সে এক দিন গেছে। তারপর এখন দেখছি সবই বদলে গেছে এই বলে অমিতা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিষন্ন বদনে বসে রইল।
বিয়ের আগে ও পরের পরিস্থিতি এক করলে তো হবে না। কিন্তু এই তফাৎ টা এত বেশী নয় যে জীবন বিষয়ে হতাশ হয়ে পড়তে হবে। এটা সবার ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে। বিজ্ঞ ভাবে মন্তব্য করল সমর। তার পর খাট থেকে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় পায়চারি শুরু করল।
তোমার বর গেল কোথায়? কখন আসবে কিছু বলে যায়নি? যদিও ও মোটেই তার আসার জন্য উদ্বিগ্ন নয়।
কোনদিন কি বলে যায়! যে কোন সময় আসতে পারে আবার সেই রাত এগারটাতেও ফিরতে পারে। আমি বরং একটু চা করি। এই বলে সে ব্যস্ত হয়ে সমরের পাশ দিয়ে রান্নঘরের দিকে যাবার সময় একটু আলতো ধাক্কায় সমর কে একপাশে সরিয়ে দিয়ে পথ করে নেয়। এটা এমন কিছু ব্যাপার নয়। কেননা অমিতা আর সমর প্রায় এক বয়েসী। দু জনেই বিবাহিত। অমিতার বয়স এখন হয়ত ত্রিশ আর তার হবে বত্রিশ। সমস্যা হচ্ছে ওর বরের বয়স বাহান্ন বা পঞ্চান্ন। ভদ্রলোক গরীব ঘরের অমিতাকে পড়াতে পড়াতে তার প্রেমে পড়ে যান। আর বলতে নেই! অমিতার ঐ রঙ আর গড়ন মাথা ঘুরে যাওয়া স্বাভাবিক।
মাথা অনেকেরই ঘুরত কিন্তু কমলবাবু ছিলেন ঘোড়েল মাষ্টার। অমিতার পড়াশোনা থেকে পোষাক পরিচ্ছদ যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে সকাল সন্ধ্যা দুবেলা পড়িয়ে অমিতাকে যখন কলেজ পর্যন্ত নিয়ে গেলেন তখন ও বাড়ীর সবাই ওর কথায় ওঠে বসে। বয়স হয়ত বেশী কিন্তু মিঞা বিবি রাজী তো কেয়া করেগা কাজী!
তবু মাষ্টারমশায় কোন কারণ ছাড়াই বিয়েতে অকারণ গড়িমসি করছিলেন। শেষে একদিন পাশের গ্রামে যেখানে অমিতাদের বাড়ী সেখান থেকে রাত দশটায় পড়িয়ে অথবা ওদের সাংসারিক সমস্যা সমাধান করে ফেরার পথে ও পাড়ার কয়েকজন বয়ষ্ক লোক ওকে রাস্তায় ধরে কিছু একটা করবার পর খুব দ্রুত বিয়ের ব্যাপারটা মিটে যায়। সে সময় অমিতা সমর কে বিশেষ পাত্তা দিত না। সমরও সব জানত বলে অমিতা কে নিয়ে মাথা ঘামায় নি।
কিন্তু এখন সমর পরিষ্কার বুঝতে পারছে যে অমিতা তার কাছে স্বাভাবিকের চেয়েও বেশীকিছু চাইছে। এটা অপ্রত্যাশিত এবং বিস্ময়কর লাগছে সমরের কাছে।
চা আর বিস্কুট চলে এসেছে। এ বাড়ীতে সাধারণতঃ চা হয় না। চা বিস্কুট মানে আশাতীত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সমর চায়ে চুমুক দিচ্ছে আর অমিতা খুবই কোমল আর গভীর দৃষ্টিতে তাকে নিরীক্ষণ করছে এমন এক মুহূর্তে সদর দরজায় খুব কর্কশ আঘাত পড়ে।
