• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

দুবাইয়ের পথে পথে – পর্ব ৩ – বইমেলা ও ড্যান ব্রাউনের প্রশ্ন

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০৯/১১/২০১৪ - ২:০৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সিরিজের নাম যদিও দুবাইয়ের পথে পথে, আজকের লেখার পটভূমি কিন্তু শারজাহ। শারজাহ আর দুবাই একদম পাশাপাশি শহর – উত্তরা-টঙ্গির মত। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় টের পাবেন না কখন দুবাই ছাড়িয়ে শারজাহতে ঢুকলেন। শারজাহকে বলা হয় আরব আমিরাতের সাংস্কৃতিক রাজধানী - গত ৩৩ বছর ধরে এই শহরে একটি আন্তর্জাতিক বইমেলা হয়ে আসছে। এবারের আসরের উদ্বোধন হবে ড্যান ব্রাউন ( দ্য ভিঞ্চি কোড, এঞ্জেলস এন্ড ডিমনস খ্যাত লেখক)- এর বক্তৃতা দিয়ে। দ্য ভিঞ্চি কোড পড়ার সময় দারুন শিহরিত হয়েছিলাম (যদিও সিনেমাটা দেখে হয়েছিলাম ততোধিক আশাহত) – রবার্ট ল্যাংডনের বাকি গল্পগুলো বেশ আগ্রহ নিয়েই পড়েছিলাম। কাজেই যখন খবরের কাগজে পড়লাম ড্যান ব্রাউন আসছেন, ঠিক করলাম কথাবার্তা শুনেই আসি - চাইতো "ইনফারনো"-তে একখানা অটোগ্রাফও বাগানো যেতে পারে।

সপ্তাহান্তে কাজের চাপ বেশি থাকে, তারপরও কোনরকমে বসকে ভুজুং দিয়ে চারটা নাগাদ বেড়িয়ে পড়লাম। শারজাহ – দুবাইয়ের কুখ্যাত ট্রাফিক ঠেলে, ৩০ মিনিটের রাস্তা এক ঘন্টা ৪০ মিনিটে পেড়িয়ে শারজাহ এক্সপো সেন্টার পৌছুলাম ৭টা ১০-এ – অনুষ্ঠান শুরু ৭টায়। কোন রকমে কাঁকর বালুতে পার্কিং করে ছুটলাম অডিটোরিয়াম গেটে। কিন্তু সেখানে আটকে গেলাম নিরাপত্তা বলয়ে –ব্রাউনের সাথে শারজাহর শাসক শেখ সুলতান আল কাসিমিও যে আসবেন! পরে অবশ্য শেখ সুলতান কে মনে মনে ধন্যবাদ দিয়েছি – উনি দেরী করে আসায় মূল আকর্ষণটা মিস করিনি। যাই হোক পুলিশী গ্যাঁড়াকল পাড় করে হলে ঢুকে দেখি সব আসনই বেদখল – কোনরকমে পিছনের বারান্দায় একটু জায়গা পেলাম।

এই বেলা বইমেলাটা সম্পর্কে একটু বলে নেই(যদিও বইমেলা ঘুরেছি পরে)। ১৩০,০০০ বর্গফুটের এক্সপো সেন্টারে এবার প্রায় ৬০০ প্রতিষ্ঠান তাদের ষ্টল খুলে বসেছে। আরব আমিরাত ছাড়াও সৌদি আরব, বাহরাইন, লেবানন, মিসর, ভারতসহ প্রায় ২৫টি দেশের অংশগ্রহনে এটি আরবি বইয়ের সর্ববৃহত বইমেলা। পাশাপাশি ইংরেজি বইএর কিছু ষ্টলও আছে - কিন্তু ইংরেজির চেয়ে বেশি আছে হিন্দি ও মালায়ালম ভাষার বই। আরব আমিরাতের ভারতীয়দের মধ্যে মালায়ালম বা কেরালার লোক বেশি - তাই এই বাজারটাকে ধরতে ভারতীয় প্রকাশকরাও বেশ আগ্রহী। কিন্তু যে জিনিসটা আমার দৃষ্টি কাড়লো তা হলো শিশুতোষ বইয়ের সংখ্যা অনেক এবং বাবা মায়েরা বাচ্চাদের কিনেও দিচ্ছেন তাদের নিজেদের ভাষার বই। আফসোস লাগলো যে এত বড় বইমেলায় বাংলাদেশের কোনো ষ্টল নেই - একটা দোকানে তিনটা থাকে কিছু বাংলা ভাষার ধর্মীয় বই ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ে নি। মধ্যপ্রাচ্যে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকা বাঙালির সংখ্যা নেহাত কম নয় - তাদের ছেলেমেয়েদের বাংলা ভাষার প্রতি মমতা গড়ে তলার জন্য প্রয়োজন মননশীল বাংলা বই। কিন্তু এদেশের প্রবাসী বাংলাদেশীদের কোনদিন দেখিনি এ নিয়ে আফসোস করতে। বাজারই যখন নেই তখন আর এত খরচ করে আমাদের প্রকাশকরা আসবেন কেন?

