১
৪ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। কাঁটায় কাঁটায় চার মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। আমি ঘড়ির দিকে এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম। জিনিশটা অদ্ভুত। কারও সাথে ব্যাপারটা নিয়ে আলাপ করতে পারলে মনটা একটু হাল্কা লাগত। কিন্তু কে বিশ্বাস করবে আমাকে?
সারওয়ার? লায়লা ডাকল।
ঠিক ৪ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড আগেই আমি জানতাম আমাকে লায়লা ডাকবে। আমি কোন উত্তর দিলাম না। লায়লা আমাকে কেন ডাকছে সেটাও আমি এই মুহূর্ত থেকে ৪ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড আগেই জানতে পেরেছি। বসার ঘরে পত্রিকা পড়ছিলাম। দরজায় এসে দাঁড়াল লায়লা।
কতক্ষন ধরে ডাকছি। কানে শোন না নাকি?
আমি বললাম, ফান্ড রেইজিং পার্টি?
কি? বিরক্ত গলায় বলল লায়লা।
আমি বললাম,
কিছু না।
লায়লা বলল,
সমস্যা কি তোমার?
কি সমস্যা?
বিড়বিড় করে কি বল আজকাল?
কই?
লায়লা বলল, প্রায় সময় দেখি কি যেন বল। যাহোক আজকে সন্ধ্যায় আমি রুপসী বাংলায় যাচ্ছি।
আমি কিছু বললাম না। বলার প্রয়োজন নেই। লায়লা কি বলবে সব আমার জানা। কিছুক্ষন চুপ করে থেকে লায়লা বলল,
এসিড দগ্ধ নারীদের পুনর্বাসনের জন্য ফান্ড রেইজিং পার্টি আছে। আমি প্রধান উদ্যক্তা।
আমি বললাম,
ওহ আচ্ছা।
এমন সময় লায়লার মোবাইল ফোন বাজল। ফোন শোবার ঘরে। তাড়াহুড়ো করে শোবার ঘরে চলে গেল লায়লা। সাব্বির ফোন করেছে। বসার ঘর থেকে লায়লার অনুযোগ শুনতে পেলাম,
কই ছিলে এতক্ষন? ফোন ধর না কেন?
আমি আবার ভাবতে বসলাম। চার মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। অবাস্তব একটা ব্যাপার। কি করে সম্ভব এই জিনিশ? হাজার ভেবেও কিনারা করতে পারিনা। ব্যাপারটা আমার কাছে ধরা পরেছে তিন দিন আগে।
একটা লোনের ব্যপারে অফিস থেকে মতিঝিল এসেছিলাম। ব্যাংকের কাজ শেষে গাড়িতে উঠছিলাম। ওই পাশের রাস্তায় রিক্সা থেকে নামলেন বিশাল দেহী এক মহিলা। পার্স থেকে যেই টাকা বের করতে যাবেন ওমনি কোত্থেকে এক হতচ্ছাড়া টোকাই ছুটে এসে ছোঁ মেরে পার্স খানা বাগিয়ে নিয়ে দৌড়ে পালাল। বিশালদেহী মহিলা মুরগীর বাচ্চার মতন চিকন গলায় "অই পোলা, অই পোলা" বলে চেচাতে লাগলেন। জিনিশটা আমার চোখের সামনেই ঘটল। অবাক হয়ে আমার গাড়ির ড্রাইভার জামানকে বললাম,
জামান দেখেছো?
জামান বলল,
কি স্যার?
বললাম,
ওই মহিলার পার্স নিয়ে দৌড় দিয়েছে একটা ছেলে। দেখ নাই?
