মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা দেখতে যেয়ে আবিষ্কার করলাম, সে তালিকায় রোশেনারার (রওশন আরা) নাম নেই।
দু:খ পেলাম।
অথচ রোশেনারা যে কাজ করেছিলেন, তা কোন বীরশ্রেষ্ঠ থেকে কম নয়।
ইতিহাসে আমরা দুজন রোশেনারার (রওশন আরা) সম্পর্ক জানতে পারি।
এক.
মুক্তিযোদ্ধারা ভারী অস্ত্র নিয়ে কিশোরী রোশেনারাদের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিল।
রোশেনারাদের বাড়িতে অস্ত্র রেখেছিল, গ্রেনেড আর মাইন।
রোশেনারাকে খুব স্নেহ করতেন মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে রোশেনারা মাইন, গ্রেনেড সহ নানান অস্ত্র চালাতে শিখেছিল।
মুক্তিযোদ্ধাদের কাছেই সে শুনেছিল, মাইন দিয়ে বড় বড় গাড়ি, বাড়ি ধ্বংস করা যায়।
রাজাকারদের থেকে খবর পেয়ে এক পড়ন্ত দুপুরে রোশেনারাদের গ্রামে ট্যাংক নিয়ে পাকিস্তান বাহিনী আক্রমন করে।
গ্রামে তখন মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন না, ওঁরা একটা অপারেশানে দূরে কোথাও গিয়েছিল।
সারা গ্রাম পাকিরা লন্ড-ভন্ড করে।
মেয়েদের উঠোনে এনে সবার সামনে নির্যাতন করে।
কুকুর শিকারের মত বাঙালি মারতে থাকে।
এসব দেখে আর সহ্য হলো না রোশেনারার।
হঠাৎ কি থেকে যেন কি হয়ে গেল।
ছোট্ট শুকনো একটা মেয়ে জয় বাঙলা বলে পাকিদের ট্যাংকের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়লো।
এরপর, বিকট শব্দ আর পাকিদের আর্তচিৎকার।
রোশেনারার আত্মঘাতী মাইন-আক্রমনে ধ্বংস হয়ে যায় পাকি ট্যাংক, লাশ হয় কুড়িজনের মত পাকি হায়েনা।
[প্রতীকি ছবি: দেশ স্বাধীন হবার পর ঢাকায় নারী মুক্তিযোদ্ধা।]
দুই.
২৫ মার্চের আগে থেকেই মুক্তির সংগ্রামের জন্য বাঙালি তরুণ-তরুণীরা গোপনে সামরিক প্রশিক্ষন নিচ্ছিল।
সেই দলের সদস্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের রওশন আরা।
২৫ মার্চ, ১৯৭১ এ শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর সবচেয়ে বড় গণহত্যা।
পাকিরা গুলি করে, বেয়নেট চার্জ করে কুকুর মারার মত করে বাঙালি হত্যা করছে।
সেই রাতেই (২৬ মার্চ, প্রথম প্রহর) ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ে ট্যাংক নিয়ে হামলা করে পাকি বাহিনী।
হঠাৎ করে দানব ট্যাংকের সামনে এসে পড়েন রওশন আরা।
তাঁর বুকে মাইন বাঁধা।
জয় বাঙলা চিৎকার দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন ট্যাংকের নিচে।
মুহুর্তেই দলিত হয়ে গেল রওশন আরার দেহ আর বিকট বিস্ফোরন।
বাঙলার মাটিতে ধ্বংস হলো প্রথম পাকি ট্যাংক।
____________________________________________________
পাঠকের কাছে শুধু এই প্রশ্নটুকু রেখে যায়-
কতটা দেশপ্রেম, দেশের প্রতি কতটা ভালোবাসা থাকলে একজন মানুষ পালিয়ে যেয়ে আত্মরক্ষার সুযোগ থাকা সত্বেও আত্মঘাতী হয়ে দেশের শত্রুবধে ব্রত হতে পারেন?
দেশপ্রেমের সেই তলহীন গভীরতার কতটুকু আমরা স্পর্শ করতে পেরেছি?
____________________________________________________
রোশেনারাকে (রওশন আরা) নিয়ে বেশ কিছু সাহিত্যও রচিত হয়েছে।
সামসুল হকের কবিতা-
রোশেনারাতোমার বয়স কতো, আঠারো উনিশ?
মুখশ্রী কেমন? রঙ চোখ চুল কী রকম? চলার ভঙ্গিমা?
ছিল কি বাগান, আর তোমার মল্লিকা বনে ধরেছিল কলি?
ছিলে তুমি কারো প্রতিমা?
