বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি এবং বিভিন্ন রকম প্রোপাগান্ডার পেছনে যে অপশক্তি অনলাইনে তৎপর, বিশেষ করে ধর্মের ছদ্মাবেশে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যে বিশেষ গোষ্ঠী তৎপর – সেসব দাতাল শুওরদের কাজ কর্মের কিছু উদাহরণ দেখেছি আমরা এ লেখার গত পর্বে। আজ আমরা জানবো এসব শুওরছানাদের নিয়োগ, বিকাশ এবং অনলাইন প্রোপাগান্ডার কিছু নমুনা।
১।
২৩ বছরের একজন যুবক কেমন হওয়া উচিত? বুকভরা দেশপ্রেম থাকবে, মানুষের প্রতি ভালবাসা থাকবে, নম্র হতে পারে কিংবা উদ্ধত। যেমনই হোক না কেন, ২৩ বছরের যুবক শুনলে আমরা কল্পনা করি দু’চোখ জোড়া বিশাল বিশাল স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা প্রাণপ্রাচুযর্ময় একজন মানুষকে। আসুন আমরা দু’জন ২৩ বছরের যুবকের সাথে পরিচিত হই।
প্রথম যুবকের নাম চৌধুরী মঈনুদ্দীন। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাস। মাত্র ২৩ বছরে পা দেয়া ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্য এই যুবক তখন ছিল আল-বদর বাহিনীর চীফ অব অপারেশন। তার প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় আল-বদর বাহিনীর প্রধান জল্লাদ আশরাফুজ্জামান খান নিজ হাতে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের ১৪ এবং ১৫ তারিখ অসংখ্য বাঙালী ডাক্তার, শিক্ষক, গবেষক, ইঞ্জিনিয়ার, সাহিত্যিক এবং সাংবাদিককে হত্যা করে মিরপুর এবং রায়ের বাজারে বদ্ধভূমিতে।
দ্বিতীয় যুবকের নাম মাকসুদুল হাসান অনিক। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র অনিক তারই সহপাঠী ফয়সাল বিন নাঈম দীপের সহযোগীতায় ব্লগার রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে হত্যা করে। ইসলামী ছাত্র শিবিরের নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক এক নেতার প্ররোচনা এবং পরিকল্পনায় তারা রাজীবকে হত্যা করে বলে ধরা পরার পর স্বীকার করে।
২।
মুক্তিযুদ্ধে জামাত ই ইসলামীর ভূমিকা নিয়ে ছাত্র শিবিরের দু’টি ভাসর্ন আছে। প্রথম ভাসর্নটি ব্যবহার করা হয় নতুন কর্মীদের মাঝে এবং সংগঠনের বাইরে প্রচারের জন্য। এই ভাসর্নটির মূল কথা একাত্তরে জামাত ই ইসলামী রাজনৈতিক বিরোধীতা করলেও কোন অপরাধ করেনি এবং এটি মূলত “১৯৭১ সম্পর্কে আসলে সঠিক করে কেউ জানে না” এই মতবাদের উপর ভিত্তি করে তৈরী। এতে ১৪ ই ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য দোষারোপ করা হয় ভারতীয় বাহিনীকে। ব্লগ এবং ফেসবুকে জামাতী প্রচারণায় এই ভাসর্নটি ব্যবহৃত হয়। এটির একটি সংক্ষিপসার পাবেন এখানে।
দ্বিতীয় ভাসর্নটি শোনার সুযোগ পায় শিবিরে পরীক্ষিত অল্প কিছু কর্মী। এ মাসের ১৪ই ডিসেম্বর রাতে বাঁশেরকেল্লায় ভুল করে প্রচার করা হয় এই ভাসর্নটি। অবশ্য প্রকাশের কিছুক্ষণের মধ্যেই ভুল বুঝতে পেরে সেটি মুছে ফেলতে দেরী হয়নি তাদের। এই ভার্সনের মোদ্দা কথা হলো একাত্তরে জামাত ই ইসলামী হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে কিন্তু তা করা হয়েছে ইসলাম আর পাকিস্তানকে ভারতের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। যাদের হত্যা করা হয়েছে তারা সবাই নাস্তিক, কাফের এবং ভারতের দালাল। জামাতের তত্কালীন মুখপাত্র দৈনিক সংগ্রাম থেকে এর স্বপক্ষে অসংখ্য প্রমাণ দেয়া যায় (১, ২)।
৩।
চৌধুরী মঈন কিংবা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিক, এই দু’জনের জীবন থেকে যদি কিছুটা সময় বাদ দেয়া হয় তাহলে আমরা কাদের দেখতে পাই? ধরা যাক চৌধুরী মঈনের জীবনে ১৯৭১ সালে আসে নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে পাস করে সাংবাদিক হিসেবে জীবন শুরু করা সহজ সাধারণ একটা ছেলে। অপরদিকে হেভী মেটাল গান পছন্দ করা সম্পূর্ণ আধুনিক এক যুবক অনিক। ১৯৭১ সালে চৌধুরী মঈনের ক্ষেত্রে তৎকালীন ইসলামী ছাত্রসংঘ এবং ২০১৩ সালে অনিকের ক্ষেত্রে আধুনা ইসলামী ছাত্র শিবির কিভাবে পারছে সাধারণ তরুণ যুবকদের ভয়ংকর খুনীতে পরিণত করতে?
৪।
রিক্রুমেন্ট, তৃণমূল পর্যায়:
মফস্বলে বিশেষ করে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ধর্মীয় সংবেদনশীলতা এবং পরকালের লোভ দেখিয়ে শিশু-কিশোরদের জামাতের পথে নিয়ে আসা হয়। এসো ভাই শিবির করি, আলোর পথে জীবন গড়ি, ধর্মহীন রাজনীতি শোষণের হাতিয়ার – জাতীয় স্লোগানে ইসলাম এবং জামাত ই ইসলামকে এক করে দেয়া হয়। কিশোর কন্ঠ নামের মাসিক প্রকাশনা, ফুলকুড়ির মতো বিভিন্ন সংগঠন, মুসলিম এইড জাতীয় বিভিন্ন এনজিও তৃণমূলে কাজ করে। শুধু মাদ্রাসা নয়, সাধারণ শিক্ষার ছাত্র ছাত্রীদেরও ধর্মীয় রাজনীতির পাঠ এবং চর্চায় সংশ্লিষ্ট করা হয়।
ভেবে দেখুন, মফস্বলের একটা ছেলে - নামাজ পড়ছে ৫ ওয়াক্ত, বাজে কাজে সময় নষ্ট না করে ইসলামী বই পড়ছে, মুরুব্বীদের সালাম দিচ্ছে, খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে নামাজে যাচ্ছে, প্রবীণদের কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছে; এ চর্চাগুলো গ্রামীণ জীবনে খুব পজিটিভলি দেখা হয়। অথচ কেউ জানে না, শুধু ধর্মান্ধতা নয়, ইতিহাস বিকৃতির পাশাপাশি নীরব ঘাতকের মতো কী ভয়াবহ জঙ্গী মানস তৈরি হচ্ছে। তারেক মাসুদের রানওয়ে চলচ্চিত্রের রুহুল আমিনের কথা ভেবে দেখুন। দ্বীনের রাস্তায় যাওয়ার লোভে এক জঙ্গী নেতার খপ্পরে পড়ে সে। কে তাকে জঙ্গীযাত্রার পথে নিয়ে গিয়েছিল? মামার দোকানে কম্পিউটার শিখতে গিয়ে পরিচয় হয় রিক্রুটার খালিদের সাথে। খালিদ রুহুলকে বুঝায়, তরিকার সঠিক রাস্তা জানতে হলে একজন গুরু দরকার। সে সুত্রেই রুহুলকে নিয়ে যাওয়া হয়, গোপন আস্তানার বিভিন্ন উগ্র ধর্মীয় গুরুর কাছে, যারা দীক্ষা দেয়, “দ্বীনের রাস্তায় আসলেই হবে না, দ্বীনের সহী রাস্তায় থাকাটা খুব জরুরী। ...তাগুদী শক্তির বিরুদ্ধে জিহাদের মধ্য দিয়া সমাজে আল্লার আইন কায়েম করতে নামতে হবে। খালি এবাদত বন্দেগীর রাস্তা কোনোভাবে সহীহ রাস্তা হইতে পারে না।“
