গতকাল রাত থেকেই সব প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল আজকের ভোরের জন্য, উথকন্থায় সারারাত ঘুম হয়নি জয়িতার , পাছে উঠতে দেরী করে ফেলে । গত দুই বছর টানা পরিশ্রম এর পর আজ ও এই জায়গায় আসতে পেরেছে । তাই আগমীকাল ব্যাপারে আর কোন ঝুঁকি নিতে চায় না । রাতে ঘুমতে যাবার আগে শেষবারের দেখল সব কিছ নিয়েছ কিনা। হ্যাঁ , সব কিছু ঠিকমত গুছানই আছে, অক্সিজেন মাস্ক , শুকান খাবার , পানির বোতল , ফাস্ট এইড সবই নিয়েছে । ক্যামেরার ব্যাগ টাও আর এক বার দেখল , ফুল চার্জ আছে কি না , বাড়তি লেঞ্ছ নিয়েছে কিনা । ক্যামেরা কাজ না করলে এত আয়জন সব বৃথা যাবে ।
জয়িতার এবারের ছবি তোলার বিষয়বস্তু ছিল হিমালয় পাহারের বরফের গাঁয়ে সকালর প্রথম রদ্দুর । অনেক দিন আগে সমরেষ এর একটা বইতে ও পড়েছিল
হিমালয়ের সকালের প্রথম রদ্দুর দেখা নাকি স্বর্গ দেখার সমান । তখন থেকেই মনে একটা অদম্য সুপ্ত আশা ছিল এই সত্য সুন্দর কে দেখার । চাকরীর বদৌলতে আজ সেই সূযক টা পাওয়া গেল ।জীবনের নানান চড়াই-উথরাই পারিয়ে ও আজ এই যায়গায় এসে পৌঁছেছে । অবশই এই সাংবাদিকতার চাকরি টা পেয়েছে বলেই আজ এখানে আসাটা এত সহজ হয়েছে ।
কাম্প থেকে ওকে যেতে হবে প্রায় দুই ঘণ্টার রাস্তা ধরে তাই ওকে রওনা দিতে হবে ভোর চারটার ও আগে । এই ঘন কুয়াশা ভরা যায়গায় ভোর ছয় টার আগে সূর্য ওঠার কোন সুযক নেই । তাই ভোর চারটার দিকে রওনা দেওয়াই যথেষ্ট । সাথে একজন গাইড থাকবে অবশ্য ওকে আর গাড়ির ড্রাইভার কে পথ দেখিয়ে নিয়ে জাবার জন্য , জায়গা টা বেশ ভিতরে মেইন রাস্তা থেকে ।
সব কিছু গুছীয়ে ঘুমাতে যেতে রাত দশটা বাজল । ঠিক এমন সময় রাতুল এর কল আসল ।
' কি রে দোস্ত কি খবর তোর ? ঘুমিয়ে পরেছিছ না কি ? '
' এই তো দোস্ত ...না এখনও ঘুমায়নি , তবে মাত্র ঘুমাতে যেতাম "
‘ও আচ্ছা , কালকের জন্য সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছিস তো ? ,
‘হুম মটামটি গছায়নি আছে , দেখা যাক কি হয় , দোয়া কর কাল যেন বৃষ্টি না হয় ! ,
‘তুই না বললি ওয়েদার ফরকাস্ট দেখাই দিন ঠিক করেছিস ? '
‘ হুম , তারপর ও , এখানের আবহাওয়ার কোন ঠিক ঠিকানা নেই , যখন তখন বৃষ্টি নামে। ,
‘চিন্তা করিস দোস্ত ,না সব ঠিকঠাক মতোই হবে , আছা শুভরাত্রি, যা
তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড় , আর কাজ শেষ করে আমাকে একটা কল করিস। ,
‘ ঠিক আছে শুভরাত্রি ! তুই ও ঘুমিয়ে পড় , এতো রাতে জেগে জেগে কি করিস ?’
‘ বোসে বসে ভাবি রে তোর কথা ! আমি ছাড়া আর কে আছে বল তকে নিয়ে এত ভাববার ! ওকে যা ! ঝাড়ি খাবার আগে শুভরাত্রি !
রাতুলটা এরকমই, সব সময় মজা করা চাই !
