ভবন নির্মাণ আইন নিয়ে কিছু কথা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ২৪/০৪/২০১৩ - ৯:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিল্ডিং নির্মণ নিয়ে আমাদের হাতে আইন আছে দুইটি। বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন এ্যাক্ট ১৯৫২ এবং টাউন ইনপ্রুভমেন্ট এ্যাক্ট ১৯৫৩। আমার জানা মতে ২০০৬ সালে বিল্ডিং কনস্ট্রাশন এ্যাক্ট ১৯৫২ তে একটা সংশধনী এনে ১৮-এ অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়। এই আইনের শুরুতেই বলা হচ্ছে

An Act to provide for the prevention of haphazard construction of
buildings and excavation of tanks which are likely to interfere with the
planning of certain areas in 1[Bangladesh].

তৃতীয় বন্ধনীর ভেতরে 'বাংলাদেশ' দেখানোর কারণ সেটা একটা সংশধনী। আগে এখানে ইস্ট পাকিস্তান লেখা ছিল। আইনের ১(৩) এ বলা হচ্ছে

It shall come into force,-
(a) in the areas to which Notification No. 2306 L.S.-G, dated
the 26th July, 1951, relates, on and from the date on which
the East Bengal Building Construction Ordinance, 1951, as
enacted and continued in operation by the East Bengal
Expiring Laws Act, 1951, ceases to operate; and
(b) in other areas, on and from such dates as the Government
may, by notification in the Official Gazette, direct.

আমি অনেক খোঁজাখুজি করেও ২৬ এ জুলাই ১৯৫১ সালের নটিফিকেশনটা খুজে পাইনি। কোন কোন এরিয়াতে এই আইনটি বলবত সেটা জানার আগ্রহ ছিল আমার। তবে কয়েকদিন আগে (মার্চের ২১-২৩ তারিখ) বুয়েটে হয়ে যাওয়া 'ওয়ার্কশপ অন আপডেটিং অব BNBC' থেকে এই তথ্যটা জানতে পেরেছি। সন্মানিত বক্তাদের মনে এই আইনটি শুধুমাত্র চারটি বড় শহর- ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী আর চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য প্রযোজ্য।

এখন এই আইনের অধীনে ১৯৯৩ সালে একটা বিল্ডিং কোড করা হয় যা শুধুমাত্র চারটা শহরে কার্যকর। যদিও বাস্তব ক্ষেত্রে ততটাও নয়। শুধুমাত্র রাজউক আর সিডিএ এর জন্য আলাদা আর একটি বিধিমালা আছে। যেটার সর্বশেষ সংস্করণ রাজউক বিধিমালা ২০০৮। এবং এই বিধিমালাও ১৯৫২ সালের 'বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন এ্যাক্ট' এর আওতাধীন। আমাদের স্বসস্ত্র বাহিনী আবার এই সব বিধিনিষেধের ভেতর দিয়ে যেতে রাজি নয়। তারা তাদের জন্য আলাদা আইন আর বোর্ড বানিয়ে নিয়েছে।

কিন্তু সমস্ত বাংলাদেশ তো আর এই চারটা মহানগরী নিয়ে তেরী নয়। আর এই চারটা মহানগরীর বাইরেও বিল্ডিং আমাদেরকে বানাতে হয়। সেই বিল্ডিংগুলোর ব্যাপারে আমরা এখনো আইন অনুযায়ী কোন বিধি বানাতে পারিনি। বিভিন্ন পৌরসভাগুলোতে যে বিধিমালা প্রচলিত আছে তা অনেকটা খামখেয়ালি করে অদক্ষ লোক দিয়ে বানিয়ে নেয়া। এবং তার কোন আইনগত ভিত্তিও ১৯৫২ সালের এই আইন আমাদেরকে দেয় না।

টাউন ইমপ্রুভমেন্ট এ্যাক্ট ১৯৫৩ এর এখতিয়ারও অনেকটা ঢাকা কেন্দ্রিক।

It extends to the areas co
mprised within the limits of the
2
[Dhaka City]; but the Government may, by notification under
the procedure prescribed by section 162, extend this Act or any
provision thereof to the areas comp
rised within the limits of the
Narayanganj Municipality
3
[and Tongi Municipality] and such
other area in the vicinity of
4
[the said City and] those two
Municipalities as may be specified in the notification.

এ অবস্থাতে আমরা যদি আমাদের ইচ্ছা মত যে কোন বিল্ডিং যদি বানাই (উক্ত এলাকগুলোর বাইরে) আর তা যদি যখন তখন ভেঙে পড়ে তাহলে তার দায় কার উপর পড়বে ?

-- রাজীব রহমান


মন্তব্য

nam nai:) এর ছবি

দায় কার থাকবে রে দাদা? কারও যদি দায় থাকতো তবে কি আর এই সব হতো? এক কাজ করি আমরা সব "মিনি মাগ্না" সুইসাইড করি আমাদের "করতিপক্ক" রা আরামসে দিন কাটাক।

অমিতাভ এর ছবি

teacher.buet.ac.bd/ziawadud/documents/easec-earthquake.pdf ( A COMPARISON OF BNBC-93 WITH OTHER BUILDING CODES WITH
RESPECT TO EARTHQUAKE AND WIND ANALYSIS)

এই এনালাইসিসে বুয়েটের F. Atique এবং Z. Wadud, BNBC,1993 এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন (সমভূমিকম্পনমাত্রা এবং সমবায়ুশক্তি) আরো ৪ টি বিল্ডীং কোড(The Uniform Building Code (UBC) 1997, The Uniform Building Code (UBC) 1991, National Building Code of India (NBC-India) 1983 এবং Outline Code of Bangladesh 1979) এর সাথে তুলনা করে দেখিয়েছেন এটলিস্ট এটাও বিল্ডিং কন্সট্রাকশনের সর্বোচ্চ সতর্কতা নিশ্চিত করছে না। এই এনালাইসিসটা ২০০১ সালের। আজ ২০১৩। এখনও জানি বাংলাদেশের বেশিরভাগ অথরিটি এই BNBC,1993 ফলো করেই বিল্ডিং নির্মানের অনুমোদন দিয়ে থাকে। আরো মজার কথা হলো এইসব নকশাপত্রে কিছু কিছু কর্তৃপক্ষ নকশার পাশাপাশি ফাউন্ডেশন এবং স্ট্রাকচারাল ড্রয়িংও দিতে বলে। কিছুদিন আগে সিলেটের সিটি কর্পোরেশন থেকে একটা ড্রয়িং অনুমোদিত করেছি। ওই ফাউন্ডেশন ড্রয়িংগুলোর সত্যতা যাচাই করার জন্য কমপক্ষে soil report এনালাইসিস করতে হয়। যাই হোক সিটি কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়াররা আমার কাছে কোনো soil report চাননি। কিন্তু ড্রিয়িং অনুমোদিত হয়েছিল। এটা খুব ছোট্ট একটা উদাহরন।

রাজীব রহমান এর ছবি

ছোট শহরগুলোতে যেভাবে বিল্ডিং তৈরীর অনুমোদন দেয়া হচ্ছে সেটা কোন নিয়োমের ভেতরেই পড়ে না। চেয়ারম্যান কেন ভবন তৈরীর অনুমোদন সাক্ষর করবেন এটা আমি বুঝতে পারি না। স্ট্রাকচারের ব্যাপার গুলো দেখার জন্য একজন স্নাতক প্রকৌশলী অবশ্যই থাকা দরকার এই অনুমোদন প্রক্রিয়াতে ।
কিন্তু তার থেকেও যেটা দরকার বেশি সেটা হল যেভাবে অনুমোদিত হচ্ছে সেভাবে কনস্ট্রাকশন হচ্ছে কিনা সেটা নিশ্চিত করা। ঢাকা, চট্টগ্রামের মত শহরেই যেখানে সেটা নিশ্চিত করছে না রাজউক বা সিডিএ সেখানে অন্য শহরগুলোর পক্ষে সেটা করা আরো কঠিন হয়ে দাড়ায়। রাজউক সুযোগ পেলেই লোকবলের অভাবের কথা বলে। কিন্তু প্লট/ফ্লাট ব্যবসা করার জন্য তাদের লোকের অভাব হয় না। আমার মনে হয় এটা পুরোটাই সদিচ্ছার অভাব।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লেখা

অতিথি লেখক এর ছবি

স্টিকি করা হোক।

- ইউক্লিড, রুয়েট

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।