গত পর্ব শেষ করেছিলাম সিলিকনের বিকল্প কি করে সম্ভব-সেই প্রশ্ন রেখে ----
তাহলে তারপর থেকেই শুরু করা যাক।
ইলেক্ট্রন পরিবাহিতাই যখন আসল কথা তখন সিলিকনের বিকল্প হিসেবে পরিবাহি বস্তু যেমন লোহা, তামা ইত্যাদি তালিকার উপরেই থাকবে আর অপরিবাহী বস্তু যেমন কাঠ, কাঁচ ইত্যাদি তালিকায় থাকবেই না-এটাই তো স্বাভাবিক। ইলেকট্রন প্রবাহ পরীবাহী বস্তুগলোর সহজাত বৈশিষ্ট্য; মানে কিনা, উপযুক্ত ভোল্টেজ পার্থক্য পেলেই ইলেক্ট্রনগুলো সুড়সুড় করে লাইনে চলে আসে। কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য সাধনে কেবলমাত্র পরিবাহিতাই শেষ কথা নয়, বরং পরিবাহিতা নিয়ন্ত্রণ করাটাই আসল। এসব পরিবাহি বস্তুগুলোর মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ইলেকট্রনগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করাটা একরকম অসাধ্যি; কেননা, ঐ যে বললাম, ইলেকট্রন প্রবাহ পরীবাহী বস্তুগলোর সহজাত। তবে, এই পরিবাহিতা আর তার সাথে চুম্বকের তেলেসমাতি দিয়েই কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহার্য সব বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র যেমনঃ ফ্যান ইত্যাদি চলে। এখানে একটু বলে নিই, মোটাদাগে, ইলেক্ট্রিক্যাল আর ইলেকট্রনিক্স নামে পদার্থবিজ্ঞানের যে দুটো শাখা আছে, সে শাখা দুটোর সীমানা নির্ধারক কিন্তু এই নিয়ন্ত্রিত-পরিবাহিতা। আর আপনার তো জানাই যে, আমাদের গল্পটা পরিবাহিতার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে, মানে কিনা ইলেক্ট্রনিক্সের গল্প।
বুঝতেই পারছেন, যেহেতু ভিন্ন ভিন্ন বস্তু ভিন্ন ভিন্ন রকম পরিবাহিতা দেখাচ্ছে, তাহলে পরিবাহিতার মাত্রা কতটুকু হবে সেটা নিশ্চয় বস্তুটার মধ্যকার কোন ধর্মের কারণে হয়। তাহলে, সিলিকনের বিকল্প খুঁজে পেতে হলে আমাদের করণীয় একটাই-বস্তুর ঐ ভিতরকার ধর্মটা খুব ভালভাবে জানতে-বুঝতে হবে সবার আগে। আসুন তাহলে লেগে পরি!
যেকোন বস্তুকে ছোট করতে করতে অনু-পরমানু-তারেকানুর পর্যায়ে নিয়ে গেলে আপনি দেখবেন ইলেক্ট্রনগুলো প্রোটন আর নিউট্রনকে বৃত্তের কেন্দ্রে রেখে বোঁ বোঁ করে ঘুরছে। বৃত্তাকারে ঘুরতে থাকা এই ইলেকক্ট্রনগুলো কিন্তু ঋণাত্বক, বৃত্তের কেন্দ্রে থাকা প্রোটনগুলো সমান মানে ধনাত্বক; আর নিউট্রন বেচারা নিউট্রাল। মানে কিনা, এই সমান মানের ধনাত্বক আর ঋণাত্বক ইলেক্ট্রন-প্রোটন মিলেমিশে হয়ে যায় বৈদ্যুতিকভাবে শুন্য। এই না হলে আর রক্ষা হত! যে কোন বস্তু ছুঁলেই তখন বৈদ্যুতিক শকটা খেতাম না আচ্ছামত!
