বাংলাদেশের স্বর্গস্থান বান্দরবানের নানান বাঁকে (২য় পর্ব)

মাসুদ সজীব এর ছবি
লিখেছেন মাসুদ সজীব (তারিখ: বিষ্যুদ, ১০/০৪/২০১৪ - ১:৩১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সারি সারি পাহাড়কে পেছনে ফেলে প্রথম ভোরের সূর্যালো যখন বাশের তৈরি বেড়ার ফাঁক গলে চোখে পড়লো, ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। দেরি না করে সব ক্লান্তিকে মুছে দেওয়া ঘুমকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিছানা ছাড়লাম সাত সকালে। ঘর থেকে বের হয়ে ভোরের অন্যরুপ দেখে অভিভূতে হয়ে গেলাম। পাহাড়ের গায়ে চাদর বিছিয়ে মেঘগুলো উড়ে যাচ্ছে শুভ্র আবেশে।
(১) ভোরে পাহাড় আর মেঘের মিলবন্ধন

চূড়াগুলোতে রোদ এসে ঠাঁই করে নিয়েছে, সেই রোদে ঝিকিমিকি করছে সদ্য জন্ম নেওয়া কচি সবুজ পাতার দল। দূরে অদেখা কোন অজনায় দু-একটা পাখি গেয়ে যাচ্ছে ভোরের স্নিগ্ধ গান। গল্প উপন্যাসে পড়া যাদুময় ভোরের মত একটি ভোর দেখে অভিভূত হলাম। কোলাহল নেই, জনমানুষের স্রোত নেই, নেই কোন ব্যস্ততা। হাত-মুখ ধুয়ে নাস্তা করতে বসলাম, নাস্তা ঠিক নয়। সকালেও এখানকার প্রধান খাবার ভাত। গতরাতের ঝোলের মাঝে ডুবে থাকা অবশিষ্ট মাংস আর গরম ভাত দিয়ে আহার পর্ব শুরু। আপনি চাইলে আপনার রসদে রাখা বিস্কুট-চানাচুর খেতে পারেন নাস্তা হিসেবে। কিন্তু সেই বোকামি করবে না কেউ। কারন সঞ্চিত সেই রসদ ফুরিয়ে গেলে হাঁটার পথে ক্ষুধা যখন মাথা চাড়া দিয়ে ওঠবে তখন অসহায় হয়ে অস্থির হতে হবে। ভাত খাওয়ার আরো একটা কারণ আছে, সারাদিন মোটা দাগে আহার বলতেই এইটুকু। কারণ দুপুরে কোথাও ভাত খাওয়া যাবে না। কোথায় না কোথায় থাকবেন, সেখানে গিয়ে আবার রান্না করে খেতে খেতে সময় চলে যাবে অনেক। তাই সাত সকালে ভাতকেই প্রধান খাদ্য হিসাবে গ্রহন করলাম। পাহাড়ি আদিবাসিদের জীবনে আধুনিক জীবনের নানান সুযোগ সুবিধা না পৌছালেও তাদের সৃষ্ট নানান উদ্ভাবনী পদ্ধতি আপনাকে বেশ চমকে দিতে পারে। যেমন একটা মাত্র পাল্লা দিয়ে ওরা ওজন করতে পারে নিখুঁত ভাবে, ঠিক তেমনি ভাতকে ঘরম রাখার জন্যে কলাপাতার মাঝে ভাত রাখে তারা। সেই কলাপাতায় রাখা ভাত খেয়ে, থাকা আর খাওয়ার টাকা পরিশোধ করে (সাধারণত জনপ্রতি ১০০ টাকা থাকা খরচ আর ৩ কেজি চালের দাম মিটিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে) নতুন পথে বেরিয়ে পড়লাম। আমাদের আজকের লক্ষ্য সন্ধ্যার আগে নয়চরং পড়ায় পৌছানো। সেই নয়চরং পাড়া পৌছানোর পথে পড়বে চিপলাংকি পাড়া আর তান্দু পাড়া। গাইড জানালো বোডিং পাড়া থেকে ৪ ঘন্টার পথ চিপলাংকি পাড়া। তাজিংডং এর প্রায় সম উচ্চতায় অবস্থিত চিপলাংকি পর্বতে অবস্থিত চিপলাংকি পাড়ায় যাওয়ার দুটো পথ আছে। প্রথমটি হলো পাহাড়ি পথে সানজাই পড়া হয়ে তাজিংডং পেরিয়ে চিপলাংকি পৌছানো, আরেকটি হলো ঝিরি পথ দিয়ে হেঁটে হেঁটে চিপলাংকি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত পাড়ায় যাওয়া। দুটোতে সময় প্রায় সমান লাগবে বলে জানলো গাইড। গতবার তাজিংডং যাওয়ার কারনে প্রথম পথে না গিয়ে দিত্বীয় পথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো।
(২) পথ চলা শুরু যেখানে