আজকাল দেশে ও বিদেশে সব বাবা-মাই মনে হয় সন্তানদের বাংলা শিখাতে লজ্জা পান - বাংলা শিখলে মনে হয় ক্ষ্যাত বলেই ধরে নেয়া হয় আজকাল। ইংল্যান্ড বা আমেরিকাতে যেখানে অনেক বাঙালি পরিবার আছেন তারাও কি এই মনোভাব পোষণ করেন কিনা জানি না - যদি তাই হয় তবে তা অত্যন্ত দুঃখজনক বলেই আমার মত। সেদিক থেকে দক্ষিন ভারতের এই মানুষগুলো, যাদের মাথা থেকে জবার তেলের উত্কট গন্ধ ভেসে আসে, অনেক এগিয়ে - অন্তত তারা নিজেদের সন্তানদের নিজের ভাষার কাছে নিয়ে যাচ্ছেন।

যাই হোক এবার ফিরে যাই ড্যান ব্রাউনের অনুষ্ঠানে। শেখ সুলতান তার ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ বক্তৃতা (পড়ুন ঘুমপাড়ানি বক্তৃতা) শেষ করলে ড্যান ব্রাউন শুরু করলেন তার আলাপচারিতা। প্রানবন্ত তার বক্তব্য – প্রাঞ্জল তার উপস্থাপনা - ৪০ মিনিটের মত তার বক্তৃতার বিষয় ছিল ধর্ম আর বিজ্ঞানের সংঘর্ষ আর এই সংঘর্ষকে তিনি কিভাবে তার লেখাতে তুলে এনেছেন। তার উপন্যাসের চরিত্র বিন্যাস আর গণিত ও প্রতীকের সম্পর্কই বা কিরকম তাও একটু ব্যাখ্যা করলেন। মাঝে মাঝে দু’একটা উদাহরণ আর ছবিও দেখালেন।

প্রথমে ব্রাউন নিয়ে গেলেন আমাদের তার শৈশবে – তার বাবা ছিলেন গণিতবিদ – অঙ্কের শিক্ষক। তিনি ব্রাউনকে শিখালেন কি করে সবকিছুকেই গণিতের ছকে ফেলা যায়। ব্রাউনের বাবার গাড়ির নম্বর ছিল ৬৩৮৭৪২ – যা ইংরেজি হরফে পরিবর্তন করলে দাঁড়ায় "Metric"। এটা ব্রাউনকে মনে করাতো দশমিক ব্যবস্থার কথা (আমেরিকাতে এই ব্যবস্থা খুব প্রচলিত নয়)। অন্যদিকে ব্রাউনের মা চলতেন একদম ধর্মের কথা মেপে মেপে। মায়ের গাড়ির নম্বর ছিল ৭৮৩৭৯ – যা হরফে নিলে হয় “Query” – এটা ব্রাউনকে মনে করাতো বাইবেলের প্রশ্নের কথা। সেই ১৩ বছর বয়স থেকেই ব্রাউনের মাথায় খেলা করতে থাকে গণিত আর ধর্মের কথা – প্রশ্ন করতে থাকেন এই দুইয়ের মধ্যে অসামঞ্জস্য – অসঙ্গতি নিয়ে। পরবর্তীতে তার সঙ্গীতজীবনেও এর কিছু প্রভাব এসেছে বললেন ব্রাউন।

