১।
আজ গাড়িটা অনেক দূরে পার্ক করেছি, ইচ্ছে করেই। সাইড ওয়াকের পাশে প্রবল সবুজ ঘাসের মধ্যে মধ্যে বিচিত্র রঙের সব ঘাস-ফুল ফুটে থাকে এসময়, হেঁটে যাবার সময় ওদের দেখবো বলে। এখানে দেশী সব ঘাস ফুল গুলো নেই। থাকলেও অবশ্য ওদের নাম বলতে পারতাম না। তবে এখানে যে সব বিদেশী ফুলগুলো ফুটেছে, নিজেকে অবাক করে দিয়েই তাদের অনেকের নাম জানি। খুব বেশী দেখা যায় উজ্জ্বল হলুদ রঙা ড্যান্ডিলায়ন, সাথে আছে ম্লান সাদা আর হালকা গোলাপী রঙের ক্লোভার, আরো দেখা যায় ম্যাজেন্টা এবং গোলাপী রঙা ভেচ। এদের দেখে দেখেই হাঁটছিলাম আস্তে ধীরে। আজ কাজে অতো তাড়া নেই। হঠাত-ই একটা খুব পরিচিত ছোট্ট নীলচে বেগুনী রঙা ফুল নজরে এলো, আমি কাছে গিয়ে ভালো করে দেখবার চেষ্টা করবো কিনা, ভাবছি। কিন্তু পাশে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন পরিচিত সহকর্মী দের একজন, সে আবার কি না কি ভাববে! সেকারণে ঠিক হোয়ে উঠল না। ওকে এড়াতেই দ্রুত পথটা পেরিয়ে হাসপাতালে ঢুঁকে পড়লাম। ভেবেছিলাম যাবার পথে আবার খুঁজে দেখব। কিন্তু হাসপাতালে ঢোকার পর হঠাত করেই সব কেমন জানি ব্যস্ত হোয়ে গেল। ফিরবার পথে ফুলটি খুঁজবার কথা মনে থাকলেও ঠিক কোন জায়গায় দেখেছিলাম মনে করতে পারিনি, হাতে সময়ও ছিলনা। আমি নিজেকেই নিজে তাড়া দিচ্ছিলাম, তোমার কথা খুব মনে পড়ছিল।
তুমি নিশ্চয় হাসছ এতক্ষণে। তোমার মনে পড়ছে আমাদের পথে পথে হেঁটে বেড়ানোর দিনগুলির কথা, বিশেষ করে মামা বাড়ি থেকে ধান ক্ষেতের সরু আল পেরিয়ে ধোপা বাড়ী যাবার পথে তোমার বার বার এই ফুল, সেই ফুল দেখতে পথে আটকে পড়ার কথা। আমি দ্রুত হেঁটে অনেকটা এগিয়ে গেছি, আর ক্রমাগত তোমাকে তাড়া দিয়ে যাচ্ছি, এসব ফুল দেখতে হবে না। জলদি এসো তো। তুমি আমাকে ঘাস ফুল চেনাতে চেষ্টা করছ। আর বিরক্ত আমি বলছি, এসবের নামধামে একদম দরকার নেই আমার। অথচ আজ! আমি জানি, তুমি বলছ, খুব তো বলেছিলি, এখন!
