পশ্চিম আফ্রিকার অবহেলিত নারী ও সয়ে চলা ঘৃণ্য এক সামাজিক অনাচার

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ১০/০৬/২০১৩ - ৩:০০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

 demonstration against female genital mutilation

ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন( এফ জি এম) বা নারী যৌনাঙ্গ হানী ঠিক সঠিক প্রতিশব্দ হল কিনা জানিনা তবে কুমারী নারীদের উপর চালানো এই অমানবিক সামাজিক অনাচার পশ্চিম আফ্রিকাতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। পশ্চিম আফ্রিকার মালি, বুরকিনা ফাসো, মৌরি তানিয়া, গিনি, আইভরি কোস্ট প্রমুখ দেশ এই ঘৃণ্য কাজ পরিচালনায় অগ্রগণ্য। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে আইভরি কোস্টের ৪০ শতাংশেরও বেশী নারী যৌনাঙ্গ হানীর শিকার। শুধুমাত্র কিছু কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে একজন নারীকে এই অঙ্গহানির মাধ্যমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়। এরকম সমাজব্যবস্থার দিক দিয়ে আইভরি কোস্টের অবস্থান পশ্চিম আফ্রিকায় পঞ্চম।আর পঞ্চম হওয়া এই দেশটিতে যদি চল্লিশ শতাংশেরও বেশী নারীকে এই বর্বরোচিত, লোমহর্ষক ধর্মীয় আচারের মধ্য দিয়ে নিজেদের তথাকথিত সতীত্ব ও কুমারিত্বের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয় তবে এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে এই হার যে কতটা ভয়াবহ তা সহজেই অনুমেয়।

ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন বা নারী যৌনাঙ্গ হানী কি? আমি মেডিকেল সায়েন্সের ছাত্র নই কাজেই বাংলা কোথাও ভুল হলে এই বিজ্ঞানে পারদর্শী কেউ তা ধরিয়ে দিলে বাধিত হব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে যে কোন নারীর যৌনাঙ্গের বহির্দেশ পূর্ণ অথবা আংশিক কর্তন, অথবা চিকিৎসা শাস্ত্র বহির্ভূত উপায়ে যৌনাঙ্গের উপর যে কোন ক্ষত নারী যৌনাঙ্গ হানীর অন্তর্ভুক্ত হবে। একই কথার পুনরাবৃত্তি এড়ানোর জন্য ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন শব্দটি এফ জি এম হিসেবে উচ্চারিত হবে।

আর একটু বিশদভাবে ব্যাখ্যা করলে ডব্লিউ এইচ ও এটাকে চার ভাবে করা হয়ে থাকে বলে বুঝিয়েছেন ঃ

প্রথমত সম্পূর্ণ অথবা আংশিক ভগাঙ্কুর ( clitoris ) কর্তন।
দ্বিতীয়ত ভগাঙ্কুরের ( clitoris ) এর সাথে যোনি দারের উভয় পাশের সুউচ্চ মাংসপিণ্ড (inner labia) কর্তন।
তৃতীয়ত যৌনাঙ্গের সম্পূর্ণ অংশ কর্তন। এক্ষেত্রে প্রসাব নিঃসরণের জন্যে একটি সরু পথ শুধু খোলা রাখা হয়। এটাকে বলা হয় ইনফিবুলেশন ( infibulations) ।
চতুর্থত ক্ষরজাতিয় পদার্থ বা গরম লোহা দিয়ে ভগাঙ্কুরকে পুড়িয়ে দেয়া। এটাকে (cauterization) বলে।

তবে এক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় পদ্ধতি খুব বেশী প্রচলিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে পশ্চিম, উত্তর ও উত্তর পূর্ব আফ্রিকার ২৮ টি দেশসহ মধ্যপ্রাচ্য , ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশে এফ জি এম প্রচলিত। তাদের মতে, বিশ্বের ১০০-১২০ মিলিয়ন নারী এই জঘন্য নৃশংসতার শিকার তার মধ্যে প্রায় ৯০ মিলিয়ন হচ্ছে আফ্রিকান।