ব্রাউন মনে করেন ধর্ম আর বিজ্ঞান পরস্পরের সাথী - তারা একই কথা বলতে চায় কিন্তু দুটো আলাদা ভাষায়। মানুষ বিজ্ঞানের কাছে আমাদের চারিদিকের যা আছে (ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য) তা নিয়ে প্রশ্ন করে - আর ধর্ম করে যা নেই তা নিয়ে। যেমন আমরা দুনিয়াতে কেন এলাম? এরপর কই যাব – এসব দর্শনতত্ত্বের জবাব মিলবে ধর্মের ভাষায়। এখন এই বিজ্ঞান আর ধর্মের যোগসূত্রটি কোথায় তার জবাব খোঁজার জন্যই তিনি লিখে চলেছেন। কিছুটা কল্পনার সাথে তিনি কিছু সত্য তথ্যের যোগ করে লিখে চলেছেন তার উপন্যাস। ব্রাউন মনে করেন তার মত লেখকদের কাজ হলো সঠিক প্রশ্নটা উস্কে দেয়া – আর তার জবাব খোঁজার কাজ গবেষকদের – সে বিজ্ঞানের গবেষক হউন বা ধর্মতত্ত্বের। কিছু কিছু জিনিস আছে যার ব্যাখ্যা বিজ্ঞান দিতে পারে না – এ নিয়ে অনেক তর্ক হয়েছে আরো হবে। কিন্তু যেটা দরকার সেটা হলো যুক্তিনির্ভর তর্ক – কেবল গায়ের জোরে বললে হবে না।

হক কথা – মানতে হলো।

আমার ধারণা ছিল লেখক সম্প্রদায় কম-বেশি সকল মানবজাতিকে সমান বলেই মানেন – ব্রাউন মনে হলো ওই ধারনায় ঠিক বিশ্বাসী নন। একটি বক্তব্য দিলেন – সবমানুষ যদি এক হয় তবে সব ধর্ম এক নয় কেন? সবমানুষের অনুভুতিগুলো খুব কাছাকাছি – যে দূরত্ব আছে তা হচ্ছে পরিবেশ আর সংস্কৃতি। সেটাকে তো আমাদের মানতে হবে, নাকি? সেটা মেনে চলতে গিয়ে এখন যদি কেউ নিজেরটাকে অন্য সবার চেয়ে উপরে মনে করে সেটা কি উচিত?

লোকটা প্রশ্নটা করেছে গভীর – করবেই তো – তার কাজই তো হলো প্রশ্ন উস্কে দেয়া! তবে কট্টরপন্থী ধর্মযাজক গোষ্ঠী (সে যে ধর্মেরই হোক না কেন) – তারা ব্রাউনের কথা কিছুতেই মানবে না।

এরপর তিনি তার খ্যাতনামা ডেভিড ল্যাংডন সিরিজের আগামী বই নিয়ে কিছু বললেন।

কিন্তু তখন মাথায় ঘুরছিল তার ছুড়ে দেয়া প্রশ্নগুলো – আসলেই আমরা কি মানুষে মানুষে ভেদাভেদকে গ্রহণ করতে পারছি? পরমত্সহিস্নুতা বলে যে একটা শব্দ বাংলা ভাষায় আছে তা কি কেউ এখন মনে রেখেছে ? বাংলাদেশ বাদ দিলাম - গোটা দুনিয়াতেই তো এটা এখন আর কেউ বিশ্বাস করে না। পশ্চিমারা একটু চেপে বলে, আরবরা হল্লা করে কল্লা কেটে বলে আর উপমহাদেশের সবাই গলা ফাটিয়ে মাথা ফাটিয়ে বলে।

ড্যান ব্রাউনকে দেখে আরেকটি আফসোস হলো - আহামরি তেমন উচ্চাঙ্গের লেখক নন, কিন্তু চিন্তাটা বেশ পরিস্কার। আমাদের দেশেও কিন্তু অনেক জ্ঞানী গবেষক লেখক আছেন। একুশের বইমেলায় অনেক লেখকই তাদের উপন্যাস বা প্রবন্ধ বা কবিতা নিয়ে আলোচনা করেন - ক'জন আমরা তা শুনি বা বুঝি? যারা বুঝেন তারা কি কোনো ধীশক্তিকে নাড়া দেয়ার মত গভীর কোনো প্রশ্ন ছুড়ে দেন? হয়ত বানিজ্যিক কারণে এখন আর সেসব আর কেউ করে দেখেন না - টকশোতে গিয়ে বাজিমাত করলেই চলবে মনে হয়।

পুনশ্চ: ড্যান ব্রাউন লোকটা দারুন পাজি – খালি শেখ সুলতানকে একটা বই উপহার দিয়ে সটকে গেল। আমরা যারা তার বই হাতে নিয়ে ঘুরছিলাম তারা তখন একরাশ বিরক্তি নিয়ে বইমেলাটাই ঘুরে দেখলাম আর দু'তিনটে বই কিনে ঘরে ফিরলাম। একুশের বইমেলা হলে... থাক – প্রকাশকদের বদদোয়া আর নাই বা কুড়ালাম!

