ছবি যখন ফ্র্যাংকেনস্টাইন ফেক!

রংতুলি এর ছবি
লিখেছেন রংতুলি [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০৩/১১/২০১২ - ৩:৫২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গত সোমবারে আমেরিকার উত্তর-পূর্ব কোণের অধিক সমৃদ্ধ ও বসতিপূর্ন এলাকায় আঘাত হানে শক্তিশালী ঘুর্ণিঝড় স্যান্ডি। ক্যাটাগরি দুই এই হারিকেনের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্কসহ গুরুত্বপূর্ণ জনপদের কোস্টাল এরিয়াগুলো। বিদ্যুৎ, সাবওয়ে ট্রেন সার্ভিস, রাস্তাঘাট, বন্দর ইত্যাদি ব্যাপক ক্ষেত্রে নজিরবিহীন ক্ষতির মুখে পড়ে অঞ্চলগুলো। Mary Shelley এর বিখ্যাত দানব Frankenstein যেন রূপ নিয়েছিলো সুপারস্টর্ম স্যান্ডির, তাই এর প্রাকান্ডতা বোঝাতে দেয়া হয় Frankenstorm নাম। বিশেষজ্ঞদের মতে ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে এটা শতাব্দীর ভয়াবহতম ঘুর্ণিঝড়, যা কমপক্ষে ৫০ মিলিয়ন মানুষের জীবনকে এনেছিলো হুমকির মুখে এবং তাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত করেছে সম্পূর্ণরূপে। মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০০ তে, যারমধ্যে ৭০ জনই শিকার হয় ক্যারিবীয় উপকূলীয় আঘাতের। যাই হোক, স্যান্ডির ভয়াবহতা, রেখে যাওয়া ক্ষয়ক্ষতির হিসেব এসবের কোনোটাই আমার আজকের লেখার মূল বিষয় নয়। যে কারণে সব কাজ ফেলে এক প্রকার জোড় করেই লেখাটি লিখতে বসলাম তা কিছুটা ভিন্ন। ঠিক যে মুহূর্তে আমেরিকার উত্তর-পূর্ব উপকূল জুড়ে চলছে প্রচন্ড উষ্ণ অতলান্তিকীয় বায়ুর প্রভাবে হারিকেন স্যান্ডির তাণ্ডব, ঠিক সে মুহূর্ত থেকেই অতলান্তিকের এপাড়ে বসে কিছুটা উদ্বিগ্নতায় সাথে কুখ্যাত এই ঝড়টির আপডেট জানার চেষ্টায় খানিক পরপরই নেট গুঁতা-গুঁতি করে যাচ্ছিলাম। ঝড়ের ইমেজ ঘাঁটতে গিয়ে কমপক্ষে শ'খানেকের মতো আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয়ে যাওয়া ইমেজ চোখে পড়লো। এবং এক পর্যায়ে চোখ আটকালো ডিসকভারি নিউজের একটি আর্টিকেলে - Top 5 Fake Hurricane Sandy Photos। সচলে হয়তো অনেকেই এই ফেক ছবির বিষয় সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত আছেন। বিশেষ করে বর্তমানে এই ডিজিটাল যুগে যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা নানা চাঞ্চল্যকর ঘটনায় খুব দ্রুত ফেসবুক, টুইটারসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক মাধ্যমগুলোতে যেসব বানোয়াট মিথ্যে ছবিতে সয়লাব হয়ে যায়, আমার আজকের আলোচনা মূলত এধরনের কিছু ফেক ছবি নিয়ে।

এই ফেক ছবিগুলো বাস্তব ঘটনার সাথে মিল রেখে এতো নিখুঁতভাবে তৈরী করা হয় যে, আপনার পাকা চোখও একবারের জন্যে হলেও থমকে যেতে বাধ্য। আর শুধু সান্ডির বেলায় নয় এমন আপত্তিকর মিথ্যে ছবি প্রকাশিত হচ্ছে হরহামেশাই। আজকে এরকমই কিছু ছবি নিয়ে আলোচনা করবো। এই আলোচনায় ফটোশপের কাজ ছাড়াও যেসব ছবির বিষয়বস্তু মূলত সত্য কিন্তু ব্যবহৃত হয়েছে উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে মিথ্যে জায়গায়, তাকেও সমানভাবে ফেক ধরা হবে।

প্রথমে একদম 'ফ্রেশ ফেক' ডিসকভারির আর্টিকেলটিতে পাওয়া স্যান্ডির ফেক ছবিগুলো দিয়েই শুরু করিঃ

