রাজনীতির প্রশ্নে আমাদের অনেকেই বলে, ভাই আমি রাজনীতি বুঝি না অথবা এই নোংরা রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে আমার ভাল লাগে না অথবা ভাই এইসব কথা বাদ দে আজাইরা পেইন ভাল্লাগে না ইত্যাদি ইত্যাদি অনেককিছু । আমি একটা জিনিস বুঝতে পারি না, এইভাবে ইচ্ছা করে রাজনীতিকে এড়িয়ে চলা আর কতদিন চলবে। আমরা কথায় কথায় রাজনীতিবিদদের গালি দেব আবার রাজনীতির প্রশ্নে এসে এইসব কথা বলে এড়িয়ে যাব। এভাবে চললে কি একদিন আমাদের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে নাকি একদিন এমন একটা জায়গায় আমরা চলে যেতে পারি যেখান থেকে আমাদের আর সুস্থ রাজনীতিতে ফিরে যাওয়া সম্ভব হবে না? ব্যাপারগুলা নিয়ে আমরা একবারও ভাবছি না। কিন্তু এই দেশের রাজনীতি নিয়ে যদি আমরা না ভাবি ভাববে কে? আমরা যদি মাথা না ঘামাই ঘামাবে কে? বর্তমান ধারার রাজনীতির পরিবর্তনের শুরু যদি আমরা না করি করবে কে? এইগুলা নিয়ে আমাদের অনেকেরই কিছুই যায় আসে না। আবার আমরা আশা করব, ভাল রাজনীতি সুস্থ রাজনীতি!
নতুন ধারার রাজনীতির কথা বলা হয়, সুস্থ রাজনীতির কথা বলা হয়, পরিবর্তনের কথা বলা হয়। প্রতিদিন টকশোতে, সম্পাদকীয়তে, ব্লগে, ফেইসবুকে, মাঠে, বাজারে, চায়ের দোকানে সব জায়গায় পরিবর্তনের কথা। সবাই পরিবর্তন চায়। কিন্তু এই পরিবর্তন কি আপনা আপনি চলে আসবে নাকি আলাদিনের জাদুর ছোঁয়ায় পরিবর্তন হয়ে যাবে? আসলে কোনকিছুতেই কিছু হবে না। এইভাবে ঘরে বসে বসে রাজনীতিকে গালি দিলে আর রাজনীতিবিদদের গালি দিলে শুধু আড্ডাটাই জমজমাট হবে তাতে দেশের কোন লাভ হবে না আর পরিবর্তনও আসবে না।
আমরা যদি আসলেই পরিবর্তন চাই, আমাদের সমাজে সুস্থ ধারার রাজনীতির পদার্পণ চাই আমাদেরই সেটা করতে হবে। আলাদিনও এসে করে দিবে না আর আমেরিকা থেকে এসে প্রেসিডেন্ট ওবামাও করে দিয়ে যাবে না। আমাদের সমস্যার সমাধান একমাত্র আমরাই করতে পারি। এখন অনেকেই বলতে পারে, হাজার কালিমামাখা এই রাজনীতিকে পরিবর্তন করা কি সম্ভব অথবা বলতে পারে এই কাজ করতে গেলে তো অনেক প্রতিবন্ধকতা আসবে। আমি বলব, হ্যাঁ বাধা আসবে প্রতিবন্ধকতা আসবে কিন্তু সম্ভব। পরিবর্তন একদিনে হবে না, একশ দিনেও হবে না, একশ বছরেও না ও হতে পারে কিন্তু একদিন ঠিকই হবে। পরিবর্তন একদিন হবেই। আমাদের শুরুটা তো করতে হবে? শুরু না করেই আমরা তো শেষের কথা চিন্তা করতে পারি না। এই শুরু আমাদেরই করতে হবে।
