পাকিস্তান কেন সমর্থন করেন? পিছলা টাইপ মানুষ জবাব দেয়, ভাই, ভাল খেলে তাই করি। একটা দল ভাল খেললে সমর্থন দিলেও কি দোষ হয়ে যায় নাকি? ও আচ্ছা, তাহলে আপনি খেলার সাথে রাজনীতি বা ধর্ম মেশাচ্ছেন না? এক্কেবারেই না! কক্ষণো না! খেলা তো খেলাই, ওটাকে অন্য কিছু দিয়ে বিচার করবেন না।
ঠিক আছে, আসুন দেখি তাহলে পাকিস্তান আসলে কতটা ভাল খেলে। একবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ, ইমরান খান, ওয়াসিম, ওয়াকার, শোয়েব, শহিদ আফ্রিদির দল। আমি এখানে ওয়ানডে পরিসংখ্যান নিয়ে বসবো, কারন বাঙ্গালির উম্মাদনা ওটা নিয়েই, পাকিস্তানের টেস্ট নিয়ে নিশ্চয়ই কেউ সারাদিন কেউ পড়ে থাকেন না (মাঝে মাঝে আপডেট নেন হয়তো)। ওয়ানডেতে পাকিস্তানের খেলার একটা বলও মিস করেননা, এমন অনেক পাঁড় সমর্থক আমার বন্ধুমহলেই আছে।
অনেকে বলবেন, টি-২০ কেন আমি বাদ দিচ্ছি? দিচ্ছি কারণ ওটা এখনো পুরোদস্তুর ক্রিকেট না, টাকা কামানো ও ফুর্তির ব্যবস্থা। টি-টুয়েন্টিতে জয়ে খুব বেশি কিছু লাগে না, হুট-হাট করে, র্যাঙ্কিং-এর সবচেয়ে তলায় থাকা দলটিও কোন একটি বিশেষ সময়ে, তাদের ১-২জন খেলোয়াড় ভালো ফর্মে এবং প্রতিপক্ষ বাজে ফর্মে থাকলে নিয়মিত হারিয়ে দিতে পারে। একটা ভালো ওভারও অনেক সময় জয়ের জন্য যথেষ্ট। তাই এই ফরম্যাটটি যেন তৈরিই হয়েছে পাকিস্তান ও বর্তমান ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত অত্যন্ত আনপ্রেডিক্টেবল দল দুইটির জন্যে। আর তার জন্ম তো বেশিদিন নয়, আপনি তো তার আগে থেকেই পাকিস্তান সমর্থন করে আসছেন, তাই না? নিশ্চয়ই টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পরে মুগ্ধ হয়ে তাদের সমর্থন শুরু করেননি বোধহয়? (করে থাকলে ভাই, আমার কিছু বলার নেই, এই লেখা আপনাকে উদ্দেশ্য করে লেখা না)।
পাকিস্তান এখন পর্যন্ত খেলেছে ৮১৬টি ওয়ানডে ম্যাচ, জিতেছে ৪৩৭টি, হেরেছে ৩৫৪টি, ৮টি টাই, ১৭টি ফলাফলবিহীন, জয়ের শতকরা হার ৫৩.৫৫। এখন আসি ভারত ও শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে, তারা খেলেছে যথাক্রমে ৮৫৩ ও ৭১৩টি করে ম্যাচ। জয় পেয়েছে ৪২৫ ও ৩৩৭টি, শতকরা জয় যথাক্রমে ৪৯.৮২ ও ৪৭.২৭ ভাগ। সুতরাং পাকিস্তান উপমহাদেশে শ্রেষ্ঠ দল। আপাতত মেনে নিলাম সেটা।
ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তান খেলেছে যথাক্রমে ১৩৮, ১২৬ ও ৩২টি ম্যাচ, জয় পেয়েছে ৮০, ৭২ ও ৩১ টি। মোট ২৬৪ ম্যাচে ১৫২টি জয় (৫৭.৫৮%), বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে, কারন তারা এখনো উন্নতির পথে আছে (আরেকটি কারন পরে ব্যাখা করছি)। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি জয় পাকিস্তানের এই দুটি দলের বিপক্ষেই, শতকরা জয়ও ৫৭.৯৭ (শ্রীলঙ্কা) এবং ৫৭.১৪ ভাগ (ভারত) সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে বাদ দিলে কাছাকাছি আছে নিউজিল্যান্ড (৫৭.৩০%) ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ (৪৩.৬৫%) উল্লেখ্য ৪টিই এখন র্যাঙ্কিং-এ তলার সারির দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিয়েও দুটো কথা পরে বলছি। আগে উপমহাদেশের দলগুলোর সাথে তাদের এখন দূরত্ব কতটুকু দেখে নেই।
