কাপ্তাইয়ে ট্যুরিষ্ট স্পটগুলোতে ঘুরাঘুরির অভিজ্ঞতা নিয়ে আজকের এ লেখা। স্পটগুলোর নিয়ে কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবো। কিন্তু স্পটগুলোর সৌন্দর্য বর্ণণা আজ করছি না। সৌন্দর্যের বর্ণণা হবে ছবির ভাষায়।
কাপ্তাই হ্রদ: কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে একটু সামনে এগিয়ে গেলে পেয়ে যাবেন কাপ্তাই ঘাট। সেখান থেকে চড়ে বসতে পারেন নৌকায়। ভাড়া পড়বে ঘন্টাপ্রতি ১০০ টাকা। যান্ত্রিক শব্দ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে নৌকায় চড়াটাই ভালো। তাছাড়া ইঞ্জিন চালিত নৌকারও সুব্যবস্থা আছে। যতক্ষণ ইচ্ছা ঘুরতে পারেন হ্রদে। পানিভীতি থাকলে কিংবা সাতার না জানলে লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করুন। সৌন্দর্যের কথা না হয় নাই বললাম।
নৌ বাহিনীর পিকনিক স্পট: কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সিএনজিতে আধ ঘন্টার মধ্যে পৌছে যেতে পারবেন এখানে। প্রবেশমূল্য মাত্র ১০ টাকা। রাঙামাটি বলতে সম্ভবত পাহাড় আর হ্রদের মেলবন্ধনকে বুঝায়। নৌ বাহিনীর পিকনিক স্পটটিও তার বিপরীত নয়। তবুও এখানে গেলে একটা আলাদা স্বাদ পাবেন।
প্যানোরমা জুম রেস্তোরা ও পিকনিক স্পট: কাপ্তাইয়ের ট্যুরিষ্ট স্পটগুলোর মধ্যে প্যানোরমা জুম রেস্তোরার কথা বেশ শোনা যায়। তাই এর প্রতি আমারও আগ্রহ ছিল বেশ। এখানেও প্রবেশমূল্য ১০ টাকা। কিন্তু যতটা ঢাকঢোল পেটানো হয়েছে বাস্তবে অতটা নয়। বরং হতাশ হয়েছি। এমনকি খাবারের আইটেম ছিল মাত্র একটা!
ফ্লোটিং প্যারাডাইস রেষ্টুরেন্ট: প্যানোরমা জুম রেস্তোরার থেকে একটু সামনে এগিয়ে গেলে এ রেষ্টুরেন্টেটি দেখা পাবেন। দুপুরের খাবার খেতে চলে আসতে পারেন এ রেষ্টুরেন্টে। অসাধারণ রান্না। সঙ্গে পাহাড় আর নদীর যে দৃশ্যটি দেখতে পাবেন সেটি ফ্রী।
কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান: পাহাড়, হ্রদ, নদী, খাল, ঝরনা, পাখি আর বন্যপ্রাণীর কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। এখনো যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি আমার। তাই এটি নিয়ে কিছুই লিখছি না। সেখানে গিয়ে একজন লোকেরও দেখা পাইনি। তাই এটি না দেখেই ফেরত আসতে হয়েছে আমাদের। ব্যাপার না……পরবর্তী কোন ভ্রমণে সময় নিয়ে দেখার সুযোগ করে নিব। শুনেছি কপাল ভাল থাকলে সেখানে নাকি হাতিরও দেখা মেলে। আমরাও দেখেছি
কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র: কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে অনেকে ট্যুরিষ্ট স্পট হিসেবে ধরেন। সেখানে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। তবুও অনেককে সেখানে প্রবেশের জন্য বেশ আগ্রহী দেখেছি। সম্ভবত নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের আকর্ষণই এর কারণ। যেহেতু জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ তাই এখানে প্রবেশের চেষ্টা না করাই ভালো।
ওয়াগ্গা টি ষ্টেট: চট্টগ্রাম বিভাগের সবচেয়ে বড় চা বাগান এটি। প্যানোরমা জুম রেস্তোরার বিপরীতে এর অবস্থান। জানা গেল আগে সকলের জন্য প্রবেশাধিকার থাকলেও এখন আর নেই। পর্যটকদের কৃতকার্যে অতিষ্ঠ হয়ে এমন সিন্ধান্ত।
এছাড়া যেতে পারেন শেখ রাসেল অ্যাভিয়ারি এন্ড ইকো পার্ক। কাপ্তাইয়ের কাছেই এর অবস্থান। কিন্তু অবস্থানগত দিক থেকে এটি চট্টগ্রামের মধ্যে পড়ায় এ পর্বে এটি নিয়ে আলোচনা করছি না। অন্য কোন পর্বে এটি নিয়ে বিশদ আলোচনা করবো। তাছাড়া কাপ্তাইয়ে আরও কিছু ট্যুরিষ্ট স্পট পাবেন।
কিভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে সরাসরি কাপ্তাই যাওয়ার কিছু বাস পাবেন। এছাড়া ঢাকা থেকে চলে যেতে পারেন চট্টগ্রাম। এরপর চলে আসুন বহদ্দারহাট বাসষ্ট্যান্ড। সকাল থেকেই আধঘন্টা /একঘন্টা পরপর গেটলক বাস পাবেন কাপ্তাই যাওয়ার জন্য। ভাড়া ৬০-৭০ টাকা। সময় লাগবে দেড় থেকে দুই ঘন্টা।
হ্যাপি ট্রাভেলিং
hasibbd
মন্তব্য
ভাল লাগল।