(৩) সবুজে ডুবে থাকা ঝিরি পথ

ছায়াময় ঝিরি পথে পথ চলা শুরু হলো। ছোট খালের আকৃতি ঝিরি পথে রয়েছে ছোট বড় অসংখ্য পাথর, আর সেই পাথরের ফাঁক গলে ধীরে বয়ে যাচ্ছে শীতল জলের ধারা। চারিদিকে সুনসান নীরবতার মাঝে গড়িয়ে চলা জলের শব্দ ছন্দময় এক সুর সৃষ্টি করে মনের গহীনে। মনের গহীনে নব আনন্দকে সাথী করে পথ চলতে চলতে ঘন্টা দেড়েক এর মাঝে পেলাম আরেকটি লোকালয়। এর নাম ”কাইতন” পাড়া। বেশ পরিপাটি আর গোছানো একটি পাড়া। ত্রিপুরা দের এই পাড়া বেশ উন্নত, ঘরে ঘরে সোলার রয়েছে, শুকর ছাড়াও গরু-ছাগল রয়েছে অনেক। এই প্রথম দূর পাহাড়ের গায়ে নারিকেল গাছ দেখতে পেলাম, তাতে কচি কচি ডাব ও রয়েছে বেশ। গাইডকে বললাম ডাব খাবো, ব্যবস্থা করতে। কিন্তু টাকা থাকলেই যে সব পাওয়া যায়না সেটি ভালো করে বুঝলাম এই পাহাড়ি জীবনে এসে। অর্থাৎ ডাব তারা বিক্রি করবে না। কিছুটা মন খারাপ করে মিনিট দশেক বিশ্রাম নিয়ে আবার পথ চলা শুরু করলাম। এভাবে হাঁটতে হাঁটতে একসময় চলে আসলাম চিপলাঙ্গি পাহাড়ের তলদেশে। খুব কাছেই দেখতে পেলাম তাজিংডং পর্বতকে, তার পাশের পর্বতেই আমাদের গন্তব্য আপতত। চোখের খুব সন্নিকটে পর্বতগুলোকে দেখে ভাবলাম যাক ঘন্টা তিনেক হাঁটার ইতি বুঝি টানবো আর কিছুক্ষনের মাঝেই। কে জানত পাহাড়ও মরুভূমির মতো মরিচিকা সৃষ্টি করে। একটা করে তাল গাছের মত খাড়া পর্বতে উঠি আর ওমনি দেখি আরো একটি পর্বত, এর যেন শেষ নেই। প্রখর রোদে যতই উপরে যাচ্ছি ততই দেখছি ধূসর প্রকৃতি। এমনিতে শুষ্ক মৌসুম তার উপর মাথার উপর জ্বলন্ত সূর্য তার সবটুকু আগুন ছাড়ছে। পানিও শেষ ইতিমধ্যে ফলাফল গলা ‍শুকিয়ে কাঠ। তবু শেষ হয় না পাহাড়, ফাঁকে ফাঁকে একটু ছায়া পেলেই আশ্রয় খুঁজি শীতলতার। পাতার থেকে বয়ে অানা সবুজ শীতলতা আমাদের কে বনলতার মতোই দুদন্ড শান্তি দিয়ে যায়। যতদূর চোখ যায় উঁচু নিচু পাহাড়ের সারি শুধু চোখে পড়ে। কোথাও জনঅরন্য নেই, জীবনের অস্তিত্ব নেই। এমন অদ্ভুত সুন্দর প্রকৃতির স্পর্শে এসে জীবনকে বড় ক্ষুদ্র মনে হয়, কত তুচ্ছতায় আমরা ডুবে আছি, কত ক্ষুদ্র মোহ আর লোভের সাগরে ডুবে আছি মনে হয় বারেবার। চারিদিকে এই অসহ্য সুন্দর, এত বিশালতা, প্রকৃতির নানার রুপময়তা নতুন এক আত্ন-উপলব্ধির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। তবু সবকিছুকে ভুলে গিয়ে আমরা যেমন জীবন স্রোতে মেতে ওঠি তেমনি এই পর্বতে এসেও প্রকৃতির অনন্য রুপকে পেছনে ফেলে দৌড়াতে থাকি গন্তব্যের দিকে।

