২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অণু এলো যেবার আমার এখানে, ওর সাথে রোম গিয়েছিলাম বেড়াতে। তাঁর আগে দেশ থেকে প্রথম ইটালিতে এলাম যখন, রোমের মাটিতে এই বান্দার পা ভিড়েছিল বটে কিন্তু এয়ারপোর্ট থেকে ছাড়া পাইনি। আরেকটি প্লেনে করে রোম থেকে বোলোনিয়া চলে এসেছিলাম। তো অণুর সাথে কণকণে শীতের মধ্যে রোম ভ্রমন ছিল এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।কোলোসিয়ামের ভেতরে ঢুকে অণু কিসব ভিডিও টিডিও করা শুরু করল আর আমাকে ক্যামেরার সামনে দাঁড় করিয়ে অল্পবিস্তর কিছুমিছু বলতে বলল, আমি নাদান পাবলিক ওর এহেন অত্যাচারে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম খুব, তবে ওর সাথে সিস্টিন চ্যাপেল দেখতে গিয়ে চোখ সত্যিই ছানাবড়া হয়েছিলো, ভ্যাটিকান সিটি যাবার পথে টিকেট না কাটার অপরাধ হিসেবে ষাট ইউরো অর্থদণ্ড দেয়াটা ভুলতে পারিনি আজ অব্ধি!
এর পরে বিভিন্ন কাজে আড়াই হাজার বছরের এই তিলোত্তমা নগরীতে যাওয়া হয়েছে ঠিকই কিন্তু মনের সুখে রোম দেখা হয়নি। দেখতে দেখতে ইটালিতে চার বছর কেটে গেল অথচ রোম তৃপ্তি সহকারে আর দেখা হলনা, এর মাঝে যে একটু সময় করে রোমে গিয়ে ছবিটবি তুলবো, তাও হয়ে উঠলনা।বোলোনিয়া থেকে রোম যাওয়া আসার খরচ নেহাত কম নয়, ওই খরচে ইউরোপের যে কোনও বড় শহরে দিব্যি ঘুরে আসা যায়, এই দুশ্চিন্তা থেকে আরও যাওয়া হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এইবার কি হল, হঠাৎই একটা ছুটি পেয়ে যাওয়াতে তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্তে রোম যাওয়া হয়ে গেল।এরই মাঝে দেশে কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগ সহ পুরো দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে, সব মনোযোগ তখন সেদিকেই, তারপরেও রোম যাবার সুযোগটা আর হাতছাড়া করতে ইচ্ছে করলনা।
রোম আসলে দুই তিন দিনে দেখে শেষ করা সম্ভব নয়, কেউ একজন বলেছেন সারাজীবনেও নাকি সম্ভব নয়।রোম বিশাল নগরী, এর প্রতিটি গলির খানা-খন্দতে প্রতিটি ভবনের আনাচে-কানাচে রয়েছে সভ্যতার বিকাশের কথামালা, ষড়যন্ত্র-রক্তপাত-রাজতন্ত্র- গণতন্ত্রের ইতিহাস আর কলাজগতের শ্রেষ্ঠ সব উদাহরণ।যেহেতু আমার হাতে আছে দুইদিন, কাজেই আগে থেকেই নেট ঘেঁটে ঘেঁটে ঠিক করে নিয়েছি কি কি দেখবো।এই তালিকায় কোলোসিয়াম আর ভ্যাটিকান সিটির অভ্যন্তর না থাকলেও রয়েছে নানান পিয়াজ্জা, নানান প্রাচীন সড়ক, ভবন, জাদুঘর, স্তম্ভ এবং গির্জা।ইটালির দ্রুতগামী ট্রেনে আড়াই ঘণ্টায় সহজেই বোলোনিয়া থেকে রোম পৌঁছে গেলাম। আড়াইশো ইউরো বাজেট, দুই দিন এক রাত্রি থাকা হবে।