সম্প্রতি মানবাধিকার রক্ষার জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (আমার উপলব্ধি ঃ আলমগীর যে দলেরই হোক তার কাজ হল বিনোদন দেয়া ! )
যেভাবে বাংলালিঙ্ক দামে পুরস্কার পাওয়া যাচ্ছে তাতে জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান সময়ে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়াও বিচিত্র নয় ! বরং সম্ভাবনা আছে ( যে যাই বলুক পুরস্কার তো আম্রিকার হাতেই থাকে ! )
যেহেতু শান্তির জন্য পুরস্কার আছে, অশান্তির জন্যও তো কার না কারও কোন পুরস্কার পাওয়া উচিত ! ন্যাক্কারজনক কাজের স্বীকৃতি। সেটা যদি সত্যিই দেয়া হয় তাহলে অবশ্যই আমরা পাব ! যারা শাহবাগে আন্দোলন করেছি বা করছি তারা পাবে ! সব অশান্তির মূলে তো আমরা ! “আমাদের” জন্যই তো আজ জাতির নিরাপত্তা হুমকির মুখে !
তবে অশান্তির ট্যাগিং পাওয়া অবশ্য শুরু হয়েই গেছে, এখন না, অনেক আগেই হয়েছে ! আরো হবে ! একদিন দেশ নষ্টদের অধিকারে চলে যাবে। যেতেও দেখছি !
কয়দিন আগে এই আন্দোলন জাতির আন্দোলন ছিল। কয়েকজনের কাছে আজ এই আন্দোলন "তোদের আন্দোলন" হয়ে গেছে ? আজ জাতির আন্দোলন "আমাদের আন্দোলন" হয়ে গেছে ! "তোদের ঝামেলা" হয়ে গেল ? হ্যা, সব অশান্তির মূলে আমরা ! তারও আগে সব অশান্তির মূলে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। ছিলেন একজন কর্নেল তাহের ! সব অশান্তির মূলে একজন বঙ্গবন্ধু, একজন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ ! যুগে যুগে আমরাই অশান্তির মূলে ! আমরাই পাব অশান্তির জন্য পুরস্কার।
সেই পুরস্কারের গল্পও অসাধারণ !
আমাদের কোর্ট মার্শাল হবে, কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হবে ! জানি একদিন তাই হবে, যারা করবে তারা কখনো না কখনো সবাই শাহবাগে ছবি তুলে গেসে ! দুই একটা বিপ্লবী স্ট্যাটাস ও মেরেছে। তাদের সবার profile pictures অথবা cover photos এ্যালবামে অবশ্যই দুই একটা শাহবাগের ছবিও পাওয়া যাবে হয়তো খুজলে ! তখন তারা ভেবেছিল এটা তো রাজাকারের ফাঁসির জন্য ! কিন্তু পরে তো রাজনৈতিক হয়ে গেল ! ধর্মবিরুদ্ধ আন্দোলন হয়ে গেল! আসল কথা হল এত্তসব ঝামেলা মারামারি খুনাখুনি শুরু হয়ে গেল ! হোয়াই সো সিরিয়াস ! চিল ম্যান ! আমরা শান্তি প্রিয় বাঙালি! তার কোন না কোন স্ট্যাটাস হয়তো সেসময় এমন ও ছিল, দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত !! হায়রে বাঙ্গালি !
তারপর সেই খুনাখুনির যারা শিকার তাদের জাতিগত ভাবে বর্জন করা হবে। যারা খুনখারাবি করেছে,আন্দোলনকে রাজনৈতিক বানিয়েছেন, ধর্ম জড়িয়েছেন তারা সসম্মানে জাতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যাবেন !
