বুয়েটে র‍্যাগ প্রোগ্রাম : সীমা-পরিসীমা, অঘটন ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ২০/০৬/২০১৩ - ৩:০৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিগত কয়েকবছরের ধারাবাহিকতায় এইবারের র‍্যাগ প্রোগ্রামটিও বিশৃংখল ঘটনা থেকে মুক্ত থাকতে পারল না। র‍্যাগ কনসার্টের পূর্বে প্রানজুড়ানো বৃষ্টিতে সবার যেখানে মাথা শীতল হওয়ার কথা, সেখানে ঝামেলা পাকিয়ে বসল প্রথমবর্ষের একছাত্র। ইঁচড়েপাকা জুনিয়র প্রপোজ করে বসল র‍্যাগব্যাচের এক ছাত্রীকে। তাও আবার একা নয়, যৌথভাবে। ছাত্রীর ভাষায় এবং অভিযুক্তদের পরবর্তী স্বীকারোক্তিতে যেটা ইভটিজিং হিসেবে গণ্য হয়েছে। এই ঘটনারই আরো বিস্তারিতে যাবার আগে আলোচনার সুবিধার্থে কিছু বিষয় অবতারণার প্রয়াস পাচ্ছি।

খুব বেশি দূরে যাব না। দুটো ব্যাচ আগে থেকেই শুরু করি। এগারোর একেবারে শেষে গিয়ে র‍্যাগ প্রোগ্রামের আয়োজন করে ক্যানভাস’০৬। তাদের দিয়েই শুরু ডাবল কনসার্টের ট্র্যাডিশন(যেটা পরবর্তী ব্যাচ ধরে রাখতে চেয়েও পারেনি)। কিন্তু ক্যানভাসের সাজানো জলসায় আঘাত হানে সিনিয়র-জুনিয়র বিরোধ। লীগকর্মী এক জুনিয়র ছাত্রকে কনসার্টের রেস্ট্রিক্টেড এরিয়ায় ঢুকতে না দেবার জেরে দফায় দফায় কথা চালাচালি, যার এক পর্যায়ে তৎকালীন র‍্যাগব্যাচের ঈশানের উপর চড়াও হয় উক্ত লীগকর্মী ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা। এরপর বুয়েটের ঐতিহাসিক আন্দোলন এবং অভিযুক্ত দুই ছাত্রের আজীবন বহিষ্কারাদেশ(উচ্চ আদালতে স্থগিত)।

লুব্ধক’০৭ তাদের র‍্যাগ উদযাপনের জন্য সময় পায় একটার্ম। এই একটার্মের সদ্ব্যবহারে তারা প্রতি সপ্তাহের বুধবার প্রোগ্রাম করে, মিডটার্মে প্রথম কনসার্ট করে। বুয়েটে প্রথমবারের মত ফ্ল্যাশ মব আয়োজন করে তারা। তাদের আরেক ইউনিক আইডিয়া প্রপোজ ডে। এই প্রপোজ ডে তে তারা তাদের ব্যাচমেট, জুনিয়র যাকে ইচ্ছা প্রপোজ করতে থাকে। এমনকি অনেক জুনিয়র মেয়েকে তাদের বয়ফ্রেন্ডের সামনে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলারও অভিযোগ উঠেছিল এই প্রোগ্রামকে ঘিরে। এই প্রোগ্রামের সুযোগে সেসময়ের জুনিয়র ব্যাচের অনেকে তাদের সিনিয়র মেয়েদের প্রপোজও করে নেয়। এই র‍্যাগ আয়োজনের ইতি ঘটে র‍্যাগব্যাচের এক ছাত্রের অনাকাংখিত মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।

এবার বুয়েটের র‍্যাগ ব্যাচ অদ্বয়’০৮। তারা র‍্যাগ উদযাপনের জন্য এক একাডেমিক ইয়ার সময় পেলেও প্রথম টার্ম থেকেই তোড়জোড় শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় আয়োজন করে কালারফেস্ট, কনসার্ট। গত কয়েকদিনের রঙ মারামারির পর গতকাল ছিল তাদের র‍্যাগ কনসার্ট। মূল কনসার্টের প্রাক্কালে বৃষ্টি শুরু হয়। এরই এক ফাঁকে ঐ জুনিয়র ছেলে ঘটিয়ে বসে অঘটনটি। র‍্যাগব্যাচের ছেলেরা তাকে প্রাথমিক মারের পর সরিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে হাজির করে কনসার্টের মাঝখানে। প্রশাসনকে অভিযোগ দায়েরের পর তাকে ও সহযোগী বন্ধুকে আবার স্টেজে তুলে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়।

এমতাবস্থায় কিছু প্রশ্ন আসে।

ছেলেটিকে মারা হয়েছে, প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। বিচারাধীন অবস্থায় তাকে এভাবে জনসম্মুখে হেনস্তা কি যৌক্তিক?

বুয়েটের বহিরাগত বন্ধুরা কনসার্ট দেখতে এসে বুয়েট সম্পর্কে কি বার্তা পেল? স্টেজের উচ্চকিত এই ছেলেগুলোই না দিনকয়েক আগেও বুয়েতানুভূতিতে অক্কা যাচ্ছিল?

ছেলেটি প্রথম বর্ষে পড়ে। ছেলেটি ও তার বন্ধু ঐ সিনিয়র ছাত্রীকে বলেছিল, “আপনার নাম কি? উই লাভ ইউ” এই অপরাধে এই শাস্তি গুরুদণ্ড নয়? ছেলেটিকে কি শোধরানোর সুযোগ দেয়া যেত না? অপমানে এই ছেলে যদি সুইসাইড করে তার দায়দায়িত্ব কে নেবে?