তাহলে বোঝাই যাচ্ছে, কোন বস্তু যেহেতু বৈদ্যুতিকভাবে শুন্য, তাহলে তার মধ্যকার এই বনবন করা ইলেকক্ট্রন ১টা না হয়ে ২টা হলে প্রোটনও হতে হবে ২টা। এভাবে, ৩টা ইলেক্ট্রনের জন্য ৩টা প্রোটন, ৪টার জন্য ৪টা ইত্যাদি। নিউট্রনও অবশ্য 'প্রেস্টিজ' বজায় রাখতে ইলেকট্রন-প্রোটনের সাথে সাথে সংখ্যায় বাড়ে! সে যাক গে, যা বলছিলাম। এই কণাগুলোর সংখ্যাই নির্ধারণ করে কোনটা কোন বস্তু/পদার্থ। যেমনঃ সবচেয়ে সহজ ব্যবস্থা, মানে কেবলমাত্র ১ জোড়া ইলেকট্রন-প্রোটন থাকলে সেটা হাইড্রোজেন আবার এমনিকরে ৬ জোড়া ইলেকট্রন-প্রোটন থাকলে সেটা কার্বন ইত্যাদি। পর্যায় সারণীর নাম তো আপনি জানেনই। এই পর্যায় সারণীটা আসলে এই ইলেকট্রন-প্রোটন সংখ্যা অনুযায়ী বস্তুগুলোকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে সাজানো একট ছক। এই ছকের প্রথম সদস্য তাই অবশ্যই হাইড্রোজেন, তেমনি ৬ নম্বর সদস্য কার্বন ইত্যাদি। সিলিকন এই ছকে ১৪ নম্বর, মানে এর ১৪ জোড়া ইলেকট্রন-প্রোটন আছে। এখন বুঝতেই পারছেন, ইলেকট্রন-প্রোটন জোড়া এক এক করে বারে আর নতুন একটি বস্তু/পদার্থ তৈরী হয় আর তা ঐ পর্যায় সারণীর পরবর্তী জায়গাটাতে এসে বসে। এখন পর্যান্ত এই সারণীর সদস্য সংখ্যা ১১৭ টি; মানে কিনা, এই সমগ্র মহাবিশ্বে, হোক তা আপনার ঘরের বা হাজার আলোকবর্ষ দূরের কোন কিছু, তা এই কেবলমাত্র ১১৭টি বস্তুর বা তাদের সংমিশ্রণেই তৈরী। যাক, আমাদের গল্পের হিরো যেহেতু ইলেকট্রন আমরা তাই ঐ কেন্দ্রে থাকা প্রোটন-নিউট্রন বেচারাদেরকে নিয়ে আর না ঘাঁটি-আনবিক/পারমানবিক বোমা বানাতে গিয়ে এমনিতেই বেচারাদের অবস্থা কেরোসিন।
এখন আসুন আমরা দেখি, এই ইলেকট্রনগুলো কিভাবে ঘুরছে এই বৃত্তে। হাইডোজেনের কথাই ধরুন, কেবল এক জোড়া ইলেকট্রন-প্রোটন ব্যবস্থা। চিন্তা করুন, কেন্দ্রে থাকা প্রোটন থেকে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে ইলেকট্রনটি ঘুরছে। এই দূরত্বটা, মানে বৃত্তের ব্যাসার্ধটা ধরুন ১ মিটার। এখন, আপনি বাইরে থেকে ইলেকট্রনটিকে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করলেন যাতে সে প্রোটন/কেন্দ্র থেকে ১ মিটারের বেশি দূরত্বে সরে যায়, ধরুন ১.৫ মিটার বা ২ মিটার দূরত্বে। প্রশ্ন হলো, ইলেকট্রনটি কি সরে যাবে? কতদূর সরে যাবে? উত্তর হল, যাবে। যত বেশি শক্তি সরবরাহ করবেন তত বেশি দূরত্বে সরে যাবে। কিন্তু এখানে একটা 'কিন্তু' আছে। এই সরে যাওয়াটা হবে 'নির্দিষ্ট' দূরত্বে; মানে কিনা, ১ মিটার থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি পেলে ইলেকট্রনটি সরে ২ মিটার দূরত্বে যাবে, আরও শক্তি পেলে ৩ মিটার দূরত্বে যাবে ইত্যাদি কিন্তু কখনই ১.৫ মিটার বা ২.১ মিটার দূরত্বে যাবে না। আবার শক্তি ফিরিয়ে দিয়ে প্রোটনের কাছেও সে সরে আসতে পারে কিন্তু ঐ 'নির্দিষ্ট' দূরত্ব বজায় রেখেই তাকে চলতে হবে। মানে, ৩ মিটার থেকে ২ মিটারেই তাকে আসতে হবে, ১.৭৫ মিটারে আসা সম্ভব নয়। আবার, একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে সর্বোচ্চ কটা ইলেকট্রন থাকতে পারবে সেটাও নির্দিষ্ট; যেমন ধরুন, ১ মিটার দূরত্বে সর্বোচ্চ ২টা, ২ মিটার দূরত্বে ৪টা ইত্যাদি। এই হল কোয়ান্টাম বিদ্যা। কোয়ান্টাম শব্দটার মানে বিচ্ছিন্ন, মানে নির্দিষ্ট শক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট লম্ফন, মানে যত শক্তি তত যাওয়া-আসা নয় বরং নির্দিষ্ট শক্তি অনুযায়ী লাফিয়ে লাফিয়ে নির্ধারিত দূরত্বে যাওয়া-আসা করা।
তারমানে আপনি জানলেন ইলেকট্রন সংখ্যায় বাড়লেই ইচ্ছেমত প্রোটনের কাছাকাছি যেতে পারে না, তাদেরকে নির্দিষ্ট দূরত্বে, নির্দিষ্ট সংখ্যায় থেকেই চক্কর লাগাতে হয়। তাহলে আসুন একটু জটিল ব্যবস্থা চিন্তা করি; যেমন ধরুন, কার্বন বা সিলিকন; মানে কিনা, ৬ জোড়া বা ১৪ জোড়া ইলেকট্রন-প্রোটন ব্যবস্থা। প্রথম ইলেকট্রনটি সবচেয়ে ভাগ্যবান, প্রোটনগুলোর সবচেয়ে কাছে। সেদিক থেকে কার্বনের ৬ নম্বরটা বা সিলিকনের ১৪ নম্বরটা অভাগা, প্রোটন থেকে সবচেয়ে দূরে। এখন ধরুন, আপনি পাশাপাশি ১০টা কার্বন বা সিলিকন রেখে একটা শিকল বানালেন। এই ১০টি কার্বন/সিলিকনের মধ্যে ঐ যে ভোল্টেজ পার্থক্যের কথা বলছিলাম গতপর্বে, সেই ভোল্টেজ পার্থক্য তৈরী করে দিলেন। তাহলে তো এদের ঐ অভাগা ইলেকট্রনগুলো, যেগুলোর কেন্দ্রের সাথে ততটা মিল মহব্বত নেই, সেইগুলো ১ নং টা থেকে ২ নং টাতে, ২ নং টা থেকে ৩ নং টাতে-এভাবে ভালভাবেই প্রবাহিত হওয়ার কথা। ঠিক ধরেছেন, তাহলে তো যেকোন বস্তুকে পাশাপাশি রেখেই ঐ অভাগাদের প্রবাহ তৈরী করা যায়; তারমানে সব পদার্থই তাহলে পরিবাহি!
