• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

যে ছবি দেখলামঃ বারান

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ২৯/০৭/২০১৩ - ২:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

220px-Baran_FilmPoster

[ডিস্ক্লেইমারঃ আমি ফিল্ম সমালোচক নই। ছবি পোকাও নই। মাঝে মধ্যে দেখি। বলা ভালো সিনেমাপাগল গুটি কয়েক বন্ধু-বান্ধবের পাল্লায় পরে কিছু ফিল্ম দেখিত হয়েছি। এটাকে কোনভাবেই ফিল্ম রিভিউ বলা যাবের না। বরং বলা যেতে পারে, একটা ভালো ছবি দেখে তার ভালো লাগার রেশটা সচলের দেয়ালে লাগিয়ে দেওয়া। এটুকুই।]

মেয়েটার জুতো আঁটকে যায় কাদায়। ছেলেটি তুলে দেয়। মেয়েটি জুতো পরে একটা ছোট্ট খাট্টো ট্রাকে ওঠে। ট্রাক চলতে শুরু করে, মিলিয়ে যায়। একদল পাখিও উড়ে যায় হঠাৎ। ছেলেটি থমকে দাঁড়ায়। বৃষ্টি নামে। ক্লোজ শটে মাটি ধুয়ে যায়। মেয়েটির জুতোর চাপে হয়ে যাওয়া গর্ত সিক্ত হয় বারিধারায়।
এটা ‘বারান’ ছবির শেষ দৃষ্য। ইরানের প্রখ্যত পরিচালক, প্রখ্যত বললে ভুল হবে, বলা ভালো এক জাদুকর যিনি ক্রমাগত ম্যাজিক দেখিয়ে যান দৃশ্য নির্মান করে, সেই মাজিদ মাজিদির একটি অসামান্য সৃষ্টি। ‘চিলড্রেন ওফ হেভেন’ কিংবা ‘সংস অফ স্প্যারো’র মতন এ ছবিতেও সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার গান গেয়েছেন মাজিদি। দারিদ্র-প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি-ব্রাত্যজনের রুদ্ধসঙ্গীত - সব কিছু ছাপিয়ে এ ছবি কেমন করে যেন হয়ে উঠেছে জীবনের উৎযাপন।

গল্প না বলাই ভালো। তারচে বরং ছবির প্রেক্ষিতটা দেখে নেওয়া যাক। উত্তর- সোভিয়েত আগ্রাসন পর্বে ক্রমাগত গৃহযুদ্ধ, তালিবানী (অপ)শাসন, খরা, অনাহারে বিদ্ধস্ত আফগানিস্তানের অগণিত মানুষ পেটের টানে চলে আসে প্রতিবেশী ইরানে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর তকমা গায়ে সেঁটে, ন্যুনতম মজুরি হারাবার ভয় নিয়েও ওরা শ্রমিকের কাজ করে চলে। এই ছবি শুরু হচ্ছে এমনি একটি নির্মিয়মান বহুতলে, যেখানে প্রচুর আফগান শ্রমিকের কাজ করেন। সেখানেই রান্না-শ্রমিকদের পরিবেশন -টুকিটাকি ফাইফরমাশ খাটে লতিফ বলে এক ইরানী সদ্যযুবক। কিছুটা খ্যাপাটে, আত্মভোলা। ঘটনাচক্রে তার কাজ দখল হয়ে করে নেয় এক আফগান কিশোর( নাকি কিশোরী?)। আর লতিফকে নাম লেখাতে হয় শ্রমিকের খাতায়। তীব্র ক্রোধে নিশপিশ করে তার গোটা শরীর। প্রতিশোধস্পৃহায় নিশপিশ করে রক্ত। যেনতেন প্রকারে সে অপদস্ত করার চেষ্টা করে। তারপর?

তারপর সব কি করে যেন সব বদলে যায়। সব। রাগ-ক্রোধ-অভিমান সব বদলে যায় প্রেমে। হ্যা। কিন্তু কোন শব্দ উচ্চারিত হয়না। কথার মালা না গেথে মাজিদি বরং নির্মান করেছেন কিছু দৃশ্য। কাছের মানুষের খোজে লতিফ মিথ্যে কথা বলে টাকা নিয়ে পারি দেয় ইরানের আফগান বস্তিতে। কিন্তু প্রথাগত ফর্মুলায় না হেটে পরিচালক শুধুই চরিত্রদের মুখের অভিব্যাক্তি, চাহনি দিয়েই নির্মাণ করে গেছেন একের পর এক দৃশ্যপট।

