সেদিনটি ছিল বসন্তের শুরুর দিকের কোন একটি দিন। বাড়ি ফিরেছিলাম অন্য দিনের চেয়ে বেশ আগে। এখানে দীর্ঘ শীত কাটাতে হয় অন্তঃপুরে, তাই শীত চলে যাওয়ার ভাব হলেই বাইরে বেরিয়ে পড়বার ইচ্ছেটাকে আকাশে উড়িয়ে দেই। প্রতিদিন বাইরে ঘুরে ঘুরে শুকনো বাদামী পাতা আর ঘাসের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসা নতুন সবুজ লতা পাতা, কাণ্ড এবং কুঁড়িদের দেখি আমি এসময়। চোখের সামনে শীতের ধুসর আর ছাই রঙা প্রকৃতি একটু একটু করে পেলব সবুজে ঢেকে যেতে দেখে আমার ক্লান্তি আসেনা কখনও। এই শীতের দেশে পত্রহীন চেরী, ফোরসাইথিয়া, ম্যাগনোলিয়া গাছের ডালপালা ফুলে ফুলে ছেয়ে যাওয়ার ঐশিক সৌন্দর্যের কথা বাদ-ই দিলাম, সারা শীত ছাই, সাদা আর বাদামী দেখবার পর, আগাছার কচি সবুজ পাতা দেখলেও মন ভরে যায়।
আমি অন্য দিনের মতোই ঘুরে ঘুরে সদ্য ফোটা ফুল আর গজানো লতাপাতা দেখে ফিরছিলাম, হঠাৎ করে বসন্তের শীতশীত হালকা হাওয়া এসে নাকমুখ ছুঁয়ে যায়। সে হাওয়ায় শরীরে বহুকাল আগের চেনা একটি ঘ্রাণ লেপ্টে ছিল টের পেলাম । ঘুরে দাঁড়িয়ে একটু খোঁজাখুঁজি করতেই সেই অতীত গন্ধী সুবাসের উৎস পেয়ে গেলাম। বাড়ির সম্মুখের সীমানায় বড় একটি সাদা ম্যাগনোলিয়ার গাছ। সেই গাছের কালচে সবুজ ভারী ভারী পাতার রাজ্য আলোকিত করে একটি নীহার-কান্তি ম্যাগনোলিয়া ফুটেছে। ম্যাগনোলিয়ার মদির ঘ্রাণে মায়াচ্ছন্ন আমি নিঝুম দাঁড়িয়ে রইলাম। শুধু চোখ আর মনের পর্দায় চলছিল অনেক স্মৃতির আঁকিবুঁকি।
ম্যাগনোলিয়া'র সাথে আমার প্রথম পরিচয়, ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। আমি তখন সবেমাত্র স্কুল শুরু করেছি। বাবা সেখানকার ডিপ্লোমা কৃষি কলেজে পড়াতেন। গৌরীপুরে একসময়ে খুব সৌখিন এক রাজার রাজত্ব ছিল বলে শুনেছি। তার যেমন আগ্রহ ছিল বেলজিয়ান গ্লাস এবং সূক্ষ্ম কাঁচের মোজাইকে, তেমনি ভালোবাসতেন বাহারি ফুল-লতা-পাতা। তিনি বিভিন্ন দেশ থেকে নানারকম ফুল সহ অন্যান্য গাছগাছালি এনে লাগিয়েছিলেন। বাবার অফিস সহ সব বড় বড় স্থাপনাগুলো সব-ই কোন না কোন ভাবে সেই রাজত্বের অংশ ছিল। এমনকি আমাদের বাসাটিও ছিল তার-ই অংশ। গৌরীপুরেই আমি প্রথম কফি গাছ দেখেছি বাবার অফিসের বাগানে, কফি বিন হতো সেই গাছে অজস্র, পেকে ঝরে পড়ত। ছোট্ট সেই জংশন-শহরে