বাংলাদেশে এক ধরনের মানুষ আছে যারা মনে করতে পছন্দ করে বড় বড় আবিস্কার হচ্ছে বাংলাদেশ এ প্রতিনিয়ত। বিদেশি চক্রান্তে এইসব প্রকাশ পাচ্ছে না। আবার অনেকে মনে করে যে আজকে বিজ্ঞানে যা সত্য কালকে সেটা তো মিথ্যা হয়ে যায়। যারা গবেষনা করে অথবা সাধারন বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন যাকোন মানুষ জানে যে, প্রতিটা আবিস্কার কত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমানিত হয়েছে।
কিন্তু বাংলাদেশের পত্রিকার পাতায় চোখা রাখলেই কয়েকদিন পরপর একটা খবর চোখে পরবেই তা হল জ্বালানী ছাড়া বিদ্যুৎ, বাতাস দিয়ে গাড়ি, পানি দিয়ে বাইক এরকম অদ্ভুত কিছু ব্যপার।[১][২] আমাদের বেশিরভাগ সাংবাদিক এইসব খবর আবার লুফে নেয়। কেন করে তারাই জানে। তবে এইসব গবেষকের মধ্যে একটা ব্যপার কমন, তা হল আবিস্কার এর খবর একটা সংবাদ সম্মেলন করে জানায়। এবং তাদের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে টাকা বাগানো। পত্রিকায় আসলে টাকা বাগানো সহজ হয়ে যায়। আমি সবারটা নিজে দেখি নাই, কিন্তু এক গবেষকের আবিস্কার নিজে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর কিছুই না। কিন্ত আমার মনে হয় সবার জানা দরকার পুরো ঘটনা।
২০০৮ সালের কোন একদিন হবে। তখন মাত্র সেমিস্টার শেষ হয়েছে। বাড়ি যাব ঘুরতে। প্ল্যাল করছি। হঠাই করেই একদিন সকালে প্রথম আলোর শেষ পাতায় একটা খবর দেখলাম। খবরটা বক্স করে দেয়া ছিলো। তাই বুঝলাম গুরুত্বপূর্ণ কিছু। খবরটা জ্বালানী ছাড়া বিদ্যুৎ আবিস্কারের। আগ্রহ নিয়ে পড়া শুরু করলাম। একটু পড়েই ধাপ্পাবাজি ধরতে পারলাম। সে দাবী করছে যে ৩ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ থেকে সে ৩০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করবে। যেকোন শিক্ষিত মানুষ যারা অন্তত অষ্টম শ্রেনি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে সে জানে যে, এটা সরাসরি শক্তির নিত্যতা এর বিরোধী। তারমানে এটা কখনই সম্ভব না। তার আবিস্কার সত্য হলে বিজ্ঞানের সব সুত্র নতুন করে লিখতে হবে। অবাক হয়ে খেয়াল করলাম মোটামুটি সব পত্রিকায় এটা প্রথম অথবা শেষ পাতায় এটা বেশ গুরুত্ব সহকারে ছাপা হয়েছে। শুধু তাই না, মানুষজনের সাথে কথা বলে জানলাম অন্তত ৫ টা টিভি চ্যানেল এ তা দেখানো হয়েছে। আশ্চর্য হয়ে গেলাম। কিভাবে সম্ভব! আবার দেখলাম ছেলেটা দিনাজপুরের। ঠিক করলাম যেভাবেই হোক দেখা করব। ২-১ দিনের মধ্যেই দিনাজপুর গেলাম। তখন ছুটি দেখে বুয়েটের বন্ধু জয় আর মুশফিকও তখন দিনাজপুর এ। এই দুইজন আর আমার কাজিন ইমন সহ দেখা করতে গেলাম আবিস্কারক এবং গবেষকের সাথে। দিনাজপুর শহরের অদূরে পুলহাট নাম এর এক জায়গায় তার বাসা। বাসার সামনে গিয়েই খেয়াল করলাম এলাহি কারবার রীতিমত। প্যান্ডেল বানানো। তার সামনে অনেক চেয়ার ভাড়া করে আনা। দলে দলে লোক আসছে। একটা ব্যনারও লাগানো ছিলো তাকে আবিস্কারক হিসেবে উল্লেখ করে।
আবিস্কারকের সাথে দেখা পাওয়াই দুস্কর। ও আচ্ছা, আবিস্কারকের নাম ছিলো শাহিদ। যাই হোক। আমরা বাইরে চেয়ারে বসে অপেক্ষা করছি। এমন সময়ে তার মা এসে পরিচয় জানতে চাইল। আমরা বললাম যে আমরা বুয়েট থেকে আসছি। মহিলা খুশি হল না ব্যাজার হল তা বুঝি নাই। যায় হোক একটু পরে আবিস্কারক দেখা দিলেন। আমরা জানালাম যে আমরা একটু কথা বলতে চাই। সে একটু সময় চাইল। অনেক ব্যাস্ত সে। ইতোমধ্যে তার মা জানালো যে বিদেশি ব্যাবসায়িরা কোটি কোটি টাকা প্রস্তাব করেছে। কালকে দুবাই থেকে একদল ব্যবসায়ি আসছে। দিনাজপুরের কিছু ব্যাবসায়ি কয়েক লাখ টাকা তাকে দিয়েছে। মাথা খারাপ অবস্থা পুরাই। এর মধ্যে যখন আমরা অপেক্ষা করছি, এক ভদ্রলোক আমাদের ডেকে বললেন, তোমরা কি ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়? আমরা সায় দেয়ার পরে উনি জানালেন , বাবারা ব্যপারটা দেখো তো, আমি এতদিন ধরে এখানে থাকলাম , কখনো কিছু করতে দেখলাম না। হঠাত করে এত বড় আবিস্কার কিভাবে হল। আর ও যদি আবিস্কার আসলেই করে তাহলে গোটা পাড়াকে একবার বিদ্যুৎ সাপ্লাই করে দেখাক। সে তো শূধু নিজের লাইট জ্বালায়। আমরা তাকে জানালাম যে, ব্যপারটায় ঘাপলা আছে আমরা জানি। সেটাই দেখতে আসছি। যাই হোক, এরপর আমরা অপেক্ষা করছি, আমাদেরকে জানালো হল, সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে তাদের ইঞ্জিনিয়ারিং চিফ আসছে। এরপর আমাদের সাথে কথা বলবে গবেষক সাহেব। মজার ব্যাপার একটা ঘটে। গবেষক সাহেব তার একটা জীবনী প্রিন্ট করে অনেকগুলা কপি করে রেখছিলেন। সেইটা আমাদেরকে পড়তে দেন। ওইখানে কি কি জানি হাবিজাবি লেখা ছিল। এর মধ্যে একটা ছিল সে নাকি ক্লাস সিক্সে থাকতে হেলিকপ্টার আবিস্কার করে। এখানে উল্লেখ্য যে আমরা যখন যাই ছেলের বয়স খুব বেশি হলে ২০ হবে। জীবনী তে আরো লেখা ছিল, সে কেন আবিস্কার করার জন্য ক্লাস নাইনে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়।
