এক যুগের বেশি হয়ে গেছে বাংলাদেশ টেস্ট খেলা শুরু করেছে। তারও অনেক আগে থেকে খেলে ওয়ানডে। কিন্তু বহু জ্ঞানীগুণীজন এবং পণ্ডিত ব্যক্তিবর্গ এখনো মনে করেন বাংলাদেশের উপযুক্ত খেলার ময়দান হলো আই সি সি সহযোগী সদস্যদের সাথে, একদিনের ক্রিকেটও নয়। আর এটাকে সঠিক প্রমাণ করতেই বাংলাদেশও যেন উঠেপড়ে লেগেছে, সেই শুরু থেকেই। হতাশাজনক ও জঘন্য পারফর্মেন্স প্রদর্শন শুধু আফগানিস্তান নয়, বরং সব সহযোগী সদস্য ও সমমানের দলের সঙ্গেই করে আসা, বাংলাদেশের জন্যে প্রায় নিয়মিত রুটিন। এক্ষেত্রে, প্লেয়ারদের ইনজুরি, ভেন্যু, কন্ডিশন ইত্যাদি কিছুই যেন বিবেচ্য নয়, ঘরে-বাইরে একই অবস্থা।
এখানে আমি সহযোগী সদস্য হিসেবে আমলে নিচ্ছিঃ কেনিয়া, নেদারল্যান্ড, কানাডা, আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডকে। আর সমমানের দল হিসেবে শুধুই জিম্বাবুয়ে (কারন আর কোন দলেরই এত বাজে রেকর্ড নেই)
চেষ্টা করবো এই দলগুলোর সাথে বাংলাদেশের খেলা সবচেয়ে জঘন্য ম্যাচগুলোর বর্ণনা দিতে।
কেনিয়াঃ
বাংলাদেশের প্রথম নেমেসিস। ১৯৯৭-এ আইসিসি কাপ জয়ের পর থেকেই কেনিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতা। সেই কাপ ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নিতেই, ৯৭-এর অক্টোবরেই কেনিয়া আমন্ত্রণ জানালো বাংলাদেশকে, একটি ৩-জাতি টুর্নামেন্টে। আসুন দেখি সেই টুর্নামেন্ট দিয়েই বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের ক্রীড়া নৈপুণ্য পর্যালোচনা শুরু করি।
ম্যাচ-১ (১৯৯৭)
টসে জিতে বাংলাদেশ ফিল্ডিং নেয়, কেনিয়ার দীপক চুদাসামা আর কেনেডি ওটিয়েনোর বিশ্বরেকর্ড গড়া ২২৫ রানের জুটির সুবাদে ৩৪৭ রান করে ৩ উইকেটে। দুই দলের লড়াইয়ে এটাই এখনো সবচেয়ে বড় রান সংগ্রহ। বাংলাদেশ ৮ জন বোলার ব্যবহার করেও ৩টির বেশি উইকেট ফেলতে পারেনি। জবাবে বাংলাদেশের হয়তো লড়াই করার কথা ছিল। তবে যথারীতি ব্যাটসম্যানরা ২০০ রানও পার করতে পারেনি (১৯৭, অলআউট)। বাংলাদেশ কতটা জঘন্য ব্যাটিং করেছিলো তা বোঝা যায়, তারা অলআউট হয়েছিলো ৪৪ ওভারে, ৩য় সর্বোচ্চ রান ছিলো যৌথভাবে নয় নম্বরে নামা হাসিবুল হোসেন শান্তর ও অতিরিক্ত খাতের (২১)।
ম্যাচ-২ (১৯৯৭)
এবার বাংলাদেশ টসে আগে ব্যাট নেয়, ধরে নিতে পারি, আগের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে। তবে এবার তাদের ব্যাটিং হয় আরো ভয়াবহ। সর্বসাকুল্যে ১০০ রান করেছিল বাংলাদেশ, সর্বোচ্চ রান অতিরিক্ত থেকে (১৯)। এই অতিরিক্ত খাতটি না থাকলে বাংলাদেশের ১০০ পার হওয়াটাও সম্ভব হত না। এবার আসা যাক বোলিং-এ, কেনিয়া ২ উইকেটে ১৭ ওভারে ১০২ রান করে ম্যাচটি জিতে নেয়।
এই ট্যুরে বাংলাদেশ এতই খারাপ খেলেছিলো যে মনে হচ্ছিল খেলা হচ্ছে র্যাঙ্কিং-এ ১, ২ ও ১০ এর মধ্যে, যদিও হয়েছিলো ৮, ৯ ও ১০ এর মধ্যে।
ম্যাচ-৩ (১৯৯৮)
১৯৯৮ সালে ভারত একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল, কেন করেছিল কে জানে! বাংলাদেশ, ভারত ও কেনিয়ার সাথে, আজকের ভারতের বোর্ড কোনদিনও এই দলগুলোর সাথে খেলার কথাও ভাবে না। হয়তো জাগমোহন ডালমিয়া ছিলেন বলে এটা সম্ভব হয়েছিলো। যা হোক, এক বছর পরে অন্তত একটু চেনা পরিবেশে আমরা বাংলাদেশের জয় আশা করতেই পারি, বিশেষ করে আগের ম্যাচে বাংলাদেশ কেনিয়ার সাথে ১ম জয় পেয়েছে। কিন্তু না, রফিকের সেই ম্যাচজয়ী ইনিংস ও জয়কে ফ্লুক বলে প্রমাণ করতেই যেন বাংলাদেশ ম্যাচটি ২৮ রানে হেরে যায়। এই ম্যাচ নিয়ে কিছু বলার নেই আসলে, কেনিয়া আগে ব্যাট করে ২২৬ করে, বাংলাদেশ কখনোই ম্যাচে ছিলো না। নিয়মিত উইকেট হারাতে হারাতে ২৮ রান আগেই থেমে যায়। মোটামুটি সকলেই ধরে নেয়, বাংলাদেশের কেনিয়া বধ 'ওয়ান ফ্ল্যাশ ইন দ্যা প্যান'। যথারীতি বাংলাদেশ এ ম্যাচেও ৫০ ওভার খেলতে পারেনি, ২০০ ও পার করতে পারেনি।
