আমি একজন পুলিশ অফিসারের সন্তান !
ছোটবেলা থেকে দেখতে দেখতে বড় হয়েছি একজন পুলিশের জীবন কি। এমনও হয়েছে বাবার সাথে দেখা হয়েছে একমাস পর, যদিও একই বাসায় থাকি আমরা। আমি বারোটায় ঘুমিয়ে যাই, তিনি ফেরেন রাত দুইটায় ! আবার ভোরে চলে যান। যখন বাসায় থাকেন ও দীর্ঘ ক্লান্তি আর অবসাদের পরে গভীর ঘুমে অচেতন থাকেন। ঘরে বোম ফাটালেও আব্বার ঘুম ভাঙ্গতো না তখন। আমরা এই নিয়ে হাসাহাসি করতাম।
সন্ধ্যাবেলা আব্বা বেরিয়ে যেতেন। স্কুল থেকে অভিভাবকের স্বাক্ষর লাগবে এইরকম অনেক কাগজ পত্র প্রায়ই থাকতো। তাতে কখনোই আব্বার স্বাক্ষর আর করানো হত না। আম্মা হতাশ মুখে স্বাক্ষর করতেন। আমার মাথায় ঢুকে গেলো, অভিভাবক মানেই মা ! স্বাভাবিকভাবেই তাই, মা বাজার করে, স্কুল থেকে আনা নেয়া করে, বাসার সবকিছু করে, অসুস্থ হলে ওষুধ পত্রের জন্য দৌড়াদৌড়ি করে, বই খাতা মলাট করে দেয়, সবকিছুই তো আম্মাই করে ! বাবা আবার অভিভাবক হবে কেন। এমনকি ঈদের দিন নামাযটা পড়েই দৌড় দেয় কোথায় যেন। মাঝে মাঝে তাও পড়ে না, আমি শুকনো মুখে একা নামায পড়তে যাই। তার কাজ শুধু বাইরে থাকা আর ঘুমানো। আর বাজার করা নিয়ে আম্মার সাথে মাঝেমধ্যে গ্যাঞ্জাম করা !
আমি তখনো জানতাম না তিনি সারাদিন বাইরে কি করেন। আমি জানতাম না তিনি কোন কোন ঈদে যখন গুরুত্বপূর্ণ মানুষরা নতুন পোশাক পরে ঈদের নামায পড়তে থাকেন তখন সেই পুরনো নীল খাকি পোশাক পরে পাশে দাড়িয়ে নামাযরত মানুষদের পাহারা দেন। তার আর নামায পড়া হয়না ! আমি তাও কখনো ভাবিনি যে যখন ঈদের নামায পড়তে তিনি আমাকে নিয়ে যাচ্ছেন ঈদগাহে তখন তার ফোনে অনবরত ফোন আসছে, ওসি সাহেবের ফোন। তাড়াতাড়ি থানায় যাওয়ার জন্য। তিনি মুখ শুকনো করে রেখেছেন, বারবার ফোনের দিকে তাকাচ্ছেন, কোনভাবে যেন ম্যানেজ করা যায়। বাসায় ফিরে শান্তিতে যেন দুপুরের খাবারটা না হোক, সেমাই পায়েসটুকু শান্তভাবে বসে খেতে পারেন। তারপরও তিনি হাসিমুখে শিশুসন্তানকে ঈদের নামাজের নিয়ম মনে করিয়ে দিচ্ছেন, "তাকবীরগুলো যেন কোথায় কোথায় দিতে হয়, মনে আছে ? ঈদের নামাযের নিয়্যত মনে আছে ? দাড়াও এই যে শোনো আরেকবার..."
মাঝে মাঝে আমিই মনে করিয়ে দিতাম। আব্বা বলতে গিয়ে দেখা যেতো নিজেই ভুলে গেছেন। আমি কখনো ভুলিনি। আমি জানতাম আব্বা ভুলে যাবে, আমারই মনে করিয়ে দিতে হবে। তাই আগেই শিখে যেতাম।
একটা ঘটনা বলি, আমার বাবার সারা শরীরের চামড়া ছিলে মতো গেছে। রক্তাক্ত অবস্থা। রাস্তার সাথে হেচড়ানো হয়েছে এমন, এক অপরাধীকে ধরতে এই কান্ড। সে পালাচ্ছিলো, আব্বা তার পা চেপে ধরেছে। যতদূর দৌড়াতে পেরেছে ততদূর আব্বা হেচড়িয়ে গেছে তার সাথে। তাও ছাড়েনি। যতটুকু মনে পড়ে সে কোন এক মার্ডার কেসের আসামী ছিল।
আব্বার গায়ের ক্ষত তখনো সারেনি। ভয়াবহ অবস্থা। এরমধ্যেই একটা ফোন আসলো আসামীকে ছেড়ে দেয়ার জন্য। আব্বা হতাশ মুখে জ্বি স্যার বললেন কয়েকবার। আমি সেই জ্বি স্যার এর মধ্যে নিজের জীবনের প্রতি তীব্র ঘৃণাও শুনেছিলাম !
এইরকম আরো হাজারো ঘটনার কথা আমি মনে রাখিনি। তিনিও রাখেননি। হাজারো পুলিশ কর্মকর্তার জীবনের হাজারো এমন ঘটনা কেউ কখনো জানবেনা, মনে রাখা তো দূরের কথা ! তাদের স্ত্রীদের আত্মত্যাগের কথা, সন্তানদের দীর্ঘশ্বাসের কথা কেউ কখনো জানবেনা ! তাতে কি আসে যায়, আমি জানি !
আমি আজ গর্বের সাথে বলছি, আমি একজন পুলিশ অফিসারের সন্তান ! আমার শৈশবে যখন আমি বাবার সঙ্গ চেয়েও পাইনি তখন তিনি জাতির কোনো রুই কাতলার প্রাণ রক্ষা করছিলেন। এমন কারো যার আমার বাবার প্রাণ গেলে বিশ হাজার টাকার স্বান্তনা ছাড়া আর কিছুই আসে যায় না! আমি গর্বিত, আমার বাবার বাজার না করা নিয়ে। আমি গর্বিত আমার বাবার স্বাক্ষর না করা সব কাগজ নিয়ে, আমার মায়ের তার স্বামীর প্রতি সব অভিযোগ আর দীর্ঘশ্বাস নিয়ে। আমি গর্বিত ! !
আমার বাবাও আজ লাখো পুলিশ কর্মকর্তার মতো স্বাধীনতা বিরোধী জানোয়ারদের সাথে লড়ছেন। আর হাজারটা মানুষের মত তার প্রাণ ও বিপন্ন ! আমি আমার পিতা ও পিতাসম সকল পুলিশ কর্মকর্তাকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। লেখার মাঝখানেই কান্না শুরু করেছিলাম ! সকল পুলিশ ভাইদের অশ্রুসজল স্যালুট !
(পুনশ্চ: আমার বাবা জানেন না তার ছেলেও একজন যোদ্ধা, তার প্রাণও বিপন্ন। আমি আন্দোলনে আছি তাকে জানানো হয়নি। তিনি যেতে দিতেন না। প্রতিদিন তিনি বাসায় থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। আমি বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি আর ফোনে হু হা করছি। তিনি ঢাকার বাইরে তাই রক্ষা। ভাবতে ভালো লাগছে, অজান্তে হলেও বাপ ব্যাটা একই সাথে স্বাধীনতার স্বপক্ষে যুদ্ধ করছি। কেউ উর্দি পরে, কেউ উর্দি ছাড়া, মাথায় পতাকা বেঁধে। উর্দি আর পতাকা দুটোতেই মৃত্যুর ছাপ !)
পুলিশ ভাইদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সকলের কাছে আহ্বান রইলো !
জয় বাংলা ! ! !
মন্তব্য
কিছু বন্ধুর অনুরোধে লেখাটি ব্লগে দিলাম। আশা করি কিছু মানুষের ভালো লাগবে ! - সামিউল আজিজ সিয়াম
ভাইরে আপনাল লেখায় আমার চোখে পানি চলে আসলো। আপনার আব্বা আর সকল পুলিশ যেন নিরাপদ থাকেন।
ভাই ধন্যবাদ !
আজ সারাদিন লেখাটা দেখেছি ফেসবুকে। আগেই পড়েছিলাম। শ্রদ্ধা এবং শুভকামনা। নিরাপদে থাকুন আপনারা।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
অনেক অনেক ধন্যবাদ !
খুব ভালো লাগলো লেখাতে পড়ে।
ধন্যবাদ !
দোয়া করি সকল পুলিশের জন্য যারা জনগনের সেবার জন্য অক্লান্ত পরিস্রম করে যাচ্ছেন ।
সৌ রভ
ফেসবুকে আগেও পড়েছি।
আমার ছোটমামা পুলিশ অফিসার।
যে কোন প্রফেশনেই ভাল-খারাপ, সৎ- অসৎ থাকেই... তাই বলে এই না যে, সবাই-ই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দেওয়া পাবলিক। পুলিশ/ কাস্টমস--- বলতেই যারা গণহারে 'ঘুষখোর' ট্যাগ লাগান, তাদের সেটা বোঝার মতো গভীরতা নেই।
সচলে স্বাগতম।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সবাইকে ধন্যবাদ ! সচলের নিয়মিত রিডার তো আমি ছিলামই তবে লেখালেখিটা ফেসবুকেই করি ! আশা করি এখন থেকে সচলেও লিখব নিয়মিত !
আপনার লেখাটা পড়ে অসম্ভব ভালো লাগল। খুব ভেতরে ছুঁয়ে গেল। আপনার বাবাসহ সকল পুলিশ অফিসারকে শ্রদ্ধা জানাই। তাদের এই ত্যাগ, শ্রম আর আন্তরিকতার কথা ভুলব না। সাম্প্রতিক সময়ে তারা যে ঝুঁকি নিয়ে, ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন, তার জন্য কৃতজ্ঞতার শেষ নাই।
আপনি নিজেও সাবধানে থাকবেন, ভালো থাকবেন। এ লড়াইয়ে জয় আমাদেরই হবে।
জয় বাংলা।
আপনি যেন আমার হয়ে লিখছিলেন। নিজেকে, নিজের পরিবারকে, নিজের বাবাকে দেখছিলাম লেখাটায়। ছুঁয়ে গেলো। একদিন আমার স্মৃতিগুলোও শেয়ার করবো।
টুইটার
জয় বাংলা।
চোখে পানি চলে এলো! ভাল থাকুন আর নিরাপদে থাকুন আপনার। অনেক শ্রদ্ধা আপনাদের জন্য
স্যালুট সেসব যোদ্ধাদের যারা দেশের স্বাধীনতাবিরোধী জানোয়ারদের সাথে লড়ছে!
স্যালুট!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
আপনার এবং আপনার বাবার প্রতি শুভ কামনা রইলো।
আপনার কথা গুলো মর্মস্পর্শি। আপনাকেও সস্রদ্ধ সালাম।
শুভকামনা রইল।
তুহিন সরকার।
স্যালুট !
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
অন্তরের গভীর থেকে শ্রদ্ধা রইলো
একাত্তরের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইরত সকলকে স্যালুট।
আচার্য
স্যালুট!
শ্রদ্ধা রইল।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
লেখাটা ফেসবুকে পড়ে চুপ হয়ে বসেছিলাম বহুক্ষণ। কর্মসূত্রে পুলিশবাহিনীর জীবনযাত্রা দেখার কিছুটা যা সুযোগ ঘটেছে তাতে প্রচুর ভুল ধারণা ভেঙে গেছে আমার। আজকের বাংলাদেশে এই বাহিনীর প্রতি জনতার সহমর্মিতা জাগ্রত হয়েছে এটা যেমন একটা শুভ লক্ষণ তেমনি পুলিশ বাহিনী জনতার কাছাকাছি যেতে শুরু করেছে এটাও একটা শুভ লক্ষণ।
মাঠে জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে সবচাইতে বড় যোদ্ধা এখন আমাদের পুলিশবাহিনী -- স্যালুট! একাত্তরের পরাজিত শক্তি নিপাত যাক সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে।
জয় বাংলা
লেখাটি পরে চোখে পানি চলে আসছে। পুলিশকে সবসময় আমরা ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ হিসেবে কল্পনা করি। তাদের আত্মত্যাগের কথা কখনো ভাবিনি। আপনার পিতাসহ সব সৎ পুলিশদের প্রতি রইল অন্তরের গভীর থেকে শ্রদ্ধা!
ভীষণ ভালো একটা লিখা।
আপনার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ।
খুব ভাল লাগল লেখাটা পড়ে।
ছলছল আছি। ফেসবুকে আগে পড়ি নি। এখন পড়লাম।
পুলিশদের উপযুক্ত সম্মান সেটা অর্থে হোক, সামাজিক পরিচয়দানে হোক আমরা দিতে পারি নাই। এটা পীড়িত করে। এখন আশা করি প্রতিটি বাঙালিই বুঝতে পারছে তারা কতটা বন্ধুবর। নির্বিচারে তারা জীবন দিয়ে দিচ্ছে, মহিমান্বিত কিন্তু ব্যথিত করে। যুদ্ধটা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। এইবার না হলে আর কবে হবে জানি না। এদের পবিত্রতম রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশের নবুভ্যদয় হবে, বাংলাদেশ চিরশত্রু জামাত-শিবির মুক্ত হবে। আপনার পিতা যুদ্ধজয়ী হয়ে ফিরে আসবে এই কামনা করি।
আমাদের লড়াই চলবে। লড়াইটা বহুমাত্রিক।
_____________________
Give Her Freedom!
স্যালুট। আর লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
গলার ভেতর কী যেন আঁটকে গেছে।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ !
জয় বাংলা
চোখে পানি চলে আসলো লেখাটা পড়ে।
শ্রদ্ধা।
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
স্যালুট আপনার আব্বাকে। দোয়া করি তিনি যেনো নিরাপদে থাকেন এবং যে যুদ্ধে নেমেছেন তাতে সফল হন।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
জিনাত জোয়ার্দার রিপা'র স্ট্যাটাস থেকে মন ভাল করে দেয়ার মত একটি খবরের অংশবিশেষ-
আপনার কথাগুলো পড়তে গিয়ে আমারো চোখ ভিজে উঠলো।
আমাদের পুলিশ বাহিনি, আপনার বাবা এবং আপনার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
পুলিশের ঘুষ আর দুর্নীতি তো সুবিখ্যাত । আপনারা বাবা যদি ব্যতিক্রম হয়ে থাকেন তাহলে ভাল।
কিন্তু এ কথা বলতে কোন বাধা নেই যে, শতকরা ৯০ জন পুলিশই অসৎ। কোন পেশার বেশিরভাগ মানুষ যখন অসৎ হয় তখন ঐ পেশার সবাইকেই দুর্নামের ভাগিদার হতে হয়। তাই সার্বিক ভাবে পুলিশ বাহিনীকে শ্রদ্ধা জানানোর যুক্তি দেখছি না। কারন পুলিশ অফিসারদের সন্তানরা যে গাড়িতে চড়ে সেটা কেনা হয় রেপ কেসের আসামীদের কাছ থেকে নেয়া ঘুষের টাকায়। পুলিশ অফিসারদের সন্তানরা দুপুর বেলা বিরিয়ানী খায় নিরীহ মানুষকে জিম্মি করে আদায় করা টাকায়। মার্ডার কেসের আসামীকে ছেড়ে দিয়ে এরা যে টাকা পায় তাই দিয়ে এরা বউয়ের জন্য শাড়ি গয়না কেনে। সেই পুলিশ বাহিনীকে স্যালুট করতে হবে ? আমি তা মনে করি না।
পুলিশ বাহিনীর দুর্নীতি আর অপরাধ নতুন করে প্রমাণ করার কিছু নেই । খবরের কাগজের পাতায় পাতায় সেসব ছড়ানো আছে। সুতরাং সার্বিকভাবে পুলিশ বাহিনীকে মহিমান্বিত করার কিছু নেই (তবে আমি আগেই উল্লেখ করেছি যে দুই একজন ব্যতিক্রমের কথা আলাদা)। আজকে পুলিশকে স্যালুট করলে তার সব দুর্নীতি আর অপকর্মকে সমর্থন জানানো হবে।
একটা কৌতুক মনে পড়ল - একবার পত্রিকায় খবর ছাপা হল "সংঘর্ষে তিন জন মানুষ এবং দুই জন পুলিশ মারা গেছে" ( অর্থাৎ ঐ দুজন পুলিশ মানুষ নয়, হা হা হা)। এই হচ্ছে আমাদের পুলিশ ।
আপনার বাবাকে একজন সৎ মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। পুলিশ বাহিনীকে শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব নয়।
খুব জানতে ইচ্ছে করছে যে, এ তথ্যটি আপনি কোথায় পেলেন? পুলিশ বিভাগে সৎ/ অসৎ নিয়ে কি সর্বজনগ্রাহ্য কোন জরিপ হয়েছিল?
আপনাকে আমার অভিজ্ঞতা থেকেই কিছু বলি ! আজ আপনার আমার ছেলে খুন করে ধরা পড়লে আমরা ঘুষ নিয়ে যাই পুলিশের কাছে ! কোন সৎ অফিসার ঘুষ নিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে গালাগাল করি "ব্যাটা সততা ফলায় !" তারপর পরিচিত মন্ত্রী টাইপ কেউ থাকলে টার পোস্টিং বান্দরবানে করাই ! তারপরও নীচ মানুষ আমি আপনি হই না ! হয় ঐ পুলিশ অফিসার টা ! এই নীতিগত বৈষম্য কেন ? আমরা কখনই বলবো না ৯০ ভাগ মানুষ ই খারাপ ! যদিও ৯০ ভাগ মানুষ ই অন্যায় অনৈতিক দাবি নিয়ে পুলিশের কাছে যাব ! সেই সুশীল মানুষরাই কিন্তু নিজের মেয়ে নির্যাতিত হলে ন্যায়বিচার চেয়ে মানব বন্ধন করব। কিন্তু নিজের ছেলে যখন অন্য কারো মেয়েকে নির্যাতন করবে আমরা একটা দুর্নীতি বাজ পুলিশ খুঁজবো ! কাউকে না কাউকে তো পাবই ! তখন সে হয়ে যাবে বিপদের বন্ধু ! ভাই, আমরা নিজেরা কি ভালো ? আমাদের মধ্যে কই ভাগ মানুষ ভালো ? পুলিশরা আমাদের মতই মানুষ ! তাদের ও ভালো খারাপ আছে ! আমাদের আশেপাশেই থাকে এবং জীবনের সাথে জড়িত, অনেক ভালো মন্দ ব্যাপারে তাদের জড়াতে হয়য় বলে আমরা খারাপ টা বেশী দেখতে পারি! বিজিবি বাহিনীর সাধারণ মানুষ এর সাথে ডিলিংস নেই বলে টার ভালো খারাপ টা আমরা জানিনা (উদাহরন ছিল, কথার কথা। আমি সব বাহিনিকেই শ্রদ্ধা করি!) যাই হোক, আমি কিছু মনে করিনি। এইসব কথা অনেক শুনেছি। সাধারনত উত্তর দেইনা, আপনি আমার প্রশংসা করেছেন তাই এড়িয়ে গেলাম না!
একদম সত্যি কথা। অন্যকে অসৎ ট্যাগ দিতে এক মিনিট ও লাগে না আমাদের। কিন্তু নিজেদের সততার কথা আসলে তখন বলি আরে অত সৎ হলে কি চলে ?? একটু আধটু অসৎ হতে হয়, তা না হলে যে পিছে পড়ে থাকবে, বোকা ।
অশেষ কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা
আপনি দেখি আমার মত পার্সেন্টেজ সিন্ড্রোমে আটকায় গেছেন!!
আর এইখানে বর্তমান পরিস্থিতিতে পুলিশদের আত্মত্যাগের কারণে তাদের সম্মান জানানো হচ্ছে। এই মুহূর্তে জামাত-শিবির ছাড়া আর কেউই পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত নয়। সুতরাং খুব খিয়াল কৈরা!!
_____________________
Give Her Freedom!
@Somudro Pathor: I understand that there are corrupt officers in police department.However,may I know,Sir,from where you got the statistical figure that 90 percent people of this department are dishonest? You have seen the children of police officers eating biriyani,did you ever notice what a police constable eats during his day long hartal duty,or whether he eats at all? Do you know that majority of the traffic sergents do not live above age 45 because of working in hazardous environment? Do you actually know how much salary a police constable gets and whether it is possible to meet even the basic needs with that salary?
As a taxpayer you have every right to criticize us.However,while doing it,think of our limitations too.Can you do it? No? Okay...Salute and stay safe...
Dear All
My heart is filled with gratitude and my eyes with tears after reading this articke and comments.Ours is a very tough life and we have to work under unbelievable limitations.The very fact that people of our motherland are acknowledging it made me swelled with pride and joy.Bangladesh police was with common people back in 1971,they are with you now and they will be with you in years to come:always and forever.
May Allah allow us to attain supreme sacrifice to keep you safe.
চোখে জল এল পড়ে।
লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
শ্রদ্ধা রইল।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
লিখাটা যখন প্রথম পড়ি তখন আমি ক্লাস এ বসে বোরিং লেকচার শুনতে শুনতে মোবাইল দিয়ে ফেসবুকে ঢুকেছিলাম ।তাই কমেন্ট করতে পারিনি।ভাই,আজকে প্রথম আমি ক্লাশে বসে কাঁদছিলাম ।
সকল পুলিশের প্রতি শ্রদ্ধা।
একাত্তরের মার্চের পর বাংলাদেশের ইতিহাসে পুলিশের উপর এত বড় আক্রমন আগে কখনো হয়নি। ৪২ বছর পর পাকি দোসরদের হাতে পুলিশ আক্রান্ত হলো আবার। পুলিশের প্রচুর বদনাম। পুলিশের বিরুদ্ধে আমার প্রচুর অভিযোগও ছিল। কিন্তু জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে পুলিশের উপর থেকে সকল অভিযোগ তুলে নিলাম।
পুলিশ বাহিনীকে যুদ্ধের উপযোগী করে তৈরি করা হয় না। কিন্তু তাদেরকে একটা যুদ্ধের মোকাবেলা করতে হচ্ছে, যে যুদ্ধটা চালাবার মতো যথেষ্ট ট্রেনিং আর যন্ত্রপাতি তাদের হাতে নেই। ফলে পদে পদে পুলিশকে মার খেতে হচ্ছে। এই যুদ্ধ আসলে আমাদের। আমাদের হয়ে লড়ছে পুলিশ, আমাদের হয়ে মার খাচ্ছে পুলিশ। এই পুলিশকে শ্রদ্ধা না জানিয়ে উপায় নাই।
পুলিশ কেন মার খাচ্ছে? আগেও তো দেশে রাজনৈতিক আন্দোলন হয়েছে সহিংসতা হয়েছে, তাদের শক্তি কি কম ছিল? কত বাঘা বাঘা নেতা পুলিশের হাতে পড়ে হেনস্থা হয়েছে। পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে। এখন উল্টো চিত্র কেন? কারণ পুলিশ এতকাল যাদের দমন করেছে তারা এক জাত, এখন যাদের মুখোমুখি, তারা আরেক জাত। অন্যান্য দল হরতাল আন্দোলনে মারামারি করে, ভাংচুরও করে, কিন্তু সেই কাজটা যে অপরাধ সেটা মনে মনে জানতো। কিন্তু জামাত-শিবির মনে করে দেশের যে কোন সম্পদ ধ্বংস করা, জ্বালিয়ে দেয়া আমাদের ঈমানী দায়িত্ব, জিহাদের অংশ। চরম মিথ্যাচার করেও সেই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো আমার অধিকার। সেই অধিকারে বাধা দিলে তোমাকেও জ্বালিয়ে দেয়া হবে। আজকের আক্রান্ত পুলিশ সেই ঈমানী নৈরাজ্যের শিকার।
আপনার বাবা নিরাপদে থাকুক। লেখাটা পড়ে চোখের জল আটকানো দায় হয়ে পড়েছিল।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
অথচ ওরা আমাদের পুলিশ ভাইদের নামেও অপবাদ রটাচ্ছে, পুলিশরাও নাকি নাস্তিক হয়ে গেছে।
আমরাও গর্ব করে বলছি, এমন পুলিশ পেয়ে এই জাতি ধন্য, যারা জীবনের মায়া তুচ্ছ করে দেশের প্রতি তাদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে যাচ্ছে।
বলতে দ্বিধা নেই, পুলিশের প্রতি অনেকের ধারণাই খুব বেশী ইতিবাচক ছিল না। আমরা চিরাচরিত সমালোচনার চোখ দিয়ে দেখতেই অভ্যস্ত ছিলাম পুলিশকে। তারা চাঁদাবাজি করে, তারা অদক্ষ ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এত স্বল্প আয় এবং অপ্রতুল ফোর্স নিয়ে তারা যেটুকু ঠিক রেখেছে দেশের আইন-শৃঙ্খলা, তাও কি খুব কম? তাদের যে কত বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়, তা তো আজ টিভি খুললেই দেখতে পাই আমরা। কয়েকশ লোককে মোকাবেলা করতে হচ্ছে হয়ত গোটা বিশেক পুলিশ সদস্যকে। সংখ্যার ব্যবধানটা চিন্তা করুন! বিশ্বের আর কোন দেশে এই ব্যবধানের নজির মিলবে কি? আমার কাছে তথ্য নেই, তবে আমার বিশ্বাস জনসংখ্যানুপাতে পুলিশের সংখ্যা এ দেশের মত এত কম নেই আর কোন দেশে।
পুলিশ
দিয়েছ ত্যাগের আর সাহসের পরিচয়,
বাংলাদেশ পুলিশ, শুধু শ্রদ্ধা জানাই হে দুর্জয় ।
যখনি পশুরা লড়েছে মারমুখী হয়ে,
তখনি পুলিশ দাড়িয়েছে দেয়াল হয়ে ।
এখন শান্তি চাই প্রতিটি মনের মুকুরে,
শান্তি তবেই আসবে সমস্ত দেশ জুড়ে ।
হাঙ্গামার পথ বেয়ে শান্তি পাবে না খুঁজে,
শান্তি আছে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব-মুগ্ধ মন মাঝে ।
We cannot repay you Bangladesh police,
we only respect you for keeping peace.
And as the people are violent against each other,
you are there standing and guarding as barrier.
If we want peace in each of our life,
we should seek it in everyone's life.
For our peace is not in the cross road of horror,
it is a beautiful picture of others in everyone's mirror.
ধন্যবাদ আপনাকে !
সিয়াম, আপনার পুরো পরিবারটির প্রতি শ্রদ্ধা। এমন পিতা-মাতা-সন্তানের আত্মত্যাগ যে দেশে আছে, সে-দেশে ঘাতকের পরাজয় অনিবার্য।
আপনি ও আপনার পিতা নিরাপদে থাকুন।
পুলিশ ভাইদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে গেলাম।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ! বিলম্বে হলেও উত্তর দিতে পেরে ভাল লাগছে !
পড়ে ভাল লাগল। কিছু মানুষের দুর্নীতির জন্য একটি পেশার সব মানুষকে কটাক্ষ করা কতটা অবিবেচকের কাজ এই লেখাটা পড়লেই বোঝা যায়।
আপনার বাবার জন্য রইল অকৃত্রিম শ্রদ্ধা, আপনি ভাগ্যবান এমন আকজন পিতার সন্তান হতে পেরে।
আপনার লেখাটা অন্তর ছুঁয়ে গেল। আপনার বাবারা, আমাদের সব পুলিশ ভাইরা, ভাল থাকুন।
অসাধারণ একটি লেখা। অনেকেই দেখলাম আগে ফেসবুক এ পড়েছে, কিন্তু আমি আজকেই প্রথম পড়লাম। লেখকে প্রথমেই অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর করে নিজের অনুভূতিগুলোকে প্রকাশ করার জন্য।
পুলিশ নিয়ে আমিও কিছু বলতে চাই – ছোট বেলা থেকে কেন যেন আমার মনে হয় আমাদের মানে বাঙ্গালীদের মনের ভিতরে পুলিশ এই পেশাটার ব্যাপারে কিছু ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করা হয়। আপনি বিনোদনের সব থেকে বড় মাধ্যম, চলচ্চিত্র দেখেন, যেই ছবিতে নায়ক পুলিশ না সেখানে হয় পুলিশ ভিলেন - ঘুষ খায়, দুর্নীতি করে, অপরাধী পিতা (আমি গড ফাদার এর বদলে এই শব্দটাই বেশি ব্যবহার করি) দের সাথে মিলেমিশে দেশ ও সমাজের ক্ষতি করে; অথবা পুলিশ কোন কাজ করে না, লাস্ট মুহূর্তে এসে নায়কের হাতে মার খাওয়া “দুষ্ট লোকদের” ধরে নিয়ে যাই। রঙ্গিন পর্দা থেকে বাস্তব জীবনে আসেন, দৈনিক পত্রিকাগুলোর মধ্যে পুলিশের বীরত্বের খবর শেষ কবে পড়েছেন মনে আছে? (দেশে প্রথম বারের মতন “সাহসী পুরষ্কার” দেয়া হয়েছে কদিন আগে, ওখানে আয়োজকদের অসংখ্য ধন্যবাদ কিছু বীর পুলিশ অফিসারদের জীবনী তুলে ধরার জন্য)। এই রকম পরিস্থিতিতে মানুষের মনে ভুল ধারণা জন্ম নেয়াটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু আপনি যদি ’৭১ র ইতিহাস পড়েন, আপনি যদি একটু কষ্ট করে পুলিশদের জীবন যাপন পরখ করে দেখেন, তাহলে আমার বিশ্বাস আপনার ধারণা পাল্টে যাবে। এক গু আজম যেমন ১৬ কোটি বাঙ্গালীর প্রতিরুপস্বরুপ নয় তেমনি দুর্নীতি পরায়ণ অফিসারগুলো পুরো পুলিশ বাহিনীর মুখপাত্র নয়। ২০১৩ তে যেভাবে ধৈর্যর সাথে এই জামায়েত শিবির কে মোকাবেলা বেলা করছে, তা সত্যি অনেক প্রশংসনীয়। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু জামায়েত যেই পরিস্থিতি তৈরি করেছে, তাতে নিজের জান বাঁচানোর জন্য পুলিশের আর কিছু করার ছিল না – অন্তত আমি তাই বিশ্বাস করি।
ধন্যবাদ এতক্ষণ ধরে ধৈর্য ধরে আমার কমেন্ট পড়ার জন্য।
বাঙ্গালিয়ানা
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ ফাল্গুন ১৪১৯
আমার বাবাও একজন পুলিশ- ছিলেন। একাত্তরে যুদ্ধ করেছেন এই জানোয়ারদের বিরুদ্ধে, ৪২ বছর পরে সেই ব্যাটনটা হাতে নিয়েছেন তাঁর উত্তরসুরীরা। বছরকয়েক আগে গভীর হতাশার মাঝে সাঙ্গ হয়েছে তার ইহজীবন, তার দায় মেটাতে আপনার মত তাঁর ছেলেকেও আবার নতুন করে যুদ্ধে নামতে হয়েছে একই জানোয়ারদের বিরুদ্ধে।
স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে আঘাতটা কিন্তু এসেছিলো এই পুলিশবাহিনীর উপরেই...
আপনার পিতা সহ সব সৎ পুলিশ সদস্যের জন্যে রইলো শ্রদ্ধা
আজকের দিনে দ্বিতীয়বার কাঁদলাম । আপনার বাবা’র প্রতি শ্রদ্ধা রইলো।
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
শ্রদ্ধা এবং শুভকামনা রইলো। আমার মামা একজন পুলিশ অফিসার। আমার জীবনে তার influence অনেক। পুলিশ এ জয়েন করার পর থেকে তার নিজের পরিবারেই এক অতিথি, আমার কথা বাদই দিলাম। নিরাপদে থাকুন। Take a bow ...
চেনা পোশাকের মানুষগুলোর যে আরো আরো পোশাক থাকে সেটা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
হয়ত পেশাগত দায় মেটাতে 'পুলিশ'রা 'পুলিশ' হয়েই থাকেন, তবে সাধারণ মানুষের সেটা বোঝাটা, মনে রাখাটা জরুরি। আপনার লেখাটা সে মনে করিয়ে দেয়ার কাজটা সফলভাবে করেছে।
লিখুন নিয়মিত, সচল থাকুন।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আপনার বাবার সহ সকল পুলিশ বাহিনীকে স্যালুট। ৭১ এও হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধটা কিন্তু পুলিশ বাহিনীই করেছিল। এবার ২০১৩ তেও জামাতের বিরুদ্ধে তারা মোকাবিলা করছে। আমাদের পুলিশ বাহিনীকে অনেক ক্ষেত্রেই তার যোগ্য সম্মান টা দেয়া হয় না। সে সম্মান টা পেলে হয়ত সম্মান টা ধরে রাখতে তারা আরও তৎপর হত।
আমার ছোট চাচা পুলিশ অফিসার। আপনার বলা কথাগুলা অনেকাংশেই মিলে গেছে। ভাল থাকবেন। লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ সবাইকে !
এই লেখাটায় মন্তব্য করা সম্ভব না।
চোখটা ভিজে এলো, অনেকক্ষন কথাও বলতে পারবো না... কণ্ঠটা ভারি হয়ে গেছে।
পুলিশ বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা। আপনার বাবাকে স্যালুট। আপনাকে ধন্যবাদ
জয় বাংলা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মাশা আল্লাহ খুব ভাল লাগ্ল। চোখে পানি এশে গেল কারন আমার শৈশব এর অনেক সৃতি মনে পড়ে গেল। মনে হচ্ছিলো যেন আমারি ছোটবেলার কাহিনী কেউ লিখে দিয়েছে।তাই আর সেসব ঘটনা আর লিখলাম না। সুধু একটু যোগ করতে চাই যে এই দুনিয়াতে প্রত্তেক টা চাকুরী তে মানুষের সপ্তাহে এক্তা দিন ছুটি থাকে, না হলে হয়তো ২ সপ্তাহে একদিন, না হলে বসরে একদিন ছুটি থাকে। কিন্তু আমার বাবা কে দেখি নাই কোনোদিন ছুটি কাটাতে ১ টি ঘণ্টার জন্য ও। রাত নাই দিন নাই সুধু একটার পর একটা duty, অপারেশান। সব unsafe জায়গায় বাবাদের যেতে হবে যখন তখন। আম্মার সাথে সাথে আমিও মনে মনে শুয়ে শুয়ে সুধু দুয়া করতাম প্রতিদিন যেন বাবা সুস্থভাবে বাসায় ফেরে। আমার পড়াশোনা ভাল স্কুল এ যেন হয় তাই পঞ্চম শ্রেণীতে উঠার সাথে সাথেই বাবা কে ছেড়ে থাকতে হয়েছে ঢাকায়। বাবা আসতো বাসায় মাঝে মাঝে রাত দুপুরে আবার ভোর হওয়ার আগেই ফেরত যেত। সেই রাত্রে আমাদের বাসায় ২ বোনের আনন্দ দেখে কে। আমার বাবা মেডিকেল কলেজ এর ছাত্র ছিল কিন্ত পুলিশ হয়ে দেশের সেবা করার খুব বেশিই ইচ্ছা ছিল তাই ডাক্তারি পেশা হিসেবে না নিয়ে নিলেন সেই জনগনের সেবা করার পেশা যারা কোনোদিন বাবা কে ভাল চোখে দেখেও নাই।
দেশে ছিলাম তখন বাবা কাছে থাকতে পারে নি। আর এখন আমার retired বাবা সবার কাছে কিন্তু আমি থাকি দেশের বাইরে। দেশে গেলেও হয়তো হাজার টা দায়িত্তে জড়িয়ে থাকতে থাকতে ফিরে আসার সময় হয়ে যায়। এই সুন্দর লেখাটি আমি ফেসবুক এ শেয়ার দিয়েছিলাম। তারপর আমার বাবা যা কমেন্ট করলেন সেটা লেখক ভাইয়ের এবং সবার সাথে একটু শেয়ার করতে চাই।
" চাকরি করা কালিন অনেক সময় মনে হতো ধিরাজ ভট্ট এর মত আমি যদি লিখতে পারতাম, তবে দেশের মানুষ অনেক অজানা তথ্য জানতে পারত । মানুষ শুধু পুলিশ এর দিরিসস্মান (visual) কাজ গুলিই দেখে। এর বাইরে পুলিশ এর জিবনের অনেক কিছুই অজানা থেকে জাএ। ৩০ বতসর চাকরি জিবনে একবার ঈদের ছুটি পেয়েছি মায়ের সঙ্গে ঈদ করার। এর মদ্ধে ১০ বতসর রাত্রে ঘুমাই নাই । ৩৬৫ দিন রোদ , বৃষ্টি, তুফান, শীতে কাজ করেছি । ছুটি কি তা পুলিশ জানেই না । আমার মনে আছে একাধিক ঈদের নামাজ ছেড়ে দাঙ্গা দমনের জন্মে সুটেছি । সন্তানেরা বাবার আদর ছাড়া মানুস হয়েছে । ছোট খাট জোর ব্যাধি পুলিশ সব সময়ি বলে না । কারন এটা রিতি হএ গেছে । অফিছাররা মানেনা । পুলিশ এর দরজা বন্ধ হয়না।
অনেক দিন দুপুরের আযান শুনে সেন্ত্রিকে জিজ্ঞাস করেছি , আজ আগে আযান দিল কেন । স্যার, আজ জুম্মা বার । জীবনে বহু রাতে পাখীর আওয়াজে বুঝেছি ভোর হয়েছে ।
বীয়ের প্রথম দিকে, বউ মস্লা বেটে বসে আছে বাজার আসবে, ১২ টার সময় খবর দিছে বাজার এর কি হল ? এক ভীষণ তুফান আর জোলূচ্ছাশ এর মধ্যে মানুষ যখন নদী থেকে তীরের দিকে
ছুটেছে তক্ষণ পুলিশ চরে আটকে পড়া লঞ্চের মানুষ দের কে উদ্ধার করার জন্য নিজের জানের মায়া ছেঁড়ে ছুটেছে । এসে দেখে তাঁদের ভাসমান আবাস (FLOATING OUTPOST) টা
তুফানে ভাসিয়ে কোথায়ে যেন নিয়া গেছে । বহু বার ডাকাত এর সঙ্গে encounter fire হয়েছে । যে কোনও এক্টা সময় মরে জেতে পারতাম। আমার সঙ্গে ইউএন মিশন এ কসবতে সার্জেন্ট আহাদ ছিল ।
ছিনতাই কারির হাতে নিহত হয় অকালে। পুলিস কে আপণী যাই বলুন ACCOUNTABILITY বিষয়ে তারা জীবন পণ । ASSIGNED DUTY তারা জীবোণ দিয়ে কোরে জাচ্ছে।