মরুচারী


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

একুশের বইমেলায় অনেক লেখকই তাদের উপন্যাস বা প্রবন্ধ বা কবিতা নিয়ে আলোচনা করেন - ক'জন আমরা তা শুনি বা বুঝি? যারা বুঝেন তারা কি কোনো ধীশক্তিকে নাড়া দেয়ার মত গভীর কোনো প্রশ্ন ছুড়ে দেন?

এরকম আলোচনা হয় নাকি? হলেও নার্সিসিস্টিক কবি সাহিত্যিকেরা কি প্রশ্ন পছন্দ করেন?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এমন আলোচনার কথা আমি কোনদিন শুনিনি, তা একুশের বইমেলা হোক বা অন্য কোন সময়ে। পাঠকের সৎ প্রতিক্রিয়া ফেস করার হ্যাডম খুব কম লেখকের আছে। ড্যান ব্রাউনের মতো সেলেব্রিটি লেখকদের অনুষ্ঠানে প্রকাশকদের লোকজন ইমপ্লান্ট করা থাকে। অনুষ্ঠান পরিকল্পনাও সেভাবেই করা হয়। সেখানেও বেয়াদবমার্কা প্রশ্ন করার কোন স্কোপ নাই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

পান্ডবদা ঠিকই বলেছেন - উল্টা পাল্টা প্রশ্ন অবশ্য করার সুযোগ ছিল না, অনুষ্ঠানে প্রশ্ন উত্তরের সময়ই ছিল না। ইমপ্লান্টের ঝামেলায় না গিয়ে পুরা ময়দানই ক্যাকটাস দিয়ে ভরে দিয়েছিল :)

মরুচারী

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ড্যান ব্রাউনের কোন বই পড়ি নাই, এবং এই ব্যাপারে কোন আফসোস্‌ নাই। এই লেখাটা পড়ে মনে হলো ড্যান ব্রাউন আর না পড়লেও চলবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার মত হালকা পাঠকের কাছে ড্যান ব্রাউনের চটুল বই খারাপ লাগে না, মন অবসাদগ্রস্থ হলে এমন হালকা চটুল বই অনেক সময়ই আরাম দেয় - মাথায় তেমন চাপ পড়ে না তাই মনে হয়

মরুচারী

অতিথি লেখক এর ছবি

নিজের মাথার মুকুট পায়ে ফেলে দিলে অন্যরা কি আর মাথায় পরিয়ে দিতে আসবে?

যথার্থ বলেছেন নামহীন দাদা/ দিদি

মরুচারী

অতিথি লেখক এর ছবি

একুশের বইমেলায় বকুলতলায় এখন আর লেখক সম্মেলন হয় না? লিটল ম্যাগাজিনের সুদিন কোনদিন না থাকলেও উত্সাহের ভাটা পড়তে দেখিনি (অন্তত যতদিন ঢাকায় ছিলাম)

আর কবি সাহিত্যিকদের একটু আত্মাভিমান একটু বেশিই হয় - নিজের সমালোচনা তাদের একটুও পছন্দ হয় না ;)

মরুচারী

অতিথি লেখক এর ছবি

"ব্রাউন মনে করেন ধর্ম আর বিজ্ঞান পরস্পরের সাথী - তারা একই কথা বলতে চায় কিন্তু দুটো আলাদা ভাষায়।"

একদমই দ্বিমত প্রকাশ করলাম। তারা কখনওই এক কথা বলেনি এবং ভবিষ্যতে ফাঁপরে পড়ে ধর্ম হয়ত বিজ্ঞানের সুরে কথা শুরু করতে পারে কিন্তু তখনও তাদের উদ্দেশ্য এক হবে না। একটা পর্যবেক্ষণ, যুক্তি আর গণিতের দ্বারা সুসংহিত, আরেকটা নিজস্ব ধারণা ও কল্পনা নিয়ে চলে। যেটা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয় বা যুক্তির ও গণিতের বাইরে, সেটা নিয়ে কল্পনা করা চলে আর সেই কল্পনা লক্ষজনে লক্ষরকম হতে পারে। তাহলে কোন কল্পনা বা ধারণাটিকে ধর্ম বলে মেনে নেওয়া হবে? এখান থেকেই দ্বন্দের শুরু। আমাদের উদ্ভব পরিণতি ইত্যাদি নিয়ে বিজ্ঞান কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগ পর্যন্ত দর্শন হয়ত তাই নিয়ে আলোচনা করতে পারে কিন্তু ধর্ম কখনও বিজ্ঞানের সহযোগী হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। যাইহোক এটা নিতান্তই আমার ব্যক্তিগত মত।

