• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদন্ড---হতাশা আর আশার কথা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০৫/০২/২০১৩ - ৪:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলার মাটিতে যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখে যেতে চান, তাদের জন্য আজ এক বিশেষ খুশির দিন। জামায়াতে ইসলামীর এক উচ্চপদস্থ নেতা কাদের মোল্লার ৭১এর অপরাধ আজ আদালতে প্রমাণিত। আইসিটির রায়ে তার যাবজ্জীবন কারাদন্ড ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু ফাঁসির রায় না হওয়ায় আমাদের অনেকেই বিক্ষুব্ধ ও হতাশ। সেই হতাশা থেকে কি আমাদের আজকের দিনের বিশাল অর্জনকে কিছুটা হলেও আমরা ভুলতে বসেছি?

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যে কটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, সেগুলো হল--একাত্তরে বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে হত্যার নির্দেশ দেয়া, কবি মেহেরুননিসা, তাঁর মা এবং দুই ভাইকে হত্যা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে জবাই করে হত্যা, একাত্তরের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনা ও অবাঙালি রাজাকারদের সঙ্গে মিরপুরের আলোকদী (আলুব্দী) গ্রামে হামলা চালিয়ে ৩৪৪ জনের বেশী হত্যা, আর মিরপুরের হযরত আলী লস্কর, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে হত্যার নির্দেশ দেয়া।

আদালতের রায়ে এই সকল অপরাধের প্রমাণ হওয়ার তাৎক্ষণিক ফলাফলের থেকেও, এই রায়ের সুদূরপ্রসারী প্রভাবটা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। জামায়াতে ইসলামী নামক যে দলটি ৭১এ সর্বোতভবে(ও সশস্ত্রভাবেও) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, বাংলাদেশে গণহত্যা চালতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছে, আর স্বাধীনতার পরেও এইসব যুদ্ধাপরাধীদের পরম যত্নে বুকে ধারণ করেছে, তাদের যুক্তির থলি আজ অনেকখানি খালি হল। যারা জোর গলায় বলেছেন "যুদ্ধাপরাধ করলে মামলা নেই কেন" আর "যুদ্ধাপরাধের মামলা হলেও আদালতে প্রমাণিত হয়ে শাস্তি নেই কেন" তাদের গলার আওয়াজ অনেকখানি কমে আসার কথা। জামায়াতে ইসলামীর উচ্চপদস্থ নেতা কাদের মোল্লার পরিচিতি সংক্রান্ত যেকোন লেখায় আজ থেকে লিখতে হবে "৭১ এর প্রমাণিত যুদ্ধাপরাধী" --এই ছোট্ট পরিবর্তনটার মূল্যও অনেক।

যারা ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চান, তাদের একমাত্র লক্ষ্য যে প্রতিশোধ, এমনটি না বলেই মনে হয়। গত ৩৫ বছর ধরে যে ইতিহাস বিকৃতি, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষের ব্যাক্তিদের যে মিথ্যার বেসাতি আর নির্লজ্জ আস্ফালন বাংলাদেশ দেখেছে, তার প্রতিকার করে ইতিহাসকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে আসাও এই আন্দোলনের এক বড় অংশ। আজকের আদালতে কাদের মোল্লার এই রায় ইতিহাসকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এই সচলায়তনেই উইকিপিডিয়ান রাগিব হাসান জানিয়েছেন, গোলাম আজমের উইকিপিডিয়া পাতাটি ছাগুদের দল কি কঠোর হাতে রক্ষা করে চলেছে যেকোন যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ থেকে। আইসিটিতে যদি গোলাম আজমের আপরাধ প্রমাণিত হয়, আমি অনুমান করতে পারি যে উইকিপিডিয়া ও অন্যান্য বিশ্ব-জ্ঞানকোষে গোলাম আজমের সত্যিকারের চেহারাটা তুলে ধরা কতখানি সহজ হতে পারে।

ফেসবুক ও ব্লগে অনেকেই দেখছি হতাশ হয়ে আওয়ামী লীগকে দুষছেন, কেউ বলছেন যে আওয়ামী লীগ ও জামাতের আসন্ন আঁতাতের প্রথম লক্ষণ এটি, কেউ আবার বলছেন যে আওয়ামী লীগ জামাত-শিবিরের সাম্প্রতিক তান্ডবে ভয় পেয়েছে, তারই ফলাফল এটি। আমার মনে হয়, অতি-হতাশা থেকেই এই কন্সপিরেসি থিয়োরিগুলোর উদ্ভব, এদের বাস্তব ভিত্তি নেই তেমন। আওয়ামী লীগ অত্যন্ত ধুরন্ধর রাজনৈতিক দল সন্দেহ নেই, তবে এই থিয়োরীগুলো মেনে নিলে প্রথমেই মেনে নিতে হয় যে, আইসিটির রায়ের উপর আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ প্রভাব আছে, কিন্তু সংবাদ-বিশ্লেষণে এরকমটি মনে হয়নি কখনো, বরং ফাঁস হওয়া স্কাইপ বার্তায় আইসিটির বিচারকদের প্রভাবমুক্ত বলেই মনে হয়েছে। জামাত-শিবির বরাবরই দাবী করে এসেছে যে এই ট্রাইবুনাল আসলে আওয়ামী-এজেন্ডা বাস্তবায়নের আদালত। তাদের সাথে গলা মেলানোর এখনো কোনো কারণ দেখছিনা।

