১।
''মন হারিয়ে গেছে' কথাটি গেল বছর দেশে গিয়ে শুনেছিলাম। খুব পুরাতন এবং বহুল ব্যবহৃত একটি কথাই অন্য রকম করে বলা। বড়দির বাসার গৃহকর্মী মেয়েটি গারো পাহাড় থেকে আসা। এদের হতদরিদ্র পরিবারটিতে তিন বা চারটি বোন, বাবা নেই। মা একাই মেয়েদের দেখাশোনা করেছেন এতদিন। মেয়েরা বড় হোয়ে উঠায় আর পেরে উঠছেন না বলেই বড়দির কাছে দিয়েছেন ওকে। প্রথম দিকে বেশ মন খারাপ করে থাকত শুনেছি, তবে এখন বেশ মানিয়ে নিয়েছে বলেই মনে হোল। টিভির নেশাটা ধরেছে ওকে ভীষণ রকম করে, সেটাও মানিয়ে নিতে সাহায্য করেছে বলে মনে হয়। মেয়েটি এমনিতে বেশ চুপচাপ, ওর ভাষা বাংলা নয়। ওকে নিয়মিত বাংলা শেখায় আমার বড় ভাগ্নি। ওর উচ্চারণে সমস্যা তেমন নেই, কিন্তু বাক্য গঠন এবং শব্দ চয়ন বেশ অদ্ভুত। আমার সামান্য সময়ে 'সব করবার প্রজেক্ট' ওর সাথে খুব একটা গল্প-কথা হয়নি। শুধু এই কথাটা খুব মনে গেঁথে আছে, কিছু ভুলে গেলে 'আমি ভুলে গেছি' না বলে ও বলে, 'আমার মন হারিয়ে গেছে'। কথাটাইয় কেমন একটা আদুরে ভাব আছে, মিষ্টি লেগেছিল শুনতে আমার।
তবে সত্যি সত্যি যদি কেউ মন হারিয়ে ফেলে তাহলে ঘটনাটা কিন্তু একটুও মিষ্টি থাকেনা আর বরং প্রচণ্ড কষ্টের, ভয়ানক অসহায়ত্বের একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এবার দেশ থেকে ফিরবার পর থেকে, ভুলো মন কাউকে দেখলেই কথাটা মনে হয়। মনে মনে বলি, ওর মন হারিয়ে গেছে!
কারো কারো হারিয়ে যাওয়া মন ভুলের অতল থেকে আর কোনদিন ফেরে না, আর কেউ কেউ অনেক ভাগ্যক্রমে অতলের তলা ছুঁয়ে ফিরে আসা সেই মনকে আবার ফিরে পান।
২।
দেশে থাকতে তেমন দেখিনি। কিন্তু আমেরিকায়, এই ক্রমবর্ধমান আয়ুষ্কালের দেশে এসে, এ্যালঝাইমার ডিমেনশিয়া(Alzheimer's Dementia) এত দেখেছি এবং দেখছি নিত্য! 'মন হারিয়ে যাওয়া' শব্দটা বোধহয় এই রোগের রুগীদের জন্য-ই তুলে রাখা উচিৎ। এমন এক অসুখ এটি যেখানে রুগী সব কিছু ক্রমাগত ভুলতে শুরু করেণ। প্রথম প্রথম সমকালীন স্মৃতি শক্তি (short term memory) লোপ পায়; দিন-তারিখ, নাম-ধাম, পথ-ঘাট, হিশেব-নিকেশ উল্টোপাল্টা লেগে যায়। অনেকেই খেয়ে মনে করেন খাননি, আবার না খেয়ে মনে করে খেয়েছেন। আমার এক রুগীর কথা জানি, যিনি একদিন ৫০ বছর ধরে চেনা বাড়ির পথ ভুলে অনেক ঘণ্টা ধরে ঘুরছিলেন, গ্যাস শেষ হওয়ায় গাড়ি থামিয়ে নেমে এলে প্রতিবেশীদের একজন তাকে চিনতে পেরে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। তার আর ড্রাইভ করা হয়নি। আরেকজনকে দেখলাম গত সপ্তাহে, দোতলা বাড়ির নিচতলায় বসে উপর তলায় শুয়ে থাকা স্ত্রীকে খুঁজে পান না, বাড়ির ফোন থেকে স্ত্রীর সেল ফোন ফোন করে