আমরা জানি, ১৯৯৬-এ বিশ্বকাপ জয়ের পর শ্রীলঙ্কা বদলে গেছে, এর আগে পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা জিতলে সবাই অঘটনই ধরতো (এর সপক্ষে আমি যুক্তি এই লেখাতেই পরে দিচ্ছি)। দেখা যায়, ১৯৯৬ এর বিশ্বকাপ জয়ের পরে শ্রীলঙ্কার সাথে পাকিস্তান খেলেছে ৮১টি ম্যাচ, জয় ৩৯, হার ৩৯ (৪৮.১৫%)। তার মানে খেলা হয় সমানে সমান। আর শ্রীলঙ্কার সাথে ৯৬-র আগে পাকিস্তান খেলেছে ৫৭টি, জিতেছে ৪১টি (৭১.৯৩%)। আশা করি, বুঝতে পারছেন, বাংলাদেশকে কেন বাদ দিয়েছি, একটি সদ্য খেলতে শেখা দলের সাথে জয়ে প্রকৃত শক্তিমত্তা নিশ্চয়ই প্রমাণ হয় না।
এবার আসি ভারতের কথায়, ২০০০ সালের পরে থেকে ভারত বদলাতে শুরু করে। তাদের ম্যাচ গড়াপেটাকে পিছনে ফেলে, বুড়ো প্লেয়ারদের বাদ দিতে শুরু করে, শচীনের পাশে দ্রাবিড়, গাঙ্গুলি, সেওয়াগ, পরে কাইফ- যুবরাজকে পায়, একদল নতুন পেসার আসতে থাকে, জহির, থেকে শুরু করে নেহরা, পাঠান, বালাজি, হরভজনকে পায় ক্লান্ত কুম্বলের পাশে। তো ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভারতের সাথে পাকিস্তান খেলেছে ৪৮টি ম্যাচ, জিতেছে ২৫টিতে, হেরেছে ২৩টি (জয়ের হার ৫২.০৮%), মানে আগের সেই সুদিন এখন আর নেই।
শুরু করি বাকি দলগুলোর সাথে হিসেব। প্রথমে বাদ দেই আইসিসি সহযোগীদের সাথে জয়গুলো, তাহলে দেখা যায়, পাকিস্তান ৭৯০ ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে ৪১৩টি (৫২.২৮%)। এরপরে বাংলাদেশ আর জিম্বাবুয়ের সাথে ম্যাচগুলো বাদ দেই, দুর্বলের সাথে সবলের ধরাবাধা জয়ে সেরা হওয়া যায়না নিশ্চয়ই? দেখা গেলো, এরা পাকিস্তানের বড় প্রিয় প্রতিপক্ষ, কারণ তাদের বাদ দিলে শতকরা জয় নেমে আসে ৪৭.৮ ভাগে (৭১১ ম্যাচে ৩৪০ জয়)।
কিন্তু পাকিস্তানকে তো উপমহাদেশ-সেরা বা তলাদের সেরা হলে চলবে না, হতে হবে বিশ্বসেরা। কারণ আপনি বিশ্বসেরা বলেই পাকিস্তানকে সমর্থন দিচ্ছেন, আমি ধরে নিয়েছি। সেরা প্রমাণের দুটো উপায় আমার জানা আছে, ১। ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী দলগুলোর সাথে জয়, ২। কাপ/ টুর্নামেন্ট জয়। তাহলে নিজের চেনাজানা ভারত, শ্রীলঙ্কা আর নিচুসারির দলগুলোকে বাদ দিয়ে দেখি কি অবস্থা দাঁড়ায়। পাকিস্তানের জয়ের শতকরা হার কমে হয় ৪২.০৬ ভাগ (৪৪৭ ম্যাচে মাত্র ১৮৮ জয়)।
বলেছিলাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিয়ে 'ভানু'র কৌতুকের মত আমার 'দুইখান কথা আছে'। পাকিস্তান সেই ১৯৭৫ সাল থেকে তাদের সাথে খেলে আসছে, ১২৬টি ম্যাচে জয় পেয়েছে ৫৫টি (৪৩.৬৫%)। কিন্তু আমরা জানি এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কি দুরবস্থা, আমি ধরেছি, ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে এই দুর্দশা শুরু তাদের। সেই সেমিফাইনালে খেলা দলটির পর আর বাকি সব জয় বা অর্জনই তাদের ঘুরে দাড়াঁনোর চেষ্টা, ধারাবাহিকতা নয়। ১৯৯৭ থেকে পাকিস্তান তাদের সাথে খেলেছে ৫০টি ম্যাচ, জয় এসেছে ৩৩টিতে! পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে দিচ্ছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন কোথায় নেমেছে! আরেকটা ব্যাপার লক্ষণীয়, এর আগে ২২ বছরে তাদের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয় ২২টি! এই ২২ বছরে কি তাদের সাথে কম খেলেছে পাকিস্তান? মোটেই না, ৭৬ ম্যাচে ম্যাচে এসেছে এই জয় গুলো, মাত্র ২৮.৯৫%। পাকিস্তান ভালো খেলে বৈকি!
সবশেষে, ১৯৯৬ এর পরে থেকে দুর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে জয়গুলো বাদ দিয়ে দেখি পাকিস্তান কতটা ভালো দল। ৩৯৭ ম্যাচ, ১৫৫ জয়, ২৩০ হার, ৪ টাই ও ৮টি কোন ফলাফল নেই, শতকরা জয় ৩৯.০৪ ভাগ। খুব আহামরি দল মনে হচ্ছে কি?
আপনি কিন্তু ক্রিকেটকে ভালবাসেন, খেলার সাথে রাজনীতি, দেশপ্রেম, আঞ্চলিকতা, ধর্ম ইত্যাদি কিছুই মেশান না, একদম না! তাই ভারত আর শ্রীলঙ্কাকে আর আলোচনায় টানলামই না। আপনি সমর্থন করবেন সবচেয়ে সেরা দলটি, তবুও বাংলাদেশি বলে বাংলাদেশ নিয়ে কয়েকটা কথা না বলে পারছি না। ৯৬-এর বিশ্বকাপের আগে পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা খেলেছে ২১০টি ওয়ানডে, জিতেছে মাত্র ৬১টি (২৯.০৫%)। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের জয়ের হার ২৮.২৭% (২৮৩ ম্যাচে ৮০ জয়) এবং তা উর্ধ্বমুখী। সুতরাং, যারা পাকিস্তানের সাথে খেলার দিনেও ওদের সমর্থন দেন, তারা দেশপ্রেম না, এমনিই বাংলাদেশকে সমর্থন দিন, কথা দিতে পারি পস্তাবেন না। বিশ্বকাপ জিতে যেতেও পারি, বলা তো যায় না। আমরাও বেশ আনপ্রেডিক্টেবল। এজন্য এ লেখায়ই শ্রীলঙ্কার ৯৬-পূর্ব অধিকাংশ জয়গুলোকেই আমি অঘটন হিসেবে ধরি।
যা হোক, ফেরত আসি পাকিস্তানের কথায়, তাদের খুব বেশি ভালো দল এখন আর মনে হচ্ছে না। দেখি বরং আরেকটা দলের সাথে তুলনা দিয়ে। নিউজিল্যান্ড আন্ডারএচিভার, আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ বেশি ভালো ছিল, এখন বেশি খারাপ, এই বিবেচনায় তাদের বাদ দিয়ে ইংল্যান্ডকে নিলাম। তারা ভালোও না, খারাপও না, সবসময় মাঝারি এবং দুবারের বিশ্বকাপ রানার্স-আপ।
দেখা যাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা, এমনকি ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথেও ইংল্যান্ডের ফলাফল পাকিস্তানের তুলনায় ভালো। পাকিস্তান সেরা শুধু উপমহাদেশের দলগুলোর সাথেই, ইংল্যান্ডের সাথে খেলাতেও তারা লজ্জাজনকভাবে পিছিয়ে। কিন্তু আপনি তো উপমহাদেশের দল বলে পাকিস্তান সমর্থন দেবেন না নিশ্চয়ই? পাকিস্তান ভাল খেলে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড আর নিচু র্যাঙ্কের বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের সাথে এবং তাদের সাথেই বেশি বেশি করে খেলে!
