কখন জানি জানালার পাশে বসে
কবিতার বই হাতে বিকেলের গন্ধমাতাল।
বুক ভরে বেখেয়ালি বাতাসের ঝড়,
আর চিবুকে তোমার কিছু এলোমেলো চুলের আলপনা।
বাহিরে বৃষ্টি, ভেজা পাতায় ভেজা পাখির ঘর;
উষ্ণ নিঃশ্বাসে ঝাপসা জানালার কাঁচ, অথবা ঝাপসা চোখ
অস্পষ্ট ধোঁয়াটে আকাশের টুকরো,
ঘরের বাহিরে আর এক ঘর। আর এদিকে-
আমরা, যুবক ও যুবতী, ছুয়ে দেবার সংকোচে বিলীন।
অনন্তকালের মুঠোয় কয়েকটি ভেজা মুহূর্ত!
অদ্ভুত ভাবে রাখা শিয়রে তোমার হাত,
ঝলমলিয়ে ওঠা হাতের চুড়ি
আর লাল, নীল, হলুদ বেলুনের সারি জানান দিচ্ছে
আজ এ ঘরে উৎসব।
কিন্তু কেন?
আজ তো কারো জন্মদিন নয়!
বড়জোড় নাক-মুখ-চোখহীন এক বা একাধিক ভ্রূণ
তোমার শরীরে, লজ্জ্বায়, ভয়ে, ভাললাগায়
এসে আশ্রয় নিয়েছে, অথবা নেয় নি।
তবু আজ উৎসব। হয়তো প্রেমের জন্মতিথি।
আজ থেকে বহুকাল আগে, গুহা মানবের রাত্রিতে,
অথবা ঠিক এমনি বৃষ্টির ঝাপসা কোন বিকেলে,
সন্ধ্যায় অথবা সকালে-
প্রথম কোন মানব ভালবেসেছিল কোন মানবিকে।
ওঁরা প্রেমিক-প্রেমিকা,
কোন প্রাকৃতিক চাহিদার বশে ওঁরা জন্ম দেবে না,
ওঁরা জন্ম দেবে না কোন মানুষের,
কারন, ওঁরা শারীরিক ভাবে বন্ধ্যা।
সবাইকে ডেকে ওঁরা চিৎকার করে বলেছিল-
আমরা দায়িত্ব পালন করি না, আমরা ভালবাসি।
বিবর্তনের উপহারে আমরা ভালোবাসার মোহ এনেছি,
আমরা এনেছি তোমাদের জন্য- স্পর্শকাতর প্রেমের ঐশ্বর্য্য।
তাই আজ তোমার আর আমার শরীরের সবগুলো স্নায়ু
স্বর্গের দিকে ফিরে চুপিচুপি বলে-
আধো-আঁধারের নিভৃত ঘরে, বৃষ্টিতে, এই বিকেল থেকে-
আমরাও তোমাদের উত্তরাধিকারী হলাম।
(মাকিদ হায়দার)
মন্তব্য
"তাই আজ তোমার আর আমার শরীরের সবগুলো স্নায়ু
স্বর্গের দিকে ফিরে চুপিচুপি বলে-
আধো-আঁধারের নিভৃত ঘরে, বৃষ্টিতে, এই বিকেল থেকে-
আমরাও তোমাদের উত্তরাধিকারী হলাম।"
এই লাইনগুলো অসাধারণ হয়েছে।
আমারআমি
অতি মাত্রায় অভিভুত হলাম। অসাধারন একটা সৃ্ষ্টি।
মাকিদ ভাই, পুরা ফাটায়া দিসেন। আর
পোস্টটা সেইরকম হইসে। স্যালুট বস। অস্থির লিখেন। কিপিটাপ।
সামি
ধন্যবাদ।
(মাকিদ হায়দার)
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
নতুন মন্তব্য করুন