অক্টোবরের কিছু আগে থেকেই, ইউএসএর লোকজনের মাঝে হ্যালোউইনের আছড় পড়া শুরু করে। এর জন্য অবশ্য দোকানওয়ালাদেরই কৃতিত্ব(!) বেশি। এরা সব উৎসবের একটু বেশি অনেক আগে থেকেই এমনভাবে সবকিছু বাড়াবাড়ি রকম প্রোমোট করা শুরু করে যেন, মনে হয় আর দিন কয়েক বাকি আছে, এক্ষুণি কেনা-কাটা শুরু করা দরকার। আসলে, দোকানিরা চায় মানুষ যেন অনেক আগে থেকে কেনা শুরু করে যাতে করে বেশি পণ্য বিক্রি হয়।
হ্যালোউইনের সময় এরা নানারকম বেশভূষায় সেজে পার্টি করে, বাচ্চারা ঘুরে বেড়ায় ক্যান্ডি কালেকশনে। আর, তখনই দরকার পরে মিষ্টিকুমড়ার। মিষ্টি কুমড়া খোদাই করে মুখের মত বানিয়ে তার মধ্যে একটা আলোর উৎস ঢুকিয়ে জ্যাক-বাতি (Jack-o'-lantern) বানায় অনেকে, তার পাশে থাকে ভুতুড়ে দর্শন মুখোশ, কঙ্কাল, ডাইনি । আর, বানানো শুরু হয় পাম্পকিন পাই। এই সময়টায় দোকানপাট ছেয়ে যায় এসব ভুত, ভুতের বা কঙ্কালের ছবিওয়ালা জামাকাপড়ে। বাচ্চা ছেলেদের জন্য বাজারে আসে স্পাইডার ম্যান, ব্যাটম্যান, ফায়ারম্যান আরো যত ম্যান আছে তাদের কস্টিউম, বাচ্চা মেয়েদের জন্য আসে ফেইরি, প্রিন্সেস। সারা বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত বড় বড় মিষ্টিকুমড়ার চালান আসা শুরু করে। তখন, আমরা সব ছাত্ররা মিলে বড় একটা মিষ্টিকুমড়ো কিনে ভাগ করে নিই (অনেকটা, কুরবানির গোরুর ভাগের মত)।
পথে চলতে ফিরতে এসময়টায় চোখে পড়ে Corn Maze আর Pumpkin Patch এর সাইনবোর্ড। (আমার বর্তমান বাস ইউএসএর দক্ষিণে প্রায় গন্ডগ্রাম ধরণের জায়গায়।) একটু আধটু কৌতুহল থাকলেও, ভু্ট্টা আর মিষ্টিকুমড়ার এই বিষয়ে কোন খোঁজ নেয়া হয়ে ওঠেনি। হঠাৎ একদিন একটু দূরে অন্য শহরের বাসিন্দা এক ভাইয়া ফোন করে জানালেন যে, তাঁরা Corn Maze এ যাবেন আমরা সাথে যাব কিনা? আমরা যেতে চাইলে, তাঁরা আমাদের সাথে নিতে পারবেন। মুফতে ঘোরাঘুরির সাথে এই ভুট্টা আর মিষ্টিকুমড়া রহস্য ভেদের সুযোগ পেলে ছাড়ে কে? তাই আমরা রাজি, একথা জানিয়ে দিলাম তৎক্ষণাৎ।
ভুট্টার ধাঁধাঁর বিষয়ে আমার খুব বেশি জানা নেই, তবে যাবার আগে গুগল করে কিছু তথ্য পাওয়া গেল। খামারের আয় বাড়ানোর খামারগুলো জন্য ভুট্টার ক্ষেতের মাঝে গোলক ধাঁধাঁর মত রাস্তা বানায়। এতে করে ফলনের কিছুটা লোকসান গেলেও, দর্শনার্থীদের দর্শনিতে সেই লোকসান পুষিয়ে লাভও থাকে। ব্রিটেনে একে ডাকা হয় maize maze নামে।
[ছবি: Karsten Eggert, উইকিমিডিয়া] বড় বড় দুটো কর্ন মেইজের একটা আছে ক্যালিফোর্নিয়ায় যার আকার ৪৫ একর, আরেকটা ওহাওতে আছে ৬২ একরের। তবে, ৪৫ একরেরটাই নাকি গিনেজ রেকর্ডধারী(!)
