কৌতূহল এবং বিতৃষ্ণা নিয়ে লক্ষ্য করলাম, বড় বড় বুজুর্গ মিডিয়ার উপসম্পাদকীয় অংশে ইদানীং ৫ মে দিবাগত রাতে পুলিশি অভিযানে মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতে ইসলাম নামের সংগঠনের সদস্যদের বিতাড়ন নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক ও তার বিশ্লেষণে লিপ্ত নানা বিজ্ঞ ব্যক্তি একটি কথা কৌশলে রটিয়ে দিচ্ছেন যে, এই ঘটনার পর সরকার কোনো প্রেসনোট জারি করেনি কিংবা কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
কথাটি মিথ্যা।
সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রেস ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্ট ১০ মে ২০১৩ তারিখে একটি প্রেস নোট ইস্যু করেছে, যা তাদের ওয়েবসাইটেও রক্ষিত আছে। জ্ঞানপাপীদের জন্য সেই প্রেস নোটটি ANSI ফরমাট হতে UNICODE ফরমাটে রূপান্তর করে তুলে দিলাম।
মতিঝিলে হেফাজত বিতাড়নের পুলিশি অভিযান প্রসঙ্গে আলোচনা বা বিতর্ক হোক। কিন্তু মিথ্যা রটনার ওপর ভিত্তি করে নয়।
--- নাম প্রকাশে অপারগ
শুক্রবার, ১০ মে ২০১৩ সরকার নিম্নবর্ণিত প্রেস নোট জারি করেছে
নম্বর: ১৬৬৩গত ০৫ মে ২০১৩ তারিখ হেফাজতে ইসলাম কর্তৃক ঢাকা অবরোধ এবং তৎপরবর্তী শাপলা চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিভিন্ন মহল কর্তৃক কতিপয় মিডিয়ায় প্রচারিত/প্রকাশিত কথিত গণহত্যা/লাশ গুম ইত্যাদি ধরনের গুজবকে কেন্দ্র করে জনমনে বিরাজমান বিভ্রান্তি নিরসনের জন্য প্রকৃত সত্য উন্মোচনকল্পে সরকার সংশ্লিষ্ট প্রকৃত তথ্যাদি প্রকাশ করা প্রয়োজন বলে মনে করছে।
হেফাজতে ইসলাম নামে একটি অনিবন্ধিত সংগঠন গত ০৬ এপ্রিল ঢাকার শাপলা চত্বরে সমাবেশ করে ০৫ মে ঢাকা অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করে। পূর্ব ঘোষিত এ কর্মসূচি অনুসারে তারা ঢাকার চারদিকে ছয়টি স্থানে অবরোধের আয়োজন করে। অবরোধ কর্মসূচি পালনের একদিন পূর্বে ০৪ মে শনিবার তারা পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি সংক্ষিপ্তকরণের কথা বলে ০৫ মে বেলা ২টা থেকে শাপলা চত্বরে তাদের নেতা হাটহাজারী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আহমদ শফির নেতৃত্বে দোয়া কর্মসূচি পালনের অনুমতি চায়। পূর্ব ঘোষিত এ কর্মসূচিতে ঢাকা শহরের ভেতরে কোন সভা-সমাবেশ করার কার্যক্রম না থাকলেও সরকার গণতান্ত্রিক উদারতার পরিচয় দিয়ে হেফাজতে ইসলামকে শর্তাধীনে সন্ধ্যার পূর্ব পর্যন্ত দোয়া কর্মসূচি প্রতিপালনের অনুমতি প্রদান করে।
কিন্তু ০৫ই মে অবরোধ কর্মসূচির প্রথম থেকেই হেফাজতে ইসলাম ঢাকার চারপাশে ০৬টি পয়েন্টে অবরোধ স্থাপন করে শহরে ঢুকে এবং শাপলা চত্বরে অবস্থান নিতে থাকে। সেই সাথে বায়তুল মোকাররম এলাকায় জমায়েত হয়ে কর্তব্যরত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা নাশকতামূলক কর্মকা- চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা ব্যাপক জমায়েত করে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুরে লিপ্ত হয়। তারা নির্বিচারে গাড়ি পোড়াতে থাকে, পুরানা পল্টন সড়কে অবস্থিত কমিউনিস্ট পার্টির অফিসে অগ্নিসংযোগ করে। অতঃপর পাশেই মুক্তি ভবনে লুটপাট চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। হকারদের দোকানসমূহ লুটপাট করে, বইয়ের দোকানসমূহ তছনছ করে এবং পবিত্র কোরআন শরীফের স্টল বিভিন্ন দিক থেকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। উন্মত্ত হেফাজত কর্মীরা ফুটপাতে স্থাপিত জায়নামাজ, তজবি ও টুপির দোকান এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দোকান পুড়িয়ে দিয়ে শত শত নিরীহ কর্মজীবী মানুষকে সর্বশান্ত করে।