জামান অবাক হয়ে বলল,
কোন মহিলা স্যার।
আমি রাস্তার অন্য দিকে আঙ্গুল তুলে বললাম, ওইতো উনি। মোটাসোটা মহিলা।
বলে আমি নিজেই থতমত খেলাম। রাস্তার ওই পাশের বিশালদেহী মহিলা এই একটু আগে যার পার্স খানা চুরি গিয়েছে তিনি নেই। ফুটপাত দিয়ে মানুষজন যে যার মতন হেটে যাচ্ছে। কয়েক মিনিট আগেও যে এখানে একটা ঘটনা ঘটে গেছে দেখে মনে হল না সে ব্যাপারে কেও ওয়াকিবহাল। আমি চারদিকে তাকাতে লাগলাম। বিশাল দেহীনির দেখা পেলাম না। ওই রকম দেহ নিয়ে এত দ্রুত কেউ যে হাওয়া হয়ে যেতে পারে আমার ধারণায় ছিল না।
গাড়িতে চড়ে বসলাম। নিজের কাছেই কেমন যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না। দিন দুপুরে চোখের সামনে ভেল্কিবাজী ঘটল তা কি করে হয়? রাস্তার ওই পাশে আবার তাকাতেই একটা রিক্সা এসে থামল। রিক্সা থেকে নামলেন তিনি। হলুদ রঙের সেলওয়ার কামিজ গাঁয়ে। চোখে বাসের উইন্ডশীল্ডের মতন বিশাল রোদ চশমা। এইতো সেই মহিলা। একটু আগে যার পার্স চুরি গিয়েছে। এর মধ্যে আবার রিক্সা নিয়ে কোত্থেকে হাজির হলেন উনি? রিক্সাওায়ালাকেও কেমন চেনা চেনা লাগল। আরে আগের রিক্সাওায়ালাইতো। যেই পার্স থেকে টাকা বের করতে যাবেন ওমনি সেই একই ঘটনা দ্বিতীয় বারের মতন ঘটল। বিদ্যুৎ গতিতে দৌড়ে এসে পার্স খানা হেঁচকা টানে ছুটিয়ে নিয়ে চোখের নিমিষেই উধাও হয়ে গেল তের চৌদ্দ বছরের একটা ছেলে। জামান চেচিয়ে উঠে বলল, "স্যার দেখছেন?? হারামজাদা ব্যাগ নিয়া দৌড় দিছে"। আমি কিংকর্তব্যবিমূর হয়ে বসে রইলাম।
গত তিন দিন আমি ছোটখাট কিছু পরীক্ষা চালিয়েছি। এসব পরীক্ষা থেকে যা বুঝতে পারলাম তাহল কোন এক অলৌকিক উপায়ে পৃথিবী থেকে চার মিনিট ৩৭ সেকেন্ড এগিয়ে গেছি আমি। যা কিছু ঘটছে তা অন্য সবার থেকে কিছুক্ষন আগেই আমি জেনে ফেলছি। ব্যাপারটা অনুধাবন করা মাত্রই আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে এল। আমি যে কোন ঘোরের মধ্যে নেই সে জন্য বেশ কয়েকবার নিজের গায়ে চিমটি কাটলাম। ঠাশ করে নিজের গালে জোড়ছে একখানা চড়ও কষিয়ে দিলাম। চড় খেয়ে চোখ গড়িয়ে পানি নেমে এল। বুঝতে পারলাম ঘটনা সত্য। প্রতিটি জিনিশ আমি দুবার করে দেখতে পাচ্ছি। মাঝে মধ্যেই আমার মাথা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। কোনটা বর্তমান আর কোনটা চার মিনিট পরের ভবিষ্যত তা ঠাওর করতে পারছিলাম না। তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিল। বোঝা যাচ্ছে জিনিশটা সয়ে আসতে সময় নিবে।
সন্ধ্যায় লায়লা বলল,
এই আমি গেলাম। ফিরতে একটু রাত হতে পারে। তুমি খেয়ে নিও।
আমি কিছু বললাম না। কিছুই বলতে ইচ্ছা করছিল না। লায়লা অনেক সাজগোজ করেছে। ধবধবে ফর্সা কপালে লাল টিপে অনেক সুন্দর লাগছিল তাকে। এই সাজগোজ আমার জন্য করা হয়নি। গাড়িতে উঠেই লায়লা হাসতে হাসতে সাব্বিরের গায়ে লুটোপুটি খাচ্ছিল সেটা চার মিনিট ৩৭ সেকেন্ড আগেই অগ্রীম দেখে এসেছি। লায়লা চলে গেল। আমি আবার ভাবতে বসলাম।
লায়লা বাসায় ফিরল রাত আড়াইটায়। শাড়ি-ব্লাউজ খুলে বিছানায় এসে চিত হয়ে পড়ল। জড়ানো গলায় বলল,
এই জেগে আছো?