ঐ এসেছে। বলে মুখে একটা বিরিক্তির ভঙ্গী করে অমিতা দরজা খুলে দিতে যায়। দরজাটা তো খোলাই ছিল। বোধহয় কোনএক ফাঁকে অমিতা বন্ধ করে থাকবে।
কোথায় ছিলে এতক্ষণ? বেশ শাসনের সুরে অমিতা জানতে চায়।
আরে অনেক কাজ থাকে আমার! মেজাজ দিয়েই কমলবাবু মেজাজের মোকাবিলা করে। ওদিকে সমর ভাবতে থাকে আসার একটা জোরাল মোটিভ হিসেবে কি দাঁড় করানো যায়। কমল বাবু কোন কথা না বলেই পুকুরে নামে হাত পা ধুতে। বাড়ীর লাগোয়া সান বাঁধানো পুকুর ।
কি ব্যাপার তোমার? বলার ভঙ্গীতে তাচ্ছিল্যের ভাব আছে। গামছা দিয়ে গা মুছতে মুছতে কমল বাবু চায়ের খালি কাপ লক্ষ্য করেন।
আমার তো প্রায় ঘুম এসে যাচ্ছিল। নেহাৎ অমিতা বলল যে ওর একা ভয় লাগছে তাই বসে ছিলাম। তা ছাড়া একটা যুবতী মেয়ে জেগে থাকবে আর আমি ঘুমিয়ে থাকব এটা দেখলে আবার আপনার ঘুম মাথায় উঠে যেত। বলে সমর পরিবেশ হাল্কা করতে উদ্যোগ নেয়।
বাদ দাও। সবসময় তোমার ফচকেমী। কোন খবর তো রাখ না। বাজারে কি হচ্ছে জান?
কি হচ্ছে? ওর দিকে একটা সিগারেট ছুঁড়ে দিয়ে নিরাসক্ত ভাবে সমর এবার অর্দ্ধশয়ান হয়।
সব মুসলমানদের হাতে চলে যাচ্ছে। ওরা যা বলবে তাই হবে হোয়্যার অ্যাজ হিন্দুদের কেউ পাত্তাই দেবেনা।
সিগারেট ধরাবার জন্য উনি ইঙ্গিতে সমরের কাছে লাইটার চান এবং সেটা পাবার পর ধরাবার সময় দেখা যায় তার হাত অল্প কাঁপছে। ভুরু নাচিয়ে ,কমলবাবুর চোখ বাঁচিয়ে সমর অমিতার দৃষ্টি সেদিকে আকর্ষন করলে অমিতা ঠোঁট বেঁকিয়ে একটা ভ্যাংচানি দেয়। মুসলমানদের বাড়াবাড়িতে সন্ত্রস্ত কমলবাবু টেরও পাননা যে সর্বনাশ তার খাটেই বসে আছে ,বাজারে নয়।
আসলে সবাই সুবিধাবাদী হয়ে গেছে, বুঝলে। পা নাচাতে নাচাতে সিগারেটে আয়েশী টান দিতে দিতে তিনি মন্তব্য করেন।
এই দ্যাখোনা অমিতা তো এম এ পাস । ওকে দিব্যি পঞ্চায়েতে শাসক দল প্রার্থী করতে পারে। ওর সোস্যাল কাজে দারুণ ন্যাক আছে। কিন্তু দেবে না। এই বলে উনি টুসকি মেরে ছাই ঝাড়লেন। আর এই সবের মধ্যে আরো দু বার অমিতার সঙ্গে তাৎপর্য্যময় দৃষ্টি বিনিময় ঘটে গেল সমরের।
কিন্তু আমি তো শুনলাম অমিতার সিলেকশন ফ্যাইন্যাল।
বলে সমর উঠে বসল। আলোচনার চমৎকার বিষয়বস্তু খুঁজে পাওয়া গেছে। বোঝা গেছে কমলবাবু রাজনৈতিক ভবিষ্যতের পেছনে সময় কাটাচ্ছেন।
