সুপারম্যান আমার প্রিয় সুপারহিরো। কিছু হবার সুযোগ থাকলে সুপারম্যানই হতাম। নো ডাউট।
আজ একটা এনিমেশন মুভি দেখছিলাম, সুপারম্যান ভার্সাস দ্য এলিট। দেখতে দেখতে মাঝপথে গিয়ে এক জায়গায় আটকালাম। সুপারম্যান এবং এলিটদের লিডার ম্যানচেষ্টার এর মাঝে তর্ক চলছে। ম্যানচেস্টার আইন নিজের হাতে তুলে নেবার পক্ষে, কারন হিসেবে তার বক্তব্য, সুপারম্যান অনেক বেশি রেসট্রিক্ট মানুষ, সে আইনও মেনে চলার চেষ্টা করে লাইন বাই লাইন। আর তাই বিভিন্ন সময়ে সে অসহায়। চোখের সামনে অনেক কিছু হতে দেখেও তাকে চুপ করে থাকতে হয়।
আবার বিভিণ্ন সময়ে সুপারম্যান সাংঘাতিক সব সুপারভিলেনকে থামিয়েছে, তারাও রেগুলার বেসিসে জেলখানা থেকে পালিয়ে ঝামেলা করেই যাচ্ছে। সবার প্রশ্ন, কেন তুমি তাদের মেরে ফেলছ না? সুপারম্যান বলছে, আমি আইন হাতে তুলে নেব না। আই ওন্ট বি দ্য জাজ।
সবাই আবার প্রশ্ন তুলছে, ওরা তো বার কার পালাচ্ছে, মানুষ মারছে শয়ে শয়ে... কি করবে তুমি এই বিষয়ে? কেন তাদের পারমানেন্ট ভাবে চুপ করিয়ে দেয়া হচ্ছে না?
এই রকম সময়ে আসে এলিট গ্রুপ। তারা জানায় আইন নিজের হাতে তুলে নিতে তারা ভয় পায় না। তারা দরকারে তা করবেও। সাধারণ মানুষ খুশি হয় তাদের বক্তব্যে।
এলিট নেতা ম্যানচেস্টার আর সুপারম্যান দাড়িয়ে আছে বিশাল এক টিভি স্ক্রীন কমপ্লেক্স এর সামনে।
কয়েকশ টিভিতে সারা দুনিয়া জুড়ে চলা নানা অরাজকতা দেখানো হচ্ছে, মানুষ মানুষকে মারছে, বোমা দিয়ে উড়িয়ে দিচ্ছে দালান কোঠা, যুদ্ধ চলছে, মিসাইল মেরে গ্রাম শহর উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
এর সামনে দাড়িয়ে ম্যানচেস্টার এর বক্তব্য, মানুষ কখনই ভাল ছিল না, কোনদিনও হবেও না। সুতরাং কেউ বাধা না দিলে অসহায়রা মার খেতেই থাকবে, লোভী মানুষরা তাদের উদ্দেশ্য সাধন করেই যাবে আইনের ফাক গলিয়ে আর সুপারম্যানের মত মানুষেরা আইনের নাম করে চুপ করে বসে থাকবে।
কাউকে দায়িত্ব তুলে নিতেই হবে নিজের হাতে।
এখণ মুভি থেকে একটু সরে যাই। প্রথমত, ম্যনেচেস্টার যা বলেছে, সেটা নিয়ে একটু ভাবতে গিয়ে দেখা গেল, তার কথার সাথে একমত না হয়ে পারা কিছুটা মুশকিল।
আইন আছে সত্য, কিন্তু সেই আইন তৈরি করছে কারা? ক্ষমতাশালীরা, নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য। নিজেদের সুবিধা দেবার জন্য। সত্যিকার অর্থে সাধারন মানুষ যেভাবে সবসময় বঞ্চিত ছিল, তাই আছে। তাদের বঞ্চনা করার এপ্রোচ চেঞ্জ হয়েছে, উপায় চেঞ্জ হয়েছে, কিন্তু সিচুয়েশন আছে সেই একই।
মানুষ বেসিকালি লোভী এবং সুযোগ পেলে দুর্নীতি করে। এ থেকে তাকে দুরে রাখার জন্য প্রাচীন কালে ধর্মীয় আইন প্রনয়ন করা হয়েছে, আধুনিক কালে রাষ্ট্রীয় আইন। আইন যেখানে কড়া অথবা মানুষ ভাবছে সে শাস্তি পাবে অপরাধ করলে, সেটা এখানে হোক আর পরকালে হোক, মানুষ নিজেকে সংযত রাখছে।
যারা ধর্মীয় আইনে বিশ্বাস হারিয়েছে, তাদের ঠেকাচ্ছে বা ঠেকাবার চেষ্টা করছে রাষ্ট্রীয় আইন। সেই আইন এর প্রয়োগ যদি কড়া এবং সঠিক হয়, মানুষ ঠিক থাকছে, যদি না হয়, তবে সুযোগ নিয়েই চলেছে বিভিন্নভাবে।
সাধারন মানুষ আইন মেনে চলে, কারন তার সুযোগ কম আইন ভেঙ্গে বেচে যাবার। ক্ষমতাবান মানুষ আইন মেনে চলার দায় নেয় না, কারন তারা আইন ভেঙ্গেও শাস্তি পাচ্ছে না।
ফলাফল, সারা পৃথিবীতেই যে অরাজকতা চলছে, তা চলছেই। কখনও একজন মানুষ অনেক মানুষের উপরে অন্যায় সুযোগ নিচ্ছে, কখনও একটা দেশ ক্ষমতার জোরে অন্য দেশগুলোর উপরে অন্যায় সুযোগ নিচ্ছে। দেখবার কেউ নেই। রেগুলেট করা কেউ নেই।
এরকম সিচুয়েশনে সত্যিই মনে হয়, আইনটা নিজের হাতেই তুলে নেই!!
সমস্যাটা আসলে কোথায়? কেন এরকম হচ্ছে? মানুষকে কি আসলে ডান্ডা বেরি পড়িয়ে সবসময় সোজা রাখতে হবে? আগে ছিল ধর্মীয় আইন, এখণও আছে। কিন্তু ধর্মীয় আইনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হল, এটার পুরস্কার আর শাস্তি, দুটোই মরে যাবার পরে। এই পুরস্কার আর শাস্তি স্কীমের উপরে ভরসা হারানো অসম্ভব নয়, যেহেতু যুক্তিগ্রাহ্য, সলিড প্রমান কেউ দেখাতে পারেনি এখনও, পুরস্কার বা শাস্তি, কোনটার বিষয়েই।
রাষ্ট্রীয় আইনের দুর্বলতা হল নজরদারির অভাব। একে তো পর্যাপ্ত পরিমান নজরদারি সম্ভব নয়, তার উপরে যে সবার উপরে নজর রাখছে, তার কার্যকারিতার উপরে কে নজর রাখবে, কে এই নিশ্চয়তা দেবে যে সে তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে?
টেকনোলজির উন্নয়নের সাথে সাথে ভবিষ্যতে হয়ত এমন অবস্থার সৃষ্টি হবে, যাতে প্রত্যেকটা মানুষকে প্রতিটা মুহুর্তে সারভেইল্যান্স সিস্টেম এর আওতায় আনা সম্ভব হবে। প্রতিটা মানুষের প্রতিটা আচরণ কম্পিউটারে লগড হয়ে থাকবে আর তারই ভয়েই হয়ত কেউ কোন অপরাধ করবে না।
প্রশ্ন জাগে আবার, যারা নিয়ন্ত্রনে আছে এই কম্পিউটার সিস্টেম এর, তাদের কেউ যে আবার সেই লগবুক এডিট করে নিজেদের করাপ্টেড কর্মকান্ডের ধরা পরা থেকে নিজেদেরকে বাচাবে না এর নিশ্চয়তা কোথায়? উ উইল ওয়াচ দ্য ওয়াচার?