হ্যাঁ, আমিও আজকাল তোমার মতো ঘাসের ফুল দেখে বেড়াই। একে ওকে জিগ্যেস করে ঘাসের ফাঁকে ফাঁকে লুকিয়ে থাকা, বা আগাছার বনে ফোটা বর্ণীল সব ফুলের নাম জানার চেষ্টা করি। আমি জানি, তুমি খুব হাসছ। কিন্তু জান কি, আমিও নিজে নিজেই হাসি নিজের পাগলামি দেখে।
২।
বাড়ি ফিরবার পথে স্থানীয় মাছের দোকানে আজ নামতেই হবে একবার। ডিপ ফ্রিজে রাখা মাছ ফুরিয়ে গেছে বেশ কিছুদিন, দেশী দোকানে যাবার মতো সময় হচ্ছে না। বিদেশী বিস্বাদ চিকেনে আজ আমার কিছুতেই চলবে না আর। এই দোকানের মাছ স্থানীয় বে থেকে ধরা বলে বেশ তাজা, স্বাদেও ভালো। শুধু সমস্যা হোল, সারাদিনের শেষে বাড়ী ফিরে আমাকে আবার মাছ ধুয়ে বেছে পরিষ্কার করতে হবে, তারপর ভেজে রাঁধতে হবে, তারপর সবার মিলে রাতের খাওয়া শেষ হলে হাঁড়িপাতিল-থালাবাসন গুছিয়ে রেখে গা থেকে মাছের গন্ধ তাড়াতে স্নানে নামতে হবে। শুধু এক মাছের জন্য কতো ঝামেলা, আমি তবুও আজ মাছ নিয়েই বাড়ি ফিরব।
আমি জানি, তুমি এবারে হাসছ না, অবাক হচ্ছো না। তুমি এখন একটু বিষণ্ণ। তোমার সেই ড্যাম কেয়ার মেয়ে, যাকে দিয়ে প্রায় কোনদিন-ই মাছ কুটাতে পারোনি তুমি, সে সারাদিনের পরে সামান্য মাছের জন্য এতো কষ্ট করবে। তুমি মাছ কুটতে বললেই আমি মাছের বিচ্ছিরি গন্ধের কথা বলতাম। তুমি বলতে, না কুটলে রাঁধবি কি করে, আর এই যে এতো ভালবাসিস মাছ খেতে, খাবি-ই বা কি করে। আমি বলতাম, আমার বয়েই গেছে মাছ কুটতে, কেউ কেটে কুটে ধুয়ে দিলে আমি রাঁধলেও রাঁধতে পারি। নাহয় চিকেন খেয়েই দিব্যি আমার কেটে যাবে এই জীবন। তুমি মুখ টিপে হেসে বলেছিলে, দেখা যাবে।
সে দেখা তোমার হয়েছে আজ অনেক বছর। আমি এদেশে এসে মাস দুয়েকের মধ্যেই সাউথ ডেকোটা রক্ত জমানো শীত থেকে তোমাকে ফোন করে জানতে চাইলাম, মাছ কি করে রাঁধতে হয়। তুমি অবাক হয়েছিলে, কিন্তু একবারও জানতে চাও নি, আমার কেন আর চিকেন ভালো লাগছিল না। আমি নিজেই চিকেনের দুর্বিষহ স্বাদের কথা বলেছিলাম তোমাকে। তুমি আমাকে মাছ রান্না শিখালে ফোনে ফোনে। চিকেন এখনও দু একবেলা খাবার পর দুর্বিষহ মনে হয়, সেই মাছেই ফিরে যাই। আমি নাকি বেশ রাঁধি মাছ, যারা খেয়েছেন, তারা সবাই বলেন। শুনতে আমার ভালোই লাগে। তবে তোমাকে বলি, তোমার ধারে কাছেও যায় না আমার মাছ রাঁধা। ওরা তো তোমার রান্না খায়নি, তাই বোঝে না। মাঝেমাঝে ভাবি, তোমাকে কাছে পেলে ভাল করে একটু শিখে নেয়া যেতো।
আমি জানি; তুমি অবাক হও আমার বদলে যাওয়া দেখে। আমি নিজে যে আরও বেশী অবাক হই, তা জান কি!
৩।
ফিরতি পথে ঝড়ে-জলে একাকার, পড়ন্ত বিকেলে কি দুড়দাড় বৃষ্টি। মাছ রান্নার ইচ্ছেটাই মরে গেল। আজ বরং এক কাপ চা হাতে দেউড়িতে বসে সন্ধ্যে নামা দেখা যাক। তুমি আর আমি এমন প্রায়ই করতাম, বিশেষ করে টাংগাইলে থাকতে। সেসময় বড়দা, বড়দি এমনকি ছোট্ট কুট্টিও বাসার বাইরে চলে গেছে পড়তে। আমি দুপুরের পর কুমুদিনী কলেজ থেকে ফিরলে তোমার সাথেই কাটে আমার বিকেলটুকু। বরিশালের বন্ধুদের ফেলে এসে আমি কেমন হঠাত বন্ধুহীন হয়ে গেলাম। দুজনের নিঃসঙ্গতায় তোমার আমার অনাবিল বন্ধুত্বের গভীর ব্যপ্তি সে সময়টাতেই। বিকেলে কারো হাতে বানানো চা খাওয়াটা ছিল তোমার বিলাসিতা। আমি-ই বানাতাম, চা। তুমি বড্ড খুঁতখুঁতে ছিলে চা নিয়ে। চিনি দুধের কম-বেশী বা কাপের থেকে ছলকে পিরিচে পড়ে যাওয়া কয়েক ফোটা চা এসব সব নিয়েই তোমার সাথে আমার খুনসুটি লেগে থাকত। আমার রাগ হোত খুব মাঝে মাঝে তোমার এতো নটঘটি দেখে, গজগজ করতাম তোমার আড়ালে। আবার যেদিন সব কিছু তোমার পছন্দ মতো হোত সেদিন তোমার উদ্ভাসিত মুখ দেখে কি যে আনন্দ হোত আমার।
