অরগ্যানিক ইলেক্ট্রনিক্সঃ ভবিষ্যতের পরশ পাথর (পর্ব-৫)

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ২১/০৬/২০১৪ - ১২:১৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ব্যস্ততা আমায় দেয় না অবসর !! এ পর্ব লিখতে লিখতে সময় বয়ে গেল যে! দুঃখিত সেজন্যে।

গত পর্বের শেষে কথা দিয়েছিলাম কিভাবে কার্বনের চেইন, বাকি-বল, গ্রাফিন ইত্যাদির মধ্যদিয়ে ইলেকট্রনের প্রবাহ পাওয়া যায় সে নিয়ে আলোচনা করবো; আলোচনা করবো এই পরশ পাথরের গবেষণা কতদূর এগুচ্ছে, আমরা কতদূর যেতে চাই সেসব নিয়ে। আসুন তাহলে শুরু করি।

হাইব্রিডাইজেশনের কথা বলেছিলাম; ৩ রকম ভিন্ন ভিন্ন হাইব্রিডাইজেশনের কারণে কার্বন ইচ্ছেমত জোড়া লেগে তৈরী করে বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা। যেমন, কার্বন একটার পর একটা বসে তৈরী করে লম্বা চেইন (পলিমার) কিংবা চক্রাকারে একটার সাথে আরেকটা লেগে তৈরী করে বেনজিনের ষড়ভূজের চক্র, যা আবার পাশাপাশি বসে তৈরী করে ষড়ভূজের জাল (গ্রাফিন) অথবা ষড়ভূজের বড় একটা বল (বাকি-বল/ফুলেরিন) ইত্যাদি। এই ৩ রকম হাইব্রিডাইজেশনের মধ্যে একরকমের হাইব্রিডাইজেশন আছে যা আমাদের ইলেকট্রন প্রবাহের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মনে আছে নিশ্চয় সেই শেষের দিককার ইলেকট্রনের শুন্যপথ আর প্রবাহ পথের কথা? এই বিশেষ রকম হাইব্রিডাইজেশনের কারণে ২টি কার্বন পাশাপাশি বসলে তাদের শেষের ১টি করে ইলেকট্রন এমন এক অবস্থাতে থাকতে পারে যে বাহ্যিক ইন্ধনে (যেমন ভোল্টেজ পার্থক্য ইত্যাদি) সেটি প্রবাহপথে উঠার শক্তি পায়। মানে কিনা, তখন তা প্রবাহিত হতে পারে!! তারমানে, আমরা ঐ জৈব কার্বনের ঐ বিশেষ হাইব্রিডাইজেশনের মাধ্যমে তৈরী বস্তু থেকে ইলেকট্রনের প্রবাহ, মানে কিনা, বিদ্যুৎ প্রবাহ পেতে পারি!!

পরশ পাথর বানানোর ল্যাঠা চুকে বুকে গেল তাহলে! এখন শুধু এই রকম হাইব্রিডাইজড কার্বনের বস্তু বানাও আর বাইরের ইন্ধন দাও। ব্যস! তাহলেই ইলেকট্রনের প্রবাহ পাওয়া যাচ্ছে আর তখন ইচ্ছেমত এটা ওটা বানানো তো কঠিন কিছু না!

কিন্তু সমস্যাটা আসলে ঐ বিশেষ রকম বস্তু বানানোতেই! মনে আছে নিশ্চয়, যে কোন কিছু বানাতে হলে আমাদের একমাত্র উপায় রাসায়নিক বিক্রিয়া? এই শর্তে এই আপাত সহজ একটা বস্তু রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বানানো আসলে কিন্তু খুবই কঠিন!