কিন্তু আপনি তো ভাল করেই জানেন ব্যাপারটা এমন নয়! তাহলে? রহস্যটা কোথায়? নিশ্চয় ঐ আপাত অভাগা ইলেকট্রনগুলোর মধ্যে কোন 'কিন্তু' আছে!
আসলে বেচারাদের দোষ না। ব্যাখ্যা করছি।
যে কোন পদার্থের কেন্দ্র থেকে সর্বশেষ দূরত্ব, যেটাকে কোয়ান্টাম বিদ্যা অনুযায়ী, সর্বশেষ শক্তিস্তরও বলে, সেখানে থাকা ইলেকট্রনগুলো আবার চাইলেই স্রোতে গা গাসিয়ে দিতে পারে না- দায়িত্ব কর্তব্য বলে তো একটা কথা আছে! মানে কিনা, আপনি ভোল্টেজ পার্থক্য তৈরী করে এই ইলেকট্রনগুলোকে 'প্রবাহিত হও' বললেই প্রবাহিত হবে না। এখানে একটা বাঁধা আছে, সেটা টপকাতে হবে; তাহলেই কেবল তারা প্রবাহিত হতে পারবে। এটাকে চিন্তা করুন ফ্লাইওভারের মত। ইলেকট্রনের নিচের রাস্তা থেকে যাওয়া বারণ, উপরে ওঠার শক্তি পেলে প্রথমে উপরে উঠতে হবে, তারপর প্রবাহিত হতে হবে। আমরা উপরের রাস্তাটাকে নাম দিতে পারি, প্রবাহপথ (যেটাকে আসলে বলে কন্ডাকশন ব্যান্ড); আর নিচের পথটা, যেটাতে চলাচল বারণ, সেটার নাম দিতে পারি শুন্যপথ/জড়ো-হওয়ার-পথ (যেটাকে আসলে বলে ভ্যালেন্স ব্যান্ড)। এখন কিছু কিছু বস্তু আছে, যাদের সর্বশেষ স্তরে থাকা ইলেকট্রনগুলোর জন্য এই প্রবাহপথ আর শুন্যপথের মধ্যে বলতে গেলে কোন পার্থক্যই নেই। সেসব বস্তুগুলোতে ভোল্টেজ পার্থক্য তৈরী করে দিলেই ইলেকট্রন এমাথা থেকে ওমাথায় নির্বিঘ্নে ছুটে যায়। সেগুলোই পরিবাহী। আবার কিছু কিছু বস্তুর প্রবাহপথ আর শুন্যপথের শক্তির পার্থক্য এত বেশি যে ইলেকট্রন বেচারারা ঐ প্রবাহপথ/ফ্লাইওভারে উঠার শক্তিই পায় না, তাই আর প্রবাহিত ও হতে পারে না। এগুলোই অপরিবাহি। তাহলে বুঝতেই পারছেন, কিছু কিছু বস্তু, যেমন সিলিকন, এমন যে এদের প্রবাহপথ আর শুন্যপথের পার্থক্য ঠিক মাঝামাঝি। 'উপযুক্ত' ব্যবস্থায় এদের ইলেকট্রনগুলোকে প্রবাহপথে উঠিয়ে দেয়া যায়, কিছুটা প্রবাহ পাওয়াও যায়। আর ঐ যে গতপর্বে বলছিলাম সিলিকনের সাথে ভেজাল মেশানোর কথা, সেই ভেজাল মিশিয়ে ইলেকট্রনগুলোর জন্য কম উচ্চতায় ফ্লাইওভার/প্রবাহপথ বানানো যায়। আর তখন সেই ভেজাল মেশানো সিলিকন দিয়ে পরিবাহি বস্তুগুলোর মতই ইলেকট্রনের প্রবাহ পাওয়া যায়।
তাহলে বুঝতেই পারছেন, এই দুই পথের পার্থক্যই বলে দেয় কোন বস্তু পাশাপাশি রাখলে আসলে ইলেকট্রন প্রবাহ হবে কিনা; মানে কিনা, এই দুই পথের শক্তির পার্থক্য থেকেই বোঝা যায় বস্তুটি পরিবাহি, উপ-পরিবাহি না কুপরিবাহি। তাহলে, আমাদের স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য আমাদের সঠিক দিকনির্দেশনা আমরা পেয়ে গেলাম, কি বলেন! আমাদের ঐ সেই যে স্বপ্নের 'রং'টা, সেটা এমন হতে হবে যে তার সর্বশেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রনগুলোর জন্য শুন্যপথ আর প্রবাহপথের মধ্যকার শক্তি হতে হবে সিলিকনের মত বা কাছাকাছি; সঠিকভাবে বললে ১.৫ থেকে ২ ইলেকট্রনভোল্ট বা এর কাছাকাছি। তাহলেই কেল্লা ফতে!