ঘটনার সুরাহা নাকি জনাকয়েক অত্যুৎসাহী ছাত্রের নিজেকে জাহির করা কোনটি এই ক্ষেত্রে অনুঘটক হয়েছিল?

যে কারণে আগের দুটি ব্যাচের অবতারণা, বুয়েটের সিনিয়র-জুনিয়র রিলেশন আসলে কোথায় যাচ্ছে? র‍্যাগব্যাচের র‍্যাগপ্রোগ্রাম কি সীমা ছাড়াচ্ছে? এই প্রোগ্রাম কি পুরো বুয়েটের প্রোগ্রাম হয়ে উঠতে পারছে না? কেন পারছে না?

--বাংলামায়ের ছেলে


মন্তব্য

ফরহাদ হোসেন মাসুম এর ছবি

সবাই মিলেমিশে থাকতে শিখুক, এটাই কামনা। কেউ কাউকে প্রপোজ করা নিয়ে মারামারির কি আছে, সেটা আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে ঢোকেনা। আমার গার্লফ্রেন্ড যদি আমাকে ভালোবাসে, তাকে হাজারটা ছেলে প্রপোজ করলেই কি, না করলেই কি !! উল্টো আমি তাদেরকে বাহবা দেই, আমার সাথে ওদের চয়েস মিলে যাওয়ার কারণে, এবং কিছুটা গর্বিত হই, সেই মেয়েটি আমার সাথে থাকার কারণে চাল্লু

সবজান্তা এর ছবি

আপনার বর্ণনাতে ঘটনাটা খুব বেশি ডিটেইলে নেই, কাজেই মন্তব্য করা সহজ না। ঘটনার অপর পিঠটাও জানা জরুরী। তবে সাধারণভাবেই কিছু কথা বলা সম্ভব-

হয়তো বুয়েট কিংবা বাংলাদেশের কালচারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না- কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একজন ছাত্র, কোনো এক ছাত্রীকে যদি তার ভালো লাগার কথা জানায়, এতে সমস্যাটা কোথায়? তবে অবশ্যই ভদ্রতার সীমা অতিক্রম করা যাবে না, সেটা সিনিয়ার জুনিয়ার যে যাকেই প্রেম নিবেদন করুক। প্রেম জানানো তো কোন ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ না যে তার জন্য শাস্তি পেতে হবে। যাকে প্রেম নিবেদন করা হলো, তার সম্মতি না থাকলে, সেও সেটা জানাক।

আমি জানি না জুনিয়ার ব্যাচের ছেলেটা ভদ্রতার সীমা অতিক্রম করেছিলো কিনা। যদি করেও থাকে, তবু কি তাকে শারীরিকভাবে আঘাত করার অধিকার সিনিয়ার ব্যাচের ছাত্রদের ছিলো? পুরো ঘটনা না জানাতে হয়তো স্ট্রিক্ট মন্তব্য করতে পারবো না, কিন্তু গায়ে হাত তোলা কোন অবস্থাতেই সমর্থন করিনা।

নীল রোদ্দুর এর ছবি

একটা জিনিস বুঝিনা, বুয়েটের কারোর পেটে অসুখ হলেই একটা ব্লগ কেন লিখে ফেলে পাবলিককে দিয়ে সেটা গেলাতে হবে। ভাই বুয়েটিয়ানরা যত চাইল্ডিশ ব্যাপার নিয়ে ক্যাচাল করে, আবার সেটা নিয়ে ব্লগ লিখে, এদের লজ্জাও করে না। র‍্যাগ করতে পারতেছেন না ঠিক মত, এটা কি পাবলিকের জানার বিষয় না মাথা ব্যাথার বিষয়?

সব জায়গায় একি কথা, অমুক জুনিয়র বেয়াদবি করছে, অমুক সিনিয়র বাড়াবাড়ি করছে, প্রবলেমটা কি ভাই? নিজেদের প্রবলেম নিজেরা বুঝেন আগে, তারপর পাবলিকরে বইলেন।

--------------------
বাই দ্য ওয়ে, ভাববেন না নন-বুয়েটিয়ান এসে বুয়েট নিয়ে দুইটা খারাপ কথা বলে গেল, বরং এক্স-বুয়েটিয়ান হিসেবে বুয়েটিয়ানদের মস্তিষ্কহীনতা দেখে দেখে বিরক্ত হয়ে কথা গুলো বললাম।

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

লোল...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

খুবই সিলি ব্যাপার। ১-১ এর ছাত্ররা ফটাশ করে ৪-২ এর আপুকে বলেছে এটা খুবই নাইভ ব্যাপার হয়েছে। মেয়েটাই সামলাতে পারতো ব্যাপারটা। সেখানে মারধোর, সবার সামনে অপমান এসব না করলেই পারতো।

একই সুত্র ধরে ইদানীংকার ড়্যাগের বিষয়টা আমি মানতে পারি না। ড়্যাগেও ঠিক এইভাবে সিনিয়াররা জুনিয়ারদের নাস্তানাবুদ করে। ড়্যাগ সংস্কৃতি আমার কাছে ঠিক সুস্থ মানসিকতার কিছু মনে হয় না।

আমার মনে হয়েছে বুয়েটে সাম্প্রতিক ছাগু গ্রেফতার ঘটনার প্রেক্ষিতে সেখানকার আরো কিছু সমস্যা তুলে ধরতে লেখাটা লিখেছেন "বাংলামায়ের ছেলে"। তবু ভবিষ্যতে লেখার প্রকাশের আগে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আর অগুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বিবেচনা করার অনুরোধ রইলো।

রাহী এর ছবি

ভালো বলেছেন। আসলেই একটু চাইল্ডিশ লেখা। শুভবুদ্ধির উদয় হোক !