অনেকগুলো সমস্যাই এক্ষেত্রে মোকাবেলা করতে হয় সিন্থেটিক কেমিস্টদের, যারা কিনা এগুলো বানায়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঐ যে প্রবাহপথের মসৃণতা, সেটাকে কতটা মসৃণ করে তৈরী করা যায়-সেই সমস্যা মোকাবেলা করা। বুঝিয়ে বলছি।

সিলিকনগুলোকে পাশাপাশি বসিয়ে যে প্রবাহপথটা তৈরী করা যায় সেটা হয় খুবই মসৃন; ইলেকট্রন চলতে কোন বাঁধাই পায় না। এরকম মসৃণ প্রবাহপথ বিশিষ্ট সিলিকনকে মোটাদাগে আমরা বলতে পারি ক্রিস্টালাইজড বা স্ফটিকাকার বা নিয়াতাকার। মানে কিনা, পাশাপাশি সিলিকন এমনভাবে সুন্দর, নিয়মিত সজ্জাতে বসে থাকে যে তাদের প্রবাহপথটা একই উচ্চতায় থাকে। একবার একটি ইলকট্রন সেখানে উঠতে পারলেই হলো, তার আর কোন উঁচু-নিচু পথ পাড়ি দিতে হয় না। বেশ আরামেই এ মাথা থেকে ও মাথায় পৌঁছায়-বলতে গেলে কোন বাঁধাই পায় না। এখন চিন্তা করুন, যদি ঐ চলার পথটা খানাখন্দে ভরা থাকে? কিংবা যদি এমন হয় যে বেশ কিছুক্ষন গেল, তারপরে হঠাৎ এক বিরাট গর্ত, তাহলে? আবার ধরুন, ঐ চলার পথে আছে উঁচু উঁচু পাহাড়, তাহলে? কিংবা কতদূর যেয়ে দেখা গেল পথটাই শেষ, এটা আসলে সঠিক পথই না, তাহলে? তাহলে যেটা হতে পারে সেটা হচ্ছে ইলেকট্রন টুপ করে গর্তে পরে যেতে পারে; এমাথা থেকে রওনা দিলেও আপনি আর তাকে ঐ মাথায় পাচ্ছেন না। আবার ঐ উঁচু পাহাড় ডিঙ্গিয়েও হয়ত সে আসতে পারলো না; বা অল্পকিছু আসতে পারলো, বাকিরা আটকা পরে গেল। অথবা পথই পুরোপুরি পেল না, কেউই আসলো না ও মাথায়। এই রকম 'হিজিবিজি হিজিবিজি' প্রবাহপথওয়ালা বস্তুকে মোটাদাগে আমরা বলতে পারি এমরফাস বা অনিয়াতাকার। তো বুঝতেই পারছেন, এইরকম অনিয়াতাকার কোন কিছুর মধ্যদিয়ে বেচারা ইলেকট্রন চলবেই বা কি করে! তত্ত্বীয়ভাবে এমন আপাত সহজ ব্যবস্থা বাস্তবে তৈরী করা তাই চাট্টিখানি কথা নয়!

আপনি যদি খুব বেশি না, এই ধরুন বছর ৩০ আগে, ঐ বিশেষ হাইব্রিডাইজড ব্যবস্থায় ৫০,০০০ কার্বনের একটি নিয়াতাকার পলিমার বানাতেন আর তার মধ্যদিয়ে ইলকট্রনের এই চলার ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করতেন, আপনি নির্ঘাত নোবেল পুরষ্কার পেয়ে যেতেন! কিন্তু তা যে আর হচ্ছে না! এ জে হিগার, এ ম্যাক্ডার্মিড এবং এইচ শিরাকাওয়া এই কাজটি করে ২০০০ সালে রসায়নের নোবেল পুরষ্কারটি বাগিয়ে নিয়েছেন। পরবর্তীতে, এই কেবল বছর দশেক আগে, ২০০৪ সালে এন্দার গ্যেম আর কন্সতান্তিভ নভাস্লভ পরীক্ষাগারে ঐ ষড়ভূজের জাল, মানে কিনা ঐ গ্রাফিন বানানোর কৌশল দেখিয়ে নোবেল বগলদাবা করেছেন ২০১০ সালে।