তো কি করে করবো সেটা? ঐ ১১৭টা বস্তুর খাঁটি অবস্থায় পরিবাহিতা তো জানিই। আসলে ১১৭ টাও না। ৯০ টার মত! ইলেকট্রন-প্রোটন জোড়া যখন ৯০ ছাড়িয়ে যায়, তখন বস্তুটা এত অসাম্য-অস্থির হয়ে যায় যে বস্তুত খুব অল্প সময় টিকে থাকে। আর শক্তি হারিয়ে ৯০ জোড়ার নিচে নেমে এসে স্থির হয়। যাক, সে ভিন্ন গল্প। তো এই ৯০ টি বস্তু/পদার্থের বেশিরভাগই পরিবাহী, কয়েকটা উপ-পরিবাহি আর বাকিরা অপরিবাহী। সেগুলোকে নিয়ে আর তো কিছু করা যাচ্ছে না। তাহলে হতে হবে এসব বস্তুগলোর মিশ্রণে তৈরী এমন কোন সংমিশ্রণ কিংবা একাধিক সংমিশ্রণে তৈরী নতুন কোন সংমিশ্রণ যার প্রবাহপথ আর শুন্যপথের মধ্যকার শক্তি ১.৫ ইলেকট্রনভোল্ট বা কাছাকাছি। কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা দুটো বস্তু পাশাপাশি আনলে অনেক ঝামেলা হতে পারে। যেমন ধরুন, তাদের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয়ে যেতে পারে কিংবা একই তাপমাত্রাতে একটি বস্তু কঠিন আরেকটি বস্তু বায়বীয় হতে পারে আর তখন তারা 'পাশাপাশি' নাই থাকতে পারে। আবার এমনও হতে পারে যে, তাদেরকে পাশাপাশি রাখাই যাচ্ছে না, মানে 'ঝালাই' দেয়া যাচ্ছে না (রাবার আর লোহা যেমন) ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক কিছুই হতে পারে। এতকিছুর পর যদি কোন দুটো বস্কেতু/বস্তুর মিশ্রণকে পাশাপাশি আনা গেল ও, তালেও কি হলফ করে বলা যাবে যে তাদের প্রবাহপথ (ফ্লাইওভার) একই উচ্চতায় হবে? বলতে চাচ্ছি, পাশাপাশি আনার পরে তাদের বনিবনা হলেও এটা বলা যায় না যে, তারা তাদের নিজ নিজ শেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রনগুলোকে প্রবাহিত করার জন্য ঐ প্রবাহপথ-শুন্যপথের সেই কাংখিত শক্তি পার্থক্য পাবে। মানে কোন ঝামেলা ছাড়া পাশাপাশি আনতে পারলেও সেটা অর্ধ-পরিবাহী বা পরিবাহী হবে, সেই নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না।
তাহলে উপায়? আমাদের গল্পের প্রাণভোমরাটা আমরা বানাবো না? ঐ সেই যাদুর প্রলেপ দেয়া 'রং'টা তাহলে আর বানানো হবে না? কি করে করা যায় সেটা আসলে? এসব উত্তরগুলো নিয়ে আজ আর নয়। আমার বেলা যে যায়, সাঁঝ বেলাতে। এগুলো আমরা আলোচনা করবো গল্পের আগামী পর্বে। এজন্যে আপনাকে অপেক্ষা করিয়ে রাখবো, আশাকরি বরাবরের মতই ক্ষমা করবেন।
যেতে যেতে আরেকটি ছোট্ট গল্প করে যাই। আমার গল্প, আমাদের গল্প। অধ্যাপক সত্যেন্দ্র নাথ বসু ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী। এই যে আমরা এতক্ষণ ইলেক্ট্রন-প্রোটন-নিউট্রন ইতাদি কণার কথা বললাম, এগুলোকে কণা পদার্থবিদ্যায় মূলত দুই ধরনে ভাগ করা হয়-বোসন আর ফার্মিওন। এই প্রথম ধরনের কণাগুলো নিয়ে কাজ করেছিলেন অধ্যাপক বসু। আইনস্টাইনের সাথে এই ধরনের কণার ধর্ম নিয়ে করা কাজগুলো যেমন বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান, বোস-আইনস্টাইন শিতলীকরণ প্রক্রিয়া ইত্যাদি পদার্থবিজ্ঞানের যেকোন ছাত্রেরই সুপরিচিত। এই প্রথম ধরনের কণার নামকরণ করেন পদার্থবিজ্ঞানী পল ডিরাক। তিনি বিজ্ঞানী বসুর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে আর তাঁর সম্মানার্থে এই ধরনের কণাগুলোর নাম বেন বোসন (বসু > বোস > বোসন)। ঐদিন, আমার এক সহকর্মী, ক্যালিফোর্নিয়ার ছেলে, এসব আলোচনার সময় বারবার 'বোজন', 'বোজন' বলছিল। ওকে তখন এই গল্পটা বললাম, 'বোজন'টাকে 'বোসন' করে দিলাম। গর্ব হচ্ছিল খুব। যদিও বোসন শব্দটা শুনতে কেমন ইংরেজীর মতই শোনায় তাই বোসনকে কেউ হয়ত নতুন করে বাংলাতে লিখতে পারেন 'বসু বাবুর কণা' কিংবা 'বোসুদার কণা'। আমি ব্যাক্তিগতভাবে, গর্ব করে বোসনকে বোসনই বলতে চাই। আর বুকে এত্তবড় একটা স্বপ্ন লালন করে চলিঃ একদিন জ্ঞান-বিজ্ঞান-মেধার জগতে আমরাও মাথা উঁচু করে বুক ফুলিয়ে দাঁড়াবো, আমাদের নামে নামকরণ হবে এটা-ওটার, আর অনেক অনেক গর্ব করবে আমাদের উত্তরসূরীরা। একদিন!