শেষ বাক্যটিই হচ্ছে, কর্মীদের সক্রিয় করার মূল মন্ত্র। ধর্মীয় বাণী, “তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রজ্জুকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো এবং কখন বিছিন্ন হয়ো না (সূরা আল ইমরান-১০৩)”। এ বাক্যটির সাথে সাথে জুড়ে দেয়া হয় বিশ্লেষণ, “সংগঠন করা বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর নির্দেশঃ জামাআত বা সংগঠনকে ভালভাবে আঁকড়ে ধরো এবং পৃথক দলে বিভক্ত হওয়া থেকে দূরে থাকো। “ এভাবেই জামায়াত সমর্থন করাকে রাসুলের নির্দেশ এবং বেহেশতের টিকিট পাওয়া রূপে দাঁড় করানো হয়। ব্যাপারগুলো, একজন সচেতন মানুষ হিসেবে আপনি যতোই হেসে উড়িয়ে দেন না কেন, মফস্বলের কোমলমতি কিশোরের মন দখল করে জঙ্গীবাদের চাষ বিস্তার করছে এভাবেই। এটাই বাস্তবতা।
শুধু গ্রাম নয়, শহরের স্কুলগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে জামাত শিবিরের কার্যক্রম। সামাজিক সাংস্কৃতিক চর্চার আড়ালে, বিতর্ক আর কুইজ প্রতিযোগিতার ছদ্মাবেশে শিশু কিশোরদের মনে উগ্র সামপ্রদায়িকতার বীজ বপন করা হচ্ছে। পাঠক, এক নজর চোখ বুলিয়ে নিন এ বছরের ৭ জানুয়ারী কালের কন্ঠের এ রিপোর্টে শুধু মতিঝিল এলাকার স্কুলগুলো থেকেই এক বছরে তিন হাজার ২০ জন কর্মী, সমর্থক তিন হাজার আর চার হাজার বন্ধু যোগ করা হবে। স্কুলগুলো হচ্ছে- মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং মতিঝিল সরকারি বালক কলেজ। এসব স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ১০৫ জনকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদও দেওয়া হয়েছে। খুব দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে বাংলাদেশের সবচে বেশি প্রচারিত বলে দাবীদার, একই মিডিয়া হাউজ থেকে প্রচারিত আলো এবং স্টার পত্রিকা – মাইনাস টু থিওরীর বিস্তারে আ-লীগ এবং বিএনপিকে এক কাতারে এনে, দুই দলই খারাপ তত্ত্ব প্রচার করে। মধ্যবিত্তের প্রতিনিধি দুটি পত্রিকা যখন এসব প্রচার করে করে বিশাল জনগোষ্ঠীকে প্রচলিত রাজনীতি থেকে বিমুখ করে, তখন খুব নিরিবিলি ছলা-কৌশলে মধ্যবিত্ত কিশোরদের ব্রেইনওয়াশ করে চলেছে জামাত শিবির। গত জামাত-বিএনপি সরকার আমলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয় আলি আহসান মুজাদিহের হাতে থাকায় জামাতি এনজিওগুলো ব্যাপকভাবে মফস্বলে কার্যক্রম চালিয়েছে। মৌলবাদের অর্থনীতির শক্তি নিয়ে জানতে আবুল বারাকাতের বই পড়তে হবে না, এসময়ের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলগুলোয় সংবাদ শিরোনামের স্পন্সর কারা সেটা চোখ খুলে তাকালেই দেখবেন।
রিক্রুটমেন্ট, পাবলিক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়:
এ জায়গায় এসে রিক্রুটমেন্ট বেশ সহজ হয়ে যায়। স্কুল কলেজ থেকে পাইপলাইনে থাকা অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ধর্মীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে যায়। এবার টার্গেট থাকে নতুন নতুন সদস্য নেয়া। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী মধ্যবিত্ত সমাজের, এবং তারা রাজনৈতিকভাবে সচেতন। অন্ততঃ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিপক্ষের ব্যাপারগুলো নিয়ে এরা পরিস্কার। কিন্তু ক্ষুদ্র একটা অংশ আছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে ঝাপসা ও বিভ্রান্ত। নতুন কর্মী হিসেবে এদেরকেই টার্গেট করা হয়। তবে আরো ভালো টার্গেট হলো – গ্রাম থেকে আসা শহরে আত্মীয় পরিজনহীন ছাত্ররা। এ প্রসঙ্গে চমকপ্রদ একটি ঘটনা শুনলাম কিছুদিন আগে। ধরি ছাত্রটির নাম শিহাব, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরে হলে সীট পাচ্ছিলো না গ্রাম থেকে আসা মেধাবী এই ছেলেটি। ক্যাম্পাসের এক বড় ভাই হলে সিটের ব্যবস্থা করে দিলো। আশেপাশের সবাইকে বলে দিলো শিহাবের খবরাখবর নেয়ার জন্য। একদল ছাত্র সকাল বিকাল খবর নেয়, কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা জেনে নেয়। কিছুদিন পর তাকে দুইটা টিউশনির ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। এমন কি দূরে টিউশনি করতে যেতে কষ্ট হয়, তাই – একটা সাইকেলও কিনে দিয়েছে ঐ বড় ভাই এবং তার সংগঠন। একটাই চাওয়া, দলের পক্ষে কাজ করতে হবে, মিছিলে যেতে হবে। ঋণ শোধের জন্য শিহাবের কাছে এ কি খুব বেশি চাওয়া?
শিহাব একা নয়। এরকম অনেক সহায় সম্বলহীল ছাত্রদের পাশে দাড়াচ্ছে জামাত শিবির। ওদের কোচিং সেন্টার রেটিনা, ফোকাস, কনক্রিট এবং এরকম শত শত স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এদের শেকড়। ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি জামাতপন্থী শিক্ষক আছে, যারা দেশ থেকে জামাতের কর্মীদের স্কলারশীপ এবং অনেক ক্ষেত্রে সংগঠনের ফান্ডিং দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
রিক্রুটমেন্ট, ইংলিশ মিডিয়াম:
আপাত দৃষ্টিতে ইংলিশ মিডিয়াম নিয়ে বাংলাদেশে প্রচলিত ধারণা হলো – বড়লোক বাবার বখাটে ছেলেপেলের দল। বেশি টিউশন ফি দেয়া মানে সেখানে শুধু কম মেধাবীরা পড়ে তা নয়। আমার দেখা অনেকেই আছে, ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্র কিন্তু তুমুল মেধাবী, রবীন্দ্র-শরৎ, সত্যজিৎ পড়া শেষ।
ইংলিশ মিডিয়ামে, এ-লেভেল ও-লেভেলে পড়া কিশোরদের রাজনৈতিক সচেতনতা কেমন? ফেসবুকে একটু চক্কর মারলেই দেখবেন – এরা রাজনীতি বিমুখ। আই হেইট পলিটিক্স – এদের প্রোফাইলে কমন জিনিশ। “আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী, সাথী মোদের দুই বুড়ি, হাসিনা বুড়ি খালেদা বুড়ি, সবাই মিলে খাও মুড়ি” জাতীয় বিদ্রুপে এরা পটু।
তাহলে তারা কী চায়?
