• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

সর্ব্বনাশী

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০২/০২/২০১৪ - ৬:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এইটা তুষারের বৌ? অবাক হয়ে দেখতে দেখতে আমি প্রশ্ন করি। কেলে পাঁচু আবার জন্মগত ট্যারা তাই কি দেখাতে কি দেখাচ্ছে ভেবে আমি নিশ্চিন্ত হতে চাই। পাঁচু এবার মনে হয় কট মট করে আমার দিকেই দেখে কিম্বা আমার পেছনে যে তালগাছের সারি তাতে বাঁধা কলসীর দিকেও দেখতে পারে; শালার চুরির স্বভাবও আছে। চাদরের ভেতর ওর চঞ্চল হাতদুটো নানা মুদ্রার ভঙ্গী করে শেষে বিড়ি আর দেশলাই সমেত আত্মপ্রকাশ করে। হলুদ বিড়ির সবুজ সুতোয় পাক মেরে, সেটা খড়-খড়ে না ঝর-ঝরে কানের কাছে পাক মেরে তা দেখে নিয়ে তারপর দাঁতে কামড়ে সেই বিড়ি ধরায়। যতই হাওয়া হোক একটার বেশী দুটো কাঠি কখনও নষ্ট করতে দেখিনি। এবার ওই বিড়ি কড়ে আঙ্গুল আর অনামিকার মধ্যে ঢুকবে আর ওর নবাবী চালের বিড়ি খাওয়া দেখে মানুষের পিত্তি জ্বলবে।

দাদা, ওটাই তুষারের বউ। বাঁদরের গলায় মুক্তোর মালা বলে পাঁচু খিক খিক করে হাসতে গিয়ে ঘড় ঘড়ে এক কাশি তুলে এনে মর্নিং ওয়াক গুলজার করে দেয়। মেয়েটার যেমন হাইট, তেমন রঙ আর বেশ ঢল ঢলে প্রতিমা গড়নের মুখশ্রী। কি করে হল? বেকার ছেলের এই বৌ কি করে হল?

দেখাশুনো করেই হয়েচে। ছেলের বাপ সরকারী চাকরী করে, রাস্তার ধারে পাকা বাড়ী, একমাত্র ছেলে তাছাড়া বেকার তো আর বলেনি, বলেছে ছেলের ব্যবসা আছে। ব্যস! সানাই বেজে উঠেছে। তবে কত ধানে কত চাল মা আমার এইবার বুঝতে পারছে বলে পাঁচু আবার হয় তালগাছ কিম্বা আমার দিকে দেখে।