ম্যাচ-৪ (১৯৯৯)
এবার দেশে ফেরত আসি, আরো একবছর গিয়েছে। কিন্তু যদি ভাবি বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে, তাহলে কি ভুল হবে? জ্বি, হবে। তার প্রমাণ ঢাকায় বাংলাদেশ, কেনিয়া ও জিম্বাবুয়ের এই টুর্নামেন্ট। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি বলুন, সমমানের দলের সাথে খেলাই বলুন অথবা প্রতিশোধের বাসনাই বলুন, বাংলাদেশ একটা ম্যাচও নিজেদের দর্শকদের সামনে, নিজেদের মাটিতে জিততে পারেনি, তাও সমমানের দলের সঙ্গে। বাংলাদেশ এ ম্যাচে বিদ্যুতের ৯৫ রানের উপর ভর করে ২১৩ করে, আগে ব্যাটিং করে। এখানেও অতিরিক্ত খাতে আসে ২৪টি রান, মানে বাংলাদেশ একজনের প্রায় সেঞ্চুরির পরেও ২০০ পার হতে পারেনি। ১০০/১ থেকে ২১৩ তে অলআউট হয়ে যায়। কেনিয়া ম্যাচ জিতে নেয় ৮ উইকেটতে, প্রায় ৭ ওভার বাকি থাকতেই।
ম্যাচ-৫ (২০০৩)
এলো ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ, সারা বিশ্ব ভেবেছিলো, এবার ডার্কহর্স বাংলাদেশ, যাদের থেকে ২-৩টা অঘটন আশা করাই যায়। তাদের ভুল প্রমাণ করতে বাংলাদেশের বেশি সময় লাগেনি। বাংলাদেশ আগে বোলিং করে কেনিয়াকে ২১৭ রানে বেধে ফেলে। ব্যাটিং করতে নেমে তারা আবারো প্রায় ৩ ওভার বাকি থাকতেই ১৮৫ রানেই অলআউট হয়ে যায়। এখানেও এক্সট্রা ১৮ রান, ২০০র নিচে আউট হওয়া আর ৫০ ওভার খেলতে না পারার ব্যর্থতা। যদি কেউ ভাবেন পিচ ছিলো পেস বোলিং সহায়ক, ভুল হবে। বাংলাদেশের ৮ উইকেট নেন ৩ স্পিনার, তাও এর মধ্যে টিকেলো ও ওদুম্বে দুইজনেই ছিলেন পার্টটাইমার। পুরো খেলায় এক মুহূর্তের জন্যেও মনে হয়নি বাংলাদেশ জিতে যেতে পারে।
ম্যাচ-৬ (২০০৬)
তিন বছর পর, বাংলাদেশ এখন অনেকদূর এগিয়েছে। দেশে কেনিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ৩-০ তে সিরিজ জিতেছে (যদিও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি মাত্র ২০ রানের জয়, তাও তা বাংলাদেশের জয়ের দুর্দমনীয় ইচ্ছার বহিপ্রকাশ বলে ধরে নিতে পারি)। এই ম্যাচটিতেও বাংলাদেশই জিতেছিলো, এবং এটাও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ ছিল। কিন্তু জিতেছিলো মাত্র ২ উইকেটে। কেনিয়া টসে জিতে আগে ব্যাট নেয়, বাংলাদেশের দারুণ বোলিং-এর মুখে মাত্র ১৮৪ রানেই গুটিয়ে যায়। কাগজে-কলমে অত্যন্ত সহজ জয়, তবে ব্যাটসম্যানেরা ভেবেছিলো অন্যরকম। মনে রাখতে হবে এটা কিন্তু সাকিব-আশরাফুল-শাহরিয়ার নাফিস যুগের ব্যাটিং লাইন-আপ, ৯৭ যুগের অ্যামেচার ক্রিকেটারদের নয় এবং বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৫ বছরের উপরে টেস্ট খেলে ফেলেছে।
বাংলাদেশ ১৩৪ রান করতেই ৮ উইকেট খুইয়ে বসে, মাশরাফির এক অসাধারণ ৪৩ রানের ইনিংস আমাদের ম্যাচ জিতিয়ে দেয়। বলতে লজ্জা লাগলেও এবারেও ৩য় সর্বোচ্চ স্কোর জনাব অতিরিক্ত মশাইয়ের, ২২ রান। বাংলাদেশ অনেক কষ্টে একটি আইসিসি সহযোগী সদস্যের সাথে জিতে মান-সম্মান রক্ষা করে।
আমি ভেবেছিলাম, এক বসায় সব দলের সঙ্গেই এরকম ভয়ঙ্কর পারফর্মেন্সগুলো লিখে ফেলতে পারবো। কিন্তু দেখলাম, বাংলাদেশ এত এত বেশি বাজে খেলা উপহার দিয়েছে আমাদের এবং লিখতে গিয়ে এত বেশি খারাপ লাগে, যে দুই পর্বে লেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। বাকি দলগুলোর সাথে খেলা নিয়ে পরের নোটে লিখবো।
ধ্রুব আলম
মন্তব্য
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এসব কথা বলে কষ্টটা আর বাড়ায়েন না। এমনিতেই সাম্প্রতিক performance-এ সবাই খুব Depressed....