ছবি-একঃ

(Ominous Clouds Looming Over Statue of Liberty)

নিউ ইয়র্ক টাইমসের বড় বড় সব মহারথীরা উপরের ভুয়া ছবিটিকে হারিকেন স্যান্ডির ছবি বলে দিব্বি চালিয়ে দেয় নিজেদের ওয়েবসাইটে, টুইটারে। যা মূলত মাইক হোলিংশিডের ছবি নাব্রাস্কা সুপার সেল ও নিউ ইয়র্ক হারবার (ইন্ডিপেনডেন্ট ডে মুভি থেকে নেয়া) এর সংমিশ্রণে ঘুটা মারা এক উৎকৃষ্ট ফটোশপের নমুনা।

আসল ছবি

ছবি-দুইঃ

(Sinister Clouds Threaten to Swallow Empire State Building)

সত্য ছবি, মিথ্যে প্লট। ছবিটি স্যান্ডির ছবি হিসেবে ফেসবুক, টুইটারসহ অন্যান্য মাধ্যমে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে এটি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ২০১১ এর ছবি।

আসল ছবি

ছবি-তিনঃ

(Waves Crashing On Statue of Liberty)

আরেকটি দ্রুত ও সহজ ফটোশপের নমুনা। অরিজিনাল ছবিটি 'দ্যা ডে আফটার টুমরো' মুভির ওয়ালপেপার।

মূল ছবি

ছবি-চারঃ

(Dark Clouds Rolling Over the George Washington Bridge)

জর্জ ওয়াশিংটন ব্রিজের উপর কালো মেঘের ঘনঘটা, ঝড়ের পূর্বের তীব্র চন্ডালরূপী আকাশ। ছবির উপাদানগুলো নিঃসন্দেহে পুরোপুরি সুপার স্যান্ডির সা্থে গেলেও বস্তুত ছবিটি নেয়া হয়েছে 'গেটি ষ্টক' ২০০৯ থেকে।

মূল ছবি

গেলো স্যান্ডি নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অসাধারণ অথচ ভুয়া কিছু ছবির কথা। প্রশ্ন হলো কেন এই প্রতারণার আশ্রয়? এতে আদৌ কি কারো কোনো লাভ হয়? উত্তর খুব সোজা আপনার বিনোদনের পাতে সবচেয়ে প্রথম ও আকর্ষণীয় খোরাকটি পৌঁছে দিতেই এত্তো হুড়াহুড়ি। উপরের ছবিগুলোর উদ্দেশ্য একটাই আর তা হলো সবার আগে মানুষকে এন্টারটেইন করার টেন্ডেন্সি, বাস্তবে দুর্যোগটির রূপ কেমন, কতজন মানুষ ঠিক সেই মুহূর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসহনীয় মুহূর্ত পার করছে, তা নিয়ে প্রকৃতপক্ষে কোনো মাথা-ব্যথা এই ফেকার তথা বিনোদনকারীদের থাকে না। তাদের কাছে মানুষের কষ্ট-দুর্ভোগ-আহাজারি, বিপদ্গ্রস্ত জনপদ-সভ্যতা সবই শুধু নিউজ। আর তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে অপেক্ষাকৃত আকর্ষণীয় উপায়ে সবার আগে, প্রয়োজনে মিথ্যা মাল-মশলা-তকমা মিশায়ে। হু কেয়ারস! পাবলিক কিছু বুঝে উঠার আগেই তো কেল্লা ফতে!

তবে যাই বলি না কেন, একটা বিষয় অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এই ফেকাররা নিঃসন্দেহে ক্রিয়েটিভ, একটিভও বটে। যেকোনো বিষয়ে তাদের ক্রিয়েটিভিটি আর অ্যাক্টিভিটির উদাহরণ পদে পদে। তাদের ক্রিয়েটিভিটির একটি দারুণ উদাহরণ নিচে দিলাম।

ছবি-পাঁচঃ

চে গুয়েভারা ও জন লেনন দুই মহামানব একসাথে নিবিষ্ট মনে সঙ্গীত চর্চায় ব্যস্ত! ছবিটি দেখে প্রথমে চমকে যাই, খানিকক্ষণ চোখে বিস্ময় আর প্রশ্ন নিয়ে তাকায় থাকি। এখান থেকে প্রাপ্ত বিশ্লেষণ অনুযায়ী এটা আসলে আরো একটা ক্রিয়েটিভ ফেকের নমুনা। ব্যাপারটার ধরতে পেরে আমার নিজের অজান্তেই ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি ফুটে উঠে, এক্ষেত্রে রাগের বদলে ফেকারদের ক্রিয়েটিভিটিকে কেন জানি আনমনে অ্যাপ্রিশিয়েট করি। তোফা আইডিয়া, সন্দেহ নাই! যদিও ছবি ফেক।

