গবেষণার কাজে এই ক'দিন আগেই পোস্ট করেছিলাম "পুলিশের সমস্যা কি" এরকম একটা প্রশ্ন- ফেসবুক পেজে এবং আমার ব্যক্তিগত প্রোফাইলে। মোটামুটি দুই জায়গা মিলিয়ে হাজার খানেক উত্তর পেয়েছি।অনেকেই তাঁদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন , যেগুলো পড়ে এই বাহিনীর একজন সদস্য হিসেবে খুব কষ্ট অনুভব করেছি।নিজেকে ভুক্তভোগীর জায়গায় কল্পনা করে গা শিউরে উঠেছে। কাজেই, একজন পুলিশ অফিসার হিসেবে এধরণের পরিস্থিতিতে কি করবেন সেটি জানানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।
শুরু করার আগে বলে নিই, মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ সংগ্রামের গৌরবদীপ্ত এই বাহিনী তার নানা সীমাবদ্ধতা সত্বেও জনকল্যানে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৩ সালে কর্তব্যরত অবস্থায় এই বাহিনীর ১০৯ জন সদস্য মৃত্যুবরণ করেন- এই ত্যাগের মাত্রাটি বাংলাদেশের যে কোন সংস্থার চাইতে বহুগুণ বেশি। কাজেই , ঢালাওভাবে কেউ যখন গোটা পুলিশকে গালাগালি করেন, আপনাদের জীবন রক্ষার্থে মৃত্যুবরণ করা ওই অফিসারদের আত্মা কষ্ট পায়, কষ্ট পায় তাঁদের আত্মীয় স্বজনেরা। যাঁরা বলেন যে বাংলাদেশ থেকে পুলিশ বাহিনী উঠিয়ে দেয়া হোক, তাঁদেরকে বিনীতভাবে ইউটিউবে গিয়ে "1969 Montreal Night Of Terror" ভিডিওটি দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। কানাডার মত দেশে সেই ১৯৬৯ এর মত প্রাচীনকালে পুলিশের সামান্য কর্মবিরতিতে কি অবস্থা হয়েছিল সেটা স্বচক্ষে দেখতে পাবেন।কাজেই, এদেশে পুলিশের বিকল্প নেই। সিদ্ধান্ত আমাদেরঃ আমরা কিরকম পুলিশ চাই- ভালো না খারাপ।
ভালো পুলিশ পেতে হলে নাগরিকদেরও কিছু কর্তব্য রয়েছে, সে বিষয়ে কিছুটা আলোকপাত করিঃ
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নাগরিকেরা নিজেদের অধিকার এবং আইন সম্পর্কে সচেতন নন, আর এই অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে থাকে কতিপয় দুর্নীতিবাজ এবং অসৎ পুলিশ সদস্য। এই দুর্নীতিবাজ এবং অসৎ পুলিশের অপকর্ম ঠেকাতে কঠোর বিভাগীয় শাস্তি যেমন প্রয়োজন, একইভাবে প্রয়োজন জনগণের সচেতনতা। আপনি একটু সচেতন হলে নিজেই অনেক পুলিশি ঝামেলা থেকে বেঁচে যেতে পারবেন।
#ডিস্ক্লেইমারঃ আমাদের দেশে ভি-আই-পি দের সংখ্যা একেবারে কম নয়, তাঁরা নিজেরাই নিজেদের পথ খুঁজে নিতে সক্ষম। আমার এই লেখাটি একেবারেই সাধারণ মানুষদের জন্যে লেখা, আশা করি আপনাদের কাজে আসবে।
