দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনে তথ্য ও প্রযুক্তির সুবিধা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ১৪/০৫/২০১৪ - ১২:০০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মত নতুন নতুন দ্বার উন্মোচন হবার ফলে একদিকে যেমন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষকে তা স্বনির্ভর করেছে অন্যদিকে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে। উন্নত কিংবা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দৃষ্টিমান ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের মধ্যে যে ব্যবধান ছিল, প্রযুক্তিই পেরেছে সেই ব্যবধানটুকু কমিয়ে আনতে। আমরা প্রথমে জানার চেষ্টা করি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নিয়ে বিশ্বে কি কি ধরণের কাজ হচ্ছে। খুব বেশি দূরে যাব না, আমরা যদি আমাদের এই এশিয়া মহাদেশের তাকাই তাহলেই দেখতে পাব ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ সমূহে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক নির্দিষ্ট গাইড লাইন রয়েছে। এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ পাকিস্থানে রয়েছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্যআইসিটি স্ট্যান্ডার্ডগাইডলাইনএবংপ্রতিবন্ধী মানুষের জন্য যেন্যাশনাল পলিসি ২০০২আছে তাতেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে প্রতিবন্ধী মানুষের প্রবেশগম্যতা নিয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে। তাছাড়াও হংকং ও চায়নায় রয়েছে “২০০৪ ডিজিটাল ২১ স্ট্র্যাটেজী”এবং“পলিসি অন ব্রিজিং দ্যা ডিজিটালডিভাইড”।এইএশিয়া মহাদেশে ১১টি দেশের সরকার ইশারা ভাষা এবং ১০টি দেশের সরকার ফিঙ্গার ব্রেইলকে যোগাযোগের জন্য অন্যতম আদর্শ রূপ হিসেবে ব্যবহার করে। জাপান ও থাইল্যান্ডে দৃষ্টি ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আদর্শ টেকটাইল সাইনল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করা হয়। অষ্ট্রেলিয়াতে যোগাযোগের জন্য অডিও রেকর্ডিং-কে আদর্শ রূপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পনেরটি দেশে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটার্স, ব্রেইল ট্রান্সস্ক্রাইবাকর্স, ফিঙ্গার ব্রেইল ইন্টারপ্রেটার্স এবং হিউম্যান রিডারস-কে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

আমাদের দেশে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ইতিহাসের দিকে যদি তাকাই,তাহলে আমরা দেখতে পাই ১৯৭৩-১৯৭৪ খ্রীং দিকে ন্যাশনাল ফেডারেশান ফর দ্যা ব্লাইন্ডনামে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ম্যানুয়াল টাইপ রাইটারচালনা প্রশিক্ষণ দিতো।১৯৯৮সালে হেলেন কিলার ইন্টারন্যাশনালনামে একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারী প্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সাত দিনের একটি কম্পিউটার কীবোর্ড ওরিয়েন্টেশন-এর আয়োজন করে। ঐ একই বছরের মাঝামাঝি সময়েনরয়েজিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্যা ব্লাইন্ড এন্ড পারশিয়াল সাইটেটনামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রথমবারের মতকম্পিউটার প্রশিক্ষণের এর আয়োজন করে। এরপর বাংলাদেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। ২০০০ সালের পরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য দীর্ঘ মেয়াদীকম্পিউটার প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। সেই সব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষ সরকারী, বেসরকারী ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় দক্ষতার সাথে চাকরী করছে। সেই প্রথম থেকে ২০১০ খ্রীং পর্যন্ত দৃষ্টি প্রতিবন্দী মানুষ কেবল মাত্র ইংরেজীতে কাজ করতে পারতো। কারণ বাংলায় কাজ করার জন্য উপযোগী বাংলা টেক্সট টু স্পীচ সফটওয়্যার পর্যাপ্ত ছিল না। ২০০৯ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের সিআরবিএলপি এর উদ্যোগে “কথা”নামে একটি টিটিএস তৈরি করা হয়। কিন্তু এটা প্রাথমিক পর্যায়ের সফটওয়্যার হওয়ায় তা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদা সম্পূর্ণরূপে পূরণ করতে পারেনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালে বাংলাদেশ ভিস্যুয়েলী ইম্পেয়ার্ড পিপলস সোসাইটি (ভিপস) একটি উপযোগী টেক্সট টু স্পীচ সফটওয়্যার এর খোঁজে উপযোগী প্রতিষ্ঠানের সন্ধান শুরু করে। ২০১১ সালেবিজ্ঞানও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের আর্থিক সহযোগীতায় শাহাজালাল বিক্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ এবংবাংলাদেশ ভিস্যুয়েলী ইম্পেয়ার্ড পিপলস সোসাইটি (ভিপস) যৌথভাবে ডঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর নেতৃত্বে (অধ্যাপক) ও রুহুল আমিন সজিব (সহযোগী অধ্যাপক) এর তত্তাবধায়নে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য “মঙ্গলদ্বীপ” নামে একটি স্ক্রিন রিডার সফটওয়্যারএবং সুবচন নামে একটি টেক্সট টু স্পীচ সফটওয়্যার তৈরীর লক্ষ্যে রিছার্চ এর কাজ শুরু হয়।২০১২ সালে ৬ই অক্টোবর বাংলাদেশে প্রথমবারের মতবাংলায় বাইল্যাঙ্গুয়াল স্ক্রিন রিডার সফটওয়্যার“মঙ্গলদ্বীপ”এর উদ্ভোধন করা হয়।সফটওয়্যারটি দিয়ে বাংলা ও ইংরেজী উভয়ে ভাষাতে কাজ করা যায়। কিনতু সফটওয়্যারটি শুধু মাত্র রিছার্চ প্রজেক্ট হবার কারণে তা ব্যবহার উপোযুগী করে গড়ে তোলার প্রয়োজন দেখা দেয়। বর্তমানে টিম ইন্জিন লিমিটেড নামে একটি কম্পানী বাংলা টেক্সট টু স্পিচ তৈরীর কাজ শুরু করে। এছাড়াও বাংলা বিজয় কীবোর্ড এর উদ্ভাবক মোস্তফা জব্বর ২০০৭ সালে “বিজয়ব্রেইল” নামে একটি টেক্সট টু ব্রেইল সফটওয়্যার তৈরী করেন। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান এর বিভাগীয় প্রধান ডঃ আক্তারুজ্জামান ২০১১ সালে “বাংলা ব্রেইল ট্রান্সলেটর” নামে আরেকটি টেক্সট টু ব্রেইল সফটওয়্যার তৈরী করেন। একই বছরে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ এর কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের একদল তরুণ “থার্ড আই” নামক একটি মোবাইল সফটওয়্যার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষের জন্য তৈরী করেন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদেরব্রেইল সহজলভ্যকরনেতথ্য ও যোগাযোগ প্রযুত্তি ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি হয়েছে সেটা হল ডঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার নিজ উদোগে দৃষি প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টারকে রুপান্তর করেছে ব্রেইল প্রিন্টারএ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুত্তিতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষেরউপোযুগী সফটওয়্যার কিংবা উপোযুগী উপকরণ আবিষ্কারের বা তৈরীর কাজ থেমে নেই। একদিকে যেমন শাহাজালাল বিক্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরএকজন ছাত্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের সহজ ও নিরাপদ চলাচলের জন্য উপকরণ তৈরী করেছে অন্যদিকে টিম ইন্জিন লিমিটেড তৈরী করছে বাংলা ওসিআর সফটওয়্যার। এখন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষ খুব সহজে্ বাংলা বই স্কান করে পড়তে পারবে। শুধু তাই নয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষকে সমাজের মূলস্রোতধারায় একভূত করার লক্ষ্যে টিম ইন্জিন লিমিটেড তৈরী করছে কিছু যুগান্তকারী সফটওয়্যার। তারমধ্যে যেমন রয়েছে আইপি ফোন এবং পিএবিএক্স রিডার, মোবা্ইল স্কিন রিডার, টাকা চিহ্নীত করণ সফটওয়্যার প্রভৃতি। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য তৈরী করছে ডেজি ফর্মেটে বিভিন্ন অডিও বই। এখন অনেক সভা-সেমিনারে ওয়েব অ্যাক্সেসিবিলিটির কথা বলা হচ্ছে। এসব কিছুই করা হচ্ছে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে তাদের প্রবেশাধীকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। তবুও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষ এর সুফলটুকু পাচ্ছে না। আর না পাওয়ার পিছনের কারণগুলো এই রকম যে-এদেশের সফটওয়্যার ডেভেলপারও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অ্যাক্সেসিবিলিটি সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই। এদেশের মানুষের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আইটি চাহিদা সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই। প্রযুক্তিগত উন্নয়নে অর্থের স্বল্পতা একটা বড় ধরণের বাঁধা। তাছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উপযোগী যন্ত্রপাতির দাম অনেক বেশি। সরকারী আইটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রশিক্ষনের কোন ব্যবস্থা নেই। এছাড়াও সরকারী প্রশিক্ষনকেন্দ্রগুলোতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মত প্রশিক্ষিত কোন ট্রেইনার নেই। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উপযোগী আইসিটি বিষয়ক ধারণা নেই। আমাদের দেশে ওয়েব অ্যাক্সেসিবিলিটি কোন গাইডলাইন নেই। এসকল বাঁধার কারণে এদেশের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষ তথ্যপ্রযুক্তির সুফল পাচ্ছেনা।
বাংলাদেশ ২০০৮খ্রী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার বিষয়ক যে আন্তর্জাতিক সনদ আছে তাতে সাক্ষর ও অনুসাক্ষর করে। তাতে ৯ এবং ২১ নং ধারা তথ্যপ্রযুক্তি ও উপযোগী প্রযুক্তি সহজলভ্যতা বিষয়ক সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে। আমরা আশা করি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এসকল বাঁধা দুর হয়ে তার সুফল আমরা পাব। আমরা আরও আশা করি টিম ইন্জিন লিমিটেডের মত অন্যান্য প্রা্ইভেট কম্পানী ওআইটি ফার্মগুলো তাদের বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রযুক্তি উন্নয়নে।

এ এস এম আশিকুর রহমান অমিত
ডিজেবিলিটি একটিবিষ্ট

ছবি: 
24/08/2007 - 2:03পূর্বাহ্ন

মন্তব্য

মেঘলা মানুষ এর ছবি

জনাব অমিত, মনে হয় এটা সচলে আপনার প্রথম লেখা।
স্বাগতম!

কিছু পরামর্শ দিচ্ছি:
১। লেখার পর প্রিভিউ দেখে নিন, আপনার প্রথম প্যারার পর আর প্যারা ব্রেক আসে নি। বানানের প্রতি খেয়াল রাখুন।
২। সচলয়াতনে লেখার সাথে ছবি যোগ করার অপশন আছে, আর সেটা হতে পারে লেখার সাথে প্রাসঙ্গিক একটা কিছু। আপনি সচলে প্রকাশিত অন্য লেখাগুলো পড়ে দেখুন, সেখানে কি কি ছবি যাচ্ছে। নিজের ছবি দেবার প্রয়োজন নেই।

বাংলা বিজয় কীবোর্ড এর উদ্ভাবক মোস্তফা জব্বর

-এটা একটা ভুল তথ্য। জনাব জব্বার এটা বাজারজাত করেছিলেন, উনি উদ্ভাবক না। এটার প্রোগ্রাম করার জন্য উনি প্রোগ্রামার নিয়োগ করেছিলেন তাঁরাই কাজটা করে দিয়েছিলেন।

শুভেচ্ছা হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ। হ্যাঁ সচলে এটা আমার প্রথম লেখা। কিন্তু সচল ওয়েব সাইডটা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য সম্পূর্ণ এক্সেসেবল নয় বিধায় আমাকে অন্যের সাহায্য নিয়ে পোষ্ট করতে হয়েছে, তাই প্রিভিয়ু দেখতে পারি নি। আমার ভূলগুলো ধরিয়ে দেবার জন্য কৃতঙ্গতা। আর আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হবার কারণে লেখার পর বানান চেক করতে পারি নি। আশা করি আগামীতে আরও সচেতন থাকব।

সত্যপীর এর ছবি

চমৎকার। আরো লিখবেন, এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা জরুরী। কার্যসূত্রে অ্যাক্সেসিবল ওয়েব সফটওয়্যারের সাথে জড়িত থাকতে হয়, স্পিচ রেকগনিশন ফন্ট সাইজ লেয়াউট ইত্যাদি নিয়ে প্রফেশনালদের কাজ করতে দেখি। অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়।

যেমন আমাদের সচলায়তন নিয়েই বলা যেতে পারে। মডুবৃন্দ ভেবে দেখতে পারেন অপশন চালু করা যায় কিনা যেখানে পাঠক ফন্ট সাইজ বড় করে দেখতে পারবেন প্রয়োজনে। কিম্বা নাটক আবৃত্তিতে জড়িত সচল/হাচল/পাঠকেরা ভেবে দেখতে পারেন সচলের পোস্ট নিয়ে অডিও পোস্ট দেওয়া যায় কিনা, তাহলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরাও সচলায়তনে নিয়মিত পোস্টের স্বাদ নিতে পারবেন। তাছাড়া সচলের লেখকেরা অডিও/ভিডিও ব্লগ নিয়েও কাজ করতে পারেন।

আপনার ডিজেবিলিটি অ্যাক্টিভিটি নিয়ে আরো লিখুন। বানানের প্রতি যত্নবান হবেন ভবিষ্যতে। আর ছবিটবির দরকার নাই হাসি

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। সচলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের এটাই মনে হয় প্রথম লেখা। তাই সচলে একাউন্ট করা থেকে শুরু করে লেখা পোষ্ট করতে গিয়ে আমি দারুণ এক্সেসেবিলিটির বাঁধার সম্মুখীন হয়েছি, বিধায় আমাকে অন্যের সাহায্য নিয়ে পোষ্ট করতে হয়েছে। আর বাংলা ভাষায় ভাল মানের বাংলা টেক্সট টু স্পিচ না থাকায়, বানানগুলোতে ভূল রয়ে গেছে। কারণ অন্য জায়গায় লিখার পর কপি করে আনতে হয়েছে। আর ছবির ব্যাপারটা আমার মনে থাকবে। কারণ ব্যাপারটা আমি বুঝতে পারি নি। আপনাদের উৎসাহ ও পরামর্শের জন্য কৃতঙ্গতা।

সত্যপীর এর ছবি

চমৎকার। লিখতে থাকুন। আপনার পোস্টে ভবিষ্যতে কেউ বানান নিয়ে কিছু বললে আমি গিয়ে কান মলে দিয়ে আসব।

লিখিত পোস্ট আসুক। সাথে অডিও পোস্টও দিতে পারেন। যা লিখতে চান তাই রেকর্ড করে ইউটিউবে আপলোড করে এখানে পোস্ট হিসেবে দিতে পারেন কিন্তু।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

পরামর্শ ও উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ। আশা করি ভবিষ্যতে আমার ভূলগুলো ধরিয়ে দিয়ে ভাল মানের লিখা দিতে সাহায্য করবেন।

মেঘলা মানুষ এর ছবি

নিজের অজান্তে আঘাত দিয়ে থাকলে দুঃখিত, আমি জানতাম না যে অন্য একজন আপনাকে পোস্টের বিষয়ে সহযোগিতা করেছেন। এক্ষেত্রে, আমাদের কথাগুলো তাঁকেই বলা, আপনাকে নয়।

ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আ-রে-রে ভাই! আঘাত পাই নি। আমি শুধু কারণটা ব্যখ্যা করেছি আর কিছুই না। আপনারা যদি পরামর্শ না দেন তাহলে আমার কোথায় কোথায় ভূল হচ্ছে তা বুঝবো কি করে? ভাল মানের লেখা লিখতে আপনাদের পরামর্শ আমার খুবই দরকার। আশা করি আমার ভূলগুলো ধরিয়ে দিয়ে ভাল মানের লিখা পোষ্ট করতে সাহায্য করবেন।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

মনে হয় আমি এই প্রথম কোন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের লেখা পড়ছি। আপনি অন্যের সাহায্য নিয়ে হলেও যে এরকম মানের একটা লেখা তৈরী করতে পেরেছেন তাতে আমি যতটা মুগ্ধ হয়েছি তার চেয়ে বেশী আশাবাদী হলাম। আপনি আরো লিখবেন পড়বেন। আমরা আশা করবো উপযুক্ত মানের বাংলা সফটওয়ারও একদিন ঠিকঠাক কাজ শুরু করবে আমাদের দেশে। তখন আর পোষ্ট পড়তে, লেখালেখি করতে আপনাকে পরনির্ভরশীল থাকতে হবে না।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকে বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ। আপনার জানার জন্য বলছি আমার লিখাটি লিখতে অন্যের সাহায্য নিতে হয় নি। আমি স্ক্রীন রিডার সফটওয়্যার ব্যবহার করে কম্পিউটারে লিখতে বা ইউনিকোডের লেখা পড়তে পারি। কিন্তু ভাল মানের বাংলা টেক্সট টু স্পিচ না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়। শুধু মাত্র পোষ্ট করার জন্য অন্যের সাহায্য নিতে হচ্ছে। আমি গত আট/নয় মাস যাবৎ প্রতিদিনই সচলের লিখা পড়ে আসছি। যদি সচলায়তনের মডুবৃন্দ আমাদের কথা চিন্তা করে ওয়েব সাইটটাকে একটু এক্সেসেবল করেন তাহলে আমার মতো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সচলায়তনের লেখা পড়তে আগ্রহী হবে, আর আমরা কারও সাহায্য ছাড়াই যেকোন পোষ্ট দিতে পারব।

নীলকান্ত এর ছবি

অডিও ব্লগ প্রকাশ করুন। আমার মতে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারাটাই গুরুত্বপুর্ণ, মাধ্যম যা খুশি হোক না কেন।

সচলে স্বাগতম, একে অন্যের হাত ধরে আমরা এগিয়ে যাই, তবু এগিয়ে যাই। হাসি

ভালো থাকবেন।


অলস সময়

অতিথি লেখক এর ছবি

পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ। আমি অডিও পোষ্ট থেকে লিখা পোষ্ট করতে বেশি আরাম বোধ করব। কারণ আমি চাই সবাই যেভাবে লিখে সেই ভাবেই লিখতে। আর আপনি বলুন পড়তে যত মজা লাগে ঠিক একই মজা কি শুনতে লাগে? আপনিও ভাল থাকবেন।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এই লেখাটা সচলের একটা মাইলফল্ক বলে গণ্য হবার যোগ্য। আমি নিজে যন্ত্র প্রকৌশলী হবার কারণে বুঝতে পারি দৃষ্টিহীনদের অ্যাক্সেসেবিলিটি নিয়ে আপনি যে অভিযোগটা করেছেন, সেটা প্রায় সর্বাংশে সত্য। মন খারাপ

ভালো থাকবেন, নিয়মিত লিখবেন। আপনার নিয়মিত লেখায় আরো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা উৎসাহ পাবে ব্লগোস্ফিয়ারে যুক্ত হবার।

অতিথি লেখক এর ছবি

চেষ্ঠা করব লেখার। অশেষ ধন্যবাদ।

তারেক অণু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ অমিত ভাই লেখাটির জন্য। আশা করছি আপনার নতুন লেখা প্রায়ই পাব। আর স্যালুট আপনাকে জীবনে এগিয়ে চলার জন্য, অন্যকে উৎসাহিত করার জন্য।

কদিন আগেই জাফর স্যারের আঁখি এবং আমরা কজনা নামের একটি বই পড়ি, তাতে আঁখি নামের এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কিশোরীর জগত এবং তাঁর বন্ধুদের কথা স্যার খুব মমতা নিয়ে লিখেছেন। এমন মানুষদের জন্য শ্রদ্ধা

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ। নিয়মিত লিখা দেবার চেষ্ঠা করব।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

অসাধারণ, আপনি যে এত বাঁধা পেরিয়ে লিখছেন সেই বিষয়টাই। আশা করব যার যার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে সবাই এইসব অ্যাক্সিসিবিলিটি নিয়ে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করবেন। আর আপনি লিখে যান, কিছু ভুল চুক থাকবেই, আমরা যারা দৃষ্টিশক্তির অধিকারী তারাই অনেক বানান ভুল করি, প্যারাগ্রাফ সেটিংস ঠিক থাকে না, সেই হিসাবে দেখলে আপনার লেখা নির্ভুলই বলা যায়। কিন্তু আপনি নিশ্চিতই আরও নির্ভুল লিখবেন, কারন আপনার সেই চেষ্টা আর ইচ্ছাটা আছে। ভাল থাকুন অনেক, দেশে আসলে আপনার সাথে পরিচিত হবার ইচ্ছা থাকল।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

উৎসাহের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। দেশে আসলে অবশ্যই দেখা করবেন। আমার ফেসবুক আইডি হলো

, আর ই-মেল আইডি হলো

। আশা করি দেখা হবে।

বোকা মেঘ এর ছবি

আপনাকে সাধুবাদ জানাবার ভাষা আমার নেই।
ভাল থাকবেন।
নতুন লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ! চেষ্ঠা করবো দ্রুত লেখা দেবার জন্য।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

অমিত ভাই, আপনাকে অসংখ্য শ্রদ্ধা আর সালাম। আশা করি আপনার কাছ থেকে আরো লেখা পাবো। আর আমরা কোনভাবে সহযোগিতা করতে পারলে খুশী হবো।

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতঙ্গতা। আশা করি পরামর্শ দিয়ে ভাল মানের লেখা লিখতে সাহায্য করবেন, আর যদি সম্ভব হয় তবে এই ওয়েব সাইডটি আমাদের জন্য উপযুগী করার ব্যবস্থা করবেন। আমি তো নতুন লিখছি তাই কোথায় ব্যপারটি নিয়ে অনুরোধ করব বুঝতে পারছি না। আপনারা তো পুরানো লেখক তাই বারবার আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি। মনে কিছু করবেন না পিলিজ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।