এফ জি এম এর পেছনে ভ্রান্ত ধারণা

আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন গোত্রের মানুষের বসবাস। অশিক্ষা, কুসংস্কার,ধর্মীয় গোঁড়ামির যাঁতাকলে এদেশের মানুষেরা সর্বদায় পিষ্ট। এইসব দেশে এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে এখনও অনেক আদিম অনাচার প্রচলিত। আর এইসব অনাচারের প্রধান বলি হয় মূলত নারীরা। পুরুষপ্রধান এইসব জায়গায় নারীরা সর্বদায় বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন অবয়বে নিগৃহীত। এফ জি এম এই অঞ্চলের নারীদের উপর নিগৃহীত অনাচারের মধ্যে অন্যতম বলে আমার ধারণা। প্রথমেই বলে নেয়া দরকার একেবারে জন্মের কয়েকদিন পর থেকে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত নারীরা বিভিন্নভাবে এই যৌনাঙ্গ হানীর শিকার হয়ে থাকে। এছাড়াও বয়সের আরও কয়েকটি পর্যায় আছে যেখানে নারীরা এই বেদনাদায়ক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যায়। যে সব কুসংস্কার, অজ্ঞতা ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে এটা করা হয় তা হল

 আইভরি কোস্টের উত্তরের বিভিন্ন গোত্রের মানুষেরা মনে করে যে কোন নারী বিবাহের পূর্বে তাদের ভগাঙ্কুর কর্তন করলে তাদের সতীত্ব রক্ষা পায়। তাদের বিশ্বাস এটা কেটে ফেললে মেয়েদের মধ্যে যৌন চাহিদা হ্রাস পাবে এবং এর ফলে তারা একাধিক পুরুষের সাথে মেলামেশার সুযোগ কম পাবে। এতে করে নাকি স্ত্রীর প্রতি তাদের স্বামীর আস্থা ও বিশ্বাস আরও বাড়ে।

 এফ জি এম কে ভূমিষ্ঠ শিশুর সুস্বাস্থ্য ও মায়ের পরিচ্ছন্নতার পূর্ব শর্ত হিসেবে ধরা হয় যদিও তা সম্পূর্ণ বিপরীত।

 মালির বোম্বারা ও টোগণ গোত্র, বুরকিনা ফাসোর মোসি গোত্রের মানুষেরা মনে করে ভগাঙ্কুর শিশু ভূমিষ্ঠ হবার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের বিশ্বাস জন্মের সময় শিশুর মাথার সাথে ভগাঙ্কুরের সংঘর্ষে শিশুর মৃত্যু হতে পারে।

 আইভরি কোস্টে অনেকে মনে করে ভগাঙ্কুর কর্তন না করলে মেয়েরা সন্তান ধারণ ক্ষমতা হারায়।

 অনেকে বিশ্বাস করে এফ জি এম করা নারী মানেই সে পবিত্র ও দাম্পত্য জীবনে সে তার স্বামীর প্রতি বেশী অনুগত হবে।
সামাজিক বিভিন্ন চাপ

অন্ধকারাচ্ছন্ন আফ্রিকার এ সমস্ত দেশে এফ জি এম কে সেই সমাজের নারীর উন্নত সামাজিক অবস্থান ও পূর্ণ যৌবনা প্রাপ্তির প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। দক্ষিণ সুদান, কেনিয়া, মালি , আইভরি কোস্টে এটাকে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ধর্মীয় আচার হিসেবে পালন করা হয়। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে নাচ গান ও আমোদ প্রমোদের মাধ্যমে প্রাপ্ত বয়স্ক কুমারী মেয়েদেরকে তাদের পরিবারের সম্মতিতেই এই অনাচার সম্পন্ন করা হয়। যে সমস্ত মেয়েরা এটা করতে চাই না তাদেরকে পরিবার সহ সেই সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়। সমাজে তার পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয় এবং তাকে অপবিত্র বা অসতী হিসেবে নিগৃহীত হয়। আর এই অবস্থার মধ্য দিয়ে যখন কোন মেয়েকে নেয়া হয় তখন রক্ত ক্ষরণে অনেকের মৃত্যুও হয়। কিন্তু তাতে সেই পরিবার বা সমাজের খুব একটা যায় আসেনা বরং নারীদেরকে এটা করতে বাধ্য করানো হয়। এটা তাদের পালনকৃত ধর্মের একটি অংশ হিসেবে ধরে নিতে বলা হয়।

অশিক্ষার অন্ধকারে নিমজ্জিত পিতৃতান্ত্রিক এসব সমাজে যেসব নারীদেরকে তাদের পরিবার এই অঙ্গ হানীতে বাধ্য করতে ব্যর্থ হয় তাদেরকে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। একেবারে ছোটবেলা থেকেই এসব অঞ্চলের মেয়েদের মধ্যে এফ জি এম সম্বন্ধে একটা ভ্রান্ত ধারণা দেয়া হয় এবং এটা করতে অস্বীকৃতির শাস্তি সম্বন্ধে সকলকে সচেতন করে তোলা হয়।

হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টান, ইহুদী সহ অন্যান্য অনেক গোত্রীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে এটা প্রচলিত আছে। বিভিন্ন ধর্মে এটাকে ধর্মীয় একটি বাধ্যবাধকতা হিসেবে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয় আর অজ্ঞ এইসব মানুষেরা ধর্মের দোহাই দিয়ে চালিয়ে যাই এই অমানবিক নির্যাতন। এখন পর্যন্ত যদিও কোন ধর্মীয় ভিত্তি এই জঘন্য অমানবিকতার পেছনে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

[b]এফ জি এম ও আইভরি কোস্ট [/b

আইভরি কোস্টে থাকার বেশ কিছু দিন থাকার অভিজ্ঞতায় বলা যায় যে এই দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষেরা দক্ষিণের চেয়ে শিক্ষা, সামাজিক অবস্থানের দিক দিয়ে পশ্চাৎপদ। কাজেই কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি, নারীর অবমূল্যায়ন, সামাজিক অবক্ষয় এই অঞ্চলে একটু বেশী। মূলত বাগবো সরকারের সময় এই অঞ্চল বিদ্রোহীদের দখলে থাকায় এখানকার মানুষেরা সব দিক দিয়ে পিছিয়ে। আর মালি বর্ডারের একেবারে পাশাপাশি হওয়ায় ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং বিভিন্ন অনুশাসন এখানে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে।মূলত উত্তরাঞ্চল মুসলিম অধ্যুষিত আর মুসলিম পরিবারগুলোতে এই এফ জি এম এর প্রবণতা একটু বেশী।

আমি আগেই বলেছি আইভরি কোস্ট এফ জি এম এর দিক দিয়ে পশ্চিম আফ্রিকাতে পঞ্চম। ২০০৬ সালের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী এদেশের ৪৫ শতাংশেরও বেশী নারী এই তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে। আর উত্তরে এর হার ৮৭.৮, উত্তর পশ্চিমে ৮৭.৯, পশ্চিমে ৭৩ শতাংশ।

Copy of Female-Genital-Mutilation-Statistics-in-Africa-human-rights-3033792-832-688

(আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে এই এফ জি এম এর আনুপাতিক হার )

যে কয়েকটি বিষয়কে এদেশে এফ জি এম এর স্বপক্ষের কারণ হিসেবে দেখান হয়েছে এবং যা বলে অনেকটা সামাজিক জনমত গড়ে তোলা হয় তা হল

 এটা নারীদের সাহস ও সহিষ্ণুতার পরীক্ষা
 এটা একজন নারীর বিশ্বস্ততার প্রতীক
 এটা সামাজিক বন্ধন ও শুদ্ধিকরণের একটি ধর্মীয় আঁচার।
 এটা ধর্মের প্রয়োজনেই অবশ্য পালনীয়

আইভরি কোস্টে এই অনাচার উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন ধর্ম ও গোত্রীয় সম্প্রদায়ে বেশী প্রচলিত। গোত্রের মধ্যে মান্দি, ভলতাকি এবং গ্রাম্য অধিকাংশ মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে যেখানে শিক্ষার আলো এখনও প্রবেশ করেনি সেইসব জায়গায় বিভিন্ন নারী ও শিশুদের উপর এই অত্যাচারের মাত্রা অনেক বেশী। উত্তরের ওদিয়ানে, করোগো, মাদিনানি, বন্দিয়ালি প্রমুখ জায়গায় এর প্রচলন অনেক বেশী। এইসব জায়গাগুলো আসলে এতটাই প্রত্যন্ত যে খবর পেলেও সেখানে পৌঁছানো সম্ভব হয়ে ওঠেনা।

১৯৯৮ সালে এদেশের সরকার এফ জি এম বন্ধে আইন চালু করে। জাতিসংঘের ইউনিসেফ,ইউ এন এইচ সি আর সহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন এফ জি এম রোধে বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক এসব সংগঠনের হস্তক্ষেপের ফলে এফ জি এম অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ক্রমেই এর প্রতি নারীদের একটা বিদ্বেষ ও বিরূপ মনোভাব সরকারী পর্যায়ে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় এই কাজে সংশ্লিষ্ট নারীদের ধরে আইনের আওতায় আনা শুরু হয়েছে।

