আমার কি তাতে? তাতে আমার কি আসে যায়? এ দুইটা লাইন মনে রাখেন। লেখাটা পড়তে সুবিধা হবে।
-আপনি লিখলে, আমার কি তাতে? এরকম করে প্রতিবার আমার এই লেখার প্রায় প্রতিটি লাইনকে উড়িয়ে দেয়া সম্ভব।
কোন এক অজ্ঞাত কারনে আমি জার্মান প্রবাসী (!!), এখানে ঈদের গন্ধ পেতে হলে তুর্কীদের আশেপাশে যেতে হয়। পরবর্তী লাইনটুকু ভালো করে মাথায় রাখেন- “জার্মানে সত্যিকার অর্থে যদি কেউ বর্ণবাদী হয়ে থাকে তবে আপনার এই মুসলিম ভাইরা সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন”।আমার জান এবং মানের মায়া দুটোই বেশী।অতএব নো ঈদ।
আমার পরিবারে লোকজন আমাকে যতোটা ভালোবাসে তার চেয়ে বেশী সমীহ করে। অল্প বয়সে অর্থ চেনে ফেলাটাকে এই জন্য্ দায়ী করা যেতে পারে। (তাতে আমার কি আসে যায়?)
সারা বছর আর যাই করি নাই করি, ঈদের বাজারটা আমি বেশ দরাজ হস্তে করতাম। তাই প্রতি ঈদে আমার মা সারা বছর যেসব প্রয়োজন জমিয়ে রাখতেন এই সময় তা আমার হাত দিয়ে মওকা মতো খরচ করিয়ে নিতেন। যেমন, বাসার পর্দা, টেবিল ক্লথ, হানিফ সংকেত (বাংলা ভাষার ‘ ইত্যাদি’ শব্দটা এই ভদ্রলোকের নামে বলি দেয়া উচিত)।আমার মা’র এই আ্ইডিয়াটা ধার করে আমার বন্ধুদের জন্য আমার এই লেখা খানা। কারন এখন ফেবুতে প্যালেস্টাইন উপলক্ষে একটা ঈদ ঈদ ব্যাপার চলছেঅ মা’র মতো আমার’ও মনে হলো, এটাই ক্যাফি মওকা।
আমরা সবাই প্যালেস্টাইন ইস্যুতে বেশ কান্নাকাটি করছি। (এবার আপনি বলতে পারেন – আমি কাঁদলে আপনার কি? আরো একটু খেপে গিয়ে বলতে পারেন- আপনার বাপের কি? আমার বাপের ফেবু নাই, তাই আসলেই তার কিছু না)।
আমার দুইটা সিরিয়ান, দুইটা প্যালেস্টাইনি বন্ধু আছে।আমি ওদের সাথে ওদের দেশের ব্যাপার নিয়ে একদমই কোন কথা বলি না। ওরাও বলে না্। আসলে বলতে চায় না।
তবুও এ ইস্যুতে আমি আপনাদের কিছু বলতে চাই। আজ পর্যন্ত যতোবার ইসরায়েল প্যালেস্টাইন-এ অনু কিংবা পরমাণু বা অতি প্রবেশ করেছে ,ততোবারই ইসরায়েল লাভবান হয়েছে। এখানে খেলাটা ভূমি দখলের। একদমই প্র্যাকটিকাল লাভ-লোকসানের ব্যাপার। ভূমি দখল, সম্পদ দখল, ছাড়া অন্য কোন মনোঃতত্ব এখানে কাজ করে না। ও এখানে বলা দরকার আমার একটা ইসরায়েলি বান্ধবীও আছে।ওর সাথে প্যালেস্টাইন বিষয়ে কথা বলতে গেলে ও বলেছিলো: “জানো তো আমার ভাই মিলিটারিতে আছে, একদিন খাবার টেবিলে কথা প্রসংগে ও বলেছিলো, ওদেরকে এমনভাবে ট্রেইন করা হয় যাতে ওরা প্যালেস্টাইনিদের মানূষ না ভাবে”।
তো এখানে একটা অংক পরিস্কার:
তুর্কি অমানুষ ভাবে আমারে
ইসরায়েল অমানুষ ভাবে প্যালেস্টাইনিদের
বঙ্গদেশীয়রা অমানুষ ভাবে আদিবাসীদের
সুতরাং, তুর্কি= ইসরায়েলি= বাংলাদেশি।
কারন এরা প্রত্যেকেই কাউরে না কাউরে অমানুষ ভাবে।