(৪) চিপলাংকি পাহাড়ের তলদেশ

এভাবে ঘন্টা দুয়েক পাহাড়ের পর পাহাড় পাড়ি দিয়ে অবশেষে পৌছালাম চিপলাংকি পাড়ায়।এই পাড়ায় বেশ দূরে দূরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘর গুলো অবস্থিত। এখানেও সব ত্রিপুরা উপজাতি। ভর দুপুরে সবাই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের দিকে কারো তেমন নজর নেই।

(৫) চিপলাংকি পাড়া, বাম পাশের পর্বত টি তাজিংডং

প্রায় পাঁচ ঘন্টা অবিরত পথ চলার পর গন্তব্যে পৌছে তখন সবাই ভীষন ক্লান্ত। গাইড কারবারির ঘর থেকে পানি নিয়ে এলো, দেখতে না দেখতেই শেষ হয়ে গেল সেই পানি অথচ তৃষ্ণা তখন সমগ্র লোমকূপে, শিরায় -উপশিরায়। আবারও পানি নিয়ে আসা হলো আরেক ঘর থেকে, সাথে কলা। কলা, বিস্কুট খেয়ে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়লাম একটা স্কুল ঘরে রাখা কিছু টেবিলে। সেখানেই ক্লান্তি নিয়ে সবাই ঘুমিয়ে পড়লাম কখন টের পেলাম না। ঘন্টা দুয়েক বিশ্রাম নেওয়ার পর আবার যাত্রা শুরু তান্দু পাড়া উদ্দেশ্যে। যতটুকু উপরে ওঠেছি ঠিক ততটুকু নিচে নামতে হবে। আর নিচের দিকে নামা আমার কাছে বেশ কষ্টদায়ক মনে হয়। কারন এতো পায়ের হাটুর উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে। যেই ভয় করেছি সেই ভয়ের জয় হলো, মিনিট পাঁচ নামার পরে বুঝতে পারলাম ডান পায়ের পেশী টান পড়েছে। তবু মনোবল না হারিয়ে আস্তে আস্তে নামতে থাকলাম। এমন ভয়ংকর সুরু ঢালু পর্বত বেয়ে আগে কখনো নিচে নামিনি। একটু পা এদিক সেদিক হাজার ফুট নিচে। কিছু জায়গায় গাছের পাত দিয়েছে, যেগুলো পার হওয়ারও বেশ বিপদজনক। তবে সবচেয়ে বেশি বিপদজনক ছিলো বাশপাতা। শুকনো বাশপাতা পরো পথ ঢেকে দিয়েছে, সেই পাতায় পা দিলেই পা পিছলে যায়। তাই লাঠি দিয়ে বাশ পাতা সরিয়ে তারপর প্রতিটি কদম ফেলতে হচ্ছে।

(৬) চিপলাংকি পাহাড় থেকে নামার পথ

চিপলাংকি পাহাড়ের পূর্বপাশের তলদেশে রয়েছে বিস্তৃত বাশ বাগান, এত এত বাশ গাছ আমি জীবনে দেখিনি। মনে হচ্ছে বাশের কোন জঙ্গলে ঢুকে পড়লাম। এভাবেই ভয়কে পেছনে ফেলে, শারীরিক অক্ষমতাকে পাশ কাটিয়ে ঘন্টাখানিক নামার পর কিছুটা সমতলে পৌছালাম। তারপর প্রায় সমতলের পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে ঘন্টা খানিকের মাঝেই তান্দু পাড়ায় পৌছালাম। এই পাড়ায় জনবসতি অন্য পাড়া থেকে তুলনামূলক অনেক কম, অল্পকয়েকটি ঘর। সেখানে মিনিট বিশ বিশ্রাম নিয়ে রওয়ানা দিলাম আজকের দিনের চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়চরং পাড়ার দিকে। সেখানকার স্থানীয়রা জানালো ঘন্টা দুয়েক লাগবে পৌছাতে অর্থাৎ সন্ধ্যা সাতটা পেরিয়ে যাবে। আবার অন্ধকারে হাঁটা, তাই পাহাড়ি পথে না গিয়ে আবারো ঝিরি পথ কে বেছে নিলাম। কারন তুলনামূলক ভাবে ঝিরি পথে অন্ধকারে হাঁটা নিরাপদ। ৬ জনের দলে একজন একটু দুর্বল হয়ে গেছে, সে (সাব্বির) জানালো তান্দু পাড়ায় অাজ থেকে যাই, গাইডও তাতে সম্মতি জানালো। কিন্তু আমরা রাজি না, কারন আমাদের সময় নিদিষ্ট। তাই চল চল করে বেরিয়ে পড়লাম আবার।

আবারো ঝিরি পথ, তবে এইবারের ঝিরি পথটা একটু বেশি প্রাকৃতিক। দীর্ঘ গাছের সারি আর ছায়ার মধ্যে বয়ে চলা এই ঝিরি পথ বেশ অন্ধকার। দিনের বেলায়ও এখানে সূর্য্য আলো তেমন পৌছায় না। আর জলের প্রবাহও তেমন নেই।

