প্রথমেই বলে রাখি, আমি একজন প্রচণ্ড ভোজনরসিক মানুষ | ঢাকায় দেশী-বিদেশী যত রেস্টুরেন্ট আছে, তার বেশিরভাগেই আমি খেয়েছি | শহরের যেকোনো প্রান্তরে নতুন কোনো রেস্টুরেন্ট ওপেন হলেই অন্তত একবার আমার সেখানে যাওয়া চাইই চাই | তবে ঘরে কিছু রান্নার ব্যপারে আমি ছিলাম বরাবরই কুঁড়ে | বাসার ছোট বলে আদরটাও ছিল একটু বেশি | কিছু খেতে ইচ্ছা করছে বলার আগেই আমার বড় বোন সেটা রান্না করে দিত | ট্রাডিশনাল রান্নার পাশাপাশি বই পড়ে, ম্যাগাজিন দেখে নতুন নতুন রান্না করত ও, আর সানন্দার ছবির মত লোভনীয় কায়দায় পরিবেশন করত | আর আমার ছিল শুধু ভোজনেই আগ্রহ, রান্নায় নয় | মা আমাকে প্রায়ই বলত, তোমাকে রান্না করতে হবেনা, রান্না করার সময় মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে একটু দেখ | আমি এতটাই অলস ছিলাম যে কখনো কিচেনে মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে রন্ধন প্রণালী দেখা হয়নি আমার |তারপর সারাজীবন রান্না করে খাওয়াবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসিফ বিয়ে করলো আমায় | বিয়ের কিছুদিন আগে আমাদের বাসায় এসে পিৎজা বানিয়ে প্রমাণ করলো সে রান্না জানে, আমার মত নয় | বিয়ের পরে শ্বাশুড়ি বলত, "মামণি, তুমি সেজেগুজে গেস্টদের সাথে গল্প কর, রান্নাটা আমি সামলে নিচ্ছি" | এমনি নানা আহ্লাদে দিন কেটে যাচ্ছিল আমার | হঠাৎ একদিন জানতে পারলাম, আসিফ আর আমি আমেরিকায় যাচ্ছি কয়েক বছরের জন্য | আমি কি রান্না করে খাব, এ নিয়ে আত্মীয়স্বজন সবাই চিন্তায় পরে গেল | এদিকে আমি মা আর বোনের দেয়া কিছু টিপস, সিদ্দিকা কবীরের রান্নার বই, জিভে দেশী খাবারের স্বাদ আর নিজের চরম আত্মবিশ্বাস নিয়ে দেশ ত্যাগ করলাম |
তারপর আমেরিকায় এসে শুরু হলো নিজের রান্না করা খাবার খেয়ে বেঁচে থাকার প্রচেষ্ঠা | প্রথম দুইদিন ভয়ে চুলাই জ্বালাইনি | দুধ, সিরিয়াল, পাওরুটি আর ফলমূল খেয়েছিলাম | সাথে আসিফ চিকেন নাগেটস ভেজেছিল | তৃতীয় দিনেই আমাদের বাঙালি মন ভাতের চাহিদা জানান দিল | আমার তখনো সময় ব্যবধানের সাথে ঘুমের সামঞ্জস্য হয়নি | বাংলাদেশের সকালের সময়ে (আমেরিকার রাতে) ঘুম থেকে উঠে দেখি আসিফ ভাত, বেগুন ভাজা আর ডিম অমলেট তৈরী করে খেতে ডাকছে | চোখে পানি চলে আসল, যাক ! ও কথা রেখেছে | পেট ভরে ভাত খেয়ে ভাবলাম আগামীকাল আমিও রান্নায় যোগ দিব | পরের দিনের দুজনে একসাথে চিংড়ি রান্না করলাম | লবণ বেশি হয়ে গেল, বাসায় বেল পেপারস (ক্যাপসিকাম) ছিল, মিলিয়ে দিলাম তাতেও কাজ হলো না | বেশিক্ষণ ধরে রান্না করার কারণে চিংড়ি কেমন যেন শক্ত হয়ে গেল | নিজের প্রথম রান্না করা খাবার খেতে আমি ব্যর্থ হলাম | পরে চিংড়ির প্যাকেট এ লেখা দেখেছিলাম এগুলো লবণ দিয়ে সিদ্ধ করাই ছিল | ইশ ! আগে যদি জানতাম !
