আমি আর আমার বন্ধু ক্যাম্পাসে লেকের পাড়ে বসে আছি। সন্ধা মিলিয়েছে ঘন্টা দুয়েক আগে। বিভিন্ন গল্পের মাঝে হঠাৎ আমার চোখ গেল পিছনের জলাশয়ে। জলাশয়ের পানি শুকিয়ে গেছে। তার মাঝ এক ঝাক জোনাকি। কি যে ভাল লাগলো। আমি চিৎকার করে উঠলাম দেখ দেখ জোনাকি। টিপটিপ করে আলো জ্বালিয়ে কি নিশ্চন্ত মনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি অনেকন পরে এই অসাধারন দৃশ্য দেখলাম। কয়েকদিন থেকেই সবাইকে বলতাম অনেকদিন জোনাকি দেখিনা। ভাই কোথাও জোনাকি দেখলে আমাকে একটু বলবেন। ইশ কতদিন জোনাকি দেখিনা। সবাই আফসোসের সঙ্গে বলত এখন আর জোনাকি কোথায় পাবা? আগের মত কি আর জোনাকি আছে? তবুও গ্রামে গেলে কিছু দেখতে পেতে পার। আমি আশায় থাকলাম একদিন গ্রামে গিয়ে জোনাকি দেখে আসব। কিন্তু সে আশা আমার হঠাৎ পূরন হয়ে গেল। আমি উপভোগ করলাম এই সৌন্দর্য।
জোনাকিরা সাধারনত একটু গরম পড়লেই বের হয়। তার আগে তারা গা ঢাকা দিয়েই থাকে। একসময় গ্রামে প্রচুর জোনকির দেখা পাওয়া যেত। এখন আর তেমনটি পাওয়া যাবেনা। অনেক দিন আগের কথা। মায়ের কোলে চড়ে আত্মিয়ের বাড়ি থেকে আমাদের বাড়িতে যাওয়ার পথে দেখ সেই জোনাকির কথা আমি জীবনেও ভুলতে পারবো না। যেদিকে চোখ যায় শুধু জোনাকি আর জোনাকি। এত জোনাকি যে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আজো আমার মনে সেই দৃশ্য ভেসে ওঠে। তাছাড়া বাঁশঝাড়ে দেখা যেত লাখ লাখ জোনাকি।
এখন আর সেই দৃশ্য দেখার সুযোগ নেই। এর জন্য আমরাই দায়ি। আমরা ফসলের ক্ষেতে এত পরিমান কিটনাশক দেই যে অন্যান্য জীববৈচিত্রের সাথে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য। জোনাকি সাধারনত জলাশয়ের পাশে বাস করে। আর বৃষ্টির পানিতে সব কিটনাশক ধুয়ে জলাশয়ে মেশে। জোনাকীর জীবনচক্র এখন হুমকির মুখে। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো দেখা যাবে অনেক খুজেও জোনাকি খুঁজে পাওয়া যাবেনা। আমাদের এখনই একত্রে হতে হবে। কিটনাশকের ব্যবহার কমাতে হবে। নতুন প্রজম্মের জন্য হলেও এটা আমাদের করতে হবে।
M.Asaduzzaman
E-mail:
মন্তব্য
চমৎকার চোস্ট! তবে আপনার নামটা ইংরেজিতে খাপছাড়া লাগছে....
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
ভাইরে এখনো সচল হতে পারলাম না। নাম বাংলায় লিখবো কিভাবে?
নাম বাংলায় লেখার জন্য সচল হওয়া লাগে নাকি!
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
অনেক দিন জোনাকি দেখা হয় না
জোনাকি দেখতে হলে গ্রামে যেতে হবে। আপনার হাহাকার বুঝতে পারছি।
বিষয় নির্বাচন ভাল লাগল। তবে আরও ডিটেলস লিখতে পারতেন জোনাকি নিয়ে।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
ধন্যবাদ। পরবর্তীতে বিস্তারিত লিখবো।
আমাদের এলাকাই প্রচুর জোনাকির দেখা মিলে।ঠিকানাঃ খাগড়াছড়ি
সময় সুযোগ পেলে খাগড়াছড়িতে গিয়ে দেখে আসবো।
ছোটবেলা সাদা সার্টের বুক পকেটে রাতের বেলা জোনাকি নিয়ে অন্ধকারে ঘুরে বেড়াতাম। ইংরেজি নামটাও আমার পছন্দ 'ফায়ার ফ্লাই'। অদ্ভুদ একটা পোকা এটা। ধন্যবাদ ভাই শৈশবকে মনে করিয়ে দেবার জন্য।
সিরাজুল লিটন
মায়ের কাছে শোনা রূপকথাঃ এক রাজকুমারীকে যাদু করেছিল দুষ্টু যাদুকর, রাজকুমারী শুধু ঘুমিয়েই থাকত। ঘুম আর ঘুম। হাজার বদ্যি, কবিরাজ কিছু করতে পারল না। একদিন এলো আধাঁর দেশের রাজকুমার। সে বলল, আমি রাজকুমারীকে সুস্থ করব তবে রাজকুমারীর সাথে আমার বিয়ে হতে হবে। রাজা বলল হ্যাঁ, দিব, কিন্তু আগে আমার মেয়েকে ঘুম থেকে জাগাও। আধাঁর দেশের কৃষ্ণবরণ রাজকুমার মন্ত্র পড়ে রাজকুমারীর ঘুম ভাঙ্গাল। রাজকুমারীর হাসিতে সব উজ্জ্বল হয়ে উঠল। রাজপুত্র বল, রাজা, এখন কথা রাখুন, রাজকুমারীকে আমার সাথে বিয়ে দিন। তখন রাজা অস্বীকার করল, আমার সোনার বরণ কন্যাকে তোমার হাতে কেমন করে দেই! দেশবাসীও সায় দিল। রাজকুমার খুব কষ্ট পেল মনে। তারপর তার খুব রাগ হল, সে আর এক জাদু করে পুরো দেশকে অন্ধকারে ঢেকে দিল। রাজা আর সকলে তখন হায় হায় করে উঠল, রাজকুমারী কোথায় গেল? অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। রাজকুমার বলল, এখন তোমরা সবাই মিলে তোমাদের রাজকুমারী খুঁজতে থাক। সে ঘুমাচ্ছে। আলো জ্বেলে খুজঁতে থাক।
সেই থেকে রাজ্যের সবাই আলো জ্বেলে তাদের আদরের রাজকুমারীকে খোঁজে, আর আমরা ভাবি, আরে! জোনাকী জোনাকী।
আর একটু তথ্যঃ জোনাকী তার ৯৫% শক্তিই ব্যয় করে আলো জ্বালাতে। পুরুষ জোনাকী আলো জ্বালাতে পারে। ২০০০ প্রকারের জোনাকী রয়েছে পৃথিবীতে।
২০০০ প্রকার!!!!!!!!
শুধু জোনাকি না,সাথে আর অনেক কিছু দেখবেন বিশেষ করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
নতুন মন্তব্য করুন