কান্না কাটি করেন। এখনও মনে হয় আমাকে চিনতে পারছেন, কিন্তু জানিনা আর কত দিন! তার চোখের দৃষ্টি পালটে যেতে দেখছি দ্রুত, কেমন যেন এক উদভ্রান্ত, হারিয়ে যাওয়া দৃষ্টি! চোখের মনি আছে ঠিক-ই কিন্তু তারায় সেই ঝিকিমিকি হারিয়ে গেছে কোথাও, পুরো শূন্য দৃষ্টি। আমার কাছে চোখকে মনের আয়না বলেই মনে হয়, যে আয়নায় মনের চেনা-অচেনা, ভাল-মন্দ, সুখ-দুঃখের ছায়া পরে। কিন্তু এইসব ভুলে পাওয়া মানুষের সেই মনটি-ই যেহেতু হারিয়ে যায়, সে আয়নায় আর কারো ছায়া পরে না, সে আয়না জুড়ে শুধুই শূন্যতার খাঁ খাঁ বিরান ভুমি।
ডিমেনশিয়ার রুগীদের অনেকেই প্রথম দিকে ভুলে যাবার ব্যাপারটা লুকিয়ে রাখতে গিয়ে অভিনয় শুরু করেন, কথা গুছিয়ে এমন করে বলেন, যে ভুলটুকু ঢাকা পরে যায়। আমি কিডনি বিশেষজ্ঞের কাজে জয়েন করবার পর পরই পেয়েছিলাম এক রুগীনীকে, ৮০ কাছাকাছি বয়েস, সাদা-চুলে, স্বর্ণ-বর্ণে, আর শিশুর সারল্য চেহারায় নিয়ে কি যে স্বর্গীয় লাগত তাকে দেখতে। কোমল গলায় কথা বলতেন, প্রতিদিন দেখতে গেলেই বলতেন যে তিনি আমার জন্যই অপেক্ষা করে আছেন। আমি অবাক হলেও ভাবতাম, হতেই পারেই; ডাক্তারের সাথে কথা বলতে তো চাইতেই পারেন। কিন্তু অল্প কয়েকদিন পরেই আবিষ্কার করলাম, একি কথাই প্রতিদিন বলেন এবং কিছুটা যেন অসমঞ্জস্য আছে তার কথায়। তখন একটু এদিক ওদিক ঘুরিয়ে প্রশ্ন করেই বুঝে নিলাম, অনেক প্রশ্নের কোন উত্তরই ওর জানা নেই। ও আসলে অনেক কিছুই বানিয়ে ভাবছেন এবং বলছেন, ভুলে যাওয়া অংশ গুলোকে জোড়াতালি তে জুড়ে দেবার ব্যর্থ চেষ্টায়। আমার সহকর্মীরাও জানালেন তার সিভিয়ার ডিমেনশিয়ার কথা। তাকে তার ৮৪ বছর বয়েসি স্বামী অনিঃশেষ ভালবাসায় যতদিন আগলে রাখতে পেরেছেন, তিনি বেঁচে ছিলেন। হঠাত করে স্বামীটির স্ট্রোক করে নার্সিং হোমে যেতে হলে আমার রুগীনীর সমস্ত কিছু বন্ধ হয়ে যায়। তাকে ডাক্তারের কাছে আনা-নেয়া বা খাওয়ানো দাওয়ানোর মত আর কেউ থাকেনা। এই রুগীনি মারা গেছেন আজ বেশ কয়েক বছর হোল। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই এরকম ঘটে, ডিমেনশিয়ার রুগী পরিচর্যাকারী অসুস্থ হয়ে গেলেই রুগীর নিজের আয়ুষ্কালও শেষ হয়ে যায়। আরো একজনের কথা মনে পড়ছে, তাকে একবার-ই দেখেছিলাম, তার বেশ কম বয়সে ভুলে যাওয়ার বাড়াবাড়ি হয়েছিল খুব। তার খেতে, ঘুমাতে, বাথরুমে যেতে কিচ্ছুই মনে থাকত না। কোথাও বসিয়ে দিলে সারাদিন বসে থাকতেন, কেউ খাইয়ে দিলে খেতেন। ব্যথা বেদনা সব ভুলে গেছেন ধীরে ধীরে, একসময়ের আরথাইটিসের যে প্রবল হাঁটু ব্যথা তাকে রাতের পর পর রাত জাগিয়ে রাখত, তাও আর তাকে স্পর্শও করত না। এই রুগীনিকে সাথে নিয়ে এসেছিলেন রাত ৪৬ বছরের বিবাহিত জীবনের সাথী, তার স্বামী। আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম,