সাথে মানচিত্র আগে থেকেই প্রিন্ট করে নিয়েছি। স্টেশনের পাশের হোটেলগুলি তুলনামূলক সস্তা, কাজেই ট্রেন থেকে সকাল নটায় বেরিয়ে হোটেলে পৌঁছে বেরিয়ে পড়লাম রোমের পথে। আগে থেকেই ঠিক করা ছিল যে প্রথমে যাব কোলোসিয়াম, ভেতরে না ঢুকে বাইরে থেকে ছবি তবি তুলবো।পকেটে কিছু টাকা, দুটো ক্যামেরা আর একটি প্রিন্টেড মানচিত্র থাকায় বেশ ফুরফুরে অবস্থায় ঘুরতে লাগলাম কোলোসিয়াম এর সামনের প্রখ্যাত চওড়া রাস্তায়।হঠাৎই চোখে পড়ল একটি টুরিস্ট বুথ।সেখানে ঢুকে দেখলাম এক ধরনের রোমা পাস পাওয়া যাচ্ছে ত্রিশ ইউরোতে, তিন দিনের জন্য সকল পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ফ্রি, তিনটি জাদুঘর এবং কোলোসিয়াম ও রোমান ফোরামের ভেতরে প্রবেশ ফ্রি।আর যায় কোথায়, পড়িমরি করে রোমা পাস কিনে আবার হাঁটা ধরলাম।
তো মোটামুটি ২৫০ ইউরো বাজেটে ( বোলোনিয়া থেকে রোম আসাযাওয়া ১২০ ইউরো এবং ৩০ ইউরো ব্যায়ে সিটি পাস এর ভেতর অন্তর্ভুক্ত) এক রাত্রি হোটেল যাপন এবং পুরো দুইদিন ঘুরাঘুরি প্লাস খাওয়া দাওয়া করে কি কি দেখা হল তার সচিত্র একটি বিবরণ দেয়া যাক।
প্রথমে সিটি পাস টা দেখে নিই।হাতে অল্প সময় কিন্তু দেখার ইচ্ছে রোমের অনেক দর্শনীয় স্থান- এমন ক্ষেত্রে এই পাসের বিকল্প নেই।এই পাস একখানা এ্যালবামের মতন, ভেতরে দুর্দান্ত একটি মানচিত্র, একটা মেট্রো কার্ড। আমি হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হবার চাইতে মেট্রো ট্রেনে করে ঘুরে অনেক স্বাচ্ছন্দ্য পেলাম। সুযোগ বুঝে বাসেও ফ্রি চড়া হল অনেক।কোলোসিয়ামের ভেতরে ঢুকতে আর রোমান ফোরাম দেখতে গেলেই ২৫ ইউরো এমনিই চলে যায়, তাই ৩০ ইউরোর পাসটা আসলেই কাজে দিয়েছে বেশ।
প্রথম গন্তব্যটা ছিল কোলোসিয়ামের চারিধার।মেট্রো ধরে হাজির হলাম স্টেশন থেকে সোজা কোলোসিয়ামে। এর আশেপাশে প্রাচীন সব রোমান কীর্তি, ছোট বড় নানান মাপের নানান আকৃতির ভবন, কলাম, চার্চ, মার্কেট, মূর্তি।প্রথমে ছবি তোলা বাদ দিয়ে শুধু দেখে নিলাম রোম নগরীর এই প্রাচীন অংশটি যেখান থেকে পুরো ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল এক সময় শাসিত হয়েছিল।এখানে দেখলাম দুই ভারতীয় ধ্যান মগ্ন সন্ত।বেশ অভিনব তাঁদের আসন।
এরপরে কোলোসিয়াম থেকে চলে এলাম পান্থিয়ন।এটা যদিও আমার প্রথম পান্থিয়ন দর্শন নয়, এর আগে এর ঠিক সামনেই একটি হোটেলে সেমিনারের উদ্দেশে থাকা হয়েছিল দুই রাত্রি। তবে কি যেন এক জাদু আছে খৃষ্টাব্দ ১২৬ সালে নির্মিত এই প্রাচীন ভবনের!এর নির্মাণ শৈলী যে খুবই নয়ন মনোহর সেটা তো বলার অপেক্ষাই রাখেনা।এর মাথাটা ডোমের মতন যার মাঝখানে একটা গোল অংশ ফাঁকা।এই ফাঁকা অংশ দিয়ে যখন রোদ এসে ঢোকে ভবনের ভেতরে, কেমন অদ্ভুত লাগে! আবার ভেতরে অসাধারণ সব কারুকাজ। ই ভবন না দেখলে আমার রোম ভ্রমন অসম্পূর্ণই থেকে যায়।