ধরেন, ধরে রাখেন, আমি না বলা পর্যন্ত ছাড়বেন না । এই যে ভূমিদখল মানুষ হত্যা আমাদের কান্না, মায়া কান্না।এসব থামাতে আমাদের কি প্যালেস্টাইন পর্যন্ত যেতে হবে? সবাই দেখলাম ফেবু’তে- হাই, আমি অমুক (যদিও প্রোফাইল নাম আছে),বাড়ী: তমুক, সাং:ভেড়া হওয়া, হানিফ সংকেত)এসব লিখে বেবি ডল গান শুনতে শুনতে সব ভুলে যাচ্ছেন। পরান পাখি পা’জামা’র গল্পও শেয়ার দিচ্ছেন। একটু কি ভাববেন? আমাদের সাথে ইসরায়েলের পার্থক্য কোথায়? আমারা দিনের পর দিন আদীবাসীদের ভূমি দখল করে বেড়াচ্ছি। ধর্মের নামে অন্য ধর্মের মানুষের সম্পত্তি দখল করে বেড়াচ্ছি।ইসরায়েল প্যালেস্টাইনিদের সাথে যা করছে আমরা কি বাংলাদেশের আদিবাসীদের সাথে তা করছি না? আজ্ও পড়লাম আদিবাসী শিশুরা বিজিবি,পুলিশ’র ভয়ে স্কুলে যেতে পারে না।এত এত শিক্ষাবিদ দেশে, বুদ্ধিজীবী, তোমরা যারা শিবির করো, তোমরা যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র পড়ে পরীক্ষা দাও, তোমরা যারা নাভীর নিচে শাড়ী ,প্যান্ট পড়ো লিখে কাঁদতে কাঁদতে অন্যের বুক ভাসান। কোনদিনও তো তাদের আদিবাসী বিষয়ে কিছু বলতে শুনলাম না। আমি, আপনিও তো কোনদিন আমার নাম শেখ হ্যাশট্যাগ বা খালেদা হ্যাশট্যাগ, আই সাপোর্ট আদিবাসী এবং তাদের স্বাভাবিক নাগরিক অধিকার এরকম রব রব করলাম না। আসলে এই সব ইস্যুতে কথা বলে তো আর লাইক শেয়ার পাওয়া যায়না। আমার ফেসবুক জুড়ে আদিবাসীদের ভালো মন্দের দায়ভার , আর কারো না?
মানুষের ভালো চাইতে , কল্যান করতে প্যালেস্টাইন পর্যন্ত যাওয়া লাগে না। আসেন আগে মনের ইসরায়েল-রে হত্যা করি।
Jeremy Paul
মন্তব্য
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
১।
আমার অব্জার্ভেশন বলেন উপলব্ধি বলেন - এটা সাঙ্ঘাতিক কঠিন কাজ!
এতই কঠিন যে, যারা এই ধরণের আহবান জানান (ডিস্ক্লেইমারঃ আপনাকে ইঙ্গিত করছি না। অনেস্ট!) বা অন্যদের প্রকাশ্যে মানবতার নামে 'মায়াকান্না' করতে করতে সঙ্গোপনে বা অজান্তেই নিজ মনে "মনের ইসরায়েল" লালন ও চর্চা করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেন - তারা নিজেরাও কিন্তু অনেক সময়েই এই "মনের ইসরায়েল" থেকে মুক্ত নন!! হয়তো কখন-সখনো নিজেদের অজান্তে। কিম্বা কোন একটা মানসিক ব্লাইণ্ড-স্পট তৈরি হয়, যাতে করে অন্যের মনের ইসরায়েল দেখা গেলেও নিজের মনেরটা নিজের চোখে পড়ে না, কেউ পড়িয়ে দিলেও মন মানতে চায় না। তাছাড়া মনের ইসরায়েল-এরও তো অনেক রূপ আছে - অন্যেরটা আইডেন্টিফাই করতে আমরা যতটা উদ্গ্রীব ও সফল, নিজের মনেরটা চিনতে ও চিহ্ণিত করতে এবং সেটার অস্তিত্ত্বকে স্বীকার করতেও (নির্মূল দূর অস্ত্) আমরা অনেক আহবানকারী মনের ইসরায়েল নির্মূল কমিটির নাইট টেম্পলাররাই - নিদারুণ ভাবে অনীহ এবং ব্যর্থ! প্রিচার আর প্রিচ্ড তখন এক হয়ে যায়। নিজেকে দিয়েই বিষয়টা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করি - যখন ক্ষণিকের জন্য হলেও বিদ্যুচ্চমকের মতই কখনো নিজমনের ইসরায়েলটা হঠাৎ করেই নিজের চোখে উদ্ভাসিত হয়, এবং পরমুহূর্তে আবার মনের অতল অন্ধকারে ডুবে যায়। অন্যদের ক্ষেত্রে অবশ্য বিষয়টা আরও স্পষ্টভাবে ভাবে চোখে পড়ে।
তাই বলছিলাম, মনের ইসরায়েল-রে হত্যা করার মত কঠিন কাজ আর কিছু নাই। তবে পারলে, এর চেয়ে ভাল কাজও খুব কমই আছে আর! আপনার আহবানে তাই পূর্ণ সমর্থন রইল, তবে সেইসাথে এই প্রার্থনাও থাকল যে আ্মাদের সব রঙের সব মনের ইসরায়েল খতম করার ফতোয়াদানকারী ও সমর্থনকারীদের সমস্ত সম্ভাব্য মনের ইসরায়েলও যেন ঝাড়েবংশে নিহত হয়, নিব্বংশ হয়!!!