আইলসা  এর ছবি

কি করবেন ভাইডি? বুয়েটের পোলাইন মনে করে, হ্যারাই বাংলাদেশের একমাত্র হ্যাডম।
আর নেটের যেইহানে বাংলা কথা আছে, বুয়েটের লুকজন থাকবোই থাকবো।
বুয়েটের আবার একটা কথা আছে, বুয়েটের ব্যাপারটাই আলাদা
কারো অনভূতি আহত হইলে, নিজ দায়িত্বে মলম কিন্যা নিয়েন, মলম দিমুনা
আর এই কমেন্ট সর্ম্পূন হিংসামূলক। ঠিক আছে।

পল্লব এর ছবি

র‍্যাগ করতে পারতেছেন না ঠিক মত, এটা কি পাবলিকের জানার বিষয় না মাথা ব্যাথার বিষয়?

গড়াগড়ি দিয়া হাসি চলুক

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

একজন পাঠক এর ছবি

চলুক

Emran  এর ছবি

বুয়েটের ঘটনা দুঃখজনক। কাউকে "আই লাভ ইউ" বলা আর "প্রপোজ" করা যে সমার্থক না, এই বোধ আমাদের দেশের মানুষের কবে হবে সেটাই চিন্তা করছি!

 মেঘলা মানুষ এর ছবি

মূলকথা হল: অসহিষ্ণুতা।
তবে, এটা বুয়েটের একার সমস্যা না। এরকম সিনিয়র-জুনিয়র বিরোধ সবজায়গাতেই আছে।

guest_writer এর ছবি

বুয়েট পড়ুয়াদের এইসব সিনিয়র, জুনিয়র কাণ্ড দেখে আমি চরম বিরক্ত। দেশে, বিদেশে যেখানেই যাক এরা এই আবর্জনা সঙ্গে নিয়ে যায়। পরিচয় পর্বে এদের দ্বিতীয় প্রশ্ন সবসময় "আপনি কোন ব্যাচ?"। এরে
এই মানসিকতার জন্য বেশিরভাগই অসম ব্যাচের সাথে মিশতে পারেনা। কারন এরা জুনিয়রদের কাছ থেকে তৈলময়তা আশা করে এবং সিনিয়রদের তৈল মর্দন করে। আমি কখনই বুয়েটিয়ানদের মধ্যে অসম ব্যাচের কারও সাথে সেরকম প্রাণখোলা বন্ধুত্ব দেখি নাই।

সত্য কথন এর ছবি

প্রথমেই এই একপেশে এবং আংশিক তথ্য সম্বলিত পোস্টের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আপাত দৃষ্টিতে এটা আপনার কাছে বড় আপুর সাথে হালকা রসিকতা মনে হলেও এর ফলাফল সূদুরপ্রসারী। এবং আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি অভিযুক্ত ছেলেগুলো সেই সিনিয়র আপুদের প্রথমে একবার অডিটরিয়ামের সামনে টিজ করে। এবং পরবর্তীতে ওল্ড একাডেমিক বিল্ডিং এর সামনে গিয়ে আবারো টিজ করে। এরকম দফায় দফায় টিজ করার ঘটনা বুয়েটে নজিরবিহীন। আপনার কাছে ব্যাপারটা হালকা বলে মনে হলেও টিজিংয়ের শিকার হওয়া মেয়েদের মনস্তত্ত্বে তা ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। এবং আপনার জ্ঞাতার্থে আরো জানাচ্ছি ছেলেগুলো শুধু প্রপোজই করেনি, বরং উলটাপালটা ভাষায় তাদের চাইতে কয়েক ব্যাচ সিনিয়র আপুদের উত্ত্যক্ত ই করছিলো। এরকম পিছে হেঁটে হেঁটে “উই লাভ ইউ” বলা কোন প্রপোজ হিসেবে গণ্য হয়না-তা আপনি যতই “হালকা দুষ্টুমি” বা “রোমান্টিক” ফ্লেভার মাখানোর চেষ্টা করেন না কেন।
“ছাত্রীর ভাষায় এবং অভিযুক্তদের পরবর্তী স্বীকারোক্তিতে যেটা ইভটিজিং হিসেবে গণ্য হয়েছে” আপনার এই লাইনটায় বলে ইভটিজিং সম্পর্কে আপনার ধারণা কেমন তা বুঝা যাচ্ছে এবং এই ঘটনাকে যে আপনি ইভ টিজিং বলতে নারাজ তাও স্পষ্ঠ। কেন ভাই? চিনেন না, জানেন না এরকম মেয়েকে উত্ত্যক্ত করাই তো ইভটিজিং। এখানে অন্যের জবানবন্দীতে কেন সেটাকে ইভটিজিং বলছেন? সরাসরি নিজে স্বীকার কী সমস্যা?