(৭) ছায়ার অতলে ডুবে থাকা ঝিরি পথ

আমি শুধু ভাবছি এমন পাহাড়ি ঝিরি পথগুলো বর্ষায় নিশ্চয় জলে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, আর সেই পূর্ণ যৌবনে কেমন দেখায় তা কল্পনা করার চেষ্টা করছি। কলকল শব্দে নিশ্চয় সে বয়ে যায় রিমাক্রি খালে। আহ! সেই রুপ যদি দেখিতে পাইতাম। তবে নিজেকে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান ভাবিতে পারতাম। মনের মাঝে জন্ম নেওয়া ক্ষনিকের এই মৃদু কষ্টটুকু পাশ কাটিয়ে নীরবতার মাঝে হাঁটা শুরু করলাম ভালোলাগার অজস্র সুখ নিয়ে। সন্ধ্যা নেমে আসছে চারিদিক ঘনিয়ে, এখনো অনেক পথ পড়ে রয়েছে সামনে। হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিলাম। এভাবেই পথ চলতে চলতে রিমাক্রি খাল, স্রোতহীন মৃত প্রায় এই খাল বর্ষায় মেতে ওঠে ভয়ংকর সুন্দর রুপে দুকুল ছাপানো জল দিয়ে।

(৮) শুষ্ক মৌসুমে প্রাণহীন রিমাক্রি খাল

রিমাক্রি খালের পাড় ধরে সামনে এগিয়ে যাওয়া। গাইড জানালো মিনিট চল্লিশ-পঞ্চাশ লাগবে, সাথে ছোট্ট একটা পাহাড় ডিঙ্গাতে হবে। কিন্তু মিনিট বিশ পরেই খালের পাশে একটা ঘর দেখতে পেলাম। আরেকটু সামনে এগিয়ে দেখি একটা পাড়া। অথচ অামাদের এই পথে কোন পাড়া পড়ার কথা না। আধাঁর দেখে সিদ্ধান্ত নিলাম এখানেই থাকবো রাতে। পাড়াটির নাম হাজরাই পাড়া, যথারীতি এটাও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠির। গাইড ঘর ঠিক করলো, ব্যাগ নিয়ে ওঠে কিছুটা অবাক হলাম। পুরো পাড়ার প্রায় সবাই দল বেঁধে আমাদের দেখতে এসেছে। বুঝলাম এই পাড়ায় সমতলের মানুষের পদচিন্থ তেমন পড়েনি কোনদিন। আজ ক্লান্তিটা কিছু কম, তাই একটু বিশ্রামের পর গোসল করতে গেলাম ঝিরিতে। একেবারে ঝিরির সাথে পাড়াটি অবস্থিত।দুপাশে মস্ত খাড়া দুটো পাহাড় মাঝখানে পাড়া আর তার একপাশ দিয়ে বয়ে চলা পাথুরে খাল। জলের পরিমান আর স্রোত এখানে তুলনামূলক অনেক বেশি। জলে নেমে বুঝতে পারলাম হাড় কাপানো শীতল জল এটি। গোসল শেষে শীতলতার ছোঁয়া নিয়ে ফিরলাম গৃহে। রাতের খাবার শেষ করে ঘুমাতে গেলাম রাত নয়টার মাঝেই। সন্ধ্যা মানেই পাহাড়ে গভীর রাত। ধীরে ধীরে বয়ে চলা জলের স্রোত কানে আসছে ধীর লয়ে, তাদের ঝংকারের তাল আস্তে আস্তে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে। এই অনিন্দ্য সুরের মুর্ছনা সত্ত্বেও দুচোখ তন্দ্রায় জড়িয়ে যাচ্ছে। মন চাইছে থাকি কিছুক্ষন জেগে থাকি এই স্বর্গলোকে। ঘুমের দেশি তলিয়ে যাওয়ার আগে শুনছি পাড়ার কারবারি বলছে সাকা হাফং যাওয়া এখন বেশ ঝুঁকিপূর্ণ, মায়ানমারের সৈন্যরা নাকি এসে বাংলাদেশী ধরে নিয়ে যায়। তিন-চারদিন আগেও নাকি তাদের দেখা গেছে সাকা হাফং এর নিচে অবস্থিত নেফু পাড়ায়। তাদের সেই আলাপ খুব বেশিক্ষন কানে আসেনি আর, শরীরের ক্লান্তির কাছে ইচ্ছের পরাজয় নিয়ে গেল আমায় ঘুমের দেশে।