ডেইলি স্টারের প্রভাবে এরা শান্তি চায়, অতীত ভুলে সামনে এগুতে চায়, ধর্ম ও বিজ্ঞানের মিশ্রণ চায়। এখানে মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গে জিরো-টলারেন্সে তারা অস্বস্তি বোধ করে। স্বস্তি পায় বিএনপি জামাতের মডারেট মুসলিম তত্ত্বে। মাহী বি চৌ’র ব্লু ব্যান্ড কল, জাগো, ইত্যকার হাবিজাবি দলে এদের মুখ দেখা যায়।
ইংলিশ মিডিয়ামে ফ্রি মিক্সিং এর কারণে, এবং অনেকক্ষেত্রে বাবা মার সঙ্গে দূরত্বের কারণে, এদের অনেকে ধর্মকে বেছে নেয় মানসিক শান্তির জন্য। শর্টস-টপস পড়া, লাউঞ্জ ক্লাবে ডজনখানেক কোল বদলানো কিশোরীটি জীবন সম্পর্কে চরম হতাশায় ভুগে এক সময় প্রবল ধার্মিক হয়ে ওঠে। হিজাব ফর পিসে শপিং করে, জাকির নায়েক, ইয়াহিয়া হারুনের লেকচার শোনে। এবং প্রবল ক্ষুধার্ত মানুষকে অনেক ভালো খাবার দিলে গপাগপ খেয়ে সে যেমন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে, তেমনি ধর্মের আফিমে এরা যুক্তি হারায়। তবে “কিছুটা বিতর্কিত” ভাবধারার ব্যাকডেটেড জামাত ই ইসলামের চেয়ে তারা হিজবুত তাহরীরকেই বেশী পছন্দ করে। জানিয়ে রাখি, হিজবুত তাহরীরকে সংক্ষেপে অনলাইনে তারা HT বলে। কিন্তু, হিজু যখন নিষিদ্ধ, তখন মূলধারার জামাত ইসলামই এদের ভরসা। ইংলিশ মিডিয়ামের রিক্রুটমেন্টগুলো হয় মূলত এলাকা ভিত্তিক ইসলামিক ডিসকাশনগ্রুপগুলোর মাধ্যমে। ঢাকায় আপনি এমন গ্রুপ পাবেন ধানমন্ডি, গুলশান, বারিধারা, বনানী এবং উত্তরায়। এসব এলাকার ইংলিশ মিডিয়াম কোচিং সেন্টারগুলোর মাধ্যমে তারা সমমনা কিশোর কিশোরীদের একত্রিত করে। এছাড়া অনলাইনভিত্তিক রিক্রুটমেন্ট তো আছেই।
বাংলাদেশে ইংরেজী মাধ্যমে শিক্ষিত তরুণী জঙ্গীবাদ হবে? হাস্যকর মনে হচ্ছে? মোটেই না। জামাত শিবিরের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা – “আমাকে মডারেট মুসলিম মা দাও, আমি চরমপন্থী সন্তান দেবো।“
৫।
মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ এবং সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পর ছাত্রশিবির প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের কাযর্ক্রম বিস্তৃত করার বিশাল সুযোগ পায় ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে। টুইন টাওয়ার হামলা এবং তৎপরবর্তী আফগানিস্তান এবং ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে ধর্ম কিংবা দেশীয় রাজনীতি নিয়ে অসচেতন আধুনিক তরুণ তরুণীরা একসময় নিজেদের ধর্মীয় পরিচয়ের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রছাত্রীরাও এর ব্যতিক্রম ছিল না।
তবে প্রাইভেট ইউনি গুলো নিয়েও ইংলিশ মিডিয়ামের মতো একই অভিযোগ, ছেলে মেয়ের অবাধ মেলামেশা, যেটা মধ্যবিত্ত মানসিকতায় এখনও বড় একটি সমস্যা। প্রাইভেট ইউনিগুলো তাই, ধুমপান ও রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসের সাইনবোর্ডে যোগ করে নারী পুরুষের আলাদা নামাজ কক্ষ। এ নামাজ রুমেই পরিচয় হয়েছিল ব্লগার রাজীব হত্যাকারী ৫ ঘাতকের যারা এনএসইউ এর ছাত্র ছিল। তবে, আশংকাজনকভাবে যেটা সবার চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে তা হলো – মেয়েদের নামাজ রুম। প্রাইভেসির কারণে কর্তৃপক্ষ সেখানে চোখ বুলান না। ব্যক্তিগত উদ্যোগে খবর সংগ্রহ করে জানা যায় অন্তত ৪টি প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের প্রেয়ার রুমে জংগী কার্যক্রম চলে। এসব প্রতিষ্ঠানে বিস্তারলাভের জন্য একইসাথে আরেকটি কাজ করে জামাত ও শিবির। ইংরেজি মাধ্যম এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচার এবং সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের নেতিবাচক মনোভাবের কারণে জামাত ও শিবির নামটি সম্পূর্ণরূপে উহ্য রাখে সংগঠনটি। শুধুমাত্র দীর্ঘদিন কাজ করার পরেই সদস্যরা জানতে পারে তারা আসলে ছাত্র শিবির কিংবা ছাত্রী সংস্থার হয়ে কাজ করছিল। এবার তাদের সদস্য সংগ্রহের প্রক্রিয়াটা একটু দেখি।
বাংলাদেশের মূলধারার সমাজে আধুনিকতার কিছু মাপকাঠি আছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই মাপকাঠির প্রথম মানদন্ডটি হচ্ছে ইংরেজিতে কথা বলতে পারা। অণগর্ল ইংরেজিতে কথা বলতে সক্ষম ব্যক্তিদের বাংলাদেশের সমাজে বিশেষ শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখা হয় এবং মানুষ খুব মনোযোগ দিয়ে তার কথা শোনার চেষ্টা করে। এই অদ্ভূত এবং নজর এড়ানো ব্যাপারটির চমৎকার সদ্ব্যবহার করে জামাত ই ইসলাম।
প্রতিটি প্রাইভেট ইউনিতেই ছাত্রশিবিরের কিংবা ছাত্রীসংস্থার একজন রিক্রুটার থাকে। তার দায়িত্ব থাকে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নতুন সদস্য সংগ্রহ করা। এই সংগ্রহের কাজটা করা হয় নামাজকক্ষ থেকে। ধরা যাক নাহরা একটি চমৎকার মেয়ে, হিজাবী এবং নিয়মিত নামায পড়ে কিন্তু রাজনৈতিকভাবে কোন কিছুর সাথে সম্পৃক্ত না। এধরনের নির্বিরোধী নিরীহ মেয়েরা হচ্ছে ছাত্রীসংস্থার রিক্রুটারদের জন্য সবচেয়ে সহজ টার্গেট। এই রিক্রুটারদের অধীনে বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি ভিত্তিক কর্মী থাকে যাদের কাজ হলো নাহরা কিংবা এমন মেয়েদের সাথে রিক্রুটারদের একটা যোগাযোগ তৈরী করে দেয়া। এই যোগাযোগের মাধ্যমেই তারা একদিন নাহরা’কে আমন্ত্রণ জানায় তাদের সাথে কুরআন ডিসকাশন ক্লাসে যোগ দেয়ার জন্য। এতো দারুণ একটা প্রস্তাবে নাহরার না বলার কোন সুযোগই থাকে না। গুলশান, বনানী এবং ধানমন্ডি ভিত্তিক এই কুরআন ক্লাসগুলো নেন ইংল্যান্ডে বড় হওয়া উর্দুভাষী পাকিস্তানি কিছু মহিলা। তাদের ব্রিটিশ এক্সেন্টের অনগর্ল ইংরেজী শুনে এবং বাসাবাড়ীর চাকচিক্য দেখে প্রথমেই মুগ্ধ হয়ে যায় সহজ সরল বাঙালী তরুণীরা। প্রাইভেট ইউনির মেয়েদের পাশাপাশি এখানে আরো আসে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের মেয়ে এবং উচ্চবিত্ত গৃহিণী। বাংলা বলতে না পারা ওই পাকিস্তানী আপাদের ইংরেজী লেকচারগুলো কেন্দ্রীভূত হয় মাওলানা মউদুদীর তাফহীমুল কুরআন এর উপর ভিত্তি করে কুরআন এর ব্যাখ্যায়। কুরআন ভিত্তিক আলোচনার পাশাপাশি চলতে থাকে কিভাবে সমাজকে আমরা আরো ভালো করতে পারি কিংবা শুধুমাত্র নামায পড়লেই কি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব। এসব আলোচনা থেকে একসময় আসে ইসলামী আন্দোলন কেন দরকার। এই প্রতিটি আলোচনাতেই রেফারেন্স হিসেবে থাকে মউদুদীর তাফহীমুল কুরআন।