একটা পড়েই দেখলাম সেনাবাহিনীর কয়েকটা গাড়ি আসলো। এখানে উল্লেখ্য যে তখন সেনাশাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেনাবাহিনী বিশাল ব্যপার। সেই অফিসার আসে পরিচিত হলেন শাহিদ এর সাথে। উনি নিজেও বুয়েটে ছিলেন। আমরা একরকম জোড় করেই উনার সাথে পরিচিত হলাম, জানালাম যে আমরাও দেখতে এসেছি। উনি জানালেন যে, উনি দেখে শুনে সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ে জানাবেন। এরপর জেনারেল মইন উ আহমেদ দেখা করতে আসবেন। এইসব শুনে আমাদের মাথা বন বন করে ঘুরা শূরু করেছে। এরপরে অফিসার এর পিছনে পিছনে আমরা গেলাম আবিস্কার এর রুম এ। সেখানে একটা ৩ কিলোওয়াট এর মটর। সেটা একটা বিশাল মেকানিক্যাল জিনিসে লাগান। কয়েকটা চাকা, লিভার আর কি কি জানি। খুবই সাধারন। আবিস্কারক শাহিদ জানাল, অই মেকানিকাল জিনিস্টাই নাকি পাওয়ার বাড়ায়ে দেয়। এবং অই যন্ত্রের শেষ এ একটা শ্যাফট একটা জেনারেটোর লাগানো। যা দিয়ে ৩০ কিলোওয়াট তৈরি হচ্ছে। রুম এ আরেকটা যন্ত্র ছিলো যেইটা কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিলো। তখন ভালোমত খেয়াল করি নাই। মুশফিক সিভিল এর ছাত্র। সে জানালো সেই যন্ত্র দিয়ে ৩ থেকে ৩০ কেন, সে যদি ১ কিলো ওয়াট বানাতে পারে, তাহলে সেটাই একটা বড় আবিস্কার হবে !
যা দাড়াল, বাইরের একজন পর্যবেক্ষক কি দেখবে? সে দেখবে একটা ইলেকট্রিক মটর যার ইনপুট ৩ কিলোওয়াট। তা থেকে মাঝখানে কিছু একটা থেকে শক্তি কোনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরপর তার জন্য ১ কিলো ওয়াট এর ৩০ টা লাইট চলছে। খুব সাধারন। সুতরাং পৃথিবীর জ্বালানি সমস্যা শেষ। কিন্তু দুনিয়া ত এত সহজ না। যাহোক, আবিস্কারক শাহিদ কে অবশেষে এক সময়ে পেলাম। সে আমাদেরকে ডায়াগ্রাম একে কিছু একটা বুঝালো। কি জানি আকিবুকি করলো। ইলেক্ট্রিকাল এর ছাত্র হয়েও কোন কিছুর সাথে মিল খুজে পেলাম না। কিন্তু একটা ব্যপার সে জানালো যে তার একটা আইপিএস(IPS) আছে, যা দিয়ে সে মটর চালু করে। জয় প্রথম ফাঁকি টা ধরতে পারে যে, তার আসল কারুকাজ আসলে সেই আইপিএস। এরপর আবিস্কারক আমাদেরকে রেখে চলে যায়। আমরা বাইরে বসে ফাঁকি নিয়ে আলাপ করতে থাকি। এরপর তার মা আমাদের কথা শোনার পরে আমাদের উপর হম্বিতম্বি শূরু করে। আমরাও কেটে পড়ি।
এরপর খোজ লাগাই কিভাবে আরো বিস্তারিত জানা যায়। প্রথম আলোর দিনাজপুর প্রতিনিধি মুশফিক এর পরিচিত। উনার অফিস এ গেলাম। উনাকে বিস্তারিত বুঝালাম যে কেন তা সম্ভব না। উনি একটু কিন্তু কিন্তু করছিলেন। উনি জানালেন যে তিনিই প্রথম ঐ গবেষককে সবার সাথে পরিচয় করায়ে দেন। সম্ভবত তাই উনার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল। উনার দোষ নাই। উনিও হয়ত সরল মনে বিশ্বাস করেছিলেন। শাহিদের সাথে আমাদের আবার কথা হয় প্রথম আলো অফিসে। আমরা সরাসরি তার আবিস্কারকে চ্যালেঞ্জ করি। সে পাত্তা দেয় নাই। আইপি এস এর কথা জিজ্ঞাসা করায় অস্বীকার করে। এরপর সে চলে যায়। সাংবাদিক সাহেবকে আমরা বিশ্বাস করাতে না পেরে, বুয়েটের কায়কোবাদ স্যারকে ফোন দেই। কায়কোবাদ স্যার শুনেই উড়িয়ে দেন এবং জানিয়ে দেন যে ব্যপারটা কোনভাবেই সম্ভব না। এরপর আরো বিশ্বাস করানোর জন্য ইলেক্ট্রিকাল এর শহিদুল ইসলাম খান স্যারকে ফোন দেই। উনিও পুরা ব্যপারটা যে একেবারেই অসম্ভব তা জানায়ে দেন। এরপর কাজ হয়। সাংবাদিক বুঝতে পারেন যে বিশাল একটা ঘাপলা হয়ে গেছে। ব্যপারটা ততক্ষনে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গড়ায়ে গেছে। পুলিসের আইজি তখন দিনাজপুরে। উনিও শাহিদের সাথে দেখা করে আলাদাভাবে কথা বলেন। সাংবাদিক সাহেব আমাদের জানান যে ব্যপারটা যেহেতু প্রশাসনে অনেকদূর চলে গেছে তাই দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করে বলা ভাল। এমনকি ২-১ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের খুব উচ্চপদস্থ একজন দিনাজপুর আসবে। তাই যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে।