এবার আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিইঃ

১। বুয়েট ক্যাম্পাসে ইভটিজিং এর মত ঘটনা র‍্যাগ ব্যাচ হিসেবে অদ্বয়’০৮ কখনো সহ্য করবেনা। যাদের কারণে আমাদের সহপাঠিনীরা ক্যাম্পাসে নিরাপদ ও স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করেনা তাদেরকে আমরা জানোয়ার বলে মনে করি এবং জানোয়ারদের জনসম্মুখে হেনস্তা করা যায় না, তাদের পরিচয় সবাইকে জানিয়ে দেয়া যায় মাত্র। ঐ জানোয়ারদের হাত থেকে অন্যরা যাতে নিরাপদ থাকতে পারে তাই তাদের মুখোশ সবার সামনে খুলে দেয়া হয়েছে। ছেলেটাকে মারা হয়েছে এই অভিযোগও অযৌক্তিক। দু’একটা চড় থাপ্পড় হয়তো দেয়া হয়েছে।

২। বহিরাগতরা কনসার্ট দেখতে এসে এই বার্তা পেল যে এই ক্যাম্পাস আর দশটা ক্যাম্পাস থেকে অনেক আলাদা। এখানে ইভটিজার দের কুকুরের মত ট্রিট করা হয়। এতে বুয়েট ক্যাম্পাসের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে বলেই আমি মনে করি।

৩। প্রথম বর্ষে পড়লেও ছেলেগুলা এর আগেও ক্যাম্পাসে বেশ কয়েকটি ঘটনায় জড়িত ছিল। তাই তাদের এই ঘটনা কোন দুর্ঘটনা নয়। আর দুইটা মেয়ের পিছন হেঁটে হেঁটে বারবার নাম জিজ্ঞেস করা, ভালবাসি বলা- এটা কোন লঘু অপরাধ নয়। তারচেয়ে বড় কথা ছেলেগুলো আরো বাজে বাজে কমেন্টও করেছিল এবং এই কাজ তারা অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই দুইবার করেছে যেটা আপনি সম্পূর্ণ চেপে গেছেন। সম্ভবত আপনার নৈতিকতা শিক্ষায় ঘাটতি আছে যার ফলে ইভটিজিং এবং টিজারদের প্রতি আপনার দুর্বলতা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়।
আর শোধরানোর সুযোগ? সুযোগ সবসময় ই থাকছে। অপমানবোধ থাকলে তারা এই নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটাতোনা। আর স্যুইসাইড? হাহাহা। বললাম তো ভাই, ইভটিজারদের মান সম্মান থাকেনা।

৪।এই ধরনের ঘটনার কোন সুরাহা হয় না। এটা দুই পক্ষের মারামারি না।
উত্ত্যক্তকারীদের দৃষ্টান্তমূলক উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, যাতে আর কেউ এই ধরনের ঘৃণ্য কাজ করতে সাহস না পায়-এটাই একমাত্র অনুঘটক হিসেবে কাজ করছিল।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ছেলেটাকে মারা হয়েছে এই অভিযোগও অযৌক্তিক। দু’একটা চড় থাপ্পড় হয়তো দেয়া হয়েছে।

চর থাপ্পড় কি আজকাল চুম্মা দেওয়ার সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে নাকি! চিন্তিত

সত্য কথন এর ছবি

প্রথমেই এই একপেশে এবং আংশিক তথ্য সম্বলিত পোস্টের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আপাত দৃষ্টিতে এটা আপনার কাছে বড় আপুর সাথে হালকা রসিকতা মনে হলেও এর ফলাফল সূদুরপ্রসারী। এবং আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি অভিযুক্ত ছেলেগুলো সেই সিনিয়র আপুদের প্রথমে একবার অডিটরিয়ামের সামনে টিজ করে। এবং পরবর্তীতে ওল্ড একাডেমিক বিল্ডিং এর সামনে গিয়ে আবারো টিজ করে। এরকম দফায় দফায় টিজ করার ঘটনা বুয়েটে নজিরবিহীন। আপনার কাছে ব্যাপারটা হালকা বলে মনে হলেও টিজিংয়ের শিকার হওয়া মেয়েদের মনস্তত্ত্বে তা ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। এবং আপনার জ্ঞাতার্থে আরো জানাচ্ছি ছেলেগুলো কোন প্রপোজ করেনি, বরং উলটাপালটা ভাষায় তাদের চাইতে কয়েক ব্যাচ সিনিয়র আপুদের উত্ত্যক্ত ই করছিলো। এরকম পিছে হেঁটে হেঁটে বারবার “উই লাভ ইউ” বলা কোন প্রপোজ হিসেবে গণ্য হয়না-তা আপনি যতই “হালকা দুষ্টুমি” বা “রোমান্টিক” ফ্লেভার মাখানোর চেষ্টা করেন না কেন। তিনটা ছেলে দুইটা মেয়ের পিছন পিছন হেঁটে লাভ ইউ বললেই প্রপোজ হয়না। বরং খুব বাজেভাবে বিরক্ত করা হয়।
প্রথমে প্রপোজ এবং টিজিং এর সংজ্ঞা শিখে আসুন। তারপর পোস্ট লিখুন।
“ছাত্রীর ভাষায় এবং অভিযুক্তদের পরবর্তী স্বীকারোক্তিতে যেটা ইভটিজিং হিসেবে গণ্য হয়েছে” আপনার এই লাইনটায় বলে ইভটিজিং সম্পর্কে আপনার ধারণা কেমন তা বুঝা যাচ্ছে এবং এই ঘটনাকে যে আপনি ইভ টিজিং বলতে নারাজ তাও স্পষ্ঠ। কেন ভাই? চিনেন না, জানেন না এরকম মেয়েকে উত্ত্যক্ত করাই তো ইভটিজিং। এখানে অন্যের জবানবন্দীতে কেন সেটাকে ইভটিজিং বলছেন? সরাসরি নিজে স্বীকার করলে কী সমস্যা?