তবে প্রশ্ন থেকে যায়, কেন তবে ফাঁসির বদলে কারাদন্ড? রায়ের পূর্ণ কপি হাতে পাওয়ার পরপরই ব্যাপারটা আরো পরিষ্কার হবে, এই আশা করছি। প্রমাণিত খুনের মামলায় ফাঁসির বদলে যাবজ্জীবন আগেও আমাদের আদালতে দেখেছি বলেই মনে পড়ে। বিস্তারিত রায়ে এই ব্যাপারে হয়ত আলোকপাত করা হতে পারে, দেখা যাক।

পাক-হানাদার বাহিনীর এদেশী দোসরদের বিচারের পালাশুরু হয়েছে, সামনে আরো অনেকগুলি রায় এবং আরো অনেকগুলি বড় মামলার বিচারকাজ বাকী আছে। আজকের রায়, দেশের এক বিরাট কলংক মোচনের পথে ছোট কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা পদক্ষেপ, এটা যেন আমরা ভুলে না যাই।

----দিফিও


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

৩৪৪ জন মানুষকে হত্যার দায়ে যদি ৪২ বছর পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়, তাহলে রিটায়ারমেন্ট প্ল্যান হিসেবে অনেকেই রাস্তায় বের হয়ে নিজ নিজ পছন্দমতো গণহত্যা করে আসতে পারে।

ট্রাইব্যুনাল-২ এর এই রায়ে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়েছি। প্রসিকিউশনকে ফাঁসি চেয়ে আপিল করতে হবে, সাফ কথা।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

প্রসিকিউশনকে ফাঁসি চেয়ে আপিল করতে হবে, সাফ কথা।

(Y)

অতিথি লেখক এর ছবি

সহমত হিমু ভাই।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কোন মেয়াদের কারাদণ্ডই এদের জন্য যথেষ্ট শাস্তি নয়। কারণ ক্ষমতার রদবদল হলেই এদেশে যে কোন অপরাধী ফাটকের বাইরে চলে আসে। জিয়াউর রহমান খুন,ধর্ষণ , লুঠতরাজ ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে বিচারাধীন ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী দালালকে মুক্ত করে সমাজে পুনর্বাসিত করেছিলেন। তাঁর সুপুত্রও যে পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করবে না -তা কে বলবে? তাছাড়া কারাগারে এরা ডিভিসন পায়। গো,আজম তো পি,জির ভি,আই,পি প্রিজন সেলে আছে। এদের ঝোলানো উচিত।

ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবেই।

নির্ঝর অলয়

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

রাষ্টপক্ষ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে না (ধারা ২১)

ফেসবুক থেকে কপি পেস্ট করলাম।

অতিথি লেখক এর ছবি

তবে কোনো অভিযোগে বেকসুর খালাস হলে সেটার বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে রাষ্ট্ট্রপক্ষ। এছাড়াও আরেকটি সম্ভাবনার কথা বলেছেন কয়েকজন---বাদীপক্ষ (রাষ্ট্র) কাদের মোল্লার নামে নতুন আরো কিছু অভিযোগপত্র দাখিল করতে পারে, যদিও জানিনা এর সম্ভাবনা কতটুকু।

---দিফিও

তানজিম এর ছবি

আইনি লড়াই চলবে, যতক্ষণ পর্যন্ত এসব খুনিদের ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো না হবে। X(

আইলসা এর ছবি

কন্সপিরেসি থিয়োরি গুলো ভিত্তি নেই কিভাবে বললেন?
কাদের মোল্লার ভি সাইন দেখানো আর প্র.আলুদে রাষ্ট্রীয় কৌসুলির আপিল না করার প্রতিক্রিয়ায় আমি ভীষনভাবে শংকিত।

রায় অপ্রত্যাশিত হতে পারে, তিনজন বিচারক ভুল করতে পারে/ভুল হতে পারে। কিন্তু রাষ্ট্র পক্ষের কৌসুলি যখন আপিল করতে চাননা, তখন কিন্তু ধারনা হয় সরকার-প্রত্যাশিত রায় পেয়েছে-যা জনগনের প্রত্যাশার সাথে যায় না।

সুতরাং আমি নিশ্চিত হতে চাই, কন্সপিরেসি থিয়োরি গুলো অমূলক...

হিমু এর ছবি

কোন প্রসিকিউটর বলেছেন তিনি আপিল করতে চান না? এখানে তো দেখছি প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী আপিল করবেন বলছেন।

সৌরভ কবীর এর ছবি

লিংকটা দেখা যেতে পারে।

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

অতিথি লেখক এর ছবি

“তবে ৪ নম্বর অভিযোগ থেকে আসামি খালাস পেয়েছে। এই খালাসের বিরুদ্ধেই কেবল আমরা আপিল করতে পারব বলে আমি মনে করি।”

কি ঘোড়ার ডিমের আপিল হবে বেশ বুঝতে পারছি! ভালোভাবে প্রসিকিউশন টিম গড়া, জনবল-অর্থবল, বিচারকদের নিরাপত্তা তো দূর, এখন দেখা যাচ্ছে আইনেও গলদ। সাজা বাড়াতে আপিলের সুযোগ তৈরি করতে যা যা করা দরকার করতে হবে। আইন সংশোধন করার সু্যোগ থাকলে দ্রুত তা করতে হবে। মানুষের প্রত্যাশার বিপরীতে এমন রায় আসতে থাকলে বিচারের সুফল তো আওয়ামীলীগ পাবেই না, বরং ভোটের ময়দানে গণ-প্যাদানি খাবে।