আমি ধারাবাহিকতায় ও ফলাফলে প্রমাণ করে দিয়েছি প্রায়, পাকিস্তান একটি অত্যন্ত সাধারণমানের দল। এখন বলবেন, পাকিস্তান বিশ্বকাপ জিতেছে? কিন্তু ভারত তার থেকে বাজে দল হয়েও দুবার জিতেছে, শ্রীলঙ্কা একবার। আঞ্চলিকতা টেনে আনছি? ঠিক আছে, তাহলে অস্ট্রেলিয়া কেন নয়? তারা জিতেছে ৪ বার! পাকিস্তান তো তাদের সবেধন নীলমণি এক ১৯৯২ বিশ্বকাপ ছাড়া আর কিছুই জেতেনি (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও না), আর এই দুই বড় টুর্নামেন্টে তাদের পারফর্মেন্স কেমন সেটা নিয়েই লিখবো দ্বিতীয় পর্ব। সেরা দল হতে হলে শুধু ধারাবাহিক না, টুর্নামেন্ট জয়ও চাই, সেখানে দেখাবো নাহয়, পাকিস্তানের কি ফলাফল! আশা করি, অনুমান করতে পারছেন!
আমি তো পাকিস্তানের সমর্থনের পেছনে যা যা কারণ পাচ্ছি, তার একটাও খেলাধূলা সম্পর্কিত না, বরং আঞ্চলিকতা, মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ বা রাজনীতি তথা ভারতবিদ্বেষই দেখছি। সমমানের অন্য যেকোন দলের খেলাও তো আপনার ভালো লাগতে পারতো, কিন্তু শুধু পাকিস্তানের খেলাতেই আপনার জোশ জাগ্রত হয়? নিজের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করুন তো, ভাল খেলে দেখে সমর্থন করি, এটা কি সত্য? হিপোক্রেসি ছেড়ে সাহস করে বলেই ফেলুন না, "ভাই, আমি ছাগু, পাকি জারজ, মেরে দিল মে পাকিস্তান, তাই সমর্থন দেই, আমরা মুসলিম ভাই ভাই, ৭১-এ যাই ঘটুক, দেখেন না, এখন ভারত কি করতেসে? মেরি মি আফ্রিদি, আমার পুটু তোমার জন্যে অবারিত দ্বার!"
ছাগলামি করুন, কিন্তু সাহস নিয়ে স্বীকার করুন অন্তত। আপনার লেঞ্জা এমনিতেই দেখা যায়, ঢেকে রাখার ব্যর্থ চেষ্টাটা ছাড়ুন।
ধ্রুব আলম
মন্তব্য
বিশ্লেষণ ভালো লাগলো। পাকিস্তান এমন কোন 'মান কচু' খেলে না।
ক্রিকেট খেলার যে একটা শৈল্পিক দিক আছে সেটা পাকিদের মধ্যে দেখি না।
যে পাকিস্তান সাপোর্ট করবে, সে র্যাংকিংয়ের তলায় থাকলেও এদেরই সাপোর্ট করে যাবে। এরা পাকির "ক্রীড়া কৃতদাস"
শুভেচ্ছা
আমি কখনো প্রমাণ করতে পারিনি যে, তারা এত ফালতু খেলে, আজ এমনিই ফাইনালের আগে মনে হলো, ঘেটে দেখি। এবং দেখলাম, পাকিস্তান আসলেই অত্যন্ত বাজে খেলে। আর এই খেলার জন্য তাদের সমর্থন করা যায় না।
তবে মানুষজন "পাকিস্তান হাতি-ঘোড়া খেলে" এই ধারণাই ধারণ করে বেশি। সেটা মনে হয় ইসলামি জোশ হতে উদ্ভূত।
ধ্রুব আলম
ধন্যবাদ
ধ্রুব আলম
পাকিস্তান ভাল খেলে বলে পাকিস্তান সমর্থন করে না। পাকিস্তান সমর্থনের পেছনে রয়েছে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষ।
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
জিগাইলে তো অস্বীকার করে, তাই লিখলাম, এখন থেকে কেউ এই উত্তর দিলেই, ধরায় দিমু!