জানি না।না, জানি।
পৃথিবীর সব মাস সব দিন তোমার হাতের মধ্যে এসে গিয়েছিল,
দুপুরের মতো মুখ, রৌদ্রদগ্ধ চোখ, পায়ে চৈত্রের বাতাস,
তোমার বাগানে- কলোনি স্বদেশে-
ধরেছিল সাড়ে সাত কোটি মল্লিকার কলি,
তুমি ছিলে মুক্তির প্রতিমা।ওই বুকে মাইন বেঁধে বলেছিলে-
জয় বাংলা- মানুষের স্বাধীনতা দীর্ঘজীবী হোক,
ট্যাঙ্কের ওপর ঝাঁপ দিতে দিতে বলেছিলে-
বর্বরতা এইভাবে মুছে যাক, ধ্বংস হোক সভ্যতার কীট।অন্তিমবারের মতো পথিকেরা পথে এসে দাঁড়িয়েছে, আকাশে উঠেছে ধ্রুবতারা-
ধ্রুবতারা হয়ে গেছে মুক্তির জননী রোশেনারা।
প্রীতিশ নন্দীর কবিতা-
(মূল ইংরেজী রচনার অনুবাদ করেন শিশির ভট্টাচার্য্য; একাত্তরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত "গঙ্গা থেকে বুড়িগঙ্গা" সাময়ীকিতে ছাপা হয়)
একটি মেয়ের মৃত্যুরোশেনারা মারা গেছে, মনে রেখো।
নদীর মেয়ে রোশেনারা, প্রতিহিংসার সূর্য আমাদের, রাত্রির স্তরের ওপর তুষারীভূত দুটো চোখ
রোশেনারার শান্ত চোখদুটোর কথা মনে করো
এরপরও যদি তুমি হিংসার প্রসঙ্গ তোল
তবে আমি তোমাকে ওর চূর্ণ বিচূর্ণ বাহুদুটোর উচ্চারিত ভয়ঙ্কর প্রশ্নটির দিকেই দেখিয়ে দেব।আর তারপর ইবলিস যদি তোমার পথ প্রদর্শক হয়
তবে আমি সেই নীল নিঃস্তব্ধতার দিকেই তোমাকে এগিয়ে যেতে বলব
যা রাত্রির কামনা নিয়ে জ্বলতে থাকে
যখন লক্ষ লক্ষ কৃষ্ণাভ রক্তগোলাপ ওর চোখের সামনেই ঝরে যায়।মনে রেখো আজ রাতে রোশেনারা মারা গেছে
আর নিজের মরা চোখ দুটোই ওর সেই নীরবতা পালন করছে।দূরের গ্রামগুলো যখন বন্দুকের আওয়াজে শব্দিত হয়ে উঠবে
ওর খোঁপায় গোঁজা অঙ্গারীভূত লাইলাক ফুলটা রাতের জাফরিতে বুনে দেবে সাহস
সময়ের সেনানী-সবুজ রূপকথাগুলো রোশেনারার বরণ করা মৃত্যুর জন্য প্রতীক্ষা করবে না আর।একটা ট্যাঙ্ক একটা জীবনের সমান
হ্যাঁ রোশেনারা ওই দাম ওর
গ্রীষ্মের মূল্য ও শতলক্ষ নিহতের, পর্বতপ্রমাণ ধর্ষণ আর শঙ্খ চিলের মৃত্যুর।আর যদিও সাতটি রাত্রির পৈশাচিক ভীষণতা জুড়ে প্রাচীনতম নদীটি জ্বলছে
ভস্মীভূত বৃক্ষ আর নাপাম বোমাহত পাখিটা নীরবে অপেক্ষামান।যদিও তোমার অন্তহীন প্রশ্নগুলো চুয়াডাঙার জনহীন পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে
পাবনা মেশিনগানের গুলিতে ঝাঁঝরা
সিলেট প্রাণহীন
আর চট্টগ্রাম হলুদ-নদীর অপরপারে অপেক্ষামান।তবু মনে রেখো, রোশেনারা মারা গেছে
আর তার মৃত্যুই চূড়ান্ত।
বাউল কবি অমর পালের দুটি গান-
এক।
অনলাইনে শুনুন
আকাশ কান্দে বাতাস কান্দে যেন মণিহারা,
কান্দিয়া কান্দিয়া অন্ধ হৈল চক্ষু তারা,
তোমার লাগি দেশ কান্দে ওগো রোশেনারা।যতদিন ঐ মাঠে মাঠে বুনবে সোনার ধান,
ততদিন ঐ মাঝির মুখের হৈয়া রইবে গান।তোমার নামে কান্দে ঐ বাউল একতারা,
তোমার লাগি দেশ কান্দে ওগো রোশেনারা।রক্তের অক্ষরে নাম লিখে গেছ হায়,
ঝড়ে জলে বৃষ্টিতে যে ও নাম মোছা দায়।কাহার ঘরের ঘরণী গো ছিলে কন্যা কার,
দেশের লোকে জানে তুমি মেয়ে যে বাংলার।আন্ধার পথের পথিকেরে দেখায়ো পথ শুকতারা,
তোমার লাগি দেশ কান্দে ওগো রোশেনারা।
দুই।
অনলাইনে শুনুন
তোরা দ্যাখ আসিয়া রে বাংলা যে হৈয়াছে স্বাধীন,
দুই রঙা যে পতাকা ওড়ে আসিল সুদিন।ও তার জমিনটা যে সবুজ দেশের মাটির কথা কয়,
মধ্যিখানে নতুন দিনের সূর্যের উদয়।শেখ মুজিবের সোনার বাংলা আনল নতুন দিন,
তোরা দ্যাখ আসিয়া রে বাংলা যে হৈয়াছে স্বাধীন।যে দেশেতে জন্ম নিল বীর মুজিব ভাই,
রক্ত দিল রোশেনারা যার তুলনা নাই,
প্রাণ দিয়া মান রেখে গেল রাম ও রহিম,
তোরা দ্যাখ আসিয়া রে বাংলা যে হৈয়াছে স্বাধীন।বাংলাদেশ যে হৈল স্বাধীন কররে এবার পণ,
দেশের তরে আপন স্বার্থ দিয়া বিসর্জন,
সেই পতাকা নবার উপর রাখরে চিরদিন,
তোরা দ্যাখ আসিয়া রে বাংলা যে হৈয়াছে স্বাধীন।
____________________________________________________
ঐতিহাসিকতার দ্বন্দ্ব:
রোশেনারা (রওশন আরা) চরিত্রটির ঐতিহাসিকতা নিয়ে বেশ কিছু বির্তক আছে।
এনিয়ে শ্রদ্ধেয় জালাল ভাইয়ের সাথে আমার আলোচনাও হয়েছিল।
স্বাধীন বাংলা বেতারের নুরজাহান মাযহারের মতে, চরিত্রটি বাস্তবে ছিল।
রোশেনারা চরিত্রটি সম্পর্কে তিন রকমের মতামত প্রচলিত আছে-
০১. রোশেনারা চরিত্রটি সামরিক কৌশল হিসেবে ভারতীয় বেতারের সৃষ্টি।