আজকের এই বিষয়টি নিয়ে লেখার আগ্রহ অনেক আগে থেকেই কারণ এই বিষয়টি সম্বন্ধে আমি প্রথমে জানি আইভরি কোস্টের উত্তরের শহর ওদিয়ানের এক স্থানীয় ছেলের কাছ থেকে।এর বিরুদ্ধে সরকারী দুই একটি পত্রালাপ প্রথমে নজর কাড়ে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জায়গায় এই প্র্যাকটিস এখনও চালু আছে বলে খবরও আসে। ঘটনা শুনে আমি প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি যে মানুষ এখনও এত আদিম আর নৃশংসতার অন্ধ গোঁড়ামিতে কিভাবে আচ্ছন্ন আছে। সারা বিশ্বের নারীরা যেখানে ক্রমেই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে ধর্মের দোহায় দিয়ে কতগুলো কুসংস্কার এই অঞ্চলের নারীদেরকে পাশবিকতার দহনে তিল তিল করে পুড়িয়ে মারছে। আফ্রিকার এই অঞ্চলের অনেক পরিবার তাদের কন্যা সন্তানকে রক্ষার জন্যে বিভিন্ন পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যাবার নজীরও রয়েছে।

নারীদের প্রতি এই অসন্মান, তাদের জীবন নিয়ে এত নিষ্ঠুর খেলা সত্যি মনকে ভারাক্রান্ত করে তোলে। এই আধুনিক যুগে সভ্যতার ক্রম বিকাশে আফ্রিকার নারীরা যে এভাবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে হেয় প্রতিপন্ন তা আজ অনেকেরই কল্পনার বাইরে। নারীদের জীবন নিয়ে, তাদের সম্ভ্রম নিয়ে, তাদের শরীর নিয়ে , সবুজ স্বপ্ন নিয়ে, আফ্রিকার বর্বর মানুষদের এই খেলার সমাপ্তি একদিন হবে সেই কামনায় করি। নানা সমস্যায় জর্জরিত এসব দেশের মানুষেরা মুক্ত হোক সকল প্রকার ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার থেকে । খোলা চোখে একজন পুরুষ দেখতে শিখুক তার পাশে একজন নারীও তারই মত সমান অধিকারের অধিকারী । বন্ধ হোক এইসব নিষ্ঠুর অনাচার। ভালো থাকুক এদেশের নারীরা। জয় হোক মানবতার।

Campaign_road_sign_against_female_genital_mutilation_(cropped)

তথ্যসুত্র

উইকিপিডিয়া
ইউনিসেফের রিপোর্ট
দা নিউইয়র্ক টাইমস

ছবিসূত্র
ইন্টারনেট

অমি_বন্যা


মন্তব্য

নরাধম এর ছবি

অনেক নতুন তথ্য জানলাম। চলুক
আমাদের দেশে মুসলমানী সেইরকম কিছু নয় কী ?

সাইদ এর ছবি

@নরাধমঃ আমাদের দেশে মেয়েদের খতনা হয় না।

নরাধম এর ছবি

জ্বী , ছেলেদের কথায় বলছিলাম।

অমি_বন্যা  এর ছবি

চলুক

ধুম্রজাল এর ছবি

চমৎকার তথ্য ভুল লেখনী।
আবিদজানের ছবি দেখতে দেখতে সবাই টার্য়াড

অমি_বন্যা  এর ছবি

@ধুম্রজাল, ভুল লেখনী কোনটা যদি ধরিয়ে দেন তবে শুধরে নেব।

আবিদজানের ছবি কোথায় পেলেন চিন্তিত

মইনুল রাজু এর ছবি

মনে হচ্ছে বহুল(bohul) লিখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, তথ্যবহুল হয়ে গেছে তথ্য ভুল। দেঁতো হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

অমি_বন্যা  এর ছবি

দেঁতো হাসি

ধুম্রজাল এর ছবি

সরি। আমার ভুল। ভেবেছিলাম আবিদজানের পরিচিত কারও লেখা যারা সমুদ্রের ছবি দিয়ে ব্লগ ভরে তুলছে।
লিখতে থাকুন। অনেক কিছু এখোনো অজানা