রব

আইলসা এর ছবি

এই যে এখন লেখা দেখতেছি "অভিযোগ নেই" একটু আগে মনে হয় দেখছিলাম "আপিল করবেনা"
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-02-05/news/326935

হিমু এর ছবি

আলুর বিষ্ঠাখোরগুলির কথা বাদ দ্যান ভাই।

তানজিম এর ছবি

রাষ্ট্রপক্ষ শুধুমাত্র “বেকসুর খালাস” দেয়া হলে সেই রায়ের বিরুদ্ধেই আপীল করতে পারবে, অন্য কোন ক্ষেত্রে নয়। অর্থাৎ, যাবজ্জীবন কারাদন্ডকে ফাঁসিতে রুপান্তর করার জন্য আপীল করার এখতিয়ার প্রসিকিউশনের নাই।
কাহিনী কি সত্য?

দ্রোহী এর ছবি

আদালতের রায়ে এই সকল অপরাধের প্রমাণ হওয়ার তাৎক্ষণিক ফলাফলের থেকেও, এই রায়ের সুদূরপ্রসারী প্রভাবটা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। জামায়াতে ইসলামী নামক যে দলটি ৭১এ সর্বোতভবে(ও সশস্ত্রভাবেও) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, বাংলাদেশে গণহত্যা চালতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছে, আর স্বাধীনতার পরেও এইসব যুদ্ধাপরাধীদের পরম যত্নে বুকে ধারণ করেছে, তাদের যুক্তির থলি আজ অনেকখানি খালি হল

অতিথি লেখক এর ছবি

দুঃখের সাথে আপনার প্রতিক্রিয়ায় একমত পোষণ করছি।

লেট মি রিফ্রেজ, ছাগ-বান্ধবদের যুক্তির থলি কিছুটা হলেও চুপসাবে। হয়তো।

---দিফিও

দ্রোহী এর ছবি

দুর্দান্ত হিউমারের জন্য নগদে পাঁচ তারা।

অতিথি লেখক এর ছবি

আজ ফেসবুকে এই লিঙ্কটা পেলাম। সবাইকে দেখার আমন্ত্রন রইল।
http://www.facebook.com/photo.php?v=10151310130375017&set=vb.118983811474042&type=2&theater

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনের সমস্যা কী? আওয়ামীলীগের কোন নেতা নবুয়ত পাইছে বলে কি কেউ এখানে দাবী করছে? ছাগল কোথাকার!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

নীড় সন্ধানী এর ছবি

যুদ্ধ শেষ হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। কিন্তু শুনেছি কাদের মোল্লা নাকি ৩১শে জানুয়ারী ১৯৭২ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে গেছে মীরপুরে। বাংলাদেশের সবগুলো রাজাকারে মধ্যে সর্বাধিক খুনের রেকর্ড যার, তাকে যাবজ্জীবন দেয়াটা পুরস্কারের মতোই লাগলো। আপোষটা ঠিক কোন পয়েন্টে হলো বুঝলাম না। কাদের মোল্লা যতগুলো অপরাধ করেছে তার জন্য কমপক্ষে দশ বার ফাঁসি হওয়া উচিত।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি ঠিক কি বুঝাতে চাইছেন পরিষ্কার হলো না। এই গণহত্যার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পরও এই রায় কিভাবে যৌক্তিক হতে পারে? "নাকের বদলে নরুণ পেলাম" এই বাগধারা ছাড়া আর কিছুই তো মাথায় আসছেনা। পরবর্তীতে বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে এই বাঞ্চোত গুলো যে আবার ক্ষমা পেয়ে যাবে তা তো বলাই বাহুল্য। ফাঁসীর নিচে কোন রায়ই তো এখানে যথার্থ নয়।

আর জামাত, শিবির অথবা তাদের অ্যাপোলজিস্টদের যুক্তির থলি খালি করার জন্য তো তাদের বিচার করা হচ্ছেনা। তাদের বিচার করা হচ্ছে তাদের করা ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য।

ফারাসাত

অতিথি লেখক এর ছবি

রায় যৌক্তিক হয়েছে, এই দাবী লেখায় করিনি। ফাঁসি না হওয়ায় আমিও আপনার মতই অবাক, এবং ক্ষুব্ধ। কিন্তু এজন্য এখনই আইসিটিকে আমি শূলে চড়াতে অনিচ্ছুক, আওয়ামী লীগ আর জামাতের মিলমিশের লক্ষণ বলে মেনে নিতে অনিচ্ছুক, কেন সেটা লেখাতে উল্লখ করেছি।

রায়ের পর ফেসবুকে শুধু নেগেটিভ কথা শুনে ক্লান্ত হয়ে এই লেখাটি লিখেছি। রায়ের সীমাবদ্ধতা পীড়াদায়ক, কিন্তু সেই রায়ের ফলে যে ছোট কয়েকটি পজেটিভ ব্যাপার ঘটেছে, সেটা নিয়ে কাউকে লিখতে দেখিনি, তাই আমার এই লেখায় সেটা মনে করিয়ে দিতে চাইছি।

----দিফিও

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

৩৪৪ জন মানুষকে হত্যার দায়ে যদি মৃত্যুদণ্ড না দেয়া যায়, তাইলে তো বাংলাদেশে নীতিগতভাবে আর কাউকে মৃত্যদন্ড দেবার ব্যবস্থা থাকল না। পরিকল্পিতভাবে সাড়ে তিনশ লোককে হত্যার অপরাধ প্রমাণ হবার পরও যদি ফাঁসি না দেয়া যায়, তাইলে এক-দুইটা সাগর রুনি হত্যা, রাগের মাথায় হত্যা, বিশ্বজিৎ হত্যার জন্য ফাঁসি দাবী করাটা তো অনৈতিক। বরং বিচারের দাবী করাই বাড়াবাড়ি।

নিজেরে ভোদাই ভোদাই লাগতেছে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ইমরান  এর ছবি

এইখানে "মেহেরজান" ছবির নীতি ফলো করা হইতেসে। কি যেন ছিল সেইটা, "উদার মানবিকতা"!

দীপ্ত এর ছবি

রায়ে চূড়ান্ত হতাশ হলাম। মানুষ ষড়যন্ত্র খুঁজবে না তো কি করবে? যে পলাতক আছে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড আর জেলে যে আছে তার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন - অনেকেই দুয়ে দুয়ে চার মিলাবে।
প্রশ্ন হল - সরকারের রায়ের সাথে আদৌ সম্পৃক্ততা আছে কিনা, নাকি বিচারকরা স্বেচ্ছায় এই রায় দিলেন? সরকারের প্রভাব থাকলে আমজনতা আরেকবার প্রতারিত হল, তাদের সামনে যাওয়ার কোন পথ দেখি না। আর বিচারকরা প্রভাবমুক্ত হয়ে রায় দিলে- অপরাধের বোঝা এতো ভারি যে খালি চোখেই সর্বোচ্চ শাস্তির (মৃত্যুদন্ডের) দাবি রাখে, সেখানে কি বিবেচনায় লঘুদণ্ড দেয়া হল তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে না।
খোমাখাতায় যারা বিচারের পেছনে সরকারের উদ্দেশ্যকে প্রশ্ন তুলছেন, তাদের দোষ দিতে পারি না। নিজেকে প্রতারিত মনে হচ্ছে।

বেচারাথেরিয়াম এর ছবি

কাদের মোল্লা কে রাজাকার প্রমানিত করে কি লাভ হবে? উইকিপিডিয়াতে লেখা থাকবে সে রাজাকার, সে ৩৪৪ জন বাঙ্গালীকে হত্যা করেছে। খুব ভাল মেনে নিলাম। তারপরে লেখা থাকবে ৩৪৪ জনকে হত্যার অপরাধ প্রমানিত হবার শাস্তি হিসেবে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে!!! কি চমৎকার, অতি স্বচ্ছ বিচার!!! সাঈদি-গোয়ার বিচার কি হবে? লইট্টা ফিস খাওয়া মানা আজীবন??

রাজাকারদের বিচারারের ক্ষেত্রে আমি যুক্তি মানিনা, আমি পূর্ব পুরুষের রক্তের দাম বুঝে নেয়া মানি। এতে আমাকে যে কেউ যুক্তিহীন বলতে পারে, গোয়াড় বলতে পারে আমার কিছু এসে যায় না। আমি আদালতের দেয়া এই বালের রায় মানিনা।

ইমরান  এর ছবি

টমাস জেফারসন একবার বলেছিলেন, "The tree of liberty must be refreshed from time to time with the blood of patriots and tyrants." এই কথাটিকে একটু অন্যভাবে বলা যায়, "The tree of our independence must be nourished by the blood of our martyrs and our enemies." আমাদের স্বাধীনতার জন্য আমাদের শহীদরা রক্ত দিয়েছেন, শত্রুরা দেয় নাই। আমাদের স্বাধীনতার গাছটাও এইজন্য অপুষ্ট।

ঘুমকুমার এর ছবি

যতই যুক্তি দেখান না কেন কিছুতেই মানতে পারছি না যে সন্দেহাতীত ভাবে এতগুলো হত্যা প্রমাণিত হওয়ার পরেও যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। কন্সপিরেসি খুঁজতে যাওয়াটা অযৌক্তিক না।
আর আওয়ামীলীগ নিজেরাইতো ফাঁসির রায় হওয়া আসামীকে ক্ষমা করে পথ দেখিয়ে দিয়ে গেল। আগামীবার বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতায় এসে যে এদেরকে ক্ষমা করে জেল থেকে বের করে নিয়ে আসবে এটা বোঝার জন্য রকেট সাইন্টিস্ট হওয়া লাগে না!

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

স্যার, আপনি কি বলতে চাইছেন কাদের মোল্লার অপরাধ প্রমাণিত হয়নি?

কন্সপিরেসি তো সারা দুনিয়ায়। কত হাজারভাবে কত হাজার রকমের কন্সপিরেসি, সে তো আর আপনার অজানা থাকার কথা নয়। বিবেচ্য হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জিতল নাকি হারল।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ঘুমকুমার এর ছবি

আমি সম্ভবত আমার কথাটা বুঝাতে পারিনি। আমি বলতে চাইছি কাদের মোল্লার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ কি জিতল? এতগুলো মানুষ হত্যার পরেও শুধুই যাবজ্জীবন!!
বাংলাদেশের মানুষের দেওয়া ট্যাক্সের টাকায় খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকবে এই কুত্তার বাচ্চা। যার অধিকাংশটাই হয়ত হবে কোন হাসপাতালের কেবিনে। তারপর আগামীতে সরকার পরিবর্তন হলে আবার দুই আঙ্গুলে "ভি" দেখিয়ে বের হয়ে আসবে! এটাকে কি আপনি বাংলাদেশের বিজয় বলবেন?

কানা বাবা এর ছবি

আমার বাবার শরীরে বেয়নেটের দাগ ৪২ বছরেও যায় নাই, আর যারা মারা গেলো বা ধর্ষিত হলো তারা কি পেলো এই রায়ে?
কাজেই আপনার এই সব সুশীল কথাবার্তার মুখে ঝাঁটা মারি।

/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।

অরফিয়াস এর ছবি

কাজেই আপনার এই সব সুশীল কথাবার্তার মুখে ঝাঁটা মারি।

(Y)

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার বাবা, আর তাঁর মত আরো লক্ষ-কোটি বাবা যেন সুবিচার পান, মনেপ্রাণে এই কামনা করি।

---দিফিও

অগ্নির এর ছবি

কীসের অর্জন ? কার অর্জন ? আজকের রায়ে যাবতীয় অর্জন জামাতের ! কাদের কুত্তাটাতো আর শুধু শুধু ভি চিহ্ন দেখায়নাই ! এই এক রায়ে জামাত যা যা চাইছিল সব পাইছে ! আওয়ামীলীগ ঘায়েল কারন আজকে লীগের সাপোর্টাররাও ক্ষুব্ধ ! তাদের বিশ্বাসও নষ্ট হয়ে গেছে । ট্রাইব্যুনালের দিকে আঙ্গুল তোলা হইলেও সাধারন জনতা তা কখনোই সাপোর্ট করেনাই, আজকে সেইটাও হইছে । এখন আমরা যা করব তাতেই জামাত লাভবান হবে । তারা তো চায়ই যে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হোক , সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠুক, বারবার আপীল রি-আপীল হোক, জনগন সন্দেহের দোলায় দুলতে থাক !

আমাদের আপীল করার কোন সুযোগ নাই, যাবতীয় সুযোগ এখন পাবে কসাই কাদের । বাংলার জনগনকে অভিনন্দন, প্রমানিত যুদ্ধাপরাধীকে ১৫ বছর বসায় বসায় খাওয়াইতে পারার সুযোগ পাবার জন্য ।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

এটা অসঙ্গতিপূর্ণ। ফাঁসি জিনিসটা আছে কেন? নাকি আদালত অভিযোগগুলোর ব্যাপারে বিয়োন্ড রিজনেবল ডাউট নিশ্চিত হতে পারে নাই? জামাত শিবির মিস্টি বিলায় নাই?

ক্রেসিডা এর ছবি

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় "যাবজ্জীবন কারাদণ্ড" কোনমতেই গ্রহনযোগ্য নয়। এটা কোন বিচারের দন্ড ও না! এই দেশে সরকার বদল হওয়ার সাথে সাথে অপরাধীরা নিরপরাধী হয়ে বের হয়ে ঘুরে বেড়ায়.. আবার বুক ফুলিয়ে রাজনীতি করে।

রায় একটাই " ফাঁসি" আর সেটা কার্যকর ও হতে হবে অতি শ্রীঘ্র। নইলে হু.ম এরশাদের মতো এদেরও আমরা হয়তো আবারো রাজনীতিতে .. আবারো স্বাধীন ভাবে ঘুরে দেখতে পাবে।

ফাঁসির রায় হোক, এবং ফাঁসি কার্যকর হোক।

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

অরফিয়াস এর ছবি

আইসিটির রায়ে তার যাবজ্জীবন কারাদন্ড ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু ফাঁসির রায় না হওয়ায় আমাদের অনেকেই বিক্ষুব্ধ ও হতাশ। সেই হতাশা থেকে কি আমাদের আজকের দিনের বিশাল অর্জনকে কিছুটা হলেও আমরা ভুলতে বসেছি?

আপনার প্রতিক্রিয়া কি?

বিশাল অর্জন বিতর্কিত হলে সেটায় অর্জন কতটুকু?

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যে কটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, সেগুলো হল--একাত্তরে বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে হত্যার নির্দেশ দেয়া, কবি মেহেরুননিসা, তাঁর মা এবং দুই ভাইকে হত্যা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে জবাই করে হত্যা, একাত্তরের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনা ও অবাঙালি রাজাকারদের সঙ্গে মিরপুরের আলোকদী (আলুব্দী) গ্রামে হামলা চালিয়ে ৩৪৪ জনের বেশী হত্যা, আর মিরপুরের হযরত আলী লস্কর, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে হত্যার নির্দেশ দেয়া।

আদালতের রায়ে এই সকল অপরাধের প্রমাণ হওয়ার তাৎক্ষণিক ফলাফলের থেকেও, এই রায়ের সুদূরপ্রসারী প্রভাবটা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ।

"তাৎক্ষণিক ফলাফল" আর "সুদূরপ্রসারী প্রভাব" এই দুটো অংশ ব্যাখ্যা করেন। ফাঁসি হলে সেই রায়ের কি "তাৎক্ষণিক ফলাফল" আর "সুদূরপ্রসারী প্রভাব" হতে পারতো বলে আপনার মনে হয়?

জামায়াতে ইসলামী নামক যে দলটি ৭১এ সর্বোতভবে(ও সশস্ত্রভাবেও) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, বাংলাদেশে গণহত্যা চালতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছে, আর স্বাধীনতার পরেও এইসব যুদ্ধাপরাধীদের পরম যত্নে বুকে ধারণ করেছে, তাদের যুক্তির থলি আজ অনেকখানি খালি হল। যারা জোর গলায় বলেছেন "যুদ্ধাপরাধ করলে মামলা নেই কেন" আর "যুদ্ধাপরাধের মামলা হলেও আদালতে প্রমাণিত হয়ে শাস্তি নেই কেন" তাদের গলার আওয়াজ অনেকখানি কমে আসার কথা। জামায়াতে ইসলামীর উচ্চপদস্থ নেতা কাদের মোল্লার পরিচিতি সংক্রান্ত যেকোন লেখায় আজ থেকে লিখতে হবে "৭১ এর প্রমাণিত যুদ্ধাপরাধী" --এই ছোট্ট পরিবর্তনটার মূল্যও অনেক।

৩৪৪ জন মানুষকে হত্যা করার অভিযোগ প্রমাণিত হলে মৃত্যুদন্ড হয়না, এই ব্যাপারটাও আশা করি আপনার দৃষ্টিতে আমাদের দেশের ইতিহাসে বিশাল পরিবর্তন?

পাক-হানাদার বাহিনীর এদেশী দোসরদের বিচারের পালাশুরু হয়েছে, সামনে আরো অনেকগুলি রায় এবং আরো অনেকগুলি বড় মামলার বিচারকাজ বাকী আছে। আজকের রায়, দেশের এক বিরাট কলংক মোচনের পথে ছোট কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা পদক্ষেপ, এটা যেন আমরা ভুলে না যাই।

যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে ট্রাইবুন্যাল গঠন করতে যখন ৪০ বছর সময় লাগে তখন বোঝা উচিত এটা গঠন হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ একটা পদক্ষেপ। এখন হচ্ছে রায় হওয়া এবং তা কার্যকর হওয়া। বিতর্কিত রায় হলে এখন কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন জাগবে।

আপনার এই লেখাটা অতিমাত্রায় "সুশীল" গোছের। অন্তত কিছু সুশীল আজকে এই রায়ের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে আর সেখানে আপনি এই রায়কে জাস্টিফাইড করার একটা প্রয়াস করলেন।

লেখায় এক তারা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, আমি জানি আমার লেখাটার সুর একেবারেই "সুশীল" গোছের, কিন্তু, এই মুহূর্তে, এই কথাগুলো মনে করিয়ে দেয়া দরকার মনে করেছি, এবং এখনো তাই মনে করি। আপনার পয়েন্টগুলোয় একে একে আসি।

আপনার প্রতিক্রিয়া কি?

বিশাল অর্জন বিতর্কিত হলে সেটায় অর্জন কতটুকু?

রায়ে ফাঁসি না হওয়ায় আপনার মতই আমি অবাক, এবং হতাশ। প্রথমেই প্রশ্ন আসে, কেন এরকমটা হলো? ফেসবুক/ব্লগে অনেককেই দেখছি যে এতে পরিষ্কারভাবে আওয়ামী লীগের হাত দেখতে পাচ্ছেন, আর তার পেছনে কারণ হিসেবে দেখছেন ১)জামায়াতের সাথে সম্ভাব্য মিলমিশ, ২) মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য দেশের "চাপ" ৩) জামায়াতের তান্ডবে ভয় পেয়ে যাওয়া ৪) জামায়াতী পয়সার যাদু ৬)আগামী নির্বাচনের হিসাব নিকাশ ।, এর যেকোনোটি স্বীকার করে নিলে ধরে নিতে হয় যে আইসিটি যথেষ্ট স্বাধীন নয়, কিন্তু সেরকম কোনো লক্ষণ আমি অন্তত দেখিনি। রায়ের পূর্ণ বিশ্লেষণের আগে পর্যন্ত আমি আইসিটিকে বেনিফিট অফ ডাউট দেয়ার পক্ষে।

আর রায় "বিতর্কিত" হলেও সেই রায়ে যা আমাদের সামান্য হলেও অর্জন আছে, সেটাই আমার লেখার মূল বিষয়। রায়ে ফাঁসির বদলে যাবজ্জীবন হওয়ায়, "জামায়াতের এক বড় নেতা আজ ৭১ এর কনভিক্টেড আপরাধী" এই তথ্যটুকুর গুরুত্ব আড়াল হয়ে গেছে, ব্লগে বা ফেসবুকে এটা নিয়ে কাউকেই কিছু বলতে শুনিনি। এইটুকু তো অবশ্যই অর্জন---এটা যেন আমরা ভুলে না যাই, সেজন্যই এই লেখা।

"তাৎক্ষণিক ফলাফল" আর "সুদূরপ্রসারী প্রভাব" এই দুটো অংশ ব্যাখ্যা করেন। ফাঁসি হলে সেই রায়ের কি "তাৎক্ষণিক ফলাফল" আর "সুদূরপ্রসারী প্রভাব" হতে পারতো বলে আপনার মনে হয়?

আদালতের রায় নিজেই আরেকটি আইনের মত, ভবিষ্যতে সেই রায়ের রেফারেন্স টানা হবে আরো অনেক কেসে। একটা খুনের মামলায় মৃত্যুদন্ড/কারাদন্ডের রায় হলে সেটা যে শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্থের মানসিক যন্ত্রণা উপশম করে আর সুবিচারের ধারণা দেয় তাই নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্যও একটা সাবধানবাণী এবং আইন হিসেবে কাজ করে। সেই অপরাধী ভবিষ্যতে প্রশাসনের কোনো পদে আর বসতে পারবেনা, কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে থাকতে পারবেনা। সুদূরপ্রসারী প্রভাব বলতে এগুলোকেই বুঝিয়েছি। আর ফাঁসি হলে যে অপরাধের ভয়াবহতা আরো প্রতিষ্ঠিত হত, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

আপনার এই লেখাটা অতিমাত্রায় "সুশীল" গোছের। অন্তত কিছু সুশীল আজকে এই রায়ের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে আর সেখানে আপনি এই রায়কে জাস্টিফাইড করার একটা প্রয়াস করলেন।

আপনার প্রথম অভিযোগ মাথা পেতে নিলাম। সচলায়তনের অনেক লেখাই আছে, যেগুলোয় আমার শতভাগ সহমত থাকে, কিন্তু মন্তব্যে জানানোর প্রুওজন মনে করিনি কখনোই, কিন্তু কখনো কখনো দেখেছি যে কোনো একটা লেখায় কোনো একটা স্পেসিফিক ভিউপয়েন্ট অনুপস্থিত, তখন সেটা উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি, দরকার হলে বেশীরভাগ পাঠকের মতের বিরুদ্ধে হলেও। আমার আজকের এই লেখাটার কারণও ঠিক সেটাই। ধারণা করছি যে আপনি এই রায়ে খুশি নন, একমাত্র ফাঁসির আদেশই সুবিচার হয় বলে মনে করেন। আপনার এই অবস্থানের প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রইল---শুধু বলতে চাই, এই লঘু দন্ডকে আমি জাস্টিফাই করার প্রয়াস নিইনি মোটেও, বরং খিছু সংশ্লিষ্ট কিছু পজিটিভ ব্যাপার হাইলাইট করতে চেয়েছি, এটুকুই।

----দিফিও

রু এর ছবি

পুলিশের হেফাজত থেকে কেড়ে নিয়ে কিছু আম জনতা যদি কাদের মোল্লাকে খুন করে, তাদের কি সাজা হওয়া উচিত?

এই রায় মানি না।

কুমার এর ছবি

এই রায়ের সুদূরপ্রসারী প্রভাবটা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ।

ফাঁসি রায়ের সুদূরপ্রসারী প্রভাবটা আরও অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাধীনতার পরেও এইসব যুদ্ধাপরাধীদের পরম যত্নে বুকে ধারণ করেছে, তাদের যুক্তির থলি আজ অনেকখানি খালি হল।

আসে পাশে চারপাশে দেখে সেইটা মনে হয় কি? দ্রোহীদার মত খালি হাঁসতেই আছি।

জামাত-শিবির বরাবরই দাবী করে এসেছে যে এই ট্রাইবুনাল আসলে আওয়ামী-এজেন্ডা বাস্তবায়নের আদালত।

দলের নাম কি বাদ গেল একটা?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

দিফিও লিখেছেন:
যারা জোর গলায় বলেছেন "যুদ্ধাপরাধ করলে মামলা নেই কেন" আর "যুদ্ধাপরাধের মামলা হলেও আদালতে প্রমাণিত হয়ে শাস্তি নেই কেন" তাদের গলার আওয়াজ অনেকখানি কমে আসার কথা।

'তারা' মানে কি জামাত-শিবিরের ছাগুরা? আপনি কি ছাগুদের গলার আওয়াজ কমার প্রত্যাশা করছেন? তাইলে অত্যন্ত দুঃখ সহকারে আপনারে আমার হতাশা জানিয়ে গেলাম। তাদের জামাতি পাকি দালাল বাপেরা যে প্রমাণিত যুদ্ধাপরাধী, সেইটা ট্রাইব্যুনালে প্রমাণ হওয়ার আগে থেকেই তারা জানে। স্বাধীনতার পরপরই তাদের সব পাকি দালাল বাপেরা ক্যান গা ঢাকা দিয়া পলাইয়া আছিলো ৭৫ পর্যন্ত, এইটা তারা জানে না মনে করছেন? কিন্তু এই জানা'রে কখনো মানতে শুনছেন কোনো শুয়োরের বাচ্চারে?