মন্তব্য
স্বপ্নচারীর স্বপ্ন (এবার সম্ভবত লেখার সাথে আপনার নিক দিতে ভুলে গেছেন। গতলেখা থেকে আপনার নিকটা নিতে হল),
কোয়ান্টাম মেকানিক্স সহজ বাংলায় ব্যখ্যা করা খুবি দুরহ একটা কাজ। আপনি সে চেষ্টা নিয়েছেন সে জন্য আপনাকে সাধুবাদ জানাই। তবে কিছু কিছু জায়গায় খটকা লাগল।
"কোয়ান্টাম মানে বিচ্ছিন্ন" এই কথাটার সাথে বাক্যের বাকি কথাগুলো কেমন যেন মিলে না। কয়েকবার পড়ার পরও জিনিশটা পরিষ্কার হল না। এছাড়া "কোয়ান্টাম" মানে কি আসলেই বিচ্ছিন্ন?
এখানে "১ নং টা থেকে ২ নং টাতে, ২ নং টা থেকে ৩ নং টাতে" দিয়ে কি এনার্জি লেভেল কিম্বা শক্তি স্তর বোঝাচ্ছেন (নীল বোরের এটমিক মডেল)? তাহলে ব্যাপারটা আরেকটু খোলশা করে লিখলে আমার মত হাদু গাধুদের বুঝতে একটু সুবিধে হত।
এখানে প্রবাহ পথ আর শূন্যপথ কি এক্সসাইটেড স্টেট আর গ্রাউন্ড স্টেট বোঝাচ্ছেন?
যাহোক লেখা ভাল লেগেছে। বিজ্ঞানের উপর আরো লিখুন।
সোহেল লেহস
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ সোহেল লেহস। নিকটা দিতে ভুলে গিয়েছিলাম।
''কোয়ান্টাম মেকানিক্স সহজ বাংলায় ব্যখ্যা করা খুবি দুরহ একটা কাজ। আপনি সে চেষ্টা নিয়েছেন সে জন্য আপনাকে সাধুবাদ জানাই।''
প্রথমেই বলি, আপনার এই মন্তব্য পড়ে হাসলাম একা একা আপনি সঠিক বলেছেন। এটা দূরহ। আমাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিক্স ব্যাখ্যা করার কোন চেষ্টাই আমি করি নি, ও আমার কম্মও নয়। আর তারচেয়েও বড় কথা, এই লেখার উদ্দেশ্য কোয়ান্টাম বিদ্যা ব্যাখ্যা করা নয়। শুধু একটু বলে যাওয়া আর কি!
এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনমানের কথাটাই বলতে চাইঃ
'I think I can safely say that nobody understands quantum mechanics.'
--Richard Feynman, The Character of Physical Law (1965)
১ম উদ্ধৃতির উত্তরঃ
কোয়ান্টাম মানে 'বিচ্ছিন্ন' বলা যায়। অক্সফোর্ড অনলাইন বা উইকি তেমনই বলছে। একটু গুগল করে দেখতে পারেন।
ইলেকট্রন কেন্দ্র থেকে ১,২,৩ মিটারে যেতে পারছে বা ৩,২,১ মিটারে ফিরে আসতে পারছে কিন্তু অন্য কোন দূরত্বে যেমন ১.২৫ বা ২.১ মিটারে যেতে পারছে না। ১ এর পর ২, ২ এর পর ৩ ইত্যাদি 'বিচ্ছিন্ন' সংখ্যা কেননা ১ আর ২ এর মাঝে আরও অপরিসীম সংখ্যা আছে যেখানে ইলেকট্রনটি যেতে পারছে না, তার মানে সেটা 'বিচ্ছিন্ন'ভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে চলছে এবং তা নির্দিষ্ট শক্তি অনুযায়ী। মানে কিনা, 'নির্দিষ্ট শক্তি' অনুযায়ী 'লাফিয়ে' 'নির্ধারিত' দূরত্বে যাচ্ছে, ইচ্ছে করলেই 'যেকোন' দূরত্বে যেতে পারছে না। তার চলাটা কোয়ান্টাইজড। এখানে আপনার বুঝতে ঠিক কেন অসুবিধা হলো আমি বুঝতে পারছি না। আশাকরি, এখন কিছুটা সাহায্য করতে পারলাম। যাইহোক, জানাবেন।
আপনার ২য় আর ৩য় উদ্ধৃতির উত্তরঃ
এই সুযোগে একটু স্পষ্ট করতে চাই আমার বক্তব্য। কোন একটা পর্বে আশা করছি সকল পাঠকের জন্যই লিখবো এ ব্যাপারে। আপাতত আপনাকে এবং অন্যকেউ যারা এই মন্তব্য পড়ছেন তাদেরকে বলে যাই। তাতে আপনার করা প্রশ্নের উত্তর পেতে সুবিধা হবে আশাকরি।
একটা ছোট্ট প্রশ্নঃ পদার্থবিজ্ঞান এবং/অথবা রসায়ন অধ্যয়নের ক্ষেত্রে নিচের কোনটি আপনার জন্যে প্রযোজ্যঃ
ক) নিম্ন মাধ্যমিক সাধারন বিজ্ঞান
খ) মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন
গ) উচ্চ মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন
ঘ) স্নাতক (পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন এর কোন বিষয়ে)
ঙ) স্নাতকোত্তর (পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন এর কোন বিষয়ে গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ইত্যাদি)
এই লেখার টার্গেট অডিয়েন্স হচ্ছে ক ও খ। গ্রুপ গ মোটামুটিভাবে বুঝতে পারার কথা আলোচ্য বিষয়গুলোতে আমি কি বলতে চাইছি। আর ঘ এবং বিশেষকরে ঙ গ্রুপের জন্য লেখাটা হাস্যকর হলেও অবাক হব না।
তবে এই গ্রুপিং নিয়ে ভুল বুঝে বসবেন না আবার। কোন কিছু উপস্থাপন করতে গেলেই, হোক তা সিনেমা, সেমিনারের টক বা রাস্তার ক্যাম্পেইন, টার্গেট গ্রুপ জানাটা সর্বপ্রথমেই দরকার।
তাহলে এই লেখার উদ্দেশ্যটা কি গ্রুপ ক ও খ কে শেখানো? মোটেই না। বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণই এই লেখার আসল কথা। কি হচ্ছে, কিভাবে হচ্ছে সে সম্বন্ধে কোন 'এ-প্রিওরি' ধারণা ও নেই যাদের, তারাও যেন জানতে-বুঝতে পারে কি দারুন সব গবেষণা হচ্ছে, তারা যেন আরও বেশি বেশি আগ্রহ পায়, তারা/তাদের কাছের মানুষজন যেন আরও বেশি অনুপ্রাণিত হয়-সেটাই এই লেখার আসল উদ্দেশ্য। হাতের মোবাইলটা কোন আলাদ্বীনের যাদুর দৈত্য দিয়ে যায় নি! এটা ব্যবহার করে এত এত সুবিধা পাচ্ছি সবাই-তার জন্য যেন বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদের প্রতি কৃতজ্ঞতাটা প্রকাশ পায় আমাদের-এটা লেখক হিসেবে পাঠকদের কাছ থেকে আমার ব্যক্তিগত চাওয়া। আর এই উদ্দেশ্যগুলোকে যতটা সম্ভব সফল করা লেখক হিসেবে আমার দায়িত্ব।
এগুলো মাথায় রেখেই লেখাটা লিখছি। আপনি দুটো লেখাই খেয়াল করলে দেখবেন, বিজ্ঞানের কোন টার্ম, কোন কিছুর নাম সযতনে এড়িয়ে যাচ্ছি আমি। তাই, নীলস বোরের মডেল বা এক্সাইটেড-গ্রাউন্ড স্টেট কেন, কোন মডেল, কোন স্টেটই আনি নি। আনতে চাচ্ছিও না। আমি একটা ওভারওল ছবি ফুটিয়ে তুলতে চাচ্ছি সব শ্রেণীর পাঠকের জন্য। পাঠক পড়বে আর পড়ে কার্ল স্যাগানের মত অবাক স্বরে বলবে, 'ওয়াও! কত কিছু হচ্ছে দুনিয়াতে! কত ভাগ্যবান আমরা!' আশাকরি, আমার বক্তব্য আমি স্পষ্ট করে বলতে পারলাম। প্রত্যুত্তর জানাবেন।
এবার আসি আপনার উত্তরে। কিভাবে ইলেকট্রন ১নং থে ২নং এ প্রবাহিত হয় সেটার জন্যে কয়েকটা ওয়েল স্টাবলিসড থিওরী আছে। যেমনঃ quantum tunneling theory, quantum hopping theory. আবার ধাতব পরিবাহিতার জন্য আছে electron sea model. সেটা অবশ্য doping বা insulator transition ব্যাখ্যা করতে পারে না। solid state এর যেকোন ভাল বইতে ফার্মি-লেভেলের ধারণা ব্যবহার করে এগুলোর ব্যাখ্যা আপনি পাবেন। এর চেয়ে বেশি মনে হয় এখানে আর বলার সুযোগ নেই।
শেষ উদ্ধৃতির উত্তরেঃ band energy diagram থেকে conduction r valance ব্যান্ডের পার্থক্য বোঝানোর জন্য ওভাবে বলছিলাম। এক্সাইটেড স্টেট ইলেকট্রনের ভিন্ন অবস্থা বোঝায়। charge transport এর সাথে ground state to exited state transition সব ক্ষেত্রে সম্পর্কিত নাও হতে পারে।