আমি জেগেই ছিলাম। তবে ভাণ করলাম গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। লায়লার মুখ থেকে ভক ভক করে এলকোহলের গন্ধ আসছে। আমি অন্য দিকে পাশ ফিরলাম।
২
সকালে অফিসে গেলাম না। নিজেকে পাগল পাগল লাগছে। একই ঘটনা যখন বার বার ঘটতে থাকে তখন সেটা মনে ধাঁধার সৃষ্টি করে। এভাবে চলতে থাকলে বদ্ধ পাগল হতে আর বেশি সময় লাগবে না। তবে একটা জিনিশ বেশ বুঝতে পেরেছি, ভবিষ্যত সুনির্দিষ্ট নয়। মানে আগে থেকে কোন কিছু ঠিক করা নেই। যেকোন ঘটনার হাজারটা ভার্সন থাকে। পরিস্থিতি সাপেক্ষে সেখান থেকে যেকোন একটি ঘটনা ঘটে। ইচ্ছা করলে ভবিষ্যতও পাল্টে দেয়া যায়। উদাহরণ দেই। বসার ঘরে পত্রিকা পড়ছিলাম। দেখতে পেলাম কাজের মেয়ে জোহরা এসে বলছে,
ভাইজান চা দিমু?
এটা চার মিনিট সামনের ঘটনা ছিল। আমি বললাম,
দে। চিনি একটু কম দিস।
জ্বী, আইচ্ছা।
জোহরা চলে যেতেই আমি বাথরুমে ঢুকে গেলাম। আমি জানি মিনিট খানেক পরে জোহরা এসে ঠিক একই প্রশ্ন আবার করবে। কিছুক্ষন পর জোহরার পায়ের আওয়াজ পেলাম। আমাকে না পেয়ে সে চলে গেল। আমি বাথরুম থেকে বের হয়ে ডাকলাম,
জোহরা?
জোহরা এসে বলল,
জ্বী, ভাইজান?
চা দে। চিনি এক চামচ বেশি দিবি।
জ্বী, আইচ্ছা।
এক চামচ বেশি চিনি দিয়ে জোহরা চা নিয়ে এল। আমি নিজের মনে হাসলাম।
দুপুর হয়ে গেল। লায়লা এখনো বিছানায়। গত রাত্রে বেচারার উপর দিয়ে সম্ভবত অনেক ধকল গেছে। ফান্ড রেইজিং পার্টির পর খানা পিনা হয়। পিনাটা বেশিরভাগ সময় থাকে ওয়াইন কিম্বা ভদকা কিম্বা নানা ধরণের মিক্সড ড্রিংক । এধরনের পার্টিতে আমিও গিয়েছে। পুরোটাই লোক দেখানো। পার্টি শেষে চলে উদ্দাম নৃত্য। নৃত্য না বলে বলা উচিত পাগলা নাচা কুদা। যে যার মতন হাত পা ছোড়াছুড়ি আর কি।
লায়লার সাথে আমার বিয়ে হয়েছিল পারিবারিক ভাবে। আমাদের বাবারা ছিলেন ঘনিষ্ঠ বিজনেস পার্টনার। বিজনেসের চুক্তি সুদৃঢ় রাখতে আমাদেরকে বিয়ে দেয়া হয়েছিল। বিয়ের রাতেই কঠিন গলায় লায়লা বলল,
বাবার কারণে আপনাকে বিয়ে করেছি। হাসব্যান্ড-ওয়াইফ হিসাবে থাকব। অতটুকুই। দয়া করে আমার গায়ে হাত দেবার চেষ্টা করবেন না।
আমি বিছানা থেকে উঠে গিয়েছিলাম। শোবার ঘরে চেয়ারে বসে থেকে সে রাতটা পার হয়েছিল।
বিয়ের কিছুদিনের মাথায় বুঝতে পারলাম লায়লা বহুগামী। তাঁর পুরুষ বন্ধুর সংখ্যা অনেক। রাত বিরেতে মাতাল হয়ে বাসায় ফেরে। প্রায় দেখি গলায় কাঁধে কামড়ের দাগ। প্রথম প্রথম বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করেছিলাম। লাভ হয়নি। শীত কালের অতিথী পাখিরা কখনও হাওড়ে স্থায়ী ভাবে ঘর বাঁধে না। এরা যাওয়া আসার মধ্যে থাকে। লায়লা হল আমার জীবনের অতিথী পাখি।
সাম্প্রতিক সাব্বির নামে এক ছেলের সাথে লায়লার খুব ভাব হয়েছে। লায়লা একটা এন জি ও'র সাথে যুক্ত। ছেলেটা সম্ভবত একই অফিসে চাকুরী করে। ব্যবসার কারণে আমাকে অনেক ধরণের মানুষের সাথে সম্পর্ক রাখতে হয়। নানা জনের কাছ থেকে প্রায় খবর পাই লায়লা সম্পর্কে। কোথায় কোন হোটেলে তাকে কার সাথে দেখা গেছে এগুলোর কিছুই আমার অজানা থাকে না। আমি চুপ থাকি। লায়লা ব্যাবসার যে অংশীদারিত্ব নিয়ে এসেছে তাঁর মূল্য অনেক। আজকালকের বাজারে নব্বই কোটি টাকা কম নয়।
ঘুম থেকে উঠে আমাকে দেখতে পেয়ে লায়লা চমকে উঠল। জিজ্ঞেশ করল,
অফিস যাওনি।
বললাম,
না।
কেন? শরীর খারাপ?