কিছু ম্যাগনোলিয়া বেড়ে উঠেছিল এদিকে ওদিকে। আমাদের বাসাটি ছিল অনেকটা জায়গার ওপরে, স্বর্ণলতায় আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে ধরা কাটা মেহেদীর প্রাচীর পেড়িয়ে তবে সেই বাড়ির সামনের আঙিনা, আমাদের খেলার মাঠ। বাবা এখানেই সবজি চাষ করতেন। বাড়িটি বেশ বড় এবং সিমেট্রিক্যাল বলে মাঝখানে পার্টিশন দিয়ে দুটি বাসা করে দেয়া হয়েছিল। বাড়ীর সামনে বেশ অনেকগুলো প্রসস্থ সিঁড়ি যার দুই ধার ঘোরানো নকশায় বাধানো ছিল। সেই সিঁড়ির দুই পাশে ছিল বড় দুটি ম্যাগনোলিয়া গাছ। প্রতি শীতে ম্যাগনোলিয়া গাছে ফুল ফুটত। গাছে উঠে ডাল ভেঙে তবেই কেবল সেই ফুল তোলা সম্ভব হতো, তাই ফুলগুলো সাধারণত আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে যেত। তবে ম্যাগনোলিয়া ফুটলে ফুল যতোই পাতার আড়ালে থাকুক না কেন, ফুল ফোটা মাত্রই তার কনক বাসে ভেসে যেত পুরো পাড়া। সবার জানা হতো; ম্যাগনোলিয়া ফুটেছে ।
আমাদের বাসার অন্যদিকে থাকত রিটা রা। ওদের আব্বাও আমার বাবার সাথে কৃষি কলেজে পড়াতেন। রিটা আর আমি এক ক্লাসে পড়তাম। স্কুলে সবাই ওকে বলতো 'ইংলিশ রিটা' আর আমাকে 'বাংলা রীতু'। ওর আব্বা ভীষণ কড়া মানুষ ছিলেন বলে রিটা আমাদের সাথে বেশী খেলতে পারত না ইচ্ছে থাকলেও। আমি স্কুল থেকে ফিরেই খেলতে বেড়িয়ে যেতাম। মা শাসন করলেও, সন্ধ্যের আগে ফিরে এসে পড়তে বসলেই আর কিছু বলতেন না। বাবা আমাদের ওয়ান/টু এর পড়া নিয়ে একটুও মাথা ঘামাতেন না। আমি চন্দনা, মিলি, রিপা, নেভী এদের সাথে পাড়া বেড়িয়ে সন্ধ্যের আগে ফিরে আসতাম। কোন কোন দিন আমাদের বাসার সামনের মাঠেই আমরা সবাই মিলে খেলতাম, ছি বুড়ি, গোল্লা ছুট, কানামাছি। সন্ধ্যে নেমে এলে হাতমুখ ধুয়ে সুর করে পড়তে বসা। মাঝে মাঝে বাবার সহকর্মীদের কেউ বিকেলে বেড়াতে এলে বারান্দায় গল্প-আড্ডা জমে উঠত। রিটার আম্মা-আব্বাও যোগ দিতেন আড্ডায় সেসব দিন। সেই সব ম্লান জ্যোৎস্নার রাতে বড়দি বড়দা, আমি, ভাই, লিপি, রিটা, জাভেদ, বেড়াতে আসা কাকু-কাকীদের ছেলেমেয়েরা সবাই মিলে বড়দের গল্পের সুযোগে খেলায় মেতে উঠতাম। পথের অন্য ধারের ইয়াসমিন আপারাও এসে যোগ দিতেন আমাদের সাথে। সেরকম রাতে আমাদেরকে কে পায়। আহ চাঁদের আলোয় লুকোচুরি খেলার সেই সব দিনগুলি...!