আর বাংলার কথা কী বলব? কোথায়ই বা ভাল আছে বাংলা ভাষা! এখানে অদ্ভুত উচ্চারণ, বাংরেজি আর কলোকিয়াল বাংলার দাপট, ঐ বঙ্গে হিন্দি-ইংলিশ-বাংলা খিচুড়ি, আর প্রবাসে নির্বাসন। নিজের মাথার মুকুট পায়ে ফেলে দিলে অন্যরা কি আর মাথায় পরিয়ে দিতে আসবে? :(

মরুদ্যান এর ছবি

পোপ তো অলরেডি ঘোষণা দিয়েছে যে বিবর্তন আর বিগ ব্যাং থিওরিকে অস্বীকার করার উপায় নেই। ধর্মও তা সমর্থন করে, অবশ্য কিভাবে ধর্ম এতদিন পর লাইনে আসল তা নিয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য দেয়নাই। :D

ড: মরিস বুকাইলিরা কবে লাইনে আসবে এটাই এখন দেখার বিষয়। 8)

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ধর্মতত্ত্ব ও বিজ্ঞানের মধ্যবর্তী কিছু একটা হল দর্শন । ধর্মতত্ত্বের মতো দর্শনেও বিষয়বস্তুর উপর অনুমান করার রীতি বিদ্যমান যেটা দ্বারা এখন পর্যন্ত সুস্পষ্ট জ্ঞান অনির্ধারণযোগ্য হয়ে এসেছে; কিন্তু বিজ্ঞানের মতো দর্শন মানুষকে প্রথা অথবা প্রগতিশীলতার কর্তৃত্ব এর বদলে কারনের দিকে আকৃষ্ট করে । আমার মতে সকল সুস্পষ্ট জ্ঞানই বিজ্ঞানের ঘরে; অপর দিকে সব অন্ধ বিশ্বাস যা বিজ্ঞানকে অতিক্রম করে যায়, সেগুলো ধর্মতত্ত্বের ঘরে ।কিন্তু ধর্মতত্ত্ব ও বিজ্ঞানের মধ্যে একটা নো ম্যান’স ল্যান্ড আছে যেটাকে দুই পক্ষই আক্রমন করতে পারে; এই নো ম্যান’স ল্যান্ডই হল দর্শন ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

'দর্শন' নিয়ে যা বললেন সেটা যদি আপনার ব্যক্তিগত অভিমত হয়ে থাকে তাহলে আমার বলার কিছু নেই। আর এটাকে যদি 'দর্শন'-এর সংজ্ঞার্থ বলতে চান তাহলে আমার আপত্তি আছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

'দর্শন'কে সংজ্ঞায়িত করার মত পাণ্ডিত্য বা ঔদ্ধত্য কোনটিই আমার নেই। এটা ১৯৪৫ সালে প্রকাশিত বারট্র্যান্ড রাসেলের 'অ্যা হিস্টোরি অব ওয়েষ্টার্ন ফিলোসফি' বইয়ের একটি অংশের বঙ্গানুবাদ। তবে এই বঙ্গানুবাদটি আমি কোথায় পেয়েছিলাম সেটার সূত্র হারিয়ে ফেলায় আর নামটা জুড়ে দেয়া হয়নি। অতি হালকা ভাবেই দিয়েছিলাম। অবশ্য পুরো বইটা পড়বার সুযোগ আমার হয়নি। তাই আংশিক একটা উদ্ধৃতি দেওয়া ঠিক হয়েছে কিনা ভাবছি। আর আপনি যে এভাবে চেপে ধরবেন, বুঝতে পারিনি। :)

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রৌঢ়দা - আমার কাছে কিন্তু মনে হয় দর্শনের গন্ডি ধর্ম বা বিজ্ঞানের চেয়েও বড়। আমার মত স্বল্প জ্ঞানের মানুষ পুরোটা বুঝি না, কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, ধর্ম ও দর্শন যতটা কাছাকাছি (কিছুটা ওভারল্যাপিংও বটে), বিজ্ঞান ও দর্শন মনে হয় কিছুটা দূরত্ব রেখে চলে।