ওই রকমই।
এগিয়ে এসে আমার কপালে হাত দিল লায়লা। ঘৃণায় আমার গাঁ রি রি করে উঠল। আমার মনের ভুলও হতে পারে কিন্তু লায়লার গাঁয়ে অন্য পুরুষের তীক্ষ্ণ গন্ধ।
কই? গাঁ তো গরম লাগছে না।
মনে মনে বললাম, জ্বর ছাড়াও এই পৃথিবীতে আরো অনেক রোগ আছে বেশ্যা মাগী কোথাকার! লায়লা বলল,
আমি জোহরাকে চিকেন স্যুপ করে দিতে বলছি।
লায়লা'র বেশিরভাগ কথার উত্তরই আমি আজকাল দেই না। লায়লা কেয়ারও করে না। আমি কি করলাম না করলাম তাতে তাঁর কিছু যায় আসে না। লায়লা চলে যাচ্ছিল, কিন্ত মাঝপথে আবার ঘুরে দাঁড়িয়ে বলল,
শোন, কাল সকালের ফ্লাইটে আমি চিটাগং যাচ্ছি। এক সপ্তাহর জন্য একটা ওয়ার্কশপ আছে আমাদের। বুধবার বিকেলে ফিরব।
আমি বললাম,
ঠিক আছে।
আমাদের বাসার সামনেই এক বহুতল এপার্টমেন্ট হচ্ছে। সপ্তম তলায় কাজ চলছে। সারদিন হাতুরি পেটার ধুপ ধুপ শব্দ শুনি। আমি ধুপ ধুপ শব্দ শুনতে লাগলাম। এই শব্দেরও একটা তাল আছে। কিছুক্ষন শুনার পর ঘুম ঘুম ভাব হয়। আমার ঘুম আসতে লাগল।
৩
বুধবার, বিকেল। বসে বসে ইতিমধ্যে বেশ কয়েক বার পড়ে ফেলা পত্রিকা আবার পড়ছিলাম। এই কয় দিনে ৪ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের ব্যপারটা গাঁ সওয়া হয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে অবশ্য তালগোল পাকিয়ে ফেলি। কিন্তু শুরুতে যতটা অসুবিধা হচ্ছিল এখন তা হচ্ছে না।
মানুষ কতটা নির্লজ্জ হতে পারে? এক সপ্তাহ ধরে কক্স বাজারের এক রিসোর্টে সাব্বিরের সাথে রাত কাটাচ্ছে লায়লা। লায়লার সাথে আমি কখনও কোন অবিচার করিনি। কাজের সুবাদে অনেক ধরণের মেয়ের সাথে আমার উঠা বসা হয়। এদের অনেকেই টাকা আর স্ট্যাটাসের লোভে আমার পায়ে তাদের দেহ ছুড়ে দিতে একটুও দ্বিধা করবেনা। কিন্তু আমি সেই সুযোগ কখনো নেইনি। আমি ধণীর দুলাল। ইচ্ছা করলেই বহু আগে বখে যেতে পারতাম। কিন্তু যাইনি। কাগজে কলমে হলেও লায়লা এখনো আমার সাথে বিবাহিত। আমার প্রতি সামান্যতম শ্রদ্ধাও যদি তাঁর থাকত এমনটা করতে পারত না। নিজের প্রতিই এক সময় ঘেন্না হয় আমার। এভাবে জীবন নষ্ট করার কোন মানে হয় না। আমার বয়স মাত্র তেত্রিশ। আমি নিশ্চিত আমাকে সামান্য অতি সামান্য কিন্তু প্রকৃত ভালবাসা দেবার মতন কেও না কেও এই পৃথিবীতে অবশ্যই আছে।