আল্লাহর সন্তুষ্টি অজর্ন নয়, হুকুমাত ই ইলাহী প্রতিষ্ঠাই দ্বীনের মূল উদ্দেশ্য এই ধারণাকে ভিত্তি করে মাওলানা মউদুদী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত জামাত ই ইসলামী শুরু থেকেই মিথ্যা, হীনতা এবং নীচতার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন দেশে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এবং তাদের এই কাযর্কলাপের মূল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে মউদুদীর লেখা তাফহীমুল কুরআন। এক্ষেত্রে জামাত ই ইসলামীর ভূমিকাকে প্যারাসাইটিক ডিজিজের সাথে তুলনা করা যায়। ব্যাকটেরিয়াকে যেমন বেচে থাকার জন্য একজন মানুষের কিংবা অন্য কোনও জীবিত প্রাণীর ওপর নিভর্র করতে হয় তেমনিভাবে জামাতও একটি ব্যাকটেরিয়ার মতো ব্যবহার করছে ইসলাম ধর্মকে। এবং ইসলামকে অসৎভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করাই হচ্ছে এদের মূল লক্ষ। এই লক্ষ অর্জনে জামাত ই ইসলামী কতটা ভয়ংকর হতে পারে সেটা ১৯৭১ সালে যেমন আমার একবার দেখেছি, তা আবারও দেখছি সারা দেশব্যাপী জামাত শিবিরের সহিংস সন্ত্রাসে।
৬।
শিবিরের ছেলেরা প্রচুর বই পড়ে। জি,সত্য। কি বই পড়ে আপনি জানেন? এই লিস্টে একটা তালিকা পাবেন। নতুন শিবিরে ঢোকার পর থেকে জামাত হয়ে ওঠা পযর্ন্ত যত বই দরকার তার প্রায় সবগুলো নামই এখানে আছে। প্রথমে পাবেন কুরআন, তারপর হাদিস, এরপর ইসলামী সাহিত্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্য হয়ে একেবারে শেষের দিকে অন্যান্য/বিবিধ অংশে পাবেন কিছু আগ্রহউদ্দীপক বই। এর একটির নাম কালো পঁচিশের আগে ও পরে, লেখক আবুল আসাদ। ভদ্রলোক ১৯৭০ সাল থেকেই দৈনিক সংগ্রামে কাজ করেন, বর্তমানে সম্পাদক। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী বাহিনীর সবচেয়ে বড় মুখপাত্র দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদকের কাছ থেকে শিবিরের ছেলেরা পাচ্ছে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের শিক্ষা! এই লিস্টের বাইরের যেসব বই স্বাধীনতা যুদ্ধের রেফারেন্স হিসেবে শিবিরের সদস্যরা ব্যবহার করে তার মধ্যে আছে “তিরিশ লাখের তেলেসমাতি”, গোলাম আযমের “জীবনে যা দেখলাম” আর আবুল খায়ের যশোরীর লেখা “একাত্তরে কি ঘটেছিল, রাজাকার কারা ছিল”। মূলত এই বইগুলো থেকেই কপি-পেস্ট করে গত বছর দশেক ধরে জামাত শিবিরের লোকজন ইন্টারনেটে ইতিহাস বিকৃতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
শিবিরের ভেতরে জামাতের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন ভূমিকা নিয়ে খুব কমই প্রশ্ন ওঠে, তবে প্রশ্ন উঠলে খুব কমন একটি লজিক্যাল ফ্যালাসী ব্যবহার করা হয়। গোলাম আযমের ৭১ এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে উত্তরটা হবে এমন, “তুমি কি সেই গোলাম আযমের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করছো যিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কুরআনের স্কলার?”। প্রাথমিকভাবেই শিবির এমন কোন সদস্যকে সংগঠনে নেবে না যার এতো বড় কুরআন স্কলারের(??) চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করার সাহস আছে।
৭।
জামাত শিবিরের এসব তরুণ তুর্কীদের প্রোপাগান্ডা আলাপের কিছু নিজস্ব ধরন আছে।
যে কোনো আলাপে প্রথম কাজ হলোঃ
১) আমি জামাত করি না। আবার জামাতকে অসমর্থনও করি না।
২) একাত্তর নিয়ে অনেক ব্যাপারে আমি কনফিউজড
৩) ভুল সব রাজনৈতিক দল করে। জামাতেরও ভুল আছে।
এরপর তারা সামনে তিনটা বক্স রাখে। একটা বক্সে জামাত, আরেকটা বক্সে এন্টি জামাত, আরেকটা বক্সে ইসলাম ও আল্লাহ।
জামাত শিবিরের যত ভুল আছে, সেগুলোকে ধোঁয়াশা এবং সুগারকোটেড করার পরে, 'নিশ্চয় উপরওলা সবচে বেশি জানেন'- এই থিওরী দিয়ে জামাতের সব দোষ ঢাকতে তিন নম্বর বক্সের সাথে মেশানো হয়।
জামাতের অনেক ভুল আছে, কিন্তু অন্য দলগুলোর ভুল তো আরো বেশি, এরকম বিচারে প্রথম বক্সের চেয়ে দ্বিতীয় বক্সকে খারাপ প্রমান করা হয়। আর দ্বিতীয় বক্সে থাকা সকল এন্টি জামাতি শক্তিকে তৃতীয় বক্সের শত্রু হিসাবে দাঁড় করানো হয় (প্রথম আলো কর্তৃক প্রচারিত ‘ভালো-পাকিস্তানী’ হামিদ মীরের অবস্থানও ঠিক এ পর্যায়ে)।
ফলে ব্যাপার যেটা হয়, জামাত খারাপ, অন্য সকল দল খারাপ, কিন্তু জামাতের সাথে ইসলাম আছে। সেই বিচারে জামাতের মূল্যায়ন অন্যভাবে হওয়া উচিত। এই মূল্যায়ন পর্বে শুওরের ছানা পোনারা জামাতের একটা দোষ বলে - একটা গুণ বলে, সাথে 'ইতিহাস-মীমাংসিত' আরো এক ডজন দোষকে - আমি ঠিক শিউর না এগুলা কী ছিল - জামা পরিয়ে আড়াল করে দেয়।
খুব ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, এই শুওরছানাগুলো গ্রামের মাদ্রাসার ছাত্র নয়।
এরা দেশের সেরা বিজনেস ইনস্টিটিউশনের, মেডিক্যালের, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের ছাত্র।
জ্ঞানপাপীরা যেমন হয়।
এরা রপ্ত যা করে, তা হলো - কিছু ঝাপসা ইংরেজী জার্গন যোগ করে। আর এই ইংরেজীর আড়ালেই ঢেকে যায় পাপের বোঝা।
লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যার অপরাধকে তারা জামাতের স্ট্র্যাটেজিক অ্যাণ্ড পলিটিক্যাল ভুল বলে ব্যাখ্যা করে। জামাত ই ইসলামীকে অপপ্রচারের শিকার হিসাবে চিহ্নিত করে তারা। বলে, জামায়াতকে নতুন দৃষ্টিতে বিশ্লেষণের সুযোগ দিতে হবে। জামায়াত আর আগের মতো নাই।
আসলেই তো! কীট পতঙ্গের জামাত শিবির এখন তো শুওরের পাল, আকারে বিশাল। কিন্তু, ম্যাৎকারটা ছাগলেরই।
তবে শুওরের বাচ্চারা শুওরের বাচ্চা হয় আর সাপের বাচ্চারা সাপের বাচ্চাই হয়। কুকুর ছানা কার জন্ম তা জানতে জেনেটিক এক্সামিনেশন লাগে না, চার পা আর ঘেউ ঘেউ দেখলেই বুঝা যায় কুত্তার বাচ্চা, যতোই বলুক বাবা চাচা মুক্তিযোদ্ধা ছিল। তাই এসব শুওরের বাচ্চা আওয়াজ তোলে -
"জামাতের ১৯৭১ এর ভূমিকা - এটি আমার সিনসিয়ার স্বীকারোক্তি যে ১৯৭১ এর ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে আমি কনফিউজ্ড। এটা এডুকেটেড কনফিউশান, আমি বেশ কিছু বই পড়েছি এবং রেসাল্ট দাঁড়িয়েছে এই যে পিকচারটা আমার কাছে গ্রে। গ্রে-কে আমি জোর করে সাদা বা কালো বানাতে পারব না। কোলাবরেশান - আমার কাছে কোনও ফ্যাক্টর নয়। সত্যি কথা বলতে আমি যখন চিন্তা করি যে ১৯৭১ সালে আমি থাকলে কী করতাম, আমার মাথা ব্ল্যাঙ্ক থাকে। দিস ইজ গড'স অনেস্ট ট্রুথ। "
কিংবা আরো সোজা সাপ্টা – “I think if I was alive at that time in 1971, I would have decided to support the unity of Pakistan, given it was created as a nation for the Muslims of the Indian subcontinent.”
পাকিস্তানের প্রতি অখন্ডতার যে মোহ, সে মোহ ভেঙে গেছে যে মানুষটির জন্য, বঙ্গবন্ধু - শেখ মুজিব; তার প্রতি এসব শুওরের বাচ্চার তীব্র ক্ষোভ। তাই তারা বলে, “The leaders of that era of 71, was all greedy and were just concerned about their own gain. Look how all of them had a unnatural death, Bhutto, Sheikh Mujib . They didnt care about the country. How many of us know, how brutally their men, women and children were murdered too, their properties were taken by the Awami league or Joy Bangla thugs. Their women were forced to be naked in public and these thugs wrote "Joy Bangla" on their naked bodies with pins. As Muslims we definitely need to study the history of both sides. Allah is the Judge.”