আমার মনে হয় এমন লজ্জাজনক পারফরমেন্সের লিস্ট পৃথিবীর সব দেশের ক্ষেত্রেই বানানো যাবে।
সুবোধ অবোধ
এত অল্প সময়ে ধারাবাহিকভাবে এমন হার কম দলেরই (টেস্ট খেলুড়ে দলের) আছে মনে হয়। আপনিও একটা চেষ্টা করে দেখুন না। ক্ষতি কি? কাছাকাছি মনে হয় যেতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, কিন্তু তারা তো উপর থেকে নিচে নামছে। এবং ক্রিকেট তাদের দেশে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। প্রেক্ষাপটটা মনে হয় তুলনা করার জন্যে এক হবে না।
ধ্রুব আলম
আজকে যদি ভারত একের পর এক হারা শুরু করে আপনার কি মনে হয় তাদের দেশে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা কমে যাবে?
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বর্তমান প্লেয়ার আর বাংলাদেশি প্লেয়ারদের মধ্যে একটা কম্প্যারিজন করে দেখেন তো, ব্যাক্তিগত পার্ফর্মেন্সে কারা বেশি এগিয়ে?
ভাই, বাংলাদেশ যখন বিশ্ব ক্রিকেটে নাম লেখায়,তখনকার এবং এখনকার বিশ্ব ক্রিকেট পরিস্থিতি কি এক?
সহযোগী দেশ হিসেবে যাদের খাটো করে দেখছেন, তাদের অনেক প্লেয়ারই বিভিন্ন দেশের লীগে খেলে। দেশ হিসেবে তাদের অভিজ্ঞতা কম থাকলেও ব্যাক্তিগত পার্ফর্মেন্সে তাদের পরিসঙ্খান কিন্তু বেশ ভাল।
পক্ষান্তরে বাংলাদেশী প্লেয়ারদেরই বরং বাইরের লীগে খেলার অভিজ্ঞতা কম।
একটা দেশ বৎসরে ৫/৬ টা টেস্ট খেললে টেস্টে তাদের ম্যাচুরিটি কতটুকুই বা আসবে???
আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে বাংলাদেশের পেস বলিং। যেহেতু নিয়মিত ক্রিকেট দেখেন এটা বোঝার কথা একটা দলের যদি ভাল পেস বলার না থাকে তাদের জন্য ম্যাচ জেতা অনেক বেশি কষ্ট হয়ে যায়। যে সমস্যায় ভারত এখনও ভোগে। এন্ডি ফ্লাওয়ার দের যুগের জিম্বাবুয়ের কথা মনে করে দেখুন-ওইরকম ব্যাটিং লাইন আপ নিয়েও তারা নিয়মিত ম্যাচ হারত শুধু ভাল বলিং এর অভাবে। বাংলাদেশ দল বড় বেশি স্পিন নির্ভর। আর গত ম্যাচগুলোতে সাকিবের অভাব স্পস্ট বোঝা গেছে। গতদিন তো গাজীও ছিল না। বাংলাদেশের যে উইকেটের কন্ডিশন তাতে ভাল পেসার সৃষ্টি দুরাশা!!