হেফাজতের লোকজন হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং তাদের ১১টি মূল্যবান গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে । এ সময়ে দমকল বাহিনীর লোকজন আগুন নিভাতে গেলে তাদেরকে মারধর ও আহত করে তাড়িয়ে দেয়। দুপুরের পর অবরোধ স্থলসমূহে আন্দোলনরত লোকজন শাপলা চত্বর ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় হাজির হলে হেফাজতি কর্মীরা উন্মত্ত হয়ে ডিসি (ট্রাফিক) পূর্ব জোন অফিসে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এতে ডিসি মতিঝিলসহ একজন পুলিশ আগুনে পুড়ে আহত হয়।
দুপুরের দিকে একপর্যায়ে তারা গুলিস্তানে অবস্থিত আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালাতে উদ্যত হয় এবং গোলাপ শাহ মাজারে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা জনতা ব্যাংকের করপোরেট শাখায় হামলা চালায় এবং লুটপাটের চেষ্টা করে এবং নিচতলায় অবস্থিত এটিএম বুথ ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। তাছাড়া ইস্টার্ন ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা মতিঝিলে সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের বাস ডিপোতে ঢুকে সরকারি কর্মচারী পরিবহনের কয়েক ডজন বাস পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়। তাদের তা-ব থেকে রক্ষা পায়নি আন্তর্জাতিকমানে সজ্জিত স্টেডিয়াম, রাস্তায় লাগানো বৃক্ষরাজি, রাস্তা বিভাজক, লাইট পোস্ট ও বিভাজকে স্থাপিত স্টিল স্ট্রাকচার। এমনকি সৌর বিদ্যুৎ পোস্টও ভেঙে গুড়িয়ে দেয়।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্রে যখন নজীরবিহীন লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চলছে তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমে হেফাজতে ইসলামকে সত্বর নৈরাজ্য বন্ধ করে সন্ধ্যার পূর্বেই তাদের প্রতিশ্রুতি মত শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় সরে যাবার জন্য আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু হেফাজতের নেতৃবৃন্দ তাতে কর্ণপাত করেনি, বরং তাদের বেআইনি অবস্থান কার্যক্রম বেপরোয়াভাবে চালিয়ে যেতে থাকে। শেষ বিকেলে তাদের নেতা আহমদ শফি তার অবস্থানস্থল লালবাগ মাদ্রাসা থেকে শাপলা চত্বরের সমাবেশস্থলে রওয়ানা হন। কিন্তু কিছুদূর এসেই তিনি বিএনপির নেতৃপর্যায় থেকে ফোন পেয়ে শাপলা চত্বরে না এসে ফিরে যান। এদিকে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির ব্যাপকতাও বাড়তে থাকে। রাত এগিয়ে এলে বিএনপি নীতিনির্ধারকদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করে। বৈঠক শেষে মাননীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাদের নেতা কর্মীদেরকে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশ গ্রহণের আনুষ্ঠানিক নির্দেশ দেন এবং ঢাকা নগরবাসীকে হেফাজত কর্মীদের সহায়তা প্রদানের জন্য আহ্বান জানান। অবশ্য ঘটনার সূচনা থেকেই বিএনপি ও জামায়াত শিবির কর্মীরা নৈরাজ্যকর কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল বলে জানা যায়।
হেফাজত কর্মীরা ডিভাইডারের মাঝে থাকা গাছগুলো কেটে রাস্তায় বেরিকেড দেয়, ডিভাইডার ভেঙে দেয় এবং নির্বিচারে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। লোহার ডিভাইডার ও কাঁটাতার উপড়ে ফেলে দেয়। রাস্তায় বড় বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়ে গণআতঙ্কের সৃষ্টি করে। রাত বাড়ার সাথে সাথে কতিপয় গণমাধ্যমে তাদের এহেন বিভীষিকাময় কর্মকা- ও উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচার করতে থাকলে নগরবাসী আতঙ্কিত হন। ফলে দেশবাসী চরম উদ্বিগ্ন অবস্থায় সময় কাটাতে থাকেন।