বিষটি স্পর্শকাতর । কথা বলার ইচ্ছা আমার একেবারেই ছিলনা । কিন্তু OPTION আসায়ে কিছু বলতে হল । জাতিগত ভাবে আমরা কেনো যেনো (MY OWN OPINION) অসহিষ্ণু ! নিজের দোষ কক্ষনো
খুঁজি নাই । SELF CITICISM খুবই অপসন্দ করি । নিজের দোষ ত্রুটি ধরিয়ে দিলে , শুধরানোর বদলে , রাগ করী এবং তাকে শত্রু ভাবা আরম্ভ করি । কম শিক্ষা , অশিক্ষা , এবং শিক্ষিত রাও হীণ মণ্ণতার
কারণে , হৃদয় প্রশস্ত করে সত্য কে আলিঙ্গন করতে লজ্জা পাই । তাতে SELF RESPECT, সম্মান কমে যাবে ভাবি । যে যত টুকু , যত কিঞ্চিৎ শিক্ষা দীক্ষা নিতে পেরেছি , তাঁতেই SATISFIED হয়ে ,
নিজ ২ অবস্থানে অনড় হয়ে , নিজেকে বিদ্বান ভাবতে থাকি । কোন আলোচনায়ে কিছু বলা চাইই । ঐ বিষয়ে গেয়াণ থাকুক আর নাই থাকুক ।
যে কারনে এত লেখা , পুলিশ । পুলিশ এর পক্ষে সাফাই গাইবনা । তাদের শত দোষ থাকতে পারে । আমার কথা হল, স্বাধীনতার পর দীর্ঘ দিনে , কেন আমরা পুলিশ কে জনগনের বন্ধু বানাতে
পারলাম না । কেন পুলিশ এর বদনাম ঘুচাতে পারলনা । কেন DEFINITIVE POLICE বানাতে পারলাম না ? আমেরিকাতে বিপদের সময় এক্তা বাচ্চা ও পুলিসকে ডাকে । মুখে বলে পুলিশ REFORM করবে,
কিন্তু করে না । অসৎ পিতা কী ভাবে সন্তান কে, সৎ হওয়ার উপদেশ দিবে !
আর যারা পুলিশ এর দুর্নীতি নিয়া কথা বলেন , তাদের জন্য সহজ সমীকরণ -ঢাকার অভিজাত এলাকাএ কী ভাবে সরকারী আমলা এবং POLITICAL LEADERS বিলাস বহুল বাড়ী এবং গাড়ীর মালিক
হন ! তাদের বিলাসী জীবন রকফেলার কেও হার মানায়ে দেয় ।
সমালোচক দের বলি , কী কঠিন ADVERSE SITUATION এ পুলিশ কাজ করে । UNHYGIENIC BARRACK, চাল দিয়া পানি পোড়ে, গাঁদা গাঁদি করে কোন মতে দিন পার করে ।
রান্না ঘরের SITUATION একই । ডিউটির কোন টাইম টেবিল নাই । TA BILL এর নিশ্চয়তা নাই । লাশ বহন এঁর পর্যাপ্ত বাজেট নাই । লাশ কাটতে ডোম কে টাকা দিতে হয় ।
হাওড়ে একবার ডীঊটী গেলে ১০০০/- ট্রলার ভাড়া দিতে হোয় । DECOMPOSED DEAD BODY নিজ হাতে নাড়তে হোয় । FAMILY QUARTER নাই অফিসার দের ছাড়া।
DUTY করা কালীণ এত লোক অন্য কোন DEPARTMENT হতাহত হয়ে যাচ্ছে বলে আমার জানা নাই । আরও ১০০০ ও PROBLEM নিয়া পুলিশ DAILY কাজ কোরে যাচ্ছে ।
পুলিশ একটা HIGHLY DISCIPLINED , CONSTITUTIONAL ORGANIZATION. দেশের প্রচলিত আইন ছাড়াও নিজের জন্মে PRB & POLICE ACT আছে । এর মধ্যে পুলিশ কে চলতে হোয় ।
এতে সমস্ত বিষয় TO BE DONE/NOT TO BE DONE, SPECIFICALLY লিখা আছে । ইচ্ছা করলেই যা খুশী , করা যায় না । তাই আমি বলি CONSTRUCTIVE CRICISE করুন এবং যেনে করুন ।
THANKS. IF ANYBODY GETS HURT, APOLOGIZE."
ভাই আপনি অনেক জানেন এসব ব্যাপারে, আপনি অসাধারনভাবে চিত্রটি তুলে ধরেছেন, যা শুধু আমরা পুলিশ পরিবারের মানষরা জানি। অনেক ধন্যবাদ তথ্যমূলক মন্তব্যের জন্য !
ঘুরে ফিরে কয়েকবার পড়া হয়েছে লেখাটা। মন্তব্য করতে এসে বুঝিনা কি বলব। নীরব শ্রদ্ধা রইলো
ডাকঘর | ছবিঘর
আপনাদের ভালোবাসাই সাধারন বিশেষত্বহীন লেখাটিকে অসাধারণ করেছে ! অনেক ধন্যবাদ !
কী সহজ করে একটা ছুঁয়ে যাওয়া লেখা লিখলেন।
আপনার বাবাকে অনেক শ্রদ্ধা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
কেঁদে ফেললাম।
ভালো থাকবেন, সাবধানে থাকবেন। বাবাকে বলবেন তাঁর মত সাহসী পিতার সন্তানরা যতদিন বেঁচে আছে ততদিন এই দেশ বাংলাদেশই থাকবে, বাংলাস্থান হবেনা।
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ !
ভাই আমার বাবাও পুলিশে আছেন। আপনার বাবাকে জানাই সশ্রদ্ধ সালাম। -- অন্ধকার ছায়াপথ
নতুন মন্তব্য করুন