যাই হোক, অগোছালো ভাবে ম্যালা প্যাচাল পারলাম।
আপনার লেখার ইন্টেনশন আমার কাছে ভাল লাগে নি! দুঃখিত।
লেখাটা বরং বর্তমান সময়ে দলের দুঃসময়ের কারণ বিশ্লেষণ টাইপের হতে পারত। এমন সব দেশেরই বাজে সময়ের পরিসঙ্খান উপস্থিত করা সম্ভব(আগেও বলেছি)
ভাল করতে থাকলে মাথায় নিয়ে নাচব, আর খারাপ সময়ে তাদের অতীতের বাজে পর্ফর্মেন্সের জাবেদা খাতা খুলে বসব, ব্যাপারটা ব্যাক্তিগতভাবে আমি কখনই সমর্থন করি না! ধন্যবাদ।
সুবোধ অবোধ
"এটাকে সঠিক প্রমাণ করতেই বাংলাদেশও যেন উঠেপড়ে লেগেছে, সেই শুরু থেকেই। "
বিস্মৃতিপরায়ণ লেখক, এশিয়া কাপের ঠিক আগের সিরিজে শ্রীলংকার সাথে লড়াই(দুই দলের পার্থক্য ছিল কুমার সাংগাকারা) আর নিউজিল্যান্ডের সাথে জয়ের কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছেন। আসলে খেলোয়াড়দের মতই বাংলাদেশের সমর্থকদের ম্যাচুরিটির অভাব রয়েছে। আফগানিস্তানের সাথে সাম্প্রতিক পরাজয়টা হতাশাজনক সন্দেহ নাই। কিন্তু এইটা ব্যাতিক্রম, নিয়মিত না।
মাঠের পারফর্ম্যান্স খারাপ হওয়ার পেছনে এবার অন্তত মাঠের বাইরের কিছু ব্যাপার অনেক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে হয়। প্রথমেই বলব ফারুকের ছাগলামী নির্বাচন - অধিনায়কত্ব নিয়ে তামিম মাশরাফির মাঝে অহেতুক ঝামেলা তৈরী করা, এসব দলের পারফর্ম্যান্সে অবশ্যই প্রভাব ফেলেছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে, তামিম/মাশরাফি এর ইঞ্জুরি, সাকিব এর অনুপস্থিতি, পেস বোলিং এর পরিচিত দৈন্য আর নাসির এর ফর্মহীনতা। বাংলাদেশ এর আগেও সাকিব তামিম ছাড়া খেলেছে, কেউ না কেউ এগিয়ে এসে সেই অভাব বুঝতে দেয়নি। কিন্তু তারপরেও এইটা অস্বীকার করার উপায় নাই যে ফিট থাকলে দলের প্রথম এগারজনের প্রথম চারজনই হবে সাকিব, মুশফিক, তামিম, মাশরাফি। এই চারজনের মাঝে দুইজন বিশ্বমানের বোলার আর দুইজন বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান(সাকিবের ব্যাটিং উপরি ধরে নিলাম) নিয়েই বাংলাদেশ দলের মেরুদন্ড। যেকোন দলই দলের প্রধান তিন খেলোয়াড় এর অনুপস্থিতিতে ভুগবে, বাংলাদেশ ও এর ব্যতিক্রম না।
সবকিছু মিলিয়ে দলের একটা খারাপ সময় যাচ্ছে স্বীকার করতে দ্বিধা নেই। এ থেকে কিভাবে উত্তরণ পাওয়া যেতে পারে সেটাই আপাতত আলোচনার বিষয় হওয়া উচিত যেন আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে একই হতাশার পুনরাবৃত্তি না হয়।
সহমত।
সুবোধ অবোধ
চরমভাবে একমত
ফারুকের দল নির্বাচনে কোথায় সমস্যা ছিল ব্যাপারটা বুঝতে পারি নি। বুঝিয়ে বললে ভাল হয়।
পাশাপাশি জয়ের বিশ্লেষণ,
খুব অল্প ব্যবধানে হেরে যাওয়া ম্যাচগুলোর বিশ্লেষণ,
ব্যক্তিগত অর্জনের ম্যাচগুলো নিয়ে আপনার আরো বিস্তারিত এবং বিশ্লেষণী লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
চেষ্টা করবো
ধ্রুব আলম
এটা ঠিক যে কেনিয়া বাংলাদেশের মতো সুযোগ পেলে অনেক ভালো একটা দল হিসেবে ক্রিকেট বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতো নিজেদের। এখন কী অবস্থা জানা নেই, কিন্তু সেই আমলে কেনিয়ার খেলোয়াড়েরা একটা সম্পূর্ণ দল হিসেবে খেলেছে। সম্পূর্ণ দল হিসেবে খেলার মনোবল থাকলে সফলতা আসবেই। বাংলাদেশ তার জ্বলন্ত প্রমাণ। ৯৭ এর বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ এক নয়।
কিছুদিন আগ পর্যন্তও বাংলাদেশ একটা দল হিসেবে খেলেছে। আমাদের সুপারম্যান সাকিবকে ছাড়াও জয় নিয়ে ঘরে ফিরতে সমস্যা হয়নি। সাম্প্রতিককালের প্রত্যেকটা খেলাতেই বাংলাদেশ দলের লড়াকু মনোভাব পরিলক্ষিত ছিলো। ব্যতিক্রম গত তিন-চারটা ম্যাচ। মন্দ লোকে বলে, ফারুক সুদানীর পো নির্বাচক হয়ে আসার পর থেকেই দলের তীব্র লড়াকু মনোভাবে চিড় ধরেছে! কেনো, সেইটা একটা লাখ টাকার প্রশ্ন।
যাইহোক, খারাপ সময় সব দলেরই যায়। বাংলাদেশ দলেরও যাচ্ছে। অচিরেই এই খারাপ সময় কেটে গিয়ে লড়াকু বাংলাদেশ দলের দেখা পাবো, অতি শীঘ্রই। আমি আমাদের দল নিয়ে আশাবাদী।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
দল নিয়ে আমিও আশাবাদী। তবে আমি সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশের ব্যর্থতাটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে চাইছি। এখনো বাংলাদেশ নিয়মিতই সহযোগী সদস্যদের সাথে হারে যা পাকিস্তানের অভ্যাস। এবং এক ম্যাচে ৩০০ করে পরের ম্যাচে ১০০-র নিচে! নিজেদের টেস্টে ও ওয়ানডেতে প্রমাণ করার অন্যতম শর্ত আমি মনে করি, সহযোগী ও সমমানের দলগুলোর সাথে ক্লিনিকাল পারফর্মেন্স। যা প্রমাণ করে যে, আমরা বাকিদের থেকে যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে। সুতরাং, তোমরা আমাদের টেস্ট আমাদের খেলতে না দিতে চাইতে পারো, আমরা হয়ত শক্তিশালী এখনো হতে না পারি, কিন্তু দুর্বলদের দলেও আমরা নেই। তাদের মাঝে আমরা দৈত্য।
আমরা এখন যা করি, তাতে টেস্ট তো দূর অস্ত, ওয়ানডে খেলার যোগ্যতা আছে নাকি, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়। আমি যদি ধরি ২০০০ থেকে আমাদের পথচলা, তাহলে তো ১৪ বছর হয়ে গেল। যে পরিমাণ ইনভেস্ট হয়েছে, তাতে কি মনে হয়না, ফল আরো ভাল আসা উচিত ছিলো?