দেশ যখন মহাদুর্যোগের দ্বারপ্রান্তে, তখন জনগণের নির্বাচিত সরকার দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা ও সম্ভাব্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও নৈরাজ্য থেকে দেশকে রক্ষার নিমিত্তে এবং নগরবাসীর জানমাল রক্ষার্থে উচ্ছৃঙ্খল ও উন্মত্ত ধ্বংসযজ্ঞে লিপ্ত হেফাজত কর্মীদের নিরাপদে সরিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। নৈরাজ্য প্রতিরোধ, গণতন্ত্র রক্ষা, আইনের শাসন সুরক্ষা, গণনিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্যই এই অভিযান অপরিহার্য হয়ে উঠে। অনন্যোপায় হয়ে রাত প্রায় ২টায় ঢাকা মহানগর পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি-র যৌথ অভিযান শুরু হয়। অভিযানে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ব্যবহার করা হয়। অভিযানের শুরুতেই মাইকে একাধিকবার সতর্ক করে সকলকে চলে যাবার জন্য আহ্বান জানানো হয়। আরামবাগ ও দৈনিক বাংলা মোড় থেকে শাপলা চত্বরমুখী সড়ক দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী আস্তে আস্তে এগুতে থাকে এবং ইত্তেফাক মোড় অভিমুখী রাস্তা খোলা রেখে জনতাকে নিরাপদে সরে যাবার সুযোগ করে দেয়। অভিযান শুরুর ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে অবস্থানরত জনতা শাপলা চত্বর ছেড়ে সায়দাবাদ-যাত্রাবাড়ীর পথে সরে যায়। অভিযানকালে মঞ্চের পাশে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো ০৪টি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ সূত্রে জানা যায় সারাদিন বিভিন্ন পর্যায়ের সংঘাতে ০৩ জন পথচারী একজন পুলিশ সদস্যসহ মোট ১১ জন নিহত হন।
এ ঘটনায় হাজার হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছে বলে অবাস্তব ও ভিত্তিহীন গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে জনসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, উক্ত গুজবসমূহ সম্পূর্ণ অসত্য, মনগড়া ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেননা:
(ক) অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও ব্যাপক তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে হাজার হাজার লোক হত্যা করে লাশ গুম করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ইন্টারনেটের এই যুগে এটি নিতান্তই অবিশ্বাস্য।
(খ) এত প্রাণহানি হয়ে থাকলে নিশ্চয়ই নিহতদের পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব প্রিয়জনদের সন্ধানে তৎপরতা চালাতেন এবং গণমাধ্যমে তা প্রকাশ পেত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একটি উদাহরণও কোন মহল থেকে হাজির করা হয়নি। এতেই প্রমাণ হয় ব্যাপক লোক হননের বিষয়টি অসত্য ও পুরোপুরি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব।
(গ) অভিযান কার্যক্রম পরিচালনার সময় টিভি ও স্টিল ক্যামেরাসহ বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন, যারা ঘটনা আনুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণ ও সম্প্রচার করেছেন। উঁচু ভবন থেকে বহু লোকজন ঘটনাক্রম অবলোকন করেছেন ও ছবি ধারণ করেছেন। কিন্তু কোথাও মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের চিত্র পাওয়া যায়নি, দৃশ্য দেখা যায়নি। কাজেই বিপুল প্রাণহানির গুজব ছড়ানোর বিষয়টি অশুভ মহলের অসৎ উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার। বরং বাস্তবতা হলো