ঘড়ি দেখলাম। বিকেল ৫ টা বেজে ২০ মিনিট। সামনের নির্মাণাধীন বিল্ডিং থেকে ধুপ ধু্প করে বিকট শব্দ আসছে। শ্রমিকেরা মাথায় ঠুকরী ভরে কংক্রিট নিয়ে যাচ্ছে দল বেঁধে। আমি আবার ঘড়ি দেখলাম। ৫ টা বেজে ২২ মিনিট। আর কয়েক মিনিটের মধ্যে সাব্বির লায়লাকে নামিয়ে দেবে। সাব্বির যেখানে গাড়ি পার্ক করবে ঠিক সেখানেই সাত তলা থেকে সদ্য নির্মিত একটা দেয়াল ধসে পরার কথা। আমি জানি কারণ কিছুক্ষণ আগেই সেটা দেখে এসেছি। আমি ইচ্ছা করলেই যা ঘটতে যাচ্ছে সেটা বদলে দিতে পারি। কিন্তু আমার ইচ্ছা করছে না। আমি ঘড়ির দিকে সম্মোহিতের মত তাকিয়ে থাকলাম। ৪ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের আর বেশি দেরি নেই।
সোহেল লেহস
মন্তব্য
গল্প দারুণ লেগেছে। শেষ পর্যন্ত আগ্রহ ধরে রেখেছেন।
ধন্যবাদ অতিথি লেখক! নাম কই?
সোহেল লেহস
প্রিয় সোহেল, আমার যেটা মনে হয়েছে সেটা হচ্ছে, প্রথমে যতটা সম্ভাবনা সৃষ্টি করা হল, পরে ততটা ব্যবহার করা হল না। ব্যাপার না কোন, আস্তে আস্তে দক্ষতা বাড়তে থাকবে
আর যেটা নিয়ে বলতে চাই, বানানের ব্যাপারটা কিন্তু ভাই একটু খেয়াল করাই দরকার। যেমন, শরীর = গা, গ্রাম = গাঁ ইত্যাদি।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এক লহমা ভাই, একদম ঠিক ধরেছেন। আমার ধৈর্য শক্তি খুবি কম। গল্পের শুরুটা করি অনেক চিন্তা ভাবনা করে কিন্তু পরে খেই হারিয়ে ফেলি। এছাড়াও হাজার গন্ডা দোষ আছে আমার। আমি গুছিয়ে চিন্তা করতে পারি না। আর মোনযোগের কথা নাই বা বললাম।ডিসলেক্সিয়া থাকার অনেক যন্ত্রণা। এর উপর যদি থাকে "কিমো ব্রেইন" তাহলেতো কথাই নাই। এত কিছু নিয়ে লেখালেখি করা অনেক কষ্টসাধ্য। তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি কষ্ট করলে কেষ্ট মেলেতে বিশ্বাসী। আপনাদের দোয়া বরকতে আশা করি লেখার উন্নতি ঘটবে শীঘ্রই।
আর বানান? ভাইরে, হাজার চেষ্টা করেও নির্ভুল বানানে লেখতে পারছি না। কোন না কোন ভাবে বেত্তমিজ ভুল বানান গুলো ফাঁক ফোকর গলে বেরিয়ে যাচ্ছে। আহারে কেউ যদি প্রুফ রিড করে দিত!
এক লহমা আপনাকে এক হাজার ধন্যবাদ ইউজফুল মতামত দেয়ার জন্য
সোহেল লেহস
গল্পটা ভাল লাগল। কিন্তু হঠাৎ যেন শেষ হয়ে গেল। ০০:০৪:৩৭ মিনিট পর কি হল? জানার অপেক্ষায় ০০:০৪:৩৭ মিনিট কেটে গেল।
-এ এস এম আশিকুর রহমান অমিত
সব কিছু খুলে বলতে নেই। কিছু জিনিশ কল্পনা করে নিতে হয়। ৪ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড পর কি হল সেটা একটু কষ্ট করে নিজেই ভেবে নিন
সোহেল লেহস
গল্পটা আমার ভালো লেগেছে।
তবে, স্ত্রী যদি বহুগামী হয়, তবে স্বামীপ্রবরের সন্ত হয়ে যাওয়াটা বেশ কমন।
তেমন না হয়ে কঠোর হওয়াটা বুঝি টাকার জন্য আটকে থাকে?