যাইহোক, তাহলে বুঝতেই পারছেন বিশেষ হাইব্রিডাইজড ব্যবস্থায় কোন বস্তু বানালেই সেটা আমাদের প্রাণ-ভোমরা নয়; কতটা নিয়াতাকার বানাতে পারছেন তার উপরই নির্ভর করে সেই বস্তুটা প্রাণ-ভোমরা শ্রেণীতে পরবে কি পরবে না। এখন কথা হচ্ছে, কতটা নিয়াতাকার বানানো সম্ভব? ১০০ ভাগ নিয়াতাকার বলতে গেলে অসম্ভব, সেটা সিলিকন দিয়েও তৈরী করা যায় না। তবে এও ঠিক যে কতটা নিয়াতাকার হলে তাকে প্রাণ-ভোমরা বলবো তার কোন সঠিক মাপকাঠি আসলে নেই। তবে খুবই মোটা দাগে বলা যায়, একটা বস্তু থেকে আপনি নূন্যতম মাত্রার প্রবাহ পাচ্ছেন কিনা তা থেকেই নির্ধারণ করা যায় বস্তুটি প্রাণ-ভোমরা শ্রেণীর কিনা। এখন তাহলে এটা বুঝতে হলে আপনাকে ঐ কার্বনের বস্তুটা দিয়ে কোন 'ডিভাইস' বানাতে হবে। মানে কিনা, বস্তুটার দুমাথায় আপনি ভোল্টেজ পার্থক্য দিয়ে প্রবাহ মাপার চেষ্টা করবেন এবং দেখবেন কতটা প্রবাহ পাওয়া যাচ্ছে। তা থেকে আপনি বলবেন এটা আসলে কোন কাজের কিনা, কাজের হলে কতটা কাজের, কি কারণে এর প্রবাহ এমন হলো, কি করলে এর প্রবাহ হয়ত বাড়ানো যেত ইত্যাদি ইত্যাদি। বুঝতেই পারছেন, এই কাজগুলো আর ঐ সিন্থেটিক কেমিস্টরা পারে না, এগুলো করে এক্সপেরিমেন্টাল ফিজিসিস্টরা। আবার তারা এসব নিয়ে গবেষণা করে যে পরামর্শগুলো দেয়, তা নিয়ে সেসবের তত্ত্বীয় ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করে থিওরীস্টরা (তত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী বা রসায়নবিদরা)। এর সাথে সাথে এসব প্রাপ্ত জ্ঞানগুলোকে কাজে লাগিয়ে কম্পিউটেশনাল ফিজিসিস্ট বা প্রোগ্র্যামাররা প্রাণ-ভোমরার বিশেষ মডেল তৈরী করার চেষ্টা করে কম্পিউটার সিমুলেশন/মডেলিং এর মাধ্যমে। এসব থেকেই ধারণা নিয়ে সিন্থেটিক কেমিস্টরা নতুন, হয়ত আগের চেয়ে ভাল, উন্নত কোন প্রাণ-ভোমরা তৈরী করার চেষ্টা করে কিংবা আগেরটার উন্নতি করার চেষ্টা করে।আবার সেগুলো হাতে আসে এক্সপেরিমেন্টাল ফিজিসিস্টদের; তারা আবার তখন বিভিন্ন ডিভাইস বানিয়ে এটা ওটা গবেষণা করে; ওর মধ্যেকার পদার্থবিজ্ঞানটাকে বুঝতে চায়। কি করলে আরও ভাল হত সেটা বের করতে চায়। সেইগুলো জেনে কেন এমন হোল, সেসবের ব্যাখ্যা দিতে লেগে পরে তত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী বা রসায়নবিদেরা। ভারী ভারী কোয়ান্টাম কপকচানি চলে, চলে অনেক অনেক অঙ্ক কষাকষি। সেসব জ্ঞান থেকে কম্পিউটারে কেমন হতে হবে কার্বনের তৈরী প্রাণভোমরাটা সেইসব মডেল বানায় কম্পিউটারে দক্ষ বিজ্ঞানীরা। আক্ষরিক অর্থেই, এই দিককার গবেষণা তাই যাকে বলে মাল্টি-ডিসিপ্লিনারী। আপনার ভাল রসায়নবিদ দরকার, দরকার ভাল পরীক্ষাগার-পদার্থবিজ্ঞানী, দরকার ভাল প্রোগ্রামার আবার দরকার তত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী বা রসায়নবিদ। বুঝতেই পারছেন, হ্যাপা কম নয়! আর অবশ্যই এসব গবেষণা আর তার কাঠামো, গবেষণাগার, গবেষকদের বেতন-ভাতা ইত্যাদি ইত্যাদির জন্যে কিন্তু অনেক অনেক টাকারও দরকার!