মরুচারী

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

মরুচারী > আমি কিন্তু এটাতে ব্যক্তিগত কোন মতামত দিইনি। আমি বার্ট্র্যান্ড রাসেলের লেখা বইয়ের একটা অংশের বঙ্গানুবাদ উদ্ধৃত করেছি মাত্র। আমি আপনার মতকেও শ্রদ্ধা করিি বটে। :)

এনকিদু এর ছবি

আজকাল দেশে ও বিদেশে সব বাবা-মাই মনে হয় সন্তানদের বাংলা শিখাতে লজ্জা পান - বাংলা শিখলে মনে হয় ক্ষ্যাত বলেই ধরে নেয়া হয় আজকাল। ইংল্যান্ড বা আমেরিকাতে যেখানে অনেক বাঙালি পরিবার আছেন তারাও কি এই মনোভাব পোষণ করেন কিনা জানি না - যদি তাই হয় তবে তা অত্যন্ত দুঃখজনক বলেই আমার মত।

আমি উত্তর আমেরিকায় বসবাসের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এখানে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশীরা সন্তানের জন্যহ হন্যে হয়ে মাদ্রাসা খুঁজেন, কিন্তু বাংলা বলতে, লিখতে বা পড়তে শেখার দিকে খুব বেশি আগ্রহ দেখিনি।
-

... দক্ষিন ভারতের এই মানুষগুলো, যাদের মাথা থেকে জবার তেলের উত্কট গন্ধ ভেসে আসে ...

মরুচারী ভাই এভাবে বলা কি ঠিক হল ? আপনার বা আমার গা থেকে হয়ত পাঁচফোড়নের গন্ধ আসে সেটা একজন তামিল বা মালায়ালির কাছে উৎকট লাগবে।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

স্যাম এর ছবি

মাদ্রাসা সন্ধান করা বাবা-মাদের সামাজিক অবস্থার কি কোন প্যাটার্ন আছে ?

মেঘলা মানুষ এর ছবি

লেজ ধরেই বলি, প্রবাসী অনেক পরিবারেরই ধারণা বাংলা শেখালে তাদের ইজ্জৎ ধূলায় মিশে যাবে, সন্তানের ভবিষ্যৎ ঝরঝরে হয়ে যাবে। বাচ্চারা স্কুলে গেলে স্থানীয়ে ভাষা শিখবেই, আর কিছু করতে হবে না। বাচ্চারা খুব চমৎকার ভাবে ভাষার ব্যালেন্স করে চলতে পারে এবং একই সময়ে দুটো ভাষাই শিখতে পারে। তাই, বাসায় বাবা-মায়ের অযথা (অনেক সময়ই ভুল উচ্চারণে ও ব্যাকরণে) বিদেশি ভাষা শেখানোর প্রয়োজন পরে না।

অতিথি লেখক এর ছবি

শুধু কি প্রবাসী? নিজদেশেই তো দেখতে হলো আলাহ্দী মায়ের আবদার - বাবু একটু ডরিমনের মত হিন্দি বলত! এদের কে দুটো কড়া কথা বললেও এদের কোন ভাবান্তর হয় না, জ্ঞানপাপীদের কানে নিজের মত ছাড়া কিছুই ঢুকে না।

মরুচারী

অতিথি লেখক এর ছবি

হে হে - হয়ত একটু রুঢ় শুনাচ্ছে, কিন্তু আমি কেবল আমার ও আশেপাশের অভিজ্ঞতায় ভাগ করে দিয়েছি। হয়ত তামিল বা মালায়ালম লোকদের কাছেও আমাদের অনেক কিছুই অদ্ভুত তাও মানছি। তবে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি - দক্ষিন ভারতের এই মানুষগুলো অনেক ভালো মানুষ। বিনয়ী, বন্ধুভাবাপন্ন ও মৃদুভাষী এই মানুষগুলোকে হেয় করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার ছিল না - নেই ও।

মরুচারী

মাসুদ সজীব এর ছবি

যে মানুষ বিজ্ঞান আর ধর্মকে পরস্পরের সাথী বলে সে কোনটাই সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখে না কিংবা রাখলেও সেটাকে অস্বীকার করে সবার কাছ থেকে সুবিধা নিতে এমন মতবাদ চালু করে। এরাই অনুভূতির ব্যবসায়ী, দু-কূল রক্ষা করে চলা পাবলিক। যার মাথা থেকে (ব্রাউন) এমন তত্ত্ব আসে তাকে না পড়ার জন্যে কোন দু:খবোধ কাজ করছে না।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।