এত সহজে হাল ছেড়ে দেয়ার বান্দা আমি নই | পরদিন খুলে বসলাম সিদ্দিকা কবীরের বই | প্রতিটা খাবার পরিমান মত উপকরণ দিয়ে রেসিপি ফলো করে রান্না করলাম | সবচেয়ে হতাশ লাগত যখন লেখা দেখতাম:"লবণ স্বাদমত"; কতটুকু লবণ দিতে হবে সেটা যে কেন লেখা থাকে না? ধীরে ধীরে লবণের আন্দাজ ঠিক হল; বীফ ভুনা, চিকেন রোস্ট, কিমা কারি, টুনা কাবাব, বিরিয়ানি, ফিরনি, ফালুদা, একে একে ভালো ভালো খাবার তৈরী হতে লাগলো আমার কিচেনে | প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে জানতে পারলাম ইউটিউবে সমস্ত রান্নার রেসিপি খুঁজে পাওয়া যায় | ভিডিও দেখে রান্না করতে থাকলাম | সুন্দর করে ফুড ফোটোগ্রাফি করে আপলোড করলাম যেন দেশে আমার পরিবার জানতে পারে আমি --সেই ভোজনরসিক আমি খেয়ে বেঁচে আছি | এদিকে একমাসের মধ্যেই ঈদ চলে এলো, আমাদের বাসায় প্রতিবেশী বাংলাদেশীদের দাওয়াত দিলাম | আপু-ভাইয়ারা উৎসাহ দিয়ে রান্নার প্রশংসা করলেন | আমি শ্রদ্ধেয় সিদ্দিকা কবীর আপাকে ধন্যবাদ দিয়ে মনে মনে অনেক গুলো ইমেইল করলাম |
খুবই কাকতালীয় ভাবে একদিন "জুলি এন্ড জুলিয়া " মুভি টা দেখলাম | সিনেমার বিষয়বস্তু হলো নায়িকা প্রখ্যাত রন্ধনশিল্পী জুলিয়া চাইল্ড (যাঁর হাত ধরে ফ্রেঞ্চ কুকিং আমেরিকায় প্রচলিত হয়েছিল) এর বই পরে প্রতিদিন একটি করে নতুন রেসিপি ট্রাই করে আর তার এক্সপেরিয়েন্স ব্লগে শেয়ার করে বিখ্যাত ব্লগার হওয়ার চেষ্টা করে | মুভিটা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে যাই | পরদিন লাইব্রেরিতে গিয়ে জুলিয়া চাইল্ড র রান্নার বই খুঁজে বের করি | এই বই খুঁজতে গিয়ে বিভিন্ন দেশের রান্নার বই আমার দৃষ্টি কেঁড়ে নেয় | ছবিওয়ালা কুকবুক যে এত আকর্ষনীয় হতে পারে আমি সেদিন প্রথম জানতে পারি | আমি সাত-আটটা বই টেবিলে নামিয়ে ছবি দেখা শুরু করি | খুবই কৌতুহল নিয়ে দেখতে থাকি ইটালিয়ান রান্নার বই | জুলিয়া চাইল্ডর বই সহ আরো দুই-তিনটা বই ধার নিয়ে বাসায় আসি | জুলিয়া চাইল্ডর বই পড়ে আমি ফ্রেঞ্চ কুকিং সমন্ধে অনেক কিছু জানতে পারি | কিন্তু কোনো রান্না ট্রাই করার সাহস হয়নি | আমার শুধু জানার আগ্রহ ছিল কোন দেশের খাবার কেমন |
একদিন এক ই্থিওপিয়ান বান্ধবীর কাছে জানতে পারি, এই শহরে নাকি প্রতিমাসে একটা ফ্রি কুকিং ক্লাস হয় যেখানে একেক দিন একেক দেশের রান্না শেখানো হয় । শুনে খুবই ইন্টেরেস্টিং মনে হলো আমার, ঠিক আছে একদিন গিয়েই দেখি কি হয় | আমি যেদিন প্রথম কুকিং ক্লাসে গেলাম, সেদিনটি ছিল ইরাকী রান্নার | আমি ভেবেছিলাম একজন মহিলাই বিভিন্ন দেশের রান্না শেখান, আসলে সেটা নয় | ঘটনা হচ্ছে, একজন আমেরিকান মহিলা এটা অর্গানাইজ করেন এবং তার বাসায় আগ্রহী সকলকেই