প্রতি বছর অনন্ত একবার আমরা ঘুরতে বের হই বন্ধুরা মিলে। সেই ঘুরার বেশিভাগ স্থানটি থাকে পাহাড় আর নদীর নিকটে। আর পাহাড়-মেঘ-নদী-ঝর্ণা-জলপ্রপাত যেখানে এক হয়ে বাংলাকে স্বর্গের রুপ দিয়েছে সেই বান্দরবন ডাকে বার বার, তাই প্রতিবারের মতো আবারো বান্দরবন যাওয়া। যার শুরুটা হয়েছিলো বগালেক-ক্রেওকারাডং দিয়ে ২০১০ সালে। প্ল্যানটা শুরু হয়েছে শীতের শুরু থেকে, কিন্তু চাকুরিজীবি আর সামাজিক ব্যস্ত বন্ধুদের ভীষন ব্যস্ততার কারনে বেশ কয়েকবার যাওয়ার তারিখ বদল হতে হতে সেটি শেষ পর্যন্ত শীতকাল পেরিয়ে গ্রীষ্মকালে গিয়ে ঠেকলো। মোট সদস্য সংখ্যা ছিলাম সাত জন। কিন্তু যাওয়ার আগের দিন একজন না যাওযার ইচ্ছে পোষন করলো। ৬ জনের দলে একজন এই প্রথম পাহাড়ে যাচ্ছে। আমাদের এবারের টার্গেট বেসরকারী ভাবে দেশের সর্বোচ্চ পর্বত সাকা হাফং জয় করা। এর পাশাপাশি নাফাকুম-আমিয়াকুম জলপ্রপাত দেখে আসা। যাওয়ার পূর্বে কোন পথে যাবো আর কোন পথে ফিরবো তা নিয়ে বিস্তর গবেষনা চললো। শেষ পর্যন্ত ঠিক হলো যে পথে যাবো সেই পথে না ফিরে, ফিরবো ভিন্ন পথে , ফলে ক্লান্তিকর মনে হবে না ভ্রমন। যাওয়ার প্ল্যান হলো বান্দরবন>থানচি>বোডিং পাড়া>চিপলাংকি পাহাড় বেয়ে চিপলাংকি পাড়া>তান্দু পাড়া>নয়চরং পাড়া>নেফু পাড়া>সাকা হাফং। ফেরার প্ল্যান হলো নেফুপাড়া>সাজাই পাড়া>আমিয়াকুম>নাফাকুম>রিমাক্রি বাজার>থানচি>বান্দরবন।
ভ্রমনসঙ্গী ছয়জনের তিনজন চট্রগ্রামেই থাকে, দুজন ঢাকায় যারা যাত্রার দুদিন আগেই চট্রগ্রাম পৌছে গেছে। বাকী থাকলাম শুধু আমি। অর্ধদিন অফিস করে যাত্রার আগের দিন দুপুরে স্টেশানে গিয়ে একটা বিশাল ধাক্কা খেলাম। না রেলগাড়ির সাথে নয়, ধাক্কা খেলাম চোখের সামনে অন্ধকার ভবিষ্যত দেখে। খোঁজ নিয়ে জানলাম আজ দুপুরে মেইল ট্রেন নেই চট্রগ্রামের, সাপ্তাহিক ছুটি। সন্ধ্যায় গোধূলি করে যাওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। ভৈরব থেকে চট্রগ্রাম সরাসরি কোন বাস সার্ভিস নেই। আর ভেঙ্গে ভেঙ্গে যদি নানা পথ হয়ে যাই তাহলে সময় আর ঝামেলা দুটোই পোহাতে হবে অনেক বেশী। এতক্ষনে বুঝে গেছেন অলস মানুষ দ্বারা এত ঝামেলায় যাওয়া কখনো সম্ভব না। তাই সন্ধ্যার অপেক্ষা, কিন্তু কে জানতো সামনে অমানিশার ঘোর অন্ধকার অপেক্ষা করছিলো। বিকেল ৫ টায় খোঁজ নিলাম গোধূলি কতদূর, কত সময় দেরি করে পৌছাবে? গনতন্ত্রের সুরক্ষায় কয়েক মাস আগে যে তান্ডব চলেছিলো রেলের উপর তার ফল পুরো ঘটিত ক্রিয়ার মতো এখনো বর্তমান। যার কারনে প্রতিটি ট্রেন কম বেশি ঘন্টার পর ঘন্টা লেট। আমাকে একগাল হেসে অনুসন্ধান রুমের ভীষন ব্যস্ত কর্তা জানালো ট্রেন আজ ৪-৫ ঘন্টা দেরিতে আসবে! সব কিছু মেনে নিতে নিতে এমন অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে, সেই ভীষন অ-কাজের ব্যস্ত কর্মকর্তা কে অসংখ্য ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা দিয়ে আবারো বাসায় ফিরলাম। আরো ৫ ঘন্টা অপেক্ষা, রাত ১০.