২।
আরেকটু ডেভিল'স এ্যাডভোকেসি করি। ইংরেজিতে মনে হয় একটা কথা আছে - ভিক্টিম'স অফেন বিকাম ভিক্টিমাইজার্স। 'মনের ইসরায়েল-টা কেবলমাত্র দৃশ্যমানরূপে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী ও আগ্রাসী পক্ষের বা 'ভিক্টিমাইজার'-এর একচেটিয়া সম্পত্তি নাও হতে পারে। বাস্তবের ইসরায়েলটাই আমাদের চোখে পড়ে সাধারণত, ভিক্টিমকে প্রায় সময়ই নিষ্কলুষ, দুগ্ধফেননিভচিত্ত অসহায় মানবতার প্রতিমূর্তি মনে হয়। তার মনের ইসরায়েল-টা, আমাদের স্বাভাবিক মানবতাবোধের কারনে অনেক সময় আমরা দেখতে পাই না। কিন্তু তার মানে এই না যে সেটার কোন অস্তিত্ত্ব নেই বা থাকতে পারে না, বা এমনকি তার অসহায়ত্ব, দূর্বলতা বা ভিক্টিমহুডের সাথে তার মনের ইসরায়েল-এর কোন যৌক্তিক তুল্যমুল্য সম্পর্ক আছে। তাই এ ব্যাপারেও সতর্কতা কাম্য।
ধন্যবাদ।
****************************************

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
আমি এত কিছু বলতে চাই না,,,,,,, মনে পরছে প্রথম আদিবাসী বিষয়ে সচেতনতা পেয়েছিলাম,,,,, তোমরা যারা শিবির করো তার কাছ থেকেই,,,,, আশা করি আমার মত কম বুঝেন এমন সাধারন রা একমত হবেন,,,,,হিয়া
জাফর ইকবাল স্যার আর "নাভির নিচে শাড়ি, প্যান্ট" পেইজের লেখকদের একই ক্যাটাগরিতে রাখাটা কিঞ্চিৎ মূর্খতার পরিচয় বহন করে। যতদূর জানি, আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে জাফর স্যার বিভিন্ন সময় কথা বলেছেন। একটি লেখার লিঙ্কঃ http://epaper.prothom-alo.com/index.php?opt=view&page=12&date=2011-08-09
আজকাল কারনে-অকারনে জাফর স্যারের পিছে লাগাটা ব্লগচর্চার অংশ হয়ে যাচ্ছে।
--সুবীর
“মানুষের ভালো চাইতে , কল্যান করতে প্যালেস্টাইন পর্যন্ত যাওয়া লাগে না। আসেন আগে মনের ইসরায়েল-রে হত্যা করি “
ভাইরে এরপর আর কিছুই বলার থাকেনা।
অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
সুবির এখানে কিন্তু কোথাও জাফর ইকবাল স্যারের কথা ছিলনা, হয়ত আপনি বলবেন পরোক্ষভাবে ছিল আসলে তাও ছিলনা, ছিল আপনার মনে। তাই অযাচিতভাবে আপনি উনাকে এখানে টেনে এনেছেন।
এবার বলেন, ‘আজকাল কারনে-অকারনে জাফর স্যারের পিছে লাগাটা ব্লগচর্চার অংশ হয়ে যাচ্ছে’
এখন এটা কে করল?
অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
খুবই এলোমেলো লেখা। কিছুই বুঝতে পারি নি। জায়গামত প্যারা ভাগ করে লিখলে হয়ত আর একটু পরিস্কার হত। লেখা ভাল লাগেনি।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নতুন মন্তব্য করুন