১) সন্দেহবশতঃ ৫৪ ধারায় যদি বিনা দোষে আপনাকে গ্রেপ্তার করা হয়- জেনে নিন, ২৪ ঘন্টার বেশি আপনাকে আটক করে রাখার উপায় নেই। এক্ষেত্রে সম্ভব হলে দ্রুত কোন আত্মীয়কে থানায় আসতে বলুন। অনেক সময় দেখা যায় বখাটেদের সাথে সাথে ওখানের নিরীহ ছেলেও ধরা পড়ে। এক্ষেত্রে নিকটাত্মীয় যদি থানায় এসে লিখিত দিতে পারে যে ধৃত ব্যক্তি তাঁর সাথে সম্পর্কিত, এবং সে যা পরিচয় দিচ্ছে সেটি সঠিক- এক্ষেত্রে আপনি ছাড়া পেয়ে যাবেন।
২) ধরে আনার কাজটা মূলতঃ করে কন্সটেবল থেকে এস-আই পর্যায়ের অফিসারেরা। একটি থানায় তাদের নেতা হচ্ছেন ওসি।আপনি যদি ওসির সাথে ( ওসি না থাকলে ইন্সপেক্টর-তদন্ত সাহেব) সরাসরি দেখা করে বা যোগাযোগ করে আপনার আত্মীয়ের নির্দোষিতা প্রমাণ করতে পারেন সেক্ষেত্রেও বিপদ কেটে যাবার কথা।
৩) এবার সবচাইতে স্পর্শকাতর বিষয়ে কথা বলি। পুলিশ কর্তৃক নিরীহ মানুষকে আটক করে হয়রানির ভয় দেখিয়ে দুর্নীতি করার অভিযোগ খুব কমন এবং প্রচলিত। এসব ক্ষেত্রে যেটা হয়, ওই অসৎ অফিসার আপনাকে ভয় দেখান এবং আপনিও ভয়ে তার কথামত কাজ করেন। এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ, বাংলাদেশ পুলিশ এবং ডিএমপি এ্যাপ, এই দুটি নিজের মোবাইলে রাখুন, সেই সাথে নিজ থানার ওসি/ ওসি তদন্ত / ডিউটি অফিসার - এদের নম্বর রাখুন। আপনি যে এলাকার বাসিন্দা সে এলাকার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার/এসপি/সহকারী পুলিশ কমিশনার/ এএসপি - এঁদের ফোন নম্বর অবশ্যই ফোনে সেইভ করে রাখুন।আপনি যদি বিনা কারণে আটক হন এবং আপনি নিজে বা আপনার কোন আত্মীয় যদি এই সিনিয়র অফিসারদেরকে ফোনে জানাতে পারেন- তিনি অবশ্যই খোঁজ নেবেন ব্যাপারটি কি সেটা জানতে। এঁদের কাছ থেকেও আপনি সহায়তা পেতে পারেন।
৪) ধরে নিচ্ছি উপরের কোন স্টেপেই কোন কাজ হলনা, আপনি ওই অসৎ অফিসারের পাল্লায় পড়ে হয়রানির শিকার হলেন। এক্ষেত্রে আপনার কর্তব্য হচ্ছে ছাড়া পাবার পর পুরো ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ সহ লিখিত আকারে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট এলাকার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার( মেট্রোপলিটন এলাকায় হলে) বা এসপি (জেলাতে) স্যার বরাবর পাঠানো। প্রয়োজনে আপনি সহকারী পুলিশ সুপার/ এডিশনাল এসপি এমনকী প্রয়োজনে এসপি/ ডেপুটি পুলিশ কমিশনার স্যারের সাথেও দেখা করতে পারেন। বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে ধাপে ধাপে স্বয়ং পুলিশ প্রধানের সাথে দেখা করার অধিকারও আপনার আছে। প্রয়োজন পড়লে এটি প্রয়োগ করুন।
৫) প্র্যাকটিকাল টিপস হচ্ছে, কোন অবস্থাতেই মাথা গরম করবেন না, নমনীয় থাকুন। নমনীয়তা মানে দুর্বলতা নয়, এর মানে আপনি নিজেকে ওই কর্কশ ব্যবহারকারী দুষ্ট অফিসারের পর্যায়ে নামিয়ে নিচ্ছেন না। খুব শান্তভাবে এবং সুকৌশলে তার নাম জেনে নিন এবং পরবর্তীতে ওই অফিসারের সিনিয়র অফিসারের কাছে এ ব্যাপারে তথ্য দিন।