সুশৃঙ্খল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সুচিন্তিত পরিকল্পনা অনুযায়ী অপরিসীম ধৈর্য ও কঠোর সংযমের সাথে পুরো অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযান চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন গলিতে ও ভবনের ফাঁকে যারা আশ্রয় নিয়েছিল তাদেরকে অভয় দিয়ে যত্নের সাথে উদ্ধার করে নিরাপদে সরে যাবার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এদের মধ্যে প্রচুর কিশোর ও তরুণ ছিলো যারা প্রথমবার ঢাকা মহানগরীতে এসেছে, তাদেরকে তাদের গন্তব্যস্থল সম্পর্কে পথ নির্দেশ দিয়ে চলে যেতে সহায়তা করেছে যা টিভি সম্প্রচারে দেখা গেছে। পুরো অভিযান পরিচালনাকালে কারোর প্রতি কোন নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ করেছে মর্মে কোথাও কোন সংবাদ বা ছবিও দেখা যায়নি।
(ঘ) পুলিশ ও বিজিবির তরফ থেকে সংবাদ মাধ্যমে ‘অসংখ্য জনগণের মৃত্যু সম্বলিত অপপ্রচার’ অসত্য, যুক্তিবিহীন এবং উদ্দেশ্যমূলক বলে চিহ্নিত করা হয়।
শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতে ইসলামের লোকজনকে সরিয়ে দিলে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে আবারও জমায়েত হতে থাকে। পরদিন ০৬ মে ভোর থেকেই তারা রাস্তায় ব্যারিকেড বসায়। সেই সাথে নির্বিচারে রাস্তার পাশে রাখা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। এরই মধ্যে পূর্ব নির্দেশমত
বিএনপি-জামায়াত কর্মীরাও ধ্বংসযজ্ঞে যোগ দেয়। নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুর, সাইনবোর্ড, শিমরাইল, সানারপাড়, কোয়েত মার্কেট ও মাদানী নগর এলাকায় উন্মত্ত ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ভয়াবহরূপ ধারণ করে। তারা মাদানী নগর মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে আশ-পাশের মসজিদের মাইক ব্যবহার করে চরম উত্তেজনাকর গুজব ছড়িয়ে লোক জড় করে কর্তব্যরত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের পরিকল্পিত সংঘবদ্ধ আক্রমণ প্রতিরোধ করতে গিয়ে ২ জন পুলিশ, যথাক্রমে নায়েক ফিরোজ ও কনস্টেবল জাকারিয়া এবং ২ জন বিজিবি সদস্য যথাক্রমে শাহআলম ও লাভলু গুরুতর আহত হয়ে লুটিয়ে পড়ে এবং হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। সেই সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে উন্মত্ত সহিংসতার ফলশ্রুতিতে ১৩ জন মৃত্যুবরণ করেছে মর্মে জানা যায়। ঘটনা আরও চরম আকার ধারণ করতে থাকলে অধিক সংখ্যক ফোর্স সমাবেশ ঘটিয়ে আন্দোলনকারীদেরকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।ঢাকা, ১০ মে, ২০১৩
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারমাইন উদ্দিন খন্দকার/আজাদ/নবী/মিজান/মোশারফ/সেলিম/আব্বাস/২০১৩/১৯৩০ ঘণ্টা
মন্তব্য
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কারা কারা এই রটনা রটাচ্ছে?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
মিজানুর রহমান খান, প্রথম আলো
হাসান মামুন, বিডিনিউজ২৪
বিডিনিউজ২৪.কম বিভাগীয় সম্পাদকবৃন্দ, চুপেচাপে জিনিসপাতি হাপিস করে ফেলবেন না প্লিজ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এই প্রশ্নটিও অবান্তর। টিভিতে আসিফ, মতিউর, নুরুল সহ বহু বিজ্ঞজনের মুখে একই ধরনের প্রশ্ন হরহামেশাই শোনা যাচ্ছে।
আব্দুল্লাহ এ এম
নারে ভাই এইটা অবান্তর প্রশ্ন না। কিছু মুখ চিনে নেয়া জরুরি। কারণ এরা বাঘের ছাল গায়ে দিয়ে আমাদের মধ্যে ঘুরে বেড়ানো ছাগল।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
সব চুতিয়াই রটাচ্ছে টক শো কাম নিউজ আর্টিকেলে। শুনতে এবং পড়তে বসলেই পাওয়া যায়!