পরেরদিন ডিসি অফিস গেলাম। দিনাজপুর জেলা প্রশাসন এর উচ্চপদস্থ অনেকেই ওখানে। আমরাও আমাদের ব্যাখ্যা বলা শুরু করলাম। জানালাম যে, যদি এই আবিস্কার সত্য হয়, তাহলে বিজ্ঞানের সব সুত্র নতুন করে লিখতে হবে। ডিসি সাহেব হেসে উড়িয়ে দিয়ে বললেন, “আবিস্কার তো এভাবেই হয়”। আমরাও এও বুঝালাম উনাকে যে, ধরেন ৩ থেকে ৩০ হলে ৩০ থেকে ৩০০ সম্ভব, ৩০০ থেকে ৩০০০, সেখানে থেকে ৩০০ কোটিও সম্ভব। তাহলে সেই ছোট মেশিন দিয়ে পুরা পৃথিবীর জ্বালানী সমস্যা মেটানো সম্ভব। তাও বুঝাতে ব্যর্থ হয়ে একজন এডিসি কে ধরলাম, উনি পদার্থ বিজ্ঞানে পড়াশোনা করা লোক। উনি মনে হল। একটু একটু বুঝলেন। এরপরে এক ম্যাজিস্ট্রেট কে পেলাম। উনি বুয়েট এ মেকানিক্যাল এ পড়া। উনাকে বুঝালাম। উনি একবারেই ধরতে পারলেন। উনি এরপর প্রশাসনের সবাইকে বুঝালেন যে, ব্যপারটা পুরাই প্রতারনা। ডিসি অবশেষে বুঝলেন। তিনি নির্দেশ দিলেন এই সংক্রান্ত সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করতে। আমরাও শান্তি পেলাম। মিটিং শেষে বুঝতে পারলাম রূম এ বেশ কিছু সাংবাদিক ছিলেন। তারা পরেরদিন পুরা ঘটনা ছাপান। আমরা হাফ ছেড়ে বাচি।
কিন্তু ঘটনা এখানেই শেষ না। তার পরেরদিন ঢাকায় চলে আসি। হল এ বসে মুভি দেখছিলাম। হঠাত রাত এ ফোন। ফোন দিয়ে জানতে চাওয়া হল, আমি বুয়েটের সাগর কিনা। বললাম হ্যা। সাথে সাথে হুমকি শুরু। কেটে নদীতে ভাসায়ে দিবে টাইপ কিছু। আমি কেন শাহিদ এর আবিস্কার এর পিছনে লেগেছিলাম, হেন তেন। জীবনে একবারই হুমকি পেয়েছিলাম। হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়। আব্বুকে জানাই পুরা ব্যপারটা। আব্বু জিডি করে। হুমকি দেয়ার খবর পত্রিকায় আসে। এরপরে খবর যতদুর জানি সেই ছেলে, এলাকাছাড়া ছিলো কিছুদিন। এরপর আর খবর জানি না। কয়েকদিন পরে লোকজন মারফত খবর পাই, এক মেয়েকে অপহরণ চেষ্টার দায়ে গ্রেফতার হয়ে এক বছরের জেল খাটছে। এরপর আবার দীর্ঘদিন খবর নাই। হঠাত করে দেখলাম সেই ছেলে আবার উঠে পড়ে লেগেছে।
এখানে[৩] আবিস্কারক শাহিদ এর নতুন কির্তীকলাপ জানা যাবে। এবার জড়িত আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক প্রধান, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এম শমসের আলী। ইনি তো শক্তির নিত্যতা জানেন, নাকি? তিনি কিভাবে অধ্যাপক হয়েছেন আমি আসলেই বিস্মিত হয়ে যাচ্ছি। এইসব প্রতারনার একটা সীমারেখা থাকা উচিত। সে যদি আসলেই পেটেন্ট এর জন্য আবেদন করে থাকে সেটা জানানো হক। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে তার আবিস্কার নিয়ে গবেষনা হচ্ছে তাও জানানো হোক।
এইবার আর বড় কিছু নাম শাহিদ এর সাথে। তার কতটুকু জানে এই ছেলে সম্পর্কে আমি জানি না। কিন্তু তারা যদি না জেনে করে থাকে, বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। আর যদি জেনেবুঝে তার সাথে জড়ায়ে থাকে, তার মানে তারাও এটার ভাগীদার। বাংলাদেশ অনেক ভালো গবেষক আছেন যারা টাকার অভাবে গবেষনা করতে পারেনা না। এরকম ফটকা আবিস্কারকদের টাকা না দিয়ে দেশের মানুষ্ যদি একটা করে গাছ ও লাগান তাও দেশের অনেক বেশী উপকার হবে।
সর্বশেষ…
যারা মনে করে যে এরকম আবিস্কার তো হতেই পারে, তাদের অবগতির জন্য জানাই, ৩ থেকে ৩০ কিলো ওয়াট কেন, ৩ থেকে ৩ কিলোওয়াট এখন পর্যন্ত সম্ভব হয় নাই। যদি কোন মেশিন ৩ থেকে ৩ তৈরি করতে পারত, তাহলে সে নিজের তৈরি করা শক্তি দিয়ে চলতে পারত। একে Perpetual motion machine[৪] বলে। এইটাই বানানো অসম্ভব। এইটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত।
[১]https://www.youtube.com/watch?v=X0gLQ6E8Ko8
[২]https://www.youtube.com/watch?v=R3Rok54mzk4
[৩]http://www.banglanews24.com/m/detailnews.php?nid=346836&cid=1033
[৪]http://en.wikipedia.org/wiki/Perpetual_motion
মন্তব্য
ইন্টারেস্টিং!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
জ্বালানি ছাড়া বিদ্যুৎ আবিষ্কারের খবরগুলো যারা ছাপায়, তারা কি ক্লাস এইট পর্যন্ত লেখাপড়া করেনি? যদি ক্লাস এইট পাশ করে থাকে, এবং নকল না করে পাশ করে থাকে, তাহলে তো ছাপানোর কথা না।
এই ধান্ধায় মিডিয়াও সমানভাবে জড়িত।
ঝাড়ু দিয়ে সবকটারে সাইজ করা দরকার।
সূত্রঃ http://www.banglanews24.com/m/detailnews.php?nid=346836&cid=1033
টঙ্গীর এই প্ল্যান্ট এবং "আল্ট্রাম্যাক্স পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড" সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যাবে?