একটা উদাহরণ দেই, ১০ বছর আগে অনুর্ধ-১৯ প্লেট চ্যাম্পিয়ন, এখনো প্লেট চ্যাম্পিয়ন। এই প্লেট কবে কাপ হবে? আমাদের তো এতদিনে সময় হয়ে গেছে এজ লেভেলে বিশ্বকাপ জেতার।
ধ্রুব আলম
গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা ছিল অস্ট্রেলিয়ার সাথে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। শুরুটাও বেশ ভাল হয়েছিল। কিন্তু খেলা চলাকালিন একটা ঘটনার কারণে প্লেয়াররা বেশ ডিপ্রেসড হয়ে যায় এবং দূর্ভাগ্যজনক ভাবে হেরে যায়( প্লেয়ারদের কাছে শোনা)
এবারেরটাও খুব সম্ভবত সেমিতে অস্ট্রেলিয়ার সাথে হেরে যায়। এবারের খেলার খোঁজ ঠিক জানি না বলে বলতে পারছি না যে পার্ফর্মেন্স বাজে ছিল নাকি দূর্ভাগ্যজনক ভাবে নাকি অস্ট্রেলিয়া যোগ্যতর দল হিসেবেই জিতে গেছে।
সুবোধ অবোধ
দলের দুরাবস্থা। এখনই চিবি দিয়ে ধরার উৎকৃষ্ট সময়। ধন্যবাদ ধ্রুব আলম। এই পোস্টে অনেক কিছু শেখালেন।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
একটু খোঁজ নিলে দেখবেন পঁচা শামুকে পা কাটার অভ্যাস সবচেয়ে বেশী অষ্ট্রেরিয়ার। আশা করি বাংলাদেশ আবার ঘুরে দাঁড়াবে।
দেখছি তো ব্যাপারটা! জানতাম না। আমার ধারণা পাকিস্তানের বেশি অভ্যাস। আর আমিও মনে করি বাংলাদেশ ঘুরে দাড়াঁবেই
ধ্রুব আলম
নাহ, সত্যতা পেলাম না। দুইটি মাত্র পরাজয় ওয়ানডেতে র্যাঙ্কিং-এর তলানিতে থাকা দলের সঙ্গে। জিম্বাবুয়ের সাথে ১৯৮৩-তে, বাংলাদেশের সাথে ২০০৫-এ (তাও বাংলাদেশ কিন্তু টেস্ট প্লেয়িং দেশ তখন)। আমি অন্য ফর্মেট বাদ দিয়েছি এখানে। সুতরাং একটি মাত্র অঘটন!
ধ্রুব আলম
ধ্রুব ভাই, পরাজয়ে সব সমর্থকেরই হতাশা আসে। কিন্তু হতাশা প্রকাশের জন্য "বাংলাদেশের খেলা সবচেয়ে জঘন্য ম্যাচগুলোর বর্ণনা" দিয়ে আসলে কোন কাজ হয় কি? এই লেখা দিয়ে কী বলতে চাইছেন - বাংলাদেশ আসলে টেস্ট তো দূরের কথা , ওয়ানডে স্ট্যাটাসও পাওয়ার যোগ্য না? এটাই যদি আপনার লেখার মূল বক্তব্য হয়ে থাকে, তবে স্পষ্ট করে সেটাই বলে ফেলুন না - বাজে খেলার ইতিহাস টেনে এনে প্রমাণ দেবার দরকার কি? আপনার লেখার প্রথম প্যারায় উল্লেখিত তথাকথিত "বহু জ্ঞানীগুণীজন এবং পণ্ডিত ব্যক্তিবর্গ" কি তাই করে আসেন নি দীর্ঘ দিন ধরে?