এই পরিবর্তনের শুরু আমাদের করতে হলে প্রথমেই যেটা করতে হবে, আমাদের সবাইকে রাজনীতি চর্চা করতে হবে, রাজনীতি নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করতে হবে, রাজনীতি সচেতন হতে হবে। রাজনীতির প্রশ্নে আমাদের এড়িয়ে গেলে চলবে না, আমাদের সেটা মোকাবেলা করতে হবে। রাজনীতি এমন জিনিস না যে কোন দলে নাম লিখালাম আর রাজনীতি বুঝে গেলাম। রাজনীতি বুঝতে হলে আমাদের সেটা চর্চা করতে হবে। কোন ধরনের অপরাজনীতি আমাদের সামনে বাধা হতে চাইলে আমাদের রাজনৈতিক মেধা এবং প্রজ্ঞা দিয়েই সেটার মোকাবেলা করতে হবে। রাজনীতি নিয়ে চর্চা না করলে সেটা কোনদিন সম্ভব হবে না।
একটু রাজনীতি চর্চা করলে ভবিষ্যতে আমরা কি পেতে পারি সেটা আমাদের পাশের দেশ ভারতের দিকে তাকালেই বুঝতে পারব। সেখানে আজ প্রথাগত রাজনৈতিক দলের বাইরে থেকে নতুন একটা দল আম আদমি পার্টি ক্ষমতায় এসেছে যারা দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে, দেশের মানুষের জন্য কিছুর করা তাগিদ নিয়ে রাজনীতিতে এসেছিল এবং আজ তারা ক্ষমতায়ও অধিষ্ঠিত হয়েছে। এই আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল যিনি পেশায় একজন প্রকৌশলী ছিলেন তিনি হটাত করে কেমনে মুখ্যমন্ত্রী হলেন? রাজনীতি কি এমন যে হটাত করে ইচ্ছা হল আর রাজনীতিবিদ হয়ে গেলাম। না, রাজনীতি একটা চর্চার বিষয় যেটা উনি এবং উনার দলের অন্যান্যরা করে এসেছিলেন অনেক আগ থেকেই এবং আজকে তারা যে ক্ষমতায় সেটা সেই চর্চারই ফল। আমাদেরও সময় এসেছে রাজনীতি সচেতন হয়ে উঠার, নিজেরা সচেতন হই অন্যকেও সচেতন করি। সেটা হোক দেশের প্রতি ভালবাসা থেকে, দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে, দেশের মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদ থেকে।
পরিশেষে বলব, শুরুটা তো করি। শুরু করলে একদিন লক্ষ্যে পৌছবই অথবা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে দিতে পারব এমন একটা জায়গা যেখান থেকে লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে সহজেই।
Omit Chanda
মন্তব্য
নতুন ধারার রাজনীতি শুরু করার কথা অনেকেই বলেন, কেউ কেউ শুরুও করেন। কিন্তু একটা সময় পর দেখা যায়, কেউ ভাঁড় হয়ে গেছেন আর কেউ পুরনোতে বিলীন হয়েছেন। আম আদমী পার্টির ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং। তাদের প্লাস পয়েন্ট ছিল, পার্টি তৈরীর পর তাদের খুব একটা সময় অপেক্ষা করতে হয়নি নির্বাচন পেতে।
ঢাকা বা চট্টগ্রামে আঞ্চলিক নির্বাচনের ব্যবস্থা থাকলে সেটাতে ভাল করা এবং গোটা দেশে ভাল করার মধ্য পার্থক্য আছে বেশ। রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে বেশ পিছিয়ে আমরা। নতুন রাজনৈতিক ধারা তৈরী করে সাড়া ফেলার চেষ্টা করলে ডিজিএফআই কার্যালয় থেকে ডাক আসার সম্ভাবনা যথেষ্টই।
----------------------------------------------------------------
''বিদ্রোহ দেখ নি তুমি? রক্তে কিছু পাও নি শেখার?