০২. মুকুল ভাইয়ের সৃষ্টি।
০৩. চরিত্রটি বাস্তবে ছিলেন।
আমি শেষ মতটি বেশি গ্রহণযোগ্য বলে ধরে নিলাম; কারন, টেকনিক্যালি এই সংক্রান্ত সবচেয়ে পুরাতন দলিলটি হলো, নূরজাহান মাযহারের লেখা আর উনার কাছে অনেক নারী মুক্তিযোদ্ধার আসল পরিচয় দেয়ার জন্য আমরা ঋণী।
তাই, ইতিহাস যাচাইয়ের প্রামাণ্য নিয়ম অনুসারে, শেষোক্তটিই যথার্থ বলে গণ্য করলাম।
এছাড়া, একাত্তরে মুক্তিবাহিনীর দুটি গোলন্দাজ ব্যাটারির একটি ছিল "মুজিব ব্যাটারি" এবং আরেকটি ছিল "রওশন আরা ব্যাটারি"।
ট্যাংক ধ্বংসকারী রোশেনারার (রওশন আরা) প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ একাত্তরে মুক্তিবাহিনীর একটি গোলন্দাজ ব্যাটারীর নাম তাঁর নামানুসারে রাখা হয়। (সূত্র: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী)
____________________________________________________
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কথিকা, নূরজাহান মাযহার।
ছবিসূত্র: ভারতীয় সামরিক বাহিনীর আর্কাইভ।
রোশেনারার (রওশন আরা) উপর রচিত কবিতা, গান ও গানের অডিও সহ তথ্য দিয়ে এবং নানানভাবে বিশেষ সহযোগীতা করেছেন: শ্রদ্ধেয় এমএমআর জালাল ভাই।
____________________________________________________
সাব্বির হোসাইন
sabbir.egdnc এট gmail.com
পুরোনো লেখাসমূহ:
একাত্তরে বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ড
ফিরে দেখা- বাংলাদেশ (২০০১-২০০৬)- সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতালম্বী নির্যাতন
রানা প্লাজা ও কিছু খেদোক্তি
বঙ্গবন্ধুর ভাষণের দুর্লভ ভিডিও ফুটেজ ও অডিও
বাঘের পোষাকের আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিড়ালের আত্মসমর্পন
স্বাধীনতার ঘোষণা ও একজন এম.এ. হান্নান
____________________________________________________
মন্তব্য
"মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা দেখতে যেয়ে আবিষ্কার করলাম, সে তালিকায় রোশেনারার (রওশন আরা) নাম নেই।"
তালিকায় নাম নেই কেন? কে/কারা বাদ দিল এই নাম?
সেই দিনগুলোতে আমরা যারা খবরের কাগজ পড়তাম কি বেতারের খবর শুনতাম সবাই জানতাম এ নাম। অন্ততঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, ট্যাংক-এর সামনে বুকে মাইন বেঁধে ঝঁপিয়ে পড়ে ট্যাংক ধ্বংস করে দেওয়া শহীদ রোশেনারার নাম।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
সরকারি ও গ্রহণযোগ্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তালিকাকৃত নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা এক হাজারও অতিক্রম করে না। এই দায়টা আমাদেরই, নারীর প্রতি আমাদের অবহেলা।
সাব্বির হোসাইন
রওশন আরা চরিত্রটি কাল্পনিক। আহমদ ছফা একজন ভারতীয় সাংবাদিককে এই চরিত্রটি গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিলেন। বিস্তারিত বিবরণ তার 'অলাতচক্র' নামক উপন্যাসে পাওয়া যাবে।
--পাঠক
আমি যতদূর জেনেছি সেখানে রওশান আরা কল্পিত একটি চরিত্র যেটি আহমেদ ছফা তার অলাতচক্র উপন্যাসে উল্লেখ করেছেন। আপনি বলছেন
নূরজাহান মাযাহরের কাছে ট্যাকনিক্যালি কি লেখা আছে যাতে রওশান আরার অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়? রওশান আরা যদি সত্যি বাস্তবিক চরিত্র হয় তাহলে তার নিশ্চয় আত্নীয় স্বজন কেউ না কেউ বেঁচে আছে। সেখান থেকেই তো সত্যিটা বের করা যায় বোধহয়।
মাসুদ সজীব
ষষ্ঠ পান্ডবের মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে আপনার প্রশ্নের উত্তরও চলে আসে, তাই আলাদা করে আপনার এখানে আর কিছু লিখলাম না।
- সাব্বির হোসাইন।
আপনি ইতিহাস যাচাইয়ের প্রামাণ্য কোন নিয়ম মেনে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন সেটা ব্যাখ্যা করবেন কি? তার সাথে এই প্রশ্নগুলোরও উত্তর দেবেন কি?
১। নূরজাহান মাযহার কি রওশন আরাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন? তাঁদের কি কখনো সাক্ষাত হয়েছিল?
২। নূরজাহান মাযহার কি কথিত ট্যাঙ্কধ্বংসের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী?
৩। আপনার বর্ণিত কোন ভাষ্যটিকে নূরজাহান মাযহার সমর্থন করেছেন?