বাংলাদেশের সাইদী কে চাঁদে দেখা শান্তিপ্রিয় নির্ভেজাল মানুষ এবং আন্দোলন নামক নাটক এবং পরবর্তীকালীন দেশে বিরাজমান বিশৃঙ্খলায় বিরক্ত দেশের সাধারণ আমজনতার কল্যানে তখন হয়তো বর্তমান বিরোধীদল (পড়ুন সেই বিশৃঙ্খলকারীরা) ক্ষমতায় ! গোলাম আযমসহ সবাই তখন মন্ত্রী (প্রেসিডেন্ট ও হতে পারেন বাই চান্স, বলতে পারছিনা, সম্ভাবনা ফেলে দেয়া যায়না! মৃত্যুজয়ী নেতা বলে কথা...) কিভাবে কিভাবে যেন ঠিক নির্বাচনের আগেই মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (বাচ্চু রাজাকার; বললাম না, কারন তখন হয়তো রাজাকার শব্দ টা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে, বাচ্চাদের “তুই রাজাকার” ধরণের অশ্লীল অসুশীল কথা থেকে বাঁচাতে!) দেশে ফিরেছেন, তিনিও মন্ত্রী ! এরকম কয়েকজন মন্ত্রী অভিযুক্ত “ধর্মদ্রোহী” ও “দেশদ্রোহী”দের বিচারকার্য শুরুর আগে জ্বালাময়ী ইসলামী ভাষণ দেবেন ! বিরোধী দল (আওয়ামী লীগ) একই দিনে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের কারো দলের সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সম্পর্ক অস্বীকার করে বলবে, এটি পুরোপুরিই তৎকালীন সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কিছু বিপথগামী যুবক এবং ষড়যন্ত্রকারী মহলের দ্বারা পরিচালিত আন্দোলন ! সেই দিনই ছাত্রদলের (যারা সরকার বদলের আগে ছাত্রলীগ ছিলেন এবং আন্দোলনের উদ্যোক্তা হিসেবে ভাব মেরে বেড়াতেন ! লাকী আক্তারের চরিত্র নিয়ে রমরমা গল্প বানিয়ে মোটর সাইকেলে করে জয় বাংলা বলে বেড়াতেন!) কিছু ছেলেরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনের সাথে যুক্ত সবার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করবেন ! ভাংচুর লুটপাট করবেন ! তবে সাগর রুনি ওয়ালারা সেবার এর প্রতিবাদে অবশ্য মানব বন্ধন করবেন না! এইসব করলে দেশে অনেক বিশৃঙ্খলা হয়! শাহবাগই তার প্রমান ! না বাবা, আর না !
আর কোনোদিন স্বাধীন বাংলাদেশে কোন স্বাধীন অরাজনৈতিক আন্দোলন হবেনা ! অরাজনৈতিক স্লোগান হবেনা ! বাংলার মাটি বারবার কেঁদে উঠবে শব্দ করে কয়েকবার মাঝেমাঝে, ব্যাস, ঐ পর্যন্তই !
তখন হয়তো বাংলাদেশ “ইসলামী কান্ট্রি”, দেশদ্রোহিতা ও ধর্মদ্রোহিতার অপরাধে অনেক দেশদ্রোহীর মত আমাকে নেয়া হচ্ছে সবার সামনে শিরচ্ছেদের (সুশীল ভাষায় বললাম! আসল ভাষায় হল জবাই!) জন্য ! মঞ্চে উঠে আমি দেখতে পারছি অনেক মানুষ সামনে ভীত চোখে তাকিয়ে আছেন, অনেককে আমি চিনিও। এদের অনেকে স্লোগান দিয়েছিলেন আমার সাথেই, “এই রক্ত কোনোদিনও, অন্যায় মানেনা !” আমি তাদের দেখে মুচকি হাসলাম, কত ক্ষুদ্র তোরা !
একজন রিকশাওয়ালা ধরণের হতদরিদ্র্য মানুষ তাকিয়ে আছেন অন্যভাবে আমার দিকে ! তার মুখে হাসি, করুনা নয়। আমি তার হাসিতে চিনলাম, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ! ! আরেক একাত্তরের পরিণতি দেখে হাসছেন আগের একাত্তরের পরিণতি বরন করে দেয়া এক মানুষ !
অনেক সুশীল মানুষ মঞ্চের দিকে থুতু দিচ্ছেন। কেউ অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিচ্ছেন (ইনাদের কেউ কেউ কোন একদিন ফেসবুকে শিবিরের বিরুদ্ধে অশ্লীল কথা ব্যবহার দেখে নাক সিটকেছেন!) আমি তারপরও মঞ্চে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছি ! কারন আমার পাশে আরও একজন দাড়িয়ে আছেন, কেউ না দেখলেও আমি তাকে দেখতে পারছি ! তিনি কর্নেল তাহের ! তিনি কবিতা আবৃত্তি করছেন একাধারে, আমি মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছি ! মনে মনে ভাবছি, বাহ, কবিতা শুনতে শুনতে বিদায় বলা, খারাপ কি !
তারপর কি হল জানিনা, কারন আমার মুখে কালো কাপড় পরানো হল। আমি জানি এরপর শুধু অন্ধকার ! শুধু অন্ধকার এরপর !
সে এক অন্ধকার এক বাংলাদেশের গল্প ! সবকিছু নষ্টদের অধিকারে চলে যাওয়ার গল্প। আমি পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি, তাই যাচ্ছে ! দীর্ঘশ্বাস !
আমার তুচ্ছ দীর্ঘশ্বাস !
মন্তব্য
লেখাটি নীড়পাতায় দেখাচ্ছে না কেন বুঝতে পারছি না ! আমার আগের লেখাটির ও এই সমস্যা হয়েছিল !
স্যাটায়ার হলেও এইদেশে সবই সম্ভব।
সাম্পানওয়ালা
তা সম্ভব ! বাংলাদেশ সব সম্ভবের দেশ!
ভুল বলেননি ! জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠ পোষক দের সুযোগ দেয়াটা নির্বুদ্ধিতা ! দেশকে যেভাবেই হোক আফগানিস্তান হিসেবে দেখতে চাইনা!
ভালো লেখা।।
সুরথ সরকার।
ধন্যবাদ !
হামি ভাল মানুষ ।
অবশ্যই ! হামিও !
লেখকের নাম না পেলে ভাল লেখাও অসম্পূর্ণই থাকে
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
লেখকের নাম জানিয়ে দিলাম ! অনেক ধন্যবাদ !
আমরা যে কোন একটি সরকারকে সুযোগ দিলেই পারি তারা বাংলাদেশকে কি বানাবে এটা দেখার জন্য । সেটার জন্য কিন্তু ৫ বছর পর পর
নতুন সরকারের ক্ষমতা দখলের খেলার পুনরাবৃত্তি দেখার প্রয়োজন নেই ।
ভুল বলেননি ! জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠ পোষক দের সুযোগ দেয়াটা নির্বুদ্ধিতা ! দেশকে যেভাবেই হোক আফগানিস্তান হিসেবে দেখতে চাইনা!
এ লড়াই বাঁচার লড়াই , এ লড়াই জিততে হবে .. নয়ত নরকের আঁধারে ছেয়ে যাবে স্বদেশ ।এটি কোন রাজাকার বধের লড়াই নয় , নয় কোন প্রতিহিংসা চরির্তাথের লড়াই । এ আমাদের আত্মশুদ্ধির লড়াই , আত্মপরিচয় ও হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারের লড়াই , উত্তরপ্রজম্মের কাছে দায়বদ্ধভার লড়াই । রাজাকারীর শাস্তিদান আমাদের লড়াই-এর প্রথম পদক্ষেপ মাত্র , '৭১ এর চেতনায় সমৃদ্ধ সকল অর্থে অসম্প্রদায়িক মুক্ত স্বদেশ গঠনই মূল লক্ষ্য । তাই রণে ভঙ্গ দেয়ার কোন উপায়ই নেই ।নয়ত আমরাই আমাদের সন্তানদের অভিশপ্ত করে যাব , উপহার দেব পচাগলা বাংলাস্হান ???
অবশ্যই তাই ! হারের পরিনতি কি হতে পারে তার একটা প্রতীকী রূপ দেখাতে চেয়েছি! মূল উদ্যেশ্য অনুপ্রেরণা দেয়াই
চমৎকার একটা লেখা। এমনটা হবার সম্ভাবনা কম তো নয়ই, বরং এরকম না হলে সেটাই অস্বাভাবিক। এই দেশে রাজাকার কুকুরগুলোর গাড়ীতে জাতীয় পতাকা উড়েছিলো একসময়। আবার উড়তে পারে। কিন্তু আমরা মারা গেলে সমস্যা নেই, আবার এক দল আসবে। আসতেই থাকবে। এই দেশের মাটিতে লেগে থাকা কলংকের দাগ মুছে দিতে কেউ না কেউ সফল হবেই।
সামি
অবশ্যই কেউ না কেউ সফল হবে! সেজন্য যেন কেউ এ পরিস্থিতি থেকে দেশ বাচাতে এগিয়ে আসে এজন্যই এই আহ্বান!
"এইসব করলে দেশে অনেক বিশৃঙ্খলা হয়! শাহবাগই তার প্রমান ! না বাবা, আর না !"
পুরো জাতি জীবন্মৃতের মত বেঁচে থাকার চাইতে এই বিশৃঙ্খলাই শ্রেয়।
============================
কত আর রবে দেশ রাহু গ্রাস কবলে?
সমূলে উপড়ে ফেলি দূর্নীতি সবলে।
অবশ্যই তাই !!!
নতুন মন্তব্য করুন