কেন? কি হয়েছে এমন? আমি আবার বিষ্মিত হই।
তুমি কি কিছুই জানো না? পাড়ায় কি করতে থাকো?
তোর মত অত জানব কি করে? তোর মত কি আমার অত খাতির আছে সবার সঙ্গে?
পাঁচু খুশী হয়। পৃথিবীতে এমন পাষন্ড কে আছে যে প্রশংসায় খুশী হয় না! অশান্তি হচ্ছে অধীরবাবুর মেয়ের সঙ্গে বৌমার। মেয়ে তো লাভ করে কাছেই বিয়ে করেছে সেটা জানো নিশ্চয়?
জানি। আমাদের পাশের বাড়ীতেই তো ওর মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তার তো দেখি শ্বাশুড়ীর সঙ্গে দিবারাত্র খিটি মিটি লাগে।
হ্যাঁ, তা একটু লাগবে। মেয়ে যা জিনিষ! তবে মিথ্যা বলব না জামাইটি ভদ্র, গোবেচারা। গোবেচারা না হলে ওই ডিনামাইটের সঙ্গে ঘর করতে পারে?
কে ডিনামাইট?
কেন? অধীরবাবুর একমাত্র কন্যা ওই শকুন্তলা।
ও! ওর ভালোনাম শকুন্তলা?
হ্যাঁ গো! আর ডাকনাম হল সুকু। রোজ সন্ধ্যে হলেই বাপের বাড়ী গিয়ে খবরদারী করবে আর রাত দশটা বাজলে ওই জামাইকে গিয়ে মহারানীকে বরণ করে ঘরে নিয়ে আসতে হবে। তাও সে আসবে কিনা তার ইচ্ছা। যাকগে পরের ব্যাপারে নাক গলাতে ভালবাসিনা।
তার মানে পাঁচু দেখতে চাচ্ছে খবরটা জানতে আমি উৎসাহী কিনা। তাহলে খবরটা ছেড়ে কোনদিক থেকে একটা কিছু সুবিধা আদায় করবে। পাঁচুর নাম এ তল্লাটে বিখ্যাত। ক’দিন ধরে আমার ভ্রমণসঙ্গী হয়েছে। ভোরবেলা রাস্তায় বেরুলেই পাঁচুর সঙ্গে দেখা হয়।
সে যায় যাক। বাপের বাড়ী যেতে সব মেয়েই ভালবাসে কিন্তু অশান্তিটা হচ্ছে ঠিক কি কারণে?
বাঃ! ছেলের বৌ কেউ নয়। মেয়ে যা বলবে তাই হবে এমন কান্ড কতদিন চলতে পারে? তা ছাড়া হাভাতের ঘরের মেয়ে নয়, ওর বাপের অবস্থাও বেশ ভাল।
ভালই যদি তবে বেকার ছেলে ঐ কালো ভূতের সঙ্গে বিয়ে দিল কেন?
কপালের লিখন। নাহলে কি আর হয়! তা গল্পে গল্পে অনেক দূর চলে এলুম এবার ফিরলে হয়। বলছিলুম যে দাদা, একটা কারবার করব ভাবছি। তা পুঁজি তো চাই। আমি আর কার কাছে চাইব? তুমিই ভরসা।
সকালবেলা সব অনুমান খেটে যাচ্ছে দেখে আমার মনটা বেশ খুশি খুশি লাগল। তবে পাঁচু ধার নিলে শোধ দেয়না এটা আমার ভালভাবেই জানা ছিল। তবু বললুম, কিসের ব্যবসা করবি তুই? কত চাস আমার কাছে?
করব আমি মাছের ব্যবসা। শ পাঁচেক টাকা তুমি আমায় ধার দাও। ধার। এমনি আমি চাই না।
আচ্ছা সে না হয় দেখা যাবেখন। কাল দেখা করিস। টাকা ফেরত দিবি কবে?
পাঁচু বিগলিত হয়ে বলে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। তোমায় কি বলব দাদা, ধার আমার গায়ে কাঁটার মত বিঁধে থাকে, ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত শান্তি পাইনা।

এর পর একমাস গড়াতে না গড়াতে বাড়ী ফেরার পথে সেই দুঃসংবাদ পেলুম। তুষারের বৌ গায়ে কেরোসিন দিয়ে পুড়ে মরেছে। ক্রোধে উন্মাদ হয়ে মেয়ের বাবা থানা পুলিস করায় তুষারের বাবা আর মাকে তিনমাস জেল খাটতে হল। শুনলুম পাঁচু রাজনৈতিক ভাবে তুষারদের সাহায্য করছে। বোধহয় এইসব কারণেই প্রাতঃভ্রমণে পাঁচু আর সময় দিতে পারত না। একদিন রাস্তায় অধীরবাবু দুঃখের কথা বলছে দেখে দাঁড়িয়ে গেলুম। প্রায় দেড়লাখ টাকা নাকি জলে গেছে জামিন হবার আশায়। কিন্তু তিন মাসের আগে তা হয়নি। অধীরবাবুর চেহারা খুব ভেঙ্গে পড়েছে দেখলাম। মেয়ে জামাই পালিয়ে বেড়াচ্ছে কেননা তাদেরও আসামী করা হয়েছে। পাঁচু একাই নাকি হাফ টাকা আত্মসাৎ করেছে। শুনে খারাপই লাগল কারণ নানাদিক দিয়ে খবর পাওয়া গেছে ব্যাপারটা আত্মহত্যাই, খুন টুন নয়।

এরও বেশ কিছুদিন পর ভ্রমণের রুট বদলাতে দৈবাৎ পাঁচুর সঙ্গে দেখা। আমায় দেখেই বিগলিত পাঁচু নানা দুঃখের কাহিনী শোনাল। ধার শোধ না করতে পারার কন্টক জ্বলনের গল্পও পেশ করল। তারপর সেই একই ভঙ্গীতে বিড়ি ধরাবার পর আমি বললুম, পাঁচু তোর গল্প সেদিন গুরুত্ব দিই নি কিন্তু বেচারী মেয়েটা করুণ ভাবেই শেষ হয়ে গেল।

পাঁচু যেন বিষম খেয়েছে এমনি ভাবে বলল। বোলনা দাদা, সুখের সংসার ছারখার করল, নিজের বাবা মা কে কাঁদাল, শশুর শ্বাশুড়ী কে জেল খাটাল, আমায় লোকের কাছে অবিশ্বাসী করল, অধীরবাবুর মত ভদ্রলোকের অমন ভালো মেয়ে আর তার বর এদেশ সেদেশ করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ও মেয়ে কি মেয়ে দাদা! সর্ব্বনাশী! সর্ব্বনাশী!
মনোবর


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

এই গল্পটি দিলাম। আমার আগের গল্পটি 'যে তোমায় বাঁচিয়ে দিল' কোথাও দেখতে পাচ্ছিনা। ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারলাম না।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় লেখক, সচলে সব লেখা ছাপা হয় না, যাচাই বাছাই হয়।
আমারও সব লেখা ছাপা হয় নি।

[মেঘল মানুষ]

অতিথি লেখক এর ছবি

ও! কিন্তু অপছন্দের গুলো কি মুছে দেওয়া হয়?

অতিথি লেখক এর ছবি

(তালগাছ)

ভালো লিখেছেন।

ইউক্লিড

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার যে ভালোলেগেছে সেটাই পুরষ্কার। ধন্যবাদ!

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

"ও মেয়ে কি মেয়ে দাদা! সর্ব্বনাশী! সর্ব্বনাশী!" ক্যাটেগরীর মানে বুঝতে পারলাম না।

এছাড়া গল্প ভালই লেগেছে।

____________________________

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আমিও বুঝিনাই।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

অতিথি লেখক এর ছবি

পাঁচুর চরিত্রটি গল্পের মূল বিষয়। অধীরবাবুর কাছ থেকে সাহায্য করবার নামে বেশ কিছু টাকা খাবার পর তার দৃষ্টিভংগী পালটে গেছে। যে মেয়েটির প্রতি সকরুণ ছিল সে এখন সেই অসহায় মেয়েটিকে পাঁচু সর্বনাশী হিসেবে দেখাতে চায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

সুবিধাবাদী চরিত্র তার সুবিধা অনুযায়ী মূল্যায়ন করে থাকে নির্দোষ নিপীড়িতকেও সর্বনাশী সাজায়-এই হল বার্তা।

অতিথি লেখক এর ছবি

কেলে পাঁচুর কাছে আগে যে ছিল নির্যাতিতা সে এখন হয়েছে সর্বনাশী কারন টাকা খাবার কারণে পাঁচু এখন অধীরের সমব্যাথী।

অতিথি লেখক এর ছবি

এলোমেলো মনে হল আমার কাছে :S

তাতে কী!! লেখা চলুক (Y)

রাসিক রেজা নাহিয়েন

অতিথি লেখক এর ছবি

পাঁচু প্রথমে যে মেয়েটির প্রতি দরদী ছিল তাকেই আবার সর্বনাশী বলে দেখাতে চাইছে- এইটাই গল্পের মূল উপজীব্য বিষয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

কেলে পাঁচুর সুবিধাবাদী চরিত্র গল্পটির মূল বিষয়। এই আলোকে দেখলে এলোমেলো মনে হয়ত হবে না।

অতিথি লেখক এর ছবি

মেয়েটি সর্বনাশী নয় কিন্তু তার শ্বশুরের কাছে টাকা খাবার জন্য পাঁচু এখন শ্বশুরের বক্তব্য ই প্রতিধ্বনিত করছে।

দীনহিন এর ছবি

খুবই ঝরঝরে ভাষা, কিন্তু প্রানান্ত চেষ্টা করেও বার্তাটুকু উদ্ধার করতে পারলুম না, হয়ত বা এটি একটি বার্তাবিহীন গল্প আর এখানেই এর নতুনত্ব!

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

মরুদ্যান এর ছবি

বুঝিনাই প্রথমে। তারপর মন্তব্যে ব্যাখ্যা দেখলাম।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।