৪। রওশন আরার বিস্তারিত পরিচয় কী? আজ পর্যন্ত তাঁর পরিবারের কোন সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, গ্রাম/মহল্লার লোকজন, তাঁর সহপাঠী, যাঁদের সাথে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তাঁদের কেউ - এমন কাউকে কেন পাওয়া গেল না?
৫। ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে (কোন্ ক্লাস? কোন বর্ষ?) যদি রওশন আরা নামে কেউ পড়ে থাকতেন এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়ে থাকতেন তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদদের তালিকায় তাঁর নাম নেই কেন? কেনই বা ইতিহাস বিভাগের কেউ কখনো এই ব্যাপারে কোন প্রশ্ন তুললেন না?
৬। এম এম আর জালাল ভাই কি রওশন আরা'র শহীদ হবার ব্যাপারটি কি কনফার্ম করেছেন?
আরেকটা ব্যাপার, ইতিহাস লেখার সময় 'সাপোর্ট' হিসেবে কবিতা, গান দেয়াটা ইতিহাস লেখার দুর্বলতা হিসেবে বিবেচিত হয়। অবশ্য ইতিহাসের গল্প বলতে চাইলে ভিন্ন কথা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হিটিং বুলস্ আই! প্রশ্নগুলি আমার দৃষ্টিতে প্রশ্ন নয়, বিতর্কটির গায়ে সিলগালা করে দেয়া!
একটা কথা বলার আছে শুধু, রওশান আরা বানানো চরিত্র হলেও আমাদের গৌরব কিছুমাত্র কমে না, কারণ আমাদের আছে রওশান আরার মত বা তাকেও ছাড়িয়ে যায়, এমন আরো অসংখ্য কীর্তিগাঁথা! বিশেষ করে, তারামন বিবিকে তো আমরা খুঁজে পেলাম স্বাধীন বাংলাদেশে ২৪টা স্বাধীনতা দিবস কাটিয়ে দেয়ার পরে!
যদি মিথ্যে হয়, তাহলে ত্যাগ করাই শ্রেয় এই মিথ্যা, কেননা তা না করলে আমাদের সত্যিকার বীরত্বগাঁথাকে অশ্রদ্ধা করা হয় যে!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
স্বাধীনতার সাড়ে তিন দশক পর স্বল্প পরিচিত কিংবা অস্পষ্ট কোন চরিত্র সম্পর্কে অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে অগ্রজদের লেখা, প্রাতিষ্ঠানিক প্রকাশনা, মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাসবর্ণনের উপর নির্ভর করতে হয়েছে।
১ ও ২। নূরজাহান মাযহার রোশেনারার (রওশন আরা) ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন নাকি ওঁনার কথা শুনেছিলেন, এই বিষয়ে কোন বর্ণনা কথিকায় নেই। তাঁর লেখা মুক্তিযুদ্ধ কথিকায় রোশেনারার বীরত্ব বর্ণনার সময় প্রীতি রানী পুরকায়স্থর নারী মুক্তি ফৌজের কথা উল্লেখ করা হয়। এই হিসেবে রোশেনারার বাড়ি সম্ভবত: সিলেট অঞ্চলে (আরো স্পষ্টত: সুনামগঞ্জ)।
৩। ঘটনা- এক।
৪। রওশন আরার কোন পূর্বপরিচয় জানা যায়নি। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের উপর একটি পুস্তিকা প্রকাশিত হয়েছিল। সেই পুস্তিকায় ঘটনা- দুইয়ের বর্ণনা পাওয়া যায়। এই পুস্তিকায় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে একটি বাহিনী গঠনের কথা উল্লেখ আছে। রওশন আরাকে এই বাহিনীর
সদস্য উল্লেখ করা হয়। সম্ভবত: এই একই বাহিনীর কথা ষোলখন্ডে প্রস্তুতকৃত স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলপত্রে উল্লেখ আছে।
৫। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শহীদদের নিয়ে কোন পূর্ণাঙ্গ তালিকা নেই। শেষাংশের উত্তর দেয়ার দায়ভার বোধ করি আমার নই।
৬। জালাল ভাইয়ের ভাষ্যমতে রোশেনারা চরিত্রটি এমআর আখতার মুকুলের সৃষ্ট। কিন্তু এই ব্যাপারে আমরা কোন একক মতামতে পৌঁছায়নি। স্বাধীন
বাংলা বেতার কেন্দ্রের পুস্তিকা, নুরজাহার মাযহারের কথিকা, এই বিষয়ে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আমার আলাপচারিতা, মরহুম বেলাল মোহাম্মদ মামার সাথে আলোচনা এই বিষয়ে একক মতামতে দ্বিধার সৃষ্টি করে।
পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানু মিতিল ২০১৩ সালে জাতীয় মহিলা সংস্থার উদ্যোগে নারী মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় রোশেনারার (রওশন আরা) বীরত্বের বর্ণনা করেন। এই একই অনুষ্ঠানে সৈয়দা সাজেদা আপাও একাত্তরে তাঁর নেতৃত্বাধীন একটি নারী মুক্তিযোদ্ধা বাহিনীর কথা বলেন এবং তিনিও রোশেনারাকে (রওশন আরা) নিয়ে বীরত্বের বর্ণনা করেন।
নারী মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে আমাদের তথ্যের অপ্রতুলতা প্রচুর। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয়ের তালিকা অনুসারে নারী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২১৮ জন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নারী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১৯২ জন। স্বাধীনতার পর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য সংরক্ষনে কোন উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। নারী মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজে বের করা কিংবা তাদের নিয়ে তথ্য সংগ্রহ বর্তমানে প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে পড়ে যায়।
সাব্বির হোসাইন
মুক্তিযুদ্ধের ই-আর্কাইভ
আপনি কিন্তু নূর-জাহান মাযহার বা অন্য কিছু সাহিত্য-কীর্তি ছাড়া তেমন উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রজ লেখক, বা মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস-বর্ণন তুলে ধরতে পারেননি। একটি জিনিস ভেবে দেখেছেন, আপনি যেমন নূর-জাহান মাযহারের রেফারেন্স দিয়ে রওশান আরার ইতিহাস তুলে ধরছেন, নূরজাহান মাযহার পরবর্তী আরও অনেক পুস্তিকা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রকাশনা সেই নূরজাহান মাযহার কথিত ইতিহাসকেই অবলীলায় গ্রহণ করে থাকতে পারে কোন যাচাই-বাছাই না করে? সবচেয়ে বড় কথা হলে, রওশান আরার যতটুকু উল্লেখ যত পুস্তিকা, সাহিত্য ও ইতিহাসে পেয়েছেন আপনি, তার সবকিছুর ভিত্তি হতে একই জায়গার ভুল, এ কথাটি চিন্তা করে দেখেছেন?