Emran
আল্ট্রাম্যাক্স পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড
যা বুঝলাম, শাহিদ হোসেনের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে তেল, গ্যাস, কয়লা, বা সৌরশক্তি লাগে না। তবে শক্তিটা আসে "হেভি সার্কুলার অবজেক্টের" ঘূর্ণন থেকে। অর্থাৎ, জ্বালানীর সরবরাহ এখানে আছে, শুধু এর উৎসটা আনকনভেনশনাল। জনাব শাহিদ হোসেন জ্বালানী ছাড়া কোন বিদ্যুৎ উৎপাদন করছেন না; তিনি কেবল এক শক্তিকে আরেক শক্তিতে রূপান্তরিত করছেন।
Emran
তা ঐ হেভি সার্কুলার অবজেক্টটা কে ঘোরাবে? শাহিদ না শমশের?
কেন, শামশেরের পোষা জ্বিন দলের ঐ মুশকো অদৃশ্য জ্বিন সর্দারটা ? দেখেন নাই ওকে?
****************************************
সাধারন মানুষ, সাংবাদিকরা বুঝলাম বিজ্ঞানে অজ্ঞ বা পড়াশুনা ভুলে গেসে। কিন্তু ড. শমসের আলীর কী হইসে? পদার্থবিজ্ঞান পড়ে, পড়ায়ে এখন এইসব প্রজেক্টকে হাইলাইট করতেসে।
১৯৮০র দশকে জীন থেকে শক্তি আহরণ নিয়ে পাকিস্তানে বিজ্ঞান সম্মেলন হয়েছিল (১)(২)। ডঃ শমসের আলির যে রাজনৈতিক দর্শন, তাতে তিনি হয়ত এই লাইনে চিন্তাভাবনা করছেন।
Emran
হেহে। জ্বীন এবং জিন হইতে শক্তি উৎপাদন।
ড. শমসের আলী 'হেকমত টেকনোলজি'র প্রধান উপদেষ্টা !!!
একটা টিভি সাক্ষাৎকারেও আবিষ্কারক (!) তাই বলল
ডক্টর শমসের আলী টেকাটুকা ভালো পান বলে শুনেছি তার এক সাবেক সাউথইষ্টার্ণ মুরীদের কাছ থেকে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
বিজ্ঞানের ঠ্যালায় উনারা পড়ালেখা শেষ করতে পারেন না ।
প্রসংশনীয় কাজ করেছেন।
চিটিং টা কেউ ধরতে পারেনি, অনেকটা অন্ধকে হাতি দেখায় দেয়ার মত
ট্রোল
বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত যে অভিনব আবিষ্কারের নিউজ পত্রিকায় দেখি তাতে কোন দিন নাসা বাংলাদেশে তাদের অফিস খুলে বসে কে জানে । ড. শমসের আলীরা কি টাকার কাছে নিজের অর্জিত বিদ্যাটুকু বিক্রি করে দেয়? এরাই বোধহয় বিজ্ঞান ভিত্তিক আস্তিক হয়
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
দেশে গুণীর কদর নাই, বুয়েটে পড়লেই হবে?! সিনেমায় পাওয়া আইডিয়া বাস্তবায়িত করে এই মহান বিজ্ঞানী এবং দেশপ্রেমিক ১৫০ কোটি টাকার কানাডিয়ান অফার ফিরিয়ে দিয়ে ১০ কোটি টাকায় দেশি কোম্পানীর সাথে চুক্তি করেছিলেন, সেই কোম্পানী "ভিনিশ" না হলে আজকে আপনি এই নির্মম লেখা লিখতে পারতেন?
সংযুক্তিঃ সিনেমার নাম ছিল "স্বদেশ"
বলেন কি? ডঃ শমসের আলী! লিখেছেন ভাল। ইন্ট্রিগিং!
ভালো লেখা।
লেখকের নাম কি?
---------------------
আমার ফ্লিকার
লেখকের নাম সাগর (লেখা থেকে পেলাম), তবে লেখার শেষে নামটা থাকা উচিত।
প্রথম লেখা তো সচল এ, বুঝতে পারিনাই যে নাম ছাড়াই পোস্ট হয়ে যাবে। আমার নাম সাগর। এই ঘটনার সময় বুয়েটে ছিলাম, এখন পি এইচ ডি করি আম্রিকাতে
ড. শমশের আলী জড়িত থাকলে তো ঠিকই আছে, কুদরতি ব্যাপার-স্যাপার
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হ, এই মাত্র ভদ্রলোকের একটা বিজ্ঞান বিষয়ক আর্টিকেল পড়ছিলাম। সেখানে তিনি মোবাইল ফোনের বেজ ষ্টেশনের সাথে ওয়্যারলেস সংযোগের সায়েন্সের সাথে, ধ্যানের মাধ্যমে মানুষের সৃষ্টিকর্তার সাথে সংযোগের সায়েন্সের তুলনা করেছেন। রীতিমতো হালাল বিজ্ঞান -
তা ঐ ''ধ্যান'' এর ফ্রিকোয়েন্সি কত? সেটা জানলে একটু চেষ্টা করে দেখতাম। মহাশুন্যে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি চলে, বিশ্বস্রষ্টার সাথে যোগাযোদের সেই নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সি আবিস্কার নিয়ে শমসের আলীর গবেষনা নাকি? এটা তো সহজ বেপার, আপনি ধ্যানে বসে বলবেন যে আপনার সাথে বিশ্বস্রষ্টার যোগাযোগ হয়েছে, কোন বেটার সাধ্য আছে সেটা প্রমান করার?