৩০ এ আসবে মহাকালের অপেক্ষার পর চট্রগ্রামগামী ট্রেন। কিন্তু অলসতা যার রক্তের শিরায় উপশিরায় সে কেন সময়ের আগে স্টেশানে যাবে? ঠিক ১০.৩০ এ স্টেশানে প্রবেশ করছি যখন, চোখের সামনে দিয়ে দুলে দুলে চলে যাচ্ছে গোধূলি। বুঝলাম কপালে আজ দুর্গতি আছে, কিন্তু একবারও মনে হয়নি ট্যুার মিস করবো। সকালে বান্দরবনের প্রথম বাসে যাওয়া হয়তো মিস হবে কিন্তু বান্দরবন নয়। তূর্ণায় যাবো ভাবলাম একবার, কিন্তু তূর্ণা পৌছাতে পৌছাতে চট্রগ্রাম সকাল ৮ টা বাজিয়ে ফেলে বেশিভাগ সময়। তাই বিকল্প খোঁজে নেমে পড়লাম। ভৈরবে থাকছি আজ প্রায় দেড় বছর, এখান থেকে চট্রগ্রাম ট্রেন ছাড়া অন্য কোন মাধ্যমে যাওয়া হয়নি কখনো। একটু খোঁজ নেওয়ার পর জানলাম কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ থেকে রাতে কিছু বাস ছাড়ে যা ভৈরব হয়ে বি.বাড়িয়া-কুমিল্লা দিয়ে চট্রগ্রাম যায়। কিন্তু বাসগুলোর কোন টিকেট কাউন্টার নেই, রাস্তার ধারে এক চায়ের দোকান কে দেখিয়ে দিয়ে রিক্সা চালক বললো ওখানে খোঁজ নিলে সঠিক তথ্য পাবেন। চায়ের দোকানে বসে থাকা একজনকে জিজ্ঞেস করা মাত্র বললো সেই বাসগুলোর এখানকার প্রতিনিধি। জানালো ৩০ মিনিটের মাঝে একটি বাস আসবে, এবং আমাকে বসার জায়গা ব্যবস্থা করে দিবে। ঈদের চাঁদ দেখে যতটা না খুশি হয় মানুষ তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছি আমি, যখন ৩০ মিনিটের আগেই বাসটি উপস্থিত হলো। যাক, এখনো পাবলিক সার্ভিসে কেউ কেউ কথা রাখে ভেবে খুশি মনে বাসে উঠে পড়লাম। বাসের মান, সিটের অবস্থা বুঝে উঠতে সময় লাগেনি, যখন দেখলাম পেছনের সিটে একজন ছাগল আর মুরগী নিয়ে উঠেছে। তবে লক্ষ্য যখন অটুট তখন পথের কোন বাধাই বাধা নয় মনে মনে ঝেপে বসে পড়লাম মাঝ বরাবর একটি আসনে। বন্ধুদের ফোন দিয়ে জানালাম, ঠিক সময়ে আশা করি চট্রগ্রাম পৌছাতে পারবো। তারপর শুরু হলো পথ চলা, ভয়ংকর গতি তুলে বার কয়েক মুখোমুখি সংঘর্ষ থেকে সেকেন্ড দূরত্ব রেখে নিরাপদে চট্রগ্রামে পৌছালো ভোর পাঁচটায়। সারারাত নির্ঘুম কাটলো, তারপরও মনে ক্লান্তি নেই। বোনের বাসায় দেখা করে ঘন্টা খানিকের মাঝেই পৌছে গেলাম বদ্দারহাট বাস টার্মিনালে যেখান থেকে ছাড়ে বান্দরবনের সকল গাড়ি। বন্ধু ও কো-অডিনেটর নয়ন টিকেট কেটে রাখলো আগে। তাই নাস্তা না করে উঠে পড়লাম বাসে, উঠেই চোখ বন্ধ করলাম আর কিছুক্ষন পর চোখ খুলে দেখি চলে এসেছি বান্দরবন!