একটা কথা না বলে পারছিনা, আমাদের দেশে যা কিছু সুন্দর তা সুন্দর থাকার জন্য মনে হয় মানুষ জন কম যাওয়াটা জরুরী। আপনার ছবিগুলাতে কোন ময়লা, চিপসের প্যাকেট আর সিগারেটের ফি্ল্টার দেখতে পেলাম না, এটা মানুষ জন না দেখেই ফিরে আসার ফল। সেই একই কারণে দেখুন না কর্তৃপক্ষ চা বাগানে ঢুকতে দিচ্ছেনা আর।
আপনার ল্যান্ডস্কেপের হাত চমৎকার। ছবিগুলা খুব ভাল লাগল।
আমি অবশ্য বাঁধের উপরে পর্যন্ত গিয়েছি, স্লুইস গেটগুলোও সামনে থেকে দেখেছি, সেনাবাহিনীতে কর্মরত এক খালুর সুবাদে। একপাশে শুধু ভিজা মাটি, আরেকপাশে অনেক উঁচু পর্যন্ত পানি দেখে অনেক মজা পেয়েছিলাম মনে আছে।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
আপনার সাথে একমত। আমাদের অসচেতনার কারনে এত সুন্দর স্পটগুলো সৌন্দর্য হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কোন একটা স্পট জনপ্রিয় হয়ে যাওয়া মানে হচ্ছে সেটির বারোটা বাজিয়ে ছাড়া। তাই এখন থেকে সিন্ধান্ত নিয়েছি অপেক্ষাকৃত কম জনপ্রিয় স্পটগুলো নিয়ে ভবিষতে আর কোন ব্লগ লিখবো না। আমাদের মাঝে ভ্রমণের কিছুটা আগ্রহ বাড়লেও প্রকৃতির উপর ভালবাসা জন্মায় নি। এমন সব মানুষদের হাত থেকে আমাদের প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখাটা জরুরি।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন
hasibbd
শরতের আকাশ আমাকে সবসময়ই মুগ্ধ করে। ইস! কতদিন এই মাতাল করা আকাশ দেখি না !!
ছবিগুলো খুব ভালো হয়েছে
মরুচারী
ধন্যবাদ
ছবিগুলো খুবই সুন্দর! আহারে অনেক অনেক কাল আগের কথা মনে করিয়ে দিলেন। ১৯৯৫ সালে কাপ্তাই লেকের উপর দিয়ে যন্ত্র চালিত নৌকায় করে রাঙ্গামাটি গিয়েছিলাম প্রায় ২৫ জন বন্ধু মিলে। আমার জীবনের স্মরণীয় একটি ঘটনা। কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বন্ধু থাকার সুবাদে সেখানে বেশ কয়েকবার যাওয়া হয়েছে। প্রতি বারই প্রচুর ভাল লাগা স্মৃতি নিয়ে ফেরত এসেছি। অসাধরণ সুন্দর একটি জায়গা।
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
hasibbd
আপনার পোষ্টে আকাশ বোধহয় বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ঘুরাঘুরির পোষ্টে ছবির সাথে বর্ণনাটাও আরেকটু বেশি হলে লেখকের সাথে পাঠকেরও ঘুরা হয়ে যায় সচলে বসে। আশা করি ভবিষ্যতে এই বিষয়টা মাথায় রাখবেন। ধন্যবাদ
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
আসলে "শরতের কাপ্তাই" তাই আকাশ দিয়ে ভরে ফেলেছি পোষ্টটি :p। ছবি বেশী হয়ে যাওয়ার কারণে বর্ণণায় যাই নি। পরবর্তী পোষ্টগুলোতে ছবি আর লেখার মধ্যে সমন্ময় রাখার চেষ্টা করবো। আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন
hasibbd
মাসুদ সজীব-দাদার পরামর্শ মনে রখবেন বলেছেন, খুব ভাল। লেখা আর ছবির ভারসাম্য, ছবিগুলির নিজেদের মধ্যে ভারসাম্য, যদি বিশেষ কোন দিকে পক্ষপাতিত্বর ইচ্ছে হয়, তবে কেন সে ইচ্ছা সেটি লেখায় জানানো - এ'গুলি পোস্ট-টিকে আরো উপভোগ্য করে তোলে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
মনে রাখবো আপনার পরামর্শগুলো। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন
hasibbd
ধন্যবাদ।
ভাল লেগেছে।
লেখা ভাল হয়েছে।
আর কাপ্তাই লোকজন যত কম যায়, ততই ভালো । কেন বলছি, বুঝেছেন নিশ্চয়ই!
নিশ্চয়ই......
hasibbd
তারমানে হল প্রকৃতিকে বাঁচাতে সেখানে মানুষের যাওয়া আসা কম করতে হবে। কিন্তু আমার তো মনে এমন অসীম সৌন্দর্যকে শুধু নিজেরা দেখলে চলবে না সারা পৃথিবীকে দেখাতে হবে।
ছবিগুলো অসাধারণ
ফাহিমা দিলশাদ
ধন্যবাদ.........ভালো থাকবেন
আহা! কী সুন্দর!! কী সুন্দর!!!
ছবিগুলো অপূর্ব লেগেছে। জল ও আকাশের মিলনমেলা অদ্ভুত রকম ভালো। তবে আপনার ছবিতে আকাশ প্রাধান্য পেয়েছে, জল বা স্থলের সৌন্দর্য এতে করে ঢাকা পড়ে গেছে মনে হলো। আর ছবিগুলোতে নাম্বার বা ক্যাপশন থাকলে সুবিধা হতো।
____________________________
এরপর গেলে আকাশের পাশাপাশি জল আর স্থলের ছবি তুলে আনবো .........ভালো থাকবেন
নতুন মন্তব্য করুন