাইরের পরিবেশ বোঝা এবং সেই অনুযায়ী সক্রিয় হয়ে যাওয়া। যেমন, বাইরে হঠাৎ গরম পড়া শুরু করল, তখন গরম বোঝার সেন্সরটি নড়েচড়ে বসবে আর ঘরের ভেতরে সিগনাল পাঠাবে, ‘গরম পড়েছে, গরম পড়েছে।’ সেন্সরের এই সিগনাল তখন ঘরের ভেতরের যন্ত্রপাতিগুলি গ্রহণ করবে এবং তাপমাত্রা ঠিক রাখার জন্য কতগুলি ফ্যান ছেড়ে দেবে। ফলে, ঘরে তখন ঠান্ডা নেমে আসবে। এভাবে বাকি সেন্সরগুলি একেকটি একেকধরনের জিনিস, যেমন কোনটা গন্ধ পেলে, কোনটা বৃষ্টি পেলে, কোনটা অন্ধকার হলে, কোনটা সূর্য উঠলে সক্রিয় হয়ে ওঠে আর সেই অনুযায়ী বাসার ভেতরের বিভিন্ন জিনিস চালু করে দেয় বা বন্ধ করে দেয়।
এবার ঘরটিকে একটি কোষের সাথে তুলনা করি। নিচের ছবির সঙ্গে মিলিয়ে নিন। মনে করি জানালাগুলি হল রিসেপ্টর প্রোটিন (GPCR) যেগুলি কোষের আবরণীর মধ্যে প্রোথিত থাকে এবং যাদের কিছু অংশ কোষের বাইরে থাকে (সেন্সর) আর কিছু অংশ কোষের ভিতরে থাকে। বাইরের সিগনালগুলি হল হরমোন বা আলো বা গন্ধ বা কোন যৌগ। এরকম হাজার ধরনের সিগনাল থাকতে পারে যা দিয়ে রিসেপ্টর প্রোটিন সক্রিয় হল। আবার, ঘরের ভেতরের যন্ত্রপাতিগুলির একটি হল G-প্রোটিন। G-প্রোটিন, রিসেপ্টর প্রোটিনের যেই অংশ কোষের ভেতরের দিকে থাকে সেই অংশের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে।
G-প্রোটিনের, কোষের বাইরের সিগনাল (এখানে লাইগেন্ড) এবং GPCR প্রোটিনের উদাহরণঃ
ফলে চেইন রিঅ্যাকশান এর মত একটি থেকে আরেকটি প্রোটিন সম্পর্ক স্থাপন করতে করতে এবং পরিবর্তন হতে হতে কোষের একটি নির্দিষ্ট কর্ম সম্পাদন হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াকে বলে ‘সেল সিগনালিং’। সেল সিগনালিং এর এরকম একটি ঘটনায় ১০/২০ টি বা তারও বেশি বিভিন্ন প্রোটিন অংশ নিতে পারে। নিচের ছবিটির উদাহরণ দেখুন। দেখুন কিভাবে একটি GPCR এর সঙ্গে লাইগেন্ড (একধরনের সিগনাল অণু) এসে লাগার পর কি কান্ডটাই না কোষের ভিতর শুরু হয়ে গেল। আপনারা হয়তো শুনে থাকবনে, প্রোটিনের কাজ নির্ভর করে তার ত্রিমাত্রিক গঠনকাঠামোর উপর। অর্থাৎ এখানে যেকোন সিগনাল গ্রহন করার পর রিসেপ্টর প্রোটিনের গঠনে এমন পরিবর্তন হয় যে সেটা ভেতরের G-প্রোটিন এর গঠনকে প্রভাবিত করে। G-প্রোটিন তখন অন্য কোন কিছুর সঙ্গে মিলেমিশে সিগনাল অনুযায়ী কোষের ভেতরে বিভিন্ন প্রক্রিয়া চালু করে দেয় বা বন্ধ করে দেয়।
একধরনের GPCR নিয়ন্ত্রিত সেল সিগনালিং এর উদাহরণঃ
এরকম প্রোটিন নিয়ে তৈরি একটি পুরো প্রোটিন পরিবার বা ফ্যামিলি কিভাবে কাজ করে তার সাধারন মডেল আমাদের সামনে তুলে ধরেছিলেন ব্রায়ান কোবিলকা। জীবকোষের জন্য অপরিহার্য অসাধারণ এই প্রোটিনগুলির গঠন তিনি আবিস্কার করেছেন এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফি (X-ray crystallography) নামক একটি পদ্ধতির মাধ্যমে। সেটা নিয়ে আজকে আলোচনায় যাবনা, মূল প্রবন্ধে বিষয়টি কিছুটা উল্লেখ আছে। তবে এই পদ্ধতিতে গঠন আবিস্কারের জন্য কোবিলকাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। মোটেই সহজে হয়নি। কারনগুলি ছোট্ট করে বলে রাখি। এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফির জন্য প্রোটিনের ক্রিস্টাল (যেমন খাবার লবণের দানা হল NaCl এর ক্রিস্টাল, যেখানে অসংখ্য NaCl অণু একটি নির্দিষ্ট সজ্জায় সাজানো থাকে) তৈরি করতে হয়। প্রোটিনের ক্রিস্টাল হল অসংখ্য প্রোটিন অণু একইরকমভাবে বিন্যস্ত হয়ে তৈরি করা স্ফটিক (অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে দেখতে অনেকটা হীরার স্ফটিকের মত)। কিন্তু সব প্রোটিনই ক্রিস্টাল তৈরি করেনা। অন্যদিকে, যারা তৈরি করে তাদের ভিন্ন ভিন্ন রকম পরিবেশ দরকার হয় ক্রিস্টাল তৈরির জন্য। একটি প্রোটিনের ক্রিস্টাল তৈরির অন্যতম প্রধান শর্ত হল প্রোটিনটিকে স্থায়ী হতে হবে। মানে প্রোটিনের কোন অংশ বেশি নড়াচড়া করতে পারবেনা, বা ক্রিস্টালের একেকটা প্রোটিন অণু একেকরকম হতে পারবেনা। হলে আর ক্রিস্টাল তৈরি হবেনা। সেজন্য এমনও ঘটনা ঘটেছে যে সঠিক পরিবেশ খুঁজে বের করা বা প্রোটিনকে স্থায়ীত্ব দিতে বছরের পর বছর লেগে যায়। ব্রায়ান কোবিলকার লেগেছে ঝাড়া ২০টি বছর! এমনই গবেষণা এবং এর সাফল্যের পেছনে একজন একনিষ্ঠ বিজ্ঞানীর কঠোর পরিশ্রমের কাহিনী নিয়েই এই প্রবন্ধটি আবর্তিত।
গত মাসে, দীর্ঘ ১২ ঘন্টার ক্লান্তিকর বিমান যাত্রা শেষে ব্রায়ান কোবিলকা যখন চীন থেকে সান ফ্রান্সিসকো (ক্যালিফোর্নিয়া) ফিরলেন তখন তিনি ক্লান্তিতে অবসন্ন। তবে তাঁর বিরাম নেই, বাসায় পৌঁছে একটুখানি ঘুমিয়েই আবার আরেকটি বিমান ধরলেন। এবার গন্তব্য ইলিনয়ের শিকাগো শহর। সেখানে অবতরণের পর গাড়ি চালিয়ে পৌঁছালেন এর্গন ন্যাশনাল ল্যাবটরির এডভান্সড ফোটন সোর্স এ, যেখানে প্রোটিনের গঠন জানার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিশালী এক্স-রে বিমলাইনের উৎস আছে। ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী কোবিলকা তাঁর দলের একটি কাজ দেখার জন্য উদগ্রীব ছিলেন। দলটি একটি প্রোটিন পার্টনারের সঙ্গে যুক্তাবস্থায় কোষ-আবরণীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি রিসেপ্টেরের আণবিক পর্যায়ের ত্রিমাত্রিক গঠন জানার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। কোবিলকার উদগ্রীব হওয়া বা অসীম আগ্রহের কারন হল তিনি জানতেন যে ২০ বছর আগে শুরু হওয়া একটি বুদ্ধিবৃত্তিক যাত্রা সাফল্যের সঙ্গে শেষ হবে এই গঠনটি জানতে পারলে। এটি হবে চমৎকার একটি ব্যাপার!
মানবদেহের প্রক্রিয়াসমূহ, যেমন দর্শন এবং ঘ্রাণ নেয়া থেকে স্নায়বিক যোগাযোগ ইত্যাদি প্রায় সবকিছুই নির্ভর করে GPCR প্রোটিনের উপর। কোষের ফ্যাটি আবরণীর মধ্যখানে বসে থেকে এরা কোষের বাইরের হরমোন, গন্ধ, রাসায়নিক নিউরোট্রান্সমিটার এবং অন্যান্য সিগনাল এর সন্ধান করে আর জি-প্রোটিনকে (যেটা কোষের ভেতরে থাকে) সচল করে সিগনাল পৌঁছে দেয় কোষের ভেতরে। এই জি-প্রোটিন এরপর কোষের মধ্যে বিরাট কর্মযজ্ঞ শুরু করে দেয়। রিসেপ্টরগুলো হল মানুষের মধ্যে প্রাপ্ত সবচেয়ে বড় প্রোটিন পরিবার (ফ্যামিলি) গুলির একটি এবং মানুষের জন্য তৈরি প্রায় এক তৃতীয়াংশ থেকে অর্ধেক প্রতিষেধক (drugs) কাজ করে এই জি-প্রোটিনগুলির উপর। আর তাই, এই প্রোটিনের গঠন জানা গেলে সেটা কোষের মূল যোগাযোগ মাধ্যমের কার্যপ্রণালী বুঝতে গবেষকদের যেমন সাহায্য করবে তেমনি সাহায্য করবে প্রতিষেধক প্রস্তুতকারকদের আরো কার্যকরী প্রতিষেধক ডিজাইন করতে।
GPCR এর গঠন এবং কাজ জানার প্রতি অসীম আগ্রহ, যা প্রায় আসক্তির পর্যায়ে পড়ে, কোবিলকা’র পেশাগত জীবনের উপর প্রভাব ফেলছিল। আর যেহেতু এই প্রোটিন নিয়ে কাজ করা খুবই জটিল এবং একে স্থিতি অবস্থায় আনা প্রায় অসম্ভব, সেহেতু এ সংক্রান্ত গবেষণায় দিনদিন কোবিলকা সঙ্গীহীন হয়ে পড়ছিলেন। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভাল যে এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফি পদ্ধতিতে প্রোটিনের গঠন বিশ্লেষণের জন্য প্রোটিনটি স্থিতি অবস্থায় থাকাটা সবচেয়ে জরুরী। কিন্তু এসব প্রতিকুলতা সত্যেও শেষপর্যন্ত কোবিলকা তাঁর একাগ্রতার ফল পেতে শুরু করলেন। ২০০৭ সালে তাঁর গবেষক দল প্রথমবারের মত আবিস্কার করে ফেললেন হরমোন এর সঙ্গে বন্ধন তৈরি করে এমন GPCR প্রোটিনের এর হাই-রেসোলুশান ত্রিমাত্রিক গঠন। তারপর, এবছরের জানুয়ারিতে বের করে ফেললেন G-প্রোটিনকে সচল করে এমন রিসেপ্টর প্রোটিনের গঠন। সবশেষে, গত মাসে, শিকাগো থেকে প্রকাশ করলেন প্রথমবারের মত এমন একটি গঠন যেখানে দেখানো হয়েছে কিভাবে একটি G-প্রোটিন সচল করছে একটি GPCR প্রোটিনকে।
এই সর্বশেষ কৃতিত্বের ফলে বিভিন্ন মহলে কানাঘুষা চলতে থাকলো যে কোবিলকা নোবেল পুরস্কার পেয়ে যেতে পারেন! “কিন্তু কোবিলকা যদি নোবেল পেয়ে যান হবে এটা হবে তার গোয়ার্তুমি কৃতিত্ব”, বললেন সান ফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমেরিটাস হেনরি বোর্ন, যিনি নিজেও G-প্রোটিন নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি কোবিলকাকে ১৯৮০ সাল থেকে চিনতেন।
কোবিলকা এখন পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছেন। তিনি যতটা বিখ্যাত তার আড়ষ্ট বিনম্রতার জন্য, ঠিক ততটাই তাঁর আপাতভাবে অসম্ভব মনে হওয়া গঠনটি আবিস্কার করতে পারার জন্য। আমি যখন কোবিলকা’র সঙ্গে তাঁর স্ট্যানফোর্ড অফিসে দেখা করতে যাই তিনি আমার সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রায় অনিচ্ছার সাথেই বসতে বললেন, তাঁর ডেস্কের অপর দিকের আসনটিতে। ভয়েস রেকর্ডারের লাল আলোটার দিকে তাকিয়ে চিন্তিতভাবে কথা বলতে শুরু করলেন। তাঁর ভাষ্যে তিনি প্রেসের সামনে কথা বলতে ‘অতিমাত্রায় শঙ্কিত’। গলা ভেঙে যাচ্ছিল। নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করছেন এভাবে, “আপনার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়েছি একটই কারনে, আমি এটা নিশ্চিত করতে চাচ্ছিলাম যে আমার গবেষণাগার এবং কোলাবরেটরদের অবদান যেন সঠিকভাবে স্বীকৃতি পায়।”
এতটাই ভীত ছিলেন যে তাঁর কাছ থেকে কিছু বের করে আনা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালো। GPCR-দের নিয়ে কেন এত আচ্ছন্ন হয়ে আছেন, এই প্রশ্নের উত্তর দিতে তাঁকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিলঃ “আমি আসলে এসব প্রোটিন নিয়ে অনেকটা প্রকৃতিগতভাবেই আকৃষ্ট। জানিনা আসলে। আমার শুধুই জানতে ইচ্ছা করে কিভাবে এসব প্রোটিন কাজ করে।” একমাত্র তখনই তাঁকে কথা বলতে খুব স্বতস্ফুর্ত দেখা গেল যখন তিনি G-প্রোটিন আঁকড়ে ধরা রিসেপ্টর প্রোটিনের কাঠামো তৈরি বর্ণনা করছিলেন। চেহারায় একধরনের দ্যুতি খেলা করে গেল। বললেন, “এটি একটি অসাধারণ গঠন। একবারেই চমকপ্রদ! আমি সত্যিই এটি নিয়ে কথা বলতে খুব পছন্দ করি।”
বোর্ন বলেছিলেন, “ব্রায়ান একজন অনবদ্য চরিত্র। সে খুবই একনিষ্ঠ এবং অত্যন্ত ঐকান্তিক। কিন্তু নিজের ক্ষমতা দেখানো, অন্যের উপর কিছু চাপিয়ে দেয়া বা লোক দেখানো কোন জিনিসই ওর কাছ থেকে পাওয়া যাবেনা। আসলে এমন কোন স্বভাবই তার মধ্যে এক্কেবারে নেই। এরকম চরিত্র স্নিগ্ধ এবং দূর্লভ!”
হয়ত এই একাগ্র এবং একনিষ্ঠ চরিত্রই প্রোটিন ক্রিস্টালাইজেশানের মত একটি কাজের জন্য পুরোপুরি ঠিক ছিল। প্রোটিন ক্রিস্টালাইজেশান হল এমন একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া যা শেষ হয় প্রোটিনের আণবিক গঠন জানার মধ্য দিয়ে আর যে গবেষণা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মধ্যবর্তী কোন যায়গার অর্জন বা ফলাফলকে সাফল্য বলে গণ্য করা হয়না। এবিষয়ে বোর্ন বলছেন, “সে যেটা করেছে সেটা করতে হয়েছে ধাপে ধাপে, মসৃণভাবে, যেন প্রতিটি ধাপই সফলতা পায়।”
নিজের গবেষণাগারে কোবিলকাঃ
মধ্য মিনেসোটার একটি ছোট্ট মফস্বল সমাজ থেকে এসেছেন কোবিলকা। বাপ-দাদার পেশা ছিল রুটি-কেক তৈরি (সেঁকা বা বেকিং), আর মা কেক সাজাতেন। কোবিলকা দুলুথ এ অবস্থিত মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞান এবং রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। সেখানেই, জীববিজ্ঞান ক্লাসে তিনি তাঁর ভবিষ্যৎ স্ত্রী তং সান থিয়েন এর সঙ্গে পরিচিত হন। সেই সময়টাকে স্মরণ করে তং বলছেন “সে ক্লাসের সবচেয়ে ভাল ছাত্রদের একজন ছিল। কিন্তু, এত নরম আর চুপচাপ ছিল যে কেউ বুঝতেই পারতোনা।”
কোবিলকা প্রথম গবেষণার স্বাদ পান যখন তিনি এবং তং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকাশন জীববিজ্ঞান (developmental biology) গবেষণাগারে কাজ করছিলেন। সেখানে, বাবার বেকারীর পরিত্যাক্ত প্লাস্টিক দিয়ে গবেষণাগারের জন্য তৈরি করে ফেললেন একটি টিস্যু-কালচার হুড। আমাদের দেশের মতই, মেনিসোটার মফস্বল গুলোতেও দেখা যায় জীববিজ্ঞানে আগ্রহী ছাত্ররা সাধারণত চিকিৎসা-শাস্ত্রকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করে। কোবিলকাও এদিক দিয়ে ব্যতিক্রম নন, গবেষণায় আগ্রহ থাকলেও পড়তে চলে যান কানেকটিকাটের নিউ হেভেনে অবস্থিত ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর সেখানেই তিনি ইনটেনসিভ কেয়ার-এর কিছু ঔষধ বা প্রতিষেধক সম্বন্ধে আগ্রহী হয়ে ওঠেন যেগুলি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রোগীর উপর কাজ করতে পারে এবং রোগিকে বাঁচিয়ে তুলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, এমন কিছু প্রতিষেধক যারা GPCR-দের উপর কাজ করে। এটা জানা ছিল যে, GPCR-গুলি হল একধরনের প্রোটিন যারা এড্রেনালিন এবং নরাড্রেনালিন (একধরনের হরমোন) এর একটি গ্রাহক বা রিসেপ্টর (receptor) আর যারা মানুষের শ্বাসনালীকে প্রশস্ত করে এবং সেই সাথে হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয়।
১৯৮৪ সালে রেসিডেন্সি (ডাক্তার হিসেবে চর্চা করার একটি পেশাগত ধাপ উত্তরণ) পাওয়ার পর কোবিলকা নর্থ ক্যারোলিনার ডারহামে অবস্থিত ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের রবার্ট লেফকাউইট্জ (যার সঙ্গে এবছর নোবেল পুরস্কার ভাগাভাগি করে নিয়েছেন) এর কাছে ফেলোশিপের জন্য আবেদন করেন। এই গবেষণাগারটি ছিল বিশ্বে এড্রেনালিন রিসেপ্টর নিয়ে গবেষণার প্রধান গবেষণাগার যা সব হরমোন রিসেপ্টর গবেষণারই একটি মডেল হিসেবে পরিচিতি পায়। যে সময়টাতে কোবিলকা গবেষণাগারটিতে কাজ শুরু করেন সেসময় গবেষণাগারের সদস্যরা মাত্র ভাবতে শুরু করেছেন কি করে বেটা-২ অ্যান্ড্রেনারজিক [ß2-adrenergic (ß2AR)] -এর রিসেপ্টরের জিনটি ক্লোন করা যায়, আর সেইসাথে এর জেনেটিক সিকোয়েন্স জানা যায়। কোষে এই রিসেপ্টরটি এত অল্প পরিমানে তৈরি হয় যে গবেষণা-দলটি শুধুমাত্র দুই-একটি সম্ভবপর জেনেটিক সিকোয়েন্সের খসড়া তৈরি করার মত প্রোটিন সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিল। কোবিলকার আবিস্কার সম্পর্কে বলতে গিয়ে লেফকাউইট্জ বলেন, "প্রযুক্তির নব্যধারার বহু নতুন ঝলকের একটি কোবিলকা সেইসময় অমাদের দেখালো।” কোবিলকা ঠিক করলেন ম্যাম্যালিয়ান জেনেটিক সিকোয়েন্স-এর একটি লাইব্রেরী গঠন করবেন এবং এই লাইব্রেরী দিয়ে এ পর্যন্ত গবেষণাগারের খসড়া জেনেটিক সিকোয়েন্স এর সঙ্গে যাচাই (screening) করবেন। এর ফলে প্রোটিনটির একটি দীর্ঘ ক্লোন হয়ত পাওয়া যাবে যেখান থেকে ছোট টুকরো টুকরো অংশ জুড়ে পুরো সিকোয়েন্সটির বিন্যাস পাওয়া যাবে।”
তাঁর পরিকল্পনাটি সফল হয়। রিসেপ্টরটির সিকোয়েন্সটির টুকরো অংশ গুলো জুড়ে দেবার পর অপ্রত্যাশিত একটা ব্যাপার দেখতে পেল দলটি; এমিনো এসিড সূত্রের অনেকগুলি অংশ যেগুলি সাধারণতঃ কোষ-আবরণীতে পাওয়া যায়- সেগুলি দিয়ে রিসেপ্টরটি সাত বার কোষ-আবরণীর মধ্য দিয়ে যাওয়া-আসা করেছে (কোষের ভিতরে এবং বাইরে, নিচের ছবি)। ব্যাপারটি এক্কেবারে ঠিক রোডপসিন (rhodopsin) প্রোটিনের মত। রোডপসিন হল রেটিনাতে পাওয়া যায় এমন একধরনের আলোক-সংবেদী রিসেপ্টর যেটাও (ß2AR-এর মত) G-প্রোটিনকে সক্রিয় করে। এই সব রিসেপ্টর যে দেখতে একইরকম হবে ঐ সময়টাতে এরকমটা ভাবার কোন কারণ ছিল না- বিশেষ করে যখন দুইটি রিসেপ্টর দুইটি সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস দিয়ে সচল হয়- একটি আলো দিয়ে, আর অন্যটি হরমোন দিয়ে।
রোডপসিনের গঠনের ছবি (উপরে উল্লেখিত GPCR এর গঠনের সঙ্গে মিলিয়ে নিন)ঃ
লেফকাউইট্জ স্মরণ করছিলেন, “সেই সময়টা সত্যিই ইউরেকা মুহূর্ত ছিল!” ঐ সময়ে G-প্রোটিনকে সক্রিয় করতে পারে এরকম প্রায় ৩০ টি প্রোটিন চেনা ছিল। “তখনই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম- হায় খোদা! এরা যে দেখতে সবগুলোই একই রকম হবে! আর এরা যে পুরো একটি ফ্যামেলির অন্তর্গত!”
এই ফ্যামেলিটিকেই (প্রোটিন পরিবার, যার মধ্যে একই ধরনের উপায়ে কাজ, একইরকম গঠনবিশিষ্ট প্রোটিন অন্তর্গত, মানে প্রোটিন প্রোটিন ভাই-ভাই) পরবর্তীতে আমরা ‘সেভেন-ট্রান্সমেমব্রেন রিসেপ্টর ফ্যামিলি’ (seven trans-membrane receptor family) হিসেবে অথবা GPCRs নামে চিনি। মানবদেহে এখন পর্যন্ত ফ্যামিলিটির প্রায় ৮০০টি সদস্য পাওয়া গেছে। ওয়াটারসেড ক্লোনিং প্রজেক্ট (লেফকাউইট্জ এর ল্যাবএ ß2AR-এর সিকোয়েন্স খুঁজে বের করে ক্লোন করার যেই প্রজেক্টটি) সম্পর্কে বলতে গিয়ে কোবিলকা বিনয়ের সাথে বললেন, ‘আসলে অংশগ্রহনটাই খুব উত্তেজনাকর ছিল, লেফকউইট্জ-র গবেষণাগারের সবারই নায়োকচিত কাজের ফলাফল এটি!"
(দ্বিতীয় অংশ আসছে)
খান তানজীদ ওসমান
মন্তব্য
অসংখ্য ধন্যবাদ কষ্ট করে অনুবাদের জন্য। GPCR সেল সিগনালিং- এর অনেকটাই জুড়ে আছে। আরও লেখা আসবে আশা করি।
ধন্যবাদ। আগে লুই পাস্তুরের একটা সাক্ষাৎকার অনুবাদ করেছিলাম। দেখতে পারেন।
ভালো লাগলো, পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
উপাদেয় একটা লিখা ! পরবর্তী কিস্তির অপেক্ষায় ! ( আবিষ্কার,পরিষ্কার, তিরস্কার = এই বানানগুলি নিয়ে প্রায়ই ঝামেলায় পরতে হয় ! আপনারাও পরেছেন দেখা যাচ্ছে ! )
হ্যা। এটা আগেও ভুল করেছি। পরের লেখাগুলোতে শুধরানোর চেষ্টা করবো।
ভাল লেগেছে , ভাষার ব্যাবহার সুন্দর।
ধন্যবাদ।
মূল লেখা পেতে পারেন এখান থেকে। খান তানজীদ ওসমান।
সায়েন্স ফিকশন মুভি হতে হবে কেনো? এরকম ডিভাইস এখন বাস্তবেই পাওয়া যায়।
চমৎকার লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। বাকিটা পড়ে ফিডব্যক জানাচ্ছি।
দারুন চলুক
ধন্যবাদ।
দারুন আর উপকারি একটা লেখা।
-স্বপ্নচারী
ধন্যবাদ।
ভালো লেখা। চমৎকার উদ্যোগ।
অনুবাদের অংশটি কি অনুবাদ না করে নিজের ভাষায় লেখা যেত? অনুবাদ পড়তে সহজ লাগেনি। অভ্যস্থ নই সেটা একটি কারণ হতে পারে। এই লেখাটা যদি সাধারণ পাঠকের জন্য লেখা হয়ে থাকে তাহলে আমার মনে হয় অনুবাদ না করে নিজের ভাষায় মূল বক্তব্যটুকু লিখলে আরো সহজে বুঝতে পারতাম
পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
লেখার মূল উদ্দেশ্যই ছিল প্রবন্ধটির অনুবাদ। একটু কঠিন হবে ধারনাও ছিল। আপাতাত তাতেই আটকে থাকি। তবে পরের অংশ আরেকটু কঠিন বা বলতে পারেন টেকনিকাল জিনিসপত্র আর খুটিনাটি ভর্তি। দেখা যাক। সাজেশানের জন্য ধন্যবাদ।
অনেক ভালো লাগল অনুবাদটি পড়ে। উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি একটা প্রজেক্ট এ কাজ করেছিলাম হিউম্যান নিউরো পেপটাইড রিসেপ্টর Y2 নিয়ে, যা GPCRs ফ্যামিলির অনর্গত। দ্বিতীয় অংশের অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ।
বাহ! ইদানিঙ রসায়নের নোবেল পুরষ্কার দেয়া হচ্ছে জীববিজ্ঞানের আবিষ্কারে! বেশ তো! কোন দিন দেখবো ফিজিক্সে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে বায়োফিজিক্সে কাজ করার জন্য!! জীববিজ্ঞান যে এই শতকে নের্তৃত্ব দিচ্ছে বোঝা যাচ্ছে। লেখাটা দারুণ লাগলো। দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায়। এই গল্পগুলো পড়তে দারুণ লাগে। অনুবাদটা ভালো হয়েছে , সব লেখা তো আর ঝরঝরে ভাষায় লেখা যায় না, এই ধরনের লেখা আসলে পাঠকের যত্নশীল মনোযোগ দাবী করে।
রসায়নে নোবেল পুরস্কার জীববিজ্ঞানের শাখা থেকে দেয়াটা কিন্তু তেমন নতুন কিছু নয়। রসায়নের সঙ্গে জীববিজ্ঞানের ঘনিষ্টতার কারনে আর প্রায়োগিক দিক দিয়ে জীববিজ্ঞানের গুরুত্বটা বেশি বলেই। মতামতের জন্য ধন্যবাদ আরাফাত।
খান তানজীদ ওসমান।
পরের পর্ব এখানে
অত্যন্ত জরুরী বিষয়ে সুন্দর একটা লেখার জন্য ধন্যবাদ। আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন ফার্মাকোলজির টেক্সটবুকে জি-প্রোটিনের কাজের পদ্ধতি ছিল অজ্ঞাত। 'ছাত্ররা নষ্ট হয়ে যাবে'(!!!?)- বলে অধ্যক্ষ ক্যাম্পাসে স্বল্প মূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ নিতে দেন নি! পরে বুঝেছি উনি আমাদের কত বড় ক্ষতি করেছেন!
ব্রায়ান কোবিলকা শুধু জীববিজ্ঞানীই নন, একজন ডাক্তারও বটে! এটা আসলেই অনুপ্রেরণা দেয়। বাংলাদেশে বায়োকেমিস্ট্রি, ফিজিওলজি, মাইক্রোবাইয়োলজি ইত্যাদি বিষয় চিকিৎসক সমাজে এখনও নিগৃহীত। ধরেই নেয়া হয় যেসব ছাত্রের ক্লিনিক্যাল সাবজেক্ট তথা সার্জারি, মেডিসিন ,গাইনী ও তাদের বিভিন্ন শাখায় পড়ার যোগ্যতা নেই, তারাই বেসিক সাবজেক্টে যায়। এসব কথা খুব গর্ব করে এবং খুল্লাম-খুল্লাই বলে অনেকেই খুব আনন্দ পান। অথচ বেসিক মেডিকেল সায়েন্সে উন্নতি ছাড়া স্বাস্থ্যখাতে সামগ্রিক উন্নয়ন অসম্ভব। আমি নিজে ক্লিনিক্যাল বিষয়ের শিক্ষার্থী, কিন্তু বেসিক বিষয়ে যাঁরা রিসার্চ করেন, তাঁদের অত্যন্ত সম্মান করি। আমার কাছে একজন বড় ক্লিনিশিয়ান আর একজন বড় ফিজিওলজিস্ট বা এনাটমিস্ট বা বায়োকেমিস্ট সমান মর্যাদার দাবীদার। সেদিনটা এখনো ভুলতে পারিনা, যেদিন আমাদের এক সার্জন তাঁর এক জুনিয়র সম্পর্কে বলেছিলেন "আরে ও আর কী জানে। ও তো বায়োকেমিস্ট্রির প্রফেসর!" খুবই খারাপ লেগেছিল এই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য।
আপনি কি মেডিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ডের নাকি মৌলিক জীববিজ্ঞানের? অনুবাদ মোটের ওপর ভালো লেগেছে।
নির্ঝর অলয়
আমি পুরোপুরিই মৌলিক জীববিজ্ঞানের ছাত্র।
আমাদের দেশে ডাক্তারি পড়ার উদ্দেশ্যই হল পেশা হিসেবে বেছে নেয়ার জন্য। গবেষণা ভালবেসে কেউ ডাক্তার হয়েছে সেটা শোনাই যায়না। পশ্চিমা দেশে ব্যাপারটা ঠিক তা নয়। এটা ঠিক যে সেখানেও অনেকেই পেশা হিসেবে নেয়ার জন্য ডাক্তারি পড়েন, কিন্তু একটা বড় অংশই ডাক্তারি পড়েও সেটাকে পেশা হিসেবে নেননা। প্রচুর গবেষক আছেন যারা এমডি ডিগ্রীধারী, আবার পিএইচডি ও করেছেন এবং এখন গবেষণাগার চালাচ্ছেন। মেডিকেল সায়েন্সের সবচেয়ে বড় বড় আবিস্কারগুলি ডাক্তার নন এমন গবেষকদের কাছ থেকেই এসেছে।
নতুন মন্তব্য করুন