ইনভাইট করেন, কিন্তু রান্না করে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টরা ! সেদিন ইরাকী এক স্টুডেন্ট তাদের দেশীয় বীফ কাবাব, ফিলাফেল আর পিটা ব্রেড রান্না করে দেখালো | সুমাক নামের একটি নতুন মশলার সাথে পরিচয় হলো আমার | আমরা মজা করে খেলাম, আর খাওয়া শেষে যা শুনলাম তাতে পরবর্তী এক মাসের জন্য ঘুম হারাম হয়ে গেল আমার | ভদ্র মহিলা ঘোষণা করলেন নেক্সট কুকিং ক্লাস হবে বাংলাদেশী আর আমি নাকি রান্না করে দেখাবো, তাও আবার রান্না করতে হবে চল্লিশ-পঞ্চাশ জনের জন্য | যে আমি দুই মাস হলো রান্না করছি, সেই কিনা রান্না শিখতে এসে শেখানোর ফাঁদে পরে গেলাম! যাই হোক, আমাদের বাংলাদেশী ভাইবোন দের সহযোগিতায় আমরা সে যাত্রায় ভালই করেছিলাম | ফুচকা, চটপটি, চিকেন তন্দুরি, চিংড়ির মালাইকারি, পোলাও, পরোটা, গাজরের ফিরনি আর চা বানিয়েছিলাম আমরা | পরে সেই ভদ্রমহিলা আমাকে আর আসিফকে বেশ কয়েক বার দাওয়াত খাইয়েছেন | আমাকে বেশ কিছু মার্কিন রান্না শিখিয়েছেন | এরপর থেকে আমার ওভেন থেকেও বের হয়ে আসতে লাগলো ফ্রেশলি বেইক্ড কেক, চিজ কেক, ব্রাওনি, কুকি, ক্যাসেরল সহ আরো কত আমেরিকান খাবার ! পরে টিভিতে বিভিন্ন আমেরিকান (মাস্টার শেফ, চপড) আর কিছু মেক্সিকান কুকিং শো দেখে তাদের culinary আর্ট সম্পর্কে সামান্য জানতে পেরেছি |
ধীরে ধীরে রান্না শেখাটা আমার শখে পরিনত হল | আমি ইউটিউবে সেইম আইটেম রান্নার দুইতিনটা ভিডিও দেখে নিজের মত করে করা শুরু করলাম | বেটার আউটকাম আসতে লাগলো | হঠাৎ একদিন খবরের কাগজে দেখলাম সিদ্দিকা কবীর প্রয়াত হয়েছেন | নিউজটা পড়ে অনেকক্ষণ কাঁদলাম | যার বই পড়ে আমি খেয়ে বেঁচে আছি, তিনি কি কখনো পাবেন আমার সেই ইমেইল গুলো? আমি শখের বশে যত বিদেশী রান্নাই করিনা কেন, সবচেয়ে তৃপ্তি পাই দেশী রান্না করে, দেশী খাবার খেয়ে | সবারই তার মায়ের হাতের রান্না সবচেয়ে প্রিয়, আমিও তার ব্যতিক্রম নই | এখন শুধু মনে হয় দেশে থাকতে আমি যদি একটি বার, --একটি বার আমার মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে মায়ের রান্নাটা একবার দেখতাম ! ভবিষ্যতে কখনো সে সুযোগ হলে আর হাতছাড়া করব না | তবে যে বোন নিজে না খেয়ে আমার মুখে তুলে খাইয়েছে, তার রান্না ও আমার কাছে সমমানের শ্রেষ্ঠ ! রন্ধন যদি কোনো শিল্প হয়ে থাকে, তাহলে আমার কাছে আমার বোনই আমার সেই শিল্পের রাণী !! আর আমার নিজের রান্নার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ইন্সপায়রেশন আসিফ, যে কিনা নিয়মিত হাসিমুখে সমস্ত ইনগ্রেডিয়েন্ট যোগাড় করে, আর রান্না যেমনই হোক, খেয়ে বলে "অসাধারণ হয়েছে ডিয়ার !" আমি জানি, প্রতিদিনের রান্না সমান ভালো হওয়ার কথা না !