এসব উদ্ধৃত অংশ কাল্পনিক নয়, তিনটি ক্ষুদ্র নমুনা মাত্র। ফেসবুকেই আছে এরকম শত শত প্রচার।
(পর্ব-২ সমাপ্ত)
-----------------
(চলবে)
সৌরভ সাখওয়াত
মন্তব্য
ঢাকায় এখন প্রতি ৩টা নতুন স্কুলের মধ্য ১টা প্রোপাকি বা জামাতপন্থীদের হাতে তৈরী হচ্ছে। এই তো বনশ্রী এলাকায় গত ২ বছরে অন্তত ৬টা জামাতী স্কুল চালু হয়েছে।
এসব স্কুলে শিক্ষক হিসেবে নেয়া হচ্ছে পরীক্ষিত শিবির কমর্ীদের। এই পশুদের হাতে আমরা ছেড়ে দিচ্ছি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে।
সৌরভ সাখওয়াত
, আপনার এই সিরিজ চলতে থাকুক যুগ যুগ ধরে। অতীব সুখপাঠ্য।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
ফিনল্যান্ড-এ শিবিরের রিক্রুটাররা দারুণ একটিভ। তা নিয়ে একটি সত্য ঘটনা সম্বলিত লেখা লিখছি। পরবর্তী পোস্টেই ছাড়বো আশা করি।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
আম্রিকাতেও এরা কম এক্টিভ না। বিশেষ করে শিকাগোতে। এরকম একটা মজলিশের দাওয়াত পেয়েছিলাম। যেখানে কোরয়ান সুন্নাহসহ আখিরাত নিয়ে আলুচনা এবং মনের শান্তির জন্য জ্ঞান খয়রাত দেয়া হয়।
আপনার অভিজ্ঞতা লিখুন। সবাইকে সচেষ্ট করা জরুরী।
সৌরভ সাখওয়াত
এই সিরিজটা চলুক। অনেক দরকারি সব তথ্য ।
এদের রিক্রুটমেন্ট সিস্টেম সম্বন্ধে বিস্তারিত বলেছেন। আমি ঢা বি তে পড়ার সময় দেখেছি কিভাবে এইসব মুসল্লি ভাইয়েরা খুব দরদী হয়ে উঠত নবাগত ছাত্রদের সাহায্যার্থে। তাদের এই সব ভালোমানুষি এক ধরনের ধারণার জন্ম দিত যে শিবির আসলেই ভালো। কোন লেভেলের স্ল পয়েজনিং ভাবা যায়!
আমি রাজশাহীতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়েও এই সব ছাগুদের আগ বাড়িয়ে সাহায্যে ( থাকার জায়গা, খাবার জায়গা) করতে দেখেছি।
এরকম অজস্র উদাহরণ দেয়া যাবে। লেখা চলুক।
মুসল্লি ভাইয়েরা খুব দরদী হয়ে উঠত নবাগত ছাত্রদের সাহায্যার্থে। এই দরদী হয়ে যাওয়ার পেছনে শুধুমাত্র ভয়ংকর স্বার্থ কাজ করে, কেমন জানেন? একটা গল্প বলি। জাবি’তে প্রথম শিবির আক্রমণের পর যে ছয়জন’কে স্টেনগান’সহ গ্রেফতার করা হয় তাদের ভেতর আমাদের এমএইচ হলের নুরু নামে একজন ছিলো, এর আগ পর্যন্ত তার পরিচয় ছিল খুবই নিরীহ এবং মেধাবী ছাত্র হিসেবে, যতদূর মনে পড়ে অর্থনীতি’র ছাত্র, আমাদের দুই ব্যাচ সিনিয়র,
শিবিরের যেসব নথিপত্র উদ্ধার করা হয় সেখানে তার নাম ছিল-না যতদূর মনে পড়ে, কিন্তু স্টেনগান’সহ ধরা খাওয়া বাকি সবাই ছিল শিবিরের সাথী, এর মধ্যে খুব সম্ভবত তিনজন কমান্ডো ট্রেনিং পাওয়া। মূল ঘটনা জানা গেল কিছুদিন পর। দরিদ্র কৃষক পিতার সন্তান, পিতা পড়ালেখার খরচ দূরে থাক, খাওয়ার খরচ দিতে পারেন-না। এইসময় কিছু পরহেজগার মানব-দরদী তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলো, টিউশনি ম্যানেজ করে দিলো, আরও বহু কিছু। আক্রমণের দিন তার হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বলা হয় তাই নিয়ে আলবেরুনী হলের ছাদের উপর বসে থাকতে, সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়, স্টেনগান সহ!
ভেতরে ভেতরে আরও বহু কিছু থাকতে পারে, এবং একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র বেকুবের মত কোনকিছু না বুঝে চিরকাল সাহায্য নিয়ে গেলো, ছাগলের মত একটা ব্যাগ নিয়ে কোনকিছু না বুঝে আরেকটা হলের (যে হল আবার আরেক সীমানায়) ছাদে উঠে গ্রেফতার হওয়া পর্যন্ত বসে থাকলো (তার চোখের সামনে দিয়ে সারাদিন বহু-কিছু ঘটে গেছে এর ভেতর) --- এটা জাস্টিফাই করা-ও কিন্তু কঠিন। কিন্তু এই সম্ভাবনা আমরা উড়িয়ে দেই কিভাবে যে সাহায্য দিতে দিতে নির্ভরশীল বানিয়ে ফেলা যে কাউকে চরমভাবে ব্যবহার করতে বেজন্মাদের গায়ে লাগে-না। বাংলাদেশে আর কোন রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনগুলো এইভাবে রাজনীতি করে-না, একটাই আছে।
শিবিরের শেকড়ে মুনাফেকি, বাংলাদেশে এমন কোন পরিবার থাকতে পারেনা যারা জামাত-শিবির সম্পর্কে জানে-না। সব দোষ আমরা ছাত্র-ছাত্রী’দের উপর চাপিয়ে দিতে পারি কিন্তু আমার কাছে তাদের বাবা-মা সবচাইতে দায়ী। ‘শিবির’ একটা এটিচ্যুড, এই ধীরে ধীরে তৈরি হতে থাকা এই এট্যিচুড ধরতে পারে-না যে বাবা-মা তাদের জন্য কেবলমাত্র করুণা প্রকাশ যথেষ্ট নয়, এদেরকে শাস্তির আওতায় এনে কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে রাখা দরকার।
সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য এসব নিয়ে লেখা জরুরী। আশা করি আপনিও লিখবেন।
সৌরভ সাখওয়াত
ব্যক্তিগত এসব অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন পোস্ট দিয়ে।
সৌরভ সাখওয়াত
ইংলিশ মিডিয়ামের ছেলেমেয়েদের কনফিউজড হওয়ার একটা বড় কারণ এদেরকে বাংলাদেশের ইতিহাস পড়ানোই হয়না।
সিরিজটা ইন্টারেস্টিং। এরকম ট্যাঁশ ছেলেপেলে মনেহয় আমরা সবাই আজকাল দেখতে পাচ্ছি আমাদের চারপাশে। দুঃখজনক ব্যাপার কারণ বাংলাদেশ না হলে এদের পরিবার হয়ত এত ভাল অবস্থানে থাকত না। এদের মনে অমুসলিম, আওয়ামিলীগ ইত্যাদির প্রতি এত ঘৃণা, বিভেদবোধ এত বেশি, তা বলার মত না। এদেরকেই আজকাল সংখ্যাগুরু মনেহয়।
ওয়াইফাই ক্যানসার
ইংলিশ মিডিয়ামের ছেলেমেয়েরা কি আদৌ কোন দেশের ইতিহাস জানে? আমি একবার একজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ইংল্যান্ডের ইতিহাসে ১৮১৫ সালের গুরুত্ব কি? বলতে পারেনি। আরেকজনকে পেয়েছিলাম যে মধ্যপ্রাচ্যের আরবদের দুর্দশা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মুখে ফেনা তুলে ফেলল, কিন্তু Sykes–Picot Agreement সম্পর্কে কিছুই জানে না। অথচ এই দুজনেই ও- এবং এ-লেভেলে নাকি straight A পেয়েছে! এদেরকে ব্রেনওয়াশ করা যাবে না তো কাদেরকে যাবে?