দিফিও লিখেছেন:
"৭১ এর প্রমাণিত যুদ্ধাপরাধী" --এই ছোট্ট পরিবর্তনটার মূল্যও অনেক।

এইটার মূল্য আপনি এতোদিনে বুঝলে তো সমস্যা ভাই। আমি তো জানি '৭২-এ দালাল আইনে যে সব পাকি দালালের শাস্তি হৈছিলো, তাগো সবার দালালি, অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ- সবই প্রমাণিত। এখন আপনি আমারে বলেন, কসাই কাদের মোল্লা কি মুক্তিযুদ্ধের সময় তার পাকি বাপেদের দালাল আছিলো না? আপনার উত্তর যদি 'হ্যাঁ' হয়, তাইলে সে তো সেই ৭২ সাল থেকেই প্রমাণিত যুদ্ধাপরাধী।

দিফিও লিখেছেন:
যারা ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চান, তাদের একমাত্র লক্ষ্য যে প্রতিশোধ, এমনটি না বলেই মনে হয়। গত ৩৫ বছর ধরে যে ইতিহাস বিকৃতি, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষের ব্যাক্তিদের যে মিথ্যার বেসাতি আর নির্লজ্জ আস্ফালন বাংলাদেশ দেখেছে, তার প্রতিকার করে ইতিহাসকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে আসাও এই আন্দোলনের এক বড় অংশ।

অন্তত আমার কাছে একমাত্র না হোক, প্রধান এবং প্রথম লক্ষ‌্য 'প্রতিশোধ'। ত্রিশ লাখ স্বজন যারা হত্যা করলো এবং করালো, চার লাখ বাঙালী নারীকে যারা তাদের পাকি বাপদের কাছে উপঢৌকণ হিসেবে পাঠিয়েছে এক গেলাস শরাবের আশায়, সেইসব কুত্তার বাচ্চাদের বিচার মানে আমার কাছে প্রতিশোধই। ত্রিশ লাখ স্বজন হত্যার প্রতিশোধ, চার লাখ মা-বোনের ধর্ষিত হওয়ার প্রতিশোধ।

আপনার কথার শেষাংশের জন্য জামাতের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাজ্জাকের কথা কোট করছি, "কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে অবশ্যই আপিল করব।”" সুতরাং, বুঝতেই পারছেন ইতিহাস সঠিক রাস্তায় যাবে বলে আপনি যে প্রত্যাশার আলো দেখছেন, ক্ষমতায় কখনো এলে সেই ইতিহাস কোন পথে নিবে, তার ইঙ্গিত ব্যারিস্টার রাজ্জাক খুল্লামখুল্লা দিয়ে রেখেছে।

দিফিও লিখেছেন:
ফেসবুক ও ব্লগে অনেকেই দেখছি হতাশ হয়ে আওয়ামী লীগকে দুষছেন, কেউ বলছেন যে আওয়ামী লীগ ও জামাতের আসন্ন আঁতাতের প্রথম লক্ষণ এটি, কেউ আবার বলছেন যে আওয়ামী লীগ জামাত-শিবিরের সাম্প্রতিক তান্ডবে ভয় পেয়েছে, তারই ফলাফল এটি।

আওয়ামী লীগকে না দোষার কোনো কারণ আছে কী? ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনকে আর্থিক, মানবিক, বাহুবলিক- কোনো রকমের সহযোগিতায় কি আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রণালয়গুলো যথাযথ ভূমিকা রেখে গেছে প্রতিনিয়ত? পেপার স্প্রে নিয়ে তো অনেক হাদুমপাদুম শুনলাম স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর। এই যে জামাত-শিবির সারা দেশকে জিম্মি বানানোর প্রকল্প হাতে নিলো, পুলিশের উপর হামলা করলো, বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারলো, কী বালটা ফেলতে পারলো আওয়ামী সরকারের স্বরাস্ট্রমন্ত্রণালয়ের বেহুদা বকবক করনে ওয়ালা মন্ত্রী মহোদয়েরা? উল্টা জনৈক মন্ত্রী আবার রসের কাঠির এক ধাপ উপরে উঠে এসে বাণী চিরন্তনী প্রসব করলেন জামাতের নতুন প্রজন্মের তরে তার প্রশংসার বালতি উপুড় করে। এখন এইসব হিন্দি চুলপক্ক কর্মকাণ্ড আর কথাবার্তা শুনে যদি কেউ আওয়ামী লীগকে দোষ দিয়েই ফেলে, আপনি তো তাকে দোষ দিতে পারেন না!

দিফিও লিখেছেন:
জামাত-শিবির বরাবরই দাবী করে এসেছে যে এই ট্রাইবুনাল আসলে আওয়ামী-এজেন্ডা বাস্তবায়নের আদালত। তাদের সাথে গলা মেলানোর এখনো কোনো কারণ দেখছিনা।

রাজাকার কসাই কাদের মোল্লাকে ফাঁসীর পরিবর্তে যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে, এটা যদি আওয়ামী-এজেন্ডা হয় জামাত-শিবিরের মতে, তাইলে এক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব এজেন্ডা কী হবে মনেহয় আপনার? রাজাকার কাদের মোল্লাকে হ্যাং-আনটিল-ড্যাথ পেনাল্টি দেওয়া? যদি এইটা তাদের এজেন্ডা না-ই হয়, তাইলে জামাত-শিবিরের শুয়োরদের সাথে আমাদের গলা মিললো ঠিক কোন জায়গায় গিয়ে?

দিফিও লিখেছেন:
প্রমাণিত খুনের মামলায় ফাঁসির বদলে যাবজ্জীবন আগেও আমাদের আদালতে দেখেছি বলেই মনে পড়ে।

আমিও দেখেছি নির্দোষ আলমগীরকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে, নিষ্পাপ সিনেমায়। বেশ ভালো সিনেমা, দেইখেন সময় পেলে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।