**********
ভালো থাকবেন সোহেল।
আপনার জন্য শুভকামনা।
--------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
ধন্যবাদ পলাশ! দেখে মনে হচ্ছে সারওয়ারের গলায় জোর কম। বুকের পাটাও তেমন একটা শক্ত নয়। বউকে শাসন করার ব্যাপারে তাঁর তেমন একটা গরজ নেই বললেই চলে। যা খুবি হতাশাজনক।
আপনিও ভাল থাকুন। ধন্যবাদ!
সোহেল লেহস
বেশ ভাল্লাগলো!
প্রফেসর শঙ্কুর একটা গল্প মনে পড়ল পড়তে পড়তে, নকুড় বিশ্বাস -- যতদূর মনে পড়ে ভদ্রলোকের নাম, আগেই জানতে পেরেছিলেন ব্রাজিলের জঙ্গলে ভয়াবহ উল্কাপাতের কথা, সেটাই হয়েছিল মোক্ষম অস্ত্র।
আরো লিখুন।
বিটিডব্লিউ, আপনার নিকটা ইন্টারেস্টিং। যদি কিছু মনে না করেন, লেহস মানে কী?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তিথীডোর, ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম। প্রফেসর শঙ্কুর গল্পটা পড়া হয়নি। মনে হচ্ছে ইন্টারেস্টিং ঘটনা।
আমার নিক: সোহেল লেহস = Sohel Lehos
Sohel কে উলটো করে পড়লে হয় lehoS
সুতরাং আমার পুরো নিকটা আসলে সোহেল সোহেল
সোহেল আমার ডাক নাম। বাবা-মা'র দেয়া ভাল নাম খানা আমার একেবারেই অপছন্দ। তাই কায়দা করে ডাক নামটাকেই উলটে দিয়ে পুরো নাম বানিয়েছি
সোহেল লেহস
ভাল লেগেছে গল্পটা
আরেকটু নাটকীয় সমাপ্তি আশা করেছিলাম অবশ্য। যাই হোক, শুভকামনা রইলো। লিখতে থাকুন।
-স্বপ্নচারীর স্বপ্ন
স্বপ্নচারীর স্বপ্ন, ধন্যবাদ! আরেকটু নাটকীয় সমাপ্তি আমিও আশা করেছিলাম কিন্তু আলসেমির কারণে সম্ভব হল না। সচলে "চরম উদাস" নামের একজনকে দেখি। চিন্তা করছি আমার নিক পাল্টে "চরম অলস" করলে কেমন হয়?
সোহেল লেহস
নিক পাল্টে 'চরম উদাস' এর মত 'চরম অলস' করার আগে একটু ভেবে নেবেন! চরম উদাস কে সবাই চউদা বলে ডাকে, আপনার নাম চরম অলস হলে কি বলে ডাকবে সেটা বলতে আমার লইজ্জা করবে, তাই বললাম না।
খিয়াল কইরা
-স্বপ্নচারীর স্বপ্ন
হা হা হা......না, 'চরম অলস' নিক নেয়া যাবে না। খুবই বিপদজনক নিক। সাবধান করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ
সোহেল লেহস
বাটারফ্লাই ইফেক্ট মুভিটা দেখেছেন? গল্পটা পড়ে ওই মুভিটার কথা মনে হল!
গল্পের হাত আছে আপনার, লিখুন নিয়মিত।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
ধন্যবাদ! বাটারফ্লাই ইফেক্ট মুভিটা দেখিনি। তবে নাম শুনেছি। ওতে একই রকম কোন ঘটনা আছে নাকি?
সোহেল লেহস
একটু আগে টের পাওয়ার ক্ষমতা নিয়ে আরেকটা মুভিও আছে, নিকোলাজ কেজ-এর নেক্সট নামে। দেখতে পারেন। (যদিও মুভিটা ফালতু)।
তারপরও বলছি না, আপনার গল্পটা ভলো লেগেছে।
"মুভিটা ফালতু" শুনেই দেখার ইচ্ছা উবে গেল। ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ!