আর অনেকেই আছে, যারা বিজ্ঞানের সাথে একটু আধ্যাতিক জিনিস লাগিয়ে দিয়ে আধ্যাতিক দুনিয়াকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এটা অনেকটা রোজা রাখা কে কেন্দ্র করে অনেক ডাক্তার আর পদার্থ বিজ্ঞানীরা রোজা যে কত বিজ্ঞান সম্মত সেটা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা।
সাজ্জাদূর রহমান
আমাদের দেশে তো বিজ্ঞান এর নাম নিয়ে পত্রিকাতে খবর বের হয়, যা বের হওয়ার কথা জার্নালে। এই সব খবর যে সব পত্রিকা্রা ছাপে তাদের জ্ঞানের বহর বুঝাই যায়। আর যে সব কথিত শিক্ষিতরা এই সবের পিছনে থেকে সমর্থন দিছে, তাদের উদ্দেশ্য কি বিজ্ঞানের সাথে আধ্যাতিকতা যুক্ত করে অলৌকিকতা প্রমান করা? সাধারন মানুষেরা যখন দেখে যে অনেক শিক্ষিত মানুষেরা এই সব অলৌকিকতা দেখানোর চেষ্টা করে, তখন তারা সেটাকেই বিশ্বাস করা শুরু করে দেয়। বিজ্ঞানে যে জিনিস সম্ভব না, সেটা গাঁজাখুরি করে কেউ পত্রিকা ছাপানোর সময়ে অনেক প্রফেসরেরা বলবে 'দুনিয়াতে বিজ্ঞানের সাথে অলৌকিকতাও সম্ভব'। যে সাংবাদিক এই সবের পিছনে ঘুরে ফিচার লিখে, তারা বিজ্ঞান ও গল্পকে আলাদা করতে পারে না, তাদের কাছে দুইটাই সমান। আমাদের দেশের সাংবাদিকদের জ্ঞানের বহর দেখে অবাক হতে হয়।
সাজ্জাদূর রহমান
ব্লক ডায়াগ্রাম পাওয়া গেল ঐ ফেসবুক পেজে:
ফাঁকি দেবার পদ্ধতিটা মোটামুটি সহজ সরল।
স্টার্ট করার সময় কি পরিমাণ শক্তি জমা করা রাখা হচ্ছে সেটা কেউ মাপবে না। ধরুন, আমি স্টার্ট দেবার মটর চালু করে লেকচার শুরু করলাম। আরো ধরি, ঐ স্টার্টিং মোটরটার আউটপুট দিয়ে একটা বড় স্প্রিংকে সংকোচন করা শুরু করলাম।
অনেকটা সময় পরে, যখন আমি বাইরে থেকে শক্তি সরবরাহ বন্ধ করে দেব তখন কিন্তু আমি দেখাতে পারব যে অনেক বেশি পরিমাণ আউটপুট আসছে। এই ভেলকি কিছু সময় সাস্টেইনও করবে (এমনকি কয়েক ঘন্টা, দিনও হতে পারে!) তবে, ফলাফল পরে রসগোল্লাই হবে।
এই ব্লক ডায়াগ্রাম যে বানিয়েছে, সে টারবাইন কী, সেটা বোঝে না। ইংরেজিতে যা লিখেছে, সেটাও পড়ে বোঝার উপায় নেই, কী বলতে চায়।
শক্তি নিয়ে যারা প্রতিবেদন লেখে, তাদের মাঝে অধিকাংশই শক্তি আর ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না। মেগাওয়াট আর মেগাওয়াট-আওয়ারের মধ্যে পার্থক্য কী, জিজ্ঞাসা করলে অনেকেই আটকে যাবে বলে আমার ধারণা। ৩ কিলোওয়াট যন্ত্র দিয়ে ৩০ কিলোওয়াট-আওয়ার শক্তি সরবরাহ করা যায় (দশ ঘণ্টা চালালেই হবে), কিন্তু ৩ কিলোওয়াট ইনপুট দিয়ে ৩০ কিলোওয়াট আউটপুট পাওয়া যাবে না কখনো, তার জন্যে অতিরিক্ত [(৩০/প্ল্যান্টের যান্ত্রিক দক্ষতা) - ৩] কিলোওয়াট ক্ষমতা কোথাও না কোথাও থেকে ইনপুট দিতে হবে। এটা যারা বোঝে না, তাদের উচিত না এ নিয়ে কোনো কিছু লেখা।
এই ব্লক ডায়াগ্রামটা উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা যে কোনো লোককে হাসানোর জন্য যথেষ্ট।
তাইতো, টার্বাইনের ব্যাপারটা নজরে পড়ে নি। একটা জিনিস যদি ঘুরতেই থাকে তারপর তো গিয়ারের কাপলিং দরকার, টার্বাইন আমদানি হচ্ছে কেন? [আসলে, পাওয়ার প্লান্টের সাথে টার্বাইন টুর্বাইন জাতীয় ভারিক্কী শব্দ না থাকলে মনে হয় জমে না]
আর, শক্তি আর কাজ মাপার জন্য বিষয়টা সাধারণ মানুষকে বোঝানো একটু কঠিন বৈকি।
নিচে দেখুন আমি টাকা বানানোর মেশিন বানিয়ে ফেলেছি! কেউ বুঝতে না চাইলে এটা দিয়া বোঝানোর চেষ্টা করব।
(দেখি কোন বিনিয়োগকারী 'টেকাটুকা' নিয়ে আসে কী না!)
ইতিমধ্যে একবার একই কাজ করা প্রতারককে কীভাবে প্রশাসন আবারও প্রতারণার সুযোগ দিচ্ছে, সেটা মাথায় ঢোকে না। সাংবাদিক ভাইয়েরাও তো অন্তত অষ্টম শ্রেণী পাশ করেছেন। পদার্থ বিজ্ঞানের একদম সাধারণ বিষয়গুলো কি তারা বোঝেন না নাকি পত্রিকার কাটতি বাড়ানোই সাংবাদিকতার প্রথাণ লক্ষ্য এখন?
লেখাটা ছড়িয়ে দিচ্ছি। সবার জানা দরকার এই প্রতারকের কাহিনী।
টুইটার
ছড়ান। তবে - দেশের লোকের সাফল্যে ইর্ষান্বিত হয়ে আপনি তাদের পিছে কাঠি দিতে চাইছেন, আপনি আসলে পরশ্রীকাতর-দেশদ্রোহী টাইপের লোক - এইরকম অভিযোগ নিয়ে একদল লোক আপনার উপর ঝাপায়ে পড়তে পারে। এরা আপনার শিক্ষা, যুক্তি, বিজ্ঞান-টিজ্ঞান কিছুই বুঝতে চাইবে না। এইসব ছাগলের জন্য প্রস্তুত থাইকেন।
****************************************
আপনার আশঙ্কা ফলে গেছে। নমুনা দেখুন-
আমার যুগান্তকারি আবিষ্কার: প্রতি সেকেন্ডে ৫০০ টাকা কামাই করার যন্ত্র!