পান্ডবদার ১ ও ২ নং প্রশ্ন কিন্তু এমনই এক ভুলের ইঙ্গিত দিচ্ছিল, নূরজাহান মাযহার যদি মেয়েটিকে চেনার বা ঘটনাটিকে প্রত্যক্ষ করার দাবী করতেন, তাহলে রওশান আরা কাহিনি সত্য হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা থাকত! প্রশ্ন হল, উনি কি তেমন দাবি করেছেন কোথাও? এমন কি হওয়া সম্ভব নয়, উনিও ভুল রেফারেন্সের শিকার রওশান আরাকে ইতিহাস-বন্দী করতে যেয়ে?
পান্ডবদার তিন নম্বর প্রশ্নটি ছিল, আপনি যে দুইজন রওশান আরার বর্ণনা করলেন, নূরজাহান মাযহারের বই তার কোনটিকে সমর্থন করছে? আপনি উত্তরে বললেন, একই। এই অসম্ভব উত্তরটি আমি বুঝিনি ভাই। কি করে দুইজন রওশান আরা একই হয়? একজন গ্রাম্য কিশোরী, আর একজন ঢাবির ছাত্রী - সে তো আপনার লেখাতেই উল্লেখ করেছেন আপনি, তাই না?
রওশান আরা মিথ নাকি সত্যি - এই বিতর্কের অবসান হওয়া জরুরি, তবে আপনি নতুন কিছু যোগ করতে পারেননি, ভাই; আপনি প্রশ্ন করতে পারতেন পান্ডবদার মত করে বা পান্ডবদার প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারতেন, সেক্ষেত্রে নতুন ভাবনাচিন্তার যে অবকাশ পাওয়া যেত, তা পাওয়া যায় না বক্ষ্যমাণ লেখাটিতে; ইতিহাস নিয়ে নড়াচড়া করতে হলে আরও অনেক ঢাল-তলোয়ার নিয়ে না নামলে ক্যামনে কি!
সবশেষে, একটি গোপন কথা বলে ফেলি ভাইয়া! রওশান আরাকে যদি আপনি সত্য প্রমাণ করতে পারতেন, এমনকি পান্ডবদাকে হারিয়ে, প্রচণ্ড খুশী হতাম, বলতে কি, রওশান আরাকে ভালোবেসে ফেলেছি, হোক মিথ বা সত্যি!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
রোশেনারাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি লেখা পাওয়া যায় দুটি বইতে- যুদ্ধচলাকালীন সময়ে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে
প্রকাশিত পুস্তিকা ও নূরজাহান মাযহারের লেখা মুক্তিযুদ্ধ কথিকা।
তাঁর লেখা মুক্তিযুদ্ধ কথিকায় রোশেনারার বীরত্ব বর্ণনার সময় প্রীতি রানী পুরকায়স্থর নারী মুক্তি ফৌজের কথা উল্লেখ করা হয়। এই হিসেবে রোশেনারার বাড়ি সম্ভবত: সিলেট অঞ্চলে (আরো স্পষ্টত: সুনামগঞ্জ)।
দুজনকে তো এক করিনি ভাই। আমি লিখেছিলাম, ঘটনা-এক, মানে আপনার ভাষায় গ্রাম্য কিশোরীর কথা।
মূলত: পোস্টটি ছিল রোশেনারা সম্পর্কে বর্ণনামূলক; রোশেনারা মিথ নাকি বাস্তবতা, তা প্রমাণের কোন অভিপ্রায় আমার ছিল না এবং এই ধরণের কোন ইচ্ছা আমি পোস্ট বা মন্তব্যে প্রকাশ করিনি।
আমি শুধু এটুকু লিখেছি যে, রোশেনারা সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি যে দুইটি বইতে পাওয়া যায়, তার দুটোই রোশেনারাকে বাস্তবের একটি চরিত্র বলে অভিহিত করেছে এবং আমি তাদের মতামতটুকু গ্রহণ করেছি। এনিয়ে আলোচনা হতে পারে কিন্তু বিতর্ক করার ইচ্ছে আমার নেই।
[সাব্বির হোসাইন]
১। আপনি মন্তব্য আর পোষ্টের মন্তব্যে অসঙ্গতি দেখছি, মন্তব্যের ক্ষেত্রে বলছেন
কিন্তু আপনি পোষ্টে বলছেন
ক্যামনে কি? একটু বুঝিয়ে বলবেন?
২। আবার পোষ্টের প্রথমেই বলছেন রোশেনারার নাম মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় না দেখে দু:খ পেয়েছেন?
অপ্রমাণিত কিংবা অস্পষ্ট একটি মানুষের নাম তালিকায় না থাকায় দু:খ পাওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত?