এই তুমি একটু চা কর যাও, যাও বলে অমিতা কে একপ্রকার ঠেলে তুলে দিয়ে সমরের কাছাকাছি চলে আসে কমলবাবু। সমর কে অনেক বার আশ্বস্ত করে বলতে হবে এখন যে তার খবর পাকা।
(দুই)
ভোটের প্রার্থী হওয়া অমিতার লক্ষ্য ছিলনা। তার লক্ষ্য ছিল সমরের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলা। কেননা এক সন্ধ্যায় সে স্বীকার করল যে সমরের পথ চেয়ে সে দিন গোনে। এরপর ব্যাপারটা বিরক্তির পর্যায়ে চলে গেল। দু দিন না এলেই সে কাউকে না কাউকে দিয়ে খবর পাঠাত যেন সমর অবশ্যই আসে।
সত্যি কথা বলতে কি তার এ যাবৎকালের সংক্ষিপ্ত জীবনে এতটা গুরুত্ব সমর কারো কাচ্ছেই পায়নি। অমিতাকে বহুবার নিজেকে সংযত রাখার, সতর্ক হবার পরামর্শ দেবার পরও অবস্থা একই থাকল। এমন কি সমরের মহত্বের গুনগান গেয়ে ও কমলবাবুকে এতদূর প্রভাবিত করে ফেলল যে বেশ কয়েকদিন অদৃশ্য থাকার পর একদিন কমলবাবু নিজেই এলেন সমরের খোঁজ করতে। বললেন, অমিতা তুমি গেলে খুশী হয়, তুমি তো আর অন্যদের মত নয়, তুমি অবশ্যই যাবে।
কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে ব্যাপারটা নিছক একটা অবৈধ দৈহিক সম্পর্কের ব্যাপার ছিল তা কিন্তু নয়। বরং নানা কারণে যার খানিকটা বিবেকগত আর খানিকটা সুযোগ সুবিধার অভাবগত দেহের ব্যাপারটা সে রকম প্রাধান্য পায়নি। তবু অমিতার হাবভাব ছিল একটা ১৬ বছরের প্রথম প্রেমে পড়া মেয়েদের মত। এই পুরো সময়টা সে সমরের কথা রাখার জন্য সব কিছু করতে প্রস্তুত ছিল। সমর ও বাড়ীতে গেলেই সে সব কাজ ফেলে সমরের কাছ ছেড়ে নড়ত না। আর হাতে লেখা চিঠি একটা সমরের হাতে গুঁজে দেওয়া চাই ই চাই। সেই চিঠিতে লেখা থাকত সারাদিন কি ভাবে তার মন জুড়ে সমর অবস্থান করে, লেখা থাকত যে সমর তাকে কি একটু ভালবাসতে পারেনা। কেন সমর এত নিষ্ঠুর। আর মাঝে মাঝে সমরকেও তার উত্তর দিতে হত। এর ফাঁকে অমিতার আবেগ তীব্র হয়ে উঠলে বা সমরের ইচ্ছা হলে প্রেমে আর যা সব হয়ে থাকে তার বেশ কিছুটা হয়ে যেত। কিন্তু তবুও একসময় পাত্তা না দেওয়া সমরের প্রতি এই তীব্র আকর্ষনের ব্যাখ্যাটা সমরের কাছে বোধগম্য ছিল না। তবে সে এটাকে উপভোগ করত। যে ধরণের তীব্রতার কথা গল্পে পড়া যায় বা সিনেমা, সিরিয়্যালে চিত্রায়িত হয় অমিতার পরিণত বয়সের এই প্রেম ছিল সেই রকম। আবার এটাও সে বলত যে কমল বাবুর প্রতি তার শ্রদ্ধা আছে কেননা উনি না হলে অমিতাদের সংসার ভেসে যেত। তবে ভাল সে জীবনে একজনকেই বেসেছে সেটা হচ্ছে সমর। সমর কি জীবনে কাউকে ভালবেসেছে? এইভাবে এক কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখী হয়ে সমর কে বুদ্ধি খাটাতে হত।
তারপর পরিস্থিতির পরিবর্তন হল। কমলবাবু পঞ্চায়েতের টিকিট পেয়ে জিতে গেলেন। পাঁচ বছরের জন্য প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হলে তিনি। বাড়ীতে লোকজনের আনাগোনা অসম্ভব বেড়ে গেল। আর বেড়ে গেল অমিতার গুরুত্বও। কমলবাবুকে দিয়ে ইচ্ছামত কাজ করিয়ে নেবার একটা আশ্চর্য্য ক্ষমতা ছিল ওর। আর কমলবাবুর প্রবণতা ছিল খুব তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার। ফলে নীতিবাগিশ দের জন্য আর ও বাড়ী অবারিত থাকল না। অমিতার বেশ বাস, কথাবার্তার মধ্যে এখন অহংকার আর উপেক্ষা ঝরে পড়ত। তার নিঃসঙ্গতা পুরোপুরি দূর হয়ে গিয়েছিল।
সমরকে এখন আর ডেকে পাঠান হতনা। হাফিজুল নামে একজন জেলার নেতা এখন কমলবাবুকে খুব প্রশ্রয়ের চোখে দেখতেন। তার মুল্যবান শলাপরামর্শগুলি দেবার জন্য কমলবাবুর বাড়ীতেই কর্মীদের আহ্বান করা হত। যেসব কর্মীরা কমলবাবুর দূর্নীতির বিরুদ্ধাচরণ করতেন তাদের অনেকেরই সদস্যপদ বাতিল হল এবং অন্যদের সতর্ক করা হল। পরবর্তী ভোট আসতে তখনও অনেক দেরী অতএব মানুষকে মতামত জানাবার জন্য এখন অপেক্ষা করতে হবে।
এই সময় একদিন অযাচিত ভাবেই সমর গিয়ে হাজির হল কমলবাবুর বাড়ীতে। অমিতা দরজায় দাঁড়িয়ে জানাল যে কমলবাবু বাড়ীতে নেই। তবুও সমর ভেতরে ঢোকার উদ্যোগ নিচ্ছে দেখে সে নিরাসক্ত ভাবে জানাল, বাড়ীতে তো নেই শুধু শুধু বসে থেকে কি করবে? সমর যেন শুনতে পায়নি এমনভাবে ভেতরে ঢুকে পড়ল।
ভেতরে টিভির ঘরে পাঁচু নামের একজন স্থানীয় দালাল বসে বসে টিভি দেখছিল। এ বাড়ীতে প্রায় সময় তাকে দেখা যেত বলে এটা নিয়ে নতুন করে ভাবার কিছু ছিলনা। মিনিট দশেকের মধ্যেই কোথা থেকে যেন হন্ত দন্ত হয়ে কমলবাবু এসে হাজির হলেন।
এই যে, বিদ্রোহী যে! বলে তিনি সমর কে সম্বোধন করলেন।
কে বিদ্রোহী? সমর পালটা প্রশ্ন করে বসল।
বাদ দাও। সব আমরা খবর পাই। আমার নামে জেলায় অভিযোগ করা হয়েছে তাতে দু শো লোকের সই আছে। জানিনা ভেবেছো?
এত লোক থাকতে আপনার নামেই বা দরখাস্ত করে কেন মানুষ?
শোন, সারাটা জীবন মানুষের জন্য করে গেলাম। এই দ্যাখো আমার বাড়ী। উপরে অ্যাসবেস্টস। এখনও ছাদ ফেলতে পারিনি।
তা পারেন নি। কিন্তু গত দু বছরে দশ লাখ টাকার সম্পত্তি কিনেছেন। টাকাগুলো কি মাটির তলায় এতদিন পোঁতা ছিল?
