বিগত কয়েকদিন ধরে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর এবং অন্যান্য ঘটনাপ্রবাহে আবারও একদল মানুষের ব্যপক গাত্রদাহ আশা করি সবাই লক্ষ্য করেছেন। আমাদের তথাকথিত জাতীয়তাবাদী শক্তির ধারক বাহকেরা এখন ঝলসানো নরমাংস দিয়ে নৈশভোজ করে ক্ষান্ত নন, তারা নানা ভাবে ও নানা আঙ্গিকে কাদের মোল্লা তথা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির ব্যপারটি হালকা করে কর্পূরের মত উড়িয়ে দেয়ার কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে নিজেদের জামায়াত তোষণের দীর্ঘ ইতিহাসকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অন্যের ঘাড়ে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যে কাজটি স্বাধীনতার পর শুরু হয়েছিলো কিন্তু বিশিষ্ট সামরিক শাসকদের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার ফাঁদে পড়ে ব্যহত হল তা আজ ৪০ বছর পর করতে দোষ কোথায়? যে জিয়াউর রহমান ইন্ডেমনিটি আইন দিয়ে আটক যুদ্ধাপরাধীদেরকে নির্বিচারে ছেড়ে দিলেন, যার কল্যাণে গোলাম আজম দেশে ফিরে এসে আবার রাজনীতি করার সুযোগ পেল, যার নিপুণ হাতে এই দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বৈধতা এল তাকে বাদ দিয়ে ১৯৭১-১৯৭৫ সময়ে কেন সকল যুদ্ধাপরাধীদেরকে ফাঁসিতে ঝুলানো হল না এই মায়াকান্নার কি আসলেই কোন অর্থ আছে?
তার সাথে আমার কথা ছিল অনেকটা এই রকমঃ
মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে আজকে জাতসংঘ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান(যাদের সারাদিন মানবাধিকার ছাড়া আর কোন আলোচ্য বিষয় নেই) আমাদের নিজেদের মাটিতে যুদ্ধাপরাধীর বিচারে বার বার বাগড়া দেয়, অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এমনও হয়েছে - যেদিন বিচার সেদিনই জনসমক্ষে ফাঁসি দিয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের। ওইসব বিচার আন্তর্জাতকমানের কিন্তু আমাদের দেশে আমরা এই পিশাচদের আপীলের সুযোগও দিয়েছি। সুতরাং নিজের দেশের ব্যপারে বাইরের প্রেসক্রিপশন শুনা কি খুবই প্রয়োজন?
বুঝতেই পারছেন - পুরো ব্যপারটা ছিলো এই মৃত্যুদন্ড এবং মানবাধিকার নিয়ে। এর মাঝে বিশিষ্ট ছাগুর আগমণ এবং অযাচিত লেদা প্রসবঃ
আসলে কিন্তু সমস্যাটা আমাদের নিজেদেরই। আমরা স্বাধীনতার ঠিক পরপর যদি বিচার করে ফেলতাম তাহলে এটা নিয়ে কোন হৈ চৈ হত না। আমি অবাক হই কেন স্বাধীনতার পরবর্তী দুই তিন বছরে এই বিচার কেন সম্পন্ন হল না। তার উপর ১৯৪ জন পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীদেরকে ছেড়ে দিয়ে আসলে কে কি করতে চেয়েছিল তা তো জানি না। তবে আমাদের পূর্বপুরুষের কৃতকর্মের ফসলস্বরূপ আমাদের এখন এত রকম ঝামেলায় জড়াতে হচ্ছে।