স্টিরিওটাইপ করা ঠিক না কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ে ইংরেজি মাধ্যমের অনেক ছেলে পেলের জ্ঞানের অভাব দেখেছি। বাংলা মাধ্যমের ছেলে মেয়েরাও যে অত ভাল জানে তা না। আমি নিজেও যে একদম সবকিছু জানি তা না। কিন্তু হাস্যকর লাগে এদের অদ্ভুত যুক্তি। "আমার আব্বু বলসে ইন্ডিয়াতে মুসলিমদের কবর হয়না। তুমি কি বলতে চাও আমার আব্বু আমাকে মিথ্যা বলসে?" মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে এইরকম আজব যুক্তি ভুরি ভুরি শুনা যায় যা খন্ডন করার জন্য কোন ইতিহাসের জ্ঞান দরকার হয়না দরকার হয় কান্ডজ্ঞান। এতো চালু ছেলেপেলেরা কান্ডজ্ঞানের কেন এত অভাব দেখায় কে জানে।
দোষটা আমাদেরই। আমরা যদি এসব খেয়াল না করি তাহলে জামাত শিবির সুযোগ নেবেই ইতিহাস বিকৃত করার।
সৌরভ সাখওয়াত
পোষ্ট টা প্রিন্ট করে পড়ানো উচিত সবাইকে, আসলে এই বিষবৃক্ষ যে আমাদের চোখের পর্দার আড়ালেই যে বেড়ে উঠছে এটা খেয়াল করাই হচ্ছে না ।
ইভান
প্রিন্ট করতে পারলে ভাল হত।
mahinaaa@gmail.com
ধন্যবাদ
সৌরভ সাখওয়াত
দারুণ পোস্ট! সৌরভ সাখওয়াত, আপনি সচলায়তনে নিবন্ধন করে ফেলুন।
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
মোটেও কাল্পনিক নয়, শুধু ফেসবুক কেন, এইরকম উদাহরণ চারপাশে ছড়িয়ে আছে, আমরা এড়িয়ে যাই দেখে এরা শক্তিতে বাড়ে।
আপনি লিখতে থাকুন, সাথে আছি।
নিয়মিত লিখুন, সচলায়তনে নিবন্ধন করে ফেলুন। পরের পর্ব পড়ার অধীর অপেক্ষায়।
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
লেখাটা পড়ার সময় মনে হচ্ছিলো ধুরন্ধর শিবিরেরর রিক্রুটমেন্ট এবং বিস্তারের উপরের একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি দেখছি। এই লেখার কোন না কোন অংশ সবারই পরিচিত মনে হবে। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এসব উদাহরণের অনেক কিছুই আমরা চর্ম চোখে দেখি কিন্তু বিরক্তিকর বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে এরিয়ে যাই সচরাচর।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পুরো বিষয়টি গুছিয়ে সকলের সামনে নিয়ে আসার জন্যে।
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
বিদেশে যারা জামাত শিবির করে তারা হাইলি কোয়ালিফাইড হয় কেন বুঝি না। সিডনিতে যারা সক্রিয়ভাবে জামাত শিবিরের সাথে জড়িত তারা মোটামুটি সবাই এটলিস্ট মাস্টার্স পাস। তাও আজকের যুগে না, সেই ২০-২৫ বছর আগের মাস্টার্স পিএইচডি করা লোক জন। এমন একজনের কাছ থেকে আজকে ঝাড়া ৩০ মিনিট জ্ঞান অর্জন করে এই তথ্য আবিষ্কার করলাম যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আসল নাম হল দেবদাস চক্রবর্তী। তবে প্রতিবাদ করি নাই। মনে মনে কয়েকবার স্লোগান দিলাম, জয় বাংলা, জয় দেবদাস চক্রবর্তী!!! শুনতে খুব একটা খারাপ লাগে নাই। তবে জামাত শিবিরের কল্পনা শক্তি দেবদাসে গিয়ে কেন আটকাল সেইটা একটা রহস্যের ব্যাপার।
পোস্টদাতাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আচ্ছা কোন একটা পর্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে এইসব বরাহদের উতপাত এবং কার্যপ্রনালী কেমন সেই বিষয়ে আলোকপাত করা যায় না!!! আজ থেকে প্রায় ছয় বছ আগে বেশ কিছুদিনের জন্য ঢাকা সেনানিবাসে ছিলাম। সেইসময়ে কিছু হাবিলদার, জেসিও মানে নন কমিশন্ড লোকের সাথে পরিচয় হয়েছিল যারা নিজেদের মধ্যে সম্পুর্ন আরবি ভাষায় কথা বলার চেষ্টায় রত ছিলেন এবং খাতির জমানোর পর অনেকটা জামাত শিবির স্টাইলে ৭১ নিয়ে আর দেশের দুই রাজনৈতিক দল নিয়ে নেগেটিভ প্রচার করেছিলেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে ছিল যে, অফিসাররাও যখন তাদের জিজ্ঞেস করে, কি খবর মনির,কেমন আছ? তখন উত্তর আসে, বি খাইরা। ওয়া আনতা, স্যার? আমি খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। মাঝে মাঝে উর্দুতে শায়রী বলাও তাদের অভ্যাস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের স্বাধীনতা পূবর্ সময়কালের প্রখ্যাত শিক্ষক ডঃ সাজ্জাদ হোসায়েন চৌধুরী কিন্তু অসম্ভব কোয়ালিফাইড একজন ব্যক্তি ছিলেন। তার সেই জ্ঞান গরিমা কিন্তু তারই সহকমর্ী কোন কোন শিক্ষককে হত্যা করতে হবে তার তালিকা তৈরীর সময় বাধা হয়ে দাড়ায়নি। শুধু হাই কোয়ালিফিকেশন কিংবা দুই হাত, দুই পা মানুষকে মানুষ করে না, মানুষ হওয়ার জন্য মানবতা দরকার, যেটা এই পশুদের থাকে না। স্বাধীনতার পর তার অপরাধের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু মুক্তিযোদ্ধা ছাত্র তাকে হত্যা করার জন্য গিয়েছিল। কিন্তু পারেনি। নিজেদের শিক্ষক, সে যতো বড় পশুই হোক না কেন, তাকে হত্যা করা সম্ভব হয়নি মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে। বেশ কয়েক বছর কারাভোগের পর তিনি বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমার সুযোগে দেশত্যাগ করেন। বিদেশেই তার মৃত্যু হয়।
আপনি আপনার চারপাশে যে হাই কোয়ালিফাইড লোকজনকে দেখছেন, নিজেদের স্বাথর্ে ধমর্ের নামে মানুষ হত্যা করতে এই লোকগুলোর হাত কাপবে না এতোটুকু। আমরাই শুধু বারবার মানবতার দোহাই দিয়ে ক্ষমা করে যাবো এদের। প্রকৌশলী, ডাক্তার, ব্যবসায় প্রশাসনে ডিগ্রিধারী সবখানেই পাবেন এই অমানুষদের। এখানে দেখুন, দেখতে মানুষের মতো এই সাম্প্রদায়িক প্রাণীটার ফেসবুক স্ট্যাটাস আর শত শত দাত কেলানো শুঁওরের লাইকের সমাহার।
নামটা যখন আসলই একটু অপ্রাসঙ্গিক তথ্য জুড়ে যাইঃ
অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় "আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ" স্যারের কোনও স্মৃতিচারণে 'ডঃ সৈয়দ সাজ্জাদ হুসায়েনের' মুহুর্মুহ প্রশংসা বানী দেখে একদা চমকে উঠেছিলাম... বিচ্ছিন্ন ঘটনা ভেবে পাশ কাটিয়ে 'পেছনের কথা ভোল' গাইতে গাইতে পরের পৃষ্ঠায় চলে গিয়েছিলাম... কিন্তু, সারাদেশে গাছকাটার মহোৎসবে 'পরিবেশ আন্দোলনের' নিস্ক্রিয়তা দেখে এখন আর চমকাচ্ছি না
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
"নিষ্ফলা মাঠের কৃষক" নামে অধ্যাপক সায়ীদের একটি বই আছে। সেখানে তিনি নিহত বুদ্ধিজীবীদের চরম ধোলাই দিয়েছেন। ঐ পুস্তক পাঠ করিলে শুদ্ধরূপে জানা যাইবে যে এই নিহত বুদ্ধিজীবীর দল কতো খারাপ ছিলেন।
এই বইটি পড়ার পর অধ্যাপক সায়ীদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা নষ্ট হয়। ওনাকে সুযোগের জন্যে ওঁত পেতে বসে থাকা একজন ধূর্ত অসৎ লোক বলে মনে হয়। আলবদর সরকারের নানা তাণ্ডবের সময় তিনি ঢাকায় ডেঙ্গু মশার বিরুদ্ধে জেহাদে সরব ছিলেন। কিছুদিন আগে তেজগাঁও বিমানবন্দরের জমি বিমানবাহিনীর হাত থেকে নিয়ে সেটি বেসরকারি ডেভলপারদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার জন্যে সুশীলদের পক্ষ থেকে একটি নাগরিক উদ্যোগেও তিনি জান লড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিক্রিয়াশীলদের বিরুদ্ধে তাকে দেখেছি বলে আমার মনে পড়ে না। তার হাতে ধরা লণ্ঠনের আলোয় "আলোকিত" ল্যাংবোটদের মধ্যেও হাতে গোণা কয়েকজন জামাতশিবিরের বিরুদ্ধে সরব। তার সুযোগ্য উত্তরসূরী আবদুন নূর তুষার জামাতশিবিরের বিরুদ্ধে নানা গরম গরম কথা বলে মাঠ কাঁপিয়ে ঠিকই চোরের মতো মঞ্চের পেছনে ঘাপটি মেরে বসে ইসলামী ব্যাঙ্কের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। শারীরিক অসুস্থতার অজুহাতে ঘরের পাশে শাহবাগে যান না, কিন্তু সেই অজুহাত যেদিন ছাপা হয় তার দুয়েকদিন আগে/পরে তাকে সুদূর র্যাডিসনে গিয়ে গোল গোল কথা বলে জাতিকে নসিহত করতে দেখা যায়।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদেরা এই যুগের সাজ্জাদ হোসায়েন।
কয়েকদিন আগে (কাদের মোল্লার ফাঁসির কাছাকাছি সময়ে) আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটা লেখা পড়েছিলাম, যেখানে তিনি বলেছিলেন বাংলাদেশে এখন চলছে গণতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র। এই মুহূর্তে লিঙ্কটা খুঁজে পাচ্ছিনা; কেউ যদি দয়া করে এখানে লিঙ্কটা পোস্ট করেন, তাহলে ভবিষ্যতের জন্য একটা রেকর্ড থাকবে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
অধ্যাপক আবু সাঈদ মতিচোরার খাওয়া দাওয়াই খেয়েছে। না হলে ছাগু আর আবালদের মতো এমন সহজ সরলীকরণ কি করে করে? কি করে বলে সরকার আর শয়তান এক? এই গনতন্ত্র স্বৈরাতন্ত্র থেকে ও খারাপ?