পাওয়ার টেন্ডস টু করাপ্ট, এবসল্যুট পাওয়ার করাপ্টস এবসল্যুটলি।
সমস্যাটার তাহলে সমাধান এভাবেও হচ্ছে না।
অন্য কোন সমাধান সম্ভব? মানুষ কি আসলেই চেঞ্জ হতে পারে? নাকি চিরজীবন মানুষকে এভাবেই নজরদারির ভেতরে ভালমানুষ হয়ে থাকতে হবে? আর সেই নজরদারির ভেতরে কেউ কেউ সুযোগ নিয়ে নেবে সিস্টেম এর দুর্বলতা কিংবা অন্য কোন সুত্র ধরে?
এই চক্র কি চলতেই থাকবে?
প্রসঙ্গ ছেড়ে একটু দুরে যাই।
পৃথিবী জুড়ে ধর্মের ধারকেরা যাই বলুক না কেন, ইভোল্যুশন একটা প্রমানিত থিয়োরী। আগে কিছু বিষয়ে গ্যাপ ছিল, কিন্তু গত পঞ্চাশবছরে জেনেটিক বিদ্যার উন্নতি এবং বিভিন্ন পরীক্ষা এটা নিশ্চিত করেছে যে ক্রমাগত জেনেটিক পরিবর্তন এবং পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেবার ফলে মানুষ আজ এসেছে যেখানে সে আছে।
ক্রো-ম্যাগনন মানুষ এর উদ্ভবের পর অনেক অনেক সময় পার হয়ে গেছে। কিন্তু এই লক্ষ বছরে মানুষের মাঝে বড় কোন চেঞ্জ দেখতে পারেন নি বিজ্ঞানীরা, যেটা তাদের অবাক করেছে। বেসিকালি, লক্ষ বছর আগের ক্রো ম্যাগনন মানুষের মাত্র জন্ম নেয়া বাচ্চা ধরে নিয়ে এসে যদি বর্তমান মানব সমাজে বড় করা হয়, তাকে আলাদা করার তেমন কোন উপায় থাকবে না।
রহস্যটা কোথায়? কি মানুষের ইভোল্যুশনকে থামিয়েছে? বিজ্ঞানীরা ভাবছেন দুটো কথা:
এক হল, লক্ষ বছর খুব কম সময় কোন পরিবর্তন লক্ষ করার জন্য। আরও বেশি সময় লাগবে।
দুই হল, কোনভাবে মানুষের ইভোল্যুশন প্রসেস থেমে গেছে।
আমি কথা বলতে চাই দুই নম্বর চিন্তা টা নিয়ে।
আদিকাল থেকেই পরিবেশের পরিবর্তন জীবকুলের মাঝে পরিবর্তন এনেছে। পরিবেশ ভিন্ন হয়ে গেলে সেই ভিন্নতার সাথে যে কজন মানিয়ে নিতে পেরেছে, তারাই সারভাইভ করেছে, পরিবর্তিত জিন ট্রান্সফার করতে পেরেছে পরের প্রজন্মে। প্রতিকুল পরিবেশে মানিয়ে নেবার ক্ষমতাই ছিল সারভাইভ এবং নিজের বংশগতিকে বাচিয়ে রাখার একমাত্র উপায়।
একটা সময়, মানুষ ক্ষমতাধর হয়ে উঠতে শুরু করে তার বুদ্ধির জোরে। প্রকৃতির দেয়া ইন্সটিংট, যেটার ব্যবহার দিয়ে অলমোস্ট সব প্রানী বেচে আছে, বংশবৃদ্ধি করছে, সেই ইন্সটিংটকে সে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছে নিজের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে।
নিজের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সে নিজের উন্নতি করেছে, নিজের চারপাশের পরিবেশের উপরে নিয়ন্ত্রন নিয়েছে, নিজের বাচার সম্ভাবনা বাড়িয়েছে। প্রতিকুল পরিবেশকে নিজের সুবিধা মত পরিবর্তন করে নিতে শুরু করেছে নয়ত তার বিরুদ্ধে কোন রকম রক্ষা কবচ আবিস্কার করেছে।
প্রাকৃতিক প্রতিকুল পরিবেশ ভিত্তিক সারভাইভাল অভ দ্য ফিটেস্ট এখন আর কার্যকর নেই। কারন প্রতিকুল পরিবেশে আর প্রতিকুল থাকছে না, মানুষ তাকে নিজের অনুকুল করে নিচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে আরও নেবে। মানুষ আর চেঞ্জ হচ্ছে না, পরিবেশই চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে।
মানুষের ইভোল্যুশন বন্ধ হয়ে গেছে। কারন প্রকৃতি মানুষকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা হারিয়েছে, মানুষই এখণ প্রকৃতিকে চ্যালেঞ্জ করছে প্রতিনিয়ত। প্রকৃতি মানুষের উপরে ছাটাইকর্মের মাধ্যমে পরিবর্তন আনয়নের উপায় হারিয়ে ফেলেছে। খুব সহজে ফিরে পাবে বলেও মনে হয় না।
এখণ সময় এসেছে, মানুষকে নিজেকেই নিজের ইভোল্যুশন এর দায় ঘাড়ে তুলে নিতে হবে।
কানাডিয়ান সায়েন্স ফিকশন লেখক রবার্ট জে, স্যয়ার ( টিভি সিরিজ ফ্ল্যাশ ফরওয়ার্ড তার বই এর উপরে বেজ করে বানানো হয়েছে।) এর একটা সাই ফাই ট্রিলজি রয়েছে, নাম দ্য নিয়ান্ডারথাল প্যারালাক্স।
সেখানে তিনি একটা চমতকার ধারনার কথা বলেছেন। এটাকে বলা হচ্ছে নিয়ন্ত্রিত বিবর্তন। না, তার গল্পের চরিত্ররা জেনেটিক এক্সপেরিমেন্ট চালায়নি নিজেদের উপরে। কারন তাদের মতে জেনেটিক এক্সপেরিমেন্ট অত্যন্ত নাজুক একটা জিনিস এবং এটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে যাওয়া বিপজ্জনক। তারা সমাজে বিদ্যমান ভায়োলেন্স এবং করাপশন ঠেকাতে যে ব্যবস্থা নিল সেটা হল এরকম,
শক্ত সামাজিক কাঠামো তো রয়েছেই, আইনও রয়েছে। কিন্তু কেউ কোন অপরাধ করলে, বিশেষ করে ভায়োলেন্স টাইপ অপরাধ করলে বা কারও মাঝে কোন রকম অপরাধ প্রবনতা দেখা দিলে এবং সেটা প্রমানিত হলে তাকে শাস্তি পেতে হবে।
কি সেই শাস্তি? কারাগার? হত্যা? নির্বাসন? কোনটাই নয়। প্রথমে তাকে সমাজের গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হবে এবং সে যেন তার মাঝে থাকা ভায়োলেন্স বা অপরাধ প্রবনতার জন্য দায়ী এর যে জিন, সেটা যেন সে পরবর্তী জেনারেশনে ছড়িয়ে দিতে না পারে, সে জন্য তাকে জন্মদানে অক্ষম করে দেয়া হবে। শুধু তাকেই নয়, তার সাথে ৫০ শতাংশ জিন শেয়ার করছে এমন যে কাউকেই বংশবৃদ্ধিতে অক্ষম করে দেয়া হবে।
সে যা করেছে, এর জন্য তাকে সরাসরি দায়ী করা হচ্ছে না, দায়ী করা হচ্ছে তাকে পরোক্ষে নিয়ন্ত্রন করতে থাকা জিনকে এবং সেই জিনকে সমাজ থেকে সরিয়ে দেয়া হবে, বিলুপ্ত করে দেয়া হবে সময়ের সাথে সাথে। বিষয়টা যেন এরকম, পাপকে ঘৃনা কর, পাপীকে নয়!!