তোমার চায়ের খুঁতখুঁতির পুরোটুকু আমি পেয়েছি উত্তরাধিকার সূত্রে। নিজে বানিয়ে খেতে হবে বলে বিকেলের চা খাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছি। কেউ বানিয়ে দিলেও রক্ষা নেই, দুধ-চিনি, ঘনত্ব ঠিকঠাক না হলে সেই তোমার মতো করেই আমি ভীষণ নাখোশ হই। আমার চা বানানোর এই অতীব জটিল কাজটি করতে তাই খুব উৎসাহী কাউকে পাওয়া যায়না সহজে। আজ পাওয়া গেছে, আজকের চা টা ঠিক মনোমত না হলেও, আজ রাগবো না ঠিক করছি। আজ সন্ধ্যে নামা দেখব খু্ব মনোযোগে, তুমি আমি দুজনে।
৪।
চায়ের কাপ হাতে বসে বসেই বাদলের সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত নামিয়ে দিলাম আজ কি করে যেন। অন্ধকারে বসে বসে হাতে ধরা শূন্য চায়ের কাপের দিকে তাকিয়ে এমন বৃষ্টির কিছু রাতের কথা মনে পড়ছে। তোমাকে ছেড়ে চিটাগাং-এ আমি তখন। মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেলে এমন বৃষ্টি নামলে একতলার সাহারা-শিল্পী-আসমা ওরা জোর করে আমাকে ধরে নিয়ে যেত আবৃত্তি শোনাতে। মাধবী ঘন করে চা বানাতো, রাত জেগে চলত আমাদের আবৃত্তি এবং আড্ডা। সেখানে জীবনানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, হেলাল হাফিজ, পূর্ণেন্দু পত্রী এদের কত কত কবিতা হলেও একটা কবিতা প্রায়-ই ওরা আমাকে আবৃত্তি করতে বলতো, বুড়ো ঠাকুরের 'মনে পড়া'। আজও আমার স্পষ্ট মনে আছে, প্রথম বার যখন আবৃত্তি করতে যাই, আমি বলেছিলাম, এ খুব অচেনা এক অনুভূতি। আমার তো ঠিক এই অভিজ্ঞতা নেই, কষ্ট করে আবেগ আনতে হবে। জান, সেদিন বড়দা, বড়দি, কুট্টির মত আমিও বাড়ির ছেড়ে চলে আসার, মেডিক্যাল কলেজে পড়তে আসার জন্য তোমাকে একা করে দিয়ে চলে আসবার দিনটির কথা ভেবেছিলাম। তুমি সেদিন সন্ধ্যে থেকে শুরু করে সারা রাত ধরে কেঁদেছিলে, ভোরে যখন আমি বাবার সাথে চলে আসছি চিটাগাং এর উদ্দেশ্যে, তখনও তুমি আকুল হোয়ে কাঁদছিলে। আমি তোমার অঝোর কান্না দেখে কাঁদলেও নিজেকে অনেক শক্ত রেখেছিলাম, সেই প্রথম তোমাকে আমার বোঝাতে শুরু করা। আমি ক্ষণে ক্ষণে আড় চোখে তোমার দিকে দেখছিলাম আর দারুণ বিস্ময়ে বুঝতে চেষ্টা করছিলাম, আমার সেই কঠিন শাসক মা তুমি সত্যি সত্যি আমাকে কতোটা ভালবাসতে, তোমার দুচোখের বাঁধ ভাঙা প্লাবন, তোমার ভেজা আঁচল চুইয়ে পড়া সবটুকু জল কেবল আমার জন্যে!
আমার আবৃত্তি তে আবেগের খুব একটা অভাব হয়নি তারপর। আর ২০০৫ এর ১৩ই জুন এর পর থেকে, ............!! তবুও, গুনগুনিয়ে গাওয়া সুর, আশ্বিনের ভোরের শিউলি বন, শিশির ভেজা হাওয়া, সাঁঝি ভরে তুলে আনা ফুল, পুজোর গন্ধ, নীল আকাশ, শোবার ঘরের জানালা সব ঠিক থাকলেও 'মাকে আমার পড়ে না মনে' টা কখনোই ঠিক মনে হয়নি, জান। তোমাকে না মনে পড়ে আমার কি একটি দিনও যায়, না যেতে পারে!