মন্তব্য
খুব ভালো লাগলো পড়তে। কি ঝরঝরে লেখা! রেসিপি কবে দিবেন?
ধন্যবাদ নিশিতা | ভবিষ্যতে রেসিপি পোস্ট করার ইচ্ছা আছে |
আপনার লেখা খেয়ে থুক্কু পড়ে মজা পাইলাম:-P
ধন্যবাদ
আপনিও তো বাংলা সিনেমার মতো ফাঁকি দিলেন... প্যাডেল মারতে মারতে যেমন নায়ক কিশোর থেকে যুবক হয়, তেমনি বই পড়তে পড়তে রাঁধুনি হয়ে গেলেন ! আপনি নিশ্চয়ই বলতে চান না যে প্রথম দিনের পর থেকে আর কিছু নষ্ট করেননি রান্না করতে যেয়ে ?
আপনার লেখার হাত চমৎকার, রান্নার হাতের মতোই ! খুবই ঝরঝরে ভঙ্গিতে লিখেছেন। আপনি আরো লিখবেন আশা করি।
আরেকটা কথা, হয়তো সচলে নতুন বলেই (আন্দাজ করছি, ভুল হলে মার্জনীয়) আপনি লেখার শেষে নিজের নাম/নিক দিতে ভুলে গিয়েছেন। এরপর থেকে লেখার শেষে নিজের নাম কিংবা নিকটা জুড়ে দিয়েন।
অলমিতি বিস্তারেণ
লেখিকা,
আমি যদি ভুল না করি, আমি তোমারে চিনসি তোমার এ্যলবাম রেগুলার দেখি আর আসিফের সাথেও কথা হয় মাঝে মাঝে।
সবজান্তা,
তুমিও চিন এই দুজনরে, আমাদের ডিপার্টমেন্টের, ০১ ব্যাচ (আসিফ ইসলাম খান মনে কইরোনা আবার!)
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
মরুদ্যান, আমিও তোমাকে চিনি
বাংলা সিনেমা দেখে দেখেই তো ছোট থেকে বড় হয়েছি আমরা !
"আপনি নিশ্চয়ই বলতে চান না যে প্রথম দিনের পর থেকে আর কিছু নষ্ট করেননি রান্না করতে যেয়ে?"--সেটা বলতে চাই না।তবে প্রথম দিনের পর থেকে এমনকিছু তৈরী হইনি যা একেবারে মুখেই দেয়া যায়না।আর কিছু জিনিস তো এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে নষ্ট হয়েছেই।সেগুলো ভবিষ্যতে রেসিপির সাথে সাথে সতর্কতা হিসেবে শেয়ার করব।
আর সচলে এটা প্রথম লেখা, তাই নাম/নিক দিতে ভুলে গিয়েছি।
আর সচলে এটা প্রথম লেখা, তাই নাম/নিক দিতে ভুলে গিয়েছি।
-জলপ্রপাত
আর সচলে এটা প্রথম লেখা, তাই নাম/নিক দিতে ভুলে গিয়েছি।
-জলপ্রপাত
ভালো লাগলো
ধন্যবাদ
ভাল লেখা। সুযোগ পেলে Recipe blog with photo খুলে ফেলেন। Food Photography ম্ জার জিনিস।
ডিমপোচ
ধন্যবাদ পরামর্শের জন্য।
লেখাটি পড়ে বহু বছর আগের নিজের জীবনের কথা মনে হল। আমিও ছাত্রের বউ হয়ে এসেছিলাম। আমরাও বিভিন্ন দেশের রান্না শিখতাম বিভিন্ন দেশের ছাত্রদের বউদের কাছ থেকে।
আমি রান্নায় হাত পাকিয়ে ফেলেছিলাম আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের খাইয়ে। কেও হয়ত লুচি চায় তো কেও চায় পরোটা। কেও চটপটি, কেও সিঙ্গারা। ওরা আবার আমার বয়সী, ফলে ছাত্র জীবনটা পিকনিকের মত ছিল। খুব মিস করি।
লেখা ভাল হয়েছে। মনে হল রান্না করতে পছন্দ করেন, রান্নাকে ভাল বাসলে খাবার খেতে ভাল হবেই।
। আপু রেসিপি চাই।
না খেয়ে মন্তব্য করা যাবেনা।
...........................