৬) যে কাজটি করা থেকে বিরত থাকতে বারংবার অনুরোধ জানাচ্ছি সেটি হচ্ছে, বিপদ কেটে যাবার পর অন্যায়টিকে "হজম" করে ফেলা। ঘুষ দেয়া এবং ঘুষ নেয়া সমান অপরাধ- মাত্র ১০০/২০০ টাকা দিয়ে "ঝামেলা" এড়াতে এড়াতে আমরা প্রতিবাদ করতে ভুলে গিয়েছি, যথাস্থানে নালিশ জানাতে অস্বীকার করছি। আমরা যেটা করি তা হচ্ছে, ওই ২০০/৩০০ টাকা ঘুষ বিনা প্রতিবাদে দিয়ে দিই, তারপর ফেইসবুকে পুলিশের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করি- যাতে মানসিক তৃপ্তি হলেও কাজের কাজ কিচ্ছু হয়না। আপনার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে ওই ঘুষখোরের কিচ্ছু যায় আসে না। বরং আপনি যদি সুকৌশলে ওর নেমপ্লেট আর কাঁধের ব্যাজ-এ কয়টা দাগ আছে দেখে নিতেন( অথবা সুযোগ পেয়ে মোবাইলে ভিডিও/ছবি তুলে নিতেন)- এরপর সেগুলো দিয়ে তার উপর মহলে( ওসি ও তদোর্ধ্ব) নালিশ জানাতেন, তাতে ও ওই অপকর্মটি করার আগে দুইবার চিন্তা করত।
যে কথাটি বার বার বলি সেটিই আবার বলছি- ২০০ বছরের জঞ্জাল এক দিনে যাবেনা।কিন্তু আমরা পুলিশ বাহিনীর লোকজন যখন দেখব, "আরে, আমাদের দেশের মানুষ তো আইন কানুন জানে, তাদের তো বেয়াড়া ধমক দিয়ে হয়রানি করা যায়না!" তখন আমাদের ভেতরেও পরিবর্তন আসবে।
সেই সুদিনের প্রতীক্ষায় রইলাম।
মাসরুফ হোসেন
সহকারী পুলিশ সুপার
প্রেষণে জাপানে অধ্যয়নরত
ইমেইলঃ
ফেসবুকঃwww.facebook.com/tahsinmashroofhossain
পুনশ্চঃ বাংলাদেশ পুলিশের যাবতীয় নম্বর ইন্টারনেটে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের তো নিজস্ব মোবাইল এ্যাপ্লিকেশনই রয়েছে, নাম দিয়ে সার্চ করলেই এ্যান্ড্রয়েড, আইফোন এবং উইন্ডোজ ভার্সনে পেয়ে যাবার কথা। আর আমাদের কন্সটেবল নাসির এই ক'দিন আগেই "বাংলাদেশ পুলিশ ফোনবুক" নামে একটি এ্যাপ বানিয়েছে উইন্ডোজ এবং এন্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মের জন্যে।এগুলো কিচ্ছু যদি না থাকে, থানার বাইরে এবং রাস্তার মোড়ে মোড়ে সাইনবোর্ডে পুলিশ অফিসারদের নম্বর দেয়া থাকে,টুকে নিন।আর একেবারেই কোন দিশা না পেলে আমার ইমেইল এ্যাড্রেস তো আছেই!
মন্তব্য
এই ধরনের লেখা আরো চাই
আচ্ছা, জনগনকে যেভাবে উপায় গুলো বললেন হয়রানি এড়ানোর জন্য, সেভাবে পুলিশদের ট্রেনিং ম্যানুয়ালে কি হয়রানি না করার জন্য কোন শক্ত অধ্যায় থাকে?
ট্রেনিং ম্যানুয়াল নয়, যে সমস্যাগুলো পুলিশ করে থাকে তার মূল অন্য জায়গায়।ট্রেনিং ম্যানুয়ালে অনেক কিছুই থাকে, যেগুলো দুষ্টলোক পালন করেনা।
মাসরুফ হোসেন সাহেব ধন্যবাদ সহকর্মীদের দোষ স্বীকার করায়। উর্ধতন কর্মকর্তাদের নম্বরতো আছে কিন্তু কয়জন অচেনা ফোন ধরেণ? আপনি নিজে ধরেণ?
জ্বি ভাই, ধরি। অনেকেই হয়তো ধরেন না, আবার অনেক অফিসার ধরেনও
লেখাটা পড়ে অনেকটা "ভিকটিম ব্লেমিং" মনে হল; পুলিশি হয়রানি এড়ানোর জন্য আপনি জনগণকে সচেতন হওয়ার নসিহত করলেন। অপরাধীদের যেমন নেটওয়ার্ক থাকে, পুলিশেরও সেরকম নেটওয়ার্ক থাকে। আপনি যে উপদেশ দিলেন নিচের লেভেলে কাজ না হলে উপরে যেতে, উপরের কর্তা যে এই দুর্নীতির সাথে জড়িত নেই, তার গ্যারান্টি কোথায়? পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত কিন্তু পুলিশই করবে; আমাদের মত ম্যাংগো পাব্লিক করবে না। পুলিশ তার নিজের পরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করবে, বাংলাদেশের পুলিশের রেকর্ডের প্রেক্ষিতে এটা চিন্তা করাটা কতটুকু যৌক্তিক?
"কতিপয় দুর্নীতিবাজ এবং অসৎ পুলিশ সদস্য"-এর অপকর্মের জন্য সবার দুর্নাম হচ্ছে, অথবা "২০০ বছরের জঞ্জাল এক দিনে যাবেনা" - সমালোচনার উত্তরে এগুলি হল বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রের স্টক প্রতিক্রিয়া। প্রায় ৪০ বছর ধরে এই কথাগুলি শুনে আসছি। সমস্যা হল "সৎ লোকেরা" ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার পরেও যখন "কতিপয় দুর্নীতিবাজ এবং অসৎ পুলিশ সদস্য"-দের শায়েস্তা করা যায় না, তখন আমরা ঠিকই বুঝতে পারি ক্ষমতা আসলে কোথায়। আপনারা আগে নিজেদের সমস্যা সমাধান করেন, পুলিশের মধ্যে এই ধারণা বদ্ধমূল করেন যে তারা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলেন, জনগণ তাদের মালিক - তাহলে পাবলিককে আর উপদেশ দেয়ার দরকার হবে না। নাহলে, আপনার প্রত্যাশিত সুদিনের বদলে এমন দিন দেখবেন যেদিন ফারগুসন, মিসোউরিতে এখন যে শ্লোগান শোনা যাচ্ছে, সেই শ্লোগান বাংলাদেশের লোকও দেবে।
Emran
ইমরান সাহেব,
১০০ টা অভিযোগ যদি করা হয় তার ১টা দুটোর বিচার( সর্বনিম্ন করে ধরলেও ) হবেই, ওই একটা দুটোই কিছুটা হলেও আগানো। ২০১২ সালে ডি এম পি তে প্রায় ১০০০ এর বেশি সদস্যের চাকুরিচ্যুতি থেকে শুরু করে নানারকম শাস্তি হয়েছে। আমি ও সময়ে ডি এম পি হেডকোয়ার্টারে ছিলাম বিধায় এ তথ্যটি সরাসরি জানি। আমাদের মিডিয়া পুলিশের অপকর্মগুলো যতটা প্রচার করে, তার পরিণতি বা শাস্তির কোন কথা কখনো লেখেনা। আর পুলিশের বিরূদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুধু পুলিশ না, কোর্টেও পুলিশের বিরূদ্ধে মামলা করা যায়।
"কতিপয় দুর্নীতিবাজ এবং অসৎ" এর পরে পুলিশ না বসিয়ে সাধারণ মানুষ বসালেও আপনার বক্তব্য একই থাকে। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ যেরকম, এদেশের পুলিশ ঠিক সেরকম।
আমার এই লেখায় যাবতীয় সমস্যা তো বটেই, হয়ত কোন সমস্যার একবিন্দু এদিক ওদিক হবেনা। কিন্তু এটি পড়ে দুপুরবেলা বেড়াতে গিয়ে ওই কন্সটেবল বা এস আই এর হাতে হেনস্থা হওয়া একজন মানুষ যদি এলাকার সহকারী পুলিশ সুপারের কাছে ফোন করে উপকার পান, সেটাও আমার জন্যে অনেক।
হ্যাঁ, অচেনা ফোন অনেকেই ধরেন না। কিন্তু অনেক অফিসার ধরেনও। ধন্যবাদ।
অর্থাৎ পুলিশের (অথবা ক্ষমতাবানদের) দুর্নীতি এবং অসততার দায়িত্ব এখন সাধারণ মানুষের! এই কথার মধ্যে সামরিক শাসকদের "ডাণ্ডা না খেলে বাঙালী ঠাণ্ডা থাকে না" মনোভাবের প্রতিধ্বনি শুনতে পাই যেন।
আমি যদি এখন রাস্তায় বেরিয়ে দবিরকে একটা চটকানা দেই, দবির উল্টে আমাকে দুইটা ঘুষি মারবে। অন্যদিকে আপনি উর্দি পড়ে কোমরে পিস্তল আর কাঁধে রাইফেল ঝুলিয়ে রাস্তায় নেমে সেই একই দবিরকে একটা চটকানা মারলে আপনাকে ঘুষি মারা তো দূরের কথা, সে হাতজোড় করে "স্যার, স্যার" করবে (যেটা কিন্তু আপনারও পরামর্শ)। এটাই "অধিকাংশ মানুষের" সঙ্গে পুলিশের পার্থক্য; ভায়লেন্সের লাইসেন্স পুলিশ-মিলিটারির আছে, যেটা অধিকাংশ মানুষের নাই। এই লাইসেন্স যাদের থাকে, তাদের প্রতি সন্দেহ এবং অবিশ্বাস পোষণ করাটাও "হ্যাভ-নট"-দের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া।
Emran
আমি আমার বক্তব্যের জন্যে দায়ী, আপনার ইন্টারপ্রিটেশনের জন্যে নই।রাস্তায় পুলিশ আপনার সাথে অন্যায় আচরণ করার পরিপ্রেক্ষিতে আপনিও ওই পুলিশকে সাথে সাথে পেটাবেন- এটা ঠিক প্র্যাকটিকাল হবেনা সেটাই বোঝাতে চেয়েছি।পুলিশ এ্যাসল্ট বিশ্বের যে কোন দেশে মারাত্মক অপরাধ হিসেবেই পরিগণিত,নিতান্ত বাধ্য না হলে ওটা করামাত্র আপনি আইনের সহমর্মিতা হারাবেন। ওটা না করে কি করা যেতে পারে সেটা এখানেই বলেছি।
প্রতিধ্বনি ইত্যাদিও আপনার ইন্টারপ্রিটেশন- আমি যদিও মাঝে মধ্যে হতাশ হয়ে এধরণের মন্তব্য করি, কিন্তু এখানে এই লেখাতে এরকম কিছু বোঝানো হয়নি।দুর্নীতি আর অনিয়ম যে দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিদ্যমান সেখানে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হিসেবে পুলিশ সাধুসন্ন্যাসী টাইপের কিছু না হওয়াটাই স্বাভাবিক, এটাই বোঝাতে চেয়েছি। এই লেখাটিও বিদ্যমান অবস্থাকে মাথায় রেখে যৎসামান্য সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে লেখা।
সন্দেহ এবং অবিশ্বাস পোষণ করা আপনার নাগরিক অধিকার, করতেই পারেন।
ধন্যবাদ।
আপনার উল্লেখিত ৪ নং পয়েন্টের অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। আমার পাড়ার এক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে বিনা কারনে (সন্ধ্যা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার অপরাধে) গ্রেফতার হয়। তারপ মুচলেকা দিয়ে বের হয়ে যখন এসপির কাছে হয়রানির অভিযোগ করে তার কিছু দিনের মাঝেই সে ডাকাতি মামলার আসামী হয়। তাই পুলিশের কাছে পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করে বাংলাদেশে সুফল পাওয়ার আশা দিবা স্বপ্নের মতো।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
কথাটা ভুল বলেন নি ভাই। তবে একেবারে স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিলে কি আর চলে?
বিষয়টা মজার, যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য উপায় খুঁজতে হয়!
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
ঠিক মজার নয়, বলতে পারেন লজ্জাজনক, কর্কশ এবং নির্মম বাস্তবতা। ঠিক যেমন ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করার মত অতি সাধারণ একটা বিষয় ইমপ্লিমেন্ট করতে এদেশে পুলিশ আর ম্যাজিস্ট্রেট ডাকা লাগে
বাংলাদেশের বিখ্যাত চৈনিক বিপ্লবী কল্লোল মোস্তফা যেদিন রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করবেন, সেদিন বুঝবেন কত ধানে কত চাল।
কয়েকটা ব্যাপারে কল্লোল মুস্তাফার সঙ্গে একমতঃ
১। আমাদের দেশে যে ফুট ওভারব্রিজগুলি আছে, সেগুলি হ্যান্ডিক্যাপ-ফ্রেন্ডলি না; এটা ডিজাইনের ত্রুটি।
২। তাত্ত্বিকভাবে কিন্তু পথচারির (সাইকেলচালকও ট্রাফিক আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে পথচারী) অধিকার মোটরগাড়ি চালকের অধিকারের চেয়ে বেশী - এটা পশ্চিমের সব দেশে দেখেছি। এমনকি পথচারী মাঝরাস্তায় থাকার পরেও যদি সিগন্যালে সবুজ বাতি জ্বলে যায়, তাহলে আইনানুযায়ী পথচারী পার না হওয়া পর্যন্ত গাড়িচালককে অপেক্ষা করতে হয়।
৩। অটোমেটিক ট্রাফিক সিগন্যাল থাকার পরেও পুলিশ দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করাটা আমার কাছে সবসময়ই হাস্যকর মনে হয়েছে; তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ এটা পুলিশ বাহিনীর রিসোর্সের ইনএফিসিয়েনট অপচয়। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজে পুলিশ যে সময় এবং শক্তি খরচ করে, সেই সময় এবং শক্তি অপরাধ নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যয় করলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির হয়ত উন্নতি হত। তবে এটা আমাদের দেশের মানুষের সমস্যা। আমাদের দেশের অধিকাংশ গাড়ীচালক হয় আইন জানেন না, অথবা জানলেও মানেন না। আমার ধারণা আমরা চরিত্রগতভাবেই কিছুটা contrarian এবং anti-authoritarian; এটা সবসময় খারাপ জিনিস না। তবে রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে এই মনোভাব পরিহার না করলে তা আদতে মানুষের ভোগান্তিই বাড়ায়। আর রাস্তার তুলনায় গাড়ী বেশী হওয়াটা যে ঢাকা শহরে ট্রাফিক সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ - সেই নিয়ে কথা বলে কোন লাভ নাই।
Emran
১) সঠিক। তবে হ্যান্ডিক্যাপদের এবং বৃদ্ধ লোকদের ট্রাফিক হাত ধরে পার করে দেয়।
২) সঠিক নয়। জেওয়াকিং এর কারণে কোন গাড়ি পছচারী মেরে ফেললেও আইন তার পক্ষে থাকে।
৩) সঠিক নয়। পুলিশের অনেক গুলো দায়িত্বের একটা হচ্ছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। মেট্রোপলিটন পুলিশ র্যাংকের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ একটি পদ( এ্যাডিশনাল কমিশনার) এই বিভাগের প্রধান, সেখান থেকে একেবারে কন্সটেবল পর্যন্ত আলাদা জনবল এই কাজের জন্যেই নিয়োজিত। ট্রাফিক পুলিশ থাকলেই মানুষ পারলে সিগনাল অমান্য করে ( পুলিশ, মন্ত্রী ইত্যাদি), সেখানে না থাকলে তো কি হত বলাই বাহুল্য। তবে শেষাংশের সাথে একমত।
লেখাটিকে ইমরান ভাইয়ের মত অত কড়া সমালোচনা না করলেও, গতানুগতিক বলতে পারি। তবুও একজন পুলিশ অফিসার আমাদের কিছু উপায় বলে দিয়ে ও কিভাবে রেহাই পাওয়া যেতে পারে তা জানাতে এগিয়ে এসেছেন, তাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।
লেখাটির জন্যে ধন্যবাদ।
পড়বার জন্যে আপনার প্রতিও ধন্যবাদ।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কিরে, তোর আবার কি হইলো?
লেখক, শ্রদ্ধা রইলো
আমার বন্ধু রাশেদ
কৃতজ্ঞতা রইলো
লেখাটি ভালো লাগলো
এই কথাটিও ভালো লেগেছিল
"মাছের পচন কিন্তু মাথা থেকেই ধরে "
কথাটি শুনেছিলাম টিভি টকশোতে ২৫শে নভেম্বর 2014, যেখানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রানলের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
ভাই ওসি নিজেই যদি হয়রানি করে তখন? অন্যায়কে হজম করে নিতে শিখে গেছে কারণ অভিযোগ করলে আরো বিপদ নেমে আসতে পারে।
নতুন মন্তব্য করুন