ধুম্রজাল এর ছবি

খাইছে

স্বপ্নহারা এর ছবি

খুব জরুরি একটা বিষয়। বাংলাদেশে এধরনের প্রথা নেই এটা খুবই ভাল। তবে বলা যায় না কবে হেফাজতিরা এটা চালু করে দেয়! নারীকে পায়ের তলে রাখার জন্য যেকোন ধর্মকে ব্যবহার একটা বিশাল শক্তিশালী হাতিয়ার! তবে আফ্রিকাতে এই ব্যাপারটাতে ধর্মের চেয়ে মনে হয় কালচারের প্রাধাণ্য বেশি।

হিন্দু ধর্মে এধরনের আচার আছে বলে জানা নেই। মূলত monotheistic religions আর আদিবাসী ধর্মগুলোর মধ্যে এটা প্রচলিত। প্রাচীণ কিছু সভ্যতায় (খুব সম্ভব মিশরীয়) এটা প্রচলিত ছিল মনে হয়। এখনতো ছেলেদের খৎনাও আস্তে আস্তে অজনপ্রিয় এবং অস্বাস্থ্যকর হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অতিথি লেখক এর ছবি

এখনতো ছেলেদের খৎনাও আস্তে আস্তে অজনপ্রিয় এবং অস্বাস্থ্যকর হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।

Male circumcision অসাস্থ্যকর এ কথাটা পুরোপুরিই ভুল ধারণা। বরং এটা খুব ভয়ংকর কিছু রোগের প্রতিরোধক হিসেবেও সাহায্য করে। যেমন- সিফিলিস,গনরিয়া,হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস,বিভিন্ন ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন,ক্যান্সার এমনকি এইচ আই ভি।
আর ডিজ্যাটভান্টেজ যা আছে সেটাও হাইপোথেসিস এর ব্যাপার। কিছু কমপ্লিকেশনস আছে যেগুলোও রেয়ার।

------------------------
সুবোধ অবোধ
------------------------
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কেন এত বোকা হয়?!!

স্বপ্নহারা এর ছবি

ওহ, তাই!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম...

------------------
সুবোধ অবোধ
-------------------
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কেন এত বোকা হয়?!!

সুমন চৌধুরী এর ছবি
দিগন্ত এর ছবি

এটা নিয়ে কোনো পিয়ার রিভিউড পেপার আছে? আমি ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ডাক্তার বলেছে কোনো স্বাস্থ্য-জনিত সুবিধা নেই।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

এইরকম পেলাম এখানে -
"the American Academy of Pediatrics found the health benefits of newborn male circumcision outweigh the risks, but the benefits are not great enough to recommend universal newborn circumcision."


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অতিথি লেখক এর ছবি

এককালে নিজেই মেডিক্যাল স্টুডেণ্ট ছিলাম কি না...
খাইছে
সে যাই হোক, এইখানে এবং এইখানে একটু ঢু মেরে দেখতে পারেন...

------------------------
সুবোধ অবোধ
----------------------------------
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কেন এত বোকা হয়?!!

কবির এর ছবি

জ্বি এই জন্যেই randomized controlled trial বোঝার কথা না খাইছে জানেন তো আফ্রিকার এইডস আক্রান্ত অধিকাংশ দেশ মুসলিম যারা ৮-১০ বা এর পরেই circumcision করে থাকে।তো এর পরও সেখানে এইডস এর প্রাদুর্ভাব বেশি কেন বলতে পারেন??গুগ্লে সার্চ দেন circumcision এর বিপক্ষে শত শত লিঙ্ক পাবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

আবার পক্ষেও তো পাইলাম অনেক লিঙ্ক।
উপরের কমেণ্টে দিয়েছি লিঙ্ক টা।
হ্যা ভাই,আমি আসলেই বুঝি না!! আপনি নিঃসন্দেহে আমার থেকে জ্ঞানী মানুষ!! আর এরাও না বুঝেই লিখেছে!!
আর WHO ও আজকাল উল্টাপাল্টা শুরু করছে!!

---------------------
সুবোধ অবোধ
---------------------
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কেন এত বোকা হয়?!!