সকালে ঘুম থেকে ওঠে দেনা শোধ করতে গিয়ে তো আক্কেলগুড়ুম। স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ‍দ্বিগুন টাকা চেয়ে একটা লম্বা লিস্ট ধরিয়ে দিলো কারবারী। সাধারণত ৬ জনের থাকা খরচ ৬০০টাকা আর তিন কেজি চাল ১৫০ টাকা সহ দুটো লাউ এর দাম ১০০ টাকা ধরলে মোট টাকার পরিমান হাজারের নিচে আসে। অথচ অধো বাঙলায় বলে বসলো ২০০০ হাজার টাকার কম এক টাকাও দিতে পারবেন না। কথাটাতে কেমন জানি প্রচ্ছন্ন হুমকির মতো শুনালো, বুঝলাম আমাদের কে পেয়ে যা পারে তা হাতিয়ে নেওয়ার ধান্ধায় আছে ওরা। যাইহোক কথা বেশি না বাড়িয়ে ১৫০০টাকা দিয়ে বিদায় নিলাম পাড়া থেকে। এই প্রথম কোন পাড়ায় এসে তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো, সাধারণত পাহাড়ি আদিবাসীরা অনেক আন্তরিক আর মিশুক হয়। এখানে তার ভিন্নতা দেখতে পেলাম। যাইহোক ছোট-খাট এইসব বাদ দিয়ে আবার পথ চলা শুরু করলাম সাকা হাফং এর উদ্দেশ্যে। ঘন্টা চারেক লাগবে জানালো গাইড। হাঁটার পথ বেশ আরামের, আবারো ঝিরি পথে হাঁটা।

(৯) হাজরাই পাড়া থেকে সাকা হাফং এর উদ্দেশ্যে যাত্রা পথে ঝিরি পথ

ঝিরি পথ শেষ করে কিছুটা পাহাড় টপকে আবারো পেয়ে গেলাম ছায়াময় পাহাড়ি পথ। দীর্ঘ গাছের সারির জন্যে রোদ আসতে পারছেনা পাহাড়ে। ঘন্টাখানিক হাঁটার পর মনে হলো বোধহয় ঢুকে পড়েছি সুন্দরবনে! এত এত অচেনা অজানা বৃক্ষ, এত নিস্তব্দতা, যে পায়ের নিচে পড়া শুকনো পাতার শব্দ, মনের মাঝে ভালোলাগার কতশত অনুভূতিকে জন্মদেয়। বান্দরবানের পাহাড়ে এমন গহীন অরন্য থাকতে পারে সেটা আসলে আমার ধারণারও বাহিরে ছিলো।

(১০) সাকা হাফং যেতে সেই গহীন অরন্য

বেশ দূর থেকে শুনতে পেলাম ঝর্ণার ধ্বনি। ছোট আকৃতির ঝর্ণা, বর্ষায় এই ঝর্ণার এর শব্দ সকল নীরবতাকে পাশ কাটিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যায়। ঝর্ণাটি পার হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে আবার খাড়া পর্বতে উঠার পালা। এর মাঝে সাব্বির ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, তার জন্যে বার বার থেমে যেতে হচ্ছে। কারন যদি পথ ভুল করে অন্য পথে চলে যায়! কিন্তু শারীরিক ক্ষমতায় চেয়ে পাহাড়ে উঠতে বেশি প্রয়োজন দৃঢ় মনোবল। যেটা ওর মাঝে প্রবল ছিলো তাই একটু সময় লাগলেও আমরা জানি ঠিকি গন্তব্যে পৌছাবো। তারপরও ঘন্টা দেড়েকের মাঝে নেফু পাড়ায় পৌছে গেলাম।

(১১) নেফু পাড়ায় জন বিশ্রামাগার

আমরা যখন সেখানে পৌছলাম, ১০-১২জনের আরেকটি দল সাকা হাফং থেকে নেমে আসছে। ফলে সাকা হাফং উঠা নিয়ে আর কোন সংশয় নেই। নিয়ম হলো সাকা হাফং থেকে নেফু পাড়ার একজন স্থানীয়কে নিয়ে সাকা হাফং উঠতে হয়। সেই নিয়ম অনুযায়ী নতুন গাইডকে নিয়ে সাকা হাফং এর পথে পা বাড়ালাম। ঘন্টা দেড়েক লাগবে জানালো নতুন গাইড। আবারো জঙ্গলময় পাহাড়ি পথে পথ চলা, আবরো সেই বাশ পাতার বাধা। পথের শত বাধাকে পেছনে ফেলে নিদিষ্ট সময়ের আগেই সাকা হাফং এর চূড়ায় উঠে গেলাম। বেসেরকারী ভাবে নির্বাচিত দেশের সর্বোচ্চ চূড়া জয় করার আনন্দ দারুনভাবে ছুঁয়ে গেল। স্থানীয়রা একে মোদক তোয়াং নামে ডাকে, আবার কেউ কেউ একে ত্ল্যাং ময় নামে ও ডাকে। যার অর্থ সুন্দর চূড়া। এর উচ্চতা ১,০৫২ মিটার (৩,৪৫১ ফুট)। সাকা হাফং এর চূড়া (পূর্বের পাহাড়) সত্যি সত্যি অসম্ভব সুন্দর।

(১২) সাকা হাফং এর চূড়া

(১৩) সাকা হাফং এর শেষ প্রান্থ আর ওপাশটা মায়ানমার

কিছুক্ষন দেশের সর্বোচ্চ চূড়ায় কাটিয়ে ক্লিক ক্লিক ছবি তুলে আবার নামতে শুরু করলাম। এবং ঘন্টাখানিকের মাঝেই নেফু পাড়ায় নেমে এলাম। গাছ পাকা পেপে আর কলা দিয়ে দুপুরের আহার পর্ব শেষ করলাম। বসতে বসতে ঘন্টা পেরিয়ে গেল, কিন্তু সাব্বিরের কোন খোঁজ নেই। তারও মিনিট ত্রিশ পর সাব্বির নেমে এলো। জুতা খুলে যখন বিশ্রামের পাটাতনের উপর বসলো তখন সতি চমকে গেলাম ওর পাঁয়ের অবস্থা দেখে। প্রায় সবগুলো আঙ্গুল কেটে গেছে রুপালি জুতার কারনে(পাহাড়ে উঠার জন্যে একপ্রকার জুতো, এই জুতায় স্লিপ কাটে না বলে বর্ষাকালে বেশি ব্যবহৃত হয়) আজকের রাত কাটানোর কথা আমাদের সাজাই পাড়া। যা এখান থেকে ঘন্টা দুই এর পথ। কিন্তু সেই গ্রামের কারবারী জানালো আমরা যদি তার দেওয়া এক গাইডকে সাথে নেই তাহলে আমিয়াকুম-নাফাকুমের পাশাপাশি বেলাকুম-নাইক্ষ্যংকুম জলপ্রপাত দেখতে পাবো বোনাস। পাশাপাশি আমাদের কে পাহাড়ে উঠতে হবে না বেশী, ঝিরি পথ দিয়ে হেঁটে আজ বুলং পাড়ায় গেলেই হবে। তারপরদিন সকালেই কুমগুলো দেখতে পাবো। সাব্বিরের পাঁয়ের এই অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো ঝিরি পথেই যাবো নতুন পথ ধরে। শুরু হলো দুজন গাইড নিয়ে বুলং পাড়ার উদ্দেশ্যে পথ চলা। যেই হাজরা পাড়া সকাল ছেড়ে এসেছি সেই পথেই আবার ফিরলাম, তারপর ভয়ংকর খাড়া আরেকটি পর্বত পেরিয়ে আসলাম নয়চরং পাড়ায়। যেখানে আমাদের দিত্বীয় রাত থাকার কথা ছিলো। সেই পাড়ায় বেশ কয়েকজন কে জিজ্ঞেস করলাম বুলং পাড়া কতদূর, একেক জন একেক তথ্য দিতে শুরু করলো। কেউ বলে তিন ঘন্টা, কেউ বলে পাঁচ ঘন্টা। আসলে পাহাড়ি এলাকার মানুষগুলো ঘড়ি দেখে সময় হিসেব করেনা, করে সূর্যকে দেখে, তার আলোর তীব্রতা কে মেপে। এদিকে আমাদের পুরাতন গাইড এই পথ চেনে না, আর নতুন উপজাতি গাইড ঠিক মতো বাঙলাই বুঝে না। ফলে সবার মাঝে হতাশা চলে এলো। নয়চরং পাড়া পেরিয়ে আবার ঝিরি পথে হাঁটা। হাঁটছি তো হাঁটছি পথের কোন শেষ নেই, এদিকে আধাঁর নেমে আসছে।

(১৪) আধাঁর যখন নেমে আসছে চারিদিক ঘনিয়ে

নতুন গাইডকে কিছু জিজ্ঞেস করলে হতাশা আরো বাড়ে, সে কি বলে কিছুই বুঝি না। পথে দু একজন কে জিজ্ঞেস করলাম বুলং পাড়া কতদূর? বলে সামনে, কিন্তু সেই সামনে শেষ হয়না। সাধারণত কেউ বুলং পাড়া হয়ে আমিয়াকুম যায় না। তাই পথও তেমন ছিলো না, মানুষ চলাচল করলে পথ তৈরি হয়, কিন্তু এখানে পথ নেই স্পষ্ট। তাই হতাশা বাড়ছিলো শুধু, আধাঁর ঘনিয়ে আসছিলো দ্রুত। তার উপর সাব্বির বেশ পেছনে পড়ে গেছে। বারবার তার জন্যে অপেক্ষা করার জন্যে আধাঁর আরো ঘনীভূত হচ্ছিলো। এভাবে আধাঁর যখন গ্রাস করে নিয়েছে দিনের আলো তখন গাইড জানালো এই পাহাড়ের চূড়ায় বুলং পাড়া। তখন গভীর অন্ধকার, সবাই নতুন-পুরাতন দুই গাইডকেই বকা দিয়ে যাচ্ছিলো। আমি নতুনটাকে নিয়ে উপরে উঠায় মনোনিবেশ করলাম, কিন্তু সেই পাহাড়ও দেখি শেষ হয়না। কিছুতেই নিরাশ না হওয়া আমিও সত্যি সত্যি ভীষন হতাশ হয়ে পড়লাম। মিনিট বিশেক অন্ধকারে হাতিয়ে হাতিয়ে উঠলাম, কিন্তু জনবসতির কোন লক্ষন নেই। পা আর চলছিলো না কিছুতেই, পানি নেই সাথে, নেই কোন খাবার। তারপরও শেষ দেখো নিবো ভেবে উঠে দাঁড়ালাম, টলে টলে আরো মিনিট বিশেক পর সমতলের মত একটা জায়গা দেখলাম, দূর থেকে বাচ্চার কান্নার শব্দ পেয়ে বুঝলাম অবশেষে পাড়ায় এসেছি। অন্ধকার কিছুই দেখছি না, তাই একটি গাছের নিচে শুয়ে পড়লাম। সেখানে কতক্ষন ছিলাম ঠিক জানি না, গাইডের শব্দে উঠলাম। পিছু পিছু ঠিক করা ঘরের এক উদ্যাম রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। চোখ মেলে দেখি আকাশে অনন্ত নক্ষত্রবিথী ছড়িয়ে আছে, কিন্তু এত ক্লান্ত শরীর নিয়ে নক্ষত্রের পানে তাকাতে পারছিলাম না, ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে গেলাম। ঘন্টা খানিক ঘুমের পর ডাকলো ভাত খেতে, কি খেলাম আর কি খেলাম না বুঝতে পারলাম না। দুটো খেয়ে আবার ঘুম, যেন রাজ্যের ঘুম আমার চোখে। এতটা ক্লান্ত আসলে জীবনে হইনি।

(১৫) বুলং পাড়ায় রাতের ঠিকানা

(চলবে)

মাসদু সজীব


মন্তব্য

মেঘলা মানুষ এর ছবি

ভালো লাগলো। ঘুরতে মজাই লাগছে আপনার সাথে দেঁতো হাসি

শুভেচ্ছা হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

সাথেই থাকুন আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মাসুদ সজীব

এক লহমা এর ছবি

আমার জন্য এই ভালো। আপনেরা ঘুরবেন, আমি আপনার পোস্টের সাথে সাথে ঘুরব। চলুক, চলুক। হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখায় আর ছবিতে কি প্রকৃতির এত বিশালতা আর অনন্য রূপ তুলে আনা যায়? নিজ চোখে দেখা সৌন্দর্য্য কে আসলে মানুষ কখনো লেখায় ফুটিয়ে তুলতেপ পারে না সম্পূর্ণ। সুতরাং বেরিয়ে পড়ুন চোখ টিপি

মাসুদ সজীব

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

রূপসী বাংলা অসধারণ সব ছবি! ধন্যবাদ মাসুদ ভাই, এমন সব ছবি শেয়ার করার জন্য।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার মতো তো আর পারি না ঘুরে ঘুরে লুকিয়ে থাকা মণিমুক্তা খুঁজে নিতে। পড়ার জন্যে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মাসুদ সজীব

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

৪ নম্বর ছবিটা দেখে হলিউডের মুভির কথা মনে হলো। আপনারা যেন লর্ড অব দ‌্য রিংস বা অন্য কোন মুভির অভিযাত্রী দল, কোন দুরূহ উদ্দেশ্য সাধনে লম্বা পথ পাড়ি দিতে বদ্ধ পরিকর হয়ে শুষ্ক, রুক্ষ বিপদ সংকুল অজানা পথ চলেছেন!!

৭ এ আলো আধাঁরির খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। পথের শেষ পড়ে থাকা আলোর রশ্মি যেন কষ্টকর পাহাড় বাওয়ার শেষে সার্থকতার আনন্দকে রূপায়িত করেছে।

আপনাদের ভ্রমণ অদ্ভুত রকম ভালো লাগছে। নাইক্ষ্যংকুমের ছবিগুলো দেখার জন্য অস্থির হয়ে আছি ফেবুতে আপনার ঐ ছবিটা দেখার পর থেকে। তাড়াতাড়ি পরের পর্ব দিন।

কয়েকটা টাইপো ছিল:

রুপ->রূপ, দিত্বীয়->দ্বিতীয়, সুরু->সরু, পরো->পুরো, বাশপাতা->বাঁশপাতা,

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
আপনিও বেরিয়ে পড়ুন, বর্ষায় নাফাকুম যেতে পারেন। পাহাড় ঢিঙ্গাতে হবে না, থানচি থেকে ২-৩ ঘন্টায় নৌকায় রিমাক্রি বাজার, সেখান থেকে ঘন্টা দুই ঝিরি পথ দিয়ে নাফাকুম। রিমাক্রি খালে লক্ষ লক্ষ পাথর আর পাথরের সাথে নৌকার সংঘর্ষ আপনাকে অন্যরকম সুখকর এক অভিজ্ঞতার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে। আর বর্ষায় নাফাকুম জেগে ওঠে জলের গর্জনে, সাদা শুভ্রতায় আচঁড়ে পড়ে পাথুরে জলে।

মাসুদ সজীব

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

হ্যাঁ, বান্দরবান আমিও গিয়েছি বটে, তবে এমন করে ঘোরা হয়নি। স্বাস্থ্যগত কারনে আয়েস করে সাহেবী কেতায় ঘোরা।
যাহোক, আপনার দলের সাথে ঘুরতে ভালই লাগছে। আর এত জায়গার কথাও জানা ছিলনা।
লেখা ও ঘুরাঘুরি চলুক।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
ঘুরাঘুরি ছাড়া জীবনে আছে কি? হাসি

মাসুদ সজীব

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আহা! আমাদের কালে এইসব পাহাড় কই আছিল? বয়স থাকতে এসব পাহাড় আবিষ্কার হইলে, কত্ত আগেই চুড়াটুড়া পার হয়ে যেতাম খাইছে

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

চিন্তা নাই ফুটুশুপ আছে না? হো হো হো

মাসুদ সজীব

তাহসিন রেজা এর ছবি

গত বছর গিয়েছিলাম বান্দরবানে। আসলেই অপূর্ব!

লেখা ও ছবি খুব ভালো লেগেছে মাসুদ ভাই । হাসি

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

অতিথি লেখক এর ছবি

অসংখ্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- তাহসিন ভাই।

মাসুদ সজীব

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

বসে বসে পপকর্ন খাওয়ার দিন শেষ, সময় থাকতে নাম পাল্টান খাইছে । ৯০ ভাগ সাচ্চা মুসলমানের দেশে এইসব নাম চলবে না।

মাসুদ সজীব

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আন্নে সিলট ন যায়া পাহাড়ি চাঁটগা যান কিল্লাই?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

এখন যৌবন যার বান্দরবান যাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময় তার হো হো হো , এখন বার্ধক্য যার (আপনার মতো) সিলেট যাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময় তার। তবে মক্কা-মদীনা ও হতে পারে ব্যক্তি বিশেষে। চিন্তিত

মাসুদ সজীব

মইনুল রাজু এর ছবি

বাহ্‌! দারুণ পোস্ট। চলুক

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি আর অণুদার ভ্রমন পোষ্টগুলো পড়ে আর দেখে মনের ভিতর ঘুমিয়ে থাকা ঘুরাঘুরি ইচ্ছেগুলো জাগ্রত হয়েছে আরো বেশি। আপনার পোষ্ট আমি মুগ্ধ হয়ে দেখি, আর ভাবি একদিন আমিও বড় হব আপনার মত খাইছে আর ঘুরে বেড়াবো দেশ বিদেশ। অসংখ্য ধন্যবাদ রাজু ভাই।

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

গুরু গুরু
চালাইয়া যান, দেখি আপনার সাথে আর কই কই যাওয়া যায়।

অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি

অতিথি লেখক এর ছবি

চলছে, চলবে চোখ টিপি । আমার সাথে চলার পাশাপাশি নিজেও সচল হোন। দেঁতো হাসি

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

লীলেন দা এতদিন কুতায় ছিলেন? কতদিন পর আপনার দেখা মিলল। তাও এই অধমের পোষ্টে চিন্তিত জলদি লেখা দেন, আপনার লেখা মিস করছি অনেক দিন হলো। হাসি

মাসুদ সজীব

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আহা চক্কর

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।