-ও সব ভুলে গেছে, তোমাকে কি চেনে? ভদ্রলোক আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলছিলেন,
-আমি জানি ও আর জানে না আমি ওর কে, কি হই। কিন্তু ও যখন আমাকে দেখে তখন ওর চোখে কেমন যেন একটুকরো স্বস্তি বা আনন্দের আলো খেলে যায়। তাই বুঝি ওর চেনা সবকিছু হারিয়ে গেলেও হয়তো ভেতরে কোথাও আমার জন্য একটু হলেও বোধ পড়ে আছে আজও।
আমি হতবাক চোখে লোকটির দিকে তাকিয়ে ছিলাম বেশ কিছুক্ষণ, কিছুই বলার ক্ষমতা আমার ছিল না, সান্ত্বনা বাক্য তো নয়ই। ওই জুটিকে আর দেখিনি, হয়তো রুগীনি টি না খেয়ে খেয়ে খেয়ে একসময়...। লোকটির কথা মাঝে মাঝেই মনে পড়ে, তার বয়েস হয়েছিল, তারও অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা ছিল। তিনি কেমন আছেন কে জানে।
৩।
দীর্ঘকালীন ভুলে যাওয়া বা ক্রনিক ডিমেনশিয়ার কথা হোল এতোক্ষন। স্বল্পকালীন ডিমেনশিয়াও (যাকে আমরা বলি Acute confusional state বা Delirium) কিন্তু প্রায় একই রকম, শুধু পার্থক্য হোল সেটা কেটে যায় সহসাই। আমার একজন রুগীকে আবার ফিরে পেলাম আজ ভুলের অতল থেকে; সে গল্পটা এবারে বলি।
মিসেস 'এ্যালেন স্মিথ' আমার ডায়ালাইসিস রুগীদের একজন। তার সাথে আমার অনেক গল্প-গুজব হয় সাধারণত। তিনি অবসরপ্রাপ্ত প্রাইমারী স্কুল শিক্ষিকা, আমাকে প্রথম দিন-ই বলে দিয়েছিলেন, তাকে 'মিসেস বা মিস স্মিথ' বলে না ডাকতে। স্কুলে বাচ্চাদের মুখে ওই নামে ডাক শুনতে শুনতে তার আর ভাল লাগে না। তাকে আমি যেন 'এ্যালেন' বা 'এলি' বলেই ডাকি। তো, এ্যালেন-এর সাথে আমার অনেক কথা হয়। ওর স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছেই দিনকে দিন। ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড প্রেশার আর নষ্ট কিডনি জন্য ডায়ালাইসিস তো আছেই। গত বছর বেস্ট ক্যান্সার ধরে পড়েছে। বেশ অনেক দিন কিমোথেরাপি চলল। আবার এই বছরের প্রথম দিকে জানলাম, হার্ট ফেইল করছে ধীরে ধীরে। ওকে চোখের সামনেই ক্রমাগত নেতিয়ে পড়তে দেখছি শারীরিক ভাবে, তবে ওর মনটা এখনো আগের মতই চনমনে আছে, এখনো ভুল করে কোনদিন 'মিসেস স্মিথ' বলে ফেললে খুব রেগে যাবার ভান করেন, বকেও দেন মাঝে মাঝে আমাকে ভুল মন বলে। ওর সাথে আমার অসুখের কথা শেষ হয়ে যায় দ্রুতই, কারণ অন্তত ওর ডায়ালাইসিস মোটামুটি ঝামেলা-হীন চলছে এত কিছুর মাঝেও। প্রতিবার রাউন্ডেই ওকে অনেকটা সময় দিতে হয়, কারণ ও উদগ্রীব হয়ে বসে থাকেন আমাকে ওর নাতনীদের গল্প শোনাবার জন্য। ওর দুই ছেলে, বড় ছেলের দুই মেয়ে। আমারও