এবার আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিইঃ

১। বুয়েট ক্যাম্পাসে ইভটিজিং এর মত ঘটনা র‍্যাগ ব্যাচ হিসেবে অদ্বয়’০৮ কখনো সহ্য করবেনা। যাদের কারণে আমাদের সহপাঠিনীরা ক্যাম্পাসে নিরাপদ ও স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করেনা তাদেরকে আমরা জানোয়ার বলে মনে করি এবং জানোয়ারদের জনসম্মুখে হেনস্তা করা যায় না, তাদের পরিচয় সবাইকে জানিয়ে দেয়া যায় মাত্র। ঐ জানোয়ারদের হাত থেকে অন্যরা যাতে নিরাপদ থাকতে পারে তাই তাদের মুখোশ সবার সামনে খুলে দেয়া হয়েছে। ছেলেটাকে মারা হয়েছে এই অভিযোগও অযৌক্তিক। দু’একটা চড় থাপ্পড় হয়তো দেয়া হয়েছে।
২। বহিরাগতরা কনসার্ট দেখতে এসে এই বার্তা পেল যে এই ক্যাম্পাস আর দশটা ক্যাম্পাস থেকে অনেক আলাদা। এখানে ইভটিজার দের কুকুরের মত ট্রিট করা হয়। এতে বুয়েট ক্যাম্পাসের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে বলেই আমি মনে করি।
৩। প্রথম বর্ষে পড়লেও ছেলেগুলা এর আগেও ক্যাম্পাসে বেশ কয়েকটি ঘটনায় জড়িত ছিল। তাই তাদের এই ঘটনা কোন দুর্ঘটনা নয়। আর দুইটা মেয়ের পিছন হেঁটে হেঁটে বারবার নাম জিজ্ঞেস করা, ভালবাসি বলা- এটা কোন লঘু অপরাধ নয়। তারচেয়ে বড় কথা ছেলেগুলো আরো বাজে বাজে কমেন্টও করেছিল এবং এই কাজ তারা অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই দুইবার করেছে যেটা আপনি সম্পূর্ণ চেপে গেছেন। সম্ভবত আপনার নৈতিকতা শিক্ষায় ঘাটতি আছে যার ফলে ইভটিজিং এবং টিজারদের প্রতি আপনার দুর্বলতা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়।
আর শোধরানোর সুযোগ? সুযোগ সবসময় ই থাকছে। অপমানবোধ থাকলে তারা এই নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটাতোনা। আর স্যুইসাইড? হাহাহা। বললাম তো ভাই, ইভটিজারদের মান সম্মান থাকেনা।

৪।এই ঘটনার কোন সুরাহা হয় না। এটা দুই পক্ষের মারামারি না।
উত্ত্যক্তকারীদের দৃষ্টান্তমূলক উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, যাতে আর কেউ এই ধরনের ঘৃণ্য কাজ করতে সাহস না পায়-এটাই একমাত্র অনুঘটক হিসেবে কাজ করছিল।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

তাহলে আপনার কাছ থেকে শিখলাম যে ইভ টিজিং করলে মারধোর করে স্টেজে তুলে অপমান করা ঠিকাছে? বুয়েটের কর্তৃপক্ষ বা পুলিশের কাছে যাবার কোনো দরকার নেই?

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

অন্যরকম ধ্রুব এর ছবি

মুর্শেদ ভাই, ব্লগটা যেদিন আসছে সেদিনই ভাবছিলাম একটা রিপ্লাই দিই, কিন্তু অযথা বাক্যব্যয় করতে ইচ্ছা হয় নাই। নিচে একটা লম্বাচওড়া কমেন্ট দিয়েছি, পারলে একটু দেখবেন।

আপনার কথাটা আমি একটু মডিফাই করে দেই - ইভটিজিং করলে সঙ্গীসাথীপশুপাখিদের নাম উদ্ধার করতে চড়-থাপ্পর এবং প্রশাসনকে জানানোর পরেও প্রশাসনের গড়িমসি দেখলে স্টেজে তাদের নাম-পরিচয় জানায়ে ক্ষমা চাওয়ানো এবং পরে কখনও এমন কিছ করবেনা স্বীকার করানো ঠিকাছে। দেঁতো হাসি

বাই দ্য ওয়ে, কাকতালীয়ভাবে এখানেও 'ঘটনাস্থলে পুলিস উপস্থিত ছিল, কিন্তু তাদের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।' মামারা তাকায়া তাকায় দেখলে কী করতাম বলেন? খাইছে

সত্য কথন এর ছবি

আমরা মারধর করিনি। প্রশাসনের কাছে গিয়েছি। অপমান কথাটা এদের জন্য প্রযোজ্য না। মান-অপমান বোধ থাকলে অন্যকে অপমান করতে যেতোনা। অন্যরা যাতে এই জানোয়ারগুলো থেকে সতর্ক থাকতে পারে তাই এদের স্টেজে উঠানো হয়েছিল এবং মাফ চাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। যদিও এটা অমার্জনীয় অপরাধ।
আর পুলিশ? হাহ। হাসালেন ভাই। দয়া করে বাস্তবসম্মত কথা বলবেন। থিওরী কপচাবেন না।

কিষান এর ছবি

বাই দ্য ওয়ে, ভাববেন না নন-বুয়েটিয়ান এসে বুয়েট নিয়ে দুইটা খারাপ কথা বলে গেল, বরং এক্স-বুয়েটিয়ান হিসেবে বুয়েটিয়ানদের মস্তিষ্কহীনতা দেখে দেখে বিরক্ত হয়ে কথা গুলো বললাম।

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের ড়্যাগ ডে গেল গত মঙ্গলবার। ডিপার্টমেন্টের পাঁচটা ব্যাচ মিলে একসাথে ড়্যাগ অনুষ্ঠান করলাম। রাতে অনুষ্ঠানের শেষে জুনিয়রদের কান্না দেখে মনে হয়েছে জীবনে আর কিছু পাই আর না পাই, অকুন্ঠ শ্রদ্ধা আর ভালবাসা পেয়েছি এই জুনিয়রদের কাছ থেকে।
আমাদের একটি ১-১ ব্যাচ আছে, যাদের আমরা পেয়েছি মাত্র মাস পাঁচেক। অথচ এই ছেলেগুলোও আমাদেরকে চোখের পানিতে বিদায় দিয়েছে।
সত্যি বলতে কি বুয়েটের রেজাল্ট যখন দিয়েছিলো, দেখেছিলাম ওয়েটিং লিস্টে নাম আছে। তীর্থের কাকের মত অপেক্ষা করতাম, মেইন লিস্টের ছেলেগুলো যেন মেডিকেল বা ভার্সিটিতে ভর্তি হয়। কিন্তু বিড়ালের কপালে শিকে ছিড়ে নি।
কিন্তু আপনাদের গত কয়েকদিনের কর্মকান্ড আর আপনি গত তিন বছরের ড়্যাগ নিয়ে যা শোনালেন, তাতে আমার এই মফস্বলের ভার্সিটিকে(মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল) বুয়েটের চেয়ে হাজারগুনে সেরা মনে হচ্ছে। আমার মনে এখন আর কোন দুঃখ নেই।

অন্যরকম ধ্রুব এর ছবি

কথায় কথায় অমুক থেকে তমুক ভাল বলার চর্চাটা তো সুবিধার না। বুয়েট হাজার সমস্যায় জর্জরিত - খুব ভাল কথা!! সেটা নিয়ে আলোচনা করেন, সমালোচনা করেন। ফট করে তুলনা দিয়ে বসলে তো মশাই বিরক্ত লাগে।

অন্যরকম ধ্রুব এর ছবি

সত্যকথনের কমেন্টে মুটামুটি সবই উঠে আসছে। (যদিও তিনি কে, কোন ব্যাচের আমি জানিনা!!) আমি কিছু বিষয় এলাবোরেট করি। হাসি

বুয়েট ক্যাম্পাসে অনেক অপরাধই এখন গা সওয়া হয়ে গেছে। প্রথমবার সেই অপরাধগুলা হওয়ার সাথে সাথে যদি তখনকার র‍্যাগব্যাচসহ সব সিনিয়ররা শক্ত ভূমিকা নিত তাহলে আজকে সেগুলা গা সওয়া অবস্থায় আসতে পারত না। সো আমরা যখন ফাইনাল ইয়ারে আছি তখন আমরা সেই ভুলের পথে হাঁটবো না। জিরোএইটের হিস্ট্রি ঘাঁটেন, কথার সত্যতা পেয়ে যাবেন। এখন পর্যন্ত গত চার বছরে আমাদের ব্যাচকে কোন মারামারি-কোপাকুপি করে বুয়েটকে কলংকিত করতে হয়নি। বরং ইনোভেটিভ কাজকর্ম করেই পত্রিকার পাতা আর অন্যদের আলোচনায় বুয়েটের নাম নিয়ে আসছি। একটা ঘটনায় আমাদের ব্যাচের কয়েকজন জড়িত থাকায় তারা এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে ব্রাত্য। কয়দিন আগেও যে নাইন-ইলেভেনের মারামারির ঘটনা নিয়ে চারিদিকে তোলপাড় হল, তখন এই জিরোএইট ব্যাচই শাস্তির ঘোষণা না আসা পর্যন্ত প্রশাসনের সাথে দেনদরবার করে গেছে এবং দোষীদের শাস্তিও আসছে, ৮ জন স্ট্যান্ডিং সাস্পেনশান খাইসে। শয়তানী হাসি গত কয়বছরের তুলনায় যে এটা ভিন্ন ঘটনা সেটা কনসার্নদের জানার কথা। তাই প্রশাসনের কাছে যাওয়ার কথা যারা বলছেন তাদের সাথে আমরা পুরাপুরি একমত। আপনাদের অবগতির জন্য জানাই - ক্যাম্পাসে আমাদের রেপুটেশান হল 'কিছু হইলেই জিরো এইট প্রশাসনের আছে যায়।'। এবং এই ঘটনাও সাথে সাথেই ডিএসডাব্লিউকে জানানো হইছে। বরং আপনাদের অফ দ্য রেকর্ড বলে যাই - এই ঘটনা নিয়ে আমরা প্রশাসনের কাছে গেছি শুনেই একাধিক টিচার আমাদের 'গবেট' সাব্যস্ত করসে!! ছাগুরাম সুলভ আমাদের শুনতে হইছে এইরকম একটা ঘটনায় তো ধরে মাইর দিয়ে দিলেই হয়, স্যারদের কাছে যাওয়ার কী দরকার। কারণ টিচারদেরই জানা নাই আদৌ বুয়েটের কস্টিটিউশানে ইভ টিজিং এর কোন শাস্তি আছে কিনা। এরপরেও তাদের বিচারের দায়িত্ব আমরা প্রশাসনের কাছেই ছেড়ে আসছি। এখন যদি কেউ ঘটনার পুরোটা না জেনেই আলোচনায় আসেন তাহলে কিছু বলার নাই। কেবল আমাদের জিরোএইটানুভূতিতে আঘাত দেয়ার আগে একটু খোঁজ খবর নিয়ে নিবেন। (এই প্যারাতে প্রশাসনকে কতটুকু গুরুত্ব দেই আমরা সেটা জানালাম! ফাঁকতালে নিজেদের ঢোল পিটানোও হল!! দেঁতো হাসি )