৫।
রাত গড়িয়ে গভীর হোল, আমার আজ অকারণে খুব কান্না পাচ্ছে। সেই ছোট্ট বেলার অকারণ ছিঁচকাঁদুনী আমি'র মতো কাঁদতে ইচ্ছে করছে খুব। আমি জানি তুমি চলে যাওনি, তুমি আছ আমার খুব কাছাকাছি, আমি যখন কথা বলি তুমি ঠিক ঠিক শুনতে পাও, তবু আমার যে আজ কি হোল!
তোমার তো মনে আছে, ছোট্ট বেলায় কিছু নিয়ে অভিমান হলে, কেউ রাগ করে কিছু বললে বা বকা দিলেই আমি কাঁদতে শুরু করতাম, থামতাম না সহজে। প্রায় সময়-ই সেসব ছিল অকারণ কান্না। তুমি আমাকে বোঝাতে প্রথমে, তারপর বকা দিতে। তারপরও না থামলে অনেক সময় এসে বেশ কষে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলতে, নে, এইবার কাঁদ। অকারণে কাঁদবি কেন?
তোমার সেই থাপ্পড়টা আজ আমার খুব খুব দরকার; আজ আমি অকারণে খুব কাঁদছি, মা।
মন্তব্য
লেখা যেমন সুন্দর আশা করেছিলাম তাই। কিন্তু এ লেখা পড়ার পর আমার পক্ষে এর বেশী ...
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আমি আসলে কারো মন খারাপ করে দেবার উদ্দেশ্যে লিখিনি, বোঝাতে চাইছিলাম যে খুব সাধারণ দিনগুলি, সামান্য সময়গুলো এক এক সময় কি অমূল্য হোয়ে যায়; আমরা আগে থেকে কখনো জানতে পারিনা।
তবে এই লেখা পড়ে যাদের মা আছেন, তারা যদি মায়ের সাথে কাটানো আপাত সামান্য সময়টুকুকে একটু অন্য রকম করে দেখেন তাহলে আমার লেখা সার্থক।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
অসাধারণ লেখা! অনেক অনেক ভাল লাগা..... -মোঃ জাকির হোসেন
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
শেষমেশ কাঁদিয়ে ছাড়লেন।
নামটা বোধহয় দিতে ভুলে গেছেন। ভালো থাকবেন
নির্ঝরা শ্রাবণ
কাঁদাতে চাইনি, মা যে কত অমূল্য একজন সেটাই বোঝাতে চেয়েছিলাম। সত্যি দুঃখিত। ভালো থাকবেন।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
রীতুদি আমি যদি তোমার কাছে থাকতাম তাহলে যতক্ষণ তোমার কান্না না থামত ততক্ষণ তোমাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকতাম। তুমি করে বলায় কিছু মনে কোর না, কেন যেন তোমাকে খুব আপন বলে মনে হল
ফাহিমা দিলশাদ
ফাহিমা,
তুমি আমার মন ভালো করে দিলে! দুঃখিত, অনেক দেরী হোল তোমার এমন আদোর মাখা কমেন্ট এর উত্তর দিতে। অনেক শুভকামনা, ভালো থেকো।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
এমন করে ও কেউ লিখতে পারে, চোখে জল চলে এল একেবারে।
। অনেক কৃতজ্ঞতা ।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
এমন লেখায় কী বলতে হয় ঠিক জানিনা.....
তবে আপনার লেখা পড়তে চাইবো আবারও সেটা বিলক্ষণ বলতে পারি!
শুভকামনা থাকলো।
আমিও আরো লিখবার ইচ্ছে রাখি, শুভেচ্ছা জানবেন।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
চমৎকার! অনেক অনেক শুভ কামনা।
এ এস এম আশিকুর রহমান অমিত।
ধন্যবাদ।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
আপনার লেখাটা পড়ার সময় এই এডটার কথা মনে পড়তেছিলো। খুঁজে বের করে তাই টাঙ্গায়ে দিলাম এখানে...
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধুগোর টাঙ্গিয়ে দেওয়া এডটার চেয়ে গভীরভাবে বলারমতো আরতো কিছু নেই, শুধু বলবো লিখে যান।
চেষ্টা থাকবে।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
অনেক ধন্যবাদ ধূসর গোধুলী, যদিও এডটা দেখে মন খারাপ হোয়ে গেল। এতো ছোট্ট বয়েসী কেউ এমন করে বলবে ভাবতেও মন ভিজে যায়।
বেশ কয়েক বছর আগে দেশে গিয়ে আরেকটা এড দেখেছিলাম, সেখানে একটা বাচ্চা মেয়ে মাকে চিঠি লিখে হিলিয়াম গ্যাসে ভরা বেলুনে বেঁধে আকাশে উড়িয়ে দেয়; সেট দেখে অনেক দিন চোখ ভিজেছে।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
সুন্দর লেখা!