আমার ভুং ভাং টাকা জেনারটরের প্রতিটা টাকাই আসল, এটা জাল টাকা ছাপানোর মেশিন না। এটাতে প্রতি সেকেন্ডে ১০টা ১০০ টাকার নোট ঢুকালে, প্রতি সেকেন্ডে ১৫ টা ১০০ টাকার নোট বের হবে, সেখান থেকে ১০টা আবার ঐ বাক্সে ঢোকাতে হবে। এভাবে প্রতি সেকেন্ডে ৫ টা ১০০ টাকার নোট বাড়তি পাওয়া সম্ভব।
*কেবল আমার এই 'বাক্স' স্টার্ট করার জন্য শুরুতে প্রতি সেকেন্ডে ১০ টা ১০০ টাকার নোট ঢোকাতে হবে।
এটা স্টার্ট করতে ১ ঘন্টা লাগে কিন্তু একবার স্টার্ট হলে একটানা, অবিরাম, নন-স্টপ ও বিরতিহীনভাবে ৪০ মিনিট চলবে যার প্রতি সেকেন্ডে আপনি ৫০০ টাকা করে লাভ করতে থাকবেন! একই সাথে এই বিজ্ঞানী (মানে আমি ) টাকা গণনার নতুন একক টাকা প্রতি সেকেন্ড (টাপ্রসে) এর নাম প্রস্তাব করছি।
দেখুন আমার আবিষ্কার (!):
প্রথমে স্টার্ট করা হচ্ছে, ৬০ মিনিট অপেক্ষা করুন:
.........................................................................................................................................................
স্টার্ট করা হয়ে গেল, অপেক্ষার পালা শেষ ৪০ মিনিটের প্রতি সেকেন্ডে ৫০০ টাকা করে পাবেন।
এই ৪০ মিনিটে পাওয়া ৩৬ লাখ টাকার মধ্যে ২৪ লাখ টাকা মেশিনে ফেরত যাবে, আপনি ১২ লাখ টাকা রেখে দিতে পারবেন।
আমি প্যাটেন্ট পাবার পর আপানারা এই মেশিনের উপর লেখা পেপার পড়তে পরবেন বিভিন্ন জার্নালে। কাজেই, নেচার, সায়েন্স এসবে নজর রাখুন। আর, যেখানেই আর কেউ নতুন কোন 'জ্বালানি ছাড়া' মেশিন আবিষ্কারের দাবি করবেন, তাদেরকে আমার এই ছবি দু'টো দেখিয়ে বলবেন যে এগুলো আমি আগেই আবিষ্কার করে রেখেছি। অন্য কেউ এরকম দাবি করলে আমি মামলা করতে পারি!
আর, বলতে ভুলে গেছি এই ভুংভাং মেশিনের ডেমন্সট্রেশন দেখতে চাইলে মেশিন স্টার্টিং এর ১ ঘন্টার জ্বালানি বাবদ ৩৬ লক্ষ টাকা নিয়ে আসবেন।
সিংগাপুরের বিনিয়োগকারীরা যোগাযোগ করুন। ১৫০ কুটি টাকার নিচে অফার হলে যুগাযুগ করিবেন না।
হা হা ব্যাপুক বিনুদন। আপনাকে সব টিভি চ্যানেল এ দেখতে চাই
-লেখক
আমিও টিভিতে দেখা দিতে চাই
অসাধারণ হইছে ডায়াগ্রামটা
শুধু অসাধারণ বললে হবে না, আপনাকে আমি উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিতে চাই। আপনি খালি আমার সাথে একটা-দুইটা সংবাদ সম্মেলনে যাবেন। আপনার মত হেভিওয়েট লোকজন না সাথে না থাকলে পেপার-টিভিতে ভালো কভারেজ পাবো না।
টেকাটুকা নিয়া চিন্তা করবেন না, বিনিয়োগকারীরা লাইন দিবে একটু পরেই।
১৫০ কোটির নিচে কোন অফার গ্রহণযোগ্য না, তবে দেশের প্রতিভাবানের আবিষ্কার দেশের কাজে লাগা উচিত। দেশের কেউ যদি ভালো কোন অফার দেয়, আপনি একটু মুলামুলি করে দিয়েন।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
চমৎকার একটা কাজ করেছেন। এখন এই লেখা সাংবাদিক ভাইদের চোখে পড়লে হয়।
পৃথিবীর আরক কোনো জাতি যে জ্ঞানে বিজ্ঞানে আমাদের ধারেরকাছেও নেই তার কারণটা এতদিন রহসাবৃত্য ছিলো। শমসের আলীর পরিচয় থেকে আজ বুঝলাম।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কলেজে বিজ্ঞানমেলায় "রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র" নিয়ে একটা প্রজেক্ট করেছিলাম। সরকার কতটা ক্ষতি করল, বিকল্প কি করা যেতে পারে এইসব হাবিজাবি। বিশাল প্রজেক্টর লাগিয়ে, বিশাল চার্টে ডায়াগ্রাম বানিয়ে, কি একটা যন্ত্রের মডেল বানিয়ে হুলস্থূল কারবার করেছিলাম। আমি ছিলাম কম্পিউটার অপারেটর টাইপ, পুরা প্রজেক্টের একটা পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করাই ছিল আমার কাজ। সত্যি বলতে মানুষ কি বুঝবে আমি নিজেই কিছু বুঝি নাই। আমার কাজ যেটা ছিল, সেটা শেষ করে আমি চুপচাপ বসে ছিলাম, বাকিটা সামলেছিল আমার বন্ধুরা।
বলা বাহুল্য, আমরা সেকেন্ড হয়েছিলাম । এখানে আমাদের সেকেন্ড হওয়ার কারণ হল আমাদের বাইরের ভং-চং দেখেই সবাই ঘাবড়ে গিয়েছিল। আর রামপাল নিয়ে মানুষের সামান্য কৌতুহল থাকলেও কেউই বিষয়টা নিয়ে রিসার্চ করেনি, তাই যা খাইয়ে দিয়েছি তাই খেয়েছে।
আপনার লেখা পড়ে এটাই মনে হল, আমাদের বেশিরভাগ মানুষই আসলে কি ঘটছে তা নিয়ে মাথা ঘামায় না। শুধুমাত্র বাইরে একটু শো-অফ করলেই তারা ধরে নেয় যে ব্যাপারটা সত্য। সত্যিকার আগ্রহ থাকলে ঠিকই তারা খুব সহজেই সব ধাপ্পাবাজি ধরে ফেলতে পারত।
লেখাটা ভালো লাগল, তবে বানান এবং টাইপিংয়ে আরেকটু সতর্ক হোন।
ভালো থাকবেন।
রাসিক রেজা নাহিয়েন
ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য। বানান নিয়ে সতর্ক থাকবো এরপর থেকে। আগে এত বড় কিছি লিখি নাই আগে। আর তাড়াতাড়ি আমার বক্তব্য তুলে ধরা দরকার ছিলো।
সাগর(লেখক)
অফ-টপিকঃ এই শমশের আলী নাকি আই.ইউ.টি. তে "কুরানিক-সাইন্স" নামে এক সাবজেক্ট পড়াইতেন, এক দোস্তের কাছে শুনছিল্যাম্ব, কেউ জানেন নাকি ??
