দেলোয়ার ভাইয়ের ক্রিকেট তত্ত্ব

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ১২/০৪/২০১৪ - ১২:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশের শেষ ওভারে হয়তোবা একশ এর উপরে রান দরকার, আমি বলছি হতে পারে। বোলারের এমন কুফা লাগল যে, নো বল থেকে বেরোতেই পারছে না। শেষ বল, অথবা খেলার পরেও বলি এই দিনেরে নিব আমি সেই দিনেরও কাছে। এগার জন খেলোয়াড়দের হয়ে ফাইট করতে হয় বাকী সাপোর্টারসদের সাথে প্রতিনিয়ত। এই কারণে নিজেকে একজন খাঁটি বাংলাদেশী সাপোর্টার হিসেবে ভাবার মত ভ্রান্ত ধারনা ছিল।

পাড়ার চায়ের দোকানদার দেলোয়ার ভাই ক্রিকেট ভক্ত বললে ঠিক হবে না, কারণ উনি হয়ত জানেনই না যে পাকিস্তান ইংল্যান্ড বা ভারত অস্ট্রেলিয়া খেলা চলছে। বাংলাদেশের খেলা হলে উনার ড্রেস থেকে শুরু করে কথাবার্তা, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ সবকিছুর পরিবর্তন লক্ষণীয়। বাংলাদেশের খেলার পরে আমার মত আরও কয়েকজন সম্ভব হলে অবশ্যই দেলোয়ার ভাইয়ের দোকানে যেতে বাধ্য। বিনে পয়সায় ওনার বাংলাদেশ সণ্মন্ধে কথা শোনার জন্য যা এই যান্ত্রিক যুগে এক বিরল এন্টারটেইনমেন্ট। যদিও খেলা না থাকলেও প্রতিদিনই যেতাম। আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের কফি হাউস। বাংলাদেশ জিতলে কথাবার্তার লাইন লেংন্থ পূর্ব পশ্চিম হলে, হারলে উত্তর দক্ষিণ। সাকিব সেরা অলরাউন্ডার হবার আগে দিয়ে যখন খানিকটা খারাপ পারফরমেন্সের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল, দেলোয়ার ভাই বললেন - শোনেন ভাই, পরিশ্রম একখান জিনিস যেটা তো এরা বুঝে না। সরকার সিটি কর্পোরেশনের কিছু ঝাড়ুদার কমায় সাকিবসহ আরও কিছু খেলোয়াড়ের নাম বললেন যাদের দিয়ে এই কাজ করাতে পারে। সকাল বিকাল কোমর বাঁকায় কিছুদিন ঝাড়ু দিলে এমনিতেই কোমর লড়াচড়া করব। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সব জায়গায় কোমরের বল বিয়ারিং ঠিকমত না কাজ করলে কোন লাভ নাই। কিছুদিন পর সাকিব বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হলে দেলোয়ার ভাইকে কিছুটা খোঁচা দিয়ে বললাম - কি দেলোয়ার ভাই শুনলাম সাকিব নাকি বিশ্বের এক নাম্বার অলরাউন্ডার। ঘটনা কি সত্যি নাকি?

উনি বললেন - ভাই আপনাদের মত শিক্ষিত লোকরাই তো হিসাব নিকাশ করে এইগুলা বের করেন, আপনারাই ভাল বুঝেন।

কেন কোন ভুল হয়েছে বলে মনে করেন?

সেটা তো জানি না, তয় হিসাব নিকাশ ঠিকমত করলে সাকিবের লগে তামিম, মুশফিক আরও দুই একজন তো নির্ঘাত দশ এর মধ্যে থাকত। বাংলাদেশ বইলা ঠ্যাকাইতে না পাইরা একজনরে দিছে। লা জওয়াব!!