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
কান্নাটান্না যাই আসুক, এরকম লেখা পড়ার পর লেখালেখি নিয়মিত করে যাবার অনুরোধ করে যেতে হয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
লিখে যাবার ইচ্ছে রাখি, পড়বার জন্য ধন্যবাদ।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
লেখায় একাকীত্বতা/নিঃসঙ্গতা ঝরে পড়ছে। স্বাভাবিক। আমিও বুঝতে পারি।
সুদীর্ঘ কাল বিদেশ বিভূঁইয়ে জন বিরান এলাকায় (শেবয়গান, উইসকনসিন) একা একা পার করেছি। এক সময় নিজের হাতে পানিটাও তুলে খেতাম না, অন্য কেউ এসে খাইয়ে দিয়ে যেত। সেই আমি নিজে নিজেই পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে কত কিছু রাধতে শিখেছি। সেই প্রথম বুঝতে পেরেছিলাম ভাত রাঁধার মত কঠিন কাজ পৃথিবীতে আর নেই। ঠিক মত ভাত রাঁধতে লেগেছিল পাক্কা ৪ মাস। এর পর সব্জী, মাছ, বিফ, চিকেন আরো কত কি শিখলাম। দেশ কিম্বা বিদেশ হউক, আমার মতে ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে সবাইকে রান্না শেখানো উচিত। রান্নার মত এত উপকারী বিদ্যা খুব কম আছে।
আপনার লেখা নিয়মিত পাব বলে আশা রাখি। চলুক।
সোহেল লেহস
অনেক ধন্যবাদ, ঠিক বলেছেন রান্না জানা একান্ত জরুরী একটা কাজ।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
আর যাদের মা নেই?
আমার জন্য আপনার লেখায় কিছু নেই। আছে শুধু ...
আপনার লেখা আমি আর পড়বোনা রীতু।
আপনার জন্য শুভকামনা।
ভালো থাকবেন।
------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
আপনার মন্তব্য পোরে কয়েক মিনিট চুপ করে বসে রইলাম, সত্যি কি বলবো ?
যাদের মা নেই, তারা আমার সাথে 'অকারণ ছিঁচকাঁদুনী'(?) কান্নায় যোগ দিতে পারেন। কিন্তু কাউকে কাঁদতে ডাকা সহজ নয় বোধহয়।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
১।
ঢুঁকে > ঢুকে, হঠাত > হঠাৎ, হোয়ে > হয়ে, হোল> হলো, কিন্তু জান কি> জানো কী, টাংগাইলে > টাঙ্গাইল, হোত> হতো, সাঁঝি > সাঁজি ভরে, জান> জানো।
একটা ভাল লেখায় এইসব টাইপো ধরা খুব অন্যায়।
কিন্তু এত চমৎকার লেখায় একটা টাইপো থাকাটাও কি ঠিক?
২।
আপনি চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে পাশ করেছেন?
আহা!
(জন্ম/কর্মসুত্রে) চাটগাঁয়ের লোকজন সবসময় বস হয়।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আমার বানান ভুল ধরলে মুশকিলে আপনি আর আমি দুইজন-ই পরবো। অনেক বছর তেমন বাংলা না পড়ায় বানান সব ভুলে গেছি, চোখের দেখায় যে বানান ভুল-শুদ্ধ আগে ধরতে পারতাম, এখন সেই ক্ষমতা প্রায় লোপ পেয়েছে। অভ্রে লিখি, এডিট করতে গেলে যেসব অপশন দেখায় সেটা থেকে পছন্দ মতো বেছে নেই, বুঝতে পারছি আজ যে অনেক সময়-ই ভুল করি।
আপনি মনেহয় বানানে খুব পাকা, সেদিন চমৎকার একটা ই-বুক পড়তে গিয়ে জানলাম।
আমার বানান শুদ্ধ করে দেবার দায়িত্ব টা কাকে দেব ভাবছি!
আমি জন্ম সূত্রে নই, মেডিক্যাল পড়বার সুবাদে চট্টগ্রামের বলতে পারেন। কাজ করিনি পাশ করবার পর ওখানে আর যদিও।
অনেক শুভ কামনা রইল।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
নতুন মন্তব্য করুন