স্বর্গের বকুল তলায় বিশাল শোরগোল। সবাই সেদিকে ছুটে যাচ্ছে ঘটনা জানার জন্য। সবার মনেই প্রশ্ন স্বর্গের এই চমৎকার শান্তির পরিবেশে এমন চিৎকার চেঁচামেচি তো কখনো হয়নি। কাহিনী কি? এই ছুটে চলা মানুষের মাঝে মহাবীর আলেকজান্ডার সাহেবও আছেন। রাজকীয় ভাব নিয়ে তিনি বকুল তলায় গিয়ে পৌছালেন। তাকে দেখে চেঁচামেচি কিছুটা কমে গেল। হঠাৎ মাঝ বয়সী একজন বলে উঠলো, 'এই তো আলেকজান্ডার সাহেব এসেছেন। এই ঝগড়ার মিমাংসা উনিই করে দিতে পারবেন'
ভ্রু কুঁচকে আলেকজান্ডার জিজ্ঞেস করলো, ও হে আগে কাহিনী তো খুলে বল।
ভীড়ের ঠিক মাঝখান থেকে হাসিমুখে একজন বলে উঠলো,'ওস্তাদ সমস্যা তেমন জটিল কিছু না। আমি আর কলম্বাস একটা বিষয়ে একমত না হতে পেরে একটু চিল্লাপাল্লা করে ফেলেছি আর কি'
আলেকজান্ডার দেখলো কন্ঠটা খুব পরিচিত। একটু ভালো ভাবে তাকিয়ে বুঝলো কথা বলছে তার প্রিয় শিষ্য সেলুকাস। গলা চড়িয়ে সে জিজ্ঞেস করলো, ' ও হে সেলুকাস তা তর্কের বিষয়টা একটু খুলে বল'
সেলুকাসঃ ওস্তাদ, আমি কলম্বাসকে এখানে বসে থাকতে দেখে গল্প করছিলাম। একসময় জানতে চাইলাম যে কলম্বাস ভাই, আপনি তো অনেক দেশ ঘুরেছেন। সবথেকে বিচিত্র দেশ হিসাবে আপনার কোনটা মনে হয়েছে? তো তখন কলম্বাস উত্তর দিলো যে আমেরিকা আবিষ্কারের সময় সেখানে একদল জংলী দেখেছিলো সে যারা নিজের মাংস নিজেরা খায়।
আলেকজান্ডারঃ ও মা সে কি কথা?? তো তুমি কি বললে?
সেলুকাসঃ আমি কি এই কথা শুনে চুপ থাকতে পারি? হাজার হোক আমি আপনার শিষ্য। আমি জোর গলায় বললাম, ভাই থামেন। আমার বস আলেকজান্ডার ভারতের উত্তর সীমানা দখল করতে এসে আমাকে বলেছিল, সত্যি সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ। তো ঐ দেশের চেয়ে বিচিত্র আর কোন দেশ হতে পারেনা। কিন্তু কলম্বাস ভাই এই কথা মানবে না।
আলেকজান্ডার বেশ চিন্তিতমুখ করে কিছুক্ষন ভাবলো।
সমবেত জনতা তখন উৎসুক। কলম্বাসের পক্ষে ভাস্কো দা গামা, ইবনে বতুতা, ইউহেন সাং সবাই একজোট। তারা পরিব্রাজক ও নাবিক জোট গঠন করে বসে আছে। ওদিকে সেলুকাসও বসে নেই। সে একিলিস, হেক্টর, ওডিসিয়াস, মেনেলাস কে একসাথে করে বীর যোদ্ধা ভাই ভাই গ্রুপ গঠন করেছে। তবে হেক্টর আর একিলিসের মধ্যে ঠিক বনিবনা হচ্ছে না।
সকলে অস্থির। কী এত ভাবছে আলেকজান্ডার? অস্থিরতা যখন প্রকাশিত হয়ে যাবে যাবে অবস্থা তখন আলেকজান্ডার মুখ খুললো।
আলেকজান্ডারঃ আরে ধুর! আপনেরা মিয়া এক্কেবারেই আধুনিক না। আপনারা দেখি ইতিমধ্যে দুই দলে ভাগ হয়ে মারামারিই শুরু করে দিতে যাচ্ছিলেন। তবে আপনারা কেউই তর্কে জয়লাভ করেননি। এই মহাবিশ্বজগতের সবথেকে বিচিত্র দেশের নাম হল বাংলাদেশ।
সকলেঃ হায় হায় এটা কেমন কথা? ক্যামনে কি? খুইলা বলেন।
আলেকজান্ডারঃ সত্যি সেলুকাস, বাংলাদেশ বড়ই বিচিত্র দেশ। আজ তাদের দেশে ম খা আলমগীর আর মাহফুজুর রহমানকে মানবাধিকার পুরস্কার দেয়া হয়েছে। কি বিচিত্র। সেলুকাস, কি বিচিত্র।
বিষন্ন মনে আলেকজান্ডার ফেরার পথ ধরলেন।
আলোকিত-মন
মন্তব্য
সেলুকাস! কি বিচিত্র এই দেশ
আচার্য
বাংলা নিউজ টুয়েন্টিফোর ডট কমে নীচের বিচিত্র সংবাদ দু'টি চোখে পড়ার পর মানবাধিকার পুরস্কার নিয়ে আপাততঃ মাথা ঘামাচ্ছেন না সেলুকাস!
১। রিমান্ডও নামঞ্জুর গ্রেপ্তারের একদিনের মাথায় জামিন পেলেন ১৩ শিবির নেতা
২। সাতক্ষীরায় ৬ আসামিকে জামিন, দু’ঘণ্টা পর বাতিল
ইট ইজ নাথিং বাট দ্যা জোক অব দ্যা ইয়ার ২০১৩ !!!
নতুন মন্তব্য করুন