বাংলাদেশ ক্রিকেটের দিন শুধু কিছু কাস্টমারের কারণে দোকানটা খুলেন। অবস্থা পুরোপুরি সেকেলের আদমজী জুট মিলের মত। দোকানটা খোলা রাখলে বন্ধ রাখার থেকে বেশী লছ। কাস্টমার কি খেল, বিল কত কোন হিসাবই মাথায় নেই। বিল দিল কি না দিল সেদিকে চোখ নাই, চোখ সামনের দোকানের টিভিটার দিকে। তবে ততদিনে দেলোয়ার ভাইকে বুঝি গেছি। একজন শতভাগ বাংলাদেশী সাপোর্টার এর প্রতিকৃতি। তার ক্রিকেট নিয়ে পাগলামো বা অজ্ঞতা সবকিছুর অন্তরালে বাংলাদেশ ক্রিকেট।

একবার কাঁচা হাতে ভুল বানানে একটা বড় আর্ট পেপারে "ইনডিআ পাকিছতান কিরিকেট অলচোনা নিসিদ্য" লিখে দোকানের পেছনে সাটিয়ে দিয়েছিলেন। সন্ধ্যার পরে দেখি লেখাটা নাই। ঝাড়ি খেয়ে খুললেন নাকি দেলোয়ার ভাই? শোনামাত্রই গরম। বাংলাদেশ ক্রিকেটের লাই লাগাইছি যখন, কোন মায়ের লাল অহনো পয়দা হয় নাই দেলোয়াররে দিয়া এইটা খোলাবে। সবই ঐসব কুলাঙ্গারদের কাজ।

খেলার সাথে বাসার রান্নার কি সম্পর্ক এটা জিজ্ঞাসা করলে হয়ত আমরা কেউই প্রশ্নটাই বুঝব না। মানুষটা কিছুটা হলেও দিন আনে দিন খাওয়ার মত। যেদিন বাংলাদেশের খেলা হয় তার পরের দিন হয়ত তার বাচ্চারা শুধু লবণ ভাত খেয়ে থাকে। তাতে তার কোন আফসোস আছে বলে মনে হয় না।

টি ২০ ফাইনালের দিন দুই বন্ধু সহ গেলাম চা খেতে। দেলোয়ার ভাইয়ের মন খুবই খারাপ মনে হল এই প্রথম, কোন খেলায় বাংলাদেশ না থেকেও।

কি দেলোয়ার ভাই বাংলাদেশ ফাইনালে নাই তাই মন খারাপ?

বাংলাদেশের ফাইনালে না থাকনটা দেশের জন্য ভাল।

মনটা মনে হয় বেশী খারাপ!

নারে ভাই, আমার হিসাবের মধ্যে কোন ফাঁক নাই। শ্রীলংকার সাপোর্টে একজন চেয়ারে উঠে নাচিতেছে। দেখেন দেখেন লাভলু কেমনে নাচতাছে। দুই ঘর পরেই একটা ছোট্ট মোবাইলের ফ্লেক্সি আর পান সিগারেটের খোলা দোকানের মালিক, চিনতাম কিন্তু নামটা জানতাম না।

বললাম শ্রীলংকার কঠিন সাপোর্টার মনে হচ্ছে!

লুঙ্গীর আবার পিছনের পকেট! শ্রীলংকার আবার সাপোর্টার!!

শ্রীলংকার সাপোর্টার কি থাকতে পারে না!!

হ থাকতে তো পারেই। মোতালেবরে তো চেনেন, দেখেন বেচারার মনটা আইজ একটু খারাপ। লাভলু যতই চিল্লায় মোতালেবের চোয়াল ততই শক্ত হয়। দুইটা বিএনপি আওয়ামীলীগের মত এন্টি পাটি। এশিয়া কাপের ফাইনালের দিন মোতালেব চেয়ারে উইঠা যতই নাচে আর লাভলুর ততই চোয়ালটা শক্ত হয়। আজকার উল্টা।