আসল ছবিটি হলো -

আসল ছবিতে জন লেনন তার সমসাময়িক গিটারিস্ট ওয়েইনি গ্যাবরিয়েল অনুশীলনে ব্যস্ত।

আবার ফিরে আসি দুর্যোগে - ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ সাল, স্থানীয় সময় ৩:৩৪ মিনিট। ৮.৮ (MMS) মাত্রায় ৩ মিনিট স্থায়ী seismograph রিপোর্ট অনুযায়ী এযাবতকালের ৬ষ্ঠ শক্তিশালী ভূমিকম্পটি আঘাত হানে চিলির উপকূলীয় কেন্দ্রের আবাসিক অঞ্চলগুলোতে। সরকারী হিশেব মতে এ দুর্যোগে প্রাণ হানির সংখ্যা প্রায় ৫২৫ জন, ২৫ জনের মত নিখোঁজ, আর মোট জনসংখ্যার ৯% মানুষ হারায় তাদের প্রিয় বাসস্থান। বিস্তারিত এখানে

আগেই বলেছি সব ক্ষেত্রেই যে ছবি এডিট, ফটোশপ, জোড়া-তালি, ঘুটা মারার প্রয়োজন পড়ে, তা নয়। জ্ঞানী মুমিনরা তার চেয়ে কম পরিশ্রম বা মাথা খাটিয়ে, অপেক্ষাকৃত সহজ ও বলদীয় উপায়ে নিজের বক্তব্য পরিবেশন করে থাকে। নিচে লক্ষণীয় -

ছবি-ছয়ঃ

উপরের ছবিটি যে কতটা উর্বর মস্তিকের জ্বলন্ত উদাহরণ, তা নিয়ে মনে হয় না আর কিছু বলার প্রয়োজন আছে! যা বলার আগের ছবিগুলোই তা বলে দিচ্ছে। শুধু কিছু প্রশ্ন এই অধমের মাথায় চাড়া দিয়ে উঠছে, কেউ যদি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে তার ধর্ম সত্য ও ন্যায়ের, তাহলে সে নিজেই কেনো নির্লজ্জ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সে ধর্মকে কলঙ্কিত করছে? তাহলে কি তার নিজের বিশ্বাসের উপর নিজের আস্থা নেই! কেউ যদি জানে, সৃষ্টিকর্তা যা দেখানোর তা দেখাবে। তাহলে কি সেটা সৃষ্টিকর্তার উপর ছেড়ে দেয়াটাই যুক্তিযুক্ত নয়? বরং এই মিথ্যাচার দিয়ে যা প্রমাণিত হয়েছে তা হলো, প্রথমতঃ কেউ বা কারা ধর্ম ও খোদার নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেরা কতটা মূর্খ তার পরিচয় দিয়েছে। দ্বিতীয়তঃ শুধু তাই নয় সে বা তারা সেই খোদার উপর মাতবরি করে নিজেই খোদা হবার চেষ্টা করেছে।

সবশেষে ফেকিং এ মিডিয়ার রূপ তুলে ধরতে খুব পরিচিত একটি ছবি।

ছবি-সাতঃ

উপরের ছবিতে একটি ঘটনাকে মিডিয়া কিভাবে নিজের সুবিধামত ভিন্নরূপে কাভারেজ করে তা দেখানো হয়েছে। একটি সত্য ছবি প্রকাশের ভিন্ন স্টাইলের দরুণ নিঃসন্দেহে দু'ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত দু'রকম প্রভাব ফেলতে পারে। "Half truth is worse than complete lie" - কথাটা এক্ষেত্রে পুরোপুরি খেলে যায়!