আর, ভিজিটরদের মৌসুম ধরার জন্য স্বাভাবিক চাষের ভুট্টার চেয়ে একটু দেরি করে লাগানো হয় বীজ। তবুও, এরা কিভাবে ক্রপসার্কেলের মত এসব নকশা বানায় তা অবাকই লাগল।
ধাঁধাঁয় ঢোকার আগে নকশা দেখে নিতে পারবেন, তবে ঢুকে পরার পরে আর উপর থেকে (পাখির চোখে) দেখার সুযোগ নেই। তাই, কিছু ক্লু ধরিয়ে দেয়া হয় ঢোকার সময়। ভুট্টা ধাঁধাঁর নির্দিষ্ট জায়গাগুলোতে কিছু চিহ্ণ দেয়া থাকে, সেখানে দাঁড়িয়ে সহজ কিছু প্রশ্নের জবাব ঠিক করতে হবে, সে অনুযায়ী ডানে বা বাঁয়ে যেতে থাকলে পরের চিহ্ণের দেখা মিলবে আর একসময় গোলকধাঁধাঁ থেকে বের হয়ে আসা যাবে। ভুল হলে চোরাগলিতে ঘুরে আগের জায়গায় ফেরত আসতে হবে অথবা একসময় পথ বন্ধ হয়ে যাবে। সাইকোলজির অনেক গবেষণায় ইঁদুর বা গিনিপিগকে গোলকধাঁধাঁয় ঢুকিয়ে পরীক্ষা করা হয় শুনেছি, অনেকটাই সেরকম। তফাৎটা হল এখানে আমরাই থাকব গিনিপিগের ভূমিকায়। পরীক্ষার প্রশ্নের মত, বছর বছর আবার ধাঁধাঁর নকশা বদলে ফেলা হয়।
উইকএন্ডের আগের রাতেই চলে গেলাম ভাইয়া-আপুর বাসায়। পরেরদিন, সকালে সেখান থেকে খামারে। খামারে ঢোকার পথেই আমাদেরকে একটুকরো কাগজ ধরিয়ে দেয়া হল। যদি মিষ্টিকুমড়া নিতে চাই, তাহলে মিষ্টিকুমড়ার ক্ষেত থেকে ওজন করে লিখে আনতে হবে, আর খামার থেকে বের হবার সময় টাকা দিয়ে দিলেই হবে।
গেট পার হয়ে কিছুদূর যাবার পর পার্কিংয়ের পাশেই পাওয়া গেল ভুট্টার বেড়া দেয়া মিঠে কুমড়োর মাঠ।
এর মধ্যে আবার বিভিন্ন রংয়ের, আকারের কুমড়ো হয়।
আমরা সবাই কুমড়া, আমরা সবাই কুমড়া আমাদেরই কুমড়ার রাজত্বে!
মিঠে কুমড়োর বসার (!) জন্য পলিথিন বিছানো, যেন নিজের ভারে কুমড়া মাটির ভেতর ঢুকে না যায়। আর, গাছ থেকে কাটার জন্য দেয়া হয় ছোট cutter আর বহন করার জন্য ছোট ঠেলা গাড়ি। মিস অ্যাঞ্জি অনুরোধ করছেন, ক্ষেতে cutter না রেখে আসতে
বাজারের চেয়ে কুমড়োর দাম কম হবে ভেবেছিলাম, এখানে দেখা গেল দাম বেশ চড়া, ০.৪৫ ডলার করে এক পাউন্ড। তবে, আকারে বেশ বড়। একজনকে দেখলাম ঠেলাগড়ি ভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছে, যার একটার ওজন দেখা গেল ৫৫ পাউন্ড। সম্ভবত, ঐ লোকটা প্রায় ১০০ পাউন্ডের মত কুমড়া কিনলো!