দুই মেয়ে, তাই ওর মেয়েদের( গ্র্যান্ড ডটার্স দের) কথা আমাকে শুনতে হয় নিয়মিত, বিশেষ করে ওর বড় নাতনীর যে কিনা আমার ছোট মেয়ের সম-বয়েসী তার কথা। এই নাতনী কিছুদিন আগে নিউ ইয়র্কে এক ওপেরা তে গান গাইবার সুযোগ পেল, তার মুখে অপরিমেয় আনন্দ-আলোর বন্যা, সেই অসামান্য আনন্দে এলি-র দুচোখ জ্বলজ্বল করতে দেখছিলাম আমি সেদিন। তার কিছুদিন পরেই ওর ইরেগুলার হার্ট বিট ধরা পরল, আর ওর হার্ট ফেইলিওরেরও বাড়াবাড়ি হল খুব, ওকে ভরতি করতে হোল হাসপাতালে। ভালোই চলছিল প্রথম দুই-তিনদিন, এর পর খুব খারাপ একটা নিউমোনিয়ায় পরে এ্যাঅকে-এর একেবারেই নাস্তানাবুদ অবস্থা, ভীষণ দুর্বল হয়ে গেল। দুর্বল শরীরের এতটা ধকল ওর মনের-ও আর সহ্য হোল না। বিশেষ করে কড়া কড়া সব এন্টিবায়োটিক গুলো ওর মাথাটা উল্টোপাল্টা করে দিল; আবিষ্কার করলাম, ঠিকমতো সব কিছু মনে রাখতে পারছে না ও আর।
একদিন সন্ধ্যের আগে আগে ওকে দেখতে ওর রুমে গিয়েছি। ও আমাকে দেখেও একদম নির্বাক, আমি-ই জানতে চাইলাম কেমন আছে, ও চুপ করেই রইল। কাছে গিয়ে ওর চোখের দিলে তাকাতেই বুঝলাম ওর মন হারিয়ে গেছে, আলো নিভে যাওয়া, শূন্য দৃষ্টি ওর চোখে। এ্যালেন, আবার সেই খাঁ খা বিরান ভুমি। পরের দিন দিনের বেলায় একটু ভালো হলেও ওর বেভুল ভাবটা ঠিক কাটল না। ওর চোখের আয়নাটা কেমন ঘোলা হয়েই রইল, তাতে চোখ রেখে কিছুই দেখা যায় না। ওর এতো স্বাস্থ্য সমস্যার সাথে এইবার ডিমেনশিয়া যোগ হওয়াতে অর সত্তর উরধ স্বামী মিস্টার স্মিথ-ও ওকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে সাহস পেলেন না। হাসপাতাল থেকে ওকে একটা নার্সিং হোমে পাঠানো হল স্বল্পমেয়াদী রিহ্যাবিলিটেশনের জন্য। সেখান থেকেই ডায়ালাইসিসে আসছিল গত দু সপ্তাহ ধরে। না, ওর ভুলো মন ভালো হয়নি তেমন এর মধ্যে। আমি সেই পরিচিত এ্যালেন যে তার নাতনীদের গল্প করবার জন্য ব্যস্ত তাকে খুব মিস করছিলাম। ওর কাছে গেলে টুকটাক অভিযোগ করে, নার্সিং হোমে খাওয়া ভালো লাগেনা, ঘুম হয়না। আমি বোঝাই, অল্প কয়েকদিন-ই তো মাত্র; এই কেটে যাবে। ও নিরুত্তর থাকে, আমি সরে অন্য রুগী দেখায় মনোযোগ দেই। আজো রুগী দেখছিলাম, এখনো এ্যালেন-এর কাছ পর্যন্ত পৌঁছাই নি, ডায়ালাইসিস টেকনিশিয়ানদের একজনে এসে আমাকে বলল, মিসেস স্মিথ আমাকে ডেকেছেন। এগিয়ে যেতে যেতে ওর চোখের দিকে দৃষ্টি দেই প্রথমে, অর দু'চোখ আবার জ্বলজ্বলে উজ্জ্বল, অশেষ আনন্দের ঝলকানি সে চোখে। আমাকে দেখেই বলল,
-আমি আবার আমাকে খুঁজে পেয়েছি দেখ, আই ফাউন্ড মাইসেলফ! তুমি কি বুঝতে পেরেছিলে যে আমি হারিয়ে গেছিলাম, গত কয়েকদিন আমি কিচ্ছু মনে করতে পারিনি, তুমি কি বুঝেছিলে?