এবারে চিন্তা করুন, আস্তে আস্তে উগ্রতা, হিংস্রতা, অপরাধপ্রবনতার জন্য দায়ী জিনগুলো যখন সমাজ থেকে সরে যাবে, মানুষ কি আসলেই বেটার কিছু হবে না?
হয়ত অনেক সময় পরে, হয়ত কয়েকশ বছর পরে, হয়ত হাজার বছর পরে সত্যিই একদল মানুষ পৃথিবীতে বাস করবে যারা হবে সত্যিকার অর্থেই অসাধারন মানুষ। প্রত্যেকেই। পৃথিবীতে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষ হবে ভাল মানুষ।
এটা কষ্টকল্পনা নয়, এটা ম্যাথ, এটাই নিয়ন্ত্রিত বিবর্তন এবং এটার বাস্তবায়ন সম্ভব।
ঠিক একই ভাবে, সমাজের গড় বুদ্ধিমত্তাও বাড়ানো সম্ভব। চিন্তা করুন, সবার গড় বুদ্ধিমত্তা ১২০ বা ১৫০ আইকিউ পয়েন্ট। কারও মাঝে নেই কোন রকম অপরাধপ্রবনতা, এরকম একটা সভ্যতা কোথায় যেতে পারে? কোন উচ্চতায় উঠতে পারে? আর সুপারম্যান? সেটাও হয়ত সম্ভব হবে কোনদিন!
আমরা আগে প্রকৃতির নিয়ন্ত্রনে ছিলাম। এখন কোন নিয়ন্ত্রন নেই। যদি শীঘ্র কোন রকম নিয়ন্ত্রন না নেয়া হয়, তাহলে চিন্তা করুন, গতিশীল একটা বাহন কোনরকম নিয়ন্ত্রন ছাড়াই ছুটে চলেছে... ফলাফল কি হতে পারে....
মানবজাতি ভাল নয়, কোনদিন পুরোপুরি ভালও ছিল না। তবে চেষ্টা করলে ভবিষ্যতে ভাল হতে পারে।
এবারে ফিরে যাই সবার প্রথমে। দ্য এলিট। তারা যা বলছিল, যথেষ্ট যুক্তি আছে, আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া ছাড়া উপায় থাকে না হয়ত টাইম টু টাইম... কিন্তু কোন রকম চেক এবং ব্যলান্স ছাড়া এটা নিয়মিত ঘটতে থাকলে করাপশন আসতে বাধ্য। এবং শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে....
সুপারম্যান এই বিপদ সম্পর্কে জানে এবং বোঝে বলেই সবরকম ক্ষমতা থাকার পরেও, সবরকম আইন ভেঙ্গে ভাল, নিরাপদ থাকার ক্ষমতা থাকার পরেও সে বলে, কেউ ই আইনের উর্ধ্বে নয়, এমনকি আমিও নই।
ডিসি ফিকশনাল ইউনিভার্সের পৃথিবীতে সুপারম্যান ইজ দ্য আলটিমেট, এবসল্যুট পাওয়ার। সেই পাওয়ার যদি করাপ্ট হয়ে যায়... ফলাফল অনুমান করা যায় সহজেই।
ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্য।
মন্তব্য
এই ডকুমেন্টারিটা দেখেছেন?
আরও মন্তব্য আসছে।
নাম জানা গেল না!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
দেখিনি, কিন্তু সামহাউ আপনার লিংকটাও শো করছে না। প্লিজ নামটা দিন। আমি দেখে নেব। ধন্যবাদ।
দেখা তো যাওয়া উচিৎ। আপনার জন্য লিঙ্ক সরাসরি পেস্ট করলাম
http://www.youtube.com/watch?v=C7D-4ZoF8oE
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ডকুমেন্টারিটা দেখলাম।
এই আইডিয়া কি আমারাও ফলো করছি না। বিয়ের সময়ে এ্যাত এ্যাত খোঁজাখুঁজি, ক্রাইটেরিয়া, হ্যান ত্যান --- সবই তো লোকাল বা ব্যক্তিগত লেভেলে সেইম জিনিষেরই রেপ্লিকেশন।
আরেকটা ইন্টারেস্টিং অবজারভেশন হল, (এনিমেল প্লানেটের ডকুমেন্টারী নির্ভর বিদ্যায় দেখলাম) বেশ কিছু প্রাণীর মধ্যে এই সুপেরিয়র মেল শুধু ফিমেলকে ব্রিড করানোর অধিকার লাভ করে -- জিনিষটা প্রতিষ্ঠিত। এভাবে শক্তিশালীর জিন প্রপাগেট করে। ঠিক সেইম জিনিষটাই এখানে করার চেষ্টা হয়েছে -- শক্তির জায়গায় হ্যান্ডসাম এবং জিনিয়াস নিতে চেয়েছে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
হুম ব্যক্তিগত লেভেলে সেইম জিনিষেরই রেপ্লিকেশন বটে। আমরা ব্যক্তিগত জীবনে হয়ত অনেক কিছুই করি বা চাই, সেগুলোর ভাল মন্দ খারাপ ভাল সবই পাওয়া যাবে, কিন্তু সেটা রাষ্ট্রীয়ভাবে আইন করে বাস্তবায়নের ধারণাটা কী পরিমান নোংরা সেটা ভাবাও যায় না।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ঠিক
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
নিয়ন্ত্রিত বিবর্তন বাস্তবায়ন করতে পারলে মানুষের মনুষত্ব্যের বিজয় হবেই। সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্যে ধন্যবাদ।
মাসুদ সজীব
আপনাকেও ধন্যবাদ সময় করে পড়ার জন্য।
ইউজেনিক্সের আইডিয়ার সাথে তফাত পেলামনা। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে এই আইডিয়া বেশ জনপ্রিয় ছিল। এই ধরনের কাজ নাজি জার্মানিতে করার চেষ্টা হয়েছিল বেশ বড় স্কেলে, আর ছোট বা মাঝারি স্কেলে আমেরিকা সহ আরো বেশ কিছু দেশে, ফলাফল কোনো জায়গাতেই পজিটিভ কিছু হয়নি, এবং পুরো ব্যাপারটাই অত্যন্ত বিতর্কিত বলেই জানি, নৈতিক ও অন্যান্য কারণে। আমেরিকাতে ইউজেনিক্সের শিকার ব্যাক্তিদেরকে আইনের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে অনেক জায়গায়।
---দিফিও
আমি আপনার লিংকটা আপাতত না পড়েই মন্তব্য করছি। পড়ার পরে আবার মন্তব্য করবো।
আপাতত আমার নলেজ থেকে বলি, নাজীরা যা করেছিল, আইডিয়া আমার জানামতে ছিল এরকম, একমাত্র তারাই শ্রেষ্ঠ এবং তারাই পৃথিবী শাশন করবার যোগ্য। তারা নিজস্ব জাত বিশুদ্ধতা বজায় রাখার জন্য কঠোর নিয়ম করেছিল এবং ইহুদীদের বাজে রক্ত বা দুষিত রক্ত বলে তাদের কে সরিয়ে তথা কোনভাবেই যেন মিশ্রন হয়ে আর্যজাতি সঙ্কর না হয়, সেজন্য তাদের একদম বিলুপ্তই করে দেয়া হোক।
পয়েন্ট এক: তারা নিজেদের বিশুদ্ধ বলছে, বাকিদের দুষিত বলছে, তাই গনহারে মেলে ফেলতে তাদের বাধেনি।
পয়েন্ট দুই: তারা এই পার্জিং টা করতে চেয়েছে অত্যন্ত দ্রুত, তাই মেরে ফেলাই ছিল তাদের চোখে সর্বচ্চ উপায়।
আমি যেটার কথা বলছি, সেটাতে হয়ত আইডিয়া কিছুটা সেম, তবে মৌলিক পার্থক্য হল
এক: এখানে সবাইকে ধরা হচ্ছে, কোন নির্দিষ্ট জাতি বা একক গোষ্ঠীকে নয়। তাই ম্যাসাকার হবার চান্স কম, কারন বিশেষ কিছু কারন হবার আগ পর্যন্ত সবাই সমান। আইন মোতাবেক অপরাধী হলেই তাকে আলাদা করা হবে, যেটা এখনও করি আমরা। আমরা আটকে রাখি, মৃত্যুদন্ড দিই। কিন্তু সেখানে বলা হয়েছে, তাকে সমাজের গুরুত্বপুর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হবে, তার মানে জেল নয়, নির্বাসন নয়, সে সমাজেই থাকবে, তবে তুলনামুলক নিম্ন গুরুত্বের দায়িত্বে, যেখানে সে তার ব্যাক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য খুব কম প্রভাব ফেলবে সমাজে।
দুই: একই সাথে দুষ্ট জিনকে সরিয়ে ভবিষ্যতকে নিরাপদ করে নেবার জন্য তাকে জাস্ট সন্তান জন্মদানে অক্ষম করা হচ্ছে, মেরে ফেলা হচ্ছে না। আরও নিশ্চিত করার জন্য তার সাথে ৫০ শতাংশ জিন শেয়ার করছে এমন যে কাউকেও সন্তান জন্মদানে অক্ষম করে দেয়া হচ্ছে। বাকিদের কিন্তু অন্য কোন শাস্তির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে না, জাস্ট জিনকে ব্লকড করে দেয়া হচ্ছে তারা যেন ফিউচার মানব সমাজে যেতে না পারে। সে তার সামাজিক অবস্থান ধরে রাখছে।
এভাবে করে যদি সমাজ থেকে রেপ, ভায়োলেন্স, ক্রাইম এবং যে কোন অপরাধকে চিরতরে তাড়ানো সম্ভব হয়, এটা কি করা উচিত না?
প্রতি বছর খুন হচ্ছে কতজন মানুষ? রেপ হচ্ছে কতজন? অপরাধ ঘটছে কতশত হাজার লক্ষ?
নজরদারি দিয়ে অবস্থার উন্নতি এক পর্যায়ে গিয়ে লিমিটেড হতে বাধ্য, কারন সমস্যার বীজ সমাধান না করে কেবল উপসর্গ ট্রিটমেন্ট খুব একটা কার্যকর উপায় নয়।
ধন্যবাদ। আমি আপনার লিংকটা পড়ে আবার মন্তব্য করবো।
সুপার হিউম্যান তৈরি করার যে ধারণা সেটা নাজিদের ধারণার সাথে নীতিগতভাবে একই রকম। বাস্তবায়নের রীতিতে পার্থক্য আছে বটে কিন্তু নীতিতে পার্থক্য নেই। আর সবচেয়ে বড় ব্যপার হল এই জিনিসটা এত সরলরৈখিক ম্যাথ নয়। যদি না পড়ে থাকেন তাহলে বিবর্তনের ওপর কিছু বেসিক বই পড়ে দেখুন।
ডকিন্সের 'দ্যা গ্রেটেস্ট শো অন দ্যা আর্থ' এর রেফারেন্সে একটা এক্সপেরিমেন্টের কথা যতটুকু মনে আছে উল্লেখ করার চেষ্টা করছি। বন্য নেকড়েদের থেকে গৃহপালিত একটা প্রজাতি (প্রজাতি হয়ত হবে না) সৃষ্টি করার একটা প্রয়াস নেয়া হল। শুরু হল সিলেক্টিভ ব্রিডিং। হিংস্র নেকড়েদের মধ্যে থেকে তুলনামূলকভাবে নম্রগুলোকে খুঁজে বের করে তাদের মধ্যে ইন্টারলাল ব্রিডিং করানো হল। মনে করুন এই প্রক্রিয়া বেশ কয়েক জেনারেশান ধরে চলল। দেখা গেল উদ্দেশ্য কিছুটা সফল, নতুন যে বাচ্চা-কাচ্চা পাওয়া গেল সেগুলো বেশ ভদ্র-সদ্র। কিন্তু তাদের আরও কিছু বৈশিষ্টও বদলে গেছে। তাদের লেজ আর নেকড়ের মত নেই। তাদের লেজের বেশ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দৃষ্টিগোচর হচ্ছে।
কথা হল এই পরীক্ষা থেকে আমরা কী শিখলাম? শিখলাম যে, এই যে জেনেটিক বৈশিষ্ট্য ব্যাপারটা এমন সরলরৈখিক নয়। আপনি চাচ্ছেন যে একটা সুপারহিউম্যান প্রজাতি তৈরি করবেন, দেখা গেল তাদের জায়গামত একটা ন্যাজ গজিয়ে গেল, অথবা আমাদের হিউম্যান প্রজন্মের যে ন্যাজটা আছে সেটা নাই হয়ে আপনার সুপারহিউম্যান হয়ে গেল একেবারেই ন্যাজহীন।
যাই হোক এগুলা গেল থিওরেটিক্যাল আলোচনা। কিন্তু যদি ব্যাপারটাকে সরলরৈখিক ধরেও নেই, যে আপনার কথামত একটা সুপারহিউম্যান প্রজাতি তৈরি করা গেল। সেটাও একটা চরম ফ্যাসিবাদি কন্সেপ্ট।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সুপাঠ্য লেখা। তবে, অতিথি লেখকের নাম দেখলাম না।
প্রাসঙ্গিকভাবে, একটা মুভির কথাও মনে পড়ল। ইডিওক্রাসি (Democracy এর মত Idiocracy)।
সেই মুভিতে দেখানো হয় যে, যারা সমাজে প্রতিষ্ঠিত, সুশিক্ষিত, বড় বড় কাজ করছে, আইকিউ বেশি তারা ব্যস্তটার কারণে সন্তান জন্মদানের সময়টাকে পেছাচ্ছে, ফলে তাদের সন্তান সংখ্যা ১ বা ০ । আর, যাদের আইকিউ কম, শিক্ষার হার কম, তারা অব্যাহত হারে সন্তান উৎপাদন করে চলেছে। ফলে, কয়েকশ বছর পর, মানবজাতির গড় আইকিউ অনেক নিচে নেমে গেছে। এক কথায় ফালতু সিনেমা, কিন্তু কনসেপ্টটা কিন্তু চিন্তাজাগানিয়া।
শুভেচ্ছা
নাম দেবার অপশন খুজে পাইনি। সচলে নতুন মানুষ। আমার নাম খন্দকার ইশতিয়াক মাহমুদ।
ইডিওক্রাসি মুভিটা আমারও দেখা এবং চিন্তা ভাবনার শুরু বলতে পারেন ওখান থেকেই। মুভিটা আসলেই ভাল করেনি, তবে কনসেপ্টটা অসাধারন। এবং সবচেয়ে দু:খজনক বিষয় হল, এটা ম্যাথমেটিকালি পসিবল একটা কনসেপ্ট, যেটা নাকি এখণই ঘটছে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। একটা গবেষনায় নাকি তারা প্রমান পেয়েছেন, ভিক্টোরিয়ান সময়ের তুলনায় মানুষের গড় আই কিউ নাকি কম। তারা কিভাবে এটা বার করেছেন, সেটা জানা নাই। বিশাল পেপারটা পুরা পড়ার ধৈর্য্য হয় নাই!!
মানুষেল বহু দক্ষতা আসে প্রাকটিস এবং নিয়মিত পারফর্ম করার মাঝ দিয়ে এবং বুদ্ধি শানিত হয় নিয়মিত ব্যবহার এবং বুদ্ধিবৃত্তিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে।
মানুষ হয়ত অনেক স্মার্ট অথবা ফাস্ট হয়েছে এখণ, কিন্তু আমি দেখছি, মানুষ আরও অলস হয়েছে। ব্যক্তিগত দক্ষতার বদলে তারা নির্ভর করছে রেডিমেড জিনিরে উপরে, রেডিমেড উত্তরের উপর।
কোনকিছু মেমোরীতে নয়, ওয়েবে রাখার কালচার তৈরি হচ্ছে, হিসাবটা মুখে বা মাথায় নয়, পকেট ডিভাইসে ক্যালকুলেট করার প্রবনতা তৈরি হচ্ছে।
ব্যক্তিগত দক্ষতা হ্রাস পাচ্ছে বলে মনে করি আমি। এভাবে এক সময় সামগ্রিক দক্ষতা হ্রাস পাওয়া অসম্ভব নয়। মানুষ শক্তিশালী বাঘ কিংবা ডায়নোসরের চেয়ে, কারন সে তার মাথার মাসলগুলো ব্যবহার করেছে। সেটাই যদি বন্ধ করে দেয়, তাহলে ফলাফল প্রিডিকশন আশঙ্কাজনক হতেই পারে।।।
ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্য। জানি না কতদিন নাম ছাড়া লিখতে হবে!! দেখা যাক!!
অনেকংশেই একমত। তবে, অনেক 'টুল' আসার কারণে মানুষের মষ্তিষ্ক অলস হয়েছে, আবার কেউ কেউ এসব টুল ব্যবহার শিখে আরও দক্ষ হয়েছেন। আজকাল অনেককে ১০০ থেকে ৫৩ বাদ দিলে কত থাকে বলতে পারে না। আবার, অনেকেই কম্পিউটার ব্যবহার করে যেসব জটিল কাজ করছেন, সেটা ১০০ বছর আগে কল্পনাই করা যেত না।
সচলে কিন্তু নাম দেয়া কঠিন কাজ না। আপনি হয়ত ঠিক পরিচিত না পদ্ধতিগুলোর সাথে।
যেমন, প্রথমে সচলে রেজিস্ট্রেশন করে নিন কোন একটা নাম/ নিক নিয়ে।
পরে কমেন্ট করার সময় ঐ নামটা আর পরের ঘরে ইমেইল অ্যাড্রেস বসিয়ে কমেন্ট সাবমিট করে রাখুন।
যদি কমেন্ট অ্যাপ্রুভ হয় তবে ঐ নামটি আসবে।
আমার প্রথম কমেন্ট (কমেন্ট নং ৭ এভাবে করা)
আর, অতিথি অ্যাকউন্টে ঢুকলে নিচে নাম লিখে দিলেই হবে। যেমন, এই কমেন্টটা আমি অতিথি অ্যাকাউন্ট দিয়ে করছি, শুধু নিচে নামটা/ নিকটা টাইপ করে দিলেই হয়। আমি আগে যে কটা লেখা লিখেছি নিচে শুধু নামটা টাইপ করে দিয়েছি।
আর, একেবারেই ভুলে গেলে মডারেটরকে মেইল করে দিন, তারা আপনার লেখার নিচে নাম জুড়ে দিতে পারবেন।
শুভেচ্ছা
[মেঘলা মানুষ]
প্রথমত, অপরাধ প্রবণতার জন্য জিন দায়ী, এটা এখন পর্যন্ত একটু কষ্টকল্পনা। এরকম ধারণা উঠে এসেছে, কিন্তু বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নিশ্চয়তা দিয়ে কি কোনো জিনকে আইডেন্টিফাই করা হয়েছে, যেটা কোনো একটা নির্দিষ্ট অপরাধ প্রবণতার জন্যে দায়ী?
দ্বিতীয়ত, শরীরে শুধু জিন থাকলেই হয় না, সেই জিন সক্রিয় হবে কি না, সেটার বেশ জটিল মেকানিজম আছে। তাই জিন থাকলেই সেই জিনের ফিনোটাইপিক এফেক্ট থাকবে, এমনটা এখনও ধরে নেওয়া যায় না।
তৃতীয়ত, দাগী জিনকে জিন পুল থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়ার অপরচুনিটি কস্টও নির্ধারণ করতে হবে। একটা জিন সবসময় কেবল একটা কাজই করে না, সে আগে পিছে আরো বেশ কিছু ভূমিকা রাখে। হয়তো যে জিনটা হিংস্রতার জন্য দায়ী, সে একই সঙ্গে অ্যাড্রেনালিন সংশ্লেষণের জন্যে অপরিহার্য (ব্যাখ্যার খাতিরে কাল্পনিক উদাহরণ দিলাম)।
এইরকম একটা বিবিসি ডকু দেখছিলাম, প্লেলিস্টে সেভ করে রাখছিলাম কিন্তু ডকুটা উঠায়ে নিছে ঐ লিঙ্ক থেকে। ওখানে দেখায় যে এরকম একটা জিন আর ব্রেইনের ইলেক্ট্রিক্যাল সিগ্নালের কিছু প্যাটার্ন পাওয়া গেছে যেটা সিরিয়াল কিলিং বা এরকম কিছু অপরাধের জন্য দায়ী হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। কিন্তু সেই জিন বা প্যাটার্ন থাকলেই কেউ নিশ্চিত সেই অপরাধগুলা করতেছে ব্যাপারটা এমন না, বরং দেখা যাচ্ছে এর সাথে কিছু সোশাল ট্রিগারিং ফ্যাক্টর, যেমন দুঃসহ শৈশব বা এরকম কিছু থাকলে সেই জিনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই প্রাপ্তির ওপর ভিত্তি কিরা একটা মামলার রায়ও হইছে রিসেন্টলি আমেরিকার আদালতে।
কিন্তু কথা যাই হোক না ক্যান, এই সুপাররেস তৈরি করার যে কন্সেপ্ট সেই কন্সেপ্টটা একটা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদি কন্সেপ্ট। আর তাছাড়া থিওরেটিক্যালিও এইগুলা সবই ওভারসিমপ্লিফাইড স্টেটমেন্ট।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
“হয়ত অনেক সময় পরে, হয়ত কয়েকশ বছর পরে, হয়ত হাজার বছর পরে সত্যিই একদল মানুষ পৃথিবীতে বাস করবে যারা হবে সত্যিকার অর্থেই অসাধারন মানুষ। প্রত্যেকেই। পৃথিবীতে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষ হবে ভাল মানুষ।
এটা কষ্টকল্পনা নয়, এটা ম্যাথ, এটাই নিয়ন্ত্রিত বিবর্তন এবং এটার বাস্তবায়ন সম্ভব।”
তাই কি?
কে থাকবে, কে যাবে, কারা জন্ম দিতে অনুমতি পাবে আর কাদের বন্ধ্যা করে দেওয়া হবে সে সিদ্ধান্ত যাদের নেওয়া ক্ষমতা থাকবে তারা ত অবশ্যই হবেন সমাজের ক্ষমতাশালী মানুষেরা। ধরা যাক, তারা প্রথমে বন্ধ্যা করবেন সেই নিরুপায়-দের যারা নৃশংস খুনীদের সাথে জিন-সম্পর্কিত। তারপর? তারপর তারা ধরবেন এই কাজের বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে তাদের। মানব সমাজকে ক্রমাগত বিশুদ্ধ আর সুষম করে তোলার পথে এতদিনে আর কোন বাধা নেই। এইবার তারা ধরবেন সেই মানুষদের যারা এই-ঐ-ইত্যাদি নানা কারণে সেই শক্তিমান সিদ্ধান্তগ্রহণকারীদের কাছে অনুপযুক্ত মানুষের তালিকায় পরবে তাদের। তারা নিশ্চয়ই উপযুক্ত মানুষদের তুলনায় সংখ্যায় কম। পরবর্ত্তী প্রজন্মে তারা নিশ্চিহ্ন। একদল সংখ্যালঘুর পর ধরা হবে আরেকদল সংখ্যালঘুকে। তালিকা লম্বা হতে থাকবে। সুচারু হিংস্রতার এই প্রবাহকে যে আড়াল-ই দেওয়া হোক, গণিত কি অন্যকিছু, মানব সভ্যতার অগ্রগতির জন্য এই পথ অপরিহার্য্য নয় ত বটেই, আকাঙ্খার যোগ্যও নয়।
আর, সক্কলেই অসাধারণ = সক্কলেই সাধারণ
এবং, ভাল মানুষ = ? .... ভালত্ব কি কোন অপরিবর্তনীয় ধ্রুবক? কি ভাবে ঠিক হবে ভাল মানুষের ভালত্বর মাপকাঠি? কে ঠিক করবে?
জিন-প্রবাহ থামিয়ে নিয়ন্ত্রিত বিবর্তন কষ্টকল্পনা কি না জানি না, কিন্তু কখনো আভিজাত্যের নামে, কখনো ধর্মের বিশুদ্ধতার নামে, কখনো জাতিগরিমার নামে, কখনো মেধাশ্রেষ্ঠতার পরিচর্যার নামে মানবসমাজ বারে বারে এই করুণ, অসীম কষ্টের বীভৎসতার মধ্য দিয়ে গেছে। হয়ত আবারো যাবে, বহুবার। আশা করতে ভালবাসি, যেই ছদ্মবেশ ধরেই আসুক, বীভৎসতাই শেষ কথা বলবে না।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
****************************************
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আরেকটা নিউজ মনে পড়ল, কোন একজন গবেষক একটা রেজাল্ট পাবলিোশ করেছিলেন যেটাতে তিনি দেখাতে চেষ্টা করেছিলেন যে ইহুদিদের মধ্যে আইকিউ খ্রিস্টানদের থেকে বেশি। এর একটা কারণ হল ১০০০-২০০০ সালের মাঝে ক্যাথলিসিজম প্রতিষ্ঠার পর অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সবচেয়ে প্রতিভাবান ছেলে সন্তানরা চার্চের শিক্ষায় দীক্ষিত হয়ে ব্রাদার/ ফাদার হয়ে যায়। তারা যেহেতু কখনই বিয়ে করেনি, তাই সেই 'ভালো' জিনগুলো খ্রিস্টানদের মধ্য থেকে হারিয়ে গিয়েছে। গবেষকের ভাষায়, এটা ছিল একটা বিরাট অপচয়। পক্ষান্তরে, ইহুদিদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত প্রতিভাবান ছেলেরা তাদের 'ভালো' জিনগুলো পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে রেখে গিয়েছিল।
শুভেচ্ছা
[মেঘলা মানুষ]
(আমার মাঝে আরেকটু ভালো জিন থাকলে হয়ত এক চেষ্টায় ক্যাপচা পারতাম
কয়েকবার ক্যাপচা ফেল মেরে, স্প্যাম ফিল্টার ট্রিগার করে অথিথি হয়ে ঢুকতে হল)
"প্রতিভা" বা "আইকিউ" কি জিনের সাথে সম্পর্কিত নাকি?
ঠিক সরাসরি সম্পর্ক আছে কিনা জানা নাই।
তবে, ধরেন কয়েকশ বছর ধরে সমাজের সবচেয়ে প্রতিভাবান লোকগুলো যদি বংশবৃদ্ধি না করে মরে যেতে থাকে তার একটা প্রভাব আছে -এরকমই দাবি করেছিল ঐ গবেষক(দল)।
শুভেচ্ছা
[মেঘলা মানুষ]
গবেষণাটা খুবই একপেশে আর অবিজ্ঞানসম্মত মনে হচ্ছে আমার কাছে। প্রতিভাবান মানুষ কেবল সন্তানাদির মাধ্যমেই প্রতিভার মশাল হস্তান্তর করে না, ছাত্রদের মাধ্যমেও করে। গির্জায় যোগ দিয়ে ঐ পাদ্রীরা নিশ্চয়ই প্রচুর ছাত্র-শিষ্যের সংস্পর্শে এসেছেন।
আবার, লক্ষ করে দেখুন, যে পাদ্রী প্রতিভাবান, তিনি যদি জিনের কারণেই প্রতিভাবান হয়ে থাকেন, সেই জিন তো তার একার শরীরে নেই, ভাই বোন বা কাজিনদের শরীরেও ৫০% বা ২৫% বা ১২.৫% সম্ভাবনা নিয়ে আছে। প্রতিটি গির্জার প্রতিভাবান পাদ্রী যদি মা-বাবার একমাত্র সন্তান হয়ে না থাকেন, কিংবা পুরো পরিবার (ভাই-বোন-কাজিন) যদি বংশবৃদ্ধি থেকে বিরত না থাকেন, তাহলে অন্তত জিনগত কারণে খ্রিষ্টান পপুলেশনে আইকিউ কমার কোনো কারণ নেই।
আরেকটা সম্ভাবনা কি ভেবে দেখেছেন? ইহুদিরা দাওয়াতি কার্যক্রম চালায় না। হিন্দুদের মতো তারাও কেবল জন্মসূত্রে ইহুদি হতে পারে। এদিকে খ্রিষ্টান বা মুসলমানরা দাওয়াতি কার্যক্রম চালায়, অন্যকে খ্রিষ্টান বা মুসলমান ধর্মে দীক্ষা দেয়। কাজেই এই দুই ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা যদি আইকিউ কম থাকা বিধর্মী জনগোষ্ঠীদের ধর্মান্তরের মাধ্যমে বেড়ে থাকে, তাহলে কিন্তু গড় আইকিউ এমনিতেই কমে যাবে।
ঐ গবেষণার বিষয়ে আমার জ্ঞানও ভাসা ভাসা টাইপের। কাজেই, তেমন কিছু জানি না।
তবে, ঐ যে ৫০% বা ১২.৫% এর কথা বললেন, ওই কাজিন বা বংশের যেই একটু প্রতিভাবান (!) হয়েছে, ওমনি হয়ত ব্রাদার/ ফাদার হয়েছে তারাও। [ব্রাদার/ ফাদার লিখলেই কেন যেন সাকচৌ এর নাম মনে আসে, সম্ভবত খুব কাছাকাছি একটা বিষেশন আছে ঐ ব্যাটার নামে।] কয়েক জেনারেশন ধরেই এরকমটা হয়েছে। আমিও খুব একটা কনভিন্সড না ওই গবেষণার বিষয়ে। আরও কিছু কারণ দেখানো ছিল যতদূর মনে পড়ে। তার মাঝে একটা ছিল ইহুদিদের পরিচ্ছন্ন থাকা এবং পর্ক না খাওয়া।
[যদিও পর্ক খেলে আইকিউ কমে যাবে এমন জিনিস আমার কাছে গাঁজা মনে হয়েছে। এটা সত্যি হলে, আমেরিকা ইউরোপের স্কুল কলেজে পর্ক নিষিদ্ধ করে দেয়া হত। ইহুদি কয়েকজন আর গুটিকয় মুসলিম বাদে বাকি নোবেল বিজয়ীরা পর্ক খেয়ে, হজম করেই নোবেল পেয়েছেন ]
তবে, জেনেটিক্সের পিতা গ্রেগর মেন্ডেল বোধ হয় সিলেক্টিভ ব্রিডিং দিয়ে মটরশুঁটি বৈশিষ্ট্য নিয়ে থিয়রি দিয়ে গিয়েছিলেন। এই মাত্র মনে পড়ল, মেন্ডলও সম্ভবত একজন পাদ্রী ছিলেন, গির্জার বাগানে মটরশুঁটি চাষ করেছিলেন তিনি।
তবে, দাওয়াতের বিষয়টা খেয়াল ছিল না। এটা একটা বড় বিষয়। এটা ওরা কেন এড়িয়ে গেল কে জানে?
শুভেচ্ছা
[মেঘলা মানুষ]
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আমার ভাই খুন করলে আমাকে শাস্তি পেতে হবে(বন্ধ্যাকরণ) এইটা এক ধরণের ফ্যাসিবাদী ধারণা।
হ
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এই ভাল এবং মন্দের ধারনা খুব বেশী দিনের তো নয়। আধুনিক মানবজাতির(হোমো স্যাপিযেন্স স্যাপিয়েন্স) উদ্ভব যেখানে কমবেশী দু-লক্ষ বছর আগে, সেখানে ভাল মন্দের ধারনা মাত্র কয়েক হাজার বছরের, তাও আবার সময়ের সাথে সাথে ভাল মন্দের ধারনা ক্রমাগত পাল্টে যাচ্ছে। যেমন- গোত্রভিত্তিক প্রাচীন সমাজে ভিন্ন গোত্রের সকলকে বৈরী হিসেবে গন্য করা হতো, সুতরাং তাদের দেখামাত্র হত্যা করাই ছিল ভাল কাজ, অথচ এমন আচরণ এখন মন্দ হিসেবে বিবেচিত। আর্য্য জনগোষ্ঠী ভারতে আগমনের পর স্থানীয় অধিবাসীদের নগর ধ্বংস করে দিয়েছে, সেটা তাদের জন্য ছিল ভাল কাজ। আর স্থানীয় আদিবাসীরা প্রানপনে আর্য্যদের সেই নির্মম আগ্রাসন প্রতিরোধের চেষ্টা করেছে, আর্য্যদের দৃষ্টিতে সেটাই ছিল মন্দ কাজ, সে কাজের জন্য তারা দস্যু হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। জীবন ধারনের প্রয়োজনে অল্প কিছুদিন আগেও মানুষকে হরেক রকম পশু পাখী প্রতিনিয়ত শিকার তথা হত্যা করতে হয়েছে, তখন সেটা ছির ভাল কাজ। আজ পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে অতিথি পাখী, প্রাকৃতিক প্রানী শিকার শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তথাকথিত মন্দ কাজের প্রবনতা কমবেশী সকল মানুষের মধ্যেই আছে, এবং সেটা একসময় তাদের অস্তিত্বের জন্যই অপরিহার্য ছিল। মানুষ তাদের সতত পরিবর্তনশীল নীতিবোধ দ্বারা ভাল বা মন্দের সজ্ঞা নিরুপন করছে, ভাল বা মন্দের কোন চিরায়ত রুপ কখনও ছিল না, এখনও নেই।
জিন নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ভাল মানুষ সৃষ্টির প্রজেক্টও এক ধরনের অপরিনত ভাবনার ফসল। কারন মন্দ কাজের জন্য দায়ী বলে কোন জিন আদৌ আছে কি? যে সকল জিনের কারনে একজন মানুষ খুন করে, তা সকল মানুষের মধ্যেই রয়েছে। যে সকল জিনের কারনে একজন মানুষ মিথ্যা কথা বলে, তাও সকল মানুষের মধ্যেই রয়েছে। যে সকল জিনের কারনে মানুষ সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় নিয়ম শৃঙ্খলার বেড়াজাল থেকে মুক্তি পেতে চায়, তাও সকল মানুষের মধ্যেই আছে। আসলে মানুষ পরিচালিত হয় তার অন্তর্নিহীত লজিক দ্বারা, সেই লজিকই তাকে উদ্বুদ্ধ করে তথাকথিত কোন ভাল কাজ করতে, সেই লজিকই তাকে নিরস্ত করে তথাকথিত কোন মন্দ কাজ করতে। মানুষ যখন সমাজে বসবাস করে, তখন অন্তর্নিহীত লজিক তার মনে এই বোধের জন্ম দেয় যে সামাজিক অনুশাসনগুলো মেনে চলাই তার জন্য মঙ্গলজনক। অবশ্য মানুষ তার বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এও বুঝতে পারে যে কিছু সামাজিক নিয়ম না মানলেই তার লাভ, তখন সে চেষ্টাও করে। তবে যতদূর মনে হয়, বৃহত্তর পরিসরে মানুষ সামাজিক নিয়ম কানুনের প্রতি ক্রমেই শ্রদ্ধাশীল হয়ে উঠছে।
প্রসঙ্গক্রমে একটি সাজেসন- এই পর্যায়ে আপনি আপনার মূল পোষ্ট এবং প্রতিটি মন্তব্যের শেষে আপনার নাম লিখবেন, এ ছাড়া আপনার নাম জানার আর কোন উপায় নেই। পরে আপনি যখন রেজিষ্টার্ড অতিথি কিংবা পূর্ন সচল হবেন, তখন আপনা থেকেই আপনার নাম দৃষ্ট হবে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধরা যাক যে অপরাধের জন্য দায়ী দুয়েকটা দাগী জিন পাওয়া গেলো, এবং আমরা সেটা ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দিলাম। তারপর কি হবে? 'ভালো'-র সংজ্ঞা কি হবে তখন?
মানবসমাজের অধিকাংশ স্বতঃসিদ্ধই কিন্তু তুলনামূলক আলোচনা থেকে উঠে আসে। 'মন্দ' নামে একটা ধারণা আছে বলে 'ভালো' নামে একটা কিছু দাবি করা হয় এবং ইত্যাদি।
এবং মূল কথা, বিবর্তন বিবর্তনের মতো চলবে। দুচারপাঁচ হাজার বছরের সুপারফিশিয়াল সমাজধর্মন্যায়নীতিচুলচামড়ার ওপর ভিত্তি করে বিবর্তনীয় সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হয় বলে মনে হয় না।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এটা তো মানুষকে সাচ্চা বানানোর আরেক সিস্টেমেরে কল্পনা হয়ে গেলো
এক সিস্টেমে সাচ্চা বানানোর জন্য মোল্লারা কাটে নুনুর আগা; নতুন সিস্টেমে কাটবে গোড়া...
হাসতে হাসতে গলায় বাদাম আটকে গেছিল আরেকটু হইলে =))=))=))=))
[মেঘলা মানুষ]
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
টু রংস ডোন্ট মেক আ রাইট। আপনি একরকম অপরাধ দূর করতে গিয়ে প্রায় একই রকম, কিম্বা হয়তো তার চেয়েও অনেক নৃশংস আরেকটা অন্যায় ও অপরাধকে পাব্লিক পলিসি হিসেবে গ্রহণের জন্য প্রস্তাব করছেন। মানুষকে ফোর্সিবলি স্টেরাইল করে দেয়া যে কতটা নিষ্ঠুর ও অশ্লীল একটা অপরাধ - এই প্রস্তাবের মধ্যে সে সম্পর্কে কোন রকম উপলব্ধির প্রকট অভাব অনুভব করছি। তাও আবার বিশাল আকারে বা গণহারে রাষ্ট্রীয় অনুমোদন ও পৃষ্ঠপোষকতায়! অন্য সব অপরাধ হয় কোন রকম নৈতিক বা রাষ্ট্রিক অনুমোদন বা বৈধতা ছাড়া, আর আপনারটা হবে দস্তুরমত সমস্ত রাষ্ট্রিক অনুমোদন নিয়ে, প্রয়োজনে অপরাধের ব্যাপকতার সাথে পাল্লা দিয়ে ব্যাপক আকারে। নির্মমতার বিচারে এর সাথে গণহত্যা, ডেমোসাইড বা এথনিক ক্লিনসি্-এর বড় কোন পার্থক্য দেখছি না।
অনৈতিকতার এতিমত্ব থেকে টেনে এনে সমাজ বা রাষ্ট্র যদি এরকম নৃশংসতাকে রীতিমত বৈধতা দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করে ফেলে, তাহলে সেই সমাজ "বেটার" হওয়া বা সেখানে উচ্চতর মানবতা বা সভ্যতার কোন প্রোলিফারেশন তো দূর অস্ত্, উলটো বরং পুরো রাষ্ট্রটা নিজেই একটা অপরাধী দানবে পরিণত হবে - যেখানে আপনার ভাষায় "উগ্রতা, হিংস্রতা, অপরাধপ্রবনতার" চাষ এক্সপোনেনশিয়ালি বৃদ্ধি পাবে বলেই আমার বিশ্বাস। নাৎসী জার্মানির সাথে কোন পার্থক্যই থাকবে না।
এধরণের স্টেরিলাইজেশন প্রোগ্রামকে কেন অপরাধ বলছি? ফোর্সড স্টেরিলাইজেশনের অন্তর্গত নৃশংসতা বা অশ্লীলতাটুকু বাদ দিয়েই বলি - আমি যদ্দুর বুঝি, সারা দুনিয়াতেই শাস্তি সংক্রান্ত সমস্ত নীতি-নৈতিকতার একদম মূল কথাই হচ্ছে অপরাধী যে অপরাধ করেছে তাকে সেই অপরাধের জন্যই শাস্তি দিতে হবে। কেউ করল চুরি, আর আপনি তাকে রেইপের শাস্তি দিবেন তা তো হয় না! এটা একেবারেই কমন সেন্সের ব্যাপারও বটে। আর আপনি প্রস্তাব দিচ্ছেন, অপরাধী অপরাধ করলে আপনি তাকে অন্য অপরাধ তো নয়ই, এমনকি কৃত অপরাধের জন্যও উল্লেখযোগ্য কোন শাস্তি দিবেন না খুব একটা। মূলত যেটা দিবেন সেটা অপরাধী বা কৃত অপরাধের 'শাস্তি'-ও না, এবং সেটা দিবেন সম্পূর্ণ অন্য উদ্দেশ্যে - হাজার বছর পরে সমাজ উন্নয়নের জন্য! সভ্যতা উন্নয়নের জন্য। আপনার ব্যক্তিগত সংজ্ঞা অনুযায়ী তথাকথিত "ভাল মানুষ" সৃষ্টির জন্য। সমাজসভ্যতা-উন্নয়ন-ভালমানুচাষ এসব খুব ভাল কথা, হাজার বা লক্ষ বছর পরে হলেও। কিন্তু এটা আপনার নিজস্ব (বা রাষ্ট্রের এবং রাষ্ট্রভূক্ত কিছু এলিট শ্রেণীর) এজেন্ডা। আলটেরিওর এজেন্ডা। ঐ সুনির্দিষ্ট সঙ্ঘটিত অপরাধের সাথে সরাসরি সম্পর্কহীণ একটা সোশিওপলিটিকাল এজেণ্ডা।
প্রশ্ন হচ্ছে ব্যক্তি কেন (শাস্তি তো ব্যক্তিকেই দিবেন, তাই না?) তার সুনির্দিষ্ট কৃত অপরাধের সাথে সরাসরি ও তাৎক্ষণিক সম্পর্কহীণ কোন রাষ্ট্র, শ্রেণী, বুদ্ধিজীবী বা অন্য কারও আলটেরিওর / অন্যবিধ এজেণ্ডা বাস্তবায়নের মূল্য চোকাতে যাবে? বলির পাঁঠা হবে? কেন তার কৃত অপরাধের সুনির্দিষ্টতার ক্ষেত্রে এক্সক্লুসিভ প্রাসঙ্গিকতাবিহীণ এজেণ্ডার পূর্ণ মূল্য নিজের জীবনে সাফার করবে? ব্যক্তি কি রাষ্ট্রের প্রোপার্টি নাকি, যে রাষ্ট্র তাকে 'আমার ইচ্ছা - আমার পাঁঠা, আমি তার মাথায় কাটি না ল্যাঞ্জায় কাটি নাকি নুনুতে কাটি তাতে কার কি?' বলে যেমন খুশি তেমন ট্রিট করবে? দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, আপনার এই অত্যন্ত অপরিণতমনষ্ক, অমানবিক "ভাল মানুষ" প্রকল্প কোন মানবিক সমাজের জন্ম না দিয়ে বরং আরেকটা হিটলারি-আইখম্যানীয় সমাজেরই জন্ম দিবে। ধন্যবাদ।
****************************************
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
১।অদূর ভবিষ্যতে যদি শুদ্ধিকরণ চেষ্টা হয় জাতি-ধর্মের ভিত্তিতেই হবে, মুখে অন্য কারণ দেখানো হবে হয়ত।
২।আপনি জাতি-ধর্মভিত্তিক শুদ্ধিকরণের কথা বলছেন না। কিন্তু দোষ না করার পরেও শুধু অন্যের সাথে কমন এমন জিন ধারণের ‘অপরাধে’ অনেককে সন্তান-লাভের অধিকার বঞ্চিত করতে বলছেন। উদার সমাজে এটা কখনোই ঘটবে না। এমনকি দোষীকে সন্তান-লাভের অধিকার বঞ্চিত করার শাস্তি আসারও কোনো বাস্তবতা উদার সমাজে ঘটার কারণ দেখি না। উপরে অনেকেই বলেছেন কথাটা- ভালত্ব মন্দত্ব সহজ সরল কোনো উত্তরাধিকার না। চোরের ছেলে চোরই হবে- এটা তো হাস্যকর। এই সূত্র কাজ করলে আমরা সকলেই এখনো এবং পরবর্তীতেও জবরদস্ত হিংস্রই থাকতাম।
৩।বলছেন, লক্ষ বছরে মানুষের মাঝে বড় কোন চেঞ্জ দেখতে পারেন নি বিজ্ঞানীরা। তাদের বড় চেঞ্জ এর সংজ্ঞা না জেনে মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু পরিবর্তন না আসার দাবি কি আসলেই ধোপে টিকে। ভাষার উতপত্তি ও বিকাশ ঘটানোর মত মুন্সিয়ানা তো মানুষ এ সময়েই ঘটিয়েছে। লক্ষ বছর আগের ক্রো ম্যাগনন মানুষের মাত্র জন্ম নেয়া বাচ্চা ধরে নিয়ে এসে লালন করলে বর্তমানের মানব শিশুর মতই হয়ে উঠবে-এটা মনে না করার কারণ আছে।
কোনো কগনিটিভ যোগ্যতার কথাই ভাবি। ভাষা চিন্তার বাহন। ভাষার অলিগলি যার যত অচেনা, চিন্তার গলিতেও তাকে তত বেশিই হোচট খেয়ে যেতে হবে। আর ভাষিক উতকর্ষের পিছনেও জিনের উতপত্তি ও সক্রিয়তার ভূমিকা ছিল। ক্রো ম্যাগনন শিশু আর আজকের মানবশিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক উতকর্ষের জিনগত ভিত্তিটা কাছাকাছি ভাবার তো কোনো কারণ দেখি না।
৪।মানুষের বড় তাড়া। যে রকম ভবিষ্যত চায়, তার জন্য তর সয় না। মানুষ তাই ভুলে যায় ‘আদিম’ অপ্রয়োজনীয় কিছুকে বাদ পড়তে হলেও তার জন্য সময় দরকার। হিংস্রতা যতটুকু আমরা ছেড়েছি ধীরে ধীরেই ছেড়েছি। এই ধরণের সবকিছুর বাকিটুকুও ধীরে ধীরেই ছাড়ব।
৫।বেশ বড় সংখ্যার মানুষকে স্টেরাইল করে দেয়ার বিলাসিতা করার মত অবস্থা ভবিষ্যতের পৃথিবীতে থাকবে কি? ইউরোপ-উত্তর আমেরিকা-দূরপ্রাচ্য-অস্ট্রেলিয়াতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার পড়তির দিকে। তৃতীয় বিশ্বে বিশেষ করে নারীরা কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে এলে শ দুয়েক বছর পরে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যায়ই ভাটা পড়ার কথা।
৬।ফ্যাসিবাদ, নাতসিবাদের মত ইউজেনিক্সও দুর্মর। নানা ঢঙ্গে সে ফিরে আসে। ফিরে আসবে আরও বহুদিন।
রব
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
নতুন মন্তব্য করুন