এক মাওলানা গেলেন প্রত্যন্ত এক এলাকায় ধর্ম প্রচার করতে। এই এলাকায় তিনিই প্রথম ইসলামের আলো নিয়ে আসলেন। এলাকাবাসীকে ঈমান, আকীদা নানা বিষয়ে জ্ঞান দিলেন। নামাজ শেখালেন, দোয়া দুরুদ শেখালেন। এইভাবে সুন্দর করে ধরমচর্চার তরতরিকা শেখালেন, দেখতে দেখতে প্রায় বছর পুরতে চলল। রমজান মাস সমাগত হলো।
শবে বরাতের পরের শুক্রবার মাওলানা এলাকাবাসীকে প্রথমবারের মতো রমজানের ব্যাপারে বল্লেন। কি করা যাবে, কি করা যাবেনা বুঝালেন। এও বললেন চাঁদ দেখার পর দিন রমজান আসবে। আর রমজান আসলে- ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার ছাড়া থাকতে হবে শুনে এলাকাবাসীর ইয়ে শুকিয়ে গেলো। কেউ কেউ বড় করে ঢোক গিলে এদিক অদিক তাকালো অসহায়ের মতো। তাদের চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছিল এতদিন নামাজ -কালাম পর্যন্ত ঠিক ছিল, উপোস থাকার কথা শুনে তাদের ইমান ভাল ঝাকি খেয়েছে। তারা ভাবলো এই মাওলানা নিজে এসে এতো সব নামাজ কালাম জারী করেছেন, আবার আসবেন "রমজান" ইনি আসলে না খেয়ে থাকতে হবে, কি মুসিবত !!!
পরের দিন এলাকাবাসি নিজেরা বসে মিটিং করল। তারা বেশিরভাগ ই চাষী, সারাদিন ক্ষেতে হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খাটতে হয়। এর উপর যদি ভাত পানি না খাওয়া হয় ১ মাস, তাহলে তাদের খবর হয়ে যাবে, তাই তারা ঠিক করলো, রমজানকে আসতে দেয়া যাবে না। কিন্তু রমজান কোন দিক দিয়ে আসবেন, দেখতে কেমন কারুর ই ধারনা নাই, তাই সবাই সতর্ক পাহারাদারীর ব্যাবস্থা করলো। কিন্তু মাওলানাকে এই ব্যাপারে কিছু জানালো না।
নিরদ্রিষ্ট দিনে মাওলানা মনে করিয়ে দিলেন আজ রাতে চাঁদ উঠলে রমজান আসবে। মাগরিবের নামাজের পর আকাশে চাঁদ দেখে এলাকাবাসী চিন্তা করলো আজ রাতে পাহারা জোরদার করি, কোনোভাবেই রমজান কে গ্রামে ঢুক্তে দেয়া যাবে না। একবার ঢুকে পড়লে এক মাসের জন্য খাওয়া দাওয়া বন্ধ। চলল সারারা্ত পাহারা, কেঊ এলনা গ্রামের দিকে। ভোরের দিকে পাশের জঙ্গল থেকে এক হরিণ তার ২ টা বাচ্চা নিয়ে মাঠ পার হচ্ছিল।
বোকা গ্রামবাসীরা সারারাত পাহারা দিয়ে নতুন কাউকে গ্রামের দিকে আসতে দেখেনি, উদ্বিগ্ন অবস্থায় এই হরিন পরিবার দেখে তারা ভাবলো - ' রমজান কি তাহলে হরিনের ছদ্মবেশ ধরে গ্রামে ঢুকতে চাইছে ?' সবাই মিলে ধাওয়া করে হরিনটাকে মেরে ফেলল। একজন আবার বুদ্ধি দিল 'বাচ্চাগুলা বাচিয়ে রাখার দরকার কি ? বড় হলে এরা রমজান নিয়ে আসবে, ভেজাল শেষ করো একবারেই'। যেই কথা সেই কাজ। হরিন ফ্যামিলি খতম, মানে রমজানই খতম। আর না খেয়ে এবাদত করা লাগবে না !!!
পরের দিন মাওলানা দেখেন, এলাকার কেউ রোজা রাখেনি, দিব্বি খাওয়া দাওয়া করছে, মাওলানা তাদের দেকে বললেন
" কি হলো রমজান এলো তোমরা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করনাই কেন ?"
তারা বলল " রমজান আসে নাই, আমরা গ্রামে ঢুকার আগেই রমজানরে মেরে ফেলছি" শুনে মাওলানা বলেন "আস্তাগফিরুল্লাহ!!!!"
গ্রামের একজন মুচকি হেসে বলল
" অই ছোট ছোট আস্তাগফিরুল্লা ২টারেও মেরে ফেলছি, আর চিন্তা নাই!!!!!!"
মরাল অফদা স্টোরি হইল বেকুবের কাজ থেকেও শেখার জিনিষ আছে,
-শুধু বুড়া শকুন "গোলাম"-এর বিচার করলে কাজ শেষ না, আস্তাগফিরুল্লাহ ছোটগুলারেও ব্যবস্থা করতে হবে।
- মুকুল চৌধুরী
মন্তব্য
আজকে রায় মানে ঈদের দিন আসেন কোলাকোলি করি
উদ্ভট!
কি বলে কি বোঝাতে চাইছেন? বেকুবেরা ৩ টা নিস্পাপ প্রাণী হত্যা করেছে, তার সাথে রাজাকারের বিচারের কি সম্পর্ক?
রাজাকারেরা কি নিস্পাপ? রাজাকারেরা এই মহাজাগতিক ইতিহাসে সর্বনিকৃষ্ট জীব। কোন হিংস্র পশুও তার স্বজাতির উপর এমন বর্বর নিপীড়ন চালায়না।
রাজাকার ও বাচ্চা রাজাকার, নব্য রাজাকার সবকটাকে ফাঁসিকাষ্ঠে চড়ানো হবে। "হেফাজতে রাজাকার" গঠন করলে আমরাও গঠন করব রাজাকার নির্মূল ব্রিগেড।
নতুন মন্তব্য করুন