আমরা ঠিক করলাম, সবকিছু দেখে তারপর কুমড়ার ক্ষেতে আসব। পাশেই একটা petting zoo খামারের মূল অংশের পশুগুলো থেকে একটা দুটো করে এনে সামনে ছোট জায়গায় রাখা হয়। একটা গোরু, একটা শূকর, চারটা মুরগি আর একটা ছাগল পাশাপাশি খাঁচায় রাখা দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জনের জন্য। আমার একটু খারাপই লাগলো বেচারাদের জন্য, পুরো দলছুট হয়ে একা একা থাকতে হয় এদের।
ফার্মে ঢোকার সাথে ট্রেইলার রাইডও অন্তর্ভুক্ত। একটা ট্রাক্টরের পেছনে চার চাকার একটা ট্রেইলার লাগিয়ে একটা চক্কর দেয়ার ব্যবস্থা আছে।
এটাতে উঠে অনেকটা গোরুর গাড়ির মতই লাগলো। খালি গোরুর বদলে আছে কুবোটা ট্রাক্টর। ট্রাক্টরের রাখাল সবার উদ্দেশ্য ঘোষণা করল:
"এখানে নিয়ম দুটো। ১। সবসময় বটমের উপর বসে থাকবে ২। খাওয়া দাওয়া কিছু বাইরে ফেলবে না"
এরপর, মূল আকর্ষণ ভুট্টার ধাঁধাঁয় ঢোকার পালা। ঢোকার আগে একজন নিয়ম কানুন বলে দিল, ভুট্টা নষ্ট করা যাবে না, দৌড়াদৌড়ি করা যাবে না, ইত্যাদি, ইত্যাদি। দু'টো ধাঁধাঁ আছে দু'পাশে, একটা একটু ছোট অন্যটির চেয়ে। আর, দু'টোরই নকশার আকার আলাদা।ওপর থেকে খেয়াল করলে এই ক্ষেতে এবছর একটা ঘোড়সওয়ারের ছবি দেখা যাবে, গতবছর ছিল মৌমাছির ছবি।
সাথে শিশু থাকায় ঠিক হল যে,আমরা ছোটটাতেই ঢুকবো। ছোটটাতে ৬-১০ পর্যন্ত চিহ্নিত করা আছে, মার্কের সমানে পড়লে ডানে বা বাঁয়ে যেতে হবে, বাকিসময় পথ ধরে চলতে হবে। প্রশ্নমালা নিয়ে আমরা বিশাল আত্মবিশ্বাস নিয়ে ঢুকে পড়লাম ধাঁধাঁর ভেতর। কিছুদূর যাবার পর ৬ লেখা সাইন দেখা গেল।
প্রথম প্রশ্ন সবচেয়ে লম্বা ভুট্টা গাছের উচ্চতা কত?
ক. ১২ ফিট (বাঁয়ে যাও)
খ. ২০ ফিট (বাঁয়ে যাও)
গ. ৩৪ ফিট (ডানে যাও)
এখানে ৩৪ ফিটের উত্তরটা একদম বেশি অবাস্তব মনে হল। কাজেই সবাই বিপুল উৎসাহে বাঁয়ে গেলাম এবং রাস্তা বন্ধ পেয়ে ফেরত আসতে হল। এবার ঠিক হল ডানেই যাওয়া যাক, মিনিট পাঁচেক পরের চিহ্ন ৭ খুঁজে পেয়ে গেলাম এবং একেকজন তখন নিজেদের কলম্বাসের মত মনে করা শুরু করলাম।
ঠিক উত্তরটা জানতে হলে ছবিটা দেখুন।
From The State of Iowa Welcomes You, Fourth Edition, 1943, p. 37
৭ এর পরে আর ডান-বাম কোন দিক দিয়েই নতুন রাস্তা বের করে পারলাম না আমরা। এরপর, যাই করি না কেন হয় রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় নতুবা আবার ৭ নম্বরেই ফেরত চলে আসি। পরীক্ষায় উত্তর না পারলে যেমন আরেকজনের খাতার দিকে নজর চলে যায়, তেমনি আরেক দলকে দেখে তাদের পিছু পিছু কিছুদূর যাবার পর দেখা গেল এরাও আমাদের মত ঘুরপাক খাচ্ছে। তাই, তাদের পিছুও ছেড়ে দেয়া হল।
অবশেষে, মিনিট বিশেক পর ঠিক হল যে আমরা আসলে খুব স্মার্ট তবে এই ধাঁধাঁ সমাধান করার মত স্মার্ট মনে হয় না। অবশেষে, খুঁজে আবার যেদিক দিয়ে ঢুকেছিলাম সেদিক দিয়েই বের হবার পথ ধরলাম। যারা তখন ঢুকছিল, তারা অবশ্য আমদের সাবধান করার চেষ্টা করল," অ্যাই, তোমরা তো ঢোকার দিকে ফেরত যাচ্ছ! "
বের হয়ে এসে আমরা ভাবতে বসলাম, কেন আমরা পারলাম না? হয়ত, এই বছর পাজল বেশি কঠিন করে ফেলেছে। আমাদের চোখ ছানাবড়া করে দিয়ে আমরা যে দলটার পিছু পিছু কিছুক্ষণ ঘুরেছিলাম, তারা ধাঁধাঁর চক্কর জয় করে বের হয়ে আসল! কি লজ্জ্বা! কি লজ্জ্বা! অবশ্য, অন্যদের সাথে আমরাও তাদের হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানালাম। মনে মনে বললাম," দেখিস, একদিন আমরাও..."
ফেরার পথে আবার কুমড়ো ক্ষেতে ঢুকে ভাইয়া-আপু আর তাদের ছেলে মিলে একটা কুমড়ো কেটে নিল, আমরা অবশ্য নিলাম কিছু মিষ্টি কুমড়োর ফুল (অনেকে হয়ত জানেন না, এটা ভেজে খাওয়া যায়! )
হাঁটাহাঁটি করতে করতে, কয়েকটা অবসরপ্রাপ্ত ট্রাক্টরের সাথেও দেখা হয়ে গেল (ছবির ভাব বাড়ানোর জন্য সাদাকালো ইফেক্টও দেয়া হল )
বের হবার পথে গেটের কাছের দোকানে কুমড়োর দাম দেবার জন্য থামা হল।
দোকানের সামনেই অভ্যর্থনা জানালো এই হাসিখুশি পুতুলটা
সেখানে মেলে আরও কিছু টুকটাক সবজি, সাজানোর জন্য পুতুল
কিছু কিছু কুমড়া মনে হয় জিমে গিয়ে বডিবিল্ডিং করে এসেছে।
যেমন, এই আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার কুমড়া
এবার, চলুন দেখি স্ট্যালোন কুমড়া
দোকানের ভেতর বিক্রির জন্য রাখা ফার্মের মৌচাক থেকে সংগ্রহীত মধু। এরা আবার কিছু মধুর কৌটার ভেতরে আস্ত মৌচাকের টুকরাও ভরে রেখেছে!
এছাড়াও, চাইলে ৫ ডলার দিয়ে ভুট্টার আস্ত একটা গাছই নিয়ে যেতে পারবেন।
সামনে রাখা ছিল, বিক্রির জন্য ফুলগাছ।
ফুলগাছের সাথে ফুলের নামও লেখা আছে।
এরপর, আনাড়ি লোকের হাতে ক্যামেরা আর সামনে ফুল থাকলে যা হবার কথা, তাই হবে।
ফুলের একগাঁদা ক্লোজআপ ছবি (যেগুলো আবার বাজে রকমভাবে স্যাচুরেশন বাড়িয়ে এডিট করা ) দিয়ে পোস্ট শেষ করছি। আমার মনে রাখার ক্ষমতা অসাধারণরকম খারাপ হবার কারণে, একটা ফুলেরও নাম মনে নেই।
[আগেই বলে রাখছি, আমি আপনার সাথে একমত। পোস্টে ছবির সংখ্যা বাড়াবাড়ি রকম বেশি]
নীলফুল:
লালফুল:
কমলাফুল:
লোলোফুল: (হলুদফুল)
এভাবে, আনন্দদায়ক (!) ব্যর্থতার মধ্যদিয়ে একটা অ্যাডভেঞ্চারময় দিন কেটে গেল।
সবাইকে শুভেচ্ছা
[লেখক: মেঘলা মানুষ]
[বিশেষ সহযোগিতায়: জলপ্রপাত]
কৃতজ্ঞতা: ভাইয়া, আপু আর তাদের মধুর চেয়েও মিষ্টি ছেলেটা।
মন্তব্য
বাহ, ফার্মার বয়ের আলমানযোর কথা মনে পড়ে গেল !
facebook
বাহ! সচলে ছাপা হওয়া জীবনের প্রথম লেখাতে প্রথম কমেন্ট আপনার থেকেই পাওয়া গেল!
অনেক ধন্যবাদ আপানকে, অণু ভাই
কুমড়াময় লেখাটা পড়ে সত্যিই ভালো লাগল । অনেকদিন আগে কুমড়ো ফুলের বড়া খেয়েছিলাম, প্রসঙ্গক্রমে মনে পড়ে গেল !
রাসিক রেজা নাহিয়েন
কুমড়াময় লেখাটা পড়ে লেগেছে শুনেও অনেক ভালো লাগলো।
ভাবছি, কুমড়া কুমার নামেই নিক নেয়া উচিত ছিল মনে হয়
"কুমড়া কুমার"
..................................................................
#Banshibir.
কুমড়া কুমার নিকটা নেই নি, পরে দেখা যাবে দুষ্ট লোকেরা প্রথম 'কু' এর জায়গায় 'দা' বসিয়ে দিয়েছে
দক্ষিণে কোন্ঠে? লেখা ছবি ভালা হইছে। সচলে স্বাগতম।
ওই যে, অনেক দক্ষিণ দিকে যেইখানে ইমিগ্রান্টরা বাদে বেশিরভাগ লোকই বুশের সাপুটার।
আপনি কি ০১ ব্যাচের এনামুলদের সাথের? এসেনিকে ছিলেন? এখন আলবার্কাকি, নিউ মেক্সিকোতে? তাহলে, আমি আপনার সাথে ফেসবুকে যুক্ত আছি ।
[মানে, সেই সাফি আর এই সাফি এক কিনা বুঝতে পারছি না। হয়ে থাকলে আমরা একই ব্যাচের]
শুভেচ্ছা
হু, আমিই তিনি। আপনাকে তো ভাই চিনতে পারলাম না।
আর, স্বাগতম জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ
সচলে যেইভাবে ভ্রমণ বিষয়ক লেখা আসতেছে ইদানিং তাতে মনে হয় তারেক অণুর দিন শেষ। ভাইয়েরা বোনেরা যে যেখানে আছেন হাটে মাঠে ঘাটে যেইখানে পারেন ঘুরে ঘুরে ভ্রমণ ব্লগ দিন। সাম্রাজ্যবাদী তারেক অণুর পতন ঘটান ...
বাই দ্যা ওয়ে, লেখা ছবি দুইটাই দারুণ।
বহুত শুকরিয়া, ধন্যবাদ, স্বাগতম চরম উদাস ভাই। গরিবের গাছে, বান্দরের পারা। দিনটাই অছাম!
অণু ভাই, যান নি এরকম জায়গা নর্থ আমেরিকার বাইরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই, এই চিপা/ কোণা থেকেই আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো অণু ভাই একটা দিলে আমরা সবাই মিলে দুইটা দিব
এই উইকএন্ডে আশা রাখছি ফল ব্রেকে কোথাও যাব, এবং সেখান থেকেও আন্দোলন চালিয়ে যাব।
আপনাকে যখন পেয়েই গেলাম, তো একটা ঘটনা বলেই দেই।
কিছুকাল আগে কোন একটা বিষয় নিয়ে বউয়ের সাথে তর্কাতর্কি না করে সরাসরি একমত হয়ে গেলাম। বউ সন্দেহের দৃষ্টি দিয়ে বলল, "ঘটনা কি? এক কথায়ই রাজি হয়ে গেলা? নিশ্চয়ই তুমি বান্দরের উপদেশ ফলো করতেছ?"
আমি বললাম, "কোন বান্দর?"
বউ বলল, "ঐ যে দুইটা বান্দরের ছবিওয়ালা চরম উদাস আছে না সচলায়তনে, কয়েকদিন আগে একটা লেখা লিখল 'কিভাবে নরম মানুষ হবেন?' তুমি, কি ঐটা অ্যাপ্লাই করতেছ নাকি? "
দেখেন দেখি, আপনার উপদেশ মানা বড়ই কঠিন; দুনিয়ায় কুন রহম নাই - ম ক
বউ এর সাথে তর্কে হেরে গেলে একটা হাতুড়ি টেবিলে ঠুকতে ঠুকতে ঘোষণা দিবেন, স্ত্রী জয়যুক্ত হয়েছে ... স্ত্রী জয়যুক্ত হয়েছে ... স্ত্রী জয়যুক্ত হয়েছে ... তারপর দেখেন তামাশা (হিতে বিপরীত হইলে কত্তিপক্ষ দায়ী নহে )
পরে দেখা যাবে, হাতুড়ি হাতবদল হয়ে গেছে, আর টেবিলের বদলে আমার মাথার উপর ঠোকাঠুকি চলছে
মানুষ ভাই, আপনি কি বলতে চাচ্ছেন, "স্ট্যালোন কুমড়া" বা "নীল ফুল ২" বাজে ছবি।
ভাল ছবি তোলার পরেও যাঁরা অতি বিনয় করে বলেন "আনাড়ী হাতের কিছু অখাদ্য ছবি লেখার সাথে দিলাম", তাঁদের জন্য কোন শাস্তির ব্যবস্থা করা যায় না?
আরে ভাই, সবার তোলা ছবি তো আর লোচন বক্সী'র মত হবে না।
কিন্তু তাই বলে চমৎকার ছবি পোস্টে দেবেন, আমরা আম-জনতা "ইসস যদি আমিও" বলে হাত কামড়াব, আবার ঐ ধরণের অশ্লীল কথাও পড়ব, এতো ভাই অত্যাচার।
আর এ জাতীয় অত্যাচারী-জালিমের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। এখনই সময়, আসুন প্রতিবাদের বজ্রাঘাতে জুলুমকারীর কালো আঙ্গুল...........................................
প্রিয় এনালিস্ট,
নিজের হাতে কামড় দেবার আগে কিংবা জুলুমকারী বলে আমার কালু আঙ্গুল ....... করার আগে, দয়া করে আমার কথা শুনুন।
আমি মানছি একরকম লোক আছে, যারা ভালো ভালো জিনিস করে দেখিয়েও ভালো হয়নি, ভালো হয়নি গান জুড়ে দেয় এই আশায় যে মানুষ এসে তাদের বলবে, "কে বলেছে? ভালো হয়েছে তো?" বা "কে বলেছে তুমি দেখতে সুন্দর না? তোমাকে কত সুন্দর লাগছে" বা "কে বলেছে গান/ছবি/রান্না খারাপ হয়েছে? ভালো হয়েছে তো"
এরা আসলেই বড় জালিম।
আর, একদল আছে আমার মত, যারা গান ভালো পারে না, তাই গলার ভলিউম বাড়িয়ে দেয়; রান্না পারে না, তাই ঝাল বেশি দিয়ে খাবারের স্বাদ আড়াল করার চেষ্টা করে। আর, লোচন বক্সীর মত ছবি তুলতে পারে না, তাই বাসায় ফিরে ছবিতে কন্ট্রাস্ট আর স্যাচুরেশন বাড়ায় আর বেশি কিছু পারে না (আসল ওস্তাদদের মত ভালো সফটওয়্যার দিয়ে ঠিকমত ফটোএডিংটিংও পারে না )।
নিজের তোলা ছবি দেখেই বলছি, এগুলো ১০০ এর মধ্যে ৫০-৬০ পাবে। ফুলের ক্লোজআপ ছবি দেখতে ভালো হলেও, এতে কোন কেরামতি নেই ভাই। বাজার থেকে কিনে আনা ম্যাগি বা র্যামেন নুডুলস রান্নার মত, রাঁধুনির কোন ভূমিকাই থাকে না।
আর, স্ট্যালোন কুমড়া তো স্ট্যালোন ভক্তদের ভালো লাগবে - এই চালাকি করেই নামটা দেয়া।
তবে, যারা আসল বস, তারা কাজেও বস, কথায়ও বস।
কাজেই, আমার কথাগুলো মেকি বিনয় নয় রে ভাই, আসলেই এগুলো সত্যি। আর, আমিও জালিমদের একদম পছন্দ করি না, আপনার মতোই তারা আমার চোখের বিষ।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ,
ভালো থাকুন,
শুভেচ্ছা
ভাইরে, আমি আমার তোলা কোনও ছবিকে কখনো ২০ এর বেশি দিতে পারবো না। আমার কাছে ৫০/৬০ ই অনেক।
বাঃ! যেমন লেখা, তেমন ছবি! খুব ভালো লাগল।
সচলে ছাপা হওয়া জীবনের প্রথম লেখা! অভিনন্দন, মেঘলা মানুষ! আপনার আরো অনেক লেখার সাগ্রহ অপেক্ষায় থাকলাম।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, এক লহমা।
সচলে প্রথম লেখা ছাপা হওয়া আসলেই অনেক আনন্দের
চরম উদাস দা বলেছেন যে আন্দোলন চালিয়ে যেতে
কাল আবার বের হব, এবং আন্দোলন চালাব
ভাল থাকুন, শুভেচ্ছা
ভুট্টা ধাঁধা দেখি ব্যাপক ইন্টারেস্টিং। আমার পুত্র কিউরিয়াস জর্জ কার্টুনের একটা পর্ব দেখছিলো, সেটাতে এই ধরণের কিছু একটা ছিলো। এটা যে একটা রেগুলার প্র্যাকটিস, বুঝতে পারি নি।
লেখা ছবি দুটোই ভালো লেগেছে।
পোস্টের জগতে স্বাগতম
জর্জ বানরটা আমার খুবই পছন্দের। সে সবসময়ই লাইনে থাকে, উদাস ভাইয়ের মত না
আপানর এটা দেখার পর, এখন তো নিজেকে আরও বোকা বোকা লাগছে
আর, স্বাগতম জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ, মন্তব্যের জগৎ থেকে একবারের জন্য হলেও পোস্টের জগতে আসতে পারাটা খুবই আনন্দের একটা অনুভূতি।
ভালো থাকবেন, আপনার ছেলেকে আমাদের আদর পৌঁছে দেবেন।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
শুভেচ্ছা
মন্তব্যের ঘরে আপনার আনাগোনা লক্ষ্য করেছি। এবার আপনার লেখাও পড়লাম। বেশ ভালো লিখেন তো আপনি। আরো বেশি বেশি লিখুন।
ধন্যবাদ আপনাকে
হুম, মন্তব্য করতে করতে অবশেষে একটা পোস্টও হয়ে গেল
ধন্যবাদ উৎসহোদ্দীপক মন্তব্যের জন্য।
ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা
ছবি সুন্দর, বেড়ানোর গল্পও ভালো, এবার একটা হিসাব বলেন - ভুট্টাগাছের উচ্চতা ৩৪ ফুট হলে ভুট্টার ছড়াটার উচ্চতা কত ছিল?
আপনি তো পাঠ্য বইয়ের পাটিগণিতের মত কঠিন প্রশ্ন করে ফেললেন
এরকম কিছু বিভীষিকাময় প্রশ্ন ছিল:
সূর্য ৪৫ ডিগ্রি কোণে অবস্থিত হলে এবং একটি গাছের ছায়া ২০ ফুট লম্বা হলে, গাছের উচ্চতা কত?
আরেকটা মনে পড়ল,
একটি গাছ ঝড়ে ভূমি থেকে কিছু উচ্চতায় ভেঙে পড়ল, কিন্তু ভাঙা অংশটি ভূমির সাথে ৩০ ডিগ্রি কোণ উৎপন্ন করল। ভাঙা অংশটির দৈর্ঘ্য ২০ মিটার হলেম ঝড়ে ভাঙার আগে গাছটির উচ্চতা কত ছিল
মন্তুব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা
অভিনন্দন
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ধন্যবাদ, স্বাগতম, শুভেচ্ছা
লেখা, ছবি দুটোই ভালো লাগলো। আরো লেখার অপেক্ষায় আছি।
আর সচলায়তনে প্রথম লেখার জন্য অভিনন্দন।
-এস এম নিয়াজ মাওলা
দারুণ পোস্ট! বেড়াবার পোস্ট হলেও, বিষয়বস্তু অনেক ব্যতিক্রমী মনে হলো আমার কাছে!
গোলকধাঁধার ছবি, ক্ষেতের ছবি, কুমড়োর ছবি, ফুলের ছবি, অসম্ভব ভালো লেগেছে। উপযুক্ত রেলেভ্যান্ট ছবি, আর সূত্রউল্লেখ করা চমৎকার পোস্ট।
গোলকধাঁধা (maze) নিয়ে আমার অনেক আগ্রহ। এখনো সুযোগ পাইনি কোন রকমের গোলকধাঁধায় প্রবেশের। ভুট্টাক্ষেতে হারিয়ে গেলে বিপজ্জনক অবস্থায় পড়তে হয় সবলে জানি। চারিদিকে লম্বা লম্বা গাছ আর পাতা, আর দিক ঠিক রাখা মুশকিল। এরকম মেইজ অনেক মজার হবার কথা। আর ডিজাইন করার জন্যে কত মাথা খাটাতে হয়েছে, বাপরে!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
অনেক ধন্যবাদ এরকম উৎসাহদায়ী মন্তব্যের জন্য।
হারিয়ে গেলে আসলেই ঝামেলা, কিছু কিছু পাজলে নাকি কাঠের তৈরি ছোট ওভারপাস থাকে আরো চ্যালেঞ্জিং করার জন্য। আমি অবশ্য ভাবছিলাম যে, কেউ স্মার্টফোন নিয়ে গেলে জিপিএস ব্যবহার করে কোন ফায়দা নিতে পারবে কি না?
আমার মনে হয়েছে, মেইজ ডিজাইন করা কিঠিন, তবে সেটা ক্ষেতে ফুটিয়ে তোলা আরো কঠিন। (কিভাবে পারে?)
আপনার গোলকধাঁধাঁয় প্রবেশের ইচ্ছা পূরণ হোক।
শুভেচ্ছা
নতুন মন্তব্য করুন