কত না শতাব্দী, যুগ থেকে তুমি আজো আছ দাস,
প্রত্যেক লেখায় শুনি কেবল তোমার দীর্ঘশ্বাস!''-সুকান্ত ভট্টাচার্য
একটা দিক দিয়ে আমরা ভারতের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় আছি। সেটা হল আমাদের দেশটা ছোট, আমাদের ভাষা এক এবং আমাদের সংস্কৃতি এক। আমাদের দেশে রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি করা ওদের চেয়ে অনেক গুন সহজ হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
হ্যাঁ, আমাদের একটা পর্যায়ে গিয়ে আটকে গেলে চলবে না। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে একেবারে শীর্ষবিন্দু পর্যন্ত। আমরা সাফল্য না পেলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম পাবে, ওরা যদি না পায় অন্যরা পাবে। কিন্তু আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে। ঠিক রাস্থায় থাকলে একদিন রাস্তার শেষও খুঁজে পাব নিশ্চিত।
Omit Chanda
একটা দিক দিয়ে আমরা ভারতের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় আছি। সেটা হল আমাদের দেশটা ছোট, আমাদের ভাষা এক এবং আমাদের সংস্কৃতি এক। আমাদের দেশে রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি করা ওদের চেয়ে অনেক গুন সহজ হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
হ্যাঁ, আমাদের একটা পর্যায়ে গিয়ে আটকে গেলে চলবে না। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে একেবারে শীর্ষবিন্দু পর্যন্ত। আমরা সাফল্য না পেলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম পাবে, ওরা যদি না পায় অন্যরা পাবে। কিন্তু আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে। ঠিক রাস্থায় থাকলে একদিন রাস্তার শেষও খুঁজে পাব নিশ্চিত।
Omit Chanda
Nice way to start your write up in blog. I hope you'll think and act more in future. I liked particularly one sentence most:
--
মাগো তুমি রেখো জেনে, এই আমরাই দেব এনে,
আঁধারের বাধা ভেঙে রাঙা ভোর, রোদ্দুর মাখা দিন।
http://www.youtube.com/watch?v=8OB_uPY4i4M
স্যার আপনার বিশ্বাস, নীতি, পথ প্রদর্শন আমার চলার পথের পাথেয়। দোয়া করবেন, পাশে থাকবেন আর পথ দেখাবেন এইটুকুই চাওয়া।
Omit Chanda
আমার পথে রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করার নাম দিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এসি ঘরে বসে তৃতীয় শক্তি বলে নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম দেওয়ার প্রয়োজন নেই। রাজনৈতক সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্যে দুটো বিষয় আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় সব সময়।
১। দেশের সকল মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা (কারন অশিক্ষিত মানুষ গুজব আর মিথ্যাচারে বেশি বিশ্বাস করে। এরাই বিম্পি জামাতের মূল চালিকাশক্তি।)
২। দারিদ্রতা থেকে মুক্তি এবং কর্মসংস্থান ( যেই দেশে ১০০ টাকা দিলে মানুষ পাওয়া যায় গাড়িতে পেট্রোল বোমা মারতে, ৫০০ টাকা দিলে মানুষ মানুষকে খুন করে সেদেশে রাতারাতি রাজনৈতক সহিংসতা বন্ধ করা যেমন সম্ভব না তেমনি রাজনীতিতে আদর্শ চর্চা ও পুরোপুরি সম্ভব নয়। যারা রাস্তা ঘাটে ভাঙ্গচুর আর সহিংসতা করে তাদের মাঝে আপনি চাকুরিজীবি পাবেন না ২%, কারন কোন চাকুরিজীবি যতই কোন দলের ভক্ত হোক রাস্তায় নেমে সে মারামারি করবে না। কারন তার একটা নিশ্চিত জীবন আছে, আয়ের ব্যবস্থা আছে। যারা সহিংসতা চালায় তাদের বেশিভাগি সুবিধার জন্যে রাজনীতি করা বেকার আর দরিদ্র জনগোষ্ঠী।)