মাসুদ সজীব
কোটকৃত অংশটুকুর পরেরটুকু পড়লে তো আপনাকে আর এতবড় মন্তব্য লিখতে হতো না ভাই।
// আমি শুধু এটুকু লিখেছি যে, রোশেনারা সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি যে দুইটি বইতে পাওয়া যায়, তার দুটোই রোশেনারাকে বাস্তবের একটি চরিত্র বলে অভিহিত করেছে এবং আমি তাদের মতামতটুকু গ্রহণ করেছি। এনিয়ে আলোচনা হতে পারে কিন্তু বিতর্ক করার ইচ্ছে আমার নেই। //
[সাব্বির হোসাইন]
ভাই আপনি শুধু শুধু প্যাঁচাচ্ছেন। আপনি কোন প্রকার যুক্তিযুক্ত প্রমাণ ছাড়া দুটো বইয়ের মতামত দিয়ে একটা কাল্পনিক চরিত্রকে সত্য বলে মেনে নিচ্ছেন। আবার সেই কাল্পনিক চরিত্রের নাম কেন মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় নেই সেটার জন্যে দু:খে কাতর হযে যাচ্ছেন। সবকিছুই পাকিয়ে ফেলছেন মনে হচ্ছে। আর আলোচনায় তো তর্ক বিতর্ক থাকবেই, ভয় পাচ্ছেন কেন? ইতিহাস নিয়ে লেখতে গেলে আরেকটু পড়তে হবে, জানতে হবে। স্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া অমুক বইয়ে পেয়েছি, তমুকের কাছে শুনেছি বলে কোন কিছুকে ইতিহাস বলে প্রমাণ করা যায় না। ভালো থাকুন
মাসুদ সজীব
খুবি ভ্যালিড জিজ্ঞাসা পাণ্ডবদা। অনেক সুগারকোটিং করে লেখাটা এমনভাবে লেখা হয়েছে যে পড়লেই অনেক প্রশ্ন তৈরি হবে। মেরিট নষ্ট করা বা বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যে ইচ্ছা করেই এরা একটু দূর থেকে পিটানো শুরু করে, টার্গেট থাকে শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ। বিশেষ করে শহীদের সংখ্যা। আশ্চর্য হই আমি যখন দেখি এই জীবগুলা কমতেছে না !!!
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
রওশন আরা বিতর্কটা মাঝে মাঝেই ওঠে। আহমদ ছফার তিতামুখে এই বিষয়ে একটা প্রবন্ধে লেখা হয়েছিল-
মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান সম্পর্কে বেশ কিছু বই পড়ার সুযোগ হলেও রওশন আরা বিষয়ে কোথাও পড়িনি। তাই ছফার এই বক্তব্যকে অস্বীকার করতে পারছি না।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আরো লেখাপড়া করে তারপরে লিখতে বসুন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রওশন আরা সম্পর্কেতো খোঁজ খবর নেয়াই যায়।
তাহলে অনেক মতদ্বৈততা দূর হবে নিশ্চিত।
প্রমাণের অপেক্ষায় থাকলাম।
ভালো থাকবেন। শুভকামনা।
---------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
সাব্বির আপনি কি সচলে "সবুজ পাহাড়ের রাজা" নিকে লিখতেন?
..................................................................
#Banshibir.
না।
সবুজ পাহাড়ের রাজা আমার ফেসবুকে ছিলেন। তিনি ২০১২ সালে মেসেজে কথার ফাঁকে জানিয়েছিলেন তার আসল নাম রাজা মুহাম্মাদ সাব্বির হোসাইন
..................................................................
#Banshibir.
'সবুজ পাহাড়ের রাজা' সাহেবের জন্য আপনাদের মডু লগে তো লেখা আছে "সক পাপেটিং, সহসচলকে আক্রমণ ও সচলায়তনের মূল স্পিরিটের সাথে মেলবন্ধনের অভাবে আতিথ্য বাতিল করা হল।"
আবার ফেসবুকে সাব্বির সাহেব দেখলাম নিজের নামকে দুই টুকরা করে দুই জন ভিন্ন বেক্তিকে হাজির করতেছেন। একজন রাজা মুহাম্মদ, আরেকজন সাব্বির হোসাইন। সাব্বির হোসাইন আবার রাজা মুহাম্মদকে তোষামোদ করতেছে।
যদি সবুজ পাহাড়ের রাজা = রাজা মুহাম্মদ সাব্বির হোসাইন হয়, তাহলে তো এই লোকের নিয়ত সুবিধার না। সে নিক নিয়া লিখতে গিয়া আপনাদের হাতে গলা ধাক্কা খাইছে, তারপর নিজের নামে আবার ঢুকছে। এখন আবার নিজের নামে ধরা খাইয়া ফেসবুকে সচলায়তনরে গালি দিতেছে।
ও বদ্দা সাব্বির, সচলায়তন যদি খারাপই হয়, তাইলে ২০১২ সালে লাত্থি খাওয়ার পর আবার কি মনে কইরা এইখানে লিখতে ঢুকছিলেন?
এই লোকের হাতে কি চট্টগ্রামের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি নিরাপদ? আপনারা একটু খোজখবর করে দেখেন এর আসল মতলব কি। এইভাবেই ছাগুরা সব জায়গায় সুই হয়ে ঢুকে আর ফাল হয়ে বের হয়। যে লোক নিজের নামরে দুই টুকরা করে দুই লোক বানাইয়া ব্যাবহার করে, তার মতলব ভাল না।
আপনি মন্তব্যটাতে নিজের নাম অথবা নিক দেননি। পরে বলতে চাই, আপনি কি নিশ্চিত যে এই সাব্বির হোসাইনই 'সবুজ পাহাড়ের রাজা'! আমি মনে করি সচলে এমন কিছু হওয়া উচিৎ নয় যে ব্যক্তি যতটুকু দায়ী তাকে ততটুকুই দায় নিতে হবে, তার অধিক নয়। আপনি যদি নিশ্চিত হন যে সাব্বির হোসাইনই 'সবুজ পাহাড়ের রাজা' তাহলে আপনার জানার সূত্রগুলো জানান। আর নিজের পরিচয়টা দয়া করে দিন।
উপরের অতিথি লেখকের কথা জানিনা, তবে সাব্বির হোসাইন ই যে সবুজ পাহাড়ের রাজা আমার এ সন্দেহের ব্যাপারে তথ্য প্রমাণ আমি সচল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি. পাবলিক ফোরামে স্ক্রিনশট ইত্যাদি দেওয়া শোভন মনে করিনি. সচল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে অন্যান্যদের সাথেও কথা বলছেন/বলেছেন.
সবুজ পাহাড়ের রাজাকে আইডেনটিফাই করা কঠিন নয়. একাধিক সচল তাকে চিনতেন. সাব্বির হোসাইন যদি রাজা না হয়ে থাকেন তাহলে তার ভয়ের কিছু নাই.
..................................................................
#Banshibir.
প্রিয় সাব্বির হোসাইন, উপরে আমার করা মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে আপনি একটি দীর্ঘ মন্তব্য করেছিলেন যা আমি গতকাল লক্ষ করেছি। অন্য আরো অনেক পাঠকও নিশ্চয়ই পড়েছেন। সময়াভাবে গতকাল তার উত্তর দিতে পারিনি। আজ দেখতে পাচ্ছি মন্তব্যটি নেই। মন্তব্যটি আপনি মুছে ফেলে থাকলে বলতে হয়, ব্যাপারটি দুঃখজনক।
আপনার জানা থাকার কথা যে, ব্লগে পাঠক প্রশ্ন করলে তার উত্তর দেয়া লেখকের নৈতিক দায়িত্ব। আপনি ব্যস্ত থাকলে বা অসুস্থ্য থাকলে দেরি করে উত্তর দিতে পারেন। কিন্তু একেবারে উত্তর না দেয়া বা উত্তর মুছে ফেলাটা অশোভন।
আমার আগের করা প্রশ্নগুলোতে আমি অনড় আছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মন্তব্য মোছা হয়নি, মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভের লিংক ভুল আসায় ও মোবাইল থেকে মন্তব্য লেখায় লাইন ভেঙে যাওয়ায় তা সম্পাদনা করেছিলাম কিন্তু সম্পাদিত মন্তব্য এখনও ছাড় দেয়া হয়নি। সচলায়তনে মন্তব্য ডিলিট করার অপশন তো নেই দেখলাম।
মন্তব্যটি আবার দিলাম-
স্বাধীনতার সাড়ে তিন দশক পর স্বল্প পরিচিত কিংবা অস্পষ্ট কোন চরিত্র সম্পর্কে অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে অগ্রজদের লেখা, প্রাতিষ্ঠানিক প্রকাশনা, মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাসবর্ণনের উপর নির্ভর করতে হয়েছে।
১ ও ২।
নূরজাহান মাযহার রোশেনারার (রওশন আরা) ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন নাকি ওঁনার কথা শুনেছিলেন, এই বিষয়ে কোন বর্ণনা কথিকায় নেই। তাঁর লেখা মুক্তিযুদ্ধ কথিকায় রোশেনারার বীরত্ব বর্ণনার সময় প্রীতি রানী পুরকায়স্থর নারী মুক্তি ফৌজের কথা উল্লেখ করা হয়। এই হিসেবে রোশেনারার বাড়ি সম্ভবত: সিলেট অঞ্চলে (আরো স্পষ্টত: সুনামগঞ্জ)।
৩। ঘটনা- এক।
৪। রওশন আরার কোন পূর্বপরিচয় জানা যায়নি। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের উপর একটি পুস্তিকা প্রকাশিত হয়েছিল। সেই পুস্তিকায় ঘটনা- দুইয়ের বর্ণনা পাওয়া যায়। এই পুস্তিকায় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে একটি বাহিনী গঠনের কথা উল্লেখ আছে। রওশন আরাকে এই বাহিনীর সদস্য উল্লেখ করা হয়। সম্ভবত: এই একই বাহিনীর কথা ষোলখন্ডে প্রস্তুতকৃত স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলপত্রে উল্লেখ আছে।
৫। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শহীদদের নিয়ে কোন পূর্ণাঙ্গ তালিকা নেই। শেষাংশের উত্তর দেয়ার দায়ভার বোধ করি আমার নই।
৬। জালাল ভাইয়ের ভাষ্যমতে রোশেনারা চরিত্রটি এমআর আখতার মুকুলের সৃষ্ট। কিন্তু এই ব্যাপারে আমরা কোন একক মতামতে পৌঁছায়নি। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের পুস্তিকা, নুরজাহার মাযহারের কথিকা, এই বিষয়ে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আলাপচারিতা, মরহুম বেলাল মোহাম্মদ মামার সাথে আলোচনা এই বিষয়ে একক মতামতে দ্বিধার সৃষ্টি করে।
পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানু মিতিল ২০১৩ সালে জাতীয় মহিলা সংস্থার উদ্যোগে নারী মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় রোশেনারার (রওশন আরা) বীরত্বের বর্ণনা করেন। এই একই অনুষ্ঠানে সৈয়দা সাজেদা আপাও একাত্তরে তাঁর নেতৃত্বাধীন একটি নারী মুক্তিযোদ্ধা বাহিনীর কথা বলেন এবং তিনিও রোশেনারাকে (রওশন আরা) নিয়ে বীরত্বের বর্ণনা করেন।
নারী মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে আমাদের তথ্যের অপ্রতুলতা প্রচুর। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয়ের তালিকা অনুসারে নারী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২১৮ জন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নারী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১৯২ জন। স্বাধীনতার পর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য সংরক্ষনে কোন উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। নারী মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজে বের করা কিংবা তাদের নিয়ে তথ্য সংগ্রহ বর্তমানে প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে পড়ে যায়।
সাব্বির হোসাইন।
মুক্তিযুদ্ধের ই-আর্কাইভ
আপনার পোস্ট শুরুই -' রোশেনারা নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নেই কেন এবং রোশেনারা যে কাজ করেছিলেন, তা কোন বীরশ্রেষ্ঠ থেকে কম নয়' এই বলে। যখন পাণ্ডবদা সহ কয়েকজন স্পেসিপিক পয়েন্টে
জানতে চাইলো আপনার তথ্যসূত্র সম্পর্কে। তখন আপনি আস্তে আস্তে গোলপোস্ট সরানো শুরু করলেন। আপনার পোস্টে পড়ে আমার অন্তত মনে হল না আপনি রোশেনারা সত্যি না মিথ এই নিয়ে আলোচনার জন্য লেখা দিয়েছেন। এরকম একটা বীরত্বের কাহিনী নিয়ে ঘটা করে লিখে সেটা যদি পরে দেখা যায় সৃষ্ট কাহিনী তাহলে দিনশেষে যে তুরুপের তাস স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতেই তুলে দেয়া এই সহজ ব্যাপারটা যদি না বঝেন তাহলে কেমন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক আপনি?
আপনার এই লেখায় হিমু ছাড়া সচলের আর কোন মডারেটর মন্তব্য করে নাই।
এখানে সচলের কিছু লেখক/পাঠক এই পোস্টে আপনার দাবী,
সম্পর্কে সূত্র জানতে চেয়েছেন। 'মুক্তিযুদ্ধ' বা 'মুক্তিযোদ্ধা' বিষয়ে লিখতে গেলেতো আপনাকে প্রামাণ্য ঐতিহাসিক সূত্র জানাতেই হবে। আপনার মূল পোস্ট ও মন্তব্যের মাঝেই আপনি নিজের অবস্থানে বিস্তর ব্যবধান সৃষ্টি করেছেন।
আমার এই মন্তব্যে আমি সেসব বিষয়ে আর কিছু বলতে চাইনা। আমি যেটা বলতে চাই, আপনি সচলে সম্ভবত নবীন। আগেও বলেছি আপনার এই লেখায় হিমু ছাড়া কোন মডারেটর মন্তব্য করে নাই। তথাপিও আপনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এমন নেতিবাচকভাবে সচলায়তন ব্লগের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন, সচলায়তনের কতিপয় লেখকের সম্বন্ধে যেভাবে কটুক্তিকরেছেন, আমি সচলের সামান্য একজন লেখক ও পাঠক হিসাবে মেনে নিতে পারিনা। আর আপনার যদি সত্য সহ্য করবার মানসিকতা না থাকে তাহলে এরকম ব্লগে না লেখাই ভাল। আপনার জন্য ফেসবুকই সঠিক জায়গা। আর আমি মনে করি, সচলের কাছে এবং ঐ সকল লেখকের কাছে আপনার ক্ষমা চাওয়া উচিৎ।
এই লোকের ফেসবুকে সচলায়তনকে নিয়ে করা পোষ্ট দেখে আমি পুরোপুরি ’থ’ হয়ে গেলাম। এত ঠুনকো অনুভূতি নিয়ে কোন দুক্কে এই লোক ব্লগে লেখালেখি করতে আসছে। তার যুক্তির অপ্রতুলতা পরও তাকে কেউেই ব্যাক্তি আক্রমন করেনি। অথচ এই ভদ্রলোক যেভাবে পেরেছেন সেভাবে আক্রমন করে গেছেন সচলকে এবং উনার পোষ্টে অংশগ্রহণকারী হিমু ভাই সহ সকল সদস্যকে । এই সমস্ত কাঠবলদ মার্কা ফেসবুকীয় আঁতেলরা চটকদার লেখা নিয়ে ফেসবুকেই বেঁচে থাকুক, সচলে এদরে কোন প্রয়োজন নেই।
মাসুদ সজীব
একমত।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এ তুমি কেমন রাজা, দিনের আলোয় পুকুর চুরি
নিজের নামটা দু'ফাঁক করে লুঙ্গি তুলে বেড়াই ঘুরি।
বদ্দা লুকালুকি খেলি লাব নাই। আপনার লুঙ্গি খুলি গেছে। ফেসবুক আর ব্লগ সবখানে আপনি এখন ঝুলে গেছেন। আপনি কেমনে মনে কইরলেন যে আপনারে চিনে তেমন লোক শহরে একদম কম। 'সুপরিচিত' লোকদের তো সাবধানে মন্তব্য করা উচিত। নাহ আপনে প্লেয়ার আনাড়ি। আরো পেকটিশ করা দরকার আপনের
এবার দুটো প্রশ্ন করি রাজা মশাইকে-
১) সাব্বির খান কি আপনার আপন ভাই?
২) মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে বিভক্ত করা কি আপনাদের পারিবারিক পেশা? সাব্বির খানও একই কাণ্ড করে থাকেন প্রায়ই।
-সামস
নতুন মন্তব্য করুন