বিশ্লেষন যদি করতেই চান, তবে টিম হিসেবে এক একটা সময় ধরে সব খেলার বিশ্লেষন করুন, দেখুন ফলাফল কী আসে। শুধু ধরে ধরে খারাপ পার্ফরমেন্সের চিত্র তুলে ধরাটা কোন বিশ্লেষন না।
আপনার লেখার সাথে দ্বিমত পোষণ করে গেলাম। বাংলাদেশ এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের কাছে একটা ম্যাচ হেরে গেছে - এটা আপসেট। কোন অবস্থাতেই এটা বর্তমান বাংলাদেশের সামর্থ্যের চিত্র নয়। এই ম্যাচকে যদি বাংলাদেশের ক্রিকেট সামর্থ্যের মাপ ধরেন, তাহলে সাম্প্রতিক নিউজিল্যান্ড সিরিজ, শ্রীলংকা সিরিজ বা তার আগের ম্যাচগুলিকে কী বলবেন? ওগুলো কি বাংলাদেশের সামর্থ্য প্রকাশ করে না? এই আপসেটে বাংলাদেশ পরাজিত দলে আছে বলে এত কথা - যখন বাংলাদেশ এরকম আপসেট ঘটিয়েছিল (পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত এদের বিরুদ্ধে) তখন কি ঐ দলগুলোর সামগ্রিক মান নিয়েই প্রশ্ন উঠেছিল?
সাফি ভাই, শিমুল ভাই আর ধূগো দার মন্তব্য পড়ুন - আরো পরিষ্কার হবে আশা করি।
অগ্রীম জানিয়ে রাখি - আপনার এই লেখার দ্বিতীয় পর্ব পড়ার কোন আগ্রহ পাচ্ছি না। হ্যাঁ, যদি সামগ্রিক বিশ্লেষন নিয়ে হাজির হন, তাহলে আগ্রহ নিয়ে পড়বো।
____________________________
না, এটা আমি মনে করিনা। তবে আসলেই একটা চেষ্টা করছি, অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়, বের করার। আমি বাংলাদেশি বলেই, বাংলাদেশ নিয়েই বলি।
আর আমি কিন্তু চেষ্টা করেছি সময়ের সাথে বাংলাদেশের খেলার ফলাফল তুলে আনতে। যদি বলতাম, ২০০০ এর আগে সব ম্যাচ তারা খারাপ খেলতো (এবং শুধু সেগুলোই তুলে আনতাম), তাহলে এটা বাংলাদেশকে একটা অপমান করার জন্যে লেখা বলতে পারতেন।
এখনো বাংলাদেশ প্রায়ই সহযোগী লেভেলে নেমে খেলা দেয়, যা আমাকে অবাক করে। এখন পর্যন্ত পাকিস্তান ছাড়া এত আনপ্রেডিক্টেবল টিম কমই আছে ক্রিকেটে।
আর লেখার সাথে দ্বিমত তো আসে না, এটা বর্ণনামূলক লেখা। আমার তীর্যক মন্তব্য আছে কিছু, সেগুলোর যে সব ঠিক তা দাবি করছি না।
আমার মত হলো "নিজেদের টেস্টে ও ওয়ানডেতে প্রমাণ করার অন্যতম শর্ত আমি মনে করি, সহযোগী ও সমমানের দলগুলোর সাথে ক্লিনিকাল পারফর্মেন্স। যা প্রমাণ করে যে, আমরা বাকিদের থেকে যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে।" আর বাকিদের সাথে ভাল পারফর্মেন্স তো আছেই, কিন্তু আমরা ১ম ধাপটিই পার হতে পারছি না। সুযোগ দিচ্ছি সবাইকে প্রশ্ন করার।
আমিও তাই মনে করতে চাই, কিন্তু দেখুন বাংলাদেশ কিন্তু প্রায় প্রতি সিরিজে নিয়ম করে অন্তত একটা করে ম্যাচ হারছে তথাকথিত 'ছোট' দলগুলোর সাথে (বা হারতে হারতে জিতে যাচ্ছে)। কোথাও কিন্তু প্রমাণ নেই যে আমরা প্রতিপক্ষকে একেবারে নাস্তানাবুদ করে হারিয়েছি। কেনিয়া কিন্তু ১৯৯৭ এ তাদের দেশে ডেকে নিয়ে আমাদের তাই করেছিলো।
আমরা দেশে ডেকে ওদের হারিয়েছি, কিন্তু
ধ্রুব আলম
ভাই, আপনার কমেন্টেই আছে "আমরা এখন যা করি, তাতে টেস্ট তো দূর অস্ত, ওয়ানডে খেলার যোগ্যতা আছে নাকি, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়"। আবার এই মন্তব্যে যা বললেন তা পরস্পর বিরোধী হয়ে গেলো না?
"সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশের খেলার ফলাফল" কিন্তু আপনি তুলে আনেন নি - এনেছেন বাজে খেলার নমুনা গুলো। সুতরাং এটা কোনভাবেই বাংলাদেশের খেলার মানের সামগ্রিক চিত্র প্রকাশ করে না। কিন্তু আপনার পুরো লেখাটাতে আপনি এই মতটাই প্রকাশ করে গেছেন এবং প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন উদাহরণ টেনে এনে। এখানেই আমার আপত্তি। এটার সাথেই আমি দ্বিমত পোষণ করি।
____________________________
"আমরা এখন যা করি, তাতে টেস্ট তো দূর অস্ত, ওয়ানডে খেলার যোগ্যতা আছে নাকি, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়। "- মানে কি? কথাটা বুঝে বললেন তো? গত এশিয়া কাপের ফাইনালিস্ট, মাস কয়েক আগে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশ করা, তারও আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়, শ্রীলংকায় গিয়ে সিরিজ ড্র করা একটা দলকে আপনি বলছেন " এদের ওয়ানডে খেলার যোগ্যতা নেই"!!! আর প্লেট রানার্স আপ কে, বলেন তো? নিউজিল্যান্ড, ওদেরও ওয়ানডে স্ট্যাটাস বাদ দিয়ে দেওয়া উচিত, কি বলেন?