মাসুদ সজীব
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এই দাওয়াই সম্প্রতি খেয়েছেন বলে তো মনে হয় না। চিন্তা করে দেখুন তো, স্বৈরাচার এবং মৌলবাদের প্রতিবাদে (সুশীল টাইপের ধরি-মাছ-না-ছুঁই-পানি প্রতিবাদ না) তিনি কবে এবং কোথায় একটা বিবৃতি দিয়েছেন অথবা কলাম লিখেছেন? "পাবলিক ইন্টেলেকচুয়াল" হিসেবে তাঁর প্রচার এবং প্রসার ঘটেছে মূলতঃ জিয়া এবং এরশাদের শাসনামলে। সুতরাং এদের দোষ তিনি দেখতে না পারলে অবাক হওয়ার খুব একটা কারণ নেই।
মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের শেষ অনুষ্ঠানটাতেও এই আব্দুন নুন তুষার লোকটা ছিলো। মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের অবস্থা দেখে বোঝা যায় কেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতে ৪০বছরের বেশি লেগে যায়।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
প্রান্তিক - আরো মন্তব্য দেখতে চাই, লেখাও... সচলায়তনে নিয়মিত থাকুন
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
দারুন একটা লেখা ভাই। দুইটা পর্বই সাংঘাতিক। প্লিজ লেখা থামিয়েন না। পরের পোষ্টের অপেক্ষায় রইলাম।
আসলেই জামাত শিবিরের এইসব কর্মকাণ্ড আমরা প্রায় সবাই দেখেছি জীবনের কোন না কোন স্টেজে। পুরা বিষয়টা এমন ধাপে ধাপে গুছিয়ে সবার সামনে নিয়ে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
সত্যি যদি সবাইকে ধরে ধরে এই লেখা দুইটি পড়ান যেত পর্যায়ক্রমে !
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
আমার স্কুলের বন্ধুদের অনেককেই হুট করে এই খপ্পরে পড়তে দেখেছি। যার সাথে একসাথে দাঁড়িয়ে জুমার নামাজ পড়েছি সেই যখন একজন খুনীর ফাঁসী চাওয়ায় আমাকে সরাসরি নাস্তিক উপাধি দিয়ে দেয় তখন আর বেশী কিছু বলার থাকে না। আর সেই উপাধিপ্রদায়ক যদি দেশের শীর্ষস্থানীয় কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গ্র্যাজুয়েট হয়, তখন আসলে বোঝা যায় এই ব্রেইনওয়াশের ভুমিকা কতটুকু।
বন্ধুদের দায়িত্ব আমাদেরই নেয়া উচিত। বন্ধুত্ব নষ্ট হবে এই যুক্তিতে অনেক সময়েই আমরা তকর্ করা এড়িয়ে চলি, সেই সুযোগটা নিচ্ছে জামাতীরা।
সৌরভ সাখওয়াত
ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা ইতিহাস-অজ্ঞ এটা ঠিক, কিন্তু ইতিহাস জ্ঞানে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীরাও খুব একটা এগিয়ে নেই। অন্তত ২০১০ সাল পর্যন্ত্য মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা সমাজবিজ্ঞান বইয়ে যে ইতিহাস শিখেছে, সেটা পড়ে বোঝার কোন উপায় নেই পাকিস্তানের "এদেশীয় দোসর" গোষ্ঠীটা কারা, তারা আদৌ বর্তমানে বাংলাদেশে আছে কিনা, এই দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজনের নাম কী ইত্যাদি। স্কুল-কলেজের এরকম ভাসাভাসা ইতিহাসের বইগুলা ছাগুনির্মাণ কারখানায় লুব্রিক্যান্ট হিসেবে কাজ করে।
মাধ্যমিকের একটা বইয়ের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অংশে "জামায়াত ইসলাম" শব্দটার কোন উল্লেখই নাই, নিচের ক্লাসের বইগুলার অবস্থা আরও কত ভয়াবহ কে জানে! তবে সম্প্রতি বইগুলো ঢেলে সাজানো হয়েছে, এখন ইতিহাস অংশে চক্ষুলজ্জা কাটিয়ে জামায়াত ইসলাম ও শীর্ঘ রাজাকারগুলাকে উল্লেখ করা হয়েছে কিনা জানি না।
Big Brother is watching you.
Goodreads shelf
খুঁজে দেখলাম, ৮ম শ্রেণীর নতুন বইটাতে যথেষ্ট পরিস্কার করেই বলা আছে... ৯ম-১০ম এরটা হাতের কাছে নাই... দেখে জানাবো
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনার পর্যবেক্ষন বা অভিজ্ঞতার সাথে আমার দেখা পুরো মিলে যায়। বিশ্বাস করুন, স্বাধীন বাংলাদেশে নিজের কানেই শুনতে হয় এমন কথা যে, "ওদেরকে যে আজ যুদ্ধাপরাধী বলা হচ্ছে, তা কিন্তু হত না, পাকিস্তান জিতলে। তখন মুক্তিযোদ্ধারাই হত কোলাবরেটর এবং ওরাই হত সত্যিকারের দেশপ্রেমিক!" বুঝুন, অবস্থা! এমন কথা শোনার পর আত্মহত্যাই করতে ইচ্ছে করে!! বাস্তব হল, যারা বলে এই কথা, তারা সংখ্যায় এত ভারী থাকে যে, ওদের সাথে পেরেও উঠি না।
যাহোক, আপনার সিরিজটার মাধ্যমে ওদের মুখোশ উন্মোচন হচ্ছে। এই কাজটি ধারাবাহিকভাবে করে যেতে হবে। তাহলেই একদিন ওরা আবার গর্তে ঢুকবে।
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
এই কথাটা অনেককে বলতে শুনেছি। বিরক্তিকর কথা। যুদ্ধ করলেই কি সাধারণ মানুষ হত্যা, ধর্ষণ, তারপর বুদ্ধিজীবি হত্যা জায়েজ হয়ে যায়? কিন্তু তারা এই যুক্তিটা দিবেই।
তারচেয়েও বড় কথাঃ "যুদ্ধ" আর "মুক্তিযুদ্ধ" এই আলাদা দুইটা জিনিসকে এক করার প্রচেষ্টা... এমনে চললে, কয়দিন পরে এটাও বলতে পারে- সাতুই মার্চে বঙ্গবন্ধু ইয়া আলী বইলা পাকি ব্যারাকে হামলা করেছিলেন, তাপ্পর আত্মরক্ষার্থে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী পঁচিশের রাতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে দুর্বৃত্তদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনার অভিজ্ঞতাও লিখুন। সবাই জানুক।
সৌরভ সাখওয়াত
এমন অসাধারন তথ্যমূলক ব্যাখা আমি ব্লগে খুব কম পড়ার সুযোগ পেয়েছি কিংবা পড়েছি। এমন লেখার জন্যে আপনাকে যে পরিমান তথ্য সংগ্রহ আর পরিশ্রম করতে হয়েছে তা অনুমান করেই বিস্মিত হচ্ছি।
আমার পরিবারেও মুক্তিযোদ্ধা আছে বলেই এরা এখন ত্যানা প্যাঁচানো শুরু করে।
সিরিজ চলুক।
মাসুদ সজীব
অনেক ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
বয়স শ্রেণী যুবা ( ১৮ বছর বা তদুর্দ্ধ)। আমার মনে হয় এটা ১৮ বছরের কম যারা তাদের পড়াটা আমাদের চেয়ে আরো বেশি জরুরি। ছোটবেলা থেকেই সঠিক তথ্যটা ওদের জানা উচিত, না হলে ব্রেইন ওয়াশ হয়ে গেলে তাকে আর কোন যুক্তি প্রমাণ দেখিয়ে শহীদের পথ ছেড়ে সত্যের পথে আনা যাবে না।
মাসুদ সজীব
অত্যন্ত জরুরী লেখা।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
চলুক সৌরভ।
আপনি দারুণ এক সহযোদ্ধা!
