আমি টের পাইলাম তাহার সাথে কথা বলা বৃথা, যেমন সৈয়দ সাব। মালাকুল মওত সেই ভাবনাখানাও কিভাবে যেন টের পাইয়া গেলেন, তিনি বলিলেন সৈয়দ সাবের সাথে আমার দেখা হইবার সম্ভাবনা প্রবল, মৃত আত্মাদিগের জন্য যে পাঠ্যক্রম প্রচলিত সৈয়দ সাব তার রচয়িতাদের একজন, এবং তিনি সেখানকার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন ধর্ম বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন; আমি বলিলাম আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িতে চাইনা, আমার পড়ালেখা নাই। মালাকুল মওত কহিলেন, না চাইলেও পড়িতে হইবে, সেইখানে বিশ্ববিদ্যালয় হইতেছে জ্ঞান আহরণের প্রথম ধাপ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পর হইতেছে উচ্চ মাধ্যমিক, তাহার পর মাধ্যমিক এবং সর্বোচ্চ ধাপ হইতেছে শিশু শ্রেণী। আমি বলিলাম আমি এইসব মানিনা, মালাকুল মওত আমার দিকে তাকাইয়া কাষ্ঠ হাসি হাসিয়া বলিলেন, ‘তুই কবে মানিয়াছিলি চশমখোর! তোর স্থান কোথায় হইবে ইহা যাহারা নির্ধারণ করিবেন তাহাদের সাথে তোর দেখা হইবে সবার আগে!’
আমি তাহা মানিয়া নিয়া সকল মানসিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করিয়া উপরে উঠিতেই লাগিলাম কিন্তু কোনদিন ভাবিতে পারি নাই সৈয়দ সাহেবের সাথে আমার প্রথম প্রহরেই দেখা হইয়া যাইবে! তিনি আমাকে দেখিয়াই বিমলানন্দে চারপাশে সবাইকে ডাকিয়া একটা শোরগোল পাকাইয়া তুলিলেন, আমি দেখিলাম আমার গলা দিয়া আওয়াজ বাহির হইতেছে-না। সবাই চারপাশ ভিড় করিয়া আসিয়া আমাকে দেখিয়া হাসিতে লাগিল। আমি সৈয়দ সাবকে মনে করাইয়া দিলাম যে আমরা একই দেশের মানুষ, তিনি প্রকারান্তরে দেশের অপমান করিতেছেন, ইহাতে চারিদিকে হাসির পরিমাণ বাড়িয়া গেলে আমি চিৎকার করিয়া তাহাদের ভর্ৎসনা করিতে চাহিলাম, দেখিলাম তাহাতে সবার হাসি আরও বাড়িয়া যাইতেছে।
তাহাদের ভেতর কতক জেনানা দেখিয়া আমি চমকাইয়া গেলাম, তাহাদের মনে করাইয়া দিলাম যে আমার সামনে বেপর্দা হওয়া নাজায়েজ, এই কথা বলিবামাত্র সবাই এমনভাবে হাসিয়া উঠিল যে আমার চক্ষু দিয়া পানি বাহির হইয়া গেল, তাহাতেও সবাই হাসিতে লাগিল। আমি বলিলাম পরম করুণাময়ের সাথে আমি দেখা করিতে চাই, সকলে সমস্বরে হাসিয়া কহিল তিনি নাকি আমার সাথে আছেন। আমি চারিদিকে তাকাইয়া কোথাও তাহাকে দেখিলাম-না, সবাই হাসিতেই থাকিল।
আমি সৈয়দ সাবকে দেখিতে থাকিলাম, দেখিলাম সবাইকে, সবাইকে মানুষের মত মনে হইতে লাগিল কিন্তু মনে হইলো কোথাও যেন কি একটা মিলিতেছেনা। আমি আরও মনোযোগ দিয়া তাকাইলাম, টের পাইলাম সবাইকে দেখিতে একইরকম লাগিতেছে, সকলেই সৈয়দ সাব আবার কেহই সৈয়দ সাব নন। আমাকে এইরূপ তাকাইতে দেখিয়া সবার চেহারায় গভীর একটা দু:খভাব জাগ্রত হইল, আমি তাহাতে আরও ভয় পাইয়া গেলাম। তারপর দেখিলাম, সকলেই আমাকে ঘিরিয়া ধরিয়াছে যেন, সবাই একসাথে মিলিত হইতে হইতে মনে হইলো একখানা বিশাল আয়নার চাইতেও বিশাল হইয়া উঠিল... আর, আর...
দুই.
আমাকে কি কেহ খোঁচাইতেছে? চারিদিকে শিশুদের কণ্ঠ ভাসিয়া আসিতেছে টের পাইয়া আমি ধীরে ধীরে জাগিয়া উঠিয়া লাগিলাম। চারিদিকে তাকাইয়া যাহা দেখিলাম তাহাতে.... তাহাতে টের পাইলাম আমার শরীরের নিম্নভাগের কোন একটা লুক্কায়িত অংশ জাগিয়া উঠিয়া নড়িতেছে....
তিন.
আলখাল্লা পরিহিত একটি শিশু তাহার পিতা’র হাত ধরিয়া চিৎকার করিয়া বলিয়া উঠিল, ‘بابا، بابا، والثعلب له ذيل كبير...’
(বঙ্গানুবাদ: বাবা বাবা, দেখো, শিয়ালটার লেজ অনেক লম্বা...)
লেখকের নাম: কিউরেটর
মন্তব্য
কি বলতে চেয়েছেন ঠিক মত বুঝতে পারলাম না।![ইয়ে, মানে... ইয়ে, মানে...](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/17.gif)
এক (যদিও আপনি 'এক' লেখেন নাই) - ঠিক আছে। গোটা জিনিসটা আস্তে আস্তে দাঁড়াচ্ছিল।
দুই - আপনি ধৈর্য হারাতে শুরু করলেন। জিনিসটার অগ্রগতি বন্ধ হয়ে গেল।
তিন - আপনি অধৈর্য হয়ে গেলেন। এবং জিনিসটা মারা গেল।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
নতুন মন্তব্য করুন