একটা দলের খারাপ সময় আসতেই পারে, একসাথে কয়েকজন প্লেয়ারের ফর্ম পড়ে যাওয়াও নতুন কোন ঘটনা নয়, তাই বলে এভাবে দলকে নিয়ে ঢালাও সমালোচনা সমর্থক হিসেবে আমাদের ম্যাচুরিটিটাও পরিষ্কার বুঝিয়ে দেয়। এক ম্যাচে আমরা প্লেয়ারদের মাথায় তুলে নাচি, আর পরের ম্যাচেই তাদের আস্তাকুরে ছুড়ে ফেলতে আমাদের এক মিনিটও সময় লাগে না। খেলোয়াড়দের সমালোচনার আগে নিজেদের দিকেও তাকানো উচিত।
অবশ্য বাংলাদেশের টেস্ট-ওয়ানডে স্ট্যাটাস না থাকলে অনেকেরই সুবিধা হয়, আরাম করে ইন্ডিয়া-পাকিস্তানের জার্সি গায়ে আর ফ্ল্যাগ হাতে মাঠে যাওয়া যায়, আফ্রিদীর ছক্কা দেখে শীতকার দিয়ে মাথার হিজাব খুলে ফেলা যায়, কষ্ট করে লোক দেখানো বাংলাদেশ সাপোর্ট করা লাগে না, তাই না?
মফিজ
পাকি আলুর আজকেট খেলার পাতায় সংবাদ শিরোনাম: "পাক-ভারত ম্যাচ এমনই হয়!", "আফ্রিদি যখন ‘মিয়াঁদাদ’!", "সবাইকে ছাড়িয়ে তিনি" - যার সবকয়টিই আফ্রিদী আর পাকি বন্দনায় সিক্ত। বাংলাদেশকে নিয়ে একটাই সংবাদ, যার শুরুটা আবার এরকম: "মাঠে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। ক্রিকেটের সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক লড়াইয়ের একটি। কিন্তু সেদিকে তাকানোর সময় কই বাংলাদেশের ক্রিকেটার আর ক্রিকেট কর্তাদের!"
পৃথিবীর আর কোনো দেশে সেই দেশটি যখন একটা টুর্নামেন্টে খেলছে, তখন তার প্রথম সারির একটা দৈনিকে অন্য দুটি দেশের খেলা নিয়ে এতটা নির্লজ্জ মাতামাতি সম্ভব? আমাদের আত্মসম্মানবোধ কতটা নিম্নস্তরের সেটা কালকের খেলায় আমাদের দর্শকদের দেখেই বোঝা যায়। আমরা কয়জন লজ্জা পেয়েছি যখন মিসবাহ খেলা শেষে বলে " Thanks to all the Pakistani people for coming to the stadium and supporting us. " মাঠে যারা ছিল, তারা সবাই পাকিস্তান বা ইন্ডিয়া থেকেই আসল, নাকি আমাদের দেশের মানুষই ছিল এরা?
বাজে পারফরমেন্স করলে আমরা দলকে ধুয়ে দিতে ছাড়ি না, কিন্তু নিজেদের দিকে একবারও তাকাই না, দেশের বা দলের প্রতি আমাদের ভালবাসা কতটুকু, তা ভারত আর বিশেষ করে পাকিস্তানের খেলার সময় ভালই বোঝা যায়।
আর সাংবাদিকদের কথা তো বাদই দিলাম, আজকের পত্রিকাগুলোর দিকে তাকালে ভালই বোঝা যায়। মমিনুলের মত বাচ্চা একটা ছেলেকে যখন সাংবাদিক ফোন করে বলে, "তুমি কা জান তোমার আ্যাভারেজ ব্র্যাডম্যানের চেয়েও ভাল", তখন নিষ্চয়ই বুঝতে অসুবিধা হয় না, আমাদের খেলোয়ারদের নষ্ট করতে কাদের ভুমিকা সবচেয়ে বেশী। আর এই মমিনুল, নাসিররাই যখন একটা ম্যাচ বা সিরিজ খারাপ খেলে, এদের ছুড়ে ফেলতে এই সাংবাদিকদের সময় লাগে না।
আশা করি আপনার পরবর্তি বিশ্লেষণে এই ব্যাপারগুলোও উঠে আসবে।
মফিজ
এই লোক কোনো বিশ্লেষণ করতে বসে নাই। বসছে ইয়ে ছিড়তে। এমন যদি হতো, সেই প্রাচীন যুগ, দীর্ঘদিন পেপার কাটিং সংগ্রহ করে করে সে এই স্ট্যাটিস্টিক্স গুছিয়েছে তাহলেও লেখাটার কিছু মূল্য থাকতো। আপনার আগের মন্তব্যেই আসল উদ্দেশ্যটা আপনি ধরে ফেলেছেন।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
১৯৯৭-এ কেনিয়া বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী দল ছিলো। বৃষ্টির কারণে আমরা আইসিসি ট্রফি জিতি, এমনিতে ৫০ ওভারে ২৪১ করার সমার্থ্য ছিলো না।
সাম্প্রতিক পারফর্ম্যান্সগুলো বেশি হতাশাজনক। এখন আমাদের সামর্থ্য আছে। আর সামর্থ্যের অপচয়টাও আছে ব্যাপক হারে। গত বিশ্বকাপের লজ্জাজনক পারফর্ম্যান্স, ইউরো ট্রিপে আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসের মতো দলের সাথে ধরা, জিম্বাবুয়ের সাথে টেস্ট ম্যাচ হার, শ্রীলংকার সাথে সাম্প্রতিক অনেকগুলো ম্যাচ থ্রো করা, আর সবশেষের এই আফগান ম্যাচ - সামর্থ্যের এমন অপচয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও হার মানায়।
গুড স্টার্ট। নেক্সট পোস্টের অপেক্ষায়, বিশেষ করে হারের কারণগুলো আরো বিশ্লেষণের অপেক্ষায় আছি।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
এমন ভয়ঙ্কর একটি সত্য কথা এভাবে বলে দিলেন! আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়, বাংলাদেশ পারতো না। কারন আমার বাবা ১৯৯২ তে বলতেন, বাংলাদেশের তো উচিত জিম্বাবুয়েকে হারানো, অন্তত এক-দুইটা ম্যাচে। আমারো তাই মনে হয়। আমরা তো সেই ব্রিটিশ আমল থেকে ক্রিকেট খেলি। (আমি প্রমাণ দিতে পারলাম না, কিন্তু খুজলে অবশ্যই পাওয়া যাবে)
সম্পূর্ণ সহমত।
আমি ২০১৩-র জিম্বাবুয়ে সফরের হারগুলো, বা তার আগেও কিছু হারকে বাদ দিয়েছি। কারন এই লিস্টের কাছে সেগুলোকে যথেষ্ট সম্মানজনকই মনে হয়েছে।
২-১টা হার আসতেই পারে, বিপক্ষ দলের কেউ একদিন এক হাতে ম্যাচ জেতাতেই পারে। কিন্তু কেন জানি মনে হচ্ছে, আমরা সম্মানজনকভাবে হারতে শিখেছি এখন!
ধন্যবাদ নেক্সট পোস্ট দিয়েছি, এখনো এপ্রুভ হয়নি।
সম্পূর্ণ সহমত।
আদিত্য জামান
খেলায় হার-জিত থাকবেই, সেটা আমরা সবাই জানি। নিজেদের ভুলত্রুটিগুলো খোঁজাও খারাপ কিছু নয়। ছিদ্র না খুঁজে পেলে মহামূল্যবান অনেক কিছুই ওসব দিয়ে বেরিয়ে যাবে। এখানের প্রায় সবাই বাংলাদেশ দলের একনিষ্ঠ শুভাকাঙ্ক্ষী আমরা। জিয়ার বিদায়ের পরেও রুবেল-গাজীর উপরও ক্ষীণ আশা নিয়ে বসে থাকা সমর্থক আমরা। নিজের উপর করুনা জাগে যখন একটার পর একটা ক্যাঁচ পড়ে, শামসুর যখন ক্রিজে ঢুঁকেও ব্যাট ছেঁড়ে শূন্যে লাফায়, রাজ্জাক যখন এতো বিপদেও হেলে-দুলে নতুন জামাই এর মতো রান নিতে দৌড়ায় । আমি অবাক হই নিজের ধৈর্য দেখে, যদিও জানি আমার জীবদ্দশায় এ ধৈর্য ফুরোবেনা।
দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা না করলে এমন পরিস্থিতি চলতেই থাকবে। আমাদের ক্রিকেট এগিয়ে যাচ্ছে এটা সত্য। কিন্তু সেই বানরের বাঁশ বেয়ে উঠার অঙ্কের মতো। সমস্যা হচ্ছে মাঝে মাঝে আমরা ২ হাত উঠে ৩ হাত নামি। মাশরাফিকে অধিনায়ক না করাই ঠিক ছিলো। ফারুক ভাই অবশ্যই সম্মানীয়, কিন্তু উনাকে ফেরত না আনলেই ভালো হতো মনে হয়। নান্নু-হাবিবুলের সাথে পাইলট খুব ভালো একটা অপশন হতে পারতো। কেন যেন মনে হচ্ছে বাইরে থেকে আমরা যা দেখি বোর্ড তা দেখেনা।
সবাইকে বলি এভাবে ঝগড়া না করে আসুন আমরা আবার দলের পাশে দাড়াই। সেরা টাইগার(এখনো বুদ্ধি পাকেনি যার )টাকে দলে পেয়ে নতুন করে ঝাপাই সেই পুরনো শত্রুদের উপর। আমরা এখনো খেলতে পারি এশিয়া কাপের ফাইনাল, কি বলেন সবাই? ভারত কে হারিয়ে আমাদের জন্য দরজাটা কি পাকিস্তানিরাই খুলে দেয়নি?? আর শত্রুর এইটুকু অনুগ্রহ কি আমরা হেলায় ফেলে দিব ?
আদিত্য জামান
নতুন মন্তব্য করুন