মোতালেবকে চিনি। ফ্লেক্সির পাশাপাশি বিকাশ আছে। লাভলুর এক দোকান পরেই। সমস্যাটা কি এন্টি পার্টি তো মানুষ হতেই পারে।

হ হইতেই তো পারে। দুই খেলাতেই শ্রীলংকা জিতে, দুই এন্টি পার্টি দুইদিন চেয়ারে উইঠ্যা লাফায়। কে যে কার এন্টি আল্লাহ ছারা কেউ বুঝে না।

দোকান বন্ধ করতে করতে দেলোয়ার ভাই বলেন - সারাজীবন তো ভাইজান আপনিই গল্প হুনাইছেন, অনুমতি দিলে এই গরীবে আজকে দুইটা গল্প শুনাইতে চায়। এই বলে অনুমতির জন্য অপেক্ষা না করেই শুরু করে দিলেন -

রাস্তার ধারে দুই ফকির ভিক্ষা করে। এক ফকির একদিন আফসোসের সাথে কইল - হে আল্লাহ, মোরা কি কোনদিনই যা চাইব তা পাইব না। আল্লাহতালা কবুল করলেন ও আল্লাহর কথামত ফেরেশতা আইসা কইল - তুমি এখন থেকে যা চাইবা তাই পাইবা কিন্তু তুমি যা পাইবা তোমার পাশের ফকির তাহার ডাবল পাইবে। প্রথম ফকির থালা ভর্তি পোলাও কোর্মা চাইল ও পাইল এবং দেখল পাশেরজন না চাইয়াই দুই থালা ভর্তি পাইয়াছে। ভরপেটে ঘুমানোর জন্য চাওয়া মাত্র একটা রাজকীয় প্রাসাদ পাইল। পাশেরজন পাইল দুইটি। একটাতে ঘুমায় আরেকটাতে টয়লেট করে। এবার সেই আদিম ইচ্ছা - একটা সুন্দরী বউ দরকার। দীপিকা পাড়ুকোনকে পাইল। পাশের জনের বাম কাঁধের নীচে ডুপ্লিকেট দীপিকা আর ডান কাঁধের নীচে ক্যাটরিনা কাইফ শিলা কি জওয়ানি করতে আছে। আরতো সহ্য হয় না। বলল - আল্লাহ তুমি আমার একটা বাড়ী ও একটা বউ তুলিয়া নাও। তার গেল একটা করে কিন্তু পাশেরটার দুইটা করে। এবার বলিল - আল্লাহ আমার একটা হাত, একটা পা ও একটা চক্ষু তুলিয়া নাও। আমিতো তবু ভিক্ষা করে চলতে পারব, কিন্তু ঐ ব্যাটা তো পুরা বাতিল মাল! কি শান্তি! সুখ সুখ লাগে!।

একবার দোযখ বেহেস্তের মধ্যের পার্টিশন ওয়ালটা ভাইঙ্গা গেল। হগল দোযখ বাসী বেহেস্তে চইলা গেল এক বাঙ্গালী বাদে। আল্লাহতালা আইসা আবার হগল দোযখ বাসীকে বাইছা বাইছা দোযখে ফেরত পাঠাইলেন আর খুশী হইয়া দোযখ বাসী বাঙ্গালীদের শাস্তি কিছুটা মাফ কইরা দিলেন। যাবার সময় ভাল কইরা লক্ষ কইরা দেখেন - বাঙ্গালীরা হগলে একজন আরেকজনের কাপড় পিছন থাইকা টাইনা ধইরা রাখছে।

বুঝলেন ভাই, ঐ লাভলু আর মোতালেবে একজনে আরেকজনের সাথে রাইগা চেয়ারে উইঠা লাফায়। আর কোন কারণ নাই।

আমার সাথের একজন খোঁচা দিল - আসলে আপনার সাকিব, মুশফিক, তামিমরা তো হাফপ্যান্ট হইয়া গ্যাছে সেই কারণে আপনার সহ্য হয় না।

আজকে দেলোয়ার ভাই সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে। প্লেয়ারদের বকাঝকা তো করলেনই না, উল্টো বললেন ভাই এগার জনে কি করব ষোল কোটি লোক এক না হইলে।

আমার বন্ধুটি বলল ষোল কোটি মানুষরে কি স্টেডিয়ামে ঢুকানোর ধান্ধা করতেছেন নাকি!

ভাইরে বাঘ গাছে উঠে না, উঠতেও পারে না। কিন্তু গাছের নীচ থাইকা যখন হুংকার মারে, দুই চারটা পশুপাখি ভয়েই মাটিতে পড়ে। বাঘ ধইরা খায়। এশিয়া কাপে এত রান করার পরে যখন ঐ পাঠানের বাচ্চাটা আমগো পিটাইতেছিল, হগলে - মাইরা লা, খাইয়া লা কইরা একসাথে চিল্লাইলে ঐ পাঠানের বাচ্চা প্যান্টের লগে মাঠ ভিজায় না ফেললে এই দেলোয়ারের নাম বদলাইয়া সালোয়ার রাখতাম।

বলতে বলতে দেলোয়ার ভাই দোকান প্রায় বন্ধ করে ফেলেছে। আমি বললাম বুঝছি আজকে দেলোয়ার ভাইয়ের মনটা আসলেই খারাপ। তা না হইলে চৌদ্দ বছর থেকে চা খাই, আজকেই প্রথম একবার না দুই দুইবার চিনি ছারা চা দিলেন । দেলোয়ার ভাই খুবই অপ্রস্তুত হয়ে বললেন আবার চুলা ধরাই। আমি বললাম না থাক উল্টো দিকের গলির মাথার দোকানে খাব। দেলোয়ার ভাই বললেন চলেন আমি তো ঐদিক দিয়েই বাড়ীতে যাব, গলিটাও অন্ধকার, আমার সাথে টর্চ আছে।

সবাই রওনা করলাম। আমার ঐ বন্ধু আরেকবার খোঁচা দিল দেলোয়ার ভাইকে - হ্যাঁ, দোষ তো সব এগারজন কম ষোল কোটি মানুষের।

আজ দেলোয়ার ভাই কুল। গলিতে ঢুকেছি তাই টর্চটা অন করে বললেন - আমার একটা বইন শখ কইরা বিদেশী পাখী আনল। কত কি যে খাওয়াইল, একজনের কথা শুইনা সমুদ্র থাইকা ফেনা আইনা পর্যন্ত খাওয়াইল। তারপরও পাখী ডিম পাড়ে না। বইনটারও তিন চার বছর হয় বিয়া হইছে বাচ্চা হয় না। জামাইটা বহুত বালা। আল্লাহর রহমতে বইনটার পেটে বাচ্চা আইল পরে পাখীগুলাও যে ডিম পাড়া শুরু করল আইজ পর্যন্ত বন্ধ হয় নাই। আমরা দেশের মালিক, দেশটারে মনে ধরলে এগার জনের এমনিতেই মনে ধরব।

আমার ঐ ফাজিল ফ্রেন্ডটা বলে বসল - আইজকে মনে হয় দেলোয়ার ভাই বিড়ির লগে কিছু একটা মিশায় খাইছে। দেলোয়ার ভাইয়ের টর্চের আলোটা হটাৎ এদিক ওদিক নড়াচড়া শুরু করলে আমরা থেমে পরলাম। এভাবে তো হাটা যায় না। কি দেলোয়ার ভাই টর্চ না আপনি, কে বিগড়াইল?

জানেন ভাই, এই লাভলু আর মোতালেব একজন আরেকজনের উপর রাইগা চেয়ারে উঠে। বাংলাদেশ জিতলে খুশীতে দুইজনই লাফাইয়া দুইটা দুইরে আলাদা কইরা রাখে, কিন্তু কেউই চেয়ারে আর উইঠা লাফাইতে পারে না। কখনই একসাথে লাফাইয়া দুয়ে দুয়ে চার করতে পারে না। আমরা এবার স্তব্ধ। একটু থেমে বললেন - বেয়াদবি নিয়েন না ভাই, টর্চের আলোটা ইচ্ছা কইরাই লাড়াইছি। আলোটা তো রাস্তার উপরেই ছিল, তারপরেও তো কেউই হাটতে পারলেন না। মনটারে একবার বাংলাদেশ আরেকবার এন্টি ইন্ডিয়া পাকিস্তান কইরা সাপোর্ট হয় না গো ভাই। সম্পূর্ণ নিস্তব্ধতা। একটা ঝিঝি পোকা ডাকল মনে হয়। টর্চের আলোয় আরও দুই তিনজন আমাদের সাথে জয়েন করেছে। একটা কুকুরও আমাদের পিছু হাঁটছে। সামনেই লাইট পোস্টটা দেখা যাচ্ছে। ওটার পরেই ডানদিকে আমাদের গন্তব্য স্থল। একজন আরেকজনের নিঃশ্বাসের আওয়াজ পাচ্ছি। মনে হচ্ছে দেলোয়ার ভাই নিজেই বাংলাদেশ আর আমরা তার পেছনে শিক্ষানবিশ বাংলাদেশী সাপোর্টার। দেলোয়ার ভাই তার শেষ কথাটা বললেন -

যেইদিন মোতালেব লাভলু দুইজনে একলগে চেয়ারে উইঠা লাফাইব আর ঐ দিনই বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড কাপটা জিতব। এই দেশের বাতাসে শ্বাস নিয়া, এই দেশের মাটির ধানের ভাত খাইয়া বাঁইচা আছি। এই ঋণ একদিন সবাইরে শোধ করতেই হবে।

লাইট পোস্টটা পেরিয়ে দেলোয়ার ভাই টর্চটা বন্ধ করে আজকে আসি ভাই বলে এগিয়ে যান। ল্যাম্পপোস্টের সামনেই ছোট্ট একটা সবজী দোকানের কুপির আলোয় সামনে হেটে যাওয়া দেলোয়ার ভাইয়ের ছায়াটা রাস্তা, ছয় তলা বিল্ডিং পেরিয়ে আকাশের চাঁদটা যেন ছুঁয়ে যায়। মেঘাচ্ছন্ন আকাশে দেলোয়ার ভাইয়ের মাথার উপরের উজ্জ্বল চাঁদটাকে আকাশটার সাথে মিলে সাদা কালো বাংলাদেশের পতাকা মনে হয়। আমরা তিনজন মানুষ কেউ কারো দিকে তাকাতে পারছি না, কিন্তু সবাই যেন সবাইকে দেখতে পাচ্ছি। কানের পর্দায় কে যেন সজোরে হাতুড়ি পেটাচ্ছে আর ফলশ্রুতিতে সেই কথাটার প্রতিধ্বনি হচ্ছে মস্তিষ্কে বার বার -

এই দেশের বাতাসে শ্বাস নিয়া, এই দেশের মাটির ধানের ভাত খাইয়া বাইচা আছি। এই ঋণ একদিন সবাইরে শোধ করতেই হবে।

- মুসাব বিন খন্দকার


মন্তব্য

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

অসাধারণ, মুসাব ভাই। দুর্দান্ত লিখেছেন। লেখায় কয়েক জায়গায় একটু তাল কেটে গেছে, কিন্তু পুরো লেখাটা এত ঝরঝরে যে একটানে পড়ে গেলাম। আর শুধু পড়েই শেষ নয়, পড়ার পরে ভাবায়ও। কয়েকটা লাইন তো বাঁধিয়ে রাখার মত - "এই দেশের বাতাসে শ্বাস নিয়া, এই দেশের মাটির ধানের ভাত খাইয়া বাইচা আছি। এই ঋণ একদিন সবাইরে শোধ করতেই হবে।"

"যেদিন বাংলাদেশের খেলা হয় তার পরের দিন হয়ত তার বাচ্চারা শুধু লবণ ভাত খেয়ে থাকে। তাতে তার কোন আফসোস আছে বলে মনে হয় না" - পড়ার পর থম মেরে ছিলাম কিছুক্ষণ।

মাঝে মাঝে কয়েকটা হিউমার দুর্দান্ত হয়েছে - "লুঙ্গীর আবার পিছনের পকেট! ", "ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সব জায়গায় কোমরের বল বিয়ারিং ঠিকমত না কাজ করলে কোন লাভ নাই।"

আর সবচেয়ে ভালো লেগেছে ঐ প্যারাটা - "হগলে - মাইরা লা, খাইয়া লা কইরা একসাথে চিল্লাইলে ঐ পাঠানের বাচ্চা প্যান্টের লগে মাঠ ভিজায় না ফেললে ---"

সত্যিই তো, ভালো খেলুক, খারাপ খেলুক, খেলছে আমারই দেশ। আমি যদি সাথে না থাকি তো কে থাকবে? আর নিজের দেশ খেললে অন্য দেশকে সমর্থন করবো কেন?

কয়েকটা টাইপো ছিল - সণ্মন্ধে -> সমন্ধে, লছ->লস, চিনি ছারা->চিনি ছাড়া, হটাৎ-> হঠাৎ।

সচলে আপনার প্রথম লেখা, স্বাগতম। আশা করি আপনার কাছ থেকে আরো চমৎকার সব লেখা পাবো আমরা।

এই লেখায় পাঁচতারা দাগিয়ে গেলাম।

____________________________

মেঘলা মানুষ এর ছবি

লেখা ভালো লাগলো, কিছু ভেতরের 'সত্য' উঠে এসেছে।
আপনার লেখার হাতও চমৎকার, আরও লিখবেন -দাবি জানিয়ে গেলাম।

শুভেচ্ছা হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনাদের অনুপ্রেরনা আমাকে উৎসাহিত করবে নিশ্চিত আরো ভালো কিছু লিখতে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। চেষ্টা করব সচলায়তনে লিখে নিজেকে আরো পরিপক্ক করে তুলতে এবং আপনাদের মন্তব্য এ ব্যপারে আমাকে সাহায্য করবে নিশ্চিত।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথম লেখায় অভিনন্দন। লেখাটি স্তব্দ করে দিয়েছে অনেকক্ষন। লেখতে থাকুন, এমন বোধের লেখা সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়লে নিজ দেশে বসে ভিন দেশী পতাকা নিয়ে কাউকে স্টেডিয়ামে দেখার কষ্ট না পাবো না। শুভেচ্ছা নিরন্তর। হাসি

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার সাথে একমত পোষণ করছি। ধন্যবাদ আপনাকে।

এক লহমা এর ছবি

সচলায়তনে স্বাগতম। প্রথম লেখা হিসেবে খুব ভালো লেখা হয়েছে। পরের লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

হাসিব এর ছবি

লেখা ভালো হয়েছে। কিন্তু এটা কি গল্প হিসেবে লিখেছেন নাকি নিজের দেখা কিছু ঘটনা, কথা ব্লগ হিসেবে লিখেছেন?

অতিথি লেখক এর ছবি

গল্প হিসেবেই লিখেছি। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাবলীতে মনে হয়েছে যে দেশের হয়ে শতভাগ মানুষের শতভাগ দেবার ব্যপারে কিছু প্রতিবন্ধকতা সবার অগোচরে সৃষ্টি হয়েছে। দেলোয়ার ভাইকে কাল্পনিক একজন প্রকৃত বাংলাদেশী সাপোর্টার হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছি। আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

মুসাব বিন খন্দকার - হ্যাটস্‌ অফ্‌।
ভালো থাকবেন।

---------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।