যাই হোক, যেভাবে বলছি তত সহজে যদিও কিছু হয় না, তবে এমনিভাবেই গবেষণার মাধ্যমেই আমরা একটু একটু করে এগিয়ে যাই! আমাদের জানা জ্ঞান আমরা কাজে লাগাই পরের ধাপে উঠতে, আরও একটু সামনে এগিয়ে যেতে। এভাবেই আমরা নিজেদেরকে আরও একটু ভবিষ্যতে নিয়ে যাই। গুগোল স্কলারে গেলে দেখেছেন নিশ্চয়, খুব সুন্দর একটা কথা লেখা থাকে। 'Stand on the shoulders of giants'। শাব্দিক অনুবাদ করলে কি 'বৃহতের কাঁধে দাঁড়াও' হয়? তা যাই হোক, কথাটা কিন্তু আমার খুব পছন্দের। কি চমৎকার কথা! জ্ঞানের রথী-মহারিথীরা এখন পর্যন্ত যেটুকু জ্ঞান সৃষ্টি করলো, সেগুলো সম্বল করে দাঁড়াও; আরও জ্ঞান সৃষ্টির পথে চলো। তোমার কাঁধে ভর করে তখন আবার দাঁড়াবে নতুন কেউ। আর এভাবেই আমরা আসাধ্য সাধন করে চলবো নিরন্তর।

আজ এটুকুই থাকলো। আমরা প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছি আমাদের গল্পের। আসছে পর্বই হয়ত শেষ পর্ব হবে। সেখানে আলোচনা করবো আমাদের এই কাঙ্খিত প্রাণ-ভোমরা এখন পর্যন্ত কতটা সাফল্য পেল, আর কতদূর যেতে হবে সেসব বিষয় নিয়ে। বিশেষ করে কেন এই গবেষণাটা খুব দরকার সেটা বোঝার চেষ্টা করবো। আর ততদিন অপেক্ষা করিয়ে রাখবো বরাবরের মতই।