এই, এই, তোমার কাছে পাঁচ টা টাকা নিয়েছি আমি? নিয়েছি বলতে পারবে? বলে দারুন জোরে চীৎকার শুরু করে দেয় কমলবাবু। টিভির ঘর থেকে বের হয়ে আসে অমিতা। তার পেছন পেছন পাঁচুও আসে।
খুব রুক্ষ গলায় অমিতা চেঁচিয়ে ওঠে, এই, কি হচ্ছে কি এসব? এটা কি ছোটলোকের বাড়ী? যাও সেই পুকুর পাড়ে যাও সব। সেখানে চেল্লাও। আমার কান মাথা ধরাবে না।
কমলবাবু উত্তেজিত হয়ে বারান্দায় পায়চারি করতে থাকেন। সমর বুঝতে পারল ব্যাপারটা এখন ওয়ান ইজ টু থ্রি দাঁড়াচ্ছে। তখন সে ঠান্ডা গলায় বলল, মুসলমানদের বিষয়ে আপনার মূল্যবান মতামত কি হাফিজুল মিঞা কখনও শুনেছে? কথাটা শোনা মাত্রই কমলবাবু সতর্ক হয়ে গেল। তার রাগের পারদ একেবারে নীচে ঢলে পড়ল। সমরও জানত তার মুখ কে অনেকের মত কমলবাবুও সমীহ করে। কিন্তু অমিতার কোন ভাবান্তর হলনা।
বশ্যতা স্বীকারের ভান করে কমলবাবু তাকে চা করবার নির্দেশ দিলে সে বলল, এখন আমি একটা সিরিয়্যাল দেখব, আমি ওসব করতে পারব না। বুদ্ধিমান পাঁচু কোন কথা না বলে আবার টিভি ঘরে ঢুকে গেল।
চল তবে দোকানের দিকেই যাওয়া যাক। এই বলে কমলবাবু বেরিয়ে যেতে সমরকেও তার অনুসরণ করতে হল। সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে কয়েক পা যাবার পরই দুড়ুম করে সশব্দে খিল পড়ল দরজায়।
পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তনের সেই ঘন্টাধ্বনি শুনে রহস্যময় এক হাসি দিয়ে কমলবাবু বললেন, প্রেম করে কি গাড্ডায় পড়েছি বুঝতে পারছ!
মনোবর
মন্তব্য
ভাই,আপনাকে একবার সচলায়তনের প্রথম পাতায় একাধিক পোষ্ট সম্পর্কে নীতিমালা সম্পর্কে জানিয়েছিলাম।
আবারও ঠিক একই কাজ। আপনার একটি আত্মহত্যা এবং আমরা তিনজন গল্পটি এখনও নীড়পাতায় শোভা পাচ্ছে।
সচলায়তনের নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা আমাদেরই কর্তব্য নয় কি?
মডারেটরদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
যেহেতু পোষ্ট আমি সরাসরি করিনা সেহেতু সাফিনাজ আরজুর অভিযোগ মানতে পারছি না। আমি সুবিধামত লেখাটা ব্লগে রেখেছি কারণ এমনিতেই ব্লগের লেখা এক দু দিন পরে পোষ্ট হয়ে থাকে। আমি সময় ও সুযোগমত যদি লিখে রাখতে না পারি তাহলে লেখার কাজ চালানো মুশকিল হবে।
এখন তার মানে যদি এই বোঝা হয় যে আমি অন্যকে বঞ্চিত করে নিজেকে জাহির করতে চাইছি তবে কিন্তু ভূল বোঝা হচ্ছে।
প্রথমে আমি আমার অবস্থান পরিস্কার করি, আমি আপনার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, বিষয়টা বুঝতে চেয়েছিলাম মাত্র। -
এই কথাটি দ্বারা-
সচলায়তনে আমি যতটুকু দেখেছি খুব রেয়ার কেসছাড়া কোন লেখকেরই(লেখক সচল, হাচল বা অতিথি যাই হন না কেন, অথবা মডারেটরদের পক্ষ থেকে সন্দেশের কোন বার্তা ছাড়া ) একসাথে দুইটি লেখা নীড়পাতার থাকেনা। যেহুতু আমার কমেন্টের পরেও আপনার লেখাটি নীড়পাতায় রয়েছে তার অর্থ হল- নিশ্চয় আমার কোথাও বোঝার ভুল হয়েছে।
আপনি কিভাবে লেখা পোষ্ট করেন আমার সঠিক জানা নেই, হয়ত অটো পোস্টে দেন সেখান থেকে মডারেশন পার হয়ে লেখা পোষ্ট হয়ে যায়- সেটা হতেই পারে সেই বিষয়টিই বোঝার চেষ্টা করছিলাম।
অবশ্যই আপনি সময় সুযোগমত লিখে রাখবেন। এমনকি যদি আপনার সুবিধা মনে হয় আপনি ওয়ার্ড ফাইলে লিখেও আপনার কম্পিউটারে সেভ করে রাখতে পারেন। আমি পাঠক মাত্র, যদি কোন কিছু নীতিমালার বাইরে মনে হয় সেটাই আপনাকে জানানোর চেষ্টা করেছি কোন অভিযোগ করার উদ্দেশ্য থেকে নয়।
এটা কখনই বুঝিনি বা বুঝাতেও চাইনি।
আশা করি আমার অবস্থান আপনিও বুঝেছেন।
সচল থাকুন, সচল রাখুন।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
সুপ্রিয় মনোবর,
সাধারনত: সচলের লেখকরা নিজের পূর্ববর্তী পোস্ট নীড়পাতা থেকে সরে যাওয়ার পরে পরবর্তী পোস্ট টা সাবমিট করেন। মডারেটরদের পক্ষে হয়তো সবসময় সেভাবে খেয়াল রাখা সম্ভব হয়না। বিশেষ করে অতিথি লেখকের একাউন্ট থেকে সকল অতিথিই লিখে থাকেন বলে এই একাউন্টে থেকে নীড়পাতায় লেখার সংখ্যা যাচাই করা আরো বেশী কঠিন। তাই আমরা যারা সচল পরিবারের অংশ, আমরাই নিজেদের পো্স্টগুলো একটু খেয়াল রেখে সাবমিট করি। সাফিনাজ আরজু বোধহয় এটাই বোঝাতে চেয়েছেন আপনাকে। তিনি কোনখানেই বলেন নি যে আপনি অন্যকে বঞ্চিত করে নিজেকে জাহির করতে চাইছেন, বরং তিনি মডুদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন। এখানে আপনার প্রতিক্রিয়াটা আমার কাছে অতিরিক্ত মনে হলো।
আর আপনি সময় সুযোগমতই লিখে রাখুন, তাতে তো কেউ আপত্তি করছে না - লিখে রাখুন আপনার কম্পিউটারে। পোস্ট করুন পরে, সমস্যা কোথায়?
আপনি একবার নীড়পাতায় "সচলে লিখতে হলে" ট্যাবের নীচে যে লিঙ্কগুলো আছে, সেগুলো দেখে আসতে পারেন, অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবার কথা।
ভালো থাকুন, লিখতে থাকুন। ধন্যবাদ
____________________________
এখানে কিছু ব্যাপার আমিও বুঝতে পারছি না। যেমন ব্লগে কোন লেখা লেখবার পর যদি তা অমনোনীত হয় তবে সেটা অপ্রকাশিত অবস্থায় রাখা যেতে পারে। অন্ততঃ লেখাটির অসম্পূর্ণতা বিষয়ে লেখক/লেখিকা কে অবহিত করা যেতে পারে। কিন্তু এখানে যা করা হয় তা হল লেখাটা মুছে দেওয়া হয়। এর ফলে যেটা লেখা হচ্ছে তার ভবিষ্যত সর্বদাই অনিশ্চিত।
এই ব্যবস্থা অন্যান্য ব্লগ তো অনুসরণ করেনা। অনুসরণ যোগ্য ব্যবস্থাটি নিশ্চয় চিন্তা-ভাবনা করেই প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই চিন্তার যৌক্তিকতা আমাদের কাছে বোধগম্য করার জন্য কি মডারেটররা বিষয়টির উপর আলোকপাত করবেন?
মনোবর
নতুন মন্তব্য করুন