প্রতি শীতে বাসার সামনে আমরা ফুল বাগান করতাম। ম্যাগনোলিয়া গাছের আশেপাশের জায়গা জুড়ে বিভিন্ন রঙের গাঁদা, ডালিয়া, দোপাটি, কসমো, চন্দ্রমল্লিকা লাগাতাম। আমাদের বাসার ভিতরে উঠোনে তুলসী তলার কাছ ঘেঁষে ছিল সন্ধ্যা মালতীর বন, সেখানেই ফুটত নীল অপরাজিতা বা নীলকণ্ঠ। বাগান নিয়ে রিটাদের সাথে আমাদের রীতিমত প্রতিযোগিতা চলত, কাদের বাগান কত সুন্দর। আমাদের বড় বড় গাদা ফুটত প্রতিবছর, ডালিয়াও। ডিসেম্বর থেকে শুরু করে মার্চ পর্যন্ত বাগান ফুলে ভরাই থাকতো, সেই একই সময় ফুটত ম্যাগনোলিয়াও। মাঝে মাঝে বড়দা বা ছোট ভাই গাছে উঠে ঠিক ঠিক ম্যাগনোলিয়া পেড়ে আনত। সেসময় ফুল তোলা কি যে এক আনন্দের ব্যাপার ছিল। আমার নিত্য কাজের একটি ছিল, পূজোর ফুল তোলা। নিজেদের বাগানে হাজার ফুল ফুটলেই কি, আমি কাকভোরে উঠে ফুল চুরিতে বেরিয়ে পড়তাম বন্ধুদের নিয়ে। এ কাজে আমার নিত্য সঙ্গী ছিল লিপি, চন্দনা আর নেভী। নিয়মিত গন্তব্য ছিল বাবার অফিস, সোনালী ব্যাংক, গৌরীপুর কলেজ। শুধু ফুল নয়, ফুল গাছ সহ তুলে নিয়ে ফিরে আসতাম মাঝে মাঝে, নিজেদের বাগানে লাগাবো বলে। আবার কোন কোনদিন অতিরিক্ত দুঃসাহসিকতা দেখাতে দিয়ে সোনালী ব্যাংকের দারোয়ানের তাড়া খেয়ে ফুল বা ফুলের ডালি ফেলে ঊর্ধ্বশ্বাসে পালিয়েও আসতে হয়েছে। পরীর দেশ থেকে নেমে এসে ফুল পরীরা ফুল ফোটায় প্রতি রাতে, সেটা তখনও মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতাম। তাই অনেক রাতের শেষ প্রহরের আঁধার কাটত জানালায় বসে ফুল গাছের দিকে অপলক চোখে চেয়ে থেকে থেকে। যদিও অপেক্ষার দীর্ঘ প্রহরের শেষে চর্মের চক্ষে ফুল পরীদের দেখা মেলেনি শেষ পর্যন্ত। তবে অপেক্ষায় থেকে থেকে একসময় চোখের পাতায় ঘুম নেমে এলে মর্মের চক্ষে শ্বেতশুভ্র অনিন্দ্য সুন্দর সেই লাল, নীল, গোলাপি, বেগুনী ডানাধারীদের দেখা হয়েছে সহস্র বার।
ফেব্রুয়ারিতে এসে বাগান টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যেত, একদিকে কোজাগরী পূর্ণিমায় লক্ষ্মী পূজা। সেদিন রাতে ফুল চুরির হিড়িক পড়ত। আমরা রাত জেগে বাগান পাহারা দিয়ে যেই মাত্র ঘুমাতে যেতাম অমনি কেউ এসে বাগান খালি করে যেত। ছিল একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাত ফেরী, সেদিন নিজেরাই বাগানের ফুল তুলে বলিয়ে দিতাম শহীদ মিনারে দেবার জন্য। কোন কোন বার নিজেরাও ফুলে হাতে বেরিয়ে গেছি, প্রভাত ফেরীর মিছিলে পাড়ার বড়দের সাথে। ফিরে এসে দেখা যেত বাগান আবারও ফুল শূন্য। সেই কবেকার কথা সব!