সেদিন বিকালে শহীদ মিনারের সামনে যা হয়েছে, সেটা কোন ডাউট ছাড়া ইভ টিজিং। এইটাকে ডিফেন্ড করা বা সিম্প্যাথি দেয়ার চেষ্টা যারা করছেন তাদের জন্য কিছু বলার নাই। গ্রো আপ। মেয়েদের সম্মান করা ভার্সিটির সেকেন্ড-থার্ড ইয়ারে সেখানো হয়না যে ফার্স্ট ইয়ারের কেউ ইভটিজিং করলে তাকে সিম্প্যাথি দেয়া লাগবে। এইটা স্কুলের শিক্ষা। তার উপরে এরা নতুন ভর্তি হওয়া ফার্স্ট ইয়ারও না। এরা ১/২ এর ছাত্র, এদের জুনিয়র একটা ব্যাচ ১/১ এ আছে এবং গেল সপ্তাহে (আমাদের কনসার্টের আগের দিন) ওরা ক্যাম্পাসে প্রোগ্রাম করে বর্ষপূর্তি উদযাপন করেছে। সো সিম্প্যাথিঅলারা আপনাদের সিম্প্যাথি দিয়ে ছেলেগুলারে আরো বখে যাইতে উৎসাহ দিবেন না। (কেন ফার্স্ট ইয়ার হওয়াতে সিম্প্যাথি পাবেনা!!)

আর ইদানীং মারধরের যে ট্রেন্ড বুয়েটে আছে, তাতে তো সিনিয়র মেয়েদের সাথে বেয়াদবির ফলাফলে সবাই মিলে ভীম মাইর দেয়ার কথা! কিংবা চাপাতি নিয়ে দৌড় দিবার কথা। সেরকম কিছু হইছে নাকি?? রড-স্ট্যাম্প-হকিস্টিক নিয়ে ধাওয়া দিছে নাকি কেউ??? গাছের একটা কচি ডালের চিহ্নও দেখাতে পারেন??? অভিযুক্তদের কে কই আহত হইছে একটু জানাবেন??? সো না জেনে কিছু চাপায়ে দেয়া উচিত না। ওদের যে দুই-চারটা চড়-থাপ্পর দেয়া হইছে সেটা তাদের সঙ্গীসাথীদের নাম জানার জন্য দেয়া হইছে। তারপরেও তারা তাদের এক সহযোগীর নাম বলে নাই, অথচ সেই সহযোগীই সবচেয়ে বড় কালপ্রিট ছিল। শেষে আমরা বিরক্ত হয়ে বাদ দিসি। দরকারবোধ করলে ছেলে দুইটার ফোন নাম্বার নিয়ে কথা বলে জেনে নিয়েন। দয়া করে জিরোএইট এই ঘটনার জন্য জুনিয়রদের মারপিট করসে - এই ট্যাগিং লাগাতে আইসেন না। মন খারাপ আশা করি আমাদের বিবেচনাবোধ খুব একটা খারাপ না। কোন ঘটনাতে কাউকে চড় দেয়া যায়, কয়টা দেয়া যায় সেই লিমিট আমাদের জানা আছে। (এই প্যারাতে চড়-থাপ্পরের ব্যাখ্যা দিলাম!)

এবার বলি স্টেজে ওঠানো নিয়ে। টিচারদের সাথে কথা বলে একটা বিষয় মুটামুটি স্পষ্ট ছিল যে তারা এর জন্য তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে না। তাই এইসব ছেলেপিলেরে ভবিষ্যতে ঠিক করার জন্য সবার সামনে লজ্জা দেয়াটাই আমাদের উচিত কাজ মনে হয়েছে। তাই কনসার্টের স্টেজে তাদের তোলা হয়েছে, সেখানে তাদের নাম-পরিচয় জানানো হয়েছে, কেউ যদি ভবিষ্যতে ইভটিজিং করে তাহলে তাদেরকেও এরকম অপমানজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হবে এই হুমকি(!) দেয়া হয়েছে এবং সেই ছেলেরা সবার কাছে মাফ চেয়ে আর কখনও এমন কাজে জড়াবে না ঘোষণা দিয়েছে। এইটার চেয়ে ভদ্র কোন শাস্তি আমাদের ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে আসে নাই। (কনসার্টে কেন তোলা হল তার ব্যাখ্যা দিলাম!)