ধ্রুব আলম
২০০৩ ও ২০০৭ কোন বিশ্বকাপেই পাকিস্তান প্রথম রাউন্ড পেরোতে পারে নাই। ২০০৭ এ তো আয়্যারল্যান্ডের কাছে হেরে বাদ পড়েছিলো। তবুও পাকিস্তান সাপোর্ট কমে নাই।
সাদরিল
২য় পর্বে সেটাই লেখার চেষ্টা করবো। ১৯৯২-তে বিশ্বকাপ জিতসিলো পুরাই বরাতজোরে। ইংল্যান্ডের সাথে গ্রুপ ম্যাচে ৭৪ রানে অলআউট হইসিলো, আর ইংল্যান্ড মনে হয় ৮ ওভারে ৬৪ ছিলো, এরপর বৃষ্টি নামে। তখন কি রুল ছিলো জানি না, কিন্তু খেলা পরিত্যক্ত হয়। ঐ ম্যাচে হারলে আর বিশ্বকাপ জিতা লাগতো না।
অসম্ভব ভালো এবং বিশ্লেষণধর্মী লেখা হইছে। সুপার লাইক।ভানু'র কৌতুকের মত আমিও বলতাছি " চালিয়ে যাও গুরু" ।
Hudai deshpremi
অনেক অনেক ধন্যবাদ
এখন তো আফগানিস্তান এসে গেছে, সাম্প্রদায়িকদের পাকিস্তান সমর্থন করার দরকারটা কি? আফগানেরা ৯৯% মুসলিম, তুলনায় পাকিস্তান ৯৭%, তার ওপরে পাকিস্তান টিমে এদিকে ওদিকে দু-চারজন অমুসলিম দেখা যায়।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আফগানিস্তানে আফ্রিদি নাই, মজাও নাই
পাকিস্তান সমর্থনের জন্য আরো ২/১ টা কারণ আছে বলে আমার মনে হয়।
১। মুসলিম-প্রধান জাতিগুলোতে বীরপুজার ব্যাপারটা প্রবলভাবে আছে। পাকিস্তানি ক্রিকেটার, পাকিস্তানি আর্মি এদের বীরত্ব, ক্ষমতা ইত্যাদি নিয়ে মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশেই একটা ফ্যান্টাসি আছে, (এখন অনেক কম), আমাদের দেশের অনেককেই সেই ব্যাপারটার ফ্যান দেখেছি। ছোটোবেলায় পাকিস্তান-ক্রিকেট ফ্যানদের কাছ থেকে তাদের আনপ্রেডিকটাবিলিটি, "নিজেদের দিনে যেকোন কিছু করে ফেলতে পারে" এটার ফ্যান দেখেছি।
২। মাশাল্লাহ পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের চেহারা সূরত বেশ, যাকে বলে, নায়কোচিত (পড়ুন: ফর্সা, লম্বা, আর্য ধাঁচ)। আর আমরা যে এই ধরনের যেহারার জন্য কতটা পাগল, সেটা আর নতুন করে বলার কিছু নাই। এখনো মনে আছে, অজয় জাদেজা ভারতীয় টিমে আসার পরে অনেকেই বলতেন, যাক শেষ পর্যন্ত ভারতীয় টিমেও একটু চলনসই চেহারার কেউ এল!