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
মহাবিজ্ঞানী জনাব শাহিদ হোসেন যে একশ কেজি অজনের "গলাকার" বস্তুর উপর দশ কেজি অভিকর্ষ বল প্রয়োগ করে সেটা ইলেক্ট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এবং নিউক্লিয়ার ফিল্ডের ভিতর দিয়ে চালাইয়া দিয়া একশ কেজি বিদ্যুত বানাইতে পারেন, এটা নিশ্চয় সত্য! ডাক্তার শমসের আলিও সাক্ষ্য দিতেছেন, ইহা নিশ্চয় সত্য! সত্য!! সত্য!!!
এখন শাহিদ হোসেন একটা মারাত্মক ভুল করে ফেলেছেন কিনা বুঝতে পারছি না। কানাডার যে প্রতিষ্ঠান দেড়শো কোটি টাকায় তার আবিস্কারটি কিনে নিতে চেয়েছিল, তারা নিশ্চয় কোন কিছু না বুঝে এত টাকা জলে ফেলে দিতে চায় নাই। শাহিদের টেকনিক ব্যবহার করে তারাই এখন বিদ্যুত আবিস্কার করে ফেলে কি না, সেই দুশ্চিন্তায় আছি।
সেটা এরশাদ আমলের কথা। বেশ কিছুদিন পর দেশের বাড়ীতে গিয়ে দেখি আমাদের মফস্বল শহরে একটা বিষয় নিয়ে রীতিমত হুলুস্থুল পড়ে গেছে, সেখানে একটা নতুন বেতারকেন্দ্র চালু হয়েছে। তখন ডিস কালচার চালু হয় নাই, জনগণ রাতের কিছু সময় বিটিভি তে পছন্দ অপছন্দের কিছু জিনিস দেখে, আর দিনের বেলা রেডিও বাংলাদেশে পছন্দ অপছন্দের নানা কিছু শোনে। এমনি প্রেক্ষাপটে এই বেতারকেন্দ্রটি চালু করেছে এলাকার শামছু মেকার। অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ছয়টা পঞ্চাশ মিনিটে, প্রথম পাঁচ মিনিট কোরান তেলাওয়াত, তারপর পাঁচ মিনিট দিনের অনুষ্ঠানসূচি, তারপর সাতটায় রেডিও বাংলাদেশের খবর সম্প্রচার। তারপর থেকে সারাদিন ধরে বাংলা হিন্দী উর্দু গান, ভানুর চুটকি, বুলবুলে বাংলাদেশ এর ওয়াজ, স্থানীয় সংবাদ, স্থানীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন, ইত্যাদি নানা কিছু চলতে থাকে। স্থানীয় উচ্চারণে অনুষ্ঠান ঘোষকের দায়িত্ব পালন করে কখনও শামছু মেকার নিজে, কখনও তার স্ত্রী, কখনও বা তার শ্যালক।
যেখানেই যাই, শুধু শামছু আর তার বেতারকেদ্রের কথা। শামছু মেকার পেশায় একজন রেডিও মেকানিক, কিন্তু প্রতিভার বিস্ময়কর স্ফুরণে সে আবিস্কার করে বসেছে বেতার তরঙ্গ সম্প্রচারের বৈজ্ঞানিক সূত্রাবলী। দেখলাম শামছু'র বিরল প্রতিভা নিয়ে এলাকায় সবাই খুবই গর্বিত। একজন সাধারন রেডিও মেকার একটা বেতারকেন্দ্র চালু করে বসায় আমিও যে অবাক হই নি তা নয়। যাই হোক, গেলাম শামছু'র বেতার কেন্দ্রে। সমাদর করে বসাল, চায়ের এন্তেজাম করলো। তারপর একটা ফাইল বের করে আমার হাতে দিল। দেখি- তখনকার নামীদামী সব পত্রিকায় তার কৃতিত্বের বিষয়ে লম্বা ফিচার। শামছু আমাকে অনুরোধ করে বলল- ভাই, ঢাকায় তো আপনার অনেক জানাশোনা(যদিও আসলে তেমন কিছুই নাই), আমার যদি একটা ব্যবস্থা করে দিতেন। কি ব্যবস্থা করে দেব? আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করি। যদি উপর মহলে একটা লাইন টাইন করে দেন, বোঝেনই তো অনেক খরচার ব্যাপার। আমি দেখি, বলে চলে আসি। ঢাকায় এসে খোঁজ খবর নিয়ে দেখলাম ব্যাপারটা মোটেই আহামরি কিছু নয়, একজন ভাল রেডিও মেকানিকের পক্ষে এটা বানাতে পারাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সুতরাং আমি আমার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
এর কিছুদিন পর জানতে পারলাম, বেআইনি ভাবে বেতারকেন্দ্র পরিচালনা তথা রাস্ট্রের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ করার অপরাধে শামছু মেকারকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।
গোবেচারা শামছুকে পুলিশ ধরেছে, ধুরন্ধর শাহিদ আর শমসেরকে কবে ধরবে?