Every Picture Tells a Story
মুস্তাফিজ ভাইয়ের মত আমি ও চিন্তা করতেছিলাম "না খেয়ে মন্তব্য করা যাবেনা। " কবে চক্ষু-নাসিকার বিবাদ ভঞ্জন হবে, বলেন ?? লেখা ভাল লাগছে।।।।
সহমত মুস্তাফিজ ভাই এর সাথে
খুব খুব ভালো লাগলো পড়ে। অনেকটাই নিজের সাথে মিলে গেলো। আমার রান্নার হাতেখড়ি বিয়ের পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিলো, শ্বাশুড়ির কাছে কিছু টিপস পেতাম। তার আগে পর্যন্ত আমিও মা আর বড়বোনের রান্না খেয়ে আনন্দের সাথে বেঁচে ছিলাম, তখন শখ করেও জানতে চাইনি মজার মজার খাবারগুলোর প্রস্তুত-প্রণালী কি। পাকাপাকি ভাবে রান্নাবান্না, যেমন নতুন নতুন আইটেম ট্রাই করা, দাওয়াতে অনেকজনের জন্য রান্না এগুলো দেশের বাইরে আসার পরই বেশি শুরু হয়। তখন বড় ভাই-ভাবীদের প্রশংসায় উৎসাহ দিগুণ হয়ে যেত! অবশ্য রান্নার সময় বার বার ফোন আর এসএমএস দিয়ে আম্মা আর আপুর মাথা খারাপ করে দিতাম, আর সাথে ছিলো অবশ্যই সিদ্দিকা কবীরের 'রান্না খাদ্য পুষ্টি'! রান্নার ক্ষেত্রে আমার বরের যে কথাটা আমাকে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দেয় তাহলো - তোমাদের তিন জনের (আম্মা, আপু আর আমি) রান্নায় মিল আছে, একটা চেনা ফ্লেভর পাওয়া যায়!
ওহো, নিজের কথা বলেই এত্তো বড় একটা কমেন্ট লিখে ফেললাম, আসল কথাই বলা হলোনা, রেসিপি'র জন্য বসে আছি কিন্তু উইথ ছবি!
মন্তব্যে আপনার এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করেছেন, পড়ে ভালো লাগলো| আমিও চাই আমার মা আর আপুর ডিশ রিক্রিয়েট করতে| মাঝে মাঝে হয়েও যায় একদম একরকম, কিন্তু কখনো কখনো ডিফরেন্ট হয়ে যায়
একসময় আমিও নতুন রেসিপি করতে গিয়ে অখাদ্য রেঁধেছি! একদিন হাসিব হাসতে হাসতে আমার রান্না সম্পর্কে বলেছিল - আমার জীবন গিনিপিগের; আর ভাইয়া নয়া গবেষক!
আজ রাতেও রান্না করেই খাব; পুরোনো দিনগুলো বারবার মনে পড়ে।।
লেখালেখি চলুক, বিভিন্ন বিষয়ে।
চেষ্টা করব।
ভালো লাগলো। রান্না বান্না নিয়ে লেখা খুব কম আসে। চালিয়ে যান। প্রথম লেখায় তারকা।
অমি_বন্যা
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। শুধু রান্না কেন, সময় পেলে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখার আশা রাখি।
রান্না পারি না। লেখা পড়ে একটা চিন্তা দুর হল। যাক বিয়ের পরেও তাহলে শেখা যায়। কঠিন কিছু না।
ইফতি
জ্বি। নিজের প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে যেকোন কিছুই শিখে ফেলা সম্ভব।
আমার এমন কিছু পরিচিত মানুষ আছে, যাদের রাঁধতে ইচ্ছা করে না বলে নুডুলস সিদ্ধ খেয়ে বেঁচে থাকে
লিখা ভালো লাগ্লো জলপ্রপাত, সবারি বোধহয় সিদ্দিকা কবিরের বই নিয়ে বাইরে আসা হয়। আমি নিয়ে আসিনি কেবল, মনের সুখে রান্নর করতে করতে শিখে গেছি,এখন রান্না করলে খাওয়া যায় আর কি।
ধন্যবাদ বন্দনা ,
আপনি তো তাহলে স্বশিক্ষিত!
আমার বউ এর চেয়ে ঢের ভাল পারে ।
আপু আপনার রান্না খেতে চাই
রূপাই
"আমার বউ এর চেয়ে ঢের ভাল পারে"--তাহলে তো কোন ছাড় নেই। আপনার বাসায় খেতে চাই।
খাবার কোন সুযোগ নাই ।আমি থাকি দেশে আর আপু তুমি থাক বিদেশে ।খাবে কিভাবে ?দেশে আসলে খাবে ।
একটা সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ যোগ করে দিন প্লিজ। প্লিজ প্লিজ প্লিজ। সেটা হতে পারে এমন: "আসিফের মতো ছেলে আর হয় না। অন্যান্য ছেলেরা আসিফের মতো কখনোই হয় না। একদমই না।" নাহলে আপনার লেখা পড়ে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অবক্ষয় ও ভুল ধারণা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বিয়েশাদী নিয়ে ভয় পাওয়া মমিনকে মানায় না হিমু সাহেব। হিমুরা টেনশন নেয় না, দেয়
আমনে আমাত্তে বেশি বুজেন?
হিমু ভাই, টেনশন নিয়েন না।
বাংলাদেশে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থ নিয়ে শুধু তিনজন লোক টেনশন নেয়। আমি, আনিসুল হক আর আবুল মক্সুদ। এর মধ্যে আনিসুল হক লুঙ্গি পরেন, সব কিছুতে ইজি থাকেন। আবুল মক্সুদ তো না খেয়েই থাকে হাফ বছর। বাকি থাকলাম আমি।
যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ দুইটা লাগবে , আরেকটা হলো "অন্যান্য মেয়েরা আমার মতো অনেক সময়েই হয় না। একদমই না।"
ভাই, আমি শুধু আমার নিজের কথা, আমার পরিবারের কথাই বলতে চেয়েছি।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মনে পড়ে বিয়ের পরে প্রথম দিনগুলোর কথা!
কেউ রাঁধতে পারেনা শুনলে আমার মাথায় শর্ট সার্কিট হয়ে যায়। ইচ্ছা থাকলে রান্নাটা খুব একটা কঠিন কাজ না- আর প্রয়োজনের সময় সবাই সব শিখে যায়। আমি জীবনে এক গ্লাস পানিও নিয়ে খাইনি (বাপ-মা'র স্পয়েল্ড)। বিদেশে এসে বাথরুম পরিষ্কার থেকে স্পেস বিজ্ঞান সবই শিখে নিয়েছি- রান্না তোঁ দুধভাত মাঝে মাঝে রান্না করি দরকার পড়লে- তবে আমি বেশিরভাগ সময় জোগালি-কাটালি আর বউ শেফ
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
জ্বী ভাই, দেশে থাকতে আমিও বাবা-মা'র স্পয়েল্ড সন্তানই ছিলাম।বিদেশে এসে রান্নাবান্না, বাথরুম পরিষ্কার, লেখাপড়া--সবই করছি।
আমি কিন্তু বড় একজন খাদক। দেশে আসলে অবশ্যই আমার কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে যাবেন।
রান্না চাখার জন্য নিয়ে বসলাম।
যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...
তাহলে পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট নেবার প্রস্তুতি নিতে থাকি
-জলপ্রপাত
নতুন মন্তব্য করুন