হ্যাঁ, ছবি কথা বলে। শুধুমাত্র একটি ছবি হাজার হাজার মানুষের ভেতরের ঝিমানো মনুষ্যত্বকে নাড়া দিয়ে তলিয়ে যাওয়া চেতনাকে এক করতে পারে, এরকম উদাহরণও আছে ভুরিভুরি। তাই বলা হয়ে থাকে, একটা ছবি হাজারটা শব্দের চেয়ে বেশি কার্যকর। অথচ ভেবে দেখুন সে ছবি যদি হয় মিথ্যা, তাহলে তা অবশ্যই বিপরীত প্রভাব ফেলবে। এবং তা হবে হাজারটা মিথ্যার চেয়ে বেশি ভয়ংকর! যার তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে কিছুদিন আগে বহুল আলোচিত রামু, পুটিয়ার ঘটনায়। অতএব বর্তমানে এই ফেকিং ও যথেচ্ছার রাজত্বে, নিজেকে 'জ্যাক অ্যাস' বানানোর হাত থেকে রক্ষার দায়িত্ব আপনার নিজের। যেকোনো সন্দেহজনক, মনে প্রশ্ন জাগে এরকম ছবিতে ছোখ বন্ধ করে বিশ্বাসের আগে, অন্তত আরেকবার তা ভালো করে দেখুন, নিজের মাথা (জ্ঞান-বুদ্ধি, বিচার-বিবেচনা) খাটান। নিজে সত্য জানার চেষ্টা করুন এবং অন্যকে জানতে সাহায্য করুন। নিজের মধ্যে সচেতনতা বাড়ান এবং দশজনের মাঝে তা ছড়িয়ে দিন! যেহেতু এরকম বস্তা বস্তা আলোচনা ঐ সব নির্লজ্জ ফেকার বা মিডিয়ার উপর কোনই প্রভাব ফেলবে না, এক ফোঁটাও কমাবে না তাদের ফেকিং অ্যাক্টিভিটি। তাই নিজের সচেতনতার বিকল্প কিছু নাই।

-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

ছবিগুলো নেট থেকে নেয়া

স্যান্ডিতে ব্যবহৃত তথ্যসূত্র -

বিবিসি
ডিসকভারি নিউজ -১
ডিসকভারি নিউজ -২

............
রংতুলি


মন্তব্য

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

দরকারী লেখা। চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ কবি। হাসি

.........
রংতুলি

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক
ছবি-এক যে ফেক প্রথমদিন ই মনে হয়েছিল ---
লেনন এর জন্ম আর চে'র মৃত্যু দিবস এক হওয়ায় - আমি তো এই ছবিটা দিয়ে ব্যানার প্রায় বানিয়েই ফেলেছিলাম - কিন্তু কেমন জানি মনে মানছিলনা - বেঁচে গেছি দেঁতো হাসি
ধন্যবাদ রংতুলি।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ব্যানার্জি!

চে আর লেনন এর ছবিটা কিন্তু আমার ভালোই লেগেছে। যেই করে থাকুক আইডিয়াটা খারাপ না! তবে সচলের ব্যানার করার সময় অবশ্যই ফেক ছবির ব্যাপারে সাবধান থাকবেন!

.........
রংতুলি

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আরজু। হাসি

.........
রংতুলি

শামীম এর ছবি

চমৎকার এবং দরকারী লেখা। ১ম ছবিটার শেয়ার দেখেই বলেছিলাম এ্যাত পরিষ্কার দেখায় যাওয়া ছবি সত্য হওয়া বেশ কঠিন - এখন প্রমাণ পেলাম, ধন্যবাদ।

তবে স্যান্ডি ঝড়টা কিউবাতে প্রবেশের সময় ক্যাটেগরি ২ ছিল (২৫-অক্টোবর)। পরবর্তীতে যখন এটা আটলান্টিক সিটিতে ল্যান্ডফল করলো (২৯-অক্টোবর) তখন এটা একটা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন ছিল, কারণ এটার শক্তি অনেক কমে গিয়েছিলো। হারিকেন হল এমন একটা ট্রপিকাল সাইক্লোন যার ৭৪মাইল/ঘন্টা বেগে বাতাস থাকে। স্যান্ডি যখন নিউ জার্সিতে ছিল তখন এটা আর হারিকেন ক্যাটাগরিতে পড়ার মত যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল না - কাজেই এটা শুধুমাত্র একটা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন ছিল। আর ... ... ... সুপারস্টর্ম বলে কোন টার্ম আবহাওয়াবিদ্যায় নাই - এটা মিডিয়ার আবিষ্কার।

সূত্র ১: http://www.popsci.com/science/article/2012-11/dictionary-hurricane-sandy-superstorm