আর যারা মাঝ দিয়ে যারা বুয়েটে সিনিয়রদের প্রতি জুনিয়রদের ভালবাসার কথা বলছেন, তাদের জন্য বলি - এই একই ঘটনার রাতে আমরা ৫-৭ জন সারারাত ক্যাম্পাসে ছিলাম সাউন্ড সিস্টেম, স্টেজের কাজে। এবং আমাদের সাথে আমাদের দ্বিগুণ সংখ্যক জুনিয়র সারারাত মুখ ব্যাজার করে বসে ছিল, নিশ্চয়ই খুব মাস্তি করতে না, বড় ভাইদের বিদায়ের কষ্ট নিয়েই। আবার কী কাকতাল জানেন? তারা আবার ঘটনার সাথে জড়িতদেরই বন্ধুবান্ধব!! জুনিয়র ব্যাচের দুই একটা ঘটনা দিয়ে যদি বুয়েটের সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক বিচার করতে যান তাহলে আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন। গ্রো আপ। (বুয়েটানুভূতিতে কিঞ্চিত আঘাত লেগেছে আর কী!!)

আর হ্যাঁ, আমি বুয়েটের বর্তমান র‍্যাগব্যাচ, অদ্বয় '০৮ এর একজন এবং স্টেজে উঠে ছেলে দুইটার পরিচয় জানানোদের একজন এবং ঘটনাক্রমে ছেলে দুইটার ক্যাম্পাসে সবচেয়ে ক্লোজ সিনিয়রদের একজন। দুইটা জুনিয়রকে স্টেজে তুলে ক্যাম্পাসে নিজেদের জাহির করার মতো দুর্দিন এখনও জিরোএইটের আসে নাই। গত দু-চার বছরে বুয়েট সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখলে আমাদের কাজকর্মের খোঁজ জানার কথা। (আবারো জিরোএইটানুভূতি!!!)

পুরা ঘটনাটার সামারি হল - ১/২ এর ৪ জন ছেলে ৪/১ এর ২টা মেয়েকে শহীদ মিনার, ওএবির সামনে উপর্যুপরি ইভটিজিং করে। মেয়েদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের খুঁজে বের করা হয়। ঘটনার সাথে কে, কে জড়িত ছিল সেটা জানতে থাপড়ানো হয়। তারপর তাদের কথার ভিত্তিতে প্রশাসনকে অভিযোগ করা হয়। এবং সবার সামনে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয় এবং তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে। ব্যাস!!!

সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট কথাটা বলি - ঘটনাটার সাথে র‍্যাগের প্রোগ্রামের কোন সম্পর্ক নাই। ঘটনাক্রমে ভিক্টিমরা র‍্যাগব্যাচের হওয়ায় র‍্যাগব্যাচকে সরাসরি ইনভল্ভ হতে হয়েছে। মেয়েরা থার্ড ইয়ার বা সেকেন্ড ইয়ারেরও হতে পারত। তাই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুয়েটের র‍্যাগ প্রোগ্রামকে বিতর্কিত করার সুযোগ নাই।

(The Awkward Moment যখন ক্যাম্পাসে জুনিয়রদের কাছে শুনি - আপনারা এতো কমের উপর দিয়া ছাইড়া দিলেন এবং আর বলগে শুনি - কী বিশাল ঘটনা ঘটে গেছে!!! অ্যাঁ )

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ঘটনাটা আপনার মন্তব্যে যতটা পরিষ্কার হলো ততটা এই পোস্টে কিংবা সত্যকথনের মন্তব্যে অতটা পরিষ্কার হয়নি। ক্রমাগত এইসব ঘটনায় একটা আন্ডালাইয়িং সমস্যা প্রকট ভাবে ধরা পড়ে। বুয়েট প্রসাশনের ব্যর্থতা। এ ব্যাপারে কি করা যেতে পারে জানা নেই। কিন্তু এটা না সমাধান করলে এই অবস্থা ভালো হবার সম্ভাবনা দেখছি না।

অন্যরকম ধ্রুব এর ছবি

দেঁতো হাসি

অন্যরকম ধ্রুব এর ছবি

তখন সময় ছিল না তাই একটা ইমো দিয়ে পালাইছিলাম। প্রশাসন নিয়ে সর্বশেষ আপডেট দেই। এই একটু আগের ঘটনা, ধরেন মিনিট বিশেক আগের। মূর্ছনা (বুয়েটের সাংস্কৃতিক সংগঠন) বর্ষাবরণের একটা অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছিল সেমিনার রুমে (অডির উপরের ছোট হলটায়)। সারাদিন সেখানে রিহার্স করলেও অনুষ্ঠান শুরুর আধঘণ্টা আগে ডিএসডাব্লিউ স্যারের হস্তক্ষেপে সেমিনার রুমে সে অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ? কারণ হল পিএল শুরু হয়েছে, তাই কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে দেয়া হবেনা!! অথচ এই প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা শীর্ষ ব্যক্তিরাই সপ্তাহখানেক আগে যখন ক্লাস না বাড়ানোর জন্য গেলাম তখন মুখের ওপর ঝামটা দিয়ে বলল যে পরীক্ষা তো দিবা সেই ঈদের পরেই, এখন কেন ক্লাস না করার বুদ্ধি করতেছো??

এই হল অবস্থা।

এই সমস্যার সমাধান আসলে আমাদের কারো হাতেই নাই। বুয়েট কর্তৃপক্ষ কিংবা সরকার বাহাদুর সদাশয় হয়ে যদি সমাধানে আগাই আসে তো আসলো, নাহলে এমেরশিদের দেখানো পথেই চলবে বুয়েট!!!

guest_writer এর ছবি

ঘরের কথা পরেরে জানানো ঠিক না ভাইডি। হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।