আগেই বলেছি, আমি বিশেষজ্ঞ নই। তবুও টেকনিক্যাল দু-এক্টি বিষয় উল্লেখ করার লোভ সামলাতে পারছি না। প্রথমেই সিনেমাটোগ্রাফি। ‘সং অফ স্প্যারো’ তে যেমনটা দেখেছি, এখানে নিসর্গ-প্রকৃতির কাব্যিক রূপায়ন সেভাবে নেই । বিশেষ করে প্রথম দিকে। সেই নির্মীয়মান বহুতলেই ঘোরাফেরা করেছে ক্যামেরা। কিন্তু শ্রমিক-সিমেন্ট-কংক্রীট-নির্মানের শব্দ – সবকিছু মিলিয়ে এক অন্য জগৎ হয়ে উঠেছে মাজিদির নিপুন পরিচালনায়। একটি দৃশ্যের উল্লেখ করা লোভ সামলাতে পারছি না। নিজের কাজ হারিয়ে, বাবুর্চি থেকে শ্রমিকে পরিণত হয়ে লতিফ গোপনে লক্ষ্য তার প্রাক্তন বেডরুম কাম কিচেন আমুল বদলে গেছে কোন জিয়নকাঠির জেরে, আরো অবাক হয়ে দেখে জানলার ঘষা কাচে একটি মেয়ের চুল আঁচড়ানোর প্রতিবিম্ব, পাশে কাচের জলভরা পাত্রে রাখা জলজ গাছ। লতিফের সাথে চমকে উঠি আমরাও। প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে আসা সেই কিশোরের লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে গোলকধাঁধায় পরে লতিফ। বুকের ভেতরটা মোচর দিয়ে ওঠে লতিফের। আর আমাদের? এই একই ফ্রেম পরেও ব্যাবহার করেছেন পরিচালক। সেই ঘর, সেই ঘষা কাচ, সেই আলো, কিন্তু চুল আচড়ানো মেয়েটি নেই। জলের পাত্রে রাখা গাছটিও অনাদরে ডালপালা বিস্তার করেছে। আর আছে মৃয়মান লতিফ। আর ছবির পরবর্তী অংশে লতিফের সঙ্গে আমরা এসে দাড়াই খোলা আকাশের নিচে। সেই আফগান-শ্রমিকদের ডেরা, তাদের বেচে থাকার লড়াই, প্রান্তিক ইরানের নিসর্গ –স ব মিলে এক ঘোরলাগা আবেশ তৈরী হয় দর্শকের মনে।

এবারে অভিনয়। নতুন করে ব্লার কিছু নেই। লতিফের চরিত্রে হোসেন আবেদিনি অসাধারণ বললেও কম বলা হয়। প্রথমার্ধের ঈষৎ পাগলাটে, আপন খেয়ালে থাকা সেই বদরাগী কিশোরের এক নিমেষে পালটে যাওয়া প্রেমিক হয়ে উঠতে দেখে অবাক হলাম ভীষন। আর বারানের চরিত্রে জারার মুখে কোন সংলাপ নেই। শুধুই মুখমণ্ডলের অভিব্যাক্তি-চাহনি দিয়েই সে বলে দিয়েছে অনেক না বলা কথা। আরেকজনের কথা না বললেই নয়। সেই আপাত কঠিন অথচ ভীষন ভালোমানুষ ঠিকাদারের ভূমিকায় আমির নাজি (নামগুলোর জন্য ‘পচা টমাটো ’কে ধন্যবাদ)। সং অফ স্প্যারো কিংবা চিলড্রেন অফ হেভেনে তাঁর অভিনয়ে আমরা যেভাবে মুগ্ধ হয়েছি সেই একই ম্যাজিক এখানেও।

আবহও পরিমিত, যথাযথ ও মেদ বর্জিত, বাহুল্য মনে হয় নি কোন সময়। খুব স্বল্প দৃশ্যেই ব্যাবহৃত হয়েছে আবহ। আর অন্যান্য জায়গায় বহুতল নির্মানের আওয়াজ, ঠুকঠাক, টুংটাং, নদীর কুলকুল কিংবা বাতাসের সো সো। এসবই হয়ে উঠেছে আবহ।

রান্না অনেকেই করেন। অনেক মশলা সহযোগে, রসিয়ে-কষিয়ে। কিন্তু মাজিদ মাজিদির বিশেষ কোন উপকরণ দরকার হয় না। চারপাশ থেকে, তাঁর চেনা জানা গণ্ডী থেকে উপাদান আহরণ করে তিনি নির্মান করে চলেন সহজপাচ্য দৃশ্য, ছবি, যা ভাবায়, ভেতরকে নাড়া দেয়, অথচ বদহজম হয় না। সেলাম মাজিদি সাহেব...

(পোষ্টার: গুগুল থেকে সংগ্রহীত)
***********************************************
# দীপালোক


মন্তব্য

আয়নামতি এর ছবি

অসম্ভব ভালো লাগলো আপনার রিভিউ! কারণ 'বারান' এপর্যন্ত যতগুলো ভালোবাসার সিনেমা দেখেছি তাতে এখন পর্যন্ত মালেনার(মনিকা বেলুচ্চির) সাথে ডুয়েল লড়ে অমীমাংসিত ফলাফলে ঝুলে আছে ভালোলাগা হিসেবে।
মাজিদি আসলেই বস লোক। তাঁর কালার অব প্যারাডাইসও খুব প্রিয় আমার :) সিনেমা রিভিউয়ের পাশাপাশি মৌলিক লেখাও আশা করছি আপনার কাছ থেকে। সচলে স্বাগতম।

দীপালোক এর ছবি

(ধইন্যা)
আমার আবার মালেনা দেখা হয়নি। দেখব। এখন তো জোগাড় করার অপশন প্রচুর।
আর জানেন, মাথায় পোকা কুটকুট করে মাঝেমাঝে। কিন্তু ঐ আলসেমি। তাই কী-বোর্ডে ধুলো।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বেশ ক'বছর আগে দেখেছিলাম। ভালো। যদিও মাজিদির অন্য সিনেমাগুলোর তুলনায় একটু কমই ভালো লেগেছিলো।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

দীপালোক এর ছবি

(ধইন্যা)

তিথীডোর এর ছবি

মাজিদির চিলড্রেন অফ হেভেন দারুণ লেগেছিল।
বারান দেখিনি অবশ্য।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

দীপালোক এর ছবি

(ধইন্যা)
চিলড্রেন অফ হেভেন সত্যি অসাধারণ। আপাততুচ্ছ সাধারণ উপাদানও ক্যামন অসাধারণ হয়ে ওঠে মাজিদির মুন্সিয়ানায়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।