কিছু ডকুমেন্টেড করে ফেলেন। কে কী বললো সেটার রেকর্ড থাকুক।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
facebook
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে বলে যে মিথ্যাচার করা হয়েছে তার প্রভাব এখন কাটানো আর সম্ভব নয়।কারন বাঙালি হুজুগে আর গুজব প্রিয়।ছাগুদের বিভিন্ন ওয়েব সাইটে কাট পেষ্ট করে মিথ্যাচারকে প্রসারিত করা হয়েছে আর অন্ধ বিশ্বাসীরা এই সকল বিশ্বাস করেছে যাচাই বাচাই না করে,ওদের অবশ্য যাচাই বাচাই করার মতো জ্ঞান আর সামর্থ্য কোনটাই নেই,এরা চিলে কান নেওয়া পাবলিক,কেউ বললে সেটা নিয়ে মেতে থাকবে,নিজেরা চেষ্টা করে কোন সত্য উদঘাটন করার ক্ষমতা এদের নেই।আমাদের দেশে চলে মিথ্যের রাজনীতি এখন।কে কতো মিথ্যে বলতে পারে তার প্রতিযোগিতা চলছে।সরকারের উচিত ছিলো প্রথম দিনেই হতাহতের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করার।তবে যতই সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করতো সরকার বিরোধীরা তাকে অট্টহাসি দিয়ে উড়িয়ে দিতো।এমন অবিশ্বাস আর মিথ্যের রাজনীতিতে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যে সেটা নির্ণয় করা বেশ কঠিন।
মাসুদ সজীব
মতিঝিল ও সংলগ্ন এলাকায় সেদিন সকাল থেকে যা হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে অত নিকৃষ্ট তাণ্ডব একাত্তরের পাক বাহিনীও করেনি ঢাকা শহরে। সেই তুলনায় শৃংখলাবাহিনীর রাতের অভিযানকে নিরীহই বলা চলে। মিশরের মতো সত্যি সত্যি মাইর দিলে কয়েক হাজার লাশই পড়তো। কিন্তু তার আগেই তো পাজামা গুটিয়ে দৌড় দিছে শফিসৈনিকেরা। বলি কি.....সেই রাতের ওই অভিযান না হলে, শফি হুজুরের তেতুলবাহিনী ঢাকা শহরের বাকী অংশকেও মতিঝিল বানিয়ে দিত। এমনকি এইসব মানবাধিকারজীবিদের পাছার কাপড়েও আগুন লাগিয়ে দিত তারা, কোন বাছবিছার ছিল না। সুতরাং ওহে মানবাধিকারজীবিগন, বুইঝা শুইনা মানবাধিকার গুল্লি ছাড়েন। সামনে আরো দিন আছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করতে হলে কয়েক হাজার গুলি ছুড়তে হয়।
মতিঝিলের আশেপাশের বিল্ডিঙগুলো গুলিতে ঝাঁঝড়া হয়ে যাওয়ার কথা।
তেমন কোন চিহ্ন সেখানে চোখে পড়ে নি।
এছাড়াও ঢাকা শহরের হাসপাতাল আর ক্লিনিকগুলোয় আহত হেফাজতীদের ঢল নামার কথা।
তেমন কিছুই দেখা যায় নি। আহতরা তাহলে গেল কোথায়?
সরকার প্রেস নোট দিয়েছে বটে, কিন্তু মিথ্যা প্রচারণার বিপরীতে সঠিক পথে প্রচারণা চালাতে ব্যর্থ হয়েছে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ক্যাটেগরি:জ্ঞানপাপীদের জন্য
এই মিথ্যে প্রচারণার শিকার যদি একেবারে মূর্খ, অজ্ঞ মানুষেরা হতো তাও একটা কথা থাকত। এই ঘটনার পর আমার এক ডাক্তার ক্লাসমেটকেও এটা বিশ্বাস করতে দেখেছি। ভার্সিটি, বুয়েটের ছেলদের বিশ্বাস করতে দেখেছি। তখন আসলে অবাক না হতভম্ব হবো, বুঝতে পারি না
আর সরকার আসলে মিথ্যে প্রচারণার বিপরীতে সঠিক প্রচারণা চালাতে ব্যর্থ হয়েছে
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
ইসরাত
যে কোন একটা ইস্যু পেলেই তাকে মিথ্যার শীর্ষে নিয়ে যাওয়াতা জামাত এর স্বভাব । মিথ্যা বলার মাধ্যমে নিজের স্বার্থ হাসিল করাটা খুব বাজে কাজ । এই জন্য জামায়াত এর কর্মীরা ঘৃণার পাত্র । ৩০০০ মারা গেছে - এই বিষয়টি অবশ্যই অবিশ্বাসযোগ্য ।
কিন্তু কেউ ই মারা যায়নি এই তথ্যটি ও মতেই বিশ্বাসযোগ্য নয় । যারা মারা গেছে তাদের পরিবার এর পক্ষ হতে কিছুই জানানো হচ্ছে না । কারণ হেফাযত এর আন্দলনে কেউ গিয়ে মারা গেছে , এইটা সুনার পর ঐ পরিবারের প্রতি নেমে আসছে অসহ্য নির্যাতন ।
আমি জানি , এইবার আপনারা আমাকে বিভিন্ন উপাধি দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছেন । কিন্তু তার আগে বলি , বিএনপি এর সময়ে গ্রেনেড হামলা এর ব্যাপারে পুরো মিথ্যা কথা বলা হয়েছিল । জজ মিয়া নাটক সাজান হয়েছিল । কিন্তু আওয়ামী লিগ ক্ষমতায় আসার পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনার নৈপথে কারা কারা জুক্ত সবার নাম জানা গেছে । শায়খ আব্দুর রাহমান , বাংলা ভাই এদের ফাসি ও পর্যন্ত দেয়া হয়েছে । ৫-ই মে ঠিক কত জন মারা গেছে , তা এই সরকারের আমলে কখনই জানা যাবে না -এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস ।
সরকারী প্রেস নোটে কিন্তু ১১ জন নিহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। ১১ - (৪টা কাফনে মোড়ানো লাশ + সারা দিনে ৩জন + ১জন পুলিশ) = ৩জন অভিযানের সময় (?)।
"অধিকার" যখন ৬১ জনের কথা বলল, সরকার কিন্তু তখন প্রথমে সেই ৬১ জনের নাম-ঠিকানা জানতে চেয়েছে। আমরাও জানতে চাই। অধিকার কিন্তু সেটা প্রকাশ করেনি। সরকারকে যদি এতই ভয় তাহলে মিডিয়ায় প্রকাশ করে দিলেই হতো। অন্তত বাঁশের কেল্লার ফেসবুক পেজে। তাহলেই তো আর এত ঝামেলা হতো না।
-- ঘুমকুমার।
এমন কোন পরিবারের কথা আপনার জানা থাকলে আমাকে জানাতে পারেন। শুধু শুধু মনগড়া তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করবেন না।
সরকার ১১জনের কথা প্রকাশ করলেও এর বাইরে আর কারো নাম/ঠিকানা কি কেউ দিয়েছে? যদি না দিয়ে থাকে তাহলে আপনার এই ধারনার ভিত্তি কি?
...........................