সারারাত ধরে জয়ি একটুও ঘুমাতে পারলনা ,উথকন্থায় ঘুমই এল না । পাছে যদি ঠিক মত উঠে যেতে না পারে । এক অজানা রমাঞ্ছ অনুভব করছে ও ! নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে হল । সত্যিইত কজন মেয়ের ভাগ হয় এই অবস্থানে আসার । কয়েক মাস ধরে ও কত জল্পনা কল্পনা করেছে এই দিনটার জন্য । মনে মনে কল্পনা করতে লাগল প্রতিটা মুহূর্ত ও কামেরায় বন্দি করতে পারছে ,লাগাতার শুট করছে ও ।আর অফিসে যখন যাবে তখন সবাই হুমড়ি খায়ে পরবে ছবি গুলো দেখার জন্য ।
আর বন্ধুরা সব পাগল করে তুলবে ,
‘ ছবি আপলোড করছিস না কেন ? জলদি ছবি আপ লোড কর ! ,
কল্পনা করতে লাগল অসাধারণ সব ছবি তুলতে পেরেছে ও ,সবার চোখে এক ধরনের আফসোস এর ও প্রচণ্ড গর্বিত । প্রচুর পড়াশোনা আর প্রাকটিস করেছে ও এই বিষয়টার উপর ছবি তোলার উপর ।
রাতে মাত্র দুই ঘণ্টা ঘুমাতে পারল জয়িতা । আসলে ঘুম আসছিল না । তিনটা বাজতেই ঘড়ির অ্যালার্ম শুনে চটজলদি উঠে পরল । প্রাতরাশ শেষ করে চারটার দিকে ওরা তিনজন জয়িতা , গাইড আর ড্রাইভার রওনা হল হিমালয়ের উদ্দেশে। তখনও বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার এর প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা আর খাঁরা রাস্তা ধরে ওরা উপরে উঠতে লাগলো । গাইড ড্রাইভারকে সাহায্য করল রাস্তা চিনতে । ছয়টা বাজার আগেই ওরা পৌঁছে গেল গন্তব্বে । আকাশের রং তখনও ধূসর । কিন্তু প্রচণ্ড কুয়াশায় কিছুই দেখা যাছে না । একটা নিদ্রিশ্ত যায়গায় এসে গাড়ি থামাতে হল । এর পর পায়ে হেঁটে যেতে হবে খানিকটা । ড্রাইভার কে কাছাকাছি কোন যায়গায় অপেক্ষা করতে বলে ও আর গাইড
রওনা হলো আরো উপরে ওঠার জন্য । বাইরে বের হতেই ও অনুভব করলো প্রচণ্ড ঠাণ্ডা , পর্যাপ্ত পরিমানে গরম কাপর পড়া সত্ত্বেও ঠাণ্ডা আনুভব করলো । সাথে অনেক ভারী জিনিস থাকায় গাইড ওকে সাহায্য করলো । গাইড ক্যামেরা স্ট্যান্ড সহ আরও কিছু জিনিস নিয়ে নিল ওর কাছ থেকে । পাহাড়ের চূড়ায় পৌছাতে ওদের আরও কুড়ি মিনিটের মত লাগল । এই কুঁড়ি মিনিটের রাস্তাতা বেশ কষ্টসাধ্য হলেও ওর ভীষণ ভাল লাগছিল ।
সকালের প্রথম প্রহর পৃথিবীর সব যায়গায় কমবেশি সুন্দর । এসময়ে ধরনীকে মনে হয় এক নিস্পাপ শিশু , যে সদ্য ঘুম থেকে উঠে অবাক চোখে পৃথিবীটাকে দেখছে । আর এই পাহাড়ের গায়ে তা আরও বেশি সুন্দর , প্রকিতিকে মনে হছে যেন এক সাদা শারি পরা নিস্পাপ কুমারি মেয়ে । এই পৃথিবীর কোন পাপ এথন তার পবিত্রতা নষ্ট করেনি । আরও কিছুক্ষণ উপরে উঠে ওরা একটা কিছুটা সমতল জায়গা পেল । কাছাকাছি একটা জায়গায় এসে ওরা থামল । কফির ফ্লাস্ক্রটা বের করে ও একটা সিগারেট ধরিয়ে ক্যামেরাস্ট্যান্ডটা সেট করতে লাগল আর গাইড কে বল্ল কিছুক্ষণ কিছু দূরে কোন জায়গায় ওর জন্য অপেক্ষা করতে । ছবি তোলার সময়ে ও একশভাগ মনোযোগ দিতে চায় , ও চায় না এসময়ে কেউ ওর কাছে থাকুক । গাইড চলে যেতেই চারপাশটা পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো । দূরে যতদূর দেখা যায় শুধু সাদা আর সাদা । শিমুল তুলার মত ঘন কুয়াশা এর চারিদিকে শুধু বরফ আর বরফ । ওর কাছে মনে হল এটা কি পৃথিবী নাকি স্বর্গের কোন যায়গা । কিন্তু তখনও সবকিছু বেশ ধোঁয়াটে । তাই সূর্য দেবের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো সিগারেটটা শেষ করতে করতে ।
কিছুক্ষনের মধ্যেই আকাশের বুক চীরে গাড় উজ্জ্বল কমলা রঙ এর সূর্যি দেবের আবিরভাব হল যেন পরম উত্তাপে পৃথিবীকে উষ্ণ করার জন্য । আর অদ্ভুদ ব্যাপার হল সূর্যের আলো পরার সাথে সাথে পুরো পরিবেশটাই অন্য রকম হয়ে গেল । সেই সাদা বরফ আদ্রিত পাহাড়ের গায়ে সূর্যের আলো পরার সাথে সাথে সেই আলোর প্রতিফলনে এক অদ্ভুদ রকমের দূতি বের হতে লাগলো । মনে হল সূর্যদেব যেন পরম মমতায় দুরথেকে ধরনিকে আশীর্বাদ করছে , আর সেই আশীর্বাদে্র আলোতে শুধ হছে পৃথিবী । মনেহতে লাগলো শীষ্টী কর্তার কি অদ্ভুত কৃষ্টি এই পৃথিবী । আর কি পরম সৌভাগ্য এখানে মানুষ রূপে জন্ম গ্রহণ করা ।
ক্যামেরার কথা ও বেমালুম ভুলে গেল , বিহব্বল হয়ে ও তাকিয়ে থাকল । এত সুন্দর এত শুভ্র সাদা এত স্বর্গীয় আলো ও আগে কোন দিন দেখিনি । ওর নিজের ভিতর অদ্ভুদ এক পরিবর্তন আসতে শুরু করলো । এই ঘটনা বহুল সংগ্রামী জীবনে নানা ঘাত-প্রতিঘাত , অতীতের দুর্বিষহ সৃতি , কাছের মানুষের অবহেলা ওকে ধীরে ধীরে কঠিন থেকে কঠোর করে তুলেছিল । বার বার ভেঙ্গে যাওয়া ওর অতি অবুজ আবেগ প্রবণ মনটা আস্তে আস্তে একেবারেই নির্লিপ্ততা অর্জন করেছে । সুখ- দুঃখ, ভালবাসা আগের মত আর ওর মনে আঁচর কাটতে পারএয়াস । আস্তে আস্তে ও নিজেকে বরফের মত কঠিন আর ঠাণ্ডা করতে সক্ষম হয়েছে । অনেক চেষ্টা আর সাধনার পরে আজ ও পারে কান্না পেলেও চোখ দিয়ে এক ফোঁটা পানি না ফেলতে । আজ ও পারে কারো কারো পথের দিকে চেয়ে বসে না থাকতে , কারো উপর অভিমান না করতে ।
কিন্তু আজ একি হল! ওর মনে হতে লাগলো সেই স্বর্গীয় আলোড় উত্তাপে ওর ভেতরের বরফটা গোলতে শুরু করছে । নিজেকে বরফের মানুষ মনে হতে লাগলো । মনে পরে গেল গীতার সেই শ্লোকে টা ।
মনে মনে বিড়বিড় করে বলতে লাগল ও ।
' অজো নিত্যঃ শাশৱতোহয়ং পুরণো
ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে । ,
'অর্থাৎ আত্মা জন্ম -ও মৃত্যু -রহিত , অক্ষয়হিন এবং ব্রিধিশূন্য ; শরীর নষ্ট হইলেও আত্মা বিনষ্ট হয় না ।'
মণে হতে লাগলো আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হতে লাগলো সেই শ্লোক ।
মানুষ জীর্ণ হলেও তার আত্মা জীর্ণ হয় না । আত্মার কোন ক্ষয় নাই , আত্মা চির সবুজ ।
জয়ি বুঝতে পারল ওর ভিররের সেই প্রচণ্ড নাজুক জয়িতা আজও বেঁচে আছে । সেই অবুঝ আবেগি মনটা ওর ভিতরেই কোথায় যেন লুকিয়ে ছিল এতদিন ।
অভিকে অনেক গুলো পরে আবার ভীষণ ভাবে মনে পরে গেল । ভীষণ ভাবে মিস করতে লাগল ও সেই বাঁধ ভাঙ্গা আগের আবেগে । সব ভুলে গেল ও স্থান কাল পাত্র । ভুলে গেল আজ ও কে , কি ওর পরিচয় । সমাজ সংসার কিছুই আর মনে পরছে না । ও চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলো । ওর ভেতেরে যে হাজার বছরের কান্না জমে আছে , হাজার অভিমান , রাগ , ভালবাসা , হাজার আবেগ , না বলা কথা যা ওর ভিতরে বরফের মত জমে ছিল এতদিন আজ গলতে শুরু করলো । মনে হল হাজার বছর ধরে কাউকে জরিয়ে ধরে শুধু কাঁদে আর কাঁদে । যতই কাঁদছে ওর ততই নিজেকে হাল্কা লাগছে ।
মনে হয় ওর ভিতরে অভিমান জমে জমে হিমালয়ের পাহাড়ের ওর উঁচু বরফ হয়ে ছিল। আর সূর্য দেব আজ তার স্বর্গী আলোতে ওর কান্না কে শুধ গঙ্গায় রুপাতরিত করছে । মনে হতে লাগল ওর কান্না এক নদীতে রূপ নিয়েছে । ওর গায়ে যতই সেই আলো পরছে ও ততই মুগ্ধ হছে আর কাঁদছে ।মনে হতে লাগল হটাত ওর বয়স বাইশ বছর কমে গেল । নিজেকে আবার সেই ষোল বছরের প্রচণ্ড আবেগি এক নিস্পাপ মেয়ে মনে হল যে এই পৃথিবীর সব কিছুকেই ভালবাসে যুক্তিহীন গভীর আবেগে ।
ভাগ্যিস মইয়ত্রি দেবী ' ন হন্যতে ' লিখে গিয়েছিলেন ছিলেন । তাই আজও আমদের আত্মার মাঝে চির সবুজ মণটা ফিনিক্স পাখীর মত সজতনে লুকিয়ে থাকে ।
দৃশ্য গুলো আর কাম্যারা বন্দি করা হল না , শুধুই উপলব্ধি করা হল ।
সুপাখী
মন্তব্য
ভাবনা গুলো উড়িয়ে দিয়ে বেশ হালকা লাগছে !
লেখাটায় চোখ বুলিয়ে গিয়েছিলাম আগেই, আজকে আবার মন দিয়ে পড়লাম। সচলে এটাই আপনার প্রথম লেখা অনুমান করছি। উপদেশ দেয়া আমার প্রিয় কাজগুলোর একটা না হলেও এখনও কেউ কিছু বলেনি দেখে কিছু বলতে এলাম; আখেরে আপনার কাজেই দেবে।
১. ট্যাগিং ঠিকমত করা দরকার। পাঠকদের তাতে লেখা সিলেক্ট করতে সুবিধে হয়। চিন্তা ভাবনা ক্যাটাগরিতে নিজস্ব ভাবনা চিন্তা নিয়ে লেখা থাকে। এই লেখাটা গল্পের মত লাগলো।
২ ভুল বানানের লেখা সচলে আদর পায়না। আমি নিজেও প্রচুর বানান ভুল করি, ণত্ব ষত্ব জ্ঞান নাই। কিন্ত সাধারন বানানের ভুল বড্ড চোখে লাগে। নেক্সট টাইম তাই বানানে সাবধান।
এত কথা বলছি কেন বলুন দেখি ? বলছি, কারন আপনার লেখার হাতটি ভালো। আর আপনার ঝোলায় বোধকরি গল্প আছেও অনেক। সেগুলো নিয়ে লিখতে থাকুন দুহাত খুলে। পড়ার জন্য আমরা আছিই।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
প্রিয় আশাদি ,
প্রথমেই আমার এই আবোলতাবোল লেখাটা কষ্ট পরে পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ! বিগত দুইদিন বাস্ততার কারনে সচলে বসা হয়ে ওঠেনি । যাইহোক আগেই বলে ফেলি যে আপনার মন্তব্যটা খুবই যথার্থ হয়েছে । লেখাটা একটা ঘোরের মধ্যে লেখা হয়েছিল , তখন ভাবিনি এটা কক্ষনও পোষ্ট করব ।পরে আমার নিজের কাছে মনে হয়েছে একটু একটু রিভিউ করলাম না কেন । বানানের ভুল গুলো ছিল সত্যি দৃষ্টিকটু ।
আপনার অনুমান সত্যি , লেখাটা শুধু সচলে না আমার জীবনে প্রথম লেখা । তাই বুঝতেই পারছেন শুধু কচি না পুরা নবজাতক লেখিয়ার লেখা ! গল্পটা মাথার ভেতর বড্ড যন্ত্রণা দিছিল্ল তাই ভাবলাম এটাকে বের করে ফেলি !
তবু আপনি যে লেখাটা পরেছেন তাতেই আমি কৃতজ্ঞ ! আর মন্তব্যটা আমার কাছে অনেকটা মিষ্টি মধুর আদুরে শাসনের মত লেগেছে ! যদি আর কোনোদিন কিছু লেখি তবে আপনার কথা নিশ্চয়ই মেনে চলবো ।
ভাল থাকবেন আশাদি , অনেক অনেক ভাল !
সুপাখি
নতুন মন্তব্য করুন