তবে, শেষ কথা হল, পাকিস্তান ক্রিকেট টিমকে সাপোর্ট করার সবচেয়ে বড় কারণ একটাই---একই ধর্মের হওয়া।
---দিফিও
সহমত
ধ্রুব আলম
পাকিস্তানকে সমর্থন করার কারণ একটাই, এরা পচাত্তর পরবর্তী সময়কার নিরন্তর ভারত বিরোধী পাকিপ্রেম চাষের ফসল। ধর্ম, ভালো খেলা এগুলো মুখোশ মাত্র।
----ইমরান ওয়াহিদ
পুরা একমত।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
সহমত
স্বাধীনতার ৪৩ বছর হয়ে গেলেও বাংলাদেশের নাগরিকদের একটা বড় অংশ পাকিস্তানিই রয়ে গেছে। জাতীয় জীবনের যেকোন ইস্যুতেই এর প্রমান পাওয়া যায়। কোন এক নিউজ আর্টিকেলে দেখলাম বাংলাদেশ-পাকিস্তান খেলায়ও পক্ষে-বিপক্ষে মারামারি হয়েছে কোন এক মফস্বলে।
----------------------------------------------------------------
''বিদ্রোহ দেখ নি তুমি? রক্তে কিছু পাও নি শেখার?
কত না শতাব্দী, যুগ থেকে তুমি আজো আছ দাস,
প্রত্যেক লেখায় শুনি কেবল তোমার দীর্ঘশ্বাস!''-সুকান্ত ভট্টাচার্য
ভাল বিশ্লেষণ।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ
এই লেখাটা ভালৈছে!
পাকি সমর্থনে "খেলার সাথে রাজনীতি মেশাবেন না" কারণ হিসেবে উল্লেখ করলেও ভারত বিদ্বেষের কারণ হিসেবে তারাই আবার খেলার সাথে রাজনীতি মেশায়!! কি পরিমাণ হিপোক্রেট!!!! পাকি প্রেমীরা অদ্ভুদ!!!
এই পাকি প্রেমের অন্যতম প্রধান কারণ আমাদের মিডিয়াগুলোর "পাকি চোষণ" মানসিকতা!!! গতকালও দেখলাম বিভিন্ন মিডিয়াতে 'আফ্রিদিদির' ব্যাটিং বীরত্বগাথা ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে!! রিপোর্টারদের কণ্ঠে ঝরে পড়ছে যেন রাগ মোচনের পুলক!!! বৎসরে তিন চারটে চোখ মুখ খিঁচিয়ে উল্টাপাল্টা বাড়ি দিয়ে মাঝারি ইনিংস খেললেই যে একজন ব্যাটসম্যান হয়ে যায় না এই জ্ঞান আমাদের স্পোর্টস রিপোর্টারদের থাকলেও তারা ব্যাবসার স্বার্থে কাজে লাগান না। সেই সাথে আছে আত্মসম্মান বোধের অভাব!!
এ জন্যই ভারতের সাথে হারের পর দেশের প্রধান দৈনিকের (আলু পত্রিকার) শিরোনাম হয় "মুশফিক ভাল, কোহলি আরও ভাল"!!! ভয়ে ছিলাম পাকিদের সাথে দুঃখজনকভাবে হারের পর না আবার শিরোনাম দেয় "সাকিব ভাল, আফ্রিদি আরও ভাল "!!!! আলু অদ্ভুদ এবং বাঞ্চুদ!!!!
সুবোধ অবোধ
পুরোপুরি সহমত
পাপীস্তান সাপোর্টের পেছনে ধর্ম আর পরিবারের কারণটাই মুখ্য। পরিসংখ্যান বুঝে কেউ পাকিস্তানকে সাপোর্ট দেয় বলে মনে হয় না
জিজ্ঞেস করলেই কিন্তু তেনা পেচায়! রাজনীতি তাও স্বীকার করে, ধর্মের কথা বললে তো আকাশ থেকে পড়ে!
ধ্রুব আলম
পাকিস্তান আজ থেকে কোন ম্যাচ না জিতলেও যারা এর সমর্থক
তারা পাকিস্তানকেই সমর্থন করবে। এটা একটা নিরাময় অযোগ্য ব্যাধি
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
পাকিস্তান ভালো খেলে বলে নয়, কিছু অন্ধ বকধার্মিক ধর্মের দোহাই দিয়ে এদের সাপোর্ট করে।
mh007
নতুন মন্তব্য করুন