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম, হাসলাম। দেখছিলাম সেই পরিচিত এ্যালেনকে, যে আবার আমার অনেকটা সময় নিয়ে নেবে। আমার কিছু বলতে শুরু করবার আগেই শুরু ও করে দিল,
-তুমি জান ডক, আমার কিচ্ছু মনে ছিল না, আমি কি করে হাসপাতালে গেলাম, সেখান থেকে নার্সিং হোমে এলাম, কিচ্ছু না ...। জান কাল আমার নাতনীরা এসেছিল আমাকে দেখতে, বড়টা এসেই শুরু করল, গ্র্যাম্মা...।
ও কি বলছিল আমি আর ঠিক মতো শুনতে পাইনি, শুধু একটু একটু করে ওর ফিরে আসা দেখছিলাম। দেখছিলাম হারিয়ে যাওয়া কোন অতলস্পর্শী মনের মৃদু মন্দ পায়ে আবার ঘরে ফেরা, দেখছিলাম দু'চোখের আয়নায় বিরামহীন আঁকিবুঁকিতে একে যাওয়া জ্যোতির্ময়ী এক মনের কাব্য, দেখছিলাম শূন্য বিরান ভুমিতে আবার হাসি-কান্নায়, আনন্দ-বেদনায় সুখ-স্বপ্নের এক অলৌকিক বসতি গড়ে তোলা।
রীতু
মন্তব্য
রীতু,
অনেক ভালো লাগল আপনার অভিজ্ঞতা বর্ণন, ঠিক যেন গল্প পড়ার মত অনুভূতি হল। চিকিৎসাবিদ্যা নিয়ে এরকম আরও লেখা আশা করছি আপনার কাছ থেকে। লিখতে থাকুন অবিরাম।
নির্ঝরা শ্রাবণ
অনেক ধন্যবাদ, গল্প বলতেই চাইছি। ডাক্তারী তো আরা ব্লগে করতে পারিনা, কি বলেন!
লিখতে চেস্টা থাকবে। ভালো থাকুন।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
ওহ্ ডক, খুব ভালো লাগলো।
অনেক সুন্দর করে লিখেছেন। এ্যালেন এর স্মৃতি ফিরে আসাটায় আমি আর্দ্র হয়ে গেছি।
ভালো থাকবেন রীতু।
অনেক শুভকামনা জানবেন।
----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
আপনাকেও শুভ কামনা জানাই।
চারিদিকে এত নিরানন্দের মাঝে, দুঃখ মেলানো কষ্টের কথা শুনতে আর ভাল্লাগেনা রীতুদি, এবার আপনার ঝাঁপির আনন্দের ঝাঁপ'টা খুলুন।
----ইমরান ওয়াহিদ
কেউ কেউ লিখতে গেলে কি করে যেন দুঃখগন্ধী হয়ে যায় সব কিছু,
তারপরেও আবার চেষ্টা করবো।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
চমৎকার!