ক্ষনিকের জন্য আমার মনে হচ্ছিল - "ইস যদি একখানা লৌহদন্ড পাইতাম তাহা হইলে এইহাদের আরাম করিয়া বসিয়া বসিয়া কাঠি লজেন্স খাওয়া বন্ধ করাইয়া লৌহ চুষাইতাম (মাইলি সিরাসের রেকিং বেলের মত) তাও লবণ মাখাইয়া। আর অপেক্ষা করিতাম যদি ইহাদের আক্কেল বলিয়া কিছু গজাইয়া উঠে"। সে যাই হোক, আমার মনে হয় একটি ছবি দেখালে মন্দ হয় না।
আশা করি স্বাধীনতার পরবর্তি ৩/৪ বছরে যুদ্ধাপরাধী নিয়ে কিছু করা হয়েছিলো কিনা সেই প্রশ্নের জবাব চলে এসেছে। এর পর আসি ১৯৪ জন পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দি নিয়ে। ভারত-পাকিস্তান ভাগাভাগির পর অনেক পাকিস্তানী পরিবার যেমন আমাদের ভূ-খন্ডে এসে বসবাস শুরু করে তেমনই অনেক বাঙ্গালী পরিবারও পশ্চিম পাকিস্তানে তাদের আবাস গড়ে তোলে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর আমাদের হাতে যখন ১৯৪ জন যুদ্ধবন্দী অপেক্ষা করছে যুদ্ধাপরাধের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় হতে তেমনিভাবে পাকিস্তানে অপেক্ষা করছে অসংখ্য নিরীহ বাঙ্গালী পরিবার। এই পরিবারগুলোকে যেমন বাংলাদেশে ফেরত আসতে দেয়া হচ্ছিল না তেমনি ওখানেও প্রায় গৃহবন্দী অবস্থায় রাখা হয়েছিল। এই অবস্থায় ভারতের মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের সাথে চুক্তি হয় যে তারা আমাদের বাঙ্গালী পরিবারগুলোকে দেশে ফিরে আসতে দেবে এর বিনিময়ে আমরা এই ১৯৪ জন যুদ্ধাপরাধীদেরকে তাদের হাতে তুলে দিব এবং এদের বিচার পাকিস্তান সরকার সম্পাদন করবে। স্পষ্টতই জেনেভা কনভেনশন অনুসারে এই ১৯৪ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে পাকিস্তান সম্মত হয়েছিল। ফলশ্রুতিতে আমরা আমাদের বাঙ্গালী পরিবারগুলোকে ফেরত পেয়েছিলাম নিজ ভূখন্ডে। যদিও পাকিস্তান তার স্বভাবসুলভ প্রতিশ্রুতিভঙ্গের কাজটি করতে এবারও ভুল করেনি।
যে কাজটি স্বাধীনতার পর শুরু হয়েছিলো কিন্তু বিশিষ্ট সামরিক শাসকদের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার ফাঁদে পড়ে ব্যহত হল তা আজ ৪০ বছর পর করতে দোষ কোথায়? যে জিয়াউর রহমান ইন্ডেমনিটি আইন দিয়ে আটক যুদ্ধাপরাধীদেরকে নির্বিচারে ছেড়ে দিলেন, যার কল্যাণে গোলাম আজম দেশে ফিরে এসে আবার রাজনীতি করার সুযোগ পেল, যার নিপুণ হাতে এই দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বৈধতা এল তাকে বাদ দিয়ে ১৯৭১-১৯৭৫ সময়ে কেন সকল যুদ্ধাপরাধীদেরকে ফাঁসিতে ঝুলানো হল না এই মায়াকান্নার কি আসলেই কোন অর্থ আছে?
-- দাঙ্গাবাজ
মন্তব্য
ছি ছি এডমিরাল জেনারেল জিয়ারে নিয়া এমুন কটু কথা কইতে পার্লেন??
আন্নে জানেননা উনি আসার আগে "চ্ছিলনা"...
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
না বলে তো পারলাম না দাদা। বাংলার র্যাম্বো যে কীর্তিনাশা কান্ড করে গেছেন তার ফসল আরও যে কতকাল আমাদের জোর করে গোলায় তুলে দেয়া হবে সেটা কে ই বা জানে?