পান্থিয়নের এক ব্লক দূরত্বে একটি গির্জা দেখার শখ আমার অনেক দিনের, কিন্তু দেখা হয়নি কখনও।এটির নাম সান্তা মারিয়া সোপরা মিনেরভা।এই গির্জাটির নির্মাণ কাল ১৩৭০। আমি যে কারণে খুব আগ্রহী ছিলাম তা হল এর ইন্টেরিয়র।এত সুন্দর নীল রঙের সিলিং সমৃদ্ধ গির্জা পুরো ইটালিতে আমি একটিও দেখিনি।বাইরে থেকে দেখলে এই গির্জাকে খুব সাধারণ মনে হয়, তবে ভেতরটা অবিশ্বাস্য রকম বর্ণীল।মূল গির্জার প্রবেশদ্বারের সামনে বাইরেও গির্জার সম্মুখে একটি ভাস্কর্য রয়েছে যা বের্নিনি নির্মাণ করেছিলেন।ভাস্কর্যটি হল হাতির পিঠে একটি অবেলিস্ক।শোনা যায় এই অবেলিস্ক মিশর থেকে নিয়ে আসা হয়েছিলো। এমন অদ্ভুত ভাস্কর্য নাকি এই শহরে আর একটিও নেই! গির্জার ভেতর মিকেল এঞ্জেলোর একটি ভাস্কর্য আছে যেটা আমার মিস হয়ে গেছে। আফসুস!
পিয়াজ্জা নাভোনা একটি অনন্য দর্শনীয় স্থান।এর ঠিক মাঝখানে একটি ঝর্না যার নাম ফন্তানা দি কোয়াত্রো ফিউমি।এই ঝর্ণা পৃথিবীর চারটি মহাদেশের চারটি নদীকে নির্দেশ করে।নাইল, দানিউব, গঙ্গা এবং রিও দেলা প্লাতা। এই ঝর্নার মাঝখানে একটি দীর্ঘদেহী কলাম, কলামের নিচে অনেকগুলি ভাস্কর্য। অনেক বিকিকিনির জোয়ার দেখলাম সেখানে।নানান ধরণের পেইন্টিং, ছবি আঁকাআঁকি চলছে।
পিয়াজ্জা নাভোনা দেখার পরই মোটামুটি দুপুর গড়িয়ে গেল। সেখান থেকে গেলাম কাম্পো দি ফিওরি নামক একটি খোলা ময়দানে যা জনপ্রিয় একটি বাজার হিসেবে খ্যাত। সেখানে প্রচণ্ড ভিড়ে হাঁটাই মুশকিল। তারপরেও ভিড় ঠেলে একটু ছবি তুলে নিলাম।
সেখানেই একটা দোকানে পিজ্জা খেয়ে রওনা দিলাম সেন্ট পিটার'স বাসিলিকার উদ্দেশে। বাসিলিকা পৌঁছার পর ওখান থেকে হেঁটে এলাম তিবের নদীর তীরে অবস্থিত হাদ্রিয়ানের মুসোলিয়ামে যা "কাস্তেল সান্ত এঞ্জেলো" নামে অধিক পরিচিত।দুর্গটির আকৃতি সিলিন্ডারের মতন।পুরোটাই একটি জাদুঘর।জানতাম এই দুর্গের মাথায় উঠলে রোমের একটা চমৎকার দৃশ্য দেখা যাবে।হতাশ হলাম না।রোমা পাস ছিল, টিকেট কাটতে হলনা তাই (প্রবেশ মূল্য ১২ ইউরো)। রোমান সম্রাট হাদ্রিয়ানের নামাঙ্কিত এই দুর্গের নির্মাণ কাল খ্রিস্টাব্দ ১২৩ থেকে ১৩৯।তিবের নদীর ওপর একটি ব্রিজ দ্বারা রোম নগরীর সাথে এটি যুক্ত। ব্রিজটির দুই পাশেই নানান দেব দেবীর অপূর্ব সব মূর্তির স্থাপনা রয়েছে।এই দেবদেবীর মূর্তিগুলিও বের্নিনি নির্মাণ করেছিলেন।
আমি সেন্ট পিটার'স বাসিলিকার সন্ধ্যাকালীন ছবি তুলতে চেয়েছিলাম, এইজন্যে অপেক্ষাও করেছি অনেক।অবশেষে তুলেও ফেলেছি এক খানা।এর আগে অণুর সাথে এই গির্জার ভেতরে গিয়েছিলাম, দেখেছিলাম মিকেল এঞ্জেলোর অসাধারণ "লা পিয়েতা।" তবে এবার শনিবারে এত লম্বা লাইন দেখলাম যে ভেতরে যাবার আর সাহস হলনা।
সেন্ট পিটার'স থেকে চলে এলাম পিয়াজ্জা দেল্লা রিপাব্লিকায়।এখানে রয়েছে অসাধারণ একটি ঝর্ণা যার ঠিক পেছনেই রোমের সবচাইতে বিখ্যাত গির্জার একটি সান্তা মারিয়া।রাতের আলোয় ঝর্ণাটি অপূর্ব লাগলো।
সেখান থেকে এলাম পিয়াজ্জা দি এস্পানিয়ায়।রোমান হলিডে চলচ্চিত্রের শুটিং এই জায়গাটির জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে অনেক।তবে এটি মূলত ১৩৫ টি সিঁড়ি সম্বলিত একটি প্রাচীন গির্জা আর এর তলদেশে একটি সুন্দর ঝর্ণা রয়েছে।আমি যখন গিয়েছি তখন ঝর্ণাটির মেরামত চলার কারণে চারদিক ঘেরা দেখলাম। এখানে তরুণ তরুণীদের সমাগম দেখলাম রাত্রিতে।ওপর থেকে নাকি রোমের চমৎকার দৃশ্য দেখা যায়! তবে ক্লান্ত আমি আর সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে চাইলাম না।পরে শুনলাম এর সাথে লাগোয়া একটি ভবনে ইংরেজ কবি জন কিটস তাঁর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন আর এখন যেটি একটি জাদুঘর। তবে অন্ধকারে ভালো করে কিছু চোখে পড়লোনা।
- মনি শামিম
মন্তব্য
ধাপ্পাবাজির জন্য এই সাধুকে কিছু বলেন নাই?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বলব কি, শোনার মতন টাইম আছে এদের? সকালে তো এখানে, বিকেলে হাদ্রিয়ামের মোলের সামনে দেখি আরেক জোড়ার আসন পাতা। মানে বোঝা গেল যে বেশ প্রস্তুতি নিয়ে রোমের রাস্তায় আসন গেড়েছে এই গ্রুপ!
-মনি শামিম
মনি ভাই, ছবিগুলা দেখলাম, লেখা পড়ি নাই এখনও। যেটা জানানোর জন্যে লিখছি, সেটা হল, লেখার নীচে নাম না দেখে শুধু ছবিগুলো দেখেই বুঝে গেছিলাম লেখাটা আপনার। আপনার ছবিগুলার একটা বৈশিষ্ট আছে অবশ্যই, সেটা ঠিক কী সেটা ধরতে পারছি না।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ধরিয়ে দাও শান্ত, আমি অপেক্ষা করব। অনেক সময় ব্যাক্তিগত বৈশিষ্ট্যগুলি ধরা যায় না। কাজেই কেউ যদি ধরিয়ে দেয় তাহলে সেটার সূত্র ধরে খানিক বিশ্লেষণ করে ফেলা যায়। আমি নিজেই আমার বৈশিষ্ট্য ধরতে পারিনি আজও। আগামী পর্বে আরও কিছু ছবি থাকবে। তখন জানিও। খুশী হবো।
-মনি শামিম
আমার ধারণা উনার ডেঞ্জারাস কম্পজিশান সেন্স। ঐ ব্যাপারটা আলাদা করে ফেলে উনার ছবিগুলি।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
শেষে কমেন্ট করতে আমার বিশেষ ভাল লাগে, (এটা আসলে মিথ্যা কথা, আমি সবসময় লেট লতিফ )
সে যাই হোক, মনি ভাই এবারের ছবিগুলি একেবারে খাসা।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
ধন্যবাদ রংতুলি।
-মনি শামিম
সুন্দর পোস্টটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেক দিনের স্বপ্ন রোমে যাবার!
আপাতত আপনার লেখা ও ছবি দেখে কিছু হলেও মনের খোরাক মিটেছে।
শুভকামনা রইল।
তুহিন সরকার।
ধন্যবাদ তুহিন। লেখায় কিন্তু কিছু বানান বিভ্রাট আছে আবার দেখছি কিছু অংশ বাগে খেয়ে ফেলেছে। এইসব ত্রুটি থাকার পরেও লেখা ভাল লাগাটা আপনার বিনয়। কৃতজ্ঞতা জানবেন।
-মনি শামিম
ছবিগুলো চমৎকার লেগেছে! সাথে বর্ণনাও।
============================
কত আর রবে দেশ রাহু গ্রাস কবলে?
সমূলে উপড়ে ফেলি দূর্নীতি সবলে।
ধন্যবাদ আচার্য।
-মনি শামিম
মনি ভাই লোভে ফালায়া দিলেন। ভেনিস যাইতেছি ১৬ তারিখ সাম্নের মাসের, এখনতো রোমে চইলা যাইতে খায়েশ হয়।
পুনশ্চঃ ভেনিস ঘোরার ব্যাপারে কোন সাজেশন আছে নাকি ভান্ডারে??
ইটালিতে আসবেন কিন্তু রোম যাবেন না। কেম্নে কি? অল দা রোড লিডস টু রোম, এই বাণীর খানিক ইজ্জত তো করবেন, নাকি?
ভেনিস ঘোরার ক্ষেত্রে আমার পরামর্শঃ ভেনিসে একদিনের অতিরিক্ত থাকবেন না। তাতে বিস্ময়ের ঘোর কেটে গিয়ে বোর হতে পারেন। সেই তো একই খাল, লেগুন আর তাঁর তীর ঘেঁষা রঙ বেরঙের ঘর বাড়ী। আমার কাছে মনে হয় গোটা ভেনিসটাই একটা জাদুঘরের মতন, ঘর বোঝাই পর্যটক আর বিকি কিনির পসরা। এখানে সবই আছে, নেই শুধু এখানকার মানুষ! এখানকার সভ্যতা, ইতিহাস সবই চলে গেছে জাদুঘরের পেটে! এটা অবশ্য আমার ব্যাক্তিগত উপলব্ধি! আমি আপনাকে ভেনিসে একদিন থাকার পর রোম যাবার পরামর্শ দিচ্ছি কিংবা ফ্লোরেন্স। আপনার ভালো লাগবে, গ্যারান্টি।
-মনি শামিম
ঝামেলায় ফালায়া দিলেনতো। আসলে সমস্যা হইতেছে আমারা কয়েকটা ফ্রেন্ড ইউরোপের এ মাথা-ওমাথা থেকে ভেনিস এক হইতেছি ৩ দিনের জন্য। ওখানেও একটা ফ্রেন্ড আছে। ও কইল আসে-পাশেও ঘুরা যাবে।
এখনতো টাকা পয়সার টানাটানি, ইচ্ছা আছে সাম্নের বছর টাকা জমাইয়া মন মিটাইয়া শুধু রোম ঘুরব।
ভেনিসের আশেপাশে বেশ কিছু জায়গা আছে, পাদোভা খুব কাছে আবার ত্রিয়েস্তেও খুব দূরে নয়।মনের সাধ মিটিয়ে বেড়ান। বন্ধুদের সাথে আড্বাডাজির মতন মজা আর আছে নাকি? সেইটা হোক ভেনিস কিংবা বগুড়া! কি বলেন? আর 'সামনের বার' বলে একটা কথা আছে না? কাজেই লিয়ে লেন! ব্যাপার না!
- মনি শামিম
আমি পদোভাতেই থাকুম, আমার দোস্ত থাকে ওইখানে
ধরা যে খাইছিলাম আপনারই দোষে সেটা কি বুলতেই হপে!!! রোম যেয়ে যে রোমান হয়ে গেলেন গো!
facebook
ধরা খাওয়ার কাহিনী কী? সেই গাড়ির ঘটনা?
আরে বাসে উঠেছিলাম টিকেট না কেটে। আরে, দুই তিন স্টপের জন্য কে টিকেট কাটতে যায়! কে জানে, এক স্টপ পরেই টিকেটবাবা এসে হাজির হবে যমের মতন! যতই অনুরোধ করি কাজ হয়না! হলনা! তাই ষাট ইউরো গচ্চা! পরদেশী বলে অণু রেহাই পেলেও আমার ভিসা অনুযায়ী সাজা হয়ে গেল! ধুত্তোর!
দোষ সব এই মরার কপালের রে ক্ষ্যাপা! আহা, আমার কষ্টার্জিত ষাট ইউরো! ছুতির দিনেও কি টিকেট বাবাদের একটু মায়া হলনা! গরিবের পেটে লাথি দিয়ে বাপু তোমরা কত বড়লোক হবে?
ছবিগুলো দেখে রোমে যেতে ইচ্ছে করছে। ইশস! যদি পারতাম। অনেক কিছু জানা গেল। সে জন্য মনি ভাইকে ধন্যবাদ। আরও লেখা দেবেন আশা করি।
শ্রাবনী
আরেকটি পর্ব আছে এই ঘুরাঘুরির। আরও ছবি থাকছে। ধন্যবাদ শ্রাবণী। ইয়ে, আপনার নামটি কিন্তু বেশ।
-মনি শামিম
আহা, আহা, মনিদা থাকতে থাকতে যদি যাওয়া হত...
আছি তো পাঁচ মাস বাপু আর। কত করেই তো বলছি, এসো এসো। তো কে শোনে কার কতা! তুমি দূরে গিয়ে মর গে!
শামিম ভাই, ইতালিতে বসবাস করেও রোম শহরটা ভাল করে দেখা হলো না, আফসোস! আমি দেশে গেলাম আর এর মধ্যেই একাই রোম ঘুরে এসে পড়লেন, কথাতো ভাই এমন ছিল না! যাই হোক আপনার সাথে ঘুরতে বের হলে আপনার ছবি তোলার স্টাইলটাও একটা দেখার বিষয় হয়ে যায়, এতো সময় নিয়ে ছবি তোলার ভঙ্গী দেখলেই বুঝা যায় ছবিগুলো অনেক সুন্দর হবে। তবে লেখাটা কিন্তু আমার কাছে ছোট মনে হল। আরো ছবিসহ লেখাটা একটু বড় করতে পারতেন। আর এর পড়ের টুরে যেন আমি চিপায় না পড়ি, খুউব খেয়াল কইরা!!!
জিল্লুর ভাই, আপনার জন্য আর অপেক্ষা করা গেলনা যে, কি করব? এখন পর্যন্ত পরিচয়ের পরে আপনার সাথে কোথাও ঘুরাঘুরি হলনা, আফসুস! দেখি, সামনে কোথায় ভ্রমন করা যায়, জানাবোনি! এই লেখাটি দুইটি পর্বে শেষ করতে চাই জিল্লুর ভাই। পরের পর্বে অনেক ছবি থাকবে উইথ শর্ট বর্ণনা। এবার ঠিক আছে তো? আমি এই পর্বে একদিনের বর্ণনা দিয়েছি, আরেকটি পর্ব দ্বিতীয় দিনের ঘুরাঘুরি নিয়ে, আসবো সামনের সপ্তাহে।
-মনি শামিম
দারুন, আমিও রোমে যামু--- সামারটা খালি আসুক।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
আসবেন তো? আগামী সামারে না আপনার সাথে আমার রাজশাহীতে দেখা হবার কথা?
-মনি শামিম
পিজ্জা নিয়ে তো আগে অনেকেই লিখেছেন মনে হয়, আমি নাহয় নাই বা লিখলাম। শুধু পিজ্জা নিয়ে লিখলে আরেকজন বলবে জেলাতো নিয়ে লিখলেন না যে, পাস্তা নিয়ে লিখলেন না তো, ওয়াইন নিয়েই বা লেখা নেই কেন, আর কোথায় পারমিজান হ্যাম কিংবা বোলোনিয়েজে সসেজ- ইতালির খাবার নিয়েই একটা আলাদা পোষ্ট লেখার ইচ্ছে আছে, দেখা যাক!
-মনি শামিম
ভেনিস আমার ভালোই লেগেছে। তবে কথা ঠিক। আমাদের মত পয়সাহীন মানুষদের একদিনের বেশী থাকা উচিত না।
ইটালী গেলেন আর পিজা নিয়ে লিখলেন না। ঠিক হলো কাজটা ?
নতুন মন্তব্য করুন