সূত্র ২: http://en.wikipedia.org/wiki/Tropical_cyclone_scales

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ! হাসি

ক্যাটাগরি দুই লিখেছিলাম সার্বিক বিচারে মানে ভবিষ্যতে স্যান্ডিকে কোন ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করা হবে এটা ভেবে। তবে বাহামা অতিক্রম করে ক্যারিবীয় রুটে এর গতি যে কমে আসছিল, ডিসকভারি নিউজে দেয়া আমার লিংকটাতেই আছে। আনপ্রেসিডেন্টেড স্টর্ম, ফ্রাংঙ্কেন স্টর্ম, সুপার স্টর্ম (মিডিয়ার দেয়া) এই নামগুলো বোধহয় ব্যবহার হয়েছে রূপক অর্থে এর সাইজ ও তাণ্ডব (ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা) দেখে।

একই সাইটে একেকদিন একেক নিউজ ছাপলে কিছুটা বিভ্রান্ত হওয়া স্বাভাবিক! পোস্টে যাকে বলছিলাম মিডিয়ার সুবিধাবাদী কাভারেজ!
http://www.popsci.com/environment/article/2012-10/5-climate-change-truths-about-hurricane-sandy

.........
রংতুলি

তানভীর এর ছবি

স্যান্ডি ক্যাটেগরি এক হারিকেন হিসেবেই নিউ জার্সিতে ল্যান্ডফল করেছিলো (বাতাসের গতিবেগ ৮০ মাইল/ঘন্টা)। কিন্তু ট্রপিক্যাল এলাকা পার হয়ে যাওয়ায় এটাকে ‘পোস্ট-ট্রপিক্যাল’ বা এক্সট্রা-ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বলা হচ্ছিল।

‘ফ্রাংকেনস্টর্ম’ নামটা ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের এক আবহাওয়াবিদ স্যান্ডির ফোরকাস্ট দেয়ার সময় প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। ‘হ্যালোউইনের’ সময় স্যান্ডি আরেকটি কোল্ড ফ্রন্ট সিস্টেমের সাথে মিশে হাইব্রিড ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় (এর ফলে পূর্ব উপকূলের অনেক জায়গায় প্রচুর তুষারপাতও হয়েছে) ঐ আবহাওয়াবিদ এই নাম দিয়েছিলেন। মিডিয়া এই নামটা পিক করে। কিন্তু CNN সহ কিছু মিডিয়ায় এই ধরনের নাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা একে ‘সুপারস্টর্ম’ নাম দেয়।

তারেক অণু এর ছবি

দরকারি লেখা, চমৎকার।

বেশীর ভাগ মানুষই মাথা না খাটিয়ে অন্যেরটা অনুসরণ করে, সমস্যার শুরু কি সেখানেই?

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ! হাসি

অনুসরণে সমস্যা নাই তবে মাথা খাটানো আবশ্যক!

.........
রংতুলি

কড়িকাঠুরে এর ছবি

ঠিক... চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ! হাসি

.........
রংতুলি

অগ্নির এর ছবি

ফেক ছবির যন্ত্রনায় ফেসবুকে থাকা দায় আজকাল । কিছু ছবি এতটাই বলদীয় যে ৩ বছরের বাচ্চাও তা বুঝবে । তারপরও এরা এই কাজটা করে । আমি ভেবে পাইনা মানুষ কত বড় আকাইম্মা বেকার হইলে এইসবের পিছনে টাইম নষ্ট করতে পারে ।

রংতুলি এর ছবি

ফেসবুক থেকে রোজ এইগুলার এক্টিভিটি হাইড করতে করতে আমি হয়রান! কিছুদিন আগে এক পাদ্রির মর্মান্তিক আগুনে মৃত্যুর ছবিতে অমানুষের মত আউল ফাউল লিখে অনেককেই ট্যাগ করা হয়েছিলো, আমি দেখা মাত্র দুইজন ফ্রেণ্ডকে ডিলিট করছিলাম, কারণ আমার হোমপেজে আমি এসব বিকৃত মানসিকতা দেখতে চাই না। পরে যদিও গিলটি ফিল করছিলাম, কারণ যাদের ডিলিট করছি ওদের দোষ ছিলো না, ট্যাগ খাইছিলো মাত্র। তাই ফেসবুক ইউজারদের সবার উচিৎ প্রাইভেসি সেটিংসে যেয়ে অবাঞ্ছিত ট্যাগ নিয়ন্ত্রণ করা।

বড় আকাইম্মাগুলার এসব আকাম থেকেই তো বড় বড় সব অশান্তির সৃষ্টি। নিজের মাথার গু অন্যের মাথায় ট্রান্সফার না করলে এরা শান্তি পায় না!

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

অমি_বন্যা

রংতুলি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভালো পোস্ট।

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ প্রকৃতিপ্রেমিক! হাসি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

বাহ্, ভালইতো মজা! চলুক

রংতুলি এর ছবি

মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো! আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

আউটসাইডার  এর ছবি

উত্তম জাঝা!

রংতুলি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- লইজ্জা লাগে

রংতুলি এর ছবি

আমাকে হাচল করা হয়েছে!!! দেঁতো হাসি

এবার আমি নিজের পরিচয়ে লিখতে পারব! আনন্দে চোখে পানি চলে আসলো, আচ্ছা ছেলেমানুষ আমি! সচলায়তনের সকল সচল, হাচল, অতিথি, পাঠক এবং মডারেটরদের প্রতি আমি আসলেই কৃতজ্ঞ! অবাক কান্ড, আমাকে দিয়েও লেখালেখি সম্ভব! সবাইকে সাথে থাকার জন্য আবারো অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ! হাসি

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

হাচল হবার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন! হাসি হাততালি
মন খুলে আর হাত খুলে লেখতে থাকুন।
আরও সুন্দর সুন্দর লেখা চাই!

রংতুলি এর ছবি

প্রথম অভিনন্দন!! আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সাফিনাজ আরজু! লইজ্জা লাগে

অতিথি লেখক এর ছবি

হাচল হবার জন্য অভিনন্দন। হাততালি চলুক

অমি_বন্যা

রংতুলি এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ! লইজ্জা লাগে

স্যাম এর ছবি

হাচল হবার জন্য অভিনন্দন! হাততালি দেঁতো হাসি

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ প্রিয় ব্যানার্জি! দেঁতো হাসি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

হাচলাভিনন্দন।

এবং চমৎকার একটি লেখা দেবার জন্য ধন্যবাদ

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ আরাফাত ভাই! লইজ্জা লাগে

জুন এর ছবি

হাচলত্বের অভিনন্দন। অনেক দরকারি একটা পোস্ট। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এত এত বলেও যেমন ছবি চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না তেমনি এইসব আবালদেরও (এই ভাষায় কেউ আহতবোধ করলে আমি দুঃখিত; কিন্তু এরচেয়ে ভদ্র উপমা আমার জানা নেই এদের জন্য) থামান যায় না। আর যারা শেয়ার দেয় তারা আসলে বুঝেই না যে কি করতেছে।

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ জুন! দেঁতো হাসি

আবালদের ঠেকানোর কোনো উপায় নাইরে ভাই! 'পুরা দুনিয়াটা কার্পেট দিয়ে মুড়ানোর চেয়ে নিজের পায়ে চপ্পল দিয়ে হাটাই শ্রেয়'। নাহলে গু নিজের (শেয়ার যারা করছে চোখ টিপি) পায়েই লাগবে! খাইছে

কৌস্তুভ এর ছবি

ফেসবুকে দেখেছিলাম এক বন্ধু শেয়ার দিয়েছে স্যান্ডিপরবর্তী বন্যার একখানা ফটো, কাচের দরজার বাইরে কোমরজল আর তাতে হাঙরের ছায়া। দেখলেই বোঝা যায় ফেক। গুগল করে অরিজিনাল ছবিটা সেখানে লিঙ্ক দিয়ে বন্ধুকে খানিক ধমক দিয়ে আসলাম। পরে দেখি চুপচাপ ডিলিট মেরেছে।

রংতুলি এর ছবি

আমি তো ভাবলাম আপনে আমার পোস্ট পড়া ছেড়েই দিলেন বুঝি, যাক মন্তব্য পেয়ে যারপরনাই খুশি হইলাম! দেঁতো হাসি

শাব্দিক এর ছবি

এইলেখাটা পড়ার সময় ভাবছিলাম আপনাকে হাচল করা হচ্ছে না কেন, মন্তব্য পড়তে গিয়ে দেখি হাচল হয়ে গেছেন। অভিনন্দন হাচলত্বের। এবার ধুমায় পোস্টান।

লেখা ভাল লাগল। প্রথম ছবিটা ফেসবুকে দেখেই ফেক মনে হয়েছিল। জন লেনন আর চে'র ছবিটা এতদিন আসল ভাবতাম, কিন্তু যাই বলেন যে করেছে তার ক্রিয়েটিভিটির তারিফ না করে পারা যায় না।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

রংতুলি এর ছবি

সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ শাব্দিক! হাসি

চে, লেননের ছবিটা আমারো বেশ লাগছে... যদিও ফেক, তবে আইডিয়া খারাপ না। খাইছে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।