Every Picture Tells a Story
ঐ রাতে হাজার হাজার লাশ ফেলে দেয়া হইছে, লাশ গুলা আবার গুম করে ফেলা হইছে এই কথা গুলা বলা এবং বিশ্বাস করা পাবলিক বহুত। কিন্তু এদের যখন জিজ্ঞেস করতাম যে এত লাশ গেল কই বা এদের আত্মীয়স্বজনই বা কই তখন একজন উত্তর দিছিল যে এরা সবাই মাদ্রাসার ছাত্র এবং এতিম। সারা দুনিয়ায় কেউ নাই। আবার যখন প্রশ্ন করা হইতো যে- এই খবর গুলা কই পাইছেন, দেশের সহ অনেক মিডিয়া ঘটনা কাভার করছে। কোনো নিউজ চ্যানেলে এই খবর আসে নাই যে এই রকম কোনো সাইন ঐ রাতে ছিল। সেই খানে তখন তাদের উত্তর যে ঐসব মিডিয়া-নিউজ চ্যানেল হলো বায়াসড। তারা সঠিক খবর প্রকাশ করে নাই। সেই সাথে তারা "নিউট্র্যাল" বিভিন্ন ফেবু পেইজের লিংক দেখায়- তারা যে মতের অনুসারী সেই মতের প্রচারক মিডিয়ার কথা বলে। সেইসব মিডিয়ার 'নিউট্র্যালিটি' নিয়ে এদের কোনো প্রশ্ন নাই।
এই ভাবধারার অনুসারীরা কয়জন ঐ দিন ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে? কয়জন "শাপলা ফঞ্চে" ছিল? সব কয়টা তো *লের কেল্লার *বালাস্য*ল এবং সবচেয়ে বড় কথা 'বিশেষ ভাবধারার অনুসারী'।- সরকারী প্রেসনোট এবং প্রচার যে খুব একটা এদের মতামত পরিবর্তনের প্রভাবক হতো তা মনে হয় না। তবে তথাকথিত 'নিরপেক্ষ"দের জন্য সহায়ক হতো। নিজেদের পরিচয় নিয়ে সন্দিহান পাবলিকগুলোর পরিচয় সনাক্তকরণে তারা নিজেরাই কাজ করতে পারতো।
পুলিশ মনে হয় সাইলেন্সার লাগানো রাইফেল ব্যবহার করেছে, নইলে মতিঝিলবাসীরাই কেন হাজার হাজার গুলির শব্দ শোনেননি। কেন শুধু পুলিশের বাঁশির শব্দ, দৌড়াদৌড়ির শব্দ আর ভয়পাওয়া কণ্ঠস্বরের চিৎকার চ্যাঁচামেচির শব্দ শুনেছেন? হাজার হাজার মানুষের লাশ গুম করাই শুধু নয়, রক্তের দাগ পর্যন্ত বেমালুম গায়েব হয়ে গেছে এক আশ্চর্য উপায়ে, একটা কাকপক্ষীর চোখেও পড়েনি। শুধু হেফাজতের করা ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন দেখেছেন পোড়াকপালী মতিঝিলবাসীরা, গুলির আঘাতের চিহ্ন দেখেননি। এও এক আশ্চর্য ব্যর্থতা। লাখে লাখে লোক মরে কাতারে কাতার, অথচ কোথাও কোনও নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ আসে না।
এরা কি মতিঝিল থেকে সোজা বেহেস্তে গিয়ে হাজির হল কিনা বুঝতে পারছি না। হাজার হলেও শহীদ তো!
আপনাগো আক্কেল বেইচ্যা খাইছেন? হুরী আর গেলমান ছাইড়া কোন পাগলে মৃতদের লিস্টিতে নাম ঠিকানা লেখাইতে আইব?
বরং সরকারের উচিৎ হাজার হাজার নিহতের কাহিনী প্রচারকারীদের উপর কোরান অবমাননার মামলা করা উচিৎ।
কারন পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, "আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝো না"
--মদন--
-সূরা আল-বাকারা ১৫৪
প্রেসনোটের কথাটা আসলেই অনেকে জানে না, খুব ভালো একটা কাজ করেছেন।
-নিয়াজ
চরম উদাস ভাই একটা লিখা লেখেছেন নরম দল কি করে হবেন।প্রদীপের শিখা কষ্ট করে সেটা একটু পড়ে নিবেন।তারপর আপনার অবস্থানটা কোথায় সেটা আপনি বুঝতে পারবেন।আপনাকে তাই কোন উপাধি দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
মাসুদ সজীব
নতুন মন্তব্য করুন