আহারে, বেচারা
শামছু এর ভালো দিক হল সে কোন ধরনের ঠগ বাটপারিতে যায় নাই। সহজ মনে রেডিও বানিয়েছে। গোবেচারা দেখে ধরা খেয়েছে। কিন্তু শাহিদ আর শমসের আলী প্রচন্ড ধুরন্দর। এদেরকে উচিত শিক্ষা না দিলে এরা আবার গজিয়ে উঠবে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
-লেখক
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
প্রতি বছরই এধরনের ম্যাজিক-বিদ্যুৎ বাটপারির খবর রিসাইকেল হয়, আগে এগুলো দেখে খুব বিরক্ত হতাম, এখন তাও হইনা।
তবে এই ধরনের খবর, আর খবরে অনেকের উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়ায়, এখন একটা জিনিসই বড় হয়ে ওঠে---দেশের গ্রামে-গঞ্জে-মফস্বলে বিদ্যুতের জন্য গোপন হাহাকার। বিদ্যুত এখনও দেশের বিরাট অংশের কাছে বিলাস দ্রব্য, আর অনেকের কাছে বিদ্যুৎই নেই (বিশ্বব্যাংকের এক হিসাবে দেখলাম দেশে ৫ জনের মধ্যে ২ জনের বিদ্যুৎ নাই), সেই বিলাস দ্রব্য ম্যাজিক দিয়ে কম-খরচে তৈরী করছে আমাদের মতই আরেকটা বিদ্যুৎ-বুভুক্ষু, সেটা অনেকের কাছেই ফ্যান্টাসি-ফুলফিলিং একটা ব্যাপার মনে হয়।
এইসব খবরে আজকাল তাই বাটপারির থেকে এই হাহাকারটাই চোখে লাগে বড় বেশী।
---যান্ত্রিক বাঙালি
এই দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবা হয়নি আগে।
যার টাকাপয়সা কম, তাদেরকে সহজে বড়লোক বানানোর স্বপ্ন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এমন কম্পানির সংখ্যা নেহায়েত কম না।
'হাহাকার' এর সুযোগ নিয়ে মানুষকে প্রতারণা করাটা এধরণের অপরাধকে আরও ঘৃণ্য হিসেবে চিহ্ণিত করে।
হ্যাঁ, এমেলেম জাতীয় ধান্দাবাজির পেছনে দৌড়ানো, আর এইসব বিদ্যুৎ-বাটপারি নিয়ে অনেকের উৎসাহ সম্ভবত একই ইমোশনের সূত্রে গাঁথা। তবে বড় তফাৎ হোলো, এমেলেম-ওয়ালারা হাতিয়ে নেয় হাজার-হাজার লোকের কোটি টাকা, আর এইসব বিদ্যুৎ-বাটপারদের ধান্দাবাজি আরো ছোট লেভেলের।
-----যান্ত্রিক বাঙালি
দারুন একটা কাজ করেছেন।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
অত্যন্ত দরকারি লেখা। এই বাটপার অধ্যাপক শমশের সম্পর্কেও বিশেষ কিছু জানা যায় না। নেটে যা পেলামঃ
১। উইকি (কোন জরুরি/ গুরুত্ববহ তথ্য নেই)
২। সাউথ-ইস্ট ভার্সিটি (কাজ করে না)
৩। তার নিজের সাইট (কাজ করে না)
৪। বাংলাদেশ একাডেমি অফ সায়েন্স (সাইট কাজ করে না)
৫। ফেসবুক পেজ (কাজ করে তবে প্রায় ফাঁকা)
৬। উনার জীবনী ও কর্ম
আরো দুটি লিঙ্কঃ ১ ও ২।
উনার বর্তমান কাজের নমুনাঃ (ইসলামি জলসায় খুৎবা প্রদান)
ইসলামি বিজ্ঞানের প্রমাণঃ https://www.youtube.com/watch?v=4r1etQvJi7A
ওই যশোরের পেজ থেকে জানা যায়, তিনি সকল অধ্যাপকেরই প্রিয় ছাত্র ছিলেন এবং তারা তাকে ছাত্রজীবনে প্রচন্ডরকমের সাহায্য করেছেন (মূলত রেকমেন্ডেশনের মাধ্যমে, তিনি ভবিষ্যতে এত বড় গাড়লে পরিণত হবেন জানলে মনে হয় করতেন না!)।
উনার পাকি আমলে তড় তড় করে বেড়ে ওঠা অত্যন্ত সন্দেহজনক।
মাত্র ৫ বছরে একজন কিভাবে সবচেয়ে নিচের একটা পদ থেকে সর্বপ্রধান কিভাবে হন? আইনস্টাইনেরও তো এই রেকর্ড নেই!
উনার ভিসি হবার সাথে কি বিম্পির ক্ষমতার সম্পর্ক নাকি?
এছাড়াও একেক জায়গায় একেক রকমের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
যেমনঃ
সূত্র
সূত্র
এই লেখাটা পরে কাজে দিবে। শমসের ভন্ড জানতাম কিন্তু এই লেভেল এর ভন্ড জানা ছিলো না।
-লেখক
একটা তালিকা করা দরকার এইসব "আবিস্কার"-এর।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এই নিন তালিকা,
The Museum of Unworkable Devices
https://www.lhup.edu/~dsimanek/museum/unwork.htm
একটু লম্বা, তবে ছবিগুলো দেখলেও চলবে। আর পুরোটা পড়লে, মাথায় ভলো ভালো বুদ্ধি গজাবার কথা।
সেরাম লিংক! আমি বাংলাদেশি আবিস্কারকদের কথা বলতেছিলাম। সাথে সেইসব যেইসব জ্ঞানী পোপেচাররা প্রমোট করে তাদের তালিক।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ভালো বলেছেন। এরকম তালিকা একটা করা দরকার। তাহলে অন্তত পরে রেফেরেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। সচলেই একটা পোস্ট আকারে করা যায়, যেইটা সময়ের সাথে নতুন ভন্ডদেরকে সংযুক্ত করে নিবে
-লেখক
বুদ্ধি খারাপ না
আপাতত দৌড়ের উপর আছি, ভাবছি, দৌড় শেষ হলেই এরকম একটা কিছু করে ফেলব। আমার ওপরের কমেন্টের আবিষ্কারটা দিয়েও লেখা শুরু করে দেব।
যুগে যুগে কত ভন্ডামি যে দেখতে হয়!
শুভেচ্ছা
ফেসবুকে মন্তব্যগুলো-ও পড়ছিলাম লেখা এবং পোস্টের মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য পড়ার পর। ফেসবুকে একটা মন্তব্য: “ভাই বাতাসে চলা মোটর সাইকেলের ব্যাপারে কিছু কন!! দুই দিন পরে পরেই দেখি বাতাসে গাড়ি চলতেছে,ক্যামনে কি?”
পরীক্ষামূলকভাবে শমশের পোপেচোরের বাড়িতে এক বছর হেকমতি বিদ্যুৎ চালানো হোক।
সহমত
সাগর ভাই
মেঘলা মানুষ
পদার্থ বিজ্ঞান
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
আয়হায়! পদার্থবিজ্ঞানের মাজারে মোমবাতি জ্বালান ক্যান?
শমশের পোপেচারের সাথে "ছহীহ পদার্থবিজ্ঞান" এর সম্পর্ক নাই।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন