ইউসুফ মিয়া গাড়ি নিয়ে বেরুনের সঙ্গে সঙ্গেই একটা ভাল খ্যাপ পেয়ে গেলো। ছেলেটার মাথা দিয়ে গলগল করে রক্ত পড়ছে। মেডিক্যাল যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভাড়াটাও বেশি পাওয়া যাবে। আবার মেডিক্যাল থেকে ভাল ফিরতি খ্যাপও পাওয়া যায়। মেডিক্যালের ভাড়া মারতে তার সবচেয়ে ভাল লাগে। অসুস্থ, দূর্বল, মৃতপ্রায় লোকগুলো বেশি ভাড়া দিতে কৃপণতা করে না।
এক্ষেত্রেও সে যথাবিহিত রাজ্যের উদাসিনতা কণ্ঠে ঢেলে দিয়ে বললো, মিটার নষ্ট।
- ওহ, যন্ত্রণা, তাড়াতাড়ি বলুন, কতো নেবেন?
- দিয়েন আপনের বিবেচনা মতো।
বাচ্চা ছেলেটা ক্রমাগত কাঁদছে। লোকটা বাধ্য হয়েই আর কথা না-বাড়িয়েই ইউসুফের সিএনজিতে উঠলো। নানা শর্টকাট পেরিয়ে ইমার্জেন্সির সামনে এসে সে থামল। লোকটি একশ টাকার একটি নোট বাড়িয়ে দিলো।
- এইটা কি দিলেন?
- একশ টাকা।
- দুইশ দেন।
কেন, দুইশ দিবো কেন? আপনি দেখছেন আমার সাথে রোগী আছে, খামাখা সময় নষ্ট করছেন Ñ বলে লোকটা আরও পঞ্চাশ টাকা দেয়।
- আরও পাঁচজনরে লাগলে জিগান, দুইশ’র নিচে পুশায় না।
- মিটার ঠিক রাখলেই পারেন।
- মিটারে পুশায় না।
অতএব বাধ্য হয়েই লোকটি দুইশ টাকা দিলো।
ইউসুফ মনে মনে লোকটিকে গালি দেয়, হালা ছ্যাচড়া, পুলার মাথা দিয়া রক্ত পরতেছে আর সে ভাড়া নিয়া খ্যাচম্যাচ করে।
প্রথম খ্যাপটায় একটু বিরক্ত হলো সে। খ্যাচখ্যাচানি তার পছন্দ নয়। এই জন্য যে কোন পেসেঞ্জার সে নিতে চায় না। একটা সিগারেটে আয়েশ করে টান দিয়ে বিরক্তিটা কাটাতে চায় ইউসুফ।
- যাবেন?
- না।
- কেন যাবেন না?
ইউসুফের মেজাজ খিচড়ে যায়। আরে শালা! সকাল সকালই একচা ছেচড়া খ্যাপ মারছি, অহন একটু ধুমা খাইয়া মাথা ঠাণ্ডা করতাছি, তুমি আইছো ডিস্টাব করতে! তুমার যে চিমসা চেহারা নির্ঘাত ভাড়া লইয়া ঘাপলা করবা... এইসবই মনে মনে বলে, মুখে শুধু বলে, না ভাই, যামু না, সমেস্যা আছে।
পর পর তিনচাইরটা খ্যাপ ফিরিয়ে দেয় সে। এবার একটি মধ্য বয়স্ক লোক এলো, সাদা লুঙ্গি তার ধুসর হয়ে গেছে, শার্টের রঙটি কী ছিলো বলা মুশকিল, লোকটির কোলে সাদা কাফনে মোড়া একটি ছোট্ট শিশু। জাগতিক সকল চঞ্চলতা আর উল্লাসকে হত্যা করে শিশুটি এখন স্রেফ লাশ। ইউসুফের গলার নিচে একটু মায়া দলা পাকায়। সে নিজেই জিজ্ঞেস করে, কই যাইবেন?
লাশ যার কোলে সে বোধহয় কিছু শুনছে না। তার পাশের লোকটি তার গায়ে হাত রাখে।
-দুলাভাই, সিএনজিতে যাইবেন?
- হ্যাঁ!
লোকটি কেঁপে ওঠে। পাশের লোকটি কথা বলে ইউসুফের সাথে।
- যামু তো মেলা দুরাফি। অতো দুরে কী আপনে যাইবাইন?
- কই যাবেন?
- মমিসিং। মমিসিং পার অইয়া ফুলপুর, তারবাদে বাইতকান্দি। যাইবাইন মিয়া ভাই?
- যামু।
লাশ বহনকারী লোকটি বয়স তিরিশ অথবা চল্লিশ। হয়তো তিরিশই, কেননা তার মুখে খোচা খোচা দাঁড়িগুলোর একটাও পাকেনি। ঘুমহীন চোখ আর ময়লা কাপড়ে হাসপাতাল বাসের ক্লান্তি আর বেদনা। হয়তো একটা সাবান ডলা গোসলের পর এক থালা ভাত খেলেই তার আসল তরুণ চেহারাটি বেরিয়ে আসবে। কিন্তু ক্লান্তি আর বেদনা ভার নিয়ে ঘরে ফিরলেও তাকে কেউ গামছা এগিয়ে দেবে না, ভাতের মাড় গেলে দেবে না। আয়োজন করে সবাই কাঁদতে বসবে। সেই সব কান্না লোকটির বয়স আরও বাড়িয়ে দেবে। অগোছালো তিরিশ কি চল্লিশের লোকটি হাতের লাশটিকে বুকের আরও কাছে টেনে নেয়। অস্পষ্টে কফ জড়ানো গলায় বলে, আইনুল কতো লইবো জিগা।
আইনুল যে এতোক্ষন সিএনজিঅলার সাথে কথা বলছিলো, সে বেশ দৃঢ় স্বরেই বলে, দুলাভাই, টেহার চিন্তা তুমার করুন লাগতো না। টেহা অহনও কিছু আছে। শেষের ওষুধটা তো কিনন লাগলোই না...
শেষের কথাটা বলা ঠিক হয়নি। আইনুল দেখে, তার দুলাভাইয়ের চোখ আবারও ভিজে হয়ে উঠছে। এদিকে টাকার চিন্তা নাই শুনে ইউসুফ মনে মনে আশস্ত হয়।
- কতো নিবাইন মিয়া ভাই?
- দিয়েন, বিবেচনা কইরা।
- না, না, ফুরায়া লন। দুরাফির রাস্তা, বাদের ঝামেলা ভালা না।
- এইটা কী কন ভাই? সঙ্গে বাচ্চার লাশ আছে, শিশুরা অইলো গিয়া ফেরেশতা। কয়দিনের দুনিয়া, টেকা লইয়া ঝামেলা করুম ক্যা?
এইসব আধা-দার্শনিক কথায় ইউসুফের মনে একটা শান্তি আসে। এ ধরণের নসিহতে ভাড়া বাড়ানোর পরিবেশটাও বেশ জমে ওঠে।
- আইচ্ছা, বারোশো টেকা দিয়েন।
লাশ বহনকারী ব্যক্তিটির চোখে অসহায়ত্ব ফুটে ওঠে। হয়তো সে নিতান্তই দরিদ্র, কোলে আপন জনের লাশ নিয়েও টাকার বিষয়টি ভাবতে হয়। আইনুল মিনতির স্বরেই বলে Ñ মিয়া ভাই, কিছু কমটম অয় না?
- কোলে ফেরেশতা লইয়া যাইতেছেন, আপনের কাছে আর কী ভাড়া চামু। গমমেন্ট দিছে গ্যাসের দাম বাড়ায়া, মালিকের জমাও বেশি, তারপরে মনে করেন, ফেরার পথে খালি আসতে অইবো, আপনের কাছে বাড়তি কিছু চাই নাই।
এ কথার পর আর কিছু বলার মতো মানসিক জোর তাদের থাকে না। তারা গাড়িতে ওঠে। সিএনজি স্টার্ট নেয়।
- দুলাভাই, এইবার আমার কুলে দেন।
- না, আমার বাজান আমার কুলেই থাকবো, আহারে বাপ আমার... বলেই বিশাল কালো লোকটা হু হু করে কাঁদে। তবু সে কান্নার জোড় বড় কম, বোঝা যায়, ক’দিন ধরেই এ শিশুকে আকড়ে ধরে চলছে তার অবিরাম ক্রন্দন। এখন সে ক্লান্ত। নিজের কাছে তার ক্ষুধার্ত, ক্লান্ত, ব্যাথাতুর কণ্ঠস্বরটি অচেনা ঠেকে।
ইউসুফের কষ্ট হয়। বেচারা পিতা, না জানি কতো টাকা পয়সা খরচ করেছে, তবু ছেলেটাকে বাঁচাতে পারলো না। ইউসুফ সিএনজির গতিটা আরও বাড়িয়ে দেয়। এয়াপোর্ট রোডে ওঠে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে তার সিএনজি। সে গলায় দরদ ঢেলে জিজ্ঞেস করে, হইছিলো কি?
শিশুর পিতা এ প্রশ্নে তার অতীতের জীবিত সন্তানটিকে আরও ঘনিষ্ট করে আকড়ে ধরে। আর আইনুল করুণ অসহায় হাহাকারে বলে, জানি না গো মিয়া ভাই, জানি না, আমরা মুখ্যু মানুষ কিছুই কইতাম পারি না। কেমনে যে কী অইলো, আল্লা মালুম...
তারপর আর কোন কথা নয়। লাশ আর নিরবতাকে ভর করে সিএনজিটা এগিয়ে চলে ঘরঘর করে। দূরপাল্লার যাত্রা ইউসুফের ভালই লাগে। জ্যাম নেই, সিগনাল নেই, ইচ্ছামতো ওভারটেক করা যায়, দূরের যাত্রায় সুখ আছে। বাতাসে ইউসুফের চুল ওড়ে। আজ আর কোন খ্যাপ না-মারলেও চলবে। ফেরার সময় ময়মনসিংহ থেকে শেয়ারে দু’-তিনজন যাত্রী পেলে তো ভালই আয় হবে। বেশ ফূর্তি আসে তার মনে। এক সময় সে মৃদু গুণগুণ করে। হঠাৎ উল্টো বাতাসের ঝাপটায় লাশের নাকে গোজা আতরের গন্ধ তার নাকে এসে লাগে। সে চুপ করে যায়। মৃত্যুর কাছে সবাই চুপ।
তবু জীবনে ক্ষুধা তৃষ্ণা থাকে। ময়মনসিংহের গাঙ্গীনাপাড়ে এসে গাড়ি থামে। ইউসুফ ভরপেট ভাত খায় তেলাপিয়া মাছ দিয়ে। পরপর দুটো সিগারেট টানে। আইনুল দুটা রুটি খায় এক দলা গুড় দিয়ে। লাশের বাবার মুখ দিয়ে কিছুই যায় না। আইনুলের সাথে ইউসুফও তাকে অনুরোধ করে কিছু একটা মুখে দিতে।
- মিয়া ভাই, চাইরটা কিছু মুখে দেন, জীবন তো চালাইন লাগবো।
- হ্যাঁ, ভাই, জš§মিত্যু তো সব আল্লার হাতে, তিনি যা করেন ভালর জন্যেই করেন, আপনে একটা কিছু খান।
- আহারে, দুইদিন অইছে আমার বাজান কিছু খাইতে পারে নাই। যাই মুখে দিছি উগলায়া দিছে।
ইউসুফ নিুকণ্ঠে আইনুলকে প্রশ্ন করে Ñ বয়স কতো অইছিলো?
- চাইর বচ্ছর এক মাস। পটর পটর কইরা কতো কথা কইতো! আমি নাম দিছিলাম পুটুর আলী। মামু আমার আর একটাও কথা কইবো না।
- কাইন্দেন না ভাই।
- পুটুর বাপ কী লইয়া বাঁচবো, একখানই পোলা!
ইউসুফের এখন নিজের ছেলেটির কথা মনে পড়ে। তার ছেলে রাজা’র বয়সও এমনই। এবার স্কুলে দেবে ঠিক করেছে। ছেলে তার খুব সুন্দর ছবি আঁকে। কাগজ-রঙ পেলেই বসে যায়। ক’দিন ধরেই বারবার বলছে, বাবা আমার জন্য একখান নতুন রঙ-পিন্সেলের বাক্স আইনো। আজ যে করেই হোক রঙ-পেন্সিল নিয়ে ফিরবে সে। ছেলেটা বাড়ির দেয়ালে, বাবার শার্টে যেখানেই পারে রঙ লাগায়। রাজা’র মা রাগ দেখায়, কিন্তু ইউসুফ ব্যাপারটা উপভোগই করে। সে ভাবে, এই তো বয়স ছেলেটার, দুনিয়ার সব কিছুতে রঙ মাখিয়ে দেয়ার।
এক সময় তারা ফুলপুর আসে, তারপর বাইতকান্দি। গ্রামের মুখে পৌঁছতেই আশেপাশে লোক জমে যায়। গ্রামের সবাই জানে, তাদের এক শিশু ঢাকার হাসপাতালে। তারা সবাই আশা করে, তাদের পুটুর আলী আবার ফিরে আসবে, গায়ের পথে ধূলোমাখিয়ে আবার ডাংগুলি খেলবে। কিন্তু হায়, আতর-লোবানের গন্ধের সাথে দ্রুত লয়ে আশেপাশের সব গায়ে মৃত্যু সংবাদ পৌঁছে যায়। অবধারিত মৃত্যু যে এতো আকস্মিক আর সরল পথে এসে টান দিয়ে নিয়ে যায় মায়ের বুকের সন্তান তা বুঝে ওঠার সময়ও পায় না বাইতকান্দির মানুষেরা। তাদের সামনে স্রেফ একখানা কাফনে মোড়া লাশ। পাগলিনীর মতো মা ছুটে আসে, চিৎকার করে বলে, ঢাইকা রাখছো ক্যা, আমার বাজানের মুখ খুইলা দেও, ও মরে নাই তো, এখুনি খাড়া অইবো, তোমরা ওর বান্ধন খুইলা দেও। সে হেচকা টানে কাফনের বাঁধন খুলে দিতে চায়, মৃত্যুর সব চিহ্ন পারলে দুহাতে টেনে ছিঁড়ে দিতে চায়। গায়ের আর দুয়েকজন রমণী এসে তাকে সরিয়ে নেয়।
পাশের গায়ের একজন জিজ্ঞাস করে, অইছিলোটা কি?
- কেডা জানে! বমি করছিলো দুয়েকদিন।
- বমি করলেই কি কেউ মইরা যায়!