ফেসবুকে ইন্টারেস্টিং মানুষ দেখা যায়। তারা বিভিন্ন ডাইমেনশান থেকে বিচারের ব্যাপারটা ইনভ্যালিডেট করার চেষ্টা করে। আমার হোমপেইজে এইমাত্র এটা ভেসে উঠল
ফেইসবুক ভরা এইসব বাণী। বুঝিনা, বিচার হলে, ফাঁসি হলে সমস্যা কি। একটা বাদ দিয়ে তো আরেকটা হচ্ছেনা।
যারা বলে শেখ মুজিব ক্ষমা করে দিয়েছেন তাদের জ্ঞান তোতা পাখির মতো, যতটুকু মুখে পুরে দেওয়া হবে ততটুকুই উগলাবে। বইহীন জীবন কাটানো(দিনের বেলায় খোয়াব নামা/হাশরের ময়দান কিংবা কেয়ামতের পরে নামক উৎকৃষ্ট আষাড়ের গল্প বাঙালি তথা ছাগু্/নব্য রাজাকার রা খুবি পড়ে আর রাতে বালিশের নিচে থাকা চটি গল্পে মুগ্ধ হয়ে প্রভা কিংবা সানিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে) থেকে দূরে থাকা এমন বাঙালির সংখ্যাই বেশি, তাই দেশে ছাগুর সংখ্যাও বেশি। আগামি প্রজন্মকে বইমুখি করতে না পারলে ছাগু আর নব্য রাজাকারদের সংখ্যা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। প্রাপ্ত বয়স্ক ছাগুদের কোন ভাবেই তাদের অজ্ঞনতাকে বুঝিয়ে, যুক্তি দিয়ে সত্যকে স্বীকার করানো যাবে না কারন তারা পাপিস্থানি আদর্শ দ্বারা ব্রেইন ওয়াশ। আসুন তাই আমরা আমাদের চারপাশের গন্ডিতে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করে তুলি, বই পড়তে তাদের উৎসাহ দেই, উৎসবে কিংবা নিরান্দ সময়ে বই উপহার দেই। যদি আমরা নতুন প্রজন্মকে বইপ্রেমিক করে তুলতে পারি তাহলে তাদেরকে আর বাংলার ছাগুময় পরিবেশে অসংখ্য ছাগুদের মেলাতে ছাগুদের সাথে সত্য-মিথ্যা, ভুল ইতিহাস নিয়ে লড়াই করতে হবে না। তার লড়াই করবে জ্ঞান আর বিজ্ঞানের। এই কথাগুলো শুনতে পুরানো শুনাবে, কউ হয়তো ভাববেন জ্ঞান দিচ্ছি, কিন্তু সত্যিটা হলো এই বিষয়টাই আমি এখন সবচেয় বেশি উপলব্ধি করছি, যতই পুরোনো হোক এটিকে আমি সবচেয়ে বড় চিকিৎসা মনে করছি, বৃহৎ পরিসরে না পারি আমি আমার পরিসরে চেষ্টা করবো। শুধু রাজাকার নয় ছাগু আর আবালও নিপাক যাক। জয় বাংলা।
মাসুদ সজীব
বুঝলেন দাদা? ওদের লম্ফজম্ফ অনেক হয়ে গেছে। ওদের পাপের বোঝা এখন এতটাই ভারী যে প্রলয় আসাটা অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজয় আমাদের হবেই, শুধু দেখার বিষয় কতটা দীর্ঘায়িত হয় এই যুদ্ধ।
- দাঙ্গাবাজ
বারে বারে বলে মিথ্যাকে সত্যি করে তোলার শিল্পকে চৌপাট করার জন্য এই রকম লেখা আসা দরকার, অনেক পরিমাণে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
লিখে যাব, যতদিন বাংলার মাটিতে একটি রাজাকার বা তাদের দোসর জামায়াত-শিবির থাকবে ততদিন পর্যন্ত ইনশাল্লাহ লিখে যাব - সাথে চেষ্টা থাকবে তৃণমূলে এই কথাগুলোকে ছড়িয়ে দেয়ার। আপনার কথায় আরও অনুপ্রাণিত হলাম।
-- দাঙ্গাবাজ
নতুন মন্তব্য করুন