কেউ বলতে পারেন এটাতো অনেক দীর্ঘ মেয়াদি বিষয়। হ্যাঁ আসলে তাই, রাজনৈতিতে গুনগত পরিবর্তন করে সমাজ কিংবা রাষ্ট্র পরিবর্তন করতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন, এটা আল্লাদিনে চেরাগ না যে ঘষা দিলাম আর তারপর দিন থেকে দেশের সব মানুষ খুব সহনশীল আর সৎ হয়ে গেল। যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে দেশের সর্ব স্তরে গনজাগরন সৃষ্টি করতে আমাদের ৪২ বছর লেগেছে সেখানে রাজনৈতিতে গুনগত পরিবর্তন আনায়নেও আরো ৪২ বছর লাগবে, হয়তো আরো বেশি লাগবে।
মাসুদ সজীব
মানুষ শিক্ষিত হয়ে গেলেও কিন্তু সমস্যার সমাধান নাও হতে পারে, যদি ওই মানুষগুলো রাজনীতিকে তাদের জীবন থেকে বাদ দিয়ে দেয়। রাজনীতি একটা প্র্যাকটিস যে প্র্যাকটিসটা সবার করতে হবে। রাজনীতির প্র্যাকটিস করলে যে আমরা সবাই রাজনীতিবিদ হয়ে যাব সেই রকমটা কিন্তু না, সেটা করলে আমরা রাজনীতিতে নিজেদের জড়াতে পারব , রাজনীতির ভাল মন্দে আমরা নিজেদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারব।
এই জন্য দরকার চর্চা যার মাধ্যমেই আসতে পারে রাজনৈতিক সচেতনতা। সেটা আসলে একদিন আমরা নিজেরাই ফিল করতে পারব দেশের স্বার্থে আমাদের কি করা দরকার। আমাদের রাজনীতিকে এড়িয়ে গেলে, অবহেলা করলে চলবে না এটাকে সাথে নিয়েই আমাদের চলতে হবে।
সচেতনা তৈরি করে শিক্ষা, মানুষ যখন সুশিক্ষিত হয় তখন তার মাঝে সচেতনা তৈরি হয়। অশিক্ষিত আর সুবিধাবাদী মানুষের রাজনৈতিক জ্ঞান হলো দূর এই দেশে দুই দলি সমান। কিন্তু বাস্তবে দুটি দল কখনো সমান হতে পারে না, বাংলাদেশে ও নয়। আর সহিংসতা বন্ধ করবে দেশের মানুষের অর্থ সামজিক অবস্থা। একটা মানুষের যখন নিশ্চিত আয়ের পথ থাকবে( চাকরি/ব্যবসা) সে কখনো রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙ্গচুর করবে না। ভাঙ্গচুর তারাই করে যাদের জীবন অনিশ্চিত অন্ধকারে, যারা ধর্মীয় অজ্ঞনতা দ্বারা ব্রেইন ওয়াশ, যারা ত্রাস সৃষ্টি করে দলের মাঝে তার অবস্থান সৃষ্টি করতে চায়।
মাসুদ সজীব
আগাচ্ছিলো বেশ। শেষে ইন্ডিয়ার উদাহরণ এসে জিনিসটা কেচে গেল।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ইন্ডিয়াতে সমস্যা হতে পারে উদাহরণে কি সমস্যা? যে কারো ভাল উদাহরণ থেকে যদি আমাদের অনুপ্রেরণা পাবার সুযোগ থাকে আমরা সেটা কেন গ্রহণ করব না? সেটাতো আমাদের নিজেদের স্বার্থেই তাই না?
সমস্যা হৈলো ইন্ডিয়ার উদাহরণটা ভালো উদাহরণ না। অতএব সেখান থেকে অনুপ্রেরণা পাবার দরকার নেই।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
মানলাম। কিন্তু তার জন্য "আম-আদমী পার্টি" স্টাইলে নতুন কোন রাজনৈতিক দল করার (অথবা এই ধরণের দলের উদাহরণ দেওয়ার) কি প্রয়োজন আছে? আম-আদমি পার্টির দায়বদ্ধতা জনগণের প্রতি নাকি অন্য কোন interested party-র প্রতি - সেটা এখনও প্রমাণ হয়নি। এই ধরণের দল আমাদের দেশে ইউনুস নবীও করতে চেয়েছিলেন। তাঁর সমস্যা ছিল তিনি বাঙালির political acumen-কে underestimate করেছিলেন; ভেবেছিলেন জনগণ তাঁর দেখানো হাইকোর্টেই ধরনা দেবে। তিনিও প্রথমে বুঝতে পারেননি (এবং হয়ত আপ্নিও বুঝতে পারছেন না) যে বাঙালির political sensory organ কতটুকু highly evolved এবং sophisticated!
এখনই আমরা একটা পার্টি করে ফেলি সেটা কিন্তু বলি নি। এখানে আম আদমি পার্টির কথা বলা হয়েছে শুধুমাত্র একটা ভাল উদাহরণ হিসেবে। আম আদমি পার্টি ভাল না খারাপ সেই তর্কে আমরা কেন যাব, এখানে ওই পার্টির রাজনীতিতে আসার পজিটিভ দিকটাই এসেছে। ওরা ভাল নাকি খারাপ সেটার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় আমরা এ থেকে ভাল কিছু পেতে পারি কিনা।
আমাদের রাজনৈতিক প্রসঙ্গ চর্চা কিংবা আলোচনার ক্ষেত্রে যে অবহেলা বা এড়িয়ে চলা সেটাই এখানে আলোকপাত করা হয়েছে। রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে হলে প্রথমেই আমাদের যেটা দরকার সেই রাজনৈতিক সচেতনতার কথা বলা হয়েছে। আমরা যদি রাজনীতি সচেতন হই, আমরা যদি ভালমত অবলোকন করতে পারি যে, রাজনীতির মাঠে রাজনীতিবিদরা শিষ্টাচার বহির্ভূত, নৈতিকতা বিবর্জিত কিছু করছে কিনা এবং আমরা যদি তার জন্য রাজনীতিবিদদের জবাবদিহি করাতে পারি তবেই আমরা তাদের কাছ থেকে ভাল কিছু বের করে নিয়ে আসতে পারব।
অনেক কথাই হয়, কেউ কেউ কিছু শুরু করেনও কিন্তু তাঁদের পেছনে এসে কেউ দাঁড়ায় কি?
পুরো ব্যাপারটা একটা সার্কুলার রেফারেন্সের মত।
একটা উদাহরণ দেই,
ধরুন, আপনি সুস্থ রাজনৈতিক ধারার কথা বললেন, একটা আসনে দাঁড়ালেন।
এখন, আপনাকে সাহায্য করতে আমি আসলাম, আপনার সাথে সাথে ঘুরে বেড়ালাম, বক্তৃতা দিলাম, ভোটারদের কনভিন্স করলাম। আপনি নির্বাচিতও হয়ে গেলেন। এবার আমি আপনার কাছে যাব টেন্ডার পাইয়ে দেবার তদবিরে, এলাকার ভোটাররা আসবে চাকরির তদবিরে, স্কুলের শিক্ষক তার শালার পোস্টিংয়ের তদবিরে আসবেন -এক কথায় অন্যায়-আবদারে সয়লাব হয়ে যাবেন একসময়। আপনি যদি এসবে তাল না দেন তবে, যেই আমজনতা আপনাকে ভোট দিয়েছিল, যেই আমি আপনার জন্য গলা ফাটিয়েছিলাম -সবাই আপনার উপর রুষ্ট হব। ফলাফল কি হবে বুঝতেই পারছেন।
আমি এখনও ঠিক নিশ্চিত না, বাংলাদেশের আমজনতা দেশের জন্য সৎ প্রতিনিধি বাছাই করবার বিষয়ে এখন আর আন্তরিক কি না। বরং আমার মনে হয় সবাই ভাবে এই লোকের দ্বারা আমাদের কি ফায়দা হবে অথবা আমি যেই পার্টি করি এই লোক সেই পার্টির, কাজেই একটা কলাগাছকে নমিনেশন দিলেও আমি এই মার্কাতেই ভোট দেব।
গত কয়েক দশকে রাজনৈতিক আনুকূল্যে রাতারাতি ধনী হয়ে যাওয়া লোকের সংখ্যা এখানে কম না। এর মধ্যে সাংসদ এর নিচেও জেলা থানা এমনকি ইউনিয়নের নেতাদেরও উদাহরণ দেয়া যায় যারা বাতাস থেকে টাকা ধরতে পেরেছেন। আর, এটাই সবাইকে আগ্রহী করে তুলছে এই প্রথাগত রাজনীতিতে। আর, একারণেই একটা সুস্থ্য ধারায় তৈরি করাটা কঠিন এখানে।
সবার শেষে বলি, "দেশটা সেরে উঠুক, সবাই ভালো থাকুক, বাংলাদেশের সবার ভালো হোক।"
শুভেচ্ছা
এই জন্যেই তো রাজনৈতিক সচেতনতার কথা বলেছি। যেটা আমাদের শিখাবে দেশের জন্য রাজনীতি, সবার জন্য রাজনীতি শুধু নিজের জন্য না। নিজের তুচ্ছ সার্থকে গুরুত্ব না দিয়ে কিভাবে দেশের স্বার্থে সবাই একসাথে কাজ করতে পারি সেটাই শিখতে হবে আমাদের। যেদিন আমাদের বেশিরভাগের সেই বোধটুকু আসবেই সেদিনই কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে।
নতুন মন্তব্য করুন