হয়তো আরো অনেকক্ষণ আমি ডুবে থাকতাম ম্যাগনোলিয়ার মধুগন্ধে ভরা স্নিগ্ধ কান্তিময়ী সেই স্বপ্নমাখা অতীতে, ছোট মেয়ের মাকে খুঁজে বেড়ানো আকুল ডাকে সম্বিৎ পেয়ে বর্তমানে ফিরে এলাম। সেই সময়কার বন্ধুদের অনেকের মুখ-চোখ চেহারাও এখন ঝাপসা হয়ে গেছে, অনেক চেষ্টাতেও মনে করতে পারিনা আর। গতবার দেশে গিয়ে লিপিকে খুঁজে পেয়েছি। ওর কাছ থেকে চন্দনা, রিপা, মিলি, নেভী এদের কিছুটা হদিশ করতে পারলেও, রিটা এখন কোথায় আছে জানা নেই।
সেদিন ঘরে ফিরতে ফিরতে ভাবছিলাম, তেমন একটা বাগান আবার কবে হবে! ম্যাগনোলিয়া তো রয়েছেই, এবার প্রয়োজন গাঁদা, দোপাটি, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, কসমো, সন্ধ্যা মালতী আর অপরাজিতা।
আমার বাড়িতে বাগানের জায়গা বিস্তর, কিন্তু বাদ সাধে সর্বভুক হরিণের দল। যা লাগাই সব ওরা সাবড়ে সাফ করে দেয়। চন্দ্রমল্লিকা এদেশে অঢেল হয়, নানা রঙে। আমি প্রথম বছর যা লাগিয়েছিলাম তা প্রায় নির্বংশ হতে সময় লাগেনি। গতবার দেশে গিয়ে অপরাজিতা আর সন্ধ্যা মালতী এনেছিলাম সেগুলোও চারা অবস্থাতেই হরিণের খাদ্য হয়েছে। হায়, নেট ঘাঁটাঘাঁটি করে হরিণ তাড়ানোর যত টোটকা পাওয়া গেছে সব প্রয়োগ করেও পুরোই বিফল। এবারে আমার স্প্রিং এর টিউলিপ, ড্যাফোডিল কিছুই ফোটেনি, কন্দ থেকে কাণ্ড ঠিকমতো বেরুনোর আগেই......! অবশেষ নেটেই পাওয়া গেল হরিণ দূরে রাখার মোক্ষম এক প্রযুক্তি। এবং তিন বসন্তের পরে এবার আমার আঙিনায় কিছু কিছু ফুলের সমারোহ। বসন্তের শুরুতেই ফুটেছিল এ্যালিয়াম আর পিওনি। তারপর লিলি, কোন ফ্লাওয়ার আর ডেইজী। জুনের শুরু থেকে বাটারফ্লাই বুশে প্রজাপতি আর মথের মেলা বসেছে। এখন একদিকে নিয়মিত ফুটছে সকালের বৈভব( মর্নিং গ্লোরি); অন্যদিকে সন্ধ্যা মালতী। সাথে আরো আছে দোপাটি, কসমো। ফুটেছে নীল অপরাজিতাও এই সপ্তাহেই। টিকে আছে বছর দুয়েক আগে লাগানো চন্দ্রমল্লিকাদের কয়েকটি, গাঁদা এবং ডালিয়া এবারেও বাদ পড়ে গেছে। তবে আসছে বারে নিশ্চয়...।
আজকাল প্রতিদিন সকালে চায়ের কাপ হাতে বাগানে ঢুঁ দেই, নতুন ফোটা ফুলদের স্বাগত জানাতে। কাজের শেষে বাড়ি ফিরে দেউড়িতে বসেই কাটে সন্ধ্যে নামা পর্যন্ত।
এবারেও তার অতীত গন্ধী সুবাস নিয়ে ম্যাগনোলিয়া ফুটেছে সম্মুখের আঙিনায়, যদিও তার মৌসুম প্রায় শেষ। তবুও পাতার ফাঁকে ফাঁকে একটি দুটি ফোটে যেদিন, সেদিন শত চেষ্টাতেও বর্তমানে আমার আস্থান হয়না। বাগানে ফোটা দোপাটি, কসমো, সন্ধ্যা মালতী আর অপরাজিতার গোলাপি, ম্যাজেন্টা, লাল, সাদা, নীল; সব রঙের দিকে নির্নিমিখে তাকিয়ে থাকতে থাকতে একসময় চোখে ঘোর লেগে আসে। মোহ মদে আচ্ছন্ন সেই দৃষ্টিতে আমি স্পষ্ট দেখতে পাই একদল ফুল-পরীদের; নানা রঙের রঙিন ফ্রক পড়া উজ্জল-উচ্ছল শ্যামাঙ্গী এই বালিকা পরীদের পাখা নেই কারোই; বরং তাদের আছে নিষ্পাপ লাবণ্যে উদ্ভাসিত মুখাবয়ব আর স্বপ্ন কাজল মাখা আলোকসামান্য নিতল জোড়া চোখ। এদের হাতে হাতে ধরা ফুলের ডালি। এরা ফুল ফোটায় না কেউ, বরং ফুল তুলে নিয়ে যায় ডালি ভরে। তোলা ফুলে ফুলে ডালি ভরে যাবার আনন্দ কাকলিতে এরা মুখরিত করে চারিধার। এদের কারো নাম বুঝি চন্দনা, কেউ লিপি, কেউ নেভী, কেউ কি রীতু! খুব চেষ্টা করি নিয়ত এদের মুখগুলো স্পষ্ট করে দেখে নিত, কিন্তু মায়ার কুহক কেটে দৃষ্টি স্বচ্ছ হতেই এরা কোথায় জানি মিলিয়ে যায়। কিছুতেই আর খুঁজে পাইনা।
সম্মুখের দিকে তাকিয়ে ধীর পায়ে নেমে আসা সন্ধ্যের আঁধারে ম্যাগনোলিয়ার গাছটা তখনও স্পষ্ট দেখতে পাই, আঙিনা-বাগান তখনও সুবাসিত শ্বেত ম্যাগনোলিয়ার মৃদু ম্লান বিষাদ মাধুরীতে। বর্তমানে ফিরে আসা দুই চোখের স্বচ্ছ দৃষ্টি তখন আবারও ঝাপসা হয়, নিঃসীম অন্ধকারে কিছু স্বপ্নমায়া খুঁজে ফেরা বৃষ্টিজলে।
রীতু
মন্তব্য
ভাল , সুন্দর
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
রীতুদি কেমন আছ? অসাধারন একটা লেখা আর তুমি অনেক ভাগ্যবতী কারন তুমি তোমার ওয়ান টুয়ের বন্ধুদের আবার ফিরে পেয়েছ। তোমার লেখা পড়ে একটা গান মনের মাঝে আপনাতেই গুন গুন করে উঠল-
দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইল না
সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি
ফাহিমা দিলশাদ
ফাহিমা,
এইতো কেটে যাচ্ছে। তোমার বাগান দেখলাম। কুমড়ো ফুলের বড়া খেয়েছ তো ? অনেক ভালো থেকো।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
বাহ্! বেশ লগলো লেখাটা।
ধন্যবাদ, প্রৌঢ় দা। শরীর কেমন আছে?
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
আপনার লেখাগুলো বেশ সুন্দর। আগেরগুলি ও পড়েছি। কখনো মন্তব্য করিনি। আজ করে গেলাম। বেশ ভালো লাগে পড়তে। একটানে নিয়ে চলে যান ফেলে আসা অতীতে, কিংবা মনের কোন না বলা কথা, কিংবা অনেকবার তাকিয়ে থাকা অথচ না দেখা কোন বিষয়ে। বেশ মসৃন লেখা। পড়তেও কষ্ট হয় না একদমই।
অনুরোধ করি "লিখতে থাকুন"।
বিঃদ্রঃ অনেকগুলিই তো লিখে ফেললেন। মডুদের কাছে আপনাকে হাচল করে দেবার বিষয়টি বিবেচনা করার দাবি ও অনুরোধ জানিয়ে গেলাম।
-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------
গৃহবাসী,
কৃতজ্ঞতা জানাই পড়া এবং সুন্দর মন্তব্যের জন্য। মডুদের কাছে আবদনের জন্য সাথে অনেক অনেক ধন্যবাদ। সচল হলে নাহয় ভার্চুয়াল খাওয়া দাওয়া দিয়ে যাব।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
আপনার লেখাগুলো সত্যি অসাধারণ। জানিনা, হয়ত বয়সের দিক থেকে আপনার সাথে প্রজন্মের ফারাক কিন্তু স্মৃতিগুলোর কত মিল। মনে পড়ে , কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমার জ্যোৎস্নায় ভেসে যাওয়া রাত। চারদিকে বাজি ফুটছে। আমরা ভাই-বোনেরা মিলে মলিন মুখে প্রতিক্ষা করছি কখন বাজি ফুটাবো। হঠাৎ করেই যেন দেবদূতের মত বাড়ি ফিরতেন বাবা, হাতে রাশি রাশি বাজি। আমাদের সেকি আনন্দ ! সে রাতে সুপুরী গাছে চড়তে গিয়ে যে কতবার হাত ছিলে গেছে !
ছোট্টবেলা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে যেতাম,সত্যি বিশ্বাস করতাম, হয়ত ফুল-পরীদের দেখতে পাব। আজকে আপনার লেখা পড়ে ভাবছি,আসলেই তো সেই উজ্জ্বল-শ্যামাঙ্গী বালিকারাই ছিল সত্যিকারের ডানাকাটা ফুলপরী!
ফেব্রুয়ারী মাসে বাড়ির পাশের পলাশ গাছটা আগুনলাগার মতো ছেয়ে যেত পলাশ ফুলে। ডালি সাজিয়ে খালি পায়ে দিদির সাথে প্রভাতফেরীতে যাওয়া !!
দিদি, প্রবাসে আপনার সন্তানরাও শুনুক এই গল্পগুলো। আপনার চোখে দেখুক ফেলে আসা রঙ্গীন বাংলাদেশটা ! অনেক শুভকামনা।
রাজর্ষি
রাজর্ষি,
মেয়েদের কি জানিয়ে যেতে পারবো জানিনা, সময়ের পিছনে ঘুরে ঘুরেই ক্লান্ত। আমি পূজা করি কিন্তু সেই আমেজ আসে কই। ওদের কে দেশের গল্প বলা অনেক সময় রূপকথার গল্পের মতো মনে হয়। ওরা বিশ্বাস ও করতে চায়না, দেশের যে ছবি ওরা দেখে সেখানে গেলে সে তো আমার গল্পের চেয়ে অনেক ভিন্ন।
আপনিও ভালো থাকুন অনেক অনেক। শুভকামনা।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
সোহেল লেহস,
অনেক ধন্যবাদ, আপনার ও ভার্চুয়াল খাওয়া পাওনা থাকল।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
যথারীতি সুন্দর লেখা। গৃহবাসী বাউলের সাথে আমি একমত। আপনার উপর মডু ভাই/বোন দিগের নেক নজর কামনা করছি
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
রূমানা আহমেদ,
আমরা হয়তো একই ভাবে বেড়ে উঠেছি সময় এবং প্রকৃতির কোলে ঘেঁষে । আমার কাছে মনে হয় সব কিছু চলে গেলেও প্রকৃতিই কেবল গভীর মমতায় দুইহাত বাড়িয়ে দিয়ে অপেক্ষায় থাকে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
রীতু
'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'
নতুন মন্তব্য করুন