গোদীর শব্দ শিক্ষা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০১/০৩/২০১৩ - ৯:৫৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একটা বিষয় নিশ্চয় সবার মনে আছে, স্কুল কলেজে বাংলা বইয়ের এক একটা গল্প কবিতার পর কিছু শব্দার্থ দেয়া থাকত। এদের মধ্যে কয়েকটা শব্দ হত এতটাই দূর্বোধ্য যে, শব্দার্থ দেয়া না থাকলে গল্প কবিতার আর কিছু বোঝা যেত না ।

দেশে এতসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ঘটে যাচ্ছে, এইসময় আমি কিনা ব্যস্ত এইসব লঘু ব্যপার নিয়ে! কারণ আছে। আর সেটা হল, খেয়াল করে দেখতেছি অনেকের এই শব্দার্থ জ্ঞান খুব অল্প। তারা ভুল প্রয়োগে শব্দের একেবারে খতনা করে ছেড়ে দেয়। এদের যিনি পালের গোদা (গোদী) তিনি ঠিক কোন ক্লাস পর্যন্ত পড়েছেন তা কেউ জানে না।

যাই হোক এইসব অফটপিক কথা না বলে আসল কোথায় আসা যাক। জাতীয় জীবনে শব্দার্থের যে কি ভায়াবহ ভূমিকা তা বোধ হয় আমরা জাতি হিসেবে হারে হারে টের পাচ্ছি। এই অবস্থায় কিছু শব্দের অর্থ পরিষ্কার করতেই বান্দার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। পত্যেক শব্দার্থের পর দুই একটা ব্যবহারও দেয়া হল।

১। যুদ্ধাপরাধঃ যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে কোন যুদ্ধ বা সামরিক সংঘাত চলাকালীন সময়ে কোন ব্যক্তি কর্তৃক বেসরকারী জনগনের বিরুদ্ধে সংগঠিত, সমর্থিত নির্দিষ্ট সংজ্ঞায়িত অপরাধ কর্মকান্ডসমূহ। আর্ন্তজাতিক মানবাধিক আইন অনুসারে যুদ্ধ কালিন সংঘাতের সময় বেসরকারী জনগনকে খুন, লুন্ঠন, ধর্ষণ, কারাগারে অন্তরীন ব্যক্তিকে হত্যা, নগর, বন্দর, হাসপাতাল কোন ধরনের সামরিক উস্কানি ছাড়াই ধ্বংস প্রভৃতি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

ব্যবহারঃ
ভুল ব্যবহার > বাংলাদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই। -মোজাহিদ।
সঠিক ব্যবহার > সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই। -জনগণ।

২। গৃহযুদ্ধঃ গৃহযুদ্ধ হল এক ধরনের যুদ্ধ যখন নির্দিষ্ট কোন রাষ্ট্র বা দেশের অভ্যন্তরে দুই বা ততোধিক সংগঠিত দল সরাসরি যুদ্ধে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। সাধারণ অর্থে গৃহযুদ্ধের ফলে দু'টি স্বাধীন দেশ সৃষ্ট হয় যা পূর্বে একীভূত দেশের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

ব্যবহারঃ
ভুল ব্যবহার > যুদ্ধাপরাধীর বিচার বন্ধ না করলে দেশে গৃহযুদ্ধ লেগে যাবে। -রাজাকার
সঠিক ব্যবহার > দয়া করে শাহবাগে এসে গৃহযুদ্ধের কথাটা বলে দেখুন । -জনগণ।

৩। গণহত্যাঃ ইচ্ছাকৃত ও পরিকল্পিতভাবে কোন গোত্র, বর্ণ, ধর্ম বা জাতির লোকের একটি অংশ বা সম্পূর্ণের ধ্বংস সাধন।

ব্যবহারঃ
ভুল ব্যবহার > গতকাল জামাতিদের নিহত হওয়ার ঘটনা একটি গণহত্যা -রাজাকার
সঠিক ব্যবহার > নিরীহ মানুষ মরলে সেটা গণহত্যা, কুত্তা শুয়োর যখন কারও উপর হামলায় পড়ে তখন আত্মরক্ষার্থে পুলিশের গুলি চালানো গণহত্যা না। -জনগণ।

পরিশিষ্টঃ সকল যুদ্ধই অন্যায় যুদ্ধ। সকল হত্যাই পাপ। কিন্তু শুয়োরগুলো যখন বলে ১৯৭১ এর চেয়ে বড় গণহত্যা কাল হয়েছে, তখন মাথা ঠিক থাকে না। এর চেয়ে বড় ঘটনা ছিল বিডিয়ার হত্যাকাণ্ড, যেখানে শতাধিক নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু অনেকে ন্যাকামি করে যখন বলে এমন হত্যাকাণ্ড জীবনে দেখি নাই, তখন মাথা ঠিক থাকে না।

*** তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আরো একখানা নামবিহীন অতিথি লেখকের লেখা। যে ইস্যুতে পোস্টটা লেখা হয়েছে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু পোস্টটি তার কাম্য মনোযোগ দিয়ে লেখা হয়েছে বলে মনে হয়নি।

গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্তরা তাদের প্রতিপক্ষ (অর্থাৎ সরকার ও জনগণ)-কে একটি বানোয়াট গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করতে চায়। যেন তারা সাধারণ মানুষ ও বিদেশিদের এটা বলে বোঝাতে পারে যে এখানে উভয় পক্ষের বিরুদ্ধেই গণহত্যার অভিযোগ আছে তাই একপক্ষ অন্য পক্ষের বিচারের নৈতিক অধিকার রাখে না।

২৮শে ফেব্রুয়ারীর ঘটনাকে 'গণহত্যা' বলে চিহ্নিত করার প্রথম প্রয়াস হচ্ছে মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। পরে বেগম খালেদা জিয়া সেই টার্মটিই পিক্‌ করেছেন। মীর্জা সাহেব টার্মটি বেফাঁস বলে ফেলেছেন এমনটা নয়, খালেদা ম্যাডামও আর কোন প্রতিশব্দ না পেয়ে এই টার্মটা ব্যবহার করেছেন এমনটাও নয়। কার্যকারণ ব্যতীত কার্য সংগঠিত হয় না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

বাবুই এর ছবি

এটি সচলায়তনে আমার প্রথম পোস্ট। লেখার সময় খেয়ালই করিনি এখানে কোন জায়গায় নামটি দেয়া হয়নি।

লেখার সময় খুব ক্ষুব্ধ ছিলাম, তাই আবেগের কারণে হয়ত লেখায় মনোযোগ কম হয়ে গেছে।

ভবিষ্যতে উন্নতির চেষ্টা থাকবে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।