যেতে হবে থানচি, তাই দেরি না করে আগে থানচির টিকেট কাটার জন্যে দৌড় দিলাম। থানচির বাস ১০ টায়, ঘড়িতে তখন ৯.৪৫ মিনিট। কিন্তু টিকেট কাউন্টার থেকে জানালো কোন অাসন আর অসম্পূর্ণ নেই। পরের গাড়ি সাড়ে এগারটায়, সেটা হলে অনেক দেরি হয়ে যাবে এবং রাতে থানচি তে থাকতে হবে। তাই ১০ টার বাসের ছাদে চেপে বসলাম। সেখানেও যাত্রীর অভাব নেই, নানান পদের মালামাল সহ যাত্রী হয়ে গেল ১২-১৪ জন। কোমররের সাথে রশি বেঁধে বসে পড়লাম ছাদে। তপ্ত রোধ কিছুক্ষন পর তার জ্বালাময়ি উপস্থিতি জানান দিলো, কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ পর্বতে যাবো এই উত্তেজনায় সব কিছু সহনীয় মনে হতে থাকলো। ছাদে উঠার অভিজ্ঞতা এই প্রথম নয়, তাই জানা ছিলো রোদকে মেনে নিতে হবে। বাসের ছাদে করে যাওয়ার আলাদা একটা সুখ ও অবশ্য আছে। চারপাশ খুব ভালো করে দেখা যায়। দূরের সাঙ্গু নদী, পর্বতের সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকা, পাহাড়কে ছুঁয়ে ছুঁয়ে মেঘেদের দল বেঁধে উড়ে যাওয়া সবি দেখা যায় প্রাণ ভরে। তবে সেটা বর্ষায় হলে বেশি উপভোগ্য হয়, কারন তখন মেঘ জমে বেশি পাহাড়ের গায়ে, সবুজ থাকে পাহাড়ের পুরো শরীর জুড়ে ঠিক এমন। ছবিটি ২০১২র সেপ্টেম্বরে তোলা।
কিন্তু যেহেতু শীতের পরে গ্রীষ্মের শুরুর দিক তাই পাহাড়ের রং অনেকটাই ধূসর হয়েছে। তারপরও সেই ধূসরের পথ ধরে এঁকে বেঁকে পাহাড়ি পথ পেছনে ফেলে চলতে চলতে বিকেল তিনটায় পৌছালাম থানচিতে। থানচিতে নেমে সাঙ্গু নদীর উপর নির্মিত ব্রীজ টি দেখে প্রশান্তিতে ভরে উঠলো চোখ। এই ব্রীজ থানচির সৌন্দর্য্য কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।
থানচি ব্রীজ
লম্বা সময় ধরে রোদে পুড়ে যাত্রা তার উপর অনাহার সব মিলিয়ে অনেকটা ক্লান্ত করে দিলো। তাই থানচি নেমেই প্রথমে খাওয়ার হোটেলে ঢুকে পড়লাম। বান্দরবন শহর ছেড়ে যেখানেই যান খাওয়ার মান আপনাকে খুব একটা তৃপ্ত করতে পারবে না। তবু ও সারাদিন অনাহারে থেকে যা পেলাম তাই পেট পুরে খেয়ে নিলাম। গতবারের গাইড়কে খোঁজ করতেই পেয়ে গেলাম, ফলে তাকেই আবার গাইড় হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হলো। প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে নেওয়ার পর (যে কয়দিন থাকবেন পাহাড়ে পাহাড়ে সেই কয়দিনের রান্না করার জন্যে তেল পেয়াজ সহ সকল প্রকার মসল্লা, শুকনো খাবার, স্যালাইন এবং ঔষুধ ক্রয় করে নিতে হবে) সবার নাম ঠিকানা জমা দিয়ে ক্যাম্প থেকে অনুমুতি নিয়ে প্রথম লক্ষ্য বোডিং পাড়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম বিকেল পাঁচটার কিছু পরে। শুরু হলো পাঁয়ে হেটে পথ চলা, শুরু হলো একটা পাহাড়কে পেছনে ফেলে অারেকটি পাহাড়ের মুখোমুখি হওয়া। থানচি থেকে বোডিং পাড়া যেতে ৩ ঘন্টার মতো সময় লাগে। যাত্রার ঘন্টা খানিকের মাঝে আঁধার নেমে এলো, চাঁদ ও ছিলো না আকাশে। কিন্তু দুটো টর্চ লাইট আগেই কিনে নিয়েছিলাম থানচি থেকে। কিন্তু যতই টর্চ থাকুক হাতে অন্ধকারে সুরু উঁচু-নিচু পাহাড়ে উঠা আর নামা বেশ বিপদজনক। সময়ের অভাবে ২০১২ তে প্রথম রাতের আধাঁরে বগালেক থেকে ক্রেওকারাডং উঠেছি। সেই সাহস আর অভিজ্ঞতা কে সাথী করে পথ চলতে