- আল্লা জানে।
মওলানা এসে জানায়, বেশি দিরং করন যাইতো না। মুর্দা তাড়াতাড়ি দাফন দেওনই ভালা। আসরের ওয়াক্তেই জানাযার ব্যবস্থা করোন লাগবো।
জানাযায় ইউসুফও অংশগ্রহণ করে। আইনুল একফাঁকে এসে তাকে টাকা দিয়ে যায়। টাকা নিয়েই সে রওনা হয় দ্রুত গতিতে। তার মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে থাকে। চরপাড়া মেডিক্যালের সামনে এসে সে থামে, চোরের মতো কখন সন্ধ্যা নামে! খালি গাড়ি টানতে তার মন চায় না, সন্ধ্যা ক্রমশ রাত্রিতে মুখ লুকায়, তখন একজন যাত্রী পাওয়া গেলো। শাহবাগ যাবে বিষন্ন এক তরুণ, চোখে চশমা, মুখে দাড়ি, কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ। আসার চেয়ে যাওয়ার ভাড়াটা বরাবরই কম, তবু খালি যাওয়ার চেয়ে ভাল। ঘরে ফেরার তাড়ায় সে রাস্তা পিশে এগুতে থাকে দ্রুত গতিতে। শাহবাগে তরুণকে নামিয়ে দিয়েই ছেলের জন্যে এক প্যাকেট রঙ পেন্সিল কেনে ইউসুফ।
এবার সোজা বাড়ির পথে যাত্রা। নিজের গাড়ি বলেই ইউসুফ পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করে। যখন খুশি যতোক্ষন খুশি গাড়ি চালায় সে। দূর পাল্লার যাত্রা তার ভাল লাগে, মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে বাড়ি না-ফেরার। অচেনা কোন শহরের শস্তা হোটেলে রঙচঙা কোন ঠোঁট তাকে ডাকে। কিন্তু ছেলেটাই হয়েছে তার পিছু টান, নইলে কোথায় কখন চলে যেতো তার কি ঠিক থাকতো!
ঘরে ফেরার পথে সে শাহানশাহ। মহল্লার মোড় থেকেই জোরে জোরে হর্ন দিতে থাকে। রাস্তা জুড়ে পিচ্চি পোলাপান দৌড়াদৌড়ি করে। কিন্তু আজ রাস্তাটা কেমন শুনশান লাগে। একটু খটকা লাগে মনটায়। সেই খটকা আরও বাড়ে ঘরের সামনে জটলা দেখে। একটা অচেনা ভয় বুকের মধ্যে ধক করে চলকে ওঠে। মনার বাপ তাকে এগুতে দেখেই ছুটে আসে।
- আইছো, এতোক্ষণে আইছো!
- ক্যান, কী অইছে? ভিড় কিসের?
মনার বাপ হুট করে কিছু বলতে পারে না। ইউসুফের মুখের দিকে অপরাধীর মতো তাকিয়ে থাকে।
- কী অইলো কথা কও না ক্যান?
জোরে শ্বাস নিয়ে, নিজেকে প্রস্তুত করে মনার বাপ, তারপর এক নিঃশ্বাসে বলে, কতো দিনই তো কইছি, ঘরের পিছেই ঝিল, সাবধানে থাইকো। কেডা শুনবো আমার কথা! যখন টের পাইছি তহন অনেক দেরি হইয়া গেছে।
- কীসের দেরি, কী কও তুমি!
- পানিতে ডোবা মানুষ কি অতোক্ষন বাঁচে, ছোট বাচ্চা বইলা কথা।
ইউসুফের হঠাৎ জানাযার আগে দেখা পুটুর আলীর মুখটা মনে পড়ে।
- আহ হা রে.... পুটুর আলী আমার...
- কি কও, পুটুর আলী কেডা, ও রাজার বাপ, কী কও তুমি...
রঙ পেন্সিলের প্যাকেটটা দূমড়ে মুচড়ে যায় ইউসুফের হাতের তালুতে। তারপর হাত ছেঁড়ে গড়িয়ে পড়ে। আর গড়াতে থাকে। কে জানে রাজা কিংবা পুটুর আলীর লাশের পাশে গিয়ে থামবে কি না?
lekhok moom
মন্তব্য
মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
বাচ্চার বাপের এই ধরণের মৃত্যূর কাহিনী ভাল লাগে না ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
লেখাটা পড়ে মনে পড়ল: দিন চারেক আগে দেশের নামকরা একটি কার্ডিয়াক হসপিটালে সাড়ে তিন বছরের বাচ্চাটির প্রায় এগারো ঘণ্টার সার্জারি ও ডাক্তারদের প্রানান্তকর চেষ্টা শেষে, মায়ের মুখে হাসি, ছেলের অপারেশন ভালোভাবে হয়েছে।
রংপুর থেকে ঢাকায় আসা অতি দরিদ্র পরিবারটি জানে না ডাক্তারের কথার মানে কি। সকালে যখন ডাক্তার ডেকে নিয়ে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছে তখনও তাদের বিশ্বাস অটুট। আশেপাশের কয়েকদিনের পরিচিত মানুষদের জিজ্ঞেস করছে রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় – ভাই/আপা, ডাক্তার বলছে আমার ছেলের কিডনি কাজ করছে না, রক্তচাপ নাই। কিন্তু তাতে কি, আল্লাহ চাইলে আমার ছেলে ভালো হয়ে যাবে। যাবে না বলেন?
এরই মধ্যে আবার ভেতর থেকে ডাক আসে।
আহা! মায়ের কান্না! সেই অবর্ণনীয় আহাজারিতে অন্য সবার সাথে আমার চোখও ভিজে উঠে। আমি কল্পনায় আমার ছেলেটিকে বুকে জড়িয়ে রাখি, যেন সে এই শিশুটির মতো আমাকে ছেড়ে না যেতে পারে………….
এই গল্পটার ক্ষেত্রে কাহিনী নিয়ে আরো কাজ করা দরকার ছিলো মনে হয়। কারণ, যখনই রাজা'র প্রসঙ্গ আসলো তখনই গল্পের পরিণতি বোঝা যাচ্ছিলো।
শাহ্বাগগামী তরুণের প্রসঙ্গ আরোপিত মনে হয়েছে। ময়মনসিংহ থেকে যে তরুণ শাহ্বাগে আসে সে সিএনজি করে আসার কথা না, অত টাকা তার থাকার কথা না বা ব্যাপারটা নিরাপদও না। সে বাসে বা ট্রেনে ঢাকা আসার কথা। তাছাড়া মূল গল্পের সাথে শাহ্বাগের কোন সংস্রবও নেই।
ঢাকা শহরে বাচ্চা ডুবে মারা যেতে পারে এমন পুকুর কোথায়? এই ব্যাপারটাও জোর করে করা বলে লেগেছে।
moom, আপনার লেখার হাত ভালো। নিজের লেখার পেছনে আরেকটু সময় দিন, লেখা আরো ভালো হতে বাধ্য।
লেখালিখি অব্যাহত রাখুন। আর একটা বাংলা নিক নিয়ে নিন, তাহলে আমাদের সুবিধা হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
যা বলতে চেয়েছিলাম, পাণ্ডবদা বলে দিয়েছেন সবই। ...
লেখালেখি চলুক।
লেখার হাত খুব ভালো। এবার শুধু ভালো প্লটের দরকার।
লেখা বেশ ভালো।
============================
কত আর রবে দেশ রাহু গ্রাস কবলে?
সমূলে উপড়ে ফেলি দূর্নীতি সবলে।
ঢোঁক দেয়ালেন ক'টা।
লেখা ভাল লাগল। একটু ঘষামাজা করে নিন, আপনার কাছ থেকে অনেক ভাল লেখা পাব আমরা।
শুরুর লেখাতেই ষষ্ঠ পান্ডবের দেখা পেয়ে গেছেন, কম নয় কিন্তু! তাঁর পরামর্শগুলো মনে রাখুন। আরো আরো গল্প লিখুন। শুভেচ্ছা।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
কিছু জায়গায় আপনার পর্যবেক্ষণ ঈর্ষা জাগাবার মতন।
ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষায় লেখা বাক্যগুলোতে আরেকটু মনোযোগ দিলে ভাল হত। আর ঢাকার ভিতরের সিএনজি বা ট্যাক্সিক্যাব চাইলেই কিন্তু সহজে শহরের বাইরে অন্য জেলায় চলে যেতে পারে না মনে হয়।
আপনার থেকে আরও লেখা পাব- আশা রাখছি--
ষষ্ঠ পাণ্ডব-কে সমর্থন করছি।
নতুন মন্তব্য করুন