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
একটা মাস্টারপিস হয়ে থাকবে সিরিজটা।
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
এই লেখাকে আরো ছড়িয়ে দেয়া যায় কীভাবে? ফেসবুকে শেয়ার তো দিচ্ছি, কিন্তু দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা মানুষদের হাতে এই লেখাটা ছড়িয়ে দিতে চাই।
____________________________
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
এই সিরিজটা অসাধারণ বললে কম বলা হয়। একই সাথে প্রচন্ড দরকারিও এই সময়ের জন্য।
সুবোধ অবোধ
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
ক্যাডেট কলেজ এবং আইউটি শিবির এর রিক্রুটমেন্টের একটা বড় ঘাটিঁ। নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা দিব শীঘ্রই । প্রান্তসীমা
আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
সৌরভ সাখওয়াত
আমি যে এলাকায় বেড়ে উঠেছি সেই এলাকা অঘোষিতভাবে জামাত শিবির নিষিদ্ধ ছিল। কোন কোন এলাকায় মিছিল মিটিং নিষিদ্ধ থাকলেও ইফতারপার্টি সিরাতুন্নবী এসবের দাওয়াত চালু থাকে। কিন্তু এখানে এন্টি শিবির মওলানা(কড়া সুন্নী বলে পরিচিত যারা) খুব সক্রিয় থাকাতে ইফতার পার্টি সিরাতুন্নবীতেও একবিন্দু সুযোগ পায়নি জামাত শিবির।
ঠিক তখনই পাড়ায় আবির্ভাব ঘটলো এক মুসলিম মডারেট মায়ের। এই মহিলা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কোরান শিক্ষা দিয়ে থাকেন ঘরে বসে। আধুনিক মানুষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি শুনলে নড়ে চড়ে বসে। সুতরাং পাড়ার মহিলারা কোরান শিক্ষার জন্য তার কাছে যাতায়াত শুরু করে। কোরান শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামী গল্পসল্প ধ্যান ধারণা ইত্যাদি নিয়ে আলাপ আলোচনা চলে।
কয়েকমাস পর দেখা গেল পাড়ায় কালো বোরকার সংখ্যা বেড়ে গেছে। বয়স্ক মহিলাদের পাশাপাশি তাদের বৌ ঝিরাও বোরকা পরতে শুরু করেছে। কোরান শিক্ষার পর সাপ্তাহিক বৈঠকগুলো নিয়মিত হতে থাকে। বৈঠকগুলোতে বোরকার সংখ্যা বাড়তে থাকে।
খেয়াল করুন, রাজনীতি না, শুধু কোরান শিক্ষা আর কয়েকটা বোরকা পরা মুখ। আপাতঃ নিরীহ ধর্মীয় কর্ম বলে মহিলাদের এসব কার্যক্রমের দিকে কেউ পাত্তা দেয়নি। এখানে কেউ রাজনীতির গন্ধও খোঁজেনি। অথচ তার দশ বছর পর, পাড়ার লোক সেই বোরকা পরা বাসাগুলোকে একেকটা জামাতী ভোটব্যাংক হিসেবে আবিষ্কার করে। জাকির নায়েক আর বৈজ্ঞানিক কোরান শিক্ষা এই দুজনে মিলে পাড়ার সকল বিএনপি সমর্থককে সাফল্যের সাথে জামাতের কর্মীতে রূপান্তরিত করে। অতঃপর যে এলাকায় কোনদিন মিলাদ পরার সাহস করেনি, সেই পাড়ায় ঝটিকা হামলা করে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে লিপ্ত হয় জামাত-শিবির। একজন মডারেট মুসলিম মা কিভাবে একটা নির্বিবাদী পাড়াকে চরমপন্থী পাড়ায় পরিণত করতে পারে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ হতে পারে এটি।
জামাত শিবিরের শেকড় বিস্তারের এত চমৎকার বর্ননা খুব কমই পড়েছি। জামাতের ফাঁদে পা দিতে যাচ্ছে তেমন কারো জন্য এই লেখা পাঠ করা খুব জরুরী।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
অসংখ্য ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
এই লেখাটা পড়ে রীতিমত ভীতিকর একটা অনুভূতি হল। পরিস্থিতি যতটা খারাপ আমরা ভাবছি, বাস্তবে এরচেয়ে শত গুন খারাপ অবস্থায় চলে গেছে।
আপনার এই পরিশ্রমী লেখাটি জেগে জেগে ঘুমিয়ে থাকা আমাদের অনেকেরই টনক নড়িয়ে দেবে--
প্রবল আগ্রহে পরবর্ত্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম---
অফুরান শুভ কামনা--
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
চমৎকার লেখা। আপনার শিরোনাম দেখে একটা কথা মাথায় এল। আমরা যারা আশি নব্বই দশকের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেখেছি, আমরা কিন্তু এই দাঁতাল শুয়োরদের সবসময় কাছে থেকেই দেখেছি। এমন নয়, এরা আবার ফিরে এসেছে। এরা সবসময়ই ছিল। ওরা যেভাবে পরিকল্পনা করে রাজশাহীতে বংশ বিস্তার করেছে তিন যুগ থেকে, তাতে মনে হয় এরা ফিরে আসেনি, এরা ছিল এবং ক্ষেত্রবিশেষে এদেরকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
দাঁতাল শুয়োরদের আমরা চিনতে পারি, তারা সরাসরি রগ কাটবে, আগুনে পুড়িয়ে মারবে, ইসলামি জোশ নিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পরবে। কিন্তু অনেকে ছদ্মবেশে থাকে। ওরা ওঁত পেতে থাকে। যখনই সুযোগ পায়, দাঙ্গা বাঁধিয়ে ঝোপ বুঝে কোপ মারে। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের বেজায় রাগ। এই রাগটা ফেটে পরে যে কোন ছুতোয়। ওরা পাকিস্তান সমর্থন করলেও প্রকাশ করবেনা। এরা আসলে মুসলিম লিগের উত্তরাধিকারী। এই মানুষগুলি আওয়ামী লিগ সমর্থনকারীর মধ্যে আছে, আছে বামপন্থিদের মধ্যে, বিম্পির কথা আর নাই বা বললাম!
আমাদের দেশের অনেক তথাকথিত প্রগতিশীল মানুষের মাঝে দেখেছি চরম হিন্দু বিদ্বেষ, নারী স্বাধীনতা বিরোধী। ওরা মুখে বড় বড় কথা বলবে কিন্তু হিন্দুদের বিপদে তাদের ওপর চড়াও হতে দ্বিধা করবেনা।
আমাদের রাজশাহীতে এইসব দাঁতাল শুয়োরদের ফিরে আসার পেছনে এই লুকিয়ে থাকা শুয়োরদের বিশাল হাত আছে বলে আমার মনে হয়। আমাদের ঘরে বাইরে এইসব শুয়োরদের অবস্থান। যুদ্ধটা তাই সব জায়গায় করতে হবে।
ধন্যবাদ।
সৌরভ সাখওয়াত
আপনি খুবই ভালো এবং বাস্তবসম্মত লেখা লিখেছেন।
শিবিরের এত বাড়াবাড়ির আরেকটা কারণ রাজনৈতিক হত্যামামলার কোন বিচার না হওয়া। রা,মে,কর ডাঃ জামিল আখতার রতন, চট্টগ্রামের আট খুন, রা,বির মেধাবী ছাত্র ফারুক হোসেনকে নির্মম্ভাবে হত্যা- ইত্যাদি অসংখ্য ঘটনার কোন বিচার হয়নি। এই বীভৎস খুনগুলোর পরও এদের রাজনৈতিক বৈধতা দেওয়া হচ্ছে স্রেফ ব্যবসার কারণে। শিবির থাবা বিস্তার করে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে। এদের বিচার হলে ধীরে ধীরে এরা নির্মূল হবে।
অনেক কাজের একটা লেখা।
কাল বাসায় আসলাম! এসেই কলেজ পড়ুয়া মামাতো ভাইকে পড়তে দিলাম।
আস্তে আস্তে স্বীকার করল, কিভাবে জামাত-শিবিরের ২টা অনুষ্ঠানে বন্ধুদের কারণে যেতে বাধ্য হয়েছিল।
নিয়মিত 'ইয়ুথ ওয়েভ' নামক ম্যাগাজিন ফ্রী পায়।
উল্লেখ্য, ওর দাদা একজন মুক্তিযোদ্ধা!
জামাত-শিবিরের নাগপাশ আমাদের ধারণার চাইতেও খারাপ অবস্থায় পৌঁছে গেছে।
নতুন মন্তব্য করুন