যেতে যেতে ছোট্ট একটা গল্প বলে যাইঃ ফুটবল জ্বরে কাঁপছে বিশ্ব। ৪ বছর পর পর এই উত্তেজনা প্রাণ ছুঁয়ে যায়! সবার মতই আমিও বিশ্বকাপ ফুটবলের ভক্ত। আর ক্রিকেটতো আছেই! যদিও সাম্প্রতিক যে অবস্থ! যাইহোক, যা বলতে চাচ্ছি। কিছুদিন আগে একটা পরিসংখ্যান চোখে পরলোঃ ইউএসএ এর বিভিন্ন স্টেস্ট নিয়ে করা। সেখানকার স্কুল/বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মনে হয় বাস্কেটবলটা খুব জনপ্রিয়। সে বাবদ খরচার হিসেব। দেখলাম, বছরে গড়ে একজন অধ্যাপকের বেতনের প্রায় ৩ থেকে ৪ গুণ বেতন পান একজন ভাল খেলাধুলার প্রশিক্ষক! ক্ষেত্রবিশেষে ৭/৮ গুণ পর্যন্ত! আবার, একটা ডকুমেন্টারিতে দেখেছিলাম, নাসার বাজেট কমিয়ে ফেলা হয়েছে ইদানিং; মনে হয় ইউএসএ'র বাজেটের ১০০ ভাগের ১ ভাগ বা ১০০০ ভাগের ১ ভাগ-এমনই কিছু একটা এখন নাসার জন্য বরাদ্ধ, ঠিক মনে নেই যদিও। আর এমুহুর্তে গুগোলও করছি না। বলতে চাচ্ছি এই যে, আমাদের সবকিছুই দরকার। ফুটবল বা বাস্কেটবল বা ক্রিকেট, বা পদ্মা সেতু বা অন্য যাই হোক। সে নিয়ে বলছিও না। কিন্তু গবেষণার খাতগুলোকে অবহেলা করে? আমাদের দেশের এমন কোন পরিসংখ্যান আমার জানা নেই, তবে একথা হলফ করে বলতে পারি, গত প্রায় বছর পনেরো যাবৎ যে টাকা ক্রিকেটে ব্যয় করা হয়েছে তার ১০ ভাগের ১ ভাগও গবেষণায় ব্যয় করা হয় নি। ভুল বুঝবেন না আশাকরি; একটা সাকিব তৈরী করা আমাদের অবশ্যই দরকার কিন্তু গবেষণা, তার জন্যে কাঠামো, ব্যবস্থাপনা ইত্যাদিও আমদের সমান ভাবে দরকার; এমনকি তর্ক সাপেক্ষে, আরও বেশি গুরুত্ব দিয়েই দরকার। শুনলে অবাক হবেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন পিএইচডি করলে তার মাসিক ভাতা ২০০০/২৫০০ টাকা, বা এমনই কিছু। আমার ভুল হতে পারে তথ্যে, তবে সেটা ঐ হাজার দু-তিনের মধ্যেই থাকবে। অন্যসব প্রয়োজনীয়তা, যেমন গবেষণাগার, কাঠামো ইত্যাদি ইত্যাদি বাদই দিলাম। আমাদের কি বছর বছর সমরাস্ত্র কিনলেই হবে? কবে হবে আমাদের এই বোধদয়!?

তবে আশার আলো ও কখনও কখনও মিট মিট করে জ্বলতে দেখি, গর্বে বুক ফুলে ফেঁপে ওঠে তখন। এতসব ঋণাত্মকতার মধ্যেও গোটা কয়েক বিশাল হৃদয় মানুষ আছেন আমাদের, যারা তাদের শেষবিন্দু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন কিছু করে যেতে। আমার পরিচিত এমনই একজন মহান মানুষ অধ্যাপক খোন্দকার সিদ্দিক-ই-রাব্বানী। এক অসাধারণ পদার্থবিজ্ঞানী, তার চেয়েও অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন মানুষ। সত্যিকারের সাদামনের মানুষ বলতে যা বোঝায়, ইনি ঠিক তাই। স্যার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন; পরবর্তীতে ঐ কার্জন হলেরই ৩/৪টা রুম নিয়ে শুরু করেছিলেন বায়োমেডিকেল ফিজিকস ও টেকনোলজি বিভাগ। বর্তমানে ইনি এই বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। আর বেশি কিছু বলছি না, সম্প্রতি প্রথম আলোতে স্যারকে নিয়ে একটা প্রতিবেদন ছিল, এখানে পাবেন। আমি এমন একজন মানুষের কিছুটা হলেও সান্নিধ্য পেয়েছি, তার কাছ থেকে অণুপ্রেরণা পেয়েছি; আমি অনেক অনেক ভাগ্যবান! শুধু দুঃখ একটাই, এমন মানুষগুলোকে পেয়েও রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা আমাদেরকে ভাগ্যবান ভাবতে পারি না। গুণ ও গুণীর কদর আমরা করতে পারি না যে!