থাকলাম, কিন্তু বোডিং পাড়া যাওয়ার পথে পাড়ি দেওয়া পাহাড়গুলো বেশ বিপদজনক। কিছু জায়গায় সত্যি বুকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিলো। একটা উঁচু পাহাড় থেকে একটু নীচু আরেকটা পাহাড়ে যেতে মাঝে গাছের গুড়ি দিয়েছিলো, সেখানে থাক করে কাটা স্থানে পা দিয়ে পার হতে হয়, রাঁতের আধাঁরে এমন স্থান পার হওয়া সত্যি কঠিন ছিলো। কিন্তু পাহাড়ে উঠতে হলে ভয় পেতে নেই, মনোবল টাই আসল সেখানে। সেই মনোবলকে সাথী করে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকলাম। অসংখ্য তারা আকাশে, চারিদিকে নিথর নিস্তব্ধতা ভালোলাগার অন্য এক অনুভূতির জন্ম দিয়ে গেছে পাহাড়ি জাদুকরি পরিবেশে। বান্দরবনে পাহাড়ি পথে হাঁটা একটা দিক থেকে খুব নিরাপদ, যতই জঙ্গল হোক এখানে সাপের দেখা মিলে না। চাঁদে নাকি সাঈদীকে দেখা যায় অথচ এত পাহাড়ে আর জঙ্গলে ঘেরা বান্দরবনে এইবার একটা সাপেরও দেখা পেলাম না।তবে গতবার(২০১২তে) ক্রেওকারাডং উঠার সময় দেখা হয়ে গিয়েছিলো নিরীহ এই সাপটির সাথে
রাত আটটার কিছু পরে পৌছালাম বোডিং পাড়ায়। গাইড় ঘর ঠিক করলো থাকার, সাধারন নিয়ম হলো আপনি যে পাড়ায় যাবেন রাত্রি যাপনের জন্যে সেখানকার কারবারীর (পাড়া প্রধান) ঘরে সবার আগে উঠতে হবে। উনার ঘরে জায়গা না হলে তখন নিজের পছন্দ মাফিক যে কোন ঘরে থাকতে পারবেন। পছন্দ করার আসলে তেমন কিছু নেই, সব ঘর একি রকম, বাশের খুঁটির উপর নির্মিত মাটি থেকে বেশ উপরে মেঝে স্থাপন। মেঝে আর মাটির ফাঁকা স্থানটি বরাদ্দ থাকে তাদের প্রধান গৃহপালিত পশু শুকরের জন্যে। ঘরের সেই মেঝে বাশ বা কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি।
বোডিং পাড়ায় থাকার ঘর
নিজস্ব মালামাল নিয়ে উঠে পড়লাম প্রথম রাত্রি যাপনের ঠিকানায়। এরি মাঝে গাইড় রা্ন্নায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আমরা ঝিরিতে গোসল সেরে চলে আসলাম। এসেই খেতে বসে গেলাম ঝুম চাষের লাল ভাত আর মুরগী দিয়ে। খাওয়ার পর্ব শেষে শুয়ে পড়লাম বিছানায়। বিছানা বলতে কাঠের পাটাতনের উপর একটা পাতলা কম্বল, মাথার নিচে একটা কম্বল আর শরীরে একটা কম্বল। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন একটা ঘরে কয়টা কম্বল থাকতে পারে। আসলে এই কম্বলগুলো খ্রিষ্টীয় মিশনারী গুলো ওদের দিয়ে থাকে। পাহাড়ি দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে নানান সুযোগ সুবিধা (সোলার বিদুৎ, স্কুল স্থাপন, আর্থিক অনুদান প্রভৃতি) দিয়ে খ্রিষ্ট ধর্মে রুপান্তর করার আধুনিক আর সফল কৌশল হিসাবে এটি পাহাড়ি জনপদে বেশ প্রতিষ্ঠিত। যাই হোক ধর্ম নিয়ে না ভেবে তখন ঘুমের ভাবনাটাই বড় হয়ে উঠলো আর তাই বিছানায় যাওয়া মাত্রই তলিয়ে গেলাম ঘুমের দেশে। (চলবে)
(পোষ্ট কৃতজ্ঞতা: ত্রিমাত্রিক কবির প্রতি, ছবি সহকারে সচলে এটি প্রথম পোষ্ট আমার। আর এই ছবি কিভাবে দিতে হয় সেই ব্যাপারে কবি সাহায্য করেছেন।
ঘোষনা: পরের পর্বতে ছবি থাকবে বেশি, কারন স্বর্গীয় স্থানগুলোর কাছে এখনো পৌছাতে পারেনি এই পোষ্ট।)
মাসুদ সজীব
মন্তব্য
বান্দরবন, আমি যেটাকে আমার দ্বিতীয় বাড়ি বলতাম। কতদিন দেখিনি।
অনেক আগ্রহ নিয়ে পড়লাম আপনার পোস্ট।
আবার ফিরে গেলাম সেই সর্গভূমে...
বগা লেকের ছবি দেখার অপেক্ষায় থাকলাম যদি সেদিকে যান।
ফাহাদ আসমার।
বগালেক নিয়ে আমার দু-ধরণের স্মৃতি আছে। প্রথমবার (২০১০) বগালেকের সৌন্দর্য্য আমাকে মুগ্ধতায় ডুবিয়ে দিয়েছিলো। আর ২০১২ তে গিয়ে হতাশা আর কষ্টে নীল হয়েছি। এতবেশি মানুষ আর তাদের অসচেতনতা বগালেক কে মাছের বাজারের মতো নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন করে ফেলেছিলো যে বিশ্বাসি হতে চাচ্ছিলো না এমন সুন্দর স্থানের এত তাড়াতাড়ি মৃত্যু হতে পারে।
এবার বগালেক হয়ে যাইনি। গতবারের একটা ছবি দিলাম আপনার জন্যে
[img][/img]
জটিল ... পুরা মাথা নষ্ট জায়গা।
আগে ভাগে পাবনায় একটা সিট বুক দিয়ে রাখবো কিনা আপনার জন্যে ভাবছি । কারণ মাথা নষ্ট করা জায়গাগুলোতে লেখা এখনো পৌছায়নি, তাই সেইরাম ছবিগুলো দিতে পারিনি। সেই ছবিগুলো দেখলে মাথা পুরা আউলা ঝাউলা হইয়া যাইবো, যদিও আপনার সুস্থততা নিয়ে অনেকেই আমার কাছে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন
মাসুদ সজীব
চমৎকার। আমরা গেছিলাম রুমা > বগা লেক > কেওক্রাডং > তাজিনডং > থানচি। মারাত্মক জায়গা।
(বান্দরবান কিন্তু, বান্দরবন না ভাই)
..................................................................
#Banshibir.
বেলাকুম-আমিয়াকুম-নাইক্ষ্যংকুম-নাফাকুম যান নি?
না যাওয়া হলে অবশ্যই যাবেন, বাংলাদেশে এর চেয়ে স্বর্গীয় সুন্দর কোন জায়গা আর নেই।
(মুখে বান্দরবন বলতে বলতে লেখতে গেলেও সেই বানানের প্রয়োগ হয়ে গেছে ভাই, ভুল শুধরানোর কোন উপায় নেই। তবে পরেরবার লেখার সময় এমন ভুল করা থেকে সচেতন হবো।)
মাসুদ সজীব
ভূমিকাটা মন ভুলানো, প্রাণ জুড়ানো! পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম মাসুদ ভাই।
-------------------------------------------
এমনভাবে হারিয়ে যাওয়া সহজ নাকি
ভিড়ের মধ্যে ভিখারী হয়ে মিশে যাওয়া?
এমনভাবে ঘুরতে ঘুরতে স্বর্গ থেকে ধুলোর মর্ত্যে
মানুষ সেজে এক জীবন মানুষ নামে বেঁচে থাকা?
পড়ার জন্যে নিয়াজ ভাই।
জীবনে আছে কি, পরের পর্ব ও লেখবো, আপতত খান।
মাসুদ সজীব
বান্দরবান আমার প্রিয় জায়গা, এটা নিয়ে যে কোন লেখা আগ্রহ নিয়ে পড়ি। আপনাদের থ্রিলিং ভ্রমণটা পড়ে শিউরে উঠলাম। পাহাড়ের চড়ার চেয়েও বাসের ছাদে করে যে যাত্রা, সেটাই সবচেয়ে ভয়াবহ এবং সুন্দর মনে হলো।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমরা প্রতিবারি ইচ্ছেকৃত ঝুঁকি নেই। প্রথমবার ক্রেওকারডং থেকে নেমেছি বৃষ্টিতে তাও রাতের আধাঁরে । পা দেই তো পিছলে যায়, সেই দিন এত ভয় পেয়েছি যে শপথ করেছি আর জীবনেও পাহাড়ে উঠবো না। কিন্তু পাহাড় থেকে নামার পর দেশের রাজনৈতিক নেতাদের মতো নিজেকে দেয়া কথা নিজেই ভুলে গিয়েছি ।
মাসুদ সজীব
বাহ! কি অপার্থিব সুন্দর জায়গা আমাদের ঘরের কাছেই! প্রথম বাঁকের ছবি দেখেই মুগ্ধ হয়েছি!
শুভেচ্ছা
আসলেই স্বর্গীয় সুন্দর। পরের পর্বের ছবি আরো অনেক বেশি সুন্দর।
মাসুদ সজীব
লেখা-ছবি চমৎকার। কিন্তু, কুঁড়েমিটা এট্টুস কম করে বাসের ছাদে চড়ে যাওয়ার মত খামকা ঝুঁকিগুলো বাদ দিলে আরো চমৎকার হয়।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
দাদা। সময়ের বড় অভাব ঘটে আমাদের, তাই রাতে পাহাড়ে উঠতে, গাড়ির ছাদে যেতে হয় । তবে এরপর থেকে আর রিস্ক নিবো না আশা করছি।
মাসুদ সজীব
বাসের ছাদে চড়ার কথা পড়ে গায়ের রক্ত হিম হয়ে গেলো যেন!!!
ফেবুর ছবি দেখেই তাব্দা খেয়ে গেছিলাম। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি মূলপর্বের জন্য।
____________________________
রক্ত হিম করা আরো কিছু ঘটনা ঘটেছে, মূল পর্বে আসবে সেই কাহিনী। ছবি আর লেখায় কি কোনদিন প্রকৃতির সৌন্দর্য্য তুলে নিয়ে আসা যায়? যায় না, আংশিক হয়তো পারা যায়। যে সৌন্দর্য্য দেখেছি তা আমি কোনদিন কোন কিছু দিয়ে বর্ণনা করে শেষ করতে পারবো না। বাংলাতে আমি যে স্বর্গ দেখেছি তাতে অপার্থিব কোন স্বর্গ দেখার ইচ্ছে আমার আর নেই।
মাসুদ সজীব
ভাই আমার দৌড় চিম্বুক পর্যন্ত, খুব ইচ্ছে করে কিন্তু হয়ে ওঠে না। কাকতালীয় ব্যাপার কি জানেন এ মাসের ২৫ তারিখের দিকে কয়েকজন ভাই-বেরাদার জোড় করছে রুমা > বগা লেক > কেওক্রাডং যাওয়ার জন্য । আপনার বর্ননা আর ছবি দেখে মনস্থির করে ফেলেছি এইবার আর মিস করবো না। তাই আপনার লিখাটা ওদের শেয়ার দিলাম।
ভাই আমাদের মতো যারা যায়নি তাঁদের জন্য একটু ডীটেইল দিয়েন,যেন এটা পরে গাইড লাইন হিসেবে কাজ করে।
লিখা উত্তম ও ছবি অসাধারণ।
অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
অবশ্যই মিস করবেন না ভাই। পারলে কেওক্রাডং পেরিয়ে জাদিপাইও ঘুরে আইসেন। দারুন সুন্দর জায়গা ভাই। পরের লেখায় বিস্তারিত তথ্য দিবো যাওয়ার। আর গাইড পরিচিত আছে তার নাম ও নাম্বারও দিবো। আপতত আপনার জন্যে জাদিপাইয়ের একখান ছবি উপহার দিলাম
মাসুদ সজীব
হ্যাঁ জদিপাইও যাব।
আপনার কৃপা।
অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
অপূর্ব।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
আসলেই অপূর্ব
মাসুদ সজীব
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনি একটা অমানুষ
মাসুদ সজীব
হ
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ভয়াবহ রকমের সুন্দর প্রকৃতি।
তামান্না ঝুমু
মাসুদ সজীব
লিখা ও ছবি- অসাধারন।
সদস্যনামঃJon Rulz
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছ। আর ঘুরে আসুন জায়গাগুলো থেকে।
মাসুদ সজীব
নতুন মন্তব্য করুন