কবির এর ছবি

ভাই আপনি কি লিঙ্ক শেয়ারই করেন নাকি পড়েও দেখেন !!
আপনার দেয়া লিঙ্কেই স্পষ্ট লিখা আছে :
"Most healthcare professionals maintain that the potential benefits of circumcision are not strong enough to justify routine childhood circumcision. Critics of circumcision argue that it has disadvantages, such as ব্লা ব্লা:"
আমি বলছিই যে স্বাস্থ্য সেবায় উন্নত একটা দেশ দেখান যারা এটাকে সুপারিশ করে করার জন্য।
আর who এর ব্যাপারটা আমি আগেই বলেছি , যে পরীক্ষায় AIDS এর ঝুঁকি কমায় সেটা randomized controlled trial পদ্ধিতিতে। ধরেন এক এলাকায় ১০০ জনের মধ্যে ৮০ জন কালো দাগ ওয়ালা বাকি ২০ জন এর নাই। এখন আপনি দৈবক্রমে " random" পদ্ধতিতে এমন ১০ জন নিলেন যাদের কোন দাগ নাই। তাদের নিয়া বলেন এই এলাকার কারোর কোন দাগ নাই, তাইলে ক্যাম্নে কি ??

অতিথি লেখক এর ছবি

পুরাটাই পড়েছি। যেহেতু নেগেটিভ দিক টা তুলে ধরার জন্য আপনি আছেন,তাই আমি পজেটিভ দিক গুলোই বলেছি। আপনি একজন চিকিৎসক মনে হচ্ছে। আমার ডিপর্টমেন্ট সম্পূর্ণ ভিন্ন হলেও এই বিষয় নিয়ে একবার স্যার কে জিজ্ঞেস করায় বলেছিলেন পজেটিভ। হয়ত তাই মাথায় সেটাই ঢুকে আছে। একেকজন একেকভাবে ব্যাখ্যা করেন। আসলটা জানতে হলে নিজেকেই রিসার্চ করে দেখতে হবে মনে হচ্ছে। ফাইনাল ইয়ারে যেহেতু রিসার্চ মেথোডোলোজি নামে একটা সাবজেক্ট ছিল,তাই RCT সম্পর্কে আপনার মত জ্ঞানী না হলেও কিছু ধারণা ছিল। আর নিজে যেহেতু করেই ফেলেছি সেই ছোট বেলায় এখন আর তর্ক করে কি হবে? কোনকালে পুলাপান হইলে তারপর পরামর্শ করে দেখা যাবে কি করা যায়। ভাল থাকবেন।

--------------------------
সুবোধ অবোধ
--------------------------
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কেন এত বোকা হয়?!!

কবির এর ছবি

চিন্তিত লইজ্জা লাগে

কবির এর ছবি

Male circumcision অস্বাস্থ্যকর না স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে তো প্রশ্নই আসে না !! কারণ এটি একদমই বিরল কিছু ক্ষেত্রে ছাড়া সম্পূর্ন অপ্রয়োজনীয় একটি কাজ।যেসব রোগের নাম বললেন তাতে এর কোন ভূমিকাই নেই বরং এতে আরো ট্রমার ঝুঁকি বাড়া সহ নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে।শুধু ধর্মীয় কারণে কিছু মিথ্যা অপ্প্রচার চালানো হয়।পৃথিবীর প্রতিষ্ঠিত কোন স্বাস্থ্য সংস্থ্যাই এর জন্য সুপারিশ করে না।মেয়েদেরটা যেমন বর্বর তেমনি ছেলেদেরটিও।কোন ছেলে circumcision করাবে কি না তা প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া অবধি অপেক্ষা করে সিদ্ধান্তটি তার উপরি ছেড়ে দেয়া উচিত।

অমি_বন্যা  এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

তারেক অণু এর ছবি

গুরুত্বপূর্ণ লেখা।

এই বিষয় নিয়ে ডেজার্ট ফ্লাওয়ার নামের এক মর্মস্পর্শী সিনেমা দেখেছিলাম, সোমালিয়ান এক মডেলের জীবনের উপর নির্মিত। কি ভয়াবহ সব প্রথা মানুষ বানিয়েছে এবং চালিয়ে যাচ্ছে।

অমি_বন্যা  এর ছবি

এই লেখাটা লেখার আগে আমার বেশ কিছু আইভরিয়ানের সাথে কথা হয়। তাদের তথ্য অনুযায়ীও দেশটির একেবারে উত্তরে অর্থাৎ মালি বর্ডারের কাছে এই প্রথার প্রাদুর্ভাব খুব বেশী।
বিষয়টা আসলেই মর্মস্পর্শী।

কৌস্তুভ এর ছবি

এইটা নিয়ে আমিও একসময় খানিকটা অন্যরকম দিক থেকে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, মরুপ্রথা

অমি_বন্যা  এর ছবি

আপনার লেখা পড়লাম। দারুণ লিখেছেন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।