ভাল থাকুন। ধন্যবাদ।
-স্বপ্নচারীর স্বপ্ন


মন্তব্য

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

বাংলাদেশে গবেষণার জন্য তো দূরের কথা, শিক্ষা খাতেই ব্যয়ের পরিমাণ নিতান্ত নগন্য, ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে হতাশাজনক। তবে ক্রিকেটের জন্য যে তুলনামূলক বিপুল ব্যয়, এখন কিন্তু তা সরকারকে করতে হয় না। ক্রিকেট সংক্রান্ত সকল ব্যয় এখন নির্বাহ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, যা সম্পূর্ণভাবে একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা। তাদের আয়ের উৎস প্রধানতঃ স্পন্সরশীপ এবং আইসিসি প্রদত্ত বরাদ্দ, এ থেকে তারা বিপুল অর্থ আয় করে, যা থেকে যাবতীয় ব্যয় মিটিয়েও উদ্বৃত্ত হিসেবে জমা হয় একটা ভাল পরিমান অর্থ ।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য হাসি

আসলে খুব হতাশাজনক, কিন্তু আর কত দিন এমনি করে চলবে!!

ক্রিকেটের ব্যয় এবং স্পন্সরশীপ, আইসিসি প্রদত্ত বরাদ্ধ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আসলে ঐভাবে ভেবে দেখি নি; আপনি যা বলছেন তেমন হলে তো খুবই ভাল। ক্রিকেটের ভাল হোক, আরও ভাল হোক। কিন্তু আমরা আরও অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে এখনও কেন ভাবা শুরু করছি না-সেটা ভেবে খুবই আশাহত হই।

-স্বপ্নচারীর স্বপ্ন

মেঘলা মানুষ এর ছবি

আপনার পোস্ট আমার না পড়াটা আর মন্তব্য না করাটা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা উচিৎ খাইছে
শেষের দিকের কথাগুলোর জন্য হাততালি

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসি
ধন্যবাদ হাসি পড়ছেন যে তাতেই ভাল লাগছে। হাসি
-স্বপ্নচারীর স্বপ্ন

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসি
ধন্যবাদ। পড়ছেন যে, তাতেই ভাল লাগছে হাসি
-স্বপ্নচারীর স্বপ্ন

Shafi এর ছবি

কী মনে করে যে আজকে সচলে ঢুকেছিলাম তা জানি না, তবে ঢুকেই আমার জন্য দরকারী একটা লেখা পেয়ে গেলাম। আমি নিজেও গ্রাফিন নিয়ে কাজ শুরু করছি। যদি আপত্তি না থাকে আপনার ই-মেইল ঠিকানাটা আমাকে দিন।

মেঘলা মানুষ এর ছবি

আমাদের একজন সাফি আছে, আপনি আরেকটা নিক নিলে ভালো হয়। না হলে দুই সাফি আমরা গুলিয়ে ফেলব!

অতিথি লেখক এর ছবি

বাহ!
আপনার ফেবু পেজ দেখতে পাচ্ছি নিচে; সেখানে ইনবক্স করছি ইমেল। তবে বলে রাখছি, আমি কিন্তু গ্রাফিনের লোক না হাসি পরে ঠকলে আবার যেন দুঃখ না পান চোখ টিপি
-স্বপ্নচারীর স্বপ্ন

এক লহমা এর ছবি

পড়া শেষ করতে দেরী হয়ে গেল।
ভাল লেগেছে, যেমন লাগার কথা হাসি পরের পর্বের জন্য সাগ্রহ অপেক্ষায় আছি।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্যে হাসি
-স্বপ্নচারীর স্বপ্ন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।