সাধারন পাঠকের জন্যঃ সবচেয়ে দূরের অভাগা ইলেকট্রনগুলোর প্রোটনের সাথে মিলমহব্বত কম; তারা পাশাপাশি অন্য অনু/পরমানুতে ভোল্টেজ পার্থক্য করে দিলেই প্রোটনকে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে একটা ফ্লাইওভার/প্রবাহপথ আছে, সেটাতে উঠতে পারলেই কেবল তারা প্রবাহিত হতে পারে। এই ফ্লাইওভার/প্রবাহপথ শুন্যপথের যত কাছে, বস্তুটা তত ভাল প্রবাহী। আমাদের সিলিকনের মত কোন কিছু তৈরী করতে হলে এই ফ্লাইওভার আর শুন্যপথের পার্থক্য সিলিকনের মত বা কাছাকাছি হতে হবে। কি করে সেটা করা যায় তা আগামী পর্বে আলোচনা করবো।
ধন্যবাদ।
প্রশ্নের উত্তর দেবার জন্য ধন্যবাদ। আমার মতামতেই আপনাকে জানিয়েছি আমি বিজ্ঞানের ব্যপারে "হাদু-গাধু" টাইপ। আগ্রহ আছে জানার কিন্তু এই ব্যাপারে আমার জ্ঞান অনেক সীমিত।
যাহোক, আপনাকে আমার জীবনের ছোট একটা ঘটনা বলি। আমার বড় ভাই ছিলেন একজন মেধাবী ছাত্র। অংক কিম্বা বিজ্ঞান তিনি পানির মতন বুঝতে পারতেন। আমি অনেক সময় কিছু না বুঝলে তাঁর কাছে যেতাম । তিনি যেহেতু তুখড় ছাত্র ছিলেন তিনি মনে করতেন তারমত আর সবাই সব কিছু সহজে বুঝে ফেলবে। তারকাছে জীবনে যে কত চড় থাপর খেয়েছি সহজ (!) জিনিশ বুঝতে না পারার কারনে। তাঁর একটাই কথা ছিল, "গাধার গাধা, এই জিনিশ ছাগলেও বুঝে, তুই বুঝিস না কেন?"
যে কারণে এই প্রসঙ্গ আনা সেটা হল, সবার মাথা সমান নয়। আপনি যা লিখছেন সেটা হয়ত আপনার কাছে দুধভাত, কিন্তু আমাদের মতন গোবরের লাদি যাদের মাথায় তাদের জন্য জিনিশটা হয়ত খুবি কঠিন।
আপনার প্রথম পর্বের লেখাটা ঝরঝর করে পড়ে ফেলেছিলাম। বুঝতে একটুও অসুবিধা হয়নি। কিন্তু এবার একটু পর পর হোচট খাচ্ছিলাম। যদিও আমি আপনার "গ" গ্রুপের সদস্য।
যাহোক আরো লিখুন। আগ্রহ নিয়েই পড়ব। শুভেচ্ছা রইল।
সোহেল লেহস
সোহেল, আপনাকে ব্যক্তিগত কোন আঘাত করা আমার জবাবের উদ্দেশ্য না-আশাকরি সেটা বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়। তারপরও জানিয়ে রাখছি, তেমন কিছু আপনার মনে হলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
আপনার প্রত্তুত্তরে অভিমান ঝড়ে পরছে। আপনি চেষ্টা করেছেন বোঝার, আরও ভালভাবে বুঝতে মন্তব্য করেছেন-এটার জন্যে অবশ্যই অনেক অনেক সাধুবাদ জানাই। আপনার আগ্রহ কম নেই শেখার ব্যাপারে-এটাও স্পষ্ট। আশাকরি এই আগ্রহ বজায় থাকবে সবসময়।
বলছিলামঃ ''আপনি দুটো লেখাই খেয়াল করলে দেখবেন, বিজ্ঞানের কোন টার্ম, কোন কিছুর নাম সযতনে এড়িয়ে যাচ্ছি আমি। তাই, নীলস বোরের মডেল বা এক্সাইটেড-গ্রাউন্ড স্টেট কেন, কোন মডেল, কোন স্টেটই আনি নি। আনতে চাচ্ছিও না। আমি একটা ওভারওল ছবি ফুটিয়ে তুলতে চাচ্ছি সব শ্রেণীর পাঠকের জন্য।''
সেজন্যেই অতি সরলীকরণ করে লেখা। ঐ প্রুপিং করে আপনাকে শুধু বোঝাতে চাইছিলাম যে কারা এর পাঠক, কেন আমি এত সরলীকরণ করতে চেষ্টা করছি এবং কেন আমি নাম-টার্ম-মডেল-স্টেট ইত্যাদি সব বিজ্ঞান বিষয়ক 'জটিলতা' যতটাসম্ভব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
প্রথম পর্ব যতটা ভালভাবে পড়তে পেরেছেন, ২য় পর্বে আটকে যাচ্ছিলেন-এমন অনুযোগ আরও পেয়েছি । যাতে আরও সহজে লিখতে পারি সে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সাথে থাকুন। আর অবশ্যই মন্তব্য করবেন বরাবরের মত-কোনটা বুঝলেন, কোনটা বুঝতে সমস্যা, হল, লেখা সহজ/কঠিনহল কিনা--যেকোন কিছু নিয়ে। আগামী পর্বে আড্ডা হবে তাহলে!
ধন্যবাদ।
একটা প্রশ্নঃ আপনার কি মনে হয়, লেখার দৈর্ঘ্য ছোট হলে আরেকটু সুবিধা হয়?
আমি কিছু মনে করিনি। আমরা যেহেতু সবাই এখানে লেখক এবং পাঠক, সেহেতু যা লেখা হয় তাতে নানা ধরনের মন্তব্য হবেই। যারা লেখেন তারা এসব মন্তব্য থেকে আইডিয়া নেন তাদের পরবর্তী লেখার ধরণ কেমন হবে।
যাহোক আমি নিশ্চিত আপনি ইতিমধ্যে পাঠকদের এবারের মন্তব্য থেকে কিছু ধারণা পেয়ে গেছেন যে পরবর্তী লেখাটা আপনি কিভাবে লিখবেন। আপনি চালিয়ে যান। বিজ্ঞানের উপর আপনার লেখা এপর্যন্ত বেশ সুখপাঠ্য হচ্ছে।
আপনার প্রশ্নের জবাবঃ আমার কাছে মনে হয় আপনার লেখার দৈর্ঘ্য ঠিক আছে। এর থেকে ছোট হলে যে লেখার বিষয় বস্তু বুঝতে আরো সুবিধা হত তা নয়। আমার বিশ্বাস আপনি চেষ্টা করলে এর থেকেও সহজ ভাষায় আপনার লেখা পাঠকদের হাতে তুলে দিতে পারবেন।
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
সোহেল লেহস
প্রিয় স্বপ্নচারীর স্বপ্ন, প্রথমেই যা বলতে ইচ্ছে করছে, "এতদিন কোথায় ছিলেন!"
দ্বিতীয় যা বলতে চাই, আপনার হাচল হওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকছি। ঐটি হয়ে গেলে লেখা বের হয়ে যাওয়ার পরেও দরকারী সংশোধনগুলো আপনি নিজেই করে ফেলতে পারবেন। আর হাচলত্বের পথে আপনার কাছ থেকে এই রকম চমৎকার লেখাগুলো পেতে থাকবো আমরা!
তৃতীয়ঃ সোহেল লেহেস যে প্রশ্নগুলো রেখেছেন আমিও সেগুলো রাখলাম
আর কি, আপনার পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। ভাল থাকবেন।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ এক লহমা পাখির নীড়ের মত চোখ মেলে আপনাদের সাথেই আছি গত প্রায় ৪ বছর ধরে। লিখিনি এখানে কখনও, এই যা! লিখতে থাকলে মনেহয় হাচলত্ব পেয়েই যাব, তাই না? সোহেল লেহেসের মন্তব্যের জবাব দেখুন। আর সাথে থেকে অনুপ্রেরণা দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
এক লহমা, একটু সাহায্য চাচ্ছি। আমি ঠিক বুঝতে পারছি না, উপরে ১নং আর নিচে ৩নং মন্তব্যের জবাব লিখলাম; ১ নং টা তো এত্তবড় করে লিখলাম। আসছে না এখানে। প্রায় ৩/৪ ঘন্টা হলো। আমার কি এ ব্যপারে কিছু করনীয় আছে? মডারেটরদের দৃষ্টি আকর্ষণের উপায় টা কি?
-স্বপ্নচারীর স্বপ্ন
স্বপ্ন, আমি আপনার সব কটি মন্তব্যই দেখতে পাচ্ছি, মন্তব্য উপভোগও করেছি । এতক্ষণে আপনিও দেখতে পাচ্ছেন নিশ্চয়ই। অনেক সময় মডারেশন পার হতে একটু সময় লেগে যায়, চিন্তা করবেন না।
মডারেটরদের সাথে যোগাযোগ করতে ওনাদের ই-মেইল করতে পারেন।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ
বিঙ্গানকে সহজ বাংলায় লেখা খুবই কষ্টকর, তবুও যদি কষ্ট করে আরেকটু সহজে লিখতে পারেন তবে আমার মত হাবাগোবাদের বুঝতে এেকটু সহজ হবে। কারণ এই লেখাটির বোঝানোর ভাষা গত লেখার থেকে কিছুটা কঠিন মনে হয়েছে। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
-এ এস এম আশিকুর রহমান অমিত
সহজ কথাই যায় না বলা সহজে, আর কঠিন কথা হলে তো কথাই নেই!
ধন্যবাদ অমিত। বুঝতে পারছি আপনার আক্ষেপটা। ১ নং মন্তব্যের জবাবে লেখা শেষ অনুচ্ছেদ দেখার অনুরোধ করছি, আশাকরি একটু পরিষ্কার হবে
কোন বিশেষ টার্ম, নাম, প্রক্রিয়া ব্যবহার ও সেগুলোর বর্ণনা/ব্যাখ্যা এড়িয়ে একদমই সোজা-সরল ভাবে কোন কিছুর সম্বন্ধে লেখা-এর চেয়েও সহজ কি আর হবে? জানি না। তবে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আপনিও বোঝার চেষ্টাটা চালিয়ে যাবেন-সে আশাই করছি। অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
অমিত, একটা প্রশ্নঃ আপনার কি মনে হয়, লেখার দৈর্ঘ্য ছোট হলে আরেকটু সুবিধা হয়?
আগেও বলেছি, আবারও বলছি: বিজ্ঞানকে সহজ ভাষায় লেখার চমৎকার হাত আছে আপনার। আগ্রহ নিয়ে সিরিজটা পড়ছি।
শুভেচ্ছা
অনেক ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ।
প্রত্যাশা মাফিক এগোচ্ছে যেনে ভাল লাগলো। কেবল একটু 'আরও সহজে' লেখার অনুযোগ ছাড়া মোটামুটি ভাবে পার পেয়ে যাচ্ছি, এটা ভাবতেও ভাল লাগছে
শুভেচ্ছা আপনাকেও।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন