বাংলায় দেখি স্বপ্ন

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ০১/০৪/২০১৩ - ১০:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাদের দেশে আমরা কিভাবে কিভাবে যেন কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্যে বা মনের ব্যাকুলতা প্রকাশ করার জন্যে কিছু নির্দিষ্ট সময় বা মেয়াদকাল ঠিক করে ফেলেছি। সর্বজনবিদিত গ্রহণযোগ্য সময়সীমার আগে পিছে হয়ে মেয়াদত্তীর্ন হয়ে গেলেই আমাদের ভ্রূ কুঁচকে যায় আর মনে মনে ভাবতে থাকি- এই সময়ে এটা একটু কি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেল নয় কি? এরকম ই একটা ব্যাপার হল- বাংলাভাষার প্রতি ভালোবাসা। বাংলাভাষাপ্রেমী লেখক, প্রকাশক,পাঠক , নাট্য নির্মাতা,শুভাকাংখী সবাই সারা বছর জুড়ে একটা মাসের জন্যে অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে। ফেব্রুয়ারী মাস এলেই আমরা আমাদের মাতৃভাষার প্রতি বরাদ্দ সর্বোচ্চ মমতাটুকু ব্যয় করে ফেলি, তারপরে বছরের বাকী সময়টুকু তে খুব স্বাভাবিকভাবে ই অবশিষ্টাংশ বলতে আর তেমন কিছু থাকেনা। আমিও অবশ্যই এর ব্যতিক্রম কেউ না। তবে বুদ্ধি করে এবার ফেব্রুয়ারী মাসে আমি আমার বরাদ্দ অংশ থেকে অর্ধেক মমতা ব্যয় করেছিলাম আর বাকী অর্ধেক টুকু সযত্নে রেখে দিয়েছিলাম তার স্মৃতিচারণ করব বলে।
এপ্রিলের শুরুর দিকে সেই সঞ্চিত মমতার নির্যাস থেকে শক্তি সঞ্চয় করে আলস্য ঝেড়ে ফেলে যখন এক মাসের মেয়াদোত্তীর্ন বিষয় নিয়ে লিখতে বসেছি তখন আসলে আশে পাশে দেখতে পাচ্ছি-আজকাল অনেকেই বুদ্ধিমান হয়ে গেছে।এককালীন বরাদ্দের পরিবর্তে ভাগ বাটয়ারা করে অনুভুতি খরচ করা শুরু করেছে সারাবছর জুড়ে, মেয়াদকালের তোয়াক্কা না করেই। মার্চ মাস শেষ হয়ে এপ্রিল শুরু হয়ে গেল, অথচ কিছু কিছু মানুষ দেখি এখনো মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেই যাচ্ছে । শীতকালের ঝুম বৃষ্টি বা বর্ষাকালের খরা মৌসুমের কারন ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আমরা আজকাল যেমন শুধু ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’ বেচারাকেই একমাত্র দোষী নন্দঘোষ বানিয়ে ফেলি, ঠিক তেমনি ভাবে এই ‘সময়,কাল ভুলতে বসা ‘ বেআক্কেল (!) লোকগুলোর মতিভ্রমের পেছনে দায়ী নন্দঘোষ কে চিহ্নিত করতে ও নিন্দুকেরা দেরী করেনি। সেই নন্দঘোষ কি ব্যক্তি /দল/গোষ্ঠী /দেশ , একবচন না বহুবচন সেসব খুঁজে খুঁজে নিন্দুকেরা হয়রান হয়ে যাক, আমি শুধু এটুকু বলতে পারি- মতিভ্রম হওয়া এই বেআক্কেল লোকগুলো সংক্রামক বস্তুর মত তাদের স্পর্ধা যে কত মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে , সেটা সময় যত পেরুবে , ততই বুঝতে শুরু করবে সবাই। আমি নিজেকে তেমন সাহসী কেউ মনে করিনা,তেমন বড় কিছু করার সামর্থ্য ও নেই আপাতত। চেনা ছোট্ট জগতের গন্ডির ভেতরে যতটুকু স্বপ্ন দেখতে পারি, সেইটুকুন স্বপ্নের জাল বোনার গল্প করে ই আমার যত তৃপ্তি । কারন, আমি খুব সাধারন মেয়ে ।
স্বপ্নের দেশে এসেছি আট পেরিয়ে নয় মাস হতে চলল। কিন্তু কি অদ্ভুত ব্যাপার –আজকাল স্বপ্নের মধ্যে বেশিরভাগ সময়ে সেই ধুলোবালি মাখা,রাত বিরাত শাপ শাপান্ত করা -সেই ফেলে আসা শহরটাতেই ঘুরে ফিরে বেড়াই। এই ক’মাস আগেও ঢাকায় জ্যামে বসে মোবাইলের স্ক্রিনে তাসনীমের ‘স্মৃতির শহরে’র লেখা পড়লে আদিখ্যতা বলে মেজাজ খারাপ হত। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! আমি আর আমার বর এখন প্রবাসী বাঙ্গালীর তকমা গায়ে লাগিয়ে দিব্যি সেই আদিখ্যেতা করে বেড়াচ্ছি! এবং এই আদিখ্যেতা টুকু করার জন্যে মনের মধ্যে কি বিশাল এক হাহাকার বয়ে বেড়াতে হয় তা বেশ ভালোই টের পাচ্ছি। তবে একদিক দিয়ে বেশ সৌভাগ্য আমাদের। আটলান্টা শহরে বাংলাতে আড্ডা দেবার জন্যে , সুখ দুঃখ ভাগ করে নেয়ার জন্যে চমৎকার কিছু মানুষের সাহচর্য পেয়েছি আমরা । জর্জিয়া টেক কমিউনিটিতে বয়সের হিসেবে জুনিয়র বলে ভাইয়া ,আপুদের স্নেহ ,শাসনের মাঝে আমরা আমাদের নিজেদের পরিবারের মানুষগুলোর ই যেন ছায়া দেখতে পাই। তো, এ বছরের- মানে ২০১৩ সালের জানুয়ারী মাস থেকেই আমরা ঠিক করলাম – ভাষার মাসে আমরা একটা শর্ট ফিল্ম বা নাটক নির্মান করতে পারি যেটা আমাদের ২১ শে ফেব্রুয়ারী বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক ভাবে দেখানো যেতে পারে। সেই নাটক এর পান্ডুলিপি লেখার প্রাথমিক দায়িত্ব টা যেকোন ভাবেই হোক, আমার উপর ন্যাস্ত হল। এখানে আমার সম্পর্কে আমি একটা ধারনা দিয়ে রাখতে পারি এমন- নাটক লেখা দূরে থাক,টুকটাক ফেসবুক স্ট্যাটাস দেয়া ছাড়া তেমন কোন সিরিয়াস টাইপ লেখাও আমার দ্বারা হয়নি।এইরকম অধম এক ব্যক্তির উপর যখন এত বড় একটা দায়িত্ব অর্পণ করা হল, তখন ইতিমধ্যে ফেব্রুয়ারী শুরু হয়ে গেছে, প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নাটকের পরিচালক, চিত্রগ্রাহক/প্রযোজক ভাইয়ার কাছে পান্ডুলিপি জমা দিতে হবে ।।৩,৪ রাত নির্ঘুম রাত কাটানোর পর ৫ম দিনে আমার মনে হল- মান সম্মান খোয়ানোর চেয়ে মাফ চেয়ে মানে মানে কেটে পড়াই ভালো হবে।ঘটনাচক্রে সেই দিন ছিল আমার বরের জন্মদিন।প্রবাসের প্রথম জন্মদিন ,স্বভাবিকভাবেই বিষন্ন ,মনমরা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল ও বাবা মায়ের কথা মনে করে। কিন্তু এক বিচিত্র কারনে ৫ ই ফেব্রুয়ারীতে দুপুরের পর থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে আমরা দেশের ,বিশেষ করে ঢাকার অদ্ভুত সব আপডেট পেতে শুরু করি। ৭১'এর যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির দেখানো ভি সাইন কে কেন্দ্র করে ফেসবুক, ব্লগে আমাদের পরিচিত শান্ত শিষ্ট মানুষগুলো ও প্রথা ভেঙ্গে হঠাৎ প্রতিবাদী হয়ে উঠতে থাকে, সারাদিন সেসব আপডেট দেখতে দেখতে সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ ই ঠিক করে ফেলি—নাটকটা লিখতে পারতেই হবে আমাকে । ভালোমন্দের বিচারে যাচ্ছিনা , ভাষা আন্দোলনের মত এত মহান আর বিশাল একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে গল্প লেখার সাহস টুকু যে অন্তত করে উঠতে পেরেছিআমি, এটাই আসলে আমার জন্যে অনেক হাসি
তো,সারারাত জেগে লেখা সেই নাটক নিয়ে তার পরদিন যখন আমরা মিটিং এ বসলাম, কিছু পরিবর্তন ,পরিবর্ধন সত্ত্বেও পান্ডূলিপি গৃহীত হল । নাটকের কাস্টিং বা কে কোন চরিত্রে অভিনয় করবে , সেটা নিয়ে যথারীতি খুব অবধারিত ভাবেই নানান রকম অভিমান,অভিযোগ,আপত্তি তৈরি হলেও সেগুলো বেশ সমঝোতার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলা হল।এরপরের ২ উইকএন্ডের ৪ দিনে দিনরাত খেটে খুটে একটা নাটক দাঁড় করিয়ে ফেললাম আমরা। আমাদের নাটকের পরিচালক ফয়সাল ভাইয়া, এবং ক্যামেরা ,এডিটিং এর দায়িত্বে থাকা শেফায়েত ছিল পুরো নাটকের প্রান। এমনিতে তারা পিএইচডির কাজে এত মনোযোগী যে, ফেসবুক ব্যবহার করেননা মানে একাউন্ট ই নেই ! অথচ একুশের নাটক বানানোর জন্যে তারা বিনা বাক্য ব্যয়ে ,অবলীলায় ২ টা উইকএন্ড ব্যয় করেছেন। এমনকি আমাদের সিনেমাটোগ্রাফির জন্যে এডিটর কাম ক্যামেরাম্যান (যে কিনা বিদেশেই বড় হয়েছে ছোট বেলা থেকে ) নতুন একটা ক্যামেরা ও কিনেছে সম্প্রতি ! এদের কারো ই কোনো পেশাদার অভিজ্ঞতা নেই ,পড়াশোনা ও কাঠখোট্টা প্রকৌশল বিষয়ে ! একেবারেই অন্তরের টানে করা শৌখিন একটা কাজ -এই ২ জন মানুষ অসীম ধৈর্য সহকারে ,হাসিমুখে করে গেছেন প্রফেসরের পরবর্তী মিটিং এর কথা মাথায় না রেখে। একেকটা দৃশ্য ততবার ই রিটেক করেছেন যতক্ষন না পর্যন্ত তারা নিজেরা সন্তুষ্ট হচ্ছেন। শেফায়েত বেশ দক্ষতার সাথে পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই আশ্চর্য ভাবে সবার অলক্ষ্যে বেশ কিছু দৃশ্য ধারন করে নাটকের শুরুতে যোগ করে দেয় , যা পরে আসলে নাটকটিকে আরো প্রানবন্ত করে তুলেছিল। শেফায়েত আর ফয়সাল ভাইয়ার কথা আলাদা করে বলে প্রশংসা আর নাই বা করলাম- তবে তাদের ফেসবুক একাউন্ট থাকলে তারা বেশ কিছুদিন প্রশংসার আতিশয্যে গর্বে মাটিতে পা ঠিকমত ফেলতে পারত কিনা সে ব্যাপারে এখনো সন্দেহ রয়েই গেল চোখ টিপি
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ একটা চরিত্রে ছিল- আমাদের ছোট্ট আইরা মনি।আমেরিকায় জন্ম ও বড় হওয়া আইরা এত চমৎকার করে ওর চরিত্রে মিশে গিয়েছিল -বেশির ভাগ দৃশ্য ও এক টেকেই করে ফেলেছিল। বড়রা যখন ডায়ালগ বলতে গিয়ে হেসে কুটিকুটি হয়ে ৬/৭ বার করে এক দৃশ্যের শুটিং করেছে, আইরা প্রতিবারই একদম জাত অভিনেত্রীর মত গম্ভীর মুখে একমনে নিজের কাজটুকু করে গেছে। ওদিকে বিদিশা বৌদি, সুবর্না আপু,নাবিলা আপু, সাজিব ভাইয়া,হাসিব ভাইয়া,খুশী আপু,মুনমুন, পাভেল ভাইয়া,সোহানি আপু,রুপম,সাফির,কায়সার,গঙ্গা বৌদি সবাই নিজের সাধ্যমত চেষ্টা করেছে নিজেদের অভিনীত চরিত্র গুলো ফুটিয়ে তুলতে। তবে নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে অর্কের ভুমিকায় থাকা আবীর বিশেষ বিশেষ ভাবে প্রশংসার দাবিদার। আবীর ও কিন্তু ছোট্ট বেলা থেকে বিদেশেই বড় হয়েছে, কিন্তু ওর বাংলা উচ্চারন, বাংলা ভাষার প্রতি প্রগাঢ় মমতা দেখে সত্যিই শ্রদ্ধা জন্মাতে বাধ্য । আর অর্কের ডায়ালগ গুলো ও এমন ভাবে বলছিল- যেন ও কোনদিন আবির বলে কেউ ছিল ই না । পুরো কাজটুকুর জন্যে ওকে ধন্যবাদ দিলেও সেটা আসলে কম হয়ে যায় বৈকি ! নাটকে আর ও নানানরকম ভাবে হাসিমুখে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্যে সৌগত দা,ওয়াসেক ভাইয়া, মোয়াজ্জেম ভাইয়া,রিন্তি,ফারজানা আপু,মইন ভাইয়া, সুশান্ত দা, জাহিদ ভাইয়া,জেরীন ভাবী,সৌগত দা,সোমা আপু,নিটোল ভাইয়া,নাবিল সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। হার্টফোর্ড প্লেস এপার্টমেন্টের বিভিন্ন বাসায় ঢাকার প্রেক্ষাপটে নাটকের শুটিং করতে গিয়ে তেমন ঝামেলা না হলেও নাটকের শেষ দৃশ্যে কফি হাঊজ টাইপ একটা ক্যাফের আবহ তৈরি করতে গিয়ে আমাদের দোতলা বাসার খোলা বারান্দায় বেশ জমজমাট একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছিল।তবে সেদিন শীত বেশী থাকায় ওখানে চেয়ার পেতে চা খেতে খেতে আড্ডা দেয়াটা এখনো বকেয়া পড়ে থাকল। শীত টা পুরোপুরি চলে গেলে একদিন বিকেলে সবাইকে নিয়ে বারান্দায় চায়ের আসর বসানোর ইচ্ছে আছে হাসি
তো, শেষ পর্যন্ত অনেক প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে যেদিন দর্শক জর্জিয়া টেক অডিটোরিয়াম এ বসে নাটকটা দেখতে বসে, সেদিন সেটা সবার জন্যেই সারপ্রাইজ ছিল।কারন, শুটিং এ সবাই উপস্থিত থাকলেও নাটকের শুভমুক্তির আগ পর্যন্ত এর চুড়ান্ত রূপ টুকু ফয়সাল ভাইয়া, আর শেফায়েত আমাদের সবার কাছেই গোপন করেছিল ইচ্ছে করেই। প্রথমে একটু অভিমান হলেও পরে মনে হয়েছে -ভালো ই হয়েছে, নাহলে তো উত্তেজনাটুকু মিস করতাম । যাই হোক, সেদিনের স্মরনীয় ঘটনা হচ্ছে- নাটক শেষে পুরো হল ভর্তি দর্শক একসাথে জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছিলাম। অত খুটিনাটি আর নাই বা বলি- তবে একটা ঘটনার কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছে। প্রবাসে অনেকদিন ধরে থাকা এক আপুর চোখে আবেগঅশ্রু দেখতে পেয়েছিলাম আমরা, নাটক শেষ হবার পরে -সেটাই ছিল আমাদের জন্যে বড় পুরস্কার ! দেঁতো হাসি
বাংলাদেশে বেশ ক’মাস যাবত ইউটিউব বন্ধ বলে ইউটিউবের পাশাপাশি ফেসবুকে আর ড্রপবক্সে নাটকটি আপলোড করা হলে চেনাজানা শুভাকাঙ্ক্ষী , বন্ধু, দেশে থাকা বাবা ,মা ,ভাই,বোনেরা অনেকেই অনেক ইতিবাচক বাক্য দিয়ে উৎসাহিত করেছেন আমাদের কে। এর মাঝে ২,১ টা হৃদয় ছোয়া কমেন্ট ছিল এমন- এই নাটকের প্রতি সম্মান রেখে বাংলা হরফে লেখা শুরু করলেন কেউ কেউ, বা প্রবাসী ছেলেমেয়েদের কে বাংলা শেখানোর জন্যে নতুন করে প্রতিশ্রুতবদ্ধ হলেন। যদিও আমি জানি --অনেকেই হয়ত ব্যক্তিগত হৃদ্যতার খাতিরে উৎসাহ দেয়ার জন্যে বেশি বেশি ইতিবাচক বাক্য উপহার দিয়েছেন, তবে তাদের মৌখিক উৎসাহ আমাদের কে সত্যিই আলোড়িত করেছে। ইতিমধ্যে আমরা পরিকল্পনা করছি- আটলান্টায় একটা বাংলা স্কুল চালু করব আমাদের প্রবাসীদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে।তাদের হৃদয়ে শেফায়েত বা আবীর এর মত এতটা যদি না ও হয়, বাংলা ভাষার প্রতি কিছুটা হলেও যেন ভালবাসা জন্মায় ।তারা যেন তাদের শেকড় কে চিনতে শেখে, পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করতে পারে । এটা হবে বাংলা ভাষা নিয়ে আমাদের আরেকটি স্বপ্ন প্রকল্প, যাতে প্রেরনা যুগিয়েছে আমাদের প্রথম স্বপ্ন - বাংলা ভাষা কে ভালোবেসে নির্মিত নাটক- ‘বাংলায় দেখি স্বপ্ন’।
এই হচ্ছে আমাদের প্রবাস জীবনের ছোট্ট একটা স্বপ্ন পূরণের গল্প । বাংলাভাষার প্রতি মমত্ববোধ থেকে নাটক নির্মাণ করতে গিয়ে কত দূর কি সফল হয়েছি সেটা সমালোচকের দৃষ্টিতে দেখে নিরপেক্ষ ভাবে মান বিচার হয়ত করতে পারবেন আপনারা , যাদের সাথে আমাদের ব্যক্তিগত ভাবে পরিচয় নেই। এবং যারা এতক্ষন ধৈর্য ধরে আমার লেখাটুকু পড়লেন এবং দ্বিগুণ ধৈর্য সহকারে আমাদের ১৭ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের নাটক টা দেখতে উৎসাহী হবেন, এবং তিনগুন ধৈর্য সহকারে মন্তব্যের ঘরে আমাকে অনুভুতি টুকু জানিয়ে যাবেন। তাদের প্রতি আমার আগাম কৃতজ্ঞতা বোধ রইল।

আমাদের নাটকের ইউটিউব লিন্ক-
http://www.youtube.com/watch?v=Kbs0TWSIT2M
ইউটিউবে দেখতে সমস্যা হলে ভিমিও (Vimeo) লিন্ক এও দেখা যেতে পারে এই লিঙ্কে -

[url] https://vimeo.com/61168477[/url]

শুরুতেই যেমন টা বলছিলাম- খুব ই সাধারন মেয়ে আমি। প্রায় শতবছর আগে রবি ঠাকুরের ‘সাধারন মেয়ে’ শরৎ বাবুকে চিঠি লিখে তাকে নিয়ে একটা গল্প লিখতে বলেছিল ,অনুরোধ করেছিল-সেই গল্পে শেষমেষ তাকে যেন জিতিয়ে দেয়া হয় ।আজ নিজের জীবন দিয়ে বুঝেছি -সাধারন মেয়েরা আসলে বেশিরভাগ সময়েই হেরে যায়। আমি এ যুগের সাধারন মেয়ে হয়ে আর কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে থেকে নিজেই ''স্বপ্ন পূরনের স্বপ্ন'' দেখার গল্প লিখে ফেললাম । নিখাদ আবেগ মেশানো লেখাটুকু হোক না যতই সাধারন মানের , তারপরেও , হার জিতের বিচারের চাইতে ও সাধারন মেয়ে হিসেবে এই অর্জন টুকু ই বা কম কীসে? হাসি -------------------------------------------------------------রুবানা


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ছবিটি দেখেছি। আবীর খুব ভালো অভিনয় করেছে। বাকি কলাকুশলীরাও জোস। আপনাদের আরো পরিবেশনা দেখতে চাই।

ইউটিউব তেকে এম্বেড কোড জুড়ে দিতে পারেন চাইলে।

অতিথি লেখক এর ছবি

মন্তব্যের জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ ! দেঁতো হাসি
ইউটিউব থেকে এম্বেড কোড কিভাবে জুড়ে দেয়া যায় ,ভাইয়া?

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।