ডাঃ আনোয়ারা সৈয়দ হক রহস্যপত্রিকায় ধারাবাহিক কলাম লিখতেন একটা সময়ে। তিনিও তখন প্রবাসী, বোধহয় উচ্চতর শিক্ষার্থেই। মন হারিয়ে ফেলা এক রোগিকে নিয়ে একটা পর্ব ছিল, ঐ লেখাটার কথা মনে পড়ল।
সিরিজের সঙ্গে থাকছি।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আনোয়ারা সৈয়দ হক এর কিছু লেখা একসময় পড়েছি, বিভিন্ন পত্রিকায়, এখন আর মনে নেই।
অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন, সিরিজের সাথে থাকার জন্য। এই ব্লগে নতুন যেহেতু তাই সাথে থেকে উতসাহ যোগালে লিখে যাবার ইচ্ছে রাখি। ভালো থাকুন অনেক, শুভেচ্ছা।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
আপনার চমৎকার লেখা আমাকে লগ ইন করিয়ে ছাড়ল!
কী অদ্ভুত এই খুঁজে পাওয়া। আমিও পেশায় ডাক্তার, আপনার এই সিরিজটা বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়ি। সিরিজটা দুর্দান্ত হচ্ছে। নিয়মিত লিখুন, প্লিজ। শিগগিরি সচল হন।
শুভকামনা।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
গান্ধর্বী,
ব্লগে এসে একই পেশার কাউকে পেয়ে ভালো লাগল অনেক। সাথেই থাকুন। তাহলে সচল হওয়া সহজ হবে মনে হয়
অনেক শুভকামনা আপনার জন্যও।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
এত ভাল লিখলে কি করে হবে! ৫ তারার বেশী আর ত নাই! এদিকে আবার চোখেও জল। খুব, খুব মুস্কিল-এ ফেলেছ দিদি!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
'মন হারিয়ে ফেলা আবার খুঁজে পাওয়া ডাক্তারি গল্প বেশ লাগলো মাইরি। অনেক অনেক লিখুন। শুভকামনা, আপনার জন্য।
আপানাকেও শুভকামনা জানাই। ধন্যবাদ।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
এক লহমা,
সব তারা না দিয়ে কিছু জমিয়ে রাখা ভালো। আমি ভয়ে ভয়ে আছি সব তারা যদি শেষ হোয়ে যায়, তখন কি হবে!!!
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
অন্য স্বাদের মন ভাল করা গল্প। আপনার লেখার হাত বড় মিষ্টি॥
-আনন্দময়ী মজুমদার
অনেক ধন্যবাদ পড়বার জন্য।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
চমৎকার লিখেছেন 'ডক'!
আপনার বর্ণনা করার ক্ষমতা ইর্ষনীয়!
প্রথম অংশটা পড়তেই 'মন হারিয়ে গেল' যেন কোথায়!
দ্বিতীয় অংশটা পড়তে পড়তেই মাইকেল জে ফক্সের কথা মনে পড়ল (স্পিলবার্গের ব্যাক টু দ্যা ফিউচার -এর 'মার্টি')।
লোকটা ওই সিনেমার পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বলছিল যে, সবাই যখন তার মুভিটা নিয়ে, তার অভিনয় নিয়ে, তার শুটিংয়ের ঘটনাগুলো নিয়ে আলোচনা করে তখন তার কিছুই মনে আসে না।
ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা
মাইকেল জে ফক্স, আমার সেই ছোট্ট থেকে অনেক প্রিয় এক অভিনেতা, 'ফ্যামিলি টাইজ' দেখে দেখে। ওর হোল পারকিন্সনিজম( Parkinson's disease )। এ নিয়ে লিখব কোন একদিন ভাবছি।
অনেক ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...
ওহহো, পার্কিনসন্স আর আলঝেইমার গুলিয়ে ফেলেছি।
(এখন নিজেরই ভয় ভয় লাগছে, গুলিয়ে ফেললাম কেন? দুটো যে আলাদা অসুখ -সেটা তো আগে জানতাম)
Parkinson's নিয়ে লেখা আসুক, শিগগীরই!
ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা
নতুন মন্তব্য করুন