তারপরও বলছি, আপনার গল্পটা ভলো লেগেছে। -টাইপো ছিল আগের কমেন্টে।
নিকোলাস কেজ সাহেব টাকা কামাই করার জন্য অনেক কিছুই করেছেন গত কয়েক বছরে, বেচারা মোটামুটি সর্বস্বান্ত।
বেশ ভাল। চার তারা দাগাইলাম।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
ধন্যবাদ মরুদ্যান!
পড়ে ভাল লাগল। যদিও এ ধরণের থীম নিয়ে সিনেমা দেখেছিলাম। তবু প্রকাশভঙ্গী সাধারণের মধ্যেই অন্যরকম। বিশেষত অতিথি পাখির উপমা টা খুব মনে ধরেছে। ভাল। নিশাচর জীব।
ধন্যবাদ নিশাচর জীব!
৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে পড়ে শেষ করেছি কি না জানি না, তবে ভালো লাগলো পড়ে। আপনি আরো লিখুন।
____________________________
ধন্যবাদ প্রোফেসর হিজিবিজবিজ!
মর্ম, অনেকটা সেই উজবেক কবির মতই (অনেক আগে হুমায়ূন আহমেদের কোন এক বইতে পড়েছিলাম) আমার নিক। আইডিয়াটা মনে হয় হুমায়ূন আহমেদেরও আগে আমার মাথায়ই এসেছিল। সেই প্রাগ ঐতিহাসিক কালে (১৯৯৯-২০০০), যখন এক সময় IRC/MIRC এর অনেক চল ছিল, সেই তখন এই নিক নিয়ে চ্যাট করতাম।
ভাই, সচলে এটাই আমার প্রথম লেখা নয়। যদিও সচলে আমি একে বারেই নতুন (আমার সচল বয়স সম্ভবত এক মাসের মত) কিন্তু আমার আরো কয়েকটা লেখা এখানে পাবলিশ হয়েছে। ইচ্ছে করলে দেখে আসতে পারেনঃ
কাল্পনিক
এবং
কাছের মানুষ দূরে থুইয়া
তবে আগেই সাবধান করে দিচ্ছি- আমার লেখায় হাজারে হাজার বানান ভুল। বানান ভুলে আক্রান্ত হয়ে হার্ট এটাক হলে লেখক "এই লেখা আমার না। সচলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য একটি বিশেষ মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত" বলে দায় সম্পূর্ণ ভাবে এড়িয়ে যাবেন
সোহেল লেহস
আপনার নিক আমাকে 'উজবেক কবি নদ্দিঊ নতিম' এর কথা মনে পড়ালো, আগেই বলা দরকার ছিল, সময় বের করতে দেরি হয়ে গেল!
গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত '৪ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড'-এর রহস্য জানতে মন চাইছিল- কাজেই গল্প 'আকর্ষক' ছিল এ কথা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
প্রথম লেখা হিসেবে গল্প রীতিমত প্রশংসার যোগ্য। নিয়মিত লিখুন। এখানে চুপচাপ পাঠক অনেক, কাজেই মানুষজন আলাপ না করলেই দমে যাবেন না, এমন আশাও রইল
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
মর্ম, আপনাকে দেয়া জবাব কি করে যেন উপরে চলে গেছে একটু কষ্ট করে দেখে নিন।
সোহেল লেহস
লেখনি ঝরঝরে। লিখতে থাকলে কাহিনির বুনোটও এক সময় আরো ভালো হবে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ স্পর্শ! আমি নতুন লেখক। লেখার আরো পোক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা রাখি সময়ের সাথে সাথে লেখার আরো উন্নতি ঘটবে।
সোহেল লেহস
গল্পটা দারুন ভাললাগল। কেন যেন মনে হল এই টুকুই ভাল, এর চেয়ে বেশী লিখলে টানাটানি হত। বেশ লেখেন আপনি
আলী আহসান
ধন্যবাদ আলী আহসান! আমার কাছেও মনে হয় গল্পের সাইজ ঠিকই আছে। একে আজাইরা টানাটানি করে বাড়ানোর দরকার দেখি না।
সোহেল লেহস
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নতুন মন্তব্য করুন