মানারোলা,চিনকুয়েতেরে(পঞ্চগ্রাম)।
পঞ্চগ্রাম
২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইতালির বুকে পা রাখার পর ঘুরাঘুরি নেহাত কম হয়নি।এর মাঝে আবার ২০০৮ সালের ডিসেম্বের মাসে তারেকাণুর আগমনে তাঁর সাথে রোম;ফ্লোরেন্স আর পিসা ঘুরে এসেছি,তারপর ভেনিস ও মিলান তো বোলোনিয়ার ঘরের কাছে হওয়ায় এই কয়েক বছরে এইসব জায়গায় বেড়িয়েছি অনেকবার।তবে এরই মাঝে কিছু স্বল্প পরিচিত কিন্তু অসাধারণ জায়গায় বেড়ানোরও সুযোগ মিলেছে।তেমনি একটি চমৎকার জায়গার নাম হল চিনকুয়েতেরে।একদিন বোলোনিয়া শহরের লাইব্রেরীতে বসে লোনলি প্ল্যানেটের পাতা উল্টাতে গিয়ে হঠাৎই সে জায়গাটির বর্ণনা ও ছবির পাতার দিকে চোখ আটকে গেল।ছোটবেলায় ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী নগর বলতে নীলবর্ণের সাগরের তীরে পাহাড়ের ওপর রং বেরঙের বাড়িঘর বুঝতাম।তখন পর্যন্ত ইতালিতে আসার পর এরকম কিছু চোখে পড়েনি।তো বইয়ের পাতায় চিনকুয়েতেরে জায়গাটির ছবিও তেমনই লাগলো এবং বলা হচ্ছিল যে এটি নাকি ইতালিতে টুরিস্টদের জন্য অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে বিবেচ্য।
লিগুরিয়া রাজ্যের দুই নগরী লা স্পেযিয়া ও লেভান্তের মধ্যবর্তী ১৫ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে এই চিনকুয়েতেরের অবস্থান।বয়েস প্রায় হাজার বছর হয়ে এল।কথিত আছে যে মূলত জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ এবং স্থানীয় মানুষ যাঁরা কাজের সন্ধানে নিকটতম নগরী জেনোয়াতে যেতেন, আবার কাজ শেষ হলে নিজেদের এলাকায় ফিরে আসতেন,এমন মানুষেরাই অনেক কষ্টেসৃষ্টে দুইশত বছরের নিরন্তর চেষ্টায় এই পাঁচটি গ্রাম একটু একটু করে গড়ে তুলেছেন।যেহেতু এলাকাটির প্রকৃতি একাধারে জটিল;দুর্গম এবং অর্থনৈতিকভাবে অলাভজনক,তাই জেনোয়ার রাজ্যশাসকদের আনুকূল্য তারা কখনোই ভোগ করেননি বরং পুরো এলাকার যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তা স্থানীয় মানুষদের দ্বারাই হয়েছে।এই গ্রামগুলিকে জোড়া লাগাতে অনেক ভারী পাথর বয়ে নিয়ে পাথুরে পথ নির্মাণ করতে হয়েছে তাঁদের।পুরুষরা ভারী ভারী পাথর কাঁধে,নারীরা মাথায় করে বয়ে নিয়ে গ্রামের চারধারে দুর্গ এবং সড়কপথ গড়ে তুলেছিলেন।ধীরে ধীরে এই স্থানীয় মানুষই আবার পাহাড়ের গায়ে আঙুর গাছ লাগিয়েছিলেন যা দিয়ে পরবর্তীতে উন্নতমানের ওয়াইন প্রস্তুইত করা হয় যার সুনাম ইতালি জুড়েই বিস্তৃত।আর সেই ওয়াইন এর নামও ওই একই- চিনকুয়েতেরে!
চিনকুয়েতেরের আভিধানিক অর্থ হল পঞ্চগ্রাম।গ্রামগুলির ভৌগোলিক অবস্থানই একে বিশিষ্ট করে তুলেছে।গ্রামগুলি অবস্থিত মূলত ইতালিয়ান রিভিয়েরার পাড়ে পাহাড়ের ধারে কিংবা চুড়ায়।সাগরের ঢেউ পাহাড়ের পাদদেশে আঘাত হানে আর তার সমূহ গর্জন শোনা যায় সবদিক হতে।পাহাড়ের নানান খাদে;কোনাকাঞ্চিতে;চিপায় নানান আকারের নানান মাপের রঙ বেরঙের বাড়ি,ঘাটে ভেড়ানো ছোট- বড় নানান রঙের নৌকো এক অপূর্ব,অদ্ভুত বাস্তব চিত্রকর্ম সৃষ্টি করে।পাহাড়-সাগর-আকাশ মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে এখানে সবসময়ের জন্যে।এখানে একটি গ্রাম থেকে আর একটি গ্রামে যাওয়ার পায়ে হাঁটা পথ যেমন রয়েছে তেমনি আছে রেলপথ,আবার নৌকো করে যাবারও দারুণ ব্যাবস্থা আছে।যে যেটা খুশি বেছে নিতে পারেন।পাঁচটি গ্রামের নাম যথাক্রমে-রিওমাজ্জোরে,মানারোলা,কর্ণিলিয়া,ভেরনাজ্জা এবং মন্তেরোসো।
গ্রামগুলির আর একটি বৈশিষ্ট্য হল এখানে টুরিস্টদের কেন্দ্র করে তেমন বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠেনি ইতালির অন্যান্য বৃহৎ শহরের মতন।আবার রেল এবং পানিপথ ছাড়া যেহেতু যোগাযোগের আর কোনও মাধ্যম নেই,তাই গাড়ির কাল ধোঁয়া নেই;শব্দ দূষণ নেই।হয়তো এসব কারণেই গ্রামগুলির যে আদি অকৃত্তিম চেহারা,তা বজায় রয়েছে যুগ যুগ ব্যাপী।মনুষ্য কোলাহল ছাড়া ঘুরে বেড়ানোর এই মোক্ষম সুযোগের জন্যেও শুনেছি অনেক টুরিস্ট দিনের পর দিন এখানে রয়ে যান।তাই কিছু থাকার জায়গা আর আধুনিক রেস্টুরেন্ট রয়েছে বটে তবে তা গ্রামগুলির শোভা হানির কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি।আমি কোন এক শুভ্র উজ্জ্বল দিনে বোলোনিয়া থেকে পঞ্চগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হই।বোলোনিয়া থেকে পারমা হয়ে পঞ্চগ্রাম।পারমায় ট্রেন বদলাতে হয়।পঞ্চগ্রামের প্রথম গ্রামে নামতেই হঠাৎ মুষল ধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল আর সেই সাথে তুমুল বাতাস।ছাতা টাতা না নিয়ে এসে ভারি বিপদে পড়েছিলাম।অগত্যা একটি ছাতা কিনে হাঁটা ধরেছি।আর যেদিন গিয়েছি সেদিন ছিল খুউব ভীড়।টুরিস্ট বোঝাই ট্রেন,বেশীরভাগই এসেছেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে,সাগর পারে অনেক টুরিস্ট এই বিরূপ আবহাওয়ায় সাগরে অবগাহন করার হ্যাপার কথা ভেবে মনমরা হয়ে বসে ছিলেন।
আমার সবচাইতে মজা লাগলো এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে যাবার রোমাঞ্চকর যাত্রাটি।আর পুরো ইতালিতে হাইকিং করার জন্যে এমন আদর্শ জায়গা আর দ্বিতীয়টি নেই বলে শুনে এসেছিলাম।পায়ে হাঁটা পথটি আসলেই রোমাঞ্চকর।কেননা পুরো হাঁটাপথটি পাহাড়ের ওপর আর পাহাড়ের নিচেই দিগন্ত বিস্তৃত সাগর।পথগুলোর নামও বেশ আকর্ষণীয়,একটির নাম ট্রেইল অফ লাভ।প্রেমিক প্রেমিকার জুটির অভাবও দেখলামনা সেইখানে।যদিও একটি গ্রাম থেকে আরেকটি গ্রাম যাবার জন্যে রয়েছে দোতালা ট্রেন তবে অনেকে দেখলাম পায়ে হাঁটা পথেই অনেক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।অনেক বয়স্ক যুগলকেও দেখেছি প্রেম সড়কে হাত ধরে হেঁটে চলেছেন।প্রথম তিনটি গ্রাম ট্রেনে করে গেলেও শেষ দুটি গ্রাম হেঁটেই পাড়ি দিলাম,আর সেখানেই ভ্রমনের সত্যিকার আনন্দটুকু উপভোগ করা গেল।গ্রামগুলিতে বেশিরভাগ মানুষই যুগ যুগ ধরে মৎস্যজীবী আর হোটেল আর রেস্কটুরেন্টিট তাঁদের অতিরিক্ত উপার্জনের উপায়,আরেকটি স্মৃতি যেটি মন থেকে সরাতে পারিনি তা হল সাগরের গর্জন।যেদিন বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পঞ্চগ্রামের পথে পথে হেঁটেছি সেদিন একই সাথে শুনেছি সাগরের গগন বিদারী আর্তনাদ।সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে পাহাড়ের পাদদেশে।সাদা ফেনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে এখানে সেখানে।
ক)গ্রামের নাম মন্তেরোসো।এটিই একমাত্র গ্রাম যার বালুময় বিচ রয়েছে।
খ)মন্তেরসো গ্রামের আরেকটি দৃশ্য।
গ)গ্রামের নাম ভেরনাজ্জা।দেখেছি ঘাটে বাঁধা নৌকো সারি সারি।
ছ)এইটাই হল পাহাড়ের গায়ে পাথুড়ে সড়ক।
জ)মানারোলায় তোলা যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চকন্যা।
ঞ)সাগরের ঢেউ এসে ধাক্কা দেয় পাহাড়ের গায়ে।দূরে গ্রাম রিওমাজ্জোরে।
ট)পাহাড়ের গায়ে হৃদয় কেড়ে নেয়া রেস্টুরেন্ট।
রোমিও-জুলিয়েটের নগরী
ভেরোনা শহরে শেক্সপিয়ার কোনদিনই যাননি। কিন্তু এই শহরকে উপজীব্য করে তিনি তিন তিনটি নাটক লিখেছিলেন যার ভেতর সবচাইতে জনপ্রিয় হল রোমিও এন্ড জুলিয়েট।গত শতাব্দীর মধ্যযুগে ইতালির রাজ্যগুলি ছিল স্বাধীন এবং শহরগুলি পরিচালিত হত প্রভাবশালী ও বিত্তশালী পরিবার দ্বারা,একইসাথে পরিবারে পরিবারে ঝগড়া-বিবাদ;হানাহানি-খুনোখুনি তখনকার যুগে একটি নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার ছিল।এমনই একটি আবহকে কেন্দ্র করে এবং ভেরোনা শহরকে ভিত্তি করে শেক্সপিয়ার নির্মান করেন অমর প্রেমকাহিনী রোমিও এন্ড জুলিয়েট। ভেরোনা শহরেও দ্বন্দ্ব-মুখর পরিবারের উপস্থিতি সেই সময় যে ছিলনা তা নয় তবে সেই দ্বন্দ্ব তখন পর্যন্ত শত্রুতায় রূপ নেয়নি যা রোমিও-জুলিয়েটে দেখানো হয়েছে।রোমিও এন্ড জুলিয়েটের পুরো আবহ এবং প্লট শেক্সপিয়ারের মস্তিষ্ক প্রসূত হলেও মজার ব্যাপার হচ্ছে যে ভেরোনা শহরের সবচাইতে আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় স্থান হল জুলিয়েটের বাড়ি।পুরোপুরি একটি কল্পিত বাড়ি যার ব্যালকনিতে জুলিয়েট দাঁড়িয়ে থাকতেন রোমিওর ডাক শোনার আশায়,এমন একটি কল্পনা মেশানো বাড়ি কালক্রমে হয়ে উঠেছে ইতালির অন্যতম দর্শনীও ভবন!আর ঠিক বাড়িটির সম্মুখপানের আঙিনায় জুলিয়েটের একটি আবক্ষ মূর্তি রয়েছে যার বাম স্তনে হাত দিয়ে অনেককে ছবি তুলতে দেখেছি আমি।যদিও এই রিচুয়ালের কোনও গুঢ় অর্থ উদ্ধার করতে ব্যার্থ হয়েছিলাম তখন,পরে অণু মারফত জানা গেল যে,জুলিয়েটের স্তন স্পর্শ করে প্রেম প্রার্থনা করলে নাকি প্রেমাকাংখা পূরণ হয়!এছাড়া বাড়িটির মুল ফটকের দেয়ালে অসংখ্য প্রেমময় লেখনি ও ছবি প্রেমের নানান স্বাক্ষর বহন করছে।জুলিয়েটের বাড়িটিতে ঢুকতে গেলে আবার টিকেট কাটা লাগে।কি মুশকিলের কথা।চরিত্র কাল্পনিক,বাড়ী কাল্পনিক কিন্তু ব্যালকনিতে উঠতে গুনে গুনে চার ইউরো গুনতে হবে।এতো ভারি অন্যায়।আমি নিজে ভেতরে ঢোকার প্রয়োজন মনে না করলে কি হবে,দেখি এক তরুণী দিব্যি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তাঁর প্রেমিককে ইশারা করা শুরু করেছে যেনো সে তাঁর নাম ধরে ডাকে।তারপর আর যায় কোথায়,আঙিনায় ছেলে বুড়ো রোমিওর সংখ্যা তো আর কম ছিলনা।কাজে কাজেই সকলের "জুলিয়েত্তা" ডাকে পুরো ভবন যেন কেঁপে উঠেছিলো সেদিন!কল্পনা দিয়ে জুলিয়েটের বাড়ী পরিবেশিত করা গেলেও রোমিও এতো সৌভাগ্য প্রাপ্ত হননি। উনার একটি কাল্পনিক বাড়ি আছে বটে,তবে সেটি অত বিখ্যাত নয়,আর তাছাড়া বাড়ির ভেতর প্রবেশ নিষেধ,তাই যুগলদের কাছে জুলিয়েটের বাড়ি-ই অধিক শ্রেয়!
ভেরোনা শহরটির গোড়াপত্তন করেছিলেন রোমানরা।তাই রোমানদের নির্মিত ঘর বাড়ি,শহর ঘেরা প্রাচীর, ব্রিজ,আর ভেরোনার বিখ্যাত এ্যম্পিথিয়েটার এ শহরের শোভা হিসেবে খ্যাত।ভেরোনা শহরটি সত্যি খুবই সুন্দর,সাজানো গোছানো,পরিপাটি।ভেরোনা ভেনেত্তো রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী এবং পুরো ইতালিতে রোমের পর একমাত্র ভেরোনাতেই রয়েছে রোমানদের নির্মিত সবচাইতে বেশী দালানকোঠা এবং প্রাচীর।খ্রিষ্টপূর্ব ৫৯ সালে গোড়াপত্তন ঘটে এই নগরীর,রোমানদের হাত ধরে।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভারী বোমাবর্ষণের পরেও শহরের কেন্দ্র এবং রোমানদের স্মৃতি চিহ্নগুলি রয়ে গেছে এখনো সৌভাগ্যবশত।আর এসবই দর্শনার্থীদের মূল আকর্ষণ এখন অব্ধি।এ্যাম্পিথিয়েটারটি এখনও বিস্ময় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই নগরীতে।২৫০০০ আসন বিশিষ্ট এই এ্যরেনায় প্রত্যেক বছর গ্রীষ্মকালে দেশ বিদেশ থেকে যন্ত্র এবং কণ্ঠশিল্পীরা এসে গান বাজনা শুনিয়ে যান এখানে।
ভেরোনা শহরের সাথে আমার বেশ পুরনো সখ্যতা।সেইখানে গুনে গুনে ছয়বার গিয়েছি এখন পর্যন্ত।তবে এ্যম্পিথিয়েটার আর জুলিয়েটের বাড়ি দেখতে মাত্র দুইবারই যাওয়া হয়েছে।বাকি যে ক'বার গিয়েছি,তা মূলত আমার ম্যানুয়াল ক্যামেরার কারণে। আমার একটি মিনলটা এক্স-৭০০০ ক্যামেরা রয়েছে যেটি আমি কিনেছিলাম ভেরোনা শহরের একটি দোকান থেকে।কেনার পর আমার অনেক সময়ই মিনলটার সাশ্রয়ী লেন্স কেনার প্রয়োজন হত।শুধু এই লেন্স কেনার তাগিদ থেকেই ওই শহরে গিয়েছি আরও কয়েক দফা।এছাড়া ভেরোনা শহরের অদূরে রয়েছে বিখ্যাত গ্রাদা লেক এবং মানতুয়া নামক আরেকটি দর্শনীয় স্থান।সেগুলিও দেখা হয়েছে পর্যায়ক্রমে।
ক)জুলিয়েটের বাড়ির প্রধান ফটকের দেয়ালজুড়ে প্রেমের স্বাক্ষর।
খ)জুলিয়েটের মূর্তির স্তন স্পর্ষ করে প্রেম প্রার্থনা।
ঙ)ভেরোনার ঐতিহাসিক কেন্দ্রের আরেকটি ভবন।
-মনি শামিম
সচলায়তনে প্রকাশিত আমার পূর্বোক্ত লেখাগুলি:
http://www.sachalayatan.com/guest_writer/47085
মন্তব্য
অসাধারণ !
ঈর্ষায় জ্বলে পুড়ে গেলাম... বছর দুয়েক আগে ফ্লিকারে ঘুরতে ঘুরতে পাহাড়ের উপর এক গ্রামের ছবি দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। সেই পাহাড়ের পাশেই আবার সমুদ্র। খুঁজে বের করলাম, গ্রামের নাম মানারোলা। সেই থেকে নেটে সময় পেলেই সার্চ দিয়ে পড়ি, ছবি দেখি। কিছুদিন আগে অণু তারেকের সাথে অনলাইনে আড্ডা মারার সময় এই মানারোলার কথাই বলছিলাম উনাকে। আমার জীবনের বাকেট লিস্টে আছে এ জায়গায় ঘুরতে যাওয়া।
আমার অবশ্য একটা সন্দেহ ছিলো যে, ফ্লিকারের ছবিগুলি আবার 'ক্যামেরার কারসাজি' কিনা আপনার ছবিগুলি দেখে সন্দেহ চলে গেলো- ন্যাচারাল ছবিগুলিই দেখতে এতো চমৎকার লাগছে।
মানারোলা নিয়া আরো একটু বিস্তৃত জানতে চাই। খরচাপাতি কেমন, কীভাবে থাকলে সুবিধা ইত্যাদি।
আরেকটা কথা, Cinque Terre এর উচ্চারণটা আসলে কেমন ? আপনি লিখেছেন চিনকুয়েতেরে... আমি নেটে অবশ্য একটু অন্যরকম দেখছিলাম- অনেকটা 'সিনক্ ত্তারে' টাইপের। সম্ভব হলে একটু কনফার্ম কইরেন
অলমিতি বিস্তারেণ
চিনকুয়েতেরে উচ্চারণটি ইতালিয়ান।তবে সিঙ্কত্তারে বেশ বেখাপ্পা লাগছে শুনতে!কিছু কিছু শব্দ থাকেনা যার উচ্চারণ ভিনদেশীদের জন্যে কঠিণ?এটি তার আদর্শ একটি উদাহারণ।মানারোলায় থাকার জায়গা সন্দেহজনকভাবে সহজলভ্য বলে শুনেছি,বিশেষ করে অফ্ সিজনে।গ্রীষ্মে তা বেজায় কঠিণ হবে,সন্দেহ নেই।আমি নিজে একা গিয়েই যে পরিমান টুরিস্টদের ভীড় দেখলাম!খাওয়াদাওয়া বেশ সাশ্রয়ী মনে হয়েছিল আমার।যোগাযোগব্যাবস্থা খুউব সরলসোজা নয় ইতালির অন্যান্য জায়গার মতোন।যেদিক দিয়েই আসুন এখানে,ট্রেন আপনাকে অন্তত একবার বদলাতেই হবে।আর সড়কপথে আসার পরামর্শ তো দেয়াই যাবেনা! তবে একবার মানারোলায় পৌঁছে গেলে শান্তিই শান্তি।থাকার জন্য আগাম বুকিং বাধ্যতামূলক।আবার কাছেপিঠে কোথাও থেকে ওখানে ঘুরে আসতে পারেন আমার মতোন।আসলে টুরিস্টদের জন্য ওখানে কোনও হোটেল টোটেল তো গড়ে ওঠেনি। যা আছে,সবই গড় ৫০০ বছর বয়েসের বাসস্থান।
-মনি শামিম
বর্ণনা এবং ছবি- দুটোই তোফা---
-মনি শামিম
অহো! অহো! সুন্দর! সুন্দর!
ফারাসাত
-মনি শামিম
ভেরোনা লিয়ে লিব কিন্তু মামুর বুটা, জুলিয়েটকেও লিব।
কাখে লাড়তে কাখে লাড়েছ! আসিতেছি--
facebook
শুধু জুলিয়েটখে লিলেই হবে?এদিখে মানারোলা যে তোমার জন্যে ওয়েট করছেগো,তার বেলা?
-মনি শামিম
ছাড়ান দিব ভাইবাছেন! ভুলে যান-
facebook
উচ্চারণটা আমি কনফার্ম করে দিচ্ছি চিনকুয়েতেররে
চিনকুয়ে মানে ৫ আর তেররে মানে গ্রাম(অঞ্চল)। তেররা(TERRA) মানে মাটি, বহুবচনে তেররে(TERRE)
নমস্য মানুষ আপনি।পরিচয়টি দিন না?আপনার কাছে ইতালিয়ান শিখবো।
-মনি শামিম
মুগ্ধতা !!! প্রেমাক্রান্ত হয়ে গেলাম কিছু ছবি দেখেই !!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
-মনি শামিম
অনেক গোছানো একটি লেখা, ভালো লাগলো।
মনি শামিম
এই পোস্ট আপত্তিজনক ছবিতে ভরপুর। আপনাকে ব্যান করবার দাবি করে গেলুম।
পি>এস. আপনার ক্যামেরা আর লেন্স কী?
তুমিও কি প্রেমাক্রান্ত !!! ???
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
হেহে,আমি তো আপনার ছবি দেখে আপনাকেও ব্যান করার দাবি জানাতে চেয়েছিলাম!ছবিগুলি নিকন ডি৪০ আর ট্যামরন ১৮ ২০০ দিয়ে তোলা হয়েছিল।শুধু ভেরোনার শেষ দুটি ছবি নিকন ভিআর ৫৫ ২০০ দিয়ে তোলা।ডি ৪০ টা হারাণোর পর কয়েকমাস আগে একটি ব্যাবহৃত ডি ৮০ কিনেছি।এটা মনে হচ্ছে আরও ভালো।
-মনি শামিম
সব গুলো ব্যাপার সম্পর্কে জানা ছিল আগে, তবে জুলিয়েট এর স্তনে হাত দিলে প্রেমাকাংখা পূরণ হয় জানা ছিল না। লেখা অনেক ভালো লাগছে, সব কিছু একদম গোছানো ছিল।
অপ্রস্তুত লেনিন
-মনি শামিম
লেখাটা বেশ উপজীব্য, চালিয়ে জান আমরা আছি আপনার সনে; ভাল লাগাটি জানান দিয়ে গেলাম।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
-মনি শামিম
নেটে মানারোলা'র ছবি দেখে "হা" হয়ে গিয়েছিলাম। আজ নীড়পাতায় একই ছবি দেখে নিশ্চিত হলাম যে জায়গা'টা আসলেই আছে। আর আমার কাছে থাকা ছবিটায় ভুলও ছিল। ওখানে মানারোলাকে রিওমাজ্জোরে লেখা ছিল। ঠিক করে নিলাম।
ধন্যবাদ।
-মনি শামিম
ছবিগুলো অসাধারণ ।
-